'India rejects Pakistan response to PoW offer' ।। ২৬ এপ্রিল ১৯৭৩

হাসান মোরশেদ এর ছবি
লিখেছেন হাসান মোরশেদ (তারিখ: রবি, ১৯/০৪/২০০৯ - ৬:১৩পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

বাংলাদেশের সাথে আলোচনাক্রমে ভারত সরকার মধ্যস্থতাকারী সুইস দূতাবাসের মাধ্যমে পাকিস্তানকে জানিয়েছে, ভারত ও বাংলাদেশের দেয়া যুদ্ধবন্দী বিনিময় প্রস্তাবে পাকিস্তানের প্রতিক্রিয়া তাদের কাছে গ্রহনযোগ্য নয় ।
26APR73
গত সপ্তাহে ভারত ও বাংলাদেশ যৌথভাবে এই প্রস্তাব পেশ করেছিল । এতে তিনটি আলাদা আলাদা যুদ্ধবন্দী গ্রপকে চিহ্নিত করা হয়েছে । ভারতের জিম্মায় থাকা ৯০,০০০ সামরিক ও বেসামরিক পাকিস্তানী, পাকিস্তানে আটকে পড়া ২,০০,০০০ বাঙ্গালী এবং বাংলাদেশে আটকে পড়া প্রায় ২,৬০,০০০ পাকিস্তানী(যারা বিহারী নামে পরিচিত) ।

প্রস্তাবে আরো বলা হয়েছিল- গনহত্যা ও ধর্ষনের অভিযোগে ১৯৫ জন পাকিস্তানী সেনাকর্মকর্তার বিচার করবে বাংলাদেশ । এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য লেঃ জেনারেল নিয়াজী এবং মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলী- যারা ভারতের হাতে বন্দী আছেন ।

পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ভুট্টো তার সামরিক উপদেষ্টা জেনারেল টিক্কা খানের সাথে পরামর্শ শেষে এই প্রস্তাবের প্রতিক্রিয়া জানান । তারা সরাসরি এই প্রস্তাবকে প্রত্যাখান করেন এই যুক্তিতে যে- পাকিস্তানের কোন সামরিক কর্মকর্তার বিচার করার এখতিয়ার বাংলাদেশের নেই, এই অফিসাররা অপরাধী হলে পাকিস্তান নিজেই তাদের বিচার করবে ।
বরং তারা হুশিয়ারী উচ্চারন করেন পাকিস্তানে আটক বাঙ্গালীদের মধ্যে কাউকে গুপ্তচরবৃত্তিতে লিপ্ত পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে ।
এ ছাড়া বিহারী সম্প্রদায়কে ফেরত নিতে পাকিস্তান বাধ্য নয় বলে ও তারা জানান ।
সবশেষে তারা ভারতীয় কর্তৃপক্ষকে ইসলামাবাদ সফরের আমন্ত্রন জানান যাতে শিমলা চুক্তির বাস্তবায়ন বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া সম্ভব হয় ।

তবে ভারত জানিয়েছে যুদ্ধবন্দী সংক্রান্ত প্রস্তাব নিঃশর্তে গৃহীত না হওয়া পর্যন্ত পাকিস্তানের সাথে অন্য কোন আলোচনার সম্ভাবনা নেই ।


মন্তব্য

হাসান মোরশেদ এর ছবি

এই প্রতিবেদনটি এপ্রিল ২৬, ১৯৭৩ এর । দেখা যাচ্ছে '৭৩ এর মাঝামাঝি পর্যন্ত ভারত ও বাংলাদেশ সম্মিলিত ভাবেই যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের বিষয়ে প্রতিজ্ঞ । এটা ভারত-পাকিস্তানের শিমলা চুক্তির এক বছর পরের ঘটনা ।

তাহলে শিমলা চুক্তির মাধ্যমে পাকিস্তানী সেনাকর্মকর্তাদের বিচার তামাদী হয়নি?

তাহলে এদের বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ হলো ঠিক কখন? কোন পরিস্থিতিতে?

পাকিস্তান সরকার বিহারীদের বিষয়ে তাদের দায়বদ্ধতা যেভাবে অস্বীকার করতে পেরেছে বাংলাদেশ সরকার আটকে পড়া বাঙ্গালীদের বিষয়কে সেভাবে এড়াতে পারেনি বলে?
নাকি '৭৪ এর দুর্ভিক্ষ মোকাবেলায় মধ্যপ্রাচ্য-আমেরিকার চাপ ছিলো পাকিস্তানের সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিক(!) করার?

অথবা দুটোই কিংবা অন্য আরো কিছু?

আমি এই মিসিং লিংকটা খুঁজছি ।

কেউ শেয়ার করবেন ?

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

দিগন্ত এর ছবি

আমি জানি পাকিস্তান সরকার ভারতের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা করেছিল যুদ্ধাপরাধিদের ফেরত নেবার জন্য। কোর্ট ভারতকে নির্দেশ দিত সব বন্দীদের পাকিস্তানের হাতে ফিরিয়ে দিতে, কারণ বাংলাদেশ তখনও জাতিসংঘের সদস্য নয়, তাই জেনেভা কনভেনশন সহ জাতিসংঘের সনদের আওতায় আসে না। জেনোসাইডের বিচার করার অধিকার বাংলাদেশের নেই - অন্তর্বর্তী রায়ে একথা বলা ছিল। এদের অপরাধ বিচার করার অধিকার পাকিস্তান সরকারের - এই ভিত্তিতে দাবী জানিয়ে পাকিস্তান সরকার মামলা করেছিল ভারতের বিরুদ্ধে।

"That such individuals, as are in the custody of lndia and are
charged with alleged acts of genocide, should not be transferred to 'Bangla Desh' for trial till such time as Pakistan's claim to exclusive jurisdiction and the lack of jurisdiction of any other Government or authority in this respect has been adjudged by the Court;""

কেসটা সম্পর্কে পড়তে পারেন। আমার জানা ভুল হতেই পারে।

ভারত সরকার প্রথমে অস্বীকার করলেও পরে কোর্টের রায় বিপক্ষে যাবে বুঝে সবাইকেই হস্তান্তর করে।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

নুরুজ্জামান মানিক এর ছবি

ধন্যবাদ দিগন্ত ।

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

হাসান মোরশেদ এর ছবি

দিগন্ত একটা ইয়া বড় ধন্যবাদ আপনাকে ।

একেবারেই জানতাম না। যারা এই বিষয়টা নিয়ে আলোচনা করেন, সম্ভবতঃ তাদের খব কমই এই সত্য জানেন যে - ১৯৫ জন শীর্ষ যুদ্ধাপরাধী পাকিস্তানে ফিরে গেছে আন্তর্জাতিক আদালতের রায়েই ।

আমি তৎকালীন বাংলাদেশ ও ভারতীয় নেতৃতের এ বিষয়ে সদিচ্ছা নিয়ে প্রশ্ন তোলার কোন সুযোগ দেখিনা ।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

নুরুজ্জামান মানিক এর ছবি

"প্রস্তাবে আরো বলা হয়েছিল- গনহত্যা ও ধর্ষনের অভিযোগে ১৯৫ জন পাকিস্তানী সেনাকর্মকর্তার বিচার করবে বাংলাদেশ । "

মনে পড়ে গেল একটি কবিতা -

ঘাতক ১৯৫
- আলাউদ্দিন আল আজাদ

তিরিশ লাখ হত্যা
সাড়ে-তিন লাখ ধর্ষণ
পঞ্চাশ হাজার অগ্নিসংযোগ
এবং লুঠ
অগনিত
কিন্তু ঘাতক
মাত্র ১৯৫ জনঃ

শুভঙ্কর কোথায় জন্মেছিলো ?
নিশ্চয়ই প্রাচ্যভূমি
যেখানে জীবনটা
আয়নায় ওলটাপিঠ ;
এবং ইতিহাস দস্যুর উপাখ্যান ।

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

পরিবর্তনশীল এর ছবি

চলুক
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।