গুপ্তহত্যায় মিডিয়া ও সমাজের দায়

হাসিব এর ছবি
লিখেছেন হাসিব (তারিখ: বুধ, ০৪/০৫/২০১৬ - ৮:৪৯অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

গত সপ্তাহে টাঙ্গাইলে আইসিসের স্থানীয় প্রতিনিধিরা যারা জেএমবি নামে কার্যক্রম চালায় তারা একজন সংখ্যালঘু পোশাকশিল্পী নিখিল চন্দ্রকে কুপিয়ে হত্যা করেছে। এই নিখিল চন্দ্রের নামে ২০১২ সালে ধর্ম অবমাননার মামলা করে দৈনিক ইনকিলাবের স্থানীয় প্রতিনিধি মাওলানা ফারুকী। 
এই মামলায় আটক হয়ে নিখিল কিছুদিন হাজতবাস করেছিলেন। একসময় বাদী মামলাটা তুলে নেন বলে জানা গেছে।

এখানে লক্ষণীয় বিষয় হল ৪ বছর আগের একটা মামলা যেটা আসলে কী নিয়ে হয়েছিল সেটা এখন পুলিশও বলতে পারে না (প্রাগুপ্ত) সেই অপরাধে নিখিল চন্দ্র জেএমবির মতো দলের হামলায় মৃত্যুমুখে পড়লেন।

নিখিল চন্দ্র কেন ৪ বছর পরে টার্গেটে পরিণত হলেন সেটার প্রাথমিক কারণ হল তিনি কিছু বলেছেন (বা বলেননি কিন্তু ছড়িয়েছে তিনি বলেছেন) এবং সেই তথ্যটা জায়গামতো পৌঁছে গেছে। এই হত্যার দায়ভার প্রথমত জেএমবি হলেও জেএমবি কীভাবে তথ্যটা পেল সেটা ভেবে দেখার অবকাশ আছে। এখানে এই জেএমবি ও নিখিল চন্দ্রের যোগাযোগ স্থাপনকারীরা কে বা কারা এটা এই মুহূর্তে আমার পক্ষে বলা মুশকিল। পিওরলি স্পেকুলেটিভ চায়ের স্টলের বক্তৃতা হয়তো কিছু দেয়া যায় তবে সেটা দায়িত্বপূর্ণ আচরণ হবে না বলে সেটা থেকে বিরত থাকলাম। এর থেকে আজকে পত্রিকায় প্রকাশিত একটি খবর যেখানে নিখিল চন্দ্রের মতোই একজনের গ্রেফতারের কথা প্রকাশিত হয়েছে যিনি (অভিযোগকারীদের দাবি) ফেসবুকে ধর্ম “অবমাননা" হয় এরকম মন্তব্য করেছেন। নিউজটি ঢাকা থেকে প্রকাশিত একটি অন্যতম প্রধান দৈনিকে ছাপা হয়েছে। দরকার মতো এডিট করে নিউজটা এখানে দেয়া হলো


নিউজটির কন্টেন্ট এবং লেখার ধরণ বেশ আগ্রহউদ্দীপক। এই নিউজটা পড়ে নিখিল চন্দ্রের কথা কীভাবে জেএমবি পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে সেটার একটা ধারণা পাওয়া যেতে পারে। নিউজের প্রথম লাইনে গ্রেফতার হওয়া তরুণীর নাম (ডাকনামসহ) এবং বয়স উল্লেখ করা হয়েছে। সেই সাথে তিনি কোন জেলার কোন উপজেলা থেকে গ্রেফতার হয়েছেন সেটার তথ্য। দ্বিতীয় প্যারাতে আরও এক লেভেল নেমে সেই উপজেলার কোন এলাকা এবং সেটা “নিজের বাড়ি” উল্লেখ করে তরুণীর বাবার নাম উল্লেখ করা হয়েছে। অর্থাৎ খবর থেকে এখন এই তরুণীকে খুঁজে বের করা কোন সমস্যা হবার কথা নয়। এই তরুণীর বাসা খুঁজতে আরও একটু সহযোগিতা করার জন্য তৃতীয় লাইনে থানার নামও দিয়ে দেয়া হয়েছে। সাংবাদিক, পুলিশ (বা সরকার) ছাড়াও এখানে আরেক পক্ষের খবর পাই আমরা। স্থানীয় জনতা নাকি সেই তরুণীর বাড়ী ঘিরে রেখেছিল পুলিশ আসাতক। ফেসবুকে একটা মন্তব্য করায় একজন নাগরিকের জীবন এভাবে সবাই মিলে সারাজীবনের জন্য বিপন্ন করে তুলল। এখন যদি জেএমবি এই তরুণীর উপরে হামলা করে তাহলে সেই নিউজটার ভেহিকল কোন কোন পক্ষ সেটা একনজরে দেখা যাক,

১। স্থানীয় জনতা। যারা ঐ তরুণীর বাড়ী ঘেরাও করে ঘটনার সূচনা করেছে। বাড়ী ঘেরাও করে রাখার একটা অর্থ করা যায় তারা এটা করে পুলিশের উপর এক ধরনের চাপ তৈরিতেও ভূমিকা রেখেছে। ধর্মের দোহাই দেখিয়ে যে হত্যাকাণ্ডগুলো হচ্ছে সেগুলোতে জনগণের কতো অংশের সমর্থন রয়েছে এটা নিয়ে জরিপ করা হলে একটা ইন্টারেস্টিং রেজাল্ট পাওয়া যাবে বলে আমার বিশ্বাস।

২। সরকার। পুলিশ সরকারের অংশ এবং তারা যে ধারায় তরুণীকে গ্রেফতার করেছে সেটা তৈরি ও প্রয়োগের দায়িত্ব সরকারের উপরই পড়ে। এই তরুণী ছাড়া পেলে পুলিশ তার নিরাপত্তার জন্য কী ব্যবস্থা করবে সেই আলাপ না শুরু না করাই ভালো।

৩। সাংবাদিক ও সম্পাদক। গ্রেফতারকৃত তরুণীর পরিচয় প্রকাশে সাংবাদিক অতি মাত্রার যত্নের পরিচয় দিয়েছেন। প্রকাশিত তথ্যের ভিত্তিতে ঐ তরুণীর বাসা খুঁজে বের করা কোন সমস্যাই না। এই ধরণের খবর ছাপিয়ে সম্পাদক কফিনের শেষ পেরেকটা ঠুকেছেন। এই সম্পাদক একজন স্বনামধন্য সাহিত্যিক বটে। কথা তৈরি করা লোকেরা যদি মানুষের কথার জন্য তাদের জীবন এভাবে বিপন্ন করে তুলতে ভূমিকা রাখতে শুরু করে তাহলে আমাদের বিপদের সময়য় গিয়ে দাঁড়ানো যাবে এরকম গাছের অভাব রয়েছে এটা আরেকবার ঠেকে শিখতে হয়।

৪। অনলাইন এক্টিভিস্ট। যিনি ঐ পত্রিকার নিউজটা ফেসবুকে শেয়ার দিয়ে ওটার প্রচারে একটু ভূমিকা রাখলেন।

হত্যা ও অন্যান্য অপরাধের পরিসংখ্যান ঘাঁটলে অনেক দেশ থেকে আমাদের দেশকে ভালো মনে হবে। কয়েকদিন আগে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এই বিষয়ে একটা বক্তব্যও ছিল। সাদা চোখে উনার বক্তব্যে ভুল নেই। তবে উনি যেটা আলাপে আনেননি সেটা হল আমাদের সমাজে এসব হত্যাকাণ্ডে নীরব সমর্থন বা পরোক্ষ সহায়তা রয়েছে যেটা অনেক দেশেই নেই। নিখিল চন্দ্রের খুনে শুধু খুনিরাও জড়িত না, একটা প্রসেসের মাধ্যমে তাকে খুন হবার দিকে ঠেলে দেয়া হয়েছে এবং এই প্রসেসে আমাদের মধ্যেরই অনেক নিপাট ভদ্রলোকেরা ভূমিকা রেখেছে হয়তো।


মন্তব্য

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

অত্যন্ত জরুরি পর্যবেক্ষণ।

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

হাসিব এর ছবি

এই ইস্যুটা অনেক দিন থেকে ঝুলে থাকা ইস্যু। অনেক ভাবেই আমাদের ভেতরের লোকজনই অসতর্ক হয়ে একজনের ইডেন্টিটি প্রকাশ হয়ে পড়ে এরকম তথ্য (যেমন ছবি, আমি নিজেই এটার ভুক্তভোগী) দিয়ে ফেলি। এটা করে আমরা আসলে আরেকজনের বিপদ বাড়াই।

সুবোধ অবোধ এর ছবি
সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

উনি যেটা আলাপে আনেননি সেটা হল আমাদের সমাজে এসব হত্যাকাণ্ডে নীরব সমর্থন বা পরোক্ষ সহায়তা রয়েছে যেটা অনেক দেশেই নেই।

চলুক অনেকাংশে সরব এবং প্রকাশ্য সমর্থনও বটে

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

হাসিব এর ছবি

সত্য। প্রকাশ্য ও সরব সমর্থনের অভাব নাই।

সাফি এর ছবি

পুরা লেখার সাথে একমত। আমাদের অনেক নিপাট ভদ্রলোকের আদালতেই আসলে এইসব খুনের ভিকটিমরা আসামী। সুযোগ পেলে ওনারাই কল্লা নামায়ে দিতো।

কয়েকদিন আগে, আমেরিকায় একটা বাংলাদেশী পরিবার খুন হয়। খুনের জন্য প্রথম থেকেই দুই ছেলেকে সন্দেহ করা হচ্ছিলো। একজন প্রাপ্তবয়স্ক, আরেকজন অপ্রাপ্তবয়স্ক(১৭ বছর)। আমি খুব আগ্রহ নিয়ে লক্ষ্য করলাম, কোন পত্রিকায় অপ্রাপ্তবয়স্ক ছেলের নাম ছাপায় নাই। ছেলেরা উভয়ই গ্রেপ্তার হওয়ার পরে (ঘটনার ৪দিন পর) প্রথম পত্রিকায় ওদের নাম দেখলাম।

আমি জানিনা, এই ক্ষেত্রে আমেরিকার কোন আইন আছে কি না নাকি সামাজিক দায়িত্ববোধ থেকে পত্রিকাগুলো ওই অবস্থান নিয়েছিলো। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এমনটা দেখেছি ধর্ষিতার নাম পরিচয় ছাপিয়ে দিতো - কিন্তু আইন করে সেটা মনে হয় বন্ধ করা হয়েছে।

হাসিব এর ছবি

বাংলাদেশে হলেই ওরা কোন স্কুল, কোথায় পড়ত, খেত, আত্মীয় স্বজনের বাসা কই সব প্রকাশ করতো। আর এখন দেখবেন চল শুরু হয়েছে আন্সারুল্লাহ, জেএমবির অরিজিনাল ম্যাটেরিয়াল শেয়ার দেবার। পত্রিকা তাদের ওয়েব এড্রেস পর্যন্ত ছাপিয়ে দিচ্ছে!

পৃথ্বী এর ছবি

পত্রিকায় বলছে "স্থানীয়রা" বা "সাধারণ জনগণ " ধর্ম অবমাননাকারীদের বাড়ি ঘেরাও করছে। আমার মনে হয় এরা অনেকেই "স্থানীয়" বা "সাধারণ জনগণ" না। অন্তত পত্রিকার ব্যবহৃত এই বিশেষণটা ফেস ভ্যালুতে নেওয়া যায় না, সন্দেহের অবকাশ আছে। কয়েকদিন আগে এরকম এক ঘটনায় এলাকার ছাত্রলীগ নেতা স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলা কষে দিয়েছে, আগেও এরকম অনেক ঘটনা ঘটেছে। এই জমায়েতগুলো ক্ষমতাসীন দলের পাতি নেতাকর্মীদের হতে পারে, জামায়াত-শিবিরেরও হতে পারে, জামায়াতিদের সাংগঠণিক শক্তি সব অঞ্চলেই ভয়ানক। ফেসবুক নিশ্চয়ই মফস্বলে এতটা বিস্তার স্থাপন করেনি যে মফস্বলের সমাজজীবন একে কেন্দ্র করে আবর্তিত হবে, একটা কমেন্ট কেন্দ্র করে এরকম ঘটনা ঘটবে।


Big Brother is watching you.

Goodreads shelf

হাসিব এর ছবি

সাধারণের অবস্থা এরকমই আসলে। এই ধরনের মবের কথা আপনি অনেক জায়গাতে পাবেন। মসজিদ কেন্দ্রিক ধার্মিক সাধারণ জনগোষ্ঠী এরা।

সোহেল ইমাম এর ছবি

শুধু দায় কেন এতো সক্রিয় অংশ গ্রহন। এ ধরনের ব্যাপার খুব বেশি মাত্রায়ই দেখা যাচ্ছে। হাসিব ভাই অত্যন্ত জরুরী এবং সময়োচিত একটা প্রসঙ্গ উত্থাপন করেছেন। এদিকটার গুরুত্ব সম্পর্কে আবছা অনুভব থাকলেও এতটা স্বচ্ছ ধারনা এই লেখাটা না পড়লে আসতো না। চলুক

---------------------------------------------------
মিথ্যা ধুয়ে যাক মুখে, গান হোক বৃষ্টি হোক খুব।

মাহবুব লীলেন এর ছবি

৪ নম্বর পয়েন্টটা প্রায় সময় ভাইরাস হয়ে পড়ে

হাসিব এর ছবি

সেদিন দেখলাম লন্ডনের এক বিপ্লবী এক্টিভিস্ট আন্সারুল্লাহর বইয়ের লিঙ্কসহ পোস্ট লিখেছে। ঐ লোকের মাধ্যমে যতটা পাব্লিসিটি আন্সারুল্লাহ পেয়েছে তা ওরা নিজেরা করতে হয়তো কয়েক বছর লেগে যেত। পৃথিবীর কোথাও আমি এই বেকুবি দেখি নাই।

মাহবুব লীলেন এর ছবি

ওইটা দেখে আমিও বেকুব বনে গেছি। আমি আসলে তার বক্তব্য বুঝতে পারিনি

নজমুল আলবাব এর ছবি

খবরের ভাষাটা দেখুন। বলেই দিচ্ছে, আল্লাহ ও কোরান নিয়ে "বিরূপ মন্তব্য" করায় মেয়েটাকে আটক করা হয়েছে। আটকের আগে "স্থানীয়রা" বাড়িটা ঘিরে রেখেছিলো। এই খবর পড়ার পর সত্যিকারের সাধারণ পাঠকরা কিন্তু মেয়েটাকে অপরাধী হিসেবে মেনে নেবে। তারা ভাববে আল্লার পেয়ারা বান্দারা ভালো একটা কাজ করছে।

হাসিব এর ছবি

এইটারে বলে লোডেড স্টেটমেন্ট। ধরা যাক আমি আপনারে জিজ্ঞেস করলাম

ঢাকা গিয়ে জ্যাম কেমন দেখছেন?

এখানে জানতে চাওয়া হয়েছে জ্যাম কেমন। কিন্তু ঢাকা গিয়ে শব্দ দুটো দিয়ে আপনি যে ঢাকা গেছেন এটা আপনার উপর লোড করে দেয়া হোল। ঐ "নিউজ"টাতেও মেয়েটা যে "বিরূপ" কিছু করেছে সেটা ধরে নিয়েই আগানো হয়েছে।

আমি খবর যা পেলাম তা হল শহরে এই নিয়ে ব্যাপক উত্তেজনা। আওয়ামী লীগ ও জামাতের নেতারা এক সাথে মিছিল করে পুরো শহর ঘুরেছে।

নৈষাদ এর ছবি

গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণ। বিষয়টা তুলে আনার জন্য ধন্যবাদ।

ওয়াসিকুর রহমান বাবুর ঘটনার পর, যাঁরা সেই দুই খুনিকে ধরেছিল মিডিয়া তাদের নিয়ে পরল; ছবি সহ তাদের পুরো ডিটেইলস প্রকাশ করা হল। কোথায় যেন দেখেছিলাম, শেষ পর্যন্ত তাঁরা নিজেদের নিরাপত্তার স্বার্থে সেখান থেকে পালিয়ে গেছে।

যেমনটি বলেছেন, এবছরে যে কয়টি তথাকথিত ‘ধর্ম অবমাননার’ ঘটনা ঘটেছে, ডিটেইলস সহ পত্রিকায় আছে।

ইদানিং যারা যৌন হয়রানির শিকার হন (মফস্বলে), প্রিন্ট মিডিয়াতো বটেই, এখন দেখি টিভি চ্যানেলগুলো মহা আনন্দে তাদের (এবং তাদের মা’দের) স্বাক্ষাৎকার নেয়, চেহারা অস্পষ্ট করারও ধার ধারে না। আমি ভাবি, সেই সব ভিক্টিমেরা সারা জীবনের জন্য ট্যাগ হয়ে গেল। (একজন বিশেষজ্ঞ বলেছিল দর্শক এবং মিডিয়ার লোকজন একধরণের voyeuristic বিকৃতিতে ভোগে, ভিক্টিমকে দেখলে নিজের মানসে সেই ঘটনার রিকন্ট্রাকশন করার চেষ্টা করে একধরণের বিকৃত আনন্দ পায়)।

বিদেশে মাঝে মাঝে ‘টেরোরিজমের’ জন্য গ্রেফতার হয়, কিন্তু কোন ক্লুই পাওয়া যায়না তারা কারা, খুব বেশি হলে ছেলে না মেয়ে, এবং বয়সের একটা রেঞ্জ পাওয়া যায়। সাফির মত আমারও জানতে ইচ্ছে করে, এই ক্ষেত্রে বিদেশে কোন আইন আছে কি না নাকি সামাজিক দায়িত্ববোধ থেকে বিভিন্ন মিডিয়া ওই অবস্থান নেয়। গাইডলাইন নিশ্চয়ই আছে, গতবছর অস্ট্রেলিয়ার সিডনীতে ‘Lindt café’ ঘটনা চলা অবস্থায়, অভিযুক্ত ব্যক্তি মিডিয়াতে যোগাযোগ স্থাপন করে, কিন্তু মিডিয়া সরাসরি পুলিশের সাথে যোগাযোগ করে (যে ঘটনা পরে জানা যায়)।

হাসিব এর ছবি

কোথায় যেন দেখেছিলাম, শেষ পর্যন্ত তাঁরা নিজেদের নিরাপত্তার স্বার্থে সেখান থেকে পালিয়ে গেছে।

অবস্থাক্রমে মামলা দুর্বল হলো এতে করে এবং এর জন্য সাংবাদিকেরা দায়ী। মানুষজন অবশ্য সব দোষ সরকারের ঘাড়ে চাপিয়ে পরবর্তী ইস্যু খুঁজতে ব্যস্ত হয়ে পড়বে।

অতিথি লেখক এর ছবি

আগে থেকে ঘোষণা দিয়ে। নামে বেনামে হুমকি ধামকি দিয়ে। ভরা বাজারে সবার সামনে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে হত্যাকে 'গুপ্ত হত্যা' বলছেন কেন?
এটা প্রশাসনের নাকের ডগার উপর প্রকাশ্য হত্যা। কুদালকে কুদাল বলুন প্লিজ।

-নামপ্রকাশেভীতব্লগার

হাসিব এর ছবি

আগে থেকে ঘোষণা দিয়ে। নামে বেনামে হুমকি ধামকি দিয়ে। ভরা বাজারে সবার সামনে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে হত্যাকে 'গুপ্ত হত্যা' বলছেন কেন?
এটা প্রশাসনের নাকের ডগার উপর প্রকাশ্য হত্যা। কুদালকে কুদাল বলুন প্লিজ।

মেঠোবক্তিমেগুলো ফেসবুকের জন্য রিজার্ভ রাখবেন প্লিজ। আগে থেকে ঘোষণা দিয়ে, হুমকি ধামকি দিয়ে খুন করা হচ্ছে এরকম হরেদরে বক্তব্যের সমর্থনে আমি কিছু পাই নি।

অতিথি লেখক এর ছবি

আগে থেকে ঘোষণা দিয়ে, হুমকি ধামকি দিয়ে খুন করা হচ্ছে এরকম হরেদরে বক্তব্যের সমর্থনে আমি কিছু পাই নি।

একটা প্রকাশ্য জিনিসের সমর্থনে কিছু পাচ্ছেন না। সন্দেহ হচ্ছে আপনার কোনো এজেন্ডা আছে।

দুয়েকটা উদাহরণ দেই। অভিজিৎ দেশে আসলে তাকে হত্যা করা হবে এই ঘোষণা কি আগেই দেওয়া হয়নি?
আহমেদুর রশিদ টুটুল এবং দীপন এর উপর আক্রমনের আগে থেকেই কি ঘোষণা দেওয়া হুমকি ধামকি দেওয়া এসব হয়নি?

অনুগ্রহকরে সত্য অস্বীকার করবেন না।

-নামপ্রকাশেভীতব্লগার

হাসিব এর ছবি

এদের যারা হত্যা করেছে তারা সবসময় তাদের অফিশিয়াল চ্যানেলে এই সব হুমকি, তালিকা প্রেরণ অস্বীকার করে এসেছে। আমি তাদের কেউ হলে খুনের আগে যাকে খুন করা হবে তাকে হুমকি দিয়ে সতর্ক করতাম না। কেউ একজন হুমকি পেয়েছে, সে কয়েকদিন পরে খুন হয়েছে - এতে এটা প্রমাণ হয় না যে খুনি হুমকি দিয়েছে। খুনি হুমকি দিয়েছে এটা প্রমাণ হবার জন্য খুনি এবং হুমকিদাতাকে কানেক্ট করে এরকম কিছু প্রমাণ লাগবে। এইবার বলেন আপনি এই ধরনের কী কী প্রমাণ জানেন যেটা দিয়ে এস্টাব্লিশ করা যায় যে সিস্টেমেটিকালি "আগে থেকে ঘোষণা দিয়ে, হুমকি ধামকি দিয়ে" খুনগুলো হচ্ছে।

আর আমার এজেন্ডা নিয়ে দুই ছত্র বলুন। পিওর স্পেকুলেশন মাঝে মাঝে বিনোদনমূলক একথা অস্বীকার করার উপায় নেই।

ধ্রুব আলম এর ছবি

অত্যন্ত প্রয়োজনীয় পর্যবেক্ষণ ও লেখা। চলুক

এই দেশের মিডিয়া নিয়ে কিছু বলার নাই, চক্ষুলজ্জা যদি থাকতো তবে না বলে কিছু হতো। এরা চূড়ান্তভাবে নোংরা মানসিকতা সম্পন্ন। খুন হবার পর অভিজিৎদা বা নীলয়দার পারিবারিক বা ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে লেখা ছাপতে এরা দুবার ভাবেনি। এক ফটো সাংবাদিক তো জুলহাস মান্নানের হত্যার পরে তাকে নিয়ে স্যাটায়ার নামের বিবমিষা জাগানো কুরূচিপূর্ণ লেখাও ছড়িয়েছেন।

বাবুল এর ছবি

আমাদের দেশে বড়ো সমস্যা হলো আমরা ব্যক্তিস্বাধীনতাকে খুব কম মূল্য দিয়ে থাকি। তাই প্রায়শয়ই দেখা যায়,সমষ্টির ইচ্ছার কাছে ব্যক্তিকে বলি দেওয়া হয়। এই যে অসহিষ্ণুতা তার মূলে আছে সাংস্কৃতিক সংকট। সমাজকে সুন্দর এবং শিক্ষিত করে তোলার জন্য তাই নিরবচ্ছিন্ন লড়াই চালিয়ে যেতে হবে।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।