আন্তেনিওর জন্ম হয়েছিলো চব্বিশে জুলাই। এমনিতে জুলাই মাসের আলাদা কোন বিশেষত্ব নেই, প্রতি বছরই আসে একটা করে, আর সংখ্যা হিসেবেও চব্বিশ তেমন আহামরি কিছু নয়। তবে আন্তেনিওর জন্মের দিনটা মনে রাখার মতো কেননা ওই দিনই জেনারেল জর্জ প্যাটন সসৈন্যে সিসিলিতে অবতরণ করেছিলেন। এটা উনিসশ তেতাল্লিশ সালের কথা। ইটালির ক্ষমতায় তখন বেনিতো মুসোলিনি। আন্তেনিওর বাবা আরিগো ফেনুচ্চি মুসোলিনির কুখ্যাত গোপন বাহিনী 'ওভরা'র একজন সদস্য।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের দলিলপত্রে অবশ্য আরিগো ফেনুচ্চি নামে কারো অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায় না। ওভরা ছিল গোপন সংগঠন, এর সদস্যরা মিশে থাকতেন সাধারণ মানুষের ভিড়ে, যেমন ছিলেন পালের্মো বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞানী ফেনুচ্চি। জীবনের একটা সময় পর্যন্ত বেহালাই ছিলো তাঁর ধ্যান জ্ঞান। পরবর্তীতে অধ্যাপনায় চলে এলেও সংগীতের প্রতি আগ্রহে তেমন একটা ভাটা পড়েনি। ইটালি তখন ক্লাসিকাল মিউজিকের পীঠস্থান, পালের্মো এবং আশেপাশের শহরগুলো মিলিয়ে কনসার্ট হল কম করে হলেও পঞ্চাশটি। ফেনুচ্চি নিয়ম করে প্রতি শনিবার কোন না কোন একটি হলে বাজিয়ে গিয়েছেন যুদ্ধ শুরুর আগ পর্যন্ত। পরবর্তী কয়েক বছরে কনসার্ট হলগুলোর বেশিরভাগই বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বাজনা থামিয়ে তিনি নজর দেন স্বরলিপি সংগ্রহে। উনিশ শতকের বিখ্যাত কম্পোজার লুইগি বকারিনির স্বরলিপির প্রতি ছিল তাঁর বিশেষ দুর্বলতা।
বিশ্বযুদ্ধের দলিলে আরিগো বকারিনি নামে যে ভয়ংকর মানুষটার কথা পাওয়া যায় তিনি যে আসলে পালের্মো বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণাগারে দিনরাত নাককান বুজে পড়ে থাকা বিজ্ঞানী ফেনুচ্চি সে কথা জানতো কেবল অল্প কয়েকজন মানুষ।
২৫শে জুলাই রবিবার তাঁর থাকার কথা ছিলো পালের্মোতেই। হঠাৎ টেলিগ্রাম পেয়ে আসন্নপ্রসবা স্ত্রীকে সময় দিতে ছুটি নিয়ে চলে যান দু'শ কিলোমিটার দূরের গ্রাম মন্তালবানোতে। ফেনুচ্চির আর পালের্মো ফেরা হয়নি।
সে রাতেই ইতালির রাজা তৃতীয় ইমানুয়েল মুসোলীনিকে ক্ষমতা থেকে উৎখাত করেন। ওভরার সদস্যদের তখন দারুণ দুঃসময়, ধরা পড়ে কেউ কেউ খুন হচ্ছেন, পালিয়ে বেড়াচ্ছেন অন্যেরা। পালিয়ে বেড়াচ্ছেন ফেনুচ্চিও।
পুত্র আন্তেনিও আর স্ত্রী লিলিয়ানাকে নিয়ে অর্ধেক পৃথিবী ঘুরে ফেনুচ্চি শেষটায় চলে আসেন ক্যানাডার ছোট্ট শহর হ্যামিল্টনে। সেখানে তাঁর নতুন নাম, আলেসান্দ্রো ক্যাপেলো। পেশায় মাংসবিক্রেতা, অবসরে বাচ্চাদের বেহালা শিক্ষক।
শিক্ষক হিসেবে আলেসান্দ্রোর খ্যাতি ছড়িয়ে পড়তে খুব বেশি সময় লাগেনি। তাঁর এক ছাত্রের বাবা ছিলেন আর্ট গ্যালারি অব হ্যামিল্টনের কিউরেটর। সেই ভদ্রলোকের উৎসাহে বিভিন্ন কনসার্টে বেহালা বাজিয়ে আলেসান্দ্রো স্থায়ী হন টরন্টোর রয়্যাল কনজার্ভেটরি অফ মিউজিকে। ভালোই চলছিলো সব, অন্তত প্রথম দশটা বছর। তারপর কেন যেন খ্যাপাটে হয়ে যান আলেসান্দ্রো। খ্যতনামা কম্পোজারদের, বিশেষ করে বকারিনির স্বরলিপি উল্টেপাল্টে নিজের মতো করে বাজাতে শুরু করেন তিনি। ধীরে ধীরে ছাত্রের সংখ্যা কমতে থাকে, কনসার্টেও তেমন একটা ডাক পড়ে না আর। একটা সময় লোকে ভুলে গেলো আলেসান্দ্রো ক্যাপেলো নামে একজন মানুষ ছিলো এ শহরে।
আন্তেনিওকে বেহালার নেশায় পায়নি। এমন নয় যে তিনি যন্ত্রটি সম্পর্কে উদাসীন, বাজাতে পারেন ভালোই, আলেসান্দ্রোর প্রিয় ছাত্র তিনি। তবে বাবার সাথে সম্পর্কটা খুব একটা মধুর ছিলো না কখনোই। আন্তেনিও ঘর ছাড়েন মা মারা যাবার তিনদিন পর। তখন তাঁর সতেরো বছর বয়স।
স্ত্রী-পুত্রের অবর্তমানে আলেসান্দ্রো নিজেকে আরও গুটিয়ে নেন। বাড়ির বাইরে খুব একটা বের হন না, পাড়ার দোকানদার মাঝে মাঝে এসে বাজার সদাই দিয়ে যায়, মাসে একদিন ব্যাংকে গিয়ে খাইখরচার টাকা তুলে কিছুটা সময় সময় বসে থাকেন জি রস পার্কের সরু লেকটার ধারে। তারপর বাড়ি ফিরে পুরনো বেহালাটা হাতে নিয়ে বাজিয়ে চলেন একটানা। চার দেয়ালের সীমানা ছাড়িয়ে আকাশে বাতাসে আছড়ে পড়ে সুরের ঢেউ- হ্যান্ডেলের গ্যাভট, বাখের মিনুয়েট, চাইকভস্কির কনচার্টো, বকারিনির সোনাটা। পুরনো বেহালাটা ওই একদিনই বাজে। অন্যদিনগুলো কাটে স্বরলিপি লিখে, মাঝে মাঝে অন্য একটা বেহালায় নিজের লেখা গৎ বাজান, বড় বেখাপ্পা আর প্রাণহীন সেই সুর। রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাওয়া পথিকদের এক দুজন কখনো সখনো থমকে দাঁড়ায়, তাদের অভিজ্ঞ কানে কেমন যেন খটকা লাগে। খানিকক্ষণ অপেক্ষা করে মাথা নাড়তে নাড়তে চলে যায় তারা। আলেসান্দ্রো বাজিয়ে চলেন আপনমনে, এভাবেই কেটে যায় দিন-মাস-বছর-দশক। জেইন স্ট্রীটের বাড়িটার চারধারে গজিয়ে উঠে আগাছার জঙ্গল, দেয়ালে জমে শেওলা। আলেসান্দ্রো বৃদ্ধ হন উত্তুরে হাওয়ায় দুমড়ে মুচড়ে শুকিয়ে আসা শনের দড়ির মতন।
আন্তেনিওর বয়স এখন আটচল্লিশ, বছর দুয়েক আগে চাকরি থেকে অবসর নিয়েছেন। চূড়ান্ত কষ্টের ভেতর দিয়ে যাচ্ছে তাঁর দিনকাল। অর্থকষ্ট নয়, তিনি একলা মানুষ, তেমন একটা খরুচেও ছিলেন না কোনোদিন। টাকা পয়সা যা জমেছিলো তার কতকটা দিয়ে ছোট্ট একটা বাড়ি কিনেছেন ব্রকপোর্টে। চারদিকে বিশাল জায়গা, প্রতিবেশী তেমন একটা নেই। বাড়িটা কেনার সময় তিনি বোঝেননি এটা বুড়োদের শহর।
আজকাল জেইন স্ট্রিটের বাড়িটার কথা খুব ভাবেন আন্তেনিও। চোখের সামনে ভেসে উঠে মাঝবয়সী সেই খ্যাপাটে লোকটার মুখ, আর একজোড়া বিষণ্ণ চোখ- মায়ের। ফেরা হয়নি তাঁরও, ইচ্ছে করেনি।
ম্যাকগিল ইউনভার্সিটির চারটে বছর বাদ দিলে আন্তেনিওর জীবন কেটেছে ঘুরে ঘুরে। থিতু হতে পারেননি কোন শহরে, কিংবা হতে চান নি। কোথাও একটু বেশিদিন থেকে গেলে আলেসান্দ্রোকে চিঠি লিখতেন, ফেরত খামে আসতো তাড়াতাড়া স্বরলিপি। কোন সম্বোধন নয়, অণুরোধ-উপদেশ-আদেশ-নির্দেশ এমনকি কুশল জিজ্ঞাসা করেও দুটো লাইন কখনো লেখেননি বুড়ো।
শেষ খামটি এসেছিলো নয় বছর আগে, তিনি তখন ওকলাহোমার একটি একটি প্রতিষ্ঠানে নাক ডুবিয়ে চাকরি করছেন। খামের ভেতরে যথারীতি কিছু স্বরলিপি, আর সেই সাথে টাইপ করা একটি চিঠি, লিখেছিলেন ও’রাইলি এন্ড ও’রাইলির জুনিয়ার পার্টনার এলি অ্যাপলবাম।
“প্রিয় আন্তেনিও,
অত্যন্ত দুঃখের সাথে জানাচ্ছি যে আপনার বাবা আলেসান্দ্রো ক্যাপেলো গত বুধবার রাত দশটা আটত্রিশ মিনিটে বাহাত্তুর জেইন স্ট্রিটের বাড়িতে মৃত্যুবরণ করেছেন। মৃত্যুর সময় তাঁর পারিবারিক চিকিৎসক ডাক্তার রবার্ট স্যামুএল লাহাম এবং আমি উপস্থিত ছিলাম। জনাব ক্যাপেলোর আদেশক্রমে তাঁর লেখা স্বরলিপির একটা অংশ আপনাকে পাঠালাম, বাকিটা রক্ষিত রয়েছে ব্যাংক অফ মন্ট্রিয়েলের জেইন স্ট্রীট শাখার ভল্টে। ভল্টের সমুদয় খরচ আপনার বাবা পরবর্তী দশ বছরের জন্য অগ্রিম মিটিয়ে দিয়েছেন। আপনি চাইলে স্বরলিপিগুলো নিয়ে যেতে পারেন, অন্যথায় দশ বছর পর ওগুলো পুড়িয়ে ফেলার নির্দেশ দিয়ে গিয়েছেন আপনার পিতা। আরও একটি কথা জানিয়ে গিয়েছেন তিনি। তাঁর ইচ্ছে আপনি জেইন স্ট্রিটের বাড়িটায় এসে বসবাস করেন। বাড়ির খাজনা আগামী দশ বছরের জন্য জমা দেওয়া আছে। আর যদি বাড়িটি এখনই বিক্রি করে ফেলতে চান তাহলে আমাদের ফার্ম আপনাকে সর্বাঙ্গীণ সহায়তা করতে প্রস্তুত।
বিনীত,
এলি অ্যাপলবাম
জুনিয়ার পার্টনার, ও’রাইলি এন্ড ও’রাইলি
৩১ ইয়াং স্ট্রিট, টরন্টো।
সাক্ষীঃ
রবার্ট স্যামুএল লাহাম
সহকারি পরিচালক, মেডিসিন বিভাগ
হাম্বার রিভার হাসপাতাল, টরন্টো।
চিঠি পাওয়ার দিনটি এখনও স্পষ্ট মনে আছে আন্তেনিওর। ওকলাহোমায় সেদিন চলছিল প্রবল তুষারঝড়। খুব বিপদে না পড়লে এমন দিনে বাড়ি থেকে বেরোয় না কেউ। তিনিও বের হননি । জানালার পর্দা সরিয়ে বসেছিলেন একটা চেয়ারে। বাইরে দমকা বাতাসে এলোমেলো তুলোর মতো তুষার আর ভেতরে ফায়ারপ্লেসে পটপট করে পুড়ে চলা কাঠের শব্দে তন্ময় হয়ে ভাবছিলেন- এশহরে অনেকদিন হয়ে এলো। এমন সময় কলিংবেলের আওয়াজ। বিরক্ত হয়ে দরজা খুলে দেখেন ড্রাইভওয়েতে একটা খাম পড়ে, মেইলম্যান ততক্ষণে গাড়িতে উঠে স্টার্ট দিয়েছে। কিউরোলেটার যে বলে, ‘রেইন অর শাইন, উই ডেলিভার’ সে কথাটা মিথ্যে নয়।
পরেরদিন অ্যাপলবামকে ধন্যবাদ জানিয়ে লিখে দিয়েছিলেন, বাড়িটা বিক্রি করার কোন ইচ্ছে তাঁর আপাতত নেই। তবে স্বরলিপিগুলো এক্ষুনি পুড়িয়ে ফেললে কোন আপত্তি করবেন না। ওতে কী থাকতে পারে সে তাঁর ঢের জানা আছে।
আন্তেনিও বাড়ি ছেড়েছেন একত্রিশ বছর আগে। একত্রিশ বছরে পাথরেও ক্ষয় হয়, বদলে যায় নদীর স্রোত, মাথার উপর গনগন করে জ্বলতে থাকা সূর্যটাতে গ্রহণ লাগে কয়েকবার।
ব্রকপোর্টের এইদিকটা ছেলেবেলার জেইন স্ট্রীটের মতো, রাস্তাগুলোতে সেই আদ্যিকালের টিউবলাইটের আলো, ছোটো ছোটো বাড়ি, বাড়িগুলোর চারিধার জুড়ে রূপকথার দৈত্যের মতো বুনো বুনো গাছ। মধ্য দুপুরে কাঠের ডেকে বসে চায়ের পেয়ালায় চুমুক দিতে দিতে হঠাৎ হঠাৎ চমকে উঠেন আন্তেনিও ক্যাপেলো। হাতছানি দিয়ে ডেকে যায় ফেলে আসা কৈশোর, ডিমের কুসুমের মতো টলমল একফালি শৈশব।
আন্তেনিও টের পান তাঁর গ্রহণ লেগেছে। দশ বছর ফুরোতে আর মাস খানেক বাকি।
মন্তব্য
মাঝে মাঝেই ভাবি কেমন করে শব্দের পর শব্দ বসিয়ে যান যে ম্যাজিকের মত এতো নিখুত একটা ছবি ফুটে ওঠে যে মনে হয় গল্পের লোকটার ঘরের মধ্যেই বসে আছি, ইচ্ছে করলেই লোকটা ছোঁয়াও যাবে। কিন্তু আজকাল আপনার গল্প গুলো মাথার ওপর দিয়ে যায়। সাহিত্যবোধটা হয়তো অতখানি নয় যে বুঝতে পারবো। ফলে অশিক্ষিত মানুষ যেমন পিকাসোর ছবির রঙের জেল্লাটা দেখেই খুশি আমার আনন্দ গ্রহণটাও তার বেশি হতে পারছেনা। আমারই দুর্ভাগ্য।
---------------------------------------------------
মিথ্যা ধুয়ে যাক মুখে, গান হোক বৃষ্টি হোক খুব।
বেশুমার দিগগারির মধ্যে আছি ভাই। লিখতে ইচ্ছা করে না আজকাল। জোর করে লিখি যাতে লিখতে ভুলে না যাই।
-----মোখলেস হোসেন।
লেখা কোনক্রমেই বন্ধ করলে চলবেনা ভাই। অনেক গল্প আপনার কাছে শোনার অপেক্ষায় আছি।
---------------------------------------------------
মিথ্যা ধুয়ে যাক মুখে, গান হোক বৃষ্টি হোক খুব।
ভাল লাগছে আপনার লেখা।
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।
পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ নিবিড়।
---মোখলেস হোসেন
গল্প পড়েছি - জানান দিয়ে গেলাম।
ইয়ে মানে , মোখলেস ভাইকে হাচল করার কোন দাবি দাওয়া সম্বলিত কোন প্লাকার্ড কোথাও চোখে পড়েনি , তাই আমি আমার স্মারকলিপি প্রদান করে গেলাম ,
হা হা হা। না পড়ে উপায় আছে! ধাক্কাধাক্কি করেও তো কেউ লেখাটা সরাচ্ছে না নীড়পাতা থেকে। ধন্যবাদ মেঘলা মানুষ আপনার স্মারকলিপির জন্য।
-----মোখলেস হোসেন।
মেঘলা মানুষের স্মারকলিপিতে সাথে আছি। দশ বছর পুরো হলে কী কী হতে পারে- গ্রহণের সাথে তার সম্পর্ক কী, তা অবশ্য বুঝিনি। তাতে কী, আপনার লেখা মানেই সাধারণের চেয়ে বেশি কিছু।
...............................................................
“আকাশে তো আমি রাখি নাই মোর উড়িবার ইতিহাস”
লেখাটি পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ দেবদ্যুতি। এই সামারে ব্রকপোর্টে এক বন্ধুর কাছে বেড়াতে গিয়েছিলাম দুদিনের জন্য। বন্ধুর বাড়ির পাশেই আরেকটা বাড়ি, সে বাড়ির ডেকে বছর পঞ্চাশের একজন লোক বসে থাকতো ঘণ্টার পর ঘণ্টা। লোকটা একা থাকে, বাড়ি ছেড়ে খুব একটা কোথাও যায় না। তার কাছে আসে না কেউ। এই প্লটটা তখন মাথায় এলো। এটা একটা স্কেচ মাত্র। ইচ্ছে আছে সময় নিয়ে বড় পরিসরে লেখার। সচলে দিয়ে রাখলাম যাতে ভুলে না যাই।
----মোখলেস হোসেন।
নতুন মন্তব্য করুন