কিছু নিঃশব্দ মৃত্যু

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: রবি, ২৬/০৮/২০০৭ - ১০:২৩পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

ফরিদ @ বইমেলা.কম

আজকাল আর পুরনো ইয়াহুর একাউন্টটা তেমন ব্যাবহার করি না। তাও অভ্যাসবশে কদিন আগেই খুলেছিলাম। কিছু দরকারী, কিছু অনাহুত, কিছু অপ্রয়োজনীয় খবর জমা হয়ে আছে। এক কোনায় পেলাম ডেথ সেন্টেন্স। ইয়াহু তার ফটো সার্ভিস বন্ধ করে দিচ্ছে, এখন হয় আমাকে আমার ছবিগুলো ডাউনলোড করে নিতে হবে, নাহয় দ্বিতীয় অপশন হল ইয়াহুর কেনা নতুন খেলনা ফ্লিকারে ছবিগুলো সরিয়ে নেবার সুযোগ দিচ্ছে। সেটি আমি ব্যাবহার করতে পারি। দেখে ছোট একটি শ্বাস ফেললাম।

প্রযুক্তির বাজারে এখন চলছে তুমুল বিকিকিনি। ২০০২-৩ থেকে এখন পর্যন্ত যতগুলো মোড় ঘোরানো টেকনলজী কম্পানী বাজারে এসেছিল, তাদের দেখে আইটি বুমের একটা আশা করেছিলাম। কিন্তু দুচার বছর না ঘুরতেই দেখলাম প্রায় সবাই ই বিকিয়ে গেল। গুগল তুলে নিল ব্লগার, রাইটলি, পিকাসা, অর্কুট আর ইউটিউব। ইয়াহু জলদি করল ফ্লিকার এক করে নিতে। ইবে খেয়ে নিল পেপ্যাল আর গামট্রিকে। আমাজন থাকতে দিল না এলেক্সাকে। আইটি বাবল বার্স্টের আধা যুগ পরে দেখছি ঘুরেফিরে সেই পরিচিত মুখগুলোই। বারবার মনে পড়ে যাচ্ছে এপল আর নেক্সটটেকের গল্পটা। সেটা মনে হয় আরেকদিন শোনাব আপনাদেরকে।

এই তুমুল বিকিকিনির মধ্যেই চলছে চুপিচুপি গুপ্তহত্যা। বড়ো কম্পানীগুলো বিশাল টাকা দিয়ে কিনে নিচ্ছে আগের ছোট কোম্পানীর ইউজারবেস। আর দেখা যাচ্ছে টেকওভারের আগ পর্যন্ত তারা নিজেরাই সেই সার্ভিস দিচ্ছিল। তাই পয়সা ছিটিয়ে যখন ইউজারবেস আর টেকনলজী দুটোই চলে আসছে, তখন আর নিজের সার্ভিসের পিছনে পয়সা নষ্ট করার উৎসাহ আর ধরে রাখা মুশকিল। তাই ইউটিউব কিনে নিয়ে যখন ইন্টিগ্রেশনের কাজ প্রায় শেষের দিকে, তখন গুগল নিজের গুগল ভিডিওর পেইড কন্টেন্টের অংশটা বন্ধের ঘোষণা দিয়ে দিল। আর গুগল ভিডিও যদিও টেকনলজী আর ব্যাবহারের সুবিধার দিক থেকে ইউটিউবের চেয়ে অনেক এগিয়ে ছিল, কিন্তু ব্যাবহারকারী কম হবার কারণে তাকে এখন চুপিচুপি সরে পড়ে পিছনের সিটে বসে আংগুল চুষতে হচ্ছে।

একই ঘটনা গুগল আনসারস। গুগলের প্রশ্নোত্তরের অসাধারণ একটা সার্ভিস ছিল যেখানে ওজনদার প্রশ্ন করে মানুষ টাকা খরচ করে ভাল মানের গবেষণা করা জবাব পেত। কিন্তু ইয়াহুর প্রশ্নোত্তরের ঠেলায় (যেটা বিরক্তিকর রকমের বাজে) আর কাজ করবে না বলে ঘোষনা দিয়ে দিল। তবে আগের সাওয়াল জবাবগুলো এখনো দেখা যাবে।

ফ্লিকার এসে খুন করে দিল সেই প্রাচীন ইয়াহু ফটোজ সার্ভিসকে। এখন ফ্লিকার নাও নাহলে মর। মাঝে মধ্যেই স্ক্রীনের দিকে তাকালে নিজেকে বুড়ো বুড়ো মনে হয়। মনে হয় অনেক বেশী দেখে ফেলেছি পৃথিবীর। আর কত দেখব। চুপচাপ লিঙ্কটিতে ক্লিক করলাম। অনুরোধ করলাম করজোড়ে, মেরোনা আমায়, বাঁচতে দাও নতুন পৃথিবীতে। ইয়াহু ফটোর বদলে ফ্লিকারে।

ফরিদ বলছি। সচল কতটা সচল দেখছি টেস্ট করে।


মন্তব্য

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

ফরিদ ভাই,
লেখা দেবার জন্য অনেক ধন্যবাদ। শুরুতে আপনার নামটা জুড়ে দেবো? আপনি জুড়লে আবার মডারেশনে যাবে। অবশ্য তাতেও সমস্যা নেই।

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

অতিথি লেখক এর ছবি

মাহবুব ভাই,
গুরু, লজ্জা দিলেন, এইটা এমনি একটা আজাইরা পোস্ট। আমার লেখা যে কি জিনিষ সেইটা সবাই ভালমতই জানে। সামনে পিছে কোথায় কি নাম ঢুকাবেন, আপ কি মর্জি। আমি শুধু টেস্টো করছিলাম আপনাদের সিস্টামখানা কেমন।

দিব্যি খাসা জিনিষ, আরো তরতরিয়ে আগিয়ে নিয়ে যান। মাঝে মধ্যে ঢুঁ মেরে যাবনে।

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

আপনার নাম জুড়ে দিলাম। প্রশংসার জন্য ধন্যবাদ। হাসি

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

অতিথি লেখক এর ছবি

পুরো লেখাটা যে দুবার চলে এসেছে সেটা কি আমার কুকীর্তি না মডদেবের স্লিপ অফ স্ট্রোক? এট্টু ছেঁটে দেবেন সময় পেলে

বিপ্লব রহমান এর ছবি

ফ্লিকার এসে খুন করে দিল সেই প্রাচীন ইয়াহু ফটোজ সার্ভিসকে। এখন ফ্লিকার নাও নাহলে মর। মাঝে মধ্যেই স্ক্রীনের দিকে তাকালে নিজেকে বুড়ো বুড়ো মনে হয়। মনে হয় অনেক বেশী দেখে ফেলেছি পৃথিবীর। আর কত দেখব। চুপচাপ লিঙ্কটিতে ক্লিক করলাম। অনুরোধ করলাম করজোড়ে, মেরোনা আমায়, বাঁচতে দাও নতুন পৃথিবীতে। ইয়াহু ফটোর বদলে ফ্লিকারে।

ফরিদ,

ভাল লিখেছেন। আরো লেখা চাই।


একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...

অমিত আহমেদ এর ছবি

ফরিদ ভাই, লেখাটা চমৎকার হয়েছে।
সচলে দেবার জন্য ধন্যবাদ।
অন্য ব্লগে থাকলে পড়ার সৌভাগ্য হতো না।


আমার বেলা যে যায় সাঁঝ-বেলাতে
তোমার সুরে সুরে সুর মেলাতে

সুমন চৌধুরী এর ছবি

ভালৈছে
.......................................
ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ

কিংকর্তব্যবিমূঢ় এর ছবি

ভাল লেখা ... আরও লিখেন ...

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।