টুইটারে বদর প্রধান নিজামীর পক্ষে আন্তর্জাতিক প্রোপাগান্ডা বিশ্লেষণ

হাসিব এর ছবি
লিখেছেন হাসিব (তারিখ: শুক্র, ২০/০৫/২০১৬ - ৫:২৩অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

বাংলাদেশে জনপ্রিয় না হলেও আন্তর্জাতিক সোশাল মিডিয়াতে টুইটার খুব প্রভাবশালী ও জনপ্রিয় একটি মাধ্যম। জামাতে ইসলামি প্রোপাগান্ডাতে প্রো৭১দের থেকে সবসময়ই এগিয়ে থেকেছে। ফেসবুকে জামাতে ইসলামির বাঁশেরকেল্লা পেজ সম্ভবত সদস্যসংখ্যা বিচারে বাংলাদেশের সবচাইতে বড় রাজনৈতিক পেজ। সাম্প্রতিক সময়ে তাদের টুইটার তৎপরতা বাংলাদেশ বিষয়ে প্রোপাকিস্তানি আন্তর্জাতিক প্রোপাগান্ডার ইতিহাসে একটি নতুন মাত্রা যোগ করেছে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের বিভিন্ন পর্যায়ে তারা #FreeKamaruzzaman, #FreeSayedee, #Sayedee, #FreeMirQuasemAli, #FreeMujahid, #SaveBangladesh ইত্যাদি হ্যাশট্যাগের মাধ্যমে প্রচারণা চালিয়েছে। কিছুদিন আগে যুদ্ধাপরাধী আল বদর প্রধান মতিউর রহমান নিজামীর ফাঁসির প্রাক্বালে জামাতে ইসলামি #wearenizami হ্যাশট্যাগের মাধ্যমে প্রোপাগান্ডা চালায়। এই প্রোপাগান্ডায় জামাতে ইসলামির আন্তর্জাতিক মিত্ররাও অংশ নেয়। আউটরিচ বিবেচনায় এই #wearenizami হ্যাশটাগটি আগের সব প্রোপাগান্ডা ক্যাম্পেইন ছাড়িয়ে গেছে। এই প্রচারণায় যেমন সাংগঠনিকভাবে জামাতে ইসলামির মিত্র রাজনৈতিক দলগুলো ছিল তেমনি কয়েকটি দেশের বুদ্ধিজীবীরাও এই প্রোপাগান্ডায় নেতৃস্থানীয় ভূমিকায় ছিলেন। এই পোস্টে আমি এই হ্যাশটাগটি বিশ্লেষণ করার চেষ্টা করে দেখানোর চেষ্টা করবো কোথা থেকে এবং কার কার মাধ্যমে এই টুইট বিপ্লব সংগঠিত হল।

কতোটি টুইট হলো

টুইটার API এর মাধ্যমে ৮ই মে, ২০১৬ থেকে ১৭ই মে, ২০১৬ তারিখ পর্যন্ত সবগুলো টুইট ও রিটুইট ডাউনলোড করা হয়েছে। #wearenizami হাশট্যাগ আছে এরকম রিটুইটসহ টুইটের সংখ্যা ৫৪,৬৩৬টি। এর থেকে রিটুইট বাদ দিলে ১১,২৬৯টি অরিজিনাল টুইট পাওয়া যায়। বাংলাদেশ সংক্রান্ত টুইট ক্যাম্পেইনে এই সংখ্যাগুলো সম্ভবত সর্বোচ্চ।

কে কোথা থেকে

টুইটার APIতে বাই ডিফল্ট ব্যবহারকারীদের অবস্থান অপ্রকাশ্য থাকে। এই কারণে কে কোথা থেকে টুইট করলো এটা সঠিকভাবে নির্ণয় করা এক কথায় অসম্ভব। এমতাবস্থায় অবস্থান বোঝার জন্য এডুকেটেড গেস করা ছাড়া উপায় নেই। এই এডুকেটেড গেস ৫৪ হাজার টুইটের উপর করা অসম্ভব। আরেকটা জটিলতা হল অনেকে হয়তো কোন ইন্ডিয়ান জার্মানি থেকে টুইট করছেন কিন্তু লোকেশন লিখে রেখেছেন লন্ডন। এসব মাথায় নিয়ে টুইটারদের ফিজিক্যাল অবস্থানের পরিবর্তে টুইটার কোন দেশের প্রতিনিধিত্ব করছেন সেটা আমলে নেয়া হয়েছে। এটা করতে ইউজার প্রোফাইলে থাকা তথ্য, টুইটের বিষয় বস্তু ইত্যাদি যাচাই করে বোঝার চেষ্টা করা হয়েছে একজন নির্দিষ্ট টুইটার কোন দেশের প্রতিনিধিত্ব করছেন।

উদাহরণঃ ব্যবহারকারী uluyusuf_ কোন অবস্থান প্রকাশ করেন না। কিন্তু তার টুইট ক্লায়েন্টের ভাষা ডয়েচ, টুইট করেন তুর্কি ভাষায় এবং সে টুইটের বিষয়বস্তু প্রধানত তুরস্কের বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে। এসব তথ্য থেকে uluyusuf_ তুরস্কের প্রতিনিধিত্ব করছে এরকমটা ভেবে নেয়া যায়। একই পদ্ধতিতে ব্যবহারকারী SevdaaNazz ডাচ ক্লায়েন্ট ব্যবহার করে তুর্কি ভাষায় তুরস্কের বিষয় নিয়ে টুইট করেন দেখে ধরে নেয়া যায় তিনি তুরস্কের প্রতিনিধিত্ব করেন। এ পদ্ধতিতে সব প্রধান টুইটারদের অবস্থান আন্দাজ করা না গেলেও অধিকাংশের ক্ষেত্রে এটা কাজ করে বলে দেখা গেছে। বের করা যায়নি এরকম আইডির একটা হল Strateeeegy। এই আইডিটি আরবিতে টুইট করে এবং টুইটের বিষয়গুলো মধ্যপ্রাচ্য, মুসলিম কেন্দ্রিক এই তথ্যটি ছাড়া আর কিছু আন্দাজ করে বের করা যায়নি।

সর্বোচ্চ সংখ্যক ফেভারিট টুইট হয়েছে এবং সর্বোচ্চ সংখ্যক রিটুইট হয়েছে এরকম ব্যবহারকারীদের মধ্যে ন্যুনতম ১০০ বার রিটুইট বা ফেভারিট হয়েছে এরকম দুটি স্যাম্পল নেয়া হয়েছে। এই স্যাম্পলগুলোতে যথাক্রমে ২০ ও ২১ জন ব্যবহারকারী পাওয়া গেছে। এদের মধ্যে অর্ধেকই পাকিস্তানি। এর পরে রয়েছে তুরস্কের টুইটাররা। তুরস্কের টুইটাররা রিটুইট সংখ্যা এবং ফেভারিট সংখ্যায় পাকিস্তানিদের থেকে অনেক এগিয়ে আছে। পারস্পরিক অবস্থানগুলো নিচের ছবিগুলো দেখলে আরও পরিষ্কার হবে।

চিত্র ১ - সর্বোচ্চ ফেভারিট হয়েছে এরকম টুইটকারিরা (ন্যুনতম ১০০ ফেভারিট)

চিত্র ২ - সর্বোচ্চ রিটুইট হয়েছে এরকম টুইটকারিরা (ন্যুনতম ১০০ রিটুইট)

ছবিগুলোতে দেখা যাচ্ছে তুরস্ক ও পাকিস্তানের পাশাপাশি মিশর ওর বাংলাদেশের টুইটাররাও সর্বোচ্চ তালিকায় আছেন। এদের মধ্যে একমাত্র বাংলাদেশের ইমরান সরকার নিজামির ফাঁসির পক্ষে বলেছেন।

কে কতটা প্রভাব রাখতে পারলেন

সর্বাধিক রিটুইট হয়েছে এরকম টুইটারদের তালিকায় প্রথম নামটি তুরস্কের এক লেখক ইউসুফ কাপলানের (yenisafakwriter)। এর পরে রয়েছেন পাকিস্তান জামাতে ইসলামির আন্তর্জাতিক ডিরেক্টর আব্দুল গাফফার আজিজ (AGAZIZ1)।

সর্বাধিক ফেভারিট হয়েছে এই তালিকার প্রথম নামটিও ইউসুফ কাপলান। তিনি অন্যদের তুলনায় বহুগুণে বেশি ফেভারিট হয়েছেন। এর পরের অবস্থানে থাকা নুরুদ্দিন ইলদিযও একজন তুর্কি লেখক (nurettinyildiz)। তৃতীয় অবস্থানে রয়েছেন পাকিস্তানের জনপ্রিয় টক শো হোস্ট আহমেদ কুরায়শি (AQPk)।

এরা কেউই নতুন গজিয়ে ওঠা কোন আইডি নন। অনেক দিন থেকেই তারা টুইটারে আছেন এবং প্রায় সবারই একটা বড় ফলোয়ার বেইজ রয়েছে। ফলোয়ার বেইজের সংখ্যা থেকে এসব টুইটার তাদের বক্তব্য কতজনের কাছে পৌঁছাতে পারলেন তার একটা আন্দাজ করা যায়।

[/center]

চিত্র ৩ - সবচাইতে বেশি ফেভারিট হওয়া টুইটারদের ফলোয়ার সংখ্যা (ন্যুনতম ১০০ ফেভারিট)

চিত্র ৪ - সবচাইতে বেশি রিটুইট হওয়া টুইটারদের ফলোয়ার সংখ্যা (ন্যুনতম ১০০ রিটুইট)

এখানে একমাত্র ইমরান সরকার নিজামির বিপক্ষে টুইট করেছেন। বাকি সবাই একযোগে নিজামীর ফাঁসিকে জুডিশিয়াল কিলিং, বিচার ঠিক হয়নি, নিজামী কোন অপরাধ করেনি এইসব টুইট করেছে।

কারা এই টুইটাররা

অবস্থান বা কে কোন দেশের প্রতিনিধিত্ব করেন তা সহজে আন্দাজ করা গেলেও টুইটারদের পরিচয় বের করাটা সহজ নয়। পরিচয় বের করতে টুইটারদের প্রোফাইলের বর্ণনা একমাত্র সূত্র। এ সূত্র ধরে উপরের বার প্লটগুলোতে উল্লেখযোগ্য যাদের পরিচয় পাওয়া গেছে তাদের বর্ণনা দেখা যাক,

এই তালিকা থেকে তিনটি বিষয় লক্ষণীয়। প্রথমত, বাংলাদেশের জামাতে ইসলামির আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে রাজনৈতিক সহযোগী/মিত্র দলগুলো তাদের অফিশিয়াল চ্যানেলের মাধ্যমে জামাতি প্রচারণায় সামিল হয়েছে। দ্বিতীয়ত, রাজনৈতিক দলগুলোর বাইরে বুদ্ধিজীবি মহল অর্থাৎ শিক্ষক, টিভি ব্যক্তিত্ব, ব্লগাররাও নিজামির পাশে দাঁড়িয়েছে। তৃতীয়ত, প্রো৭১ পক্ষ এই টুইট ক্যাম্পেইনের বিরুদ্ধে তেমন কোন প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারেনি।

নোট

১। রিটুইটসহ সকল টুইট ড্যাটা
২। রিটুইট বাদে সকল টুইট ড্যাটা


মন্তব্য

অতিথি লেখক এর ছবি

ট্রেন্ডিং এর বিষয়টা আগে কেবল টুইটারেই সীমাবদ্ধ ছিল । এখন ফেসবুকেও ট্রেন্ডিং এর বিষয়টা চোখে পড়ে । যেমন কয়েকদিন আগে বাংলাদেশের সকলের কান ধরার ট্রেন্ডিং এর বিষয়টা সম্ভবত ফেসবুক থেকেই আন্তর্জাতিক মিডিয়ার নজরে আসে । তবে কারো নজরে আসার জন্য টুইটার এখনো অনেক শক্তিশালী । ফুল পাখি পাতা-লতার খাবারের ছবি আপলোড করে লাইক কামানোর সুযোগ থাকায় বাংলাদেশে ফেসবুক জনপ্রিয় হলেও, উন্নত বিশ্বের লোকজনের কাছে ফেসবুকে জনপ্রিয়তা হারিয়েছে কয়েক বছর আগেই । টুইটার এখনো বেশ জনপ্রিয় আছে ।

বাংলাদেশে জামাত, মিশরের মুসলিম ব্রাদারহুড এবং তুরষ্কের একেপির একটা মিল হলো এদের প্রচুর লোকাল ফান্ডিং রয়েছে । এরা লোকজনের দান খয়রাত বা বিদেশী সাহায্যের উপর নির্ভর করে চলে না । নিজস্ব ফাইনানসিয়াল অর্গেনাইজেশন রয়েছে । ৫-১০ বছরের জন্য হাইবার নেশনে গিয়ে আবার ফিরে আসা এদের জন্য কোন ব্যপার না । মুসলিম ব্রাদারহুড তা প্রমান করে দিছে । বাংলাদেশের জামাত এখন পলিটিক্যাল হাইবারনেশনে আছে । কিন্তু টেকনোলজি ব্যবহার করে দেশজোড়া কর্মি এবং দুনিয়ার জুড়ে ছড়িয়ে থাকা সমর্থকদের চাংগা রাখতে তারা নতুন প্রযুক্তি, মিডিয়ার সাহায্য নিবে এতে খুব একটা আশ্চার্য হচ্ছি না । তবে গত কয়েক বছরে টুইটারে তাদের অ্যাকটিভিটি তুলনামুলক ভাবে কম ছিল । এর থেকে আমার টেক অন মেসেজ হলো, " জামাত আবার সংগঠিত হচ্ছে । "

জিজি-প্লটের এক্স আর ওইয়াই অক্ষের টেক্সট সাইজ একটু বেশি ছোট হয়ে গেছে । ইমেজের সোর্সে গিয়ে জুম করে পরিষ্কার দেখা যাচ্ছে কিন্তু সচলের পেইজে ঘোলা ফন্ট । এক্সিস টেক্সট সাইজ আরেকটু বড় করে দেন ।

মামুনুর রশীদ [ ভবঘুরে শুয়োপোকা ]
=============================
হাজার মানুষের ভিড়ে আমি মানুষেরেই খুজে ফিরি

হাসিব এর ছবি

টুইটারের মিডিয়া আউটরিচ ফেসবুক থেকে অনেক ভালো। আর ফেসবুক বাই ডিজাইন টুইটারের মতো এতো ছড়ায় না। প্রাইভেসি ইত্যাদি নানা বেড়া পার হয়ে ওভাবে প্রচার পাওয়া শক্ত।

আমার ধারণা বাংলাদেশে এটার মতো সাকসেসফুল মিডিয়া ক্যাম্পেইন আগে দেখা যায়নি। মুসলিম ব্রাদারহুডের আন্তর্জাতিক মিত্ররা ভবিষ্যতে আরও দেখাবে এরকম। এর সাথে রিগ্রেসিভ পশ্চিমা মিডিয়া ফান্ডিং খেয়ে তাদের সুরেই কথা বলবেন। আমাদের কপালে শনি আছে।

আমি ইমেজগুলো আরেক্টু মানুষ করবো আজকে সময় পেলে।

ইয়ামেন এর ছবি

সো কল্ড 'আরব বসন্তের' প্রচারনার সিংহভাগই সম্ভব হয়েছিল টুইটারের কল্যানে। এই পোস্ট পড়ার পর মনে হচ্ছে জামাতিরা এবং তাদের দোসরেরা সেভাবেই আগাচ্ছে। এই প্রচার মাধ্যমকে কাউন্টার না দিতে পারলে আসলেই বাংলাদেশে কপালে খারাপি আছে।
গবেষণা করে এই তথ্যসূত্র তুলে ধরার জন্য ধন্যবাদ হাসিব ভাই।

--------------------------------------------------------------------------------------------------------------------

সব বেদনা মুছে যাক স্থিরতায়
হৃদয় ভরে যাক অস্তিত্বের আনন্দে...

সোহেল ইমাম এর ছবি

চলুক

---------------------------------------------------
মিথ্যা ধুয়ে যাক মুখে, গান হোক বৃষ্টি হোক খুব।

প্রোফেসর শঙ্কু এর ছবি

এটা দেখে আমিও ভীষণ অবাক হয়েছি, কারণ টুইটারে ঢুকলে এগুলো ট্রেন্ডিং হচ্ছে চোখে পড়তো, সেগুলো অনেকে রিটুইট করছে, ফেবারিট হচ্ছে- ফাঁকা মাঠে গোল দেবার মতো ব্যাপার।

--------------------
প্রোফেসর শঙ্কু

অতিথি লেখক এর ছবি

টুইটার শুধু নয় আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমেও অতীতে বাংলাদেশ বিরোধীরা ফাঁকা মাঠে গোল দিয়েছে। সেগুলোরও ঠিক প্রতিবাদ হয় নাই বলে বিভিন্ন ইস্যুতে নেতিবাচক খবরের শিরোনাম হয়েছে বাংলাদেশ। এটা অবশ্যই বন্ধ করা দরকার।

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

চলুক

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

ফারাবী  এর ছবি

ওরা ৫০ হাজার টুইট করছে আমরা ২ লাখ টুইট করলাম। এতে তো আর ওদের টুইটের গুরুত্ব কমে যাইতেসে না, মিডিয়ার কাছে ওদেরটাও গুরুত্ব পাবে আমাদেরটাও গুরুত্ব পাবে। ফলাফল: পাবলিক বা মিডিয়া ধারণা করবে এইটা দুই পক্ষের মতের অমিল, তাই এই টুইটারে মারামারি।

আমরা যদি নিয়মিত ভাবে (মাসে একবার বা বিশেষ বিশেষ দিনগুলাতে ) ৫০ হাজার (বা বড় একটা সংখ্যা ) টুইট চালায় যাইতে পারি তাইলে হয়ত মিডিয়ার কাছে আমাদের অবস্থান বা আসল ঘটনা পরিস্কার হবে।

স্যাম এর ছবি

চলুক

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।