'পিপল পাওয়ার এন্ড পাওয়ার অফ হোপ'।। আইরিন খানের সাথে একটি আলাপচারিতা

হাসান মোরশেদ এর ছবি
লিখেছেন হাসান মোরশেদ (তারিখ: বিষ্যুদ, ১০/০১/২০০৮ - ৯:১৯পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

..

প্রশ্নঃ আপনি দায়িত্ব নেয়ার পর এমনেষ্টি ইন্টারন্যাশনাল কতটুকু বদলেছে এবং এমনেষ্টি আপনাকে কতটুকু বদলে দিয়েছে?

এমনেষ্টি বদলেছে-এই বদলের কিছুটা নিজস্ব পরিকল্পনাতেই ছিলো আর বাকীটুকু বদলেছে মুলতঃ বৈশ্বিক পরিবর্তনের কারনে ।
আগষ্ট ২০০১ এ যখন আমি দায়িত্ব নেই,সে সময়ে এমনেষ্টির ম্যান্ডেট রিভিউ হয়েছিল এবং সিদ্ধান্ত হয়েছিল সংগঠন মুলতঃ অর্থনৈতিক ও সামাজিক অধিকার বিষয়ে কাজ করবে । কিন্তু মাত্র দু সপ্তাহের মধ্যে ৯/১১ এর ঘটনা ঘটলো, একে কেন্দ্র করে মানবাধিকারের চরম বিপর্যয় শুরু হলো বিশ্বজুড়ে । তাৎক্ষনিক ভাবে আমাদের মনে হলো বড় বড় এজেন্ডা বাদ দিয়ে ব্যক্তির অধিকার ও নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করাটাই দরকারী এখন ।
আমরা দেখলাম কয়েকযুগের কর্মকান্ডের মাধ্যমে যে সকল নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকার আমরা অর্জন করতে পেরেছিলাম, ৯/১১ এর পর তা ভুলিন্ঠিত হচ্ছে । যেহেতু সব অধিকার একটা আরেকটার সাথে সম্পর্কিত,তাই সবকিছুই হুমকীর সম্মুখীন হলো এবং আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম এটা প্রতিরোধ করতে হবে আগে ।
আমরা একটা জটিল পরিস্থিতির সম্মুখীন হলাম । আমাদের সামনে প্রশ্ন এসে দাঁড়ালো-এই পরিস্থিতি কিভাবে মোকাবেলা করবো? আমরা কি সাইডলাইনে থেকে শুধু মন্তব্য করে যাবো নাকি সরাসরি গিয়ে পাশে দাঁড়াবো প্রতিটি দেশের মানবাধিকার সংগঠনগুলোর পাশে ? এ সময় আমাদের কর্মীরা ও আক্রান্ত হয়েছেন নেপাল,জিম্বাবুয়ে সহ অনেক জায়গায় ।
এভাবে অনেক জায়গায় আমরা স্থানীয় মানবাধিকার ইস্যুগুলোতে জড়িয়ে পড়েছি,যা মুলতঃ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আন্দোলনের অংশ মাত্র ।
তো এভাবে দেখলে এমনেষ্টি অনেক বদলেছে এ সময়ে ।

তবে অনেকক্ষেত্রে এখনো আমরা সেই পুরনো আমরাই আছি । সেই শুরু থেকে এখনো আমাদের মুল লক্ষ্য একই- ব্যক্তির অধিকার সমুন্নত রাখা এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করা

আমি কি বদলেছি?
হ্যাঁ, এমনেষ্টি ইন্টারন্যাশনাল এমন এক সংগঠন যা আপনাকে বদলাবেই । এই দিনগুলোতে আমাকে অনেক অভিজ্ঞতা ভেতর দিয়ে যেতে হয়েছে,অনেক মানুষের সাথে দেখা হয়েছে । আমি শিখেছি কি করে মানূষ পরিবর্তন আনছে এবং স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক উদ্যোগ গুলোর সমন্বয় ঘটিয়ে মানবাধিকার পরিস্থিতির আরো পরিবর্তন ঘটানো সম্ভব ।

প্রশ্নঃ গত ছয়বছরে এমনেষ্টির বড় অর্জন কি কি?

মানবাধিকার ইস্যুর প্রতি মানুষের দৃষ্টি ফিরিয়ে আনা এবং প্রমান করা যে মানুষের সম্মিলিত শক্তি পরিস্থিতির পরিবর্তন ঘটাতে পারে ।
যেমন, গত বছর আমাদের যুদ্ধবিরোধী সমাবেশ দশলক্ষ মানুষ যোগ দিয়েছেন, জাতিসংঘকে আমরা বাধ্য করতে পেরেছি অস্ত্র ব্যবসা নিয়ন্ত্রনের জন্য রেজুলেশন পাশ করতে । এই কাজ করার জন্য চার বছর ধরে শক্তিশালী দেশগুলোকে বুঝাতে হয়েছে । কাজ শেষ হয়নি এখনো,এখনো অনেক বাকী ।
গুয়ানতানামো ইস্যু ও 'সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধে'র নামে মানবাধিকার লংঘনের বিরুদ্ধে আমরা বিশ্বব্যাপী জনমত গঠন করেছি এবং মিডিয়াগুলোতে কার্যক্রম চালিয়েছি । ব্যক্তিপর্যায়ে নির্যাতিতদের নিয়ে আমাদের কাজ করতে হয়েছে ।
এছাড়া পক্ষপাতমুলক বিচার,মৃত্যুদন্ড, অস্ত্রব্যবসা এসব নিয়ে আমাদের নিয়মিত কার্যকরম তো চলছেই ।

প্রশ্নঃ সেক্রেটারী জেনারেল হিসেবে কি আপনি আপনার প্রত্যাশা পুরন করতে পেরেছেন?

আমি এমনেষ্টিতে এসেছি যাতে আরো 'কার্যকর' ভাবে তাই করতে পারি, আসলে যা আমি করতে চাই । এর আগে ২০ বছরের বেশী সময় ধরে কাজ করেছি জাতিসংঘে,শরনার্থী বিষয়ে । কাজ করতে হয়েছে উপদ্রুত এলাকায়,জরুরী অবস্থার মধ্যে । মানবাধিকার একটা সিস্টেম ,শরনার্থীরা সেই সিস্টেম ফেইলোরের করুণ উদাহরন । নিজ দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি চুড়ান্ত খারাপ হলেই,মানুষ বাধ্য হয় শরনার্থী হতে ।

আমরা এমনেষ্টি ইন্টারন্যাশনাল এমন অনেক গুরুতর ও ভয়াবহ পরিস্থিতির মোকাবেলা করতে সক্ষম হয়েছি । নেপালের কথা বলতে পারি । গত এক যুগ থেকে আমরা সশস্ত্র সংঘাত নিরসনে এমনেষ্টি কাজ করছিলো । আমরা জনগনের উপর আস্থা রেখেছি,সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় ও ক্যাম্পেইন করেছি মানবাধিকার রক্ষার জন্য এবং শেষ পর্যন্ত নেপালে পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে ।
আমি সেই পরিস্থিতি বদলাতে চেয়েছি যে পরিস্থিতিতে মানুষ শরনার্থী হতে বাধ্য হয় এবং আমার প্রত্যাশা অনুযায়ীই এমনেষ্টি এ ক্ষেত্রে অনেক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে ।

প্রশ্নঃ এমনেষ্টির ২০০৭ সালের রিপোর্টে 'আতংকের রাজনীতি'র কথা বলা হয়েছে । এটা কিভাবে মোকাবেলা করা হবে?

আতংক খুব শক্তিশালী এবং অবশ্যই ক্ষতিকর মানবিক আবেগ ।
দুঃখজনকভাবে গত ছয়বছরে একে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার হয়েছে ব্যাপকমাত্রায় । কখনো সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলার নামে,কখনো বা রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার অজুহাতে ।
বোমা আতংক, বিদেশী আতংক,রিফিউজী আতংক, অভিবাসী আতংক । মুলতঃ সমাজে বিভক্তি সৃষ্টির উদ্দেশ্যে রাজনীতিকরা দেশে দেশে এরকম আতংক ছড়ানোর রাজনীতিতে মেতে উঠেছেন ।

এর মোকাবেলায় মানবাধিকার কর্মীরা আরো শক্তিশালী অস্ত্র প্রয়োগ করবেন , তাহলো -আশাবাদ ।
এমনেষ্টি ইন্টারন্যাশনালের মেসেজ খুব স্পষ্ট । মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নয়ন ঘটাতে হবে আরো উন্নততর ও বহুরৈখিক বিশ্বব্যবস্থার প্রয়োজনেই । সাধারন মানুষের ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করতে হবে যেনো তারা নিজেরা নিজেদের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহন করতে পারে ।
আতংক আমাদেরকে বিভক্ত করে । আমরা ঐক্যবদ্ধ হতে পারবো,যদি আমরা আমাদের অধিকারের ব্যাপারে সচেতন থাকি । তুমি আমার অধিকারকে সম্মান করবে, আমি সম্মান করবো তোমার অধিকার । এই পারস্পরিক বিনিময়ই কিন্তু নিরাপত্তার আসল কাজটুকু করে ।

মানবাধিকার সারা পৃথিবীর সব মানুষের জন্য একটি একক বিষয় যা বিভক্ত পৃথিবীকে একসাথে রাখতে পারে । রাজনৈতিক নেতৃত্বের উপর আমাদের চাপ সৃষ্টি করতে হবে যেনো তারা পাশ না কাটিয়ে মানবাধিকার ইস্যুগুলোকে গুরুত্ব দেন ।

পরিবেশসংক্রান্ত ইস্যুগুলো নিয়ে যেমন রাজনীতিবিদদের একটা বোধ আছে যে এটা একটা গ্লোবাল ইস্যু,গ্লোবালি এটাকে মোকাবেলা করতে হবে। ঠিক এরকম মানবাধিকারের ক্ষেত্রে ও তাদের এই বোধ জাগ্রত হতে হবে । মানবাধিকার ও একই রকম গ্লোবাল ।
এক একদেশে মানবাধিকারের সংজ্ঞা এক এক রকম হতে পারেনা । ব্যক্তির উপর আক্রমন হলে তা পৃথিবীর সকল দেশেই মানবাধিকার লংঘন বলে বিবেচিত হতে হবে ।

বামথেকেঃ দারফুরের শরনার্থীদের সাথে, কঙ্গোর এক শিশু যোদ্ধার সাথে, লেবাননে রেডক্রস কর্মীবামথেকেঃ দারফুরের শরনার্থীদের সাথে, কঙ্গোর এক শিশু যোদ্ধার সাথে, লেবাননে রেডক্রস কর্মী

প্রশ্নঃ নারী অধিকার বিষয়ে আপনার ভাবনাগুলো কিরকম?

আমার জন্ম ও বড় হয়ে উঠা বাংলাদেশের একটা মোটামোটি রক্ষনশীল পরিবারে । আমরা তিনবোন । সেইসময়ের জন্য এটা খুব প্রচলিত না হলে ও, আমাদের পরিবার মেয়েদের শিক্ষা ও স্বাধীনতার ব্যাপারে সচেতন ছিলেন । আমাদেরকে দেশের বাইরে পাঠাতে ও কোন দ্বিধা করেননি ।
কিন্তু সবসময়ই আমার চারপাশে ঘটতে থাকা বৈষম্যগুলো খেয়াল করেছি । শরনার্থীদের নিয়ে কাজ করার সময় দেখেছি,যুদ্ধ ও সংঘাতের সবচেয়ে খারাপ শিকার হয় নারীরা ।
কিন্তু আমার নিজের দেশেই দেখেছি, যুদ্ধের পর সমাজ বির্নিমানে নারীরাই সবচেয়ে গুরুত্বপুর্ন ভূমিকা নেয় । একটা উন্নয়নকামী সমাজের জন্য নারী অধিকার অর্থ্যাৎ নারীর সমানাধিকার নিশ্চিত করা খুব জরুরী ।
আমি দায়িত্ব নেয়ার পর এমনেষ্টির পক্ষ থেকে ' স্টপ ভায়োলেন্স এগেনস্ট উইমেন্স' ক্যাম্পেইন চালানো হয়েছে । আমরা শুধু আইন ও পলিসি বদলানো নয়,কাজ করছি নারী অধিকার বিষয়ে মানুষের মনোভাব বদলানোর জন্য ।


প্রশ্নঃ নিকট ভবিষ্যতে আমাদের এক্টিভিষ্টদের জন্য মুল চ্যালেঞ্জ কি হতে পারে?

ভুক্তভোগী নয় এমন মানুষকে তাদের 'কমফোর্ট জোন' থেকে বের করে নিয়ে আসা যেনো তারা অন্যের সমস্যাগুলো উপলব্ধি করতে পারে এবং বিশ্বের অন্যান্য প্রান্তে কি ঘটছে সে বিষয়ে একটু হলেও খোঁজ খবর রাখে ।
মানবাধিকার কর্মীদের এই মেসেজটা বারবার উচচারন করতে হবেঃ
তোমার অধিকার প্রয়োগ করো আরেকজনের অধিকার অর্জনের জন্য ।
এমনেষ্টির শুরুই হয়েছিলো এরকম একটা ভাবনা থেকে ।

প্রশ্নঃ মানবাধিকার পরিস্থিতি অনুকুল নয় ,এমন অঞ্চলগুলোতে কি এমনেষ্টির কার্যক্রম বাড়ছে?

এরকম অনেক জায়গাতেই আমরা সরাসরি কাজ করছিনা বরং স্থানীয় মানবাধিকার সংস্থাগুলোর সাথে নিবিড় যোগাযোগ রাখছি । আগেই বলেছি স্থানীয় উদ্যোগকেই আমরা বেশী জোর দিচ্ছি । এইসব সংস্থাকে আমরা সমর্থন ও সহযোগীতা করে যাচ্ছি । সচেতনতা ও তথ্য প্রবাহ নিশ্চিত করার জন্য আফ্রিকায় রেডিও প্রজেক্ট এবং এশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যে তরুন্দের ইন্টারনেট ব্যবহারকে আমরা উৎসাহিত করছি ।

প্রশ্নঃএমনেষ্টি ইন্টারন্যাশনালের সেক্রেটারী জেনারেলের দৈনন্দিন কাজের রুটিন কেমন?

'হেক্টিক,ভেরিড,চ্যালেঞ্জিং'------
সদস্যদের সাথে সভা,সরকারগুলোর সাথে আলোচনা, মানবাধিকার কর্মীদের সাথে যোগাযোগ ,অনেক বৈচিত্রপুর্ন । প্রতিটি দিনই সম্পুর্ন ভিন্ন রকম আগের দিনের থেকে ।
এখন পর্যন্ত আমাকে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা ৪০ টি সেকশনে যেতে হয়েছে এর মধ্যে এজিএম থেকে শুরু করে ছোট গ্রুপ মিটিং পর্যন্ত ।
এই ব্যাপারটা খুব উৎসাহ জোগায় যখন দেখি সারা পৃথিবীতে অসংখ্য মানুষ স্বেচ্ছায় এমনেষ্টির জন্য সময়,শ্রম ও অর্থ দান করছে ।

প্রশ্নঃ আপনাকে তো অনেক সমস্যাসংকুল জায়গায় যেতে হয়েছে,এর মধ্যে কোনটা সবচেয়ে ঝুঁকিবহুল ছিলো?

গাজা ও পশ্চিম তীরের সাম্প্রতিক ট্রিপ । এখানে আমি বহুবার গিয়েছি কিন্ত প্রতিবারই একই রকম । সমাধানের কোন প্রকৃত উদ্যোগ নেই । পুরো এলাকা একটা বড় কারাগার ছাড়া আর কিছু নয় । অনিশ্চিত ভবিষ্যত ও নিরাপত্তাহীন মানুষের দুর্ভোগ অবর্ননীয় ।

যখন জাতিসংঘের শরনার্থী বিষয়ক কর্মী ছিলাম তখন সেখানে আমি খাদ্য,কাপড়,তাবু-এরকম মেটেরিয়াল সাহায্য করতে পারতাম । কিন্তু মানবাধিকার কর্মী হিসেবে এখন আমার কাজ আরো দুরুহ ।
মানবাধিকার কর্মী হিসেবে আপনি কোন উপস্থিত মেটেরিয়াল সমাধান দিতে পারেননা । কিন্তু আক্রান্ত ও বিপর্যস্তদেরকে আপনার এই ভরসা দিতে হবে যেনো তারা আপনার কাছে তাদের সমস্যা খুলে বলে,যেনো তারা বিশ্বাস করে যে সত্যিই আপনি তাদের সমস্যাগুলো অন্যদের কাছে পৌঁছে দেবেন এবং এর মাধ্যমে পরিবর্তন আসবে ।
এমনেষ্টি ইন্টারন্যাশনাল সরাসরি কোন পরিবর্তন আনতে পারেনা,কিন্তু পরিবর্তন হবেই, এই আশাবাদটুকু বাঁচিয়ে রাখার জন্য কাজ করে ।

------------।।----------------------।।-------------------








এমনেষ্টি রিপোর্ট ২০০৭


এ সময়ে মানবাধিকার পরিস্থিতিকে বিপর্যস্ত করছে বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়া 'আতংকের রাজনীতি' । এমনেষ্টি ইন্টারন্যাশনাল রিপোর্ট ২০০৭ এর মুখবন্ধে আইরিন খান লিখেন : 'বিশ্ব পরিস্থিতি শীতল যুদ্ধের সময়ে ফিরে গেছে,বরং কোন কোন ক্ষেত্রে এখন সে সময়ে থেকে ও ভয়ংকর । নিরাপত্তার মানে মানবাধিকার লংঘন ঘটছে চরম ভাবে '
এ অবস্থার উন্নয়নের জন্য প্রয়োজনে জাতিসংঘের সাহসী ভূমিকা, একটি সত্যিকারের কার্যকর আন্তর্জাতিক আদালত , অস্ত্র বিক্রী বন্ধের চুক্তি কার্যকর- এবং একটি আতংক মুক্ত ভবিষ্যত যা নিশ্চিত করবে আশা,মানবাধিকার ও গনতন্ত্র ।







২০০৭:: ফ্যাক্টস এন্ড ফিগারস


    পৃথিবীর ১৫০ টি দেশে এমনেষ্টির এক্টিভিষ্ট আছে ২.২ মিলিয়ন
    ২০০৬ সালে এমনেষ্টি পৃথিবীর ৭৭ টি দেশে গিয়েছে

    ৫৭টি দেশে 'প্রিজনার অব কন্সাইন' রয়েছে

    প্রতি ৩ জনের ১ জন নারী তার দাম্পত্য জীবনে সহিংসতার শিকার

    অন্ততঃ ২ মিলিয়ন মানুষ পাচার হয়েছেন যাদের বেশিরভাগই নারী
    সারাবিশ্বে সংঘটিত সশস্ত্র সংঘাতে ক্ষতিগ্রস্তদের ৭০ ভাগই বেসামরিক নাগরিক

    অস্ত্রবিক্রী নিষিদ্ধ করন চুক্তি'র ক্যাম্পেইনে অংশ নিয়েছিলো ১.২৫ মিলিয়ন এমনেষ্টি কর্মী

    ২০০৬ সালে ২৫ টি দেশে মৃত্যুদন্ড কার্যকর হয় ১৫৯১ । অন্ততঃ আরো ২০ হাজার মৃত্যুদন্ড কার্যকর হবার অপেক্ষায়

    পুলিশ ,নিরাপত্তাবাহিনী ও সরকারের গোপন বাহিনীর হাতে বিরোধীরা নির্যাতিত হয়েছেন ১২০ টি দেশে

    ২০০৬ এর শেষে ৪০ টি দেশের প্রায় ৬০০ নাগরিক বন্দী ছিলেন গুয়ানতানামো কারাগারে ।





***
***
আইরিন খানের এই সাক্ষাৎকার গ্রহন করেছিলেন MAGGIE PATERSON এবং প্রকাশিত হয়েছিলো AMNESTY MAGAZINE এর JULY/AUG 2007 ISSUE তে


মন্তব্য

হাসান মোরশেদ এর ছবি

যা বাবা!
লেখা তো দেখি গায়ে গতরে বিশাল হয়ে গেলো
----------------------------------------
শমন,শেকল,ডানা

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

মুহম্মদ জুবায়ের এর ছবি

শান্তির ললিত বাণী শুনাইবে ব্যর্থ পরিহাস...

তবু কাউকে না কাউকে এই শান্তি, মানবতা ও যুক্তির লড়াই জারি রাখতেই হবে। জানি না ঠিক কীভাবে, কিন্তু এই ধরনের আন্দোলনকে আরো জনপ্রিয় ও গ্রহণযোগ্য করা বোধহয় সম্ভব।

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

নিঘাত তিথি এর ছবি

পরিবেশসংক্রান্ত ইস্যুগুলো নিয়ে যেমন রাজনীতিবিদদের একটা বোধ আছে যে এটা একটা গ্লোবাল ইস্যু,গ্লোবালি এটাকে মোকাবেলা করতে হবে। ঠিক এরকম মানবাধিকারের ক্ষেত্রে ও তাদের এই বোধ জাগ্রত হতে হবে । মানবাধিকার ও একই রকম গ্লোবাল ।
এক একদেশে মানবাধিকারের সংজ্ঞা এক এক রকম হতে পারেনা । ব্যক্তির উপর আক্রমন হলে তা পৃথিবীর সকল দেশেই মানবাধিকার লংঘন বলে বিবেচিত হতে হবে ।

এটাই যদি হত। একটা শক্তিশালী এবং কার্যকরী আন্তর্জাতিক আদালতের খুব প্রয়োজন আসলেই।
----------------------------------------------------
আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ

----------------------------------------------------
আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ

আড্ডাবাজ এর ছবি

পড়লাম। আইরীন খানকে নিয়ে খুব গর্ববোধ করলাম। পারলে বিবিসি'র বাংলাদেশ সংলাপে আইরীন খানের অংশগ্রহণটুকু দেখে নেবেন। এখনও অবশ্য আপলোড হয়নি। দেখলে ভাল লাগবে।

আজকে এমনেস্টী বাংলা সাইটের উদ্বোধনের ঘোষণা দিল। চলুক মানবাধিকারের সংগ্রাম। ধন্যবাদ।

দিগন্ত এর ছবি

"দুঃখজনকভাবে গত ছয়বছরে একে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার হয়েছে ব্যাপকমাত্রায় । কখনো সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলার নামে,কখনো বা রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার অজুহাতে ।"

- একদম এটা আমাদের দেশের ক্ষেত্রে ১০০% সত্য। এই রাজনীতি গত কয়েকবছরে ঊর্ধ্বগতি লাভ করেছে দ্রুতবেগে।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

হাসান মোরশেদ এর ছবি

আইরিন খানের সাম্প্রতিক সফর বিশেষ করে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের ব্যাপারে তার স্পষ্ট বক্তব্যের পর পরই বাংলাদেশের কোন কোন মিডিয়ায় এবং কোন কোন ব্লগ ফোরামে কেউ কেউ এমনেষ্টিকে নিয়ে আজগুবি ধোঁয়াশা তৈরী করছেন ।

তথ্য খুঁজে বের করছেন- '৭১ এ নাকি এমনেষ্টি গনহত্যা সমর্থন করেছিল ।
কেউ আবদার করছেন- যুদ্ধাপরাধী বিচার দাবী করলেন আইরিন কিন্তু ২৮ আগষ্টের হত্যার বিচার তো দাবী করলেননা!
কেউ কেউ আরো আগ বাড়িয়ে জানাচ্ছেন- এমনেষ্টি নাকি ইউরোপ ও আমেরিকার টাকায় চলে...

সচলায়তনের সচেতন ব্লগার ও পাঠকদের নতুন করে জানানো বাহুল্য মাত্র । তবু স্রেফ ক্লারিফিকেশনের জন্য লিখে রাখছিঃ

এমনেষ্টি ইন্টারন্যাশনাল একটি স্বেচ্ছাসেবকমুলক মানবাধিকার সংস্থা মাত্র । এটা জাতিসংঘ নয় যে দুনিয়ার সব সমস্যা সমাধান না হওয়ার দায় তার ।

এমনেষ্টি নিশ্চয়ই অনেকের ডোনেশন নেয় কিন্তু এমনেষ্টির মুল আর্থিক ভিত্তি হচ্ছে তার এক্টিভিষ্টদের চাঁদা । এই মুহুর্তে মোট একটিভিষ্ট প্রায় ২২ লক্ষ । যুক্তরাজ্যের এক্টিভিষ্টরা বছরে সাড়ে সাত থেকে বারো/পনের পাউন্ড চাঁদা দেন । এ ছাড়া সব বড় ছোট গ্রুপগুলোর বছর জুড়েই ফান্ড কালেকশন প্রোগ্রাম থাকে ।

রমজান মাসের সার রাত লন্ডনের বাংলা চ্যানেল গুলো জুড়ে যখন মসজিদের চাঁদা তোলার বিবমিষাময় প্রোগ্রাম চলতে থাকে( যারা দেখেছেন তারা মানবেন কি রকম লোলুপ,হাস্যকর ও অপ্রয়োজনীয় এই অনুষ্ঠানগুলো) তখন দারফুরের নিরন্ন মুসলমানদের জন্য ফুটপাতে দাঁড়িয়ে চাঁদা তুলে এমনেষ্টির ছেলেমেয়েরা ।

--------------------------------------
শমন,শেকল,ডানা

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।