(মাসখানেক আগে জামাল ভাস্করের লগে এমএসএনে আলাপ হইছিলো কিছু । সেই পুরো আলোচনাটারে (পরবর্তিতে আমাদের দুইজনের কিছু সংযুক্তিসহ) তুইলা দিলাম । বিষয়বস্তু এখনও পুরানো হয়া যায় নাই । আপনেরাও সংযুক্তি দিতে পারেন মন্তব্য ঘরে ।)
জামাল ভাস্কর : কি অবস্থা বস ?
হাসিব : চলতাছে । রুম গুছাই । বাসা বদলামু । আপনে কেমুন আছেন ? মৌসুমের খবর কি ?
জামাল ভাস্কর : তাইলে তো ঝামেলায়ই আছেন । মৌসুম আছে ভালোই ।
হাসিব : আর কয়েন না । একা একা করতে হয় এগুলান । বহুত ঝামেলায় আছি ।
জামাল ভাস্কর : আমিও তথৈবচ ।
হাসিব : কি হইছে
জামাল ভাস্কর : হয়নাই কিছুই । দেশের যা অবস্থা, ঠিক জুইতের লাইফ নাই ।
হাসিব : হ, খুব খারাপ একটা সময় যাইতেছে । বিদেশ থিকা অনেক কিছু বোঝা যায় না । কিন্তু নিউজ যা পাই সেটাতে আতঙ্কিত ফিল করি ।
জামাল ভাস্কর : এইটারে ঠিক খারাপও কওন যায় না .... উদ্ভট একটা সময় .... কোন কিছু বুঝতে না পারলে যেরকম একটা অস্থিরতা তৈরী হয় না ? সেইটা হইছে । কেমন অচেনা লাগে সব ।
হাসিব : আমার এতো অচেনা লাগে না । এরকমই হবার কথা ছিলো ।
হাসিব (সংযুক্তি ১) : ব্যাপারটা হয়তো বোঝাটা খুব কঠিনও না । বাংলাদেশ পাকিস্তানে একই ইকোয়েশনে বেশ কয়েকবারই এইরম হৈছে । কোন এক মুরুব্বী কাগুর বাণিজ্য বসতের বিস্তার কখনো কঠিন হয়া গেলেই অথবা বসতটা আরো পোক্ত করনের দরকার হইলেই জলগাইগো দেখা গেছে বারবার । এইবার মজাটা হইলো জলপাইরা সামনে পাপেট হিসেবে কয়েকটা সুশীলরে রাইখা নিজেরা পিছনে আছে । ঐ সুশীলরা ২২৬ জন, ৮০ জন ইত্যাদি লিস্ট কৈরা পাবলিকরে বুঝ দিবার লাগছে যে হেরা দুর্নীতি সাফ সুতরা কৈরা নতুন সরকার আননের এন্তেজাম করবো । আমাগো দেশে দুর্নীতির ব্যাপ্তিটা কি এতোই ক্ষুদ্র ? অবশ্যই না । এই লিস্টিতে জলাপাই আমলারা অনুপস্থিত । অর্থাৎ ইকোনমির অর্ধেক যারা খায় তাগো দুর্নীতির হিসাব হইবো না । তাগো প্লাস পয়েন্ট হিসেবে ছিলো আমাগো দেড় দশকের গণতান্ত্রিক সরকারগুলার দুর্নীতি । ঐ দুর্নীতিটারে শিখন্ডি হিসাবে দাড় করায়া আমাগো এখন দুর্নীতি দমনের মূলা ঝুলাইয়া বশে রাখছে ।
ভাস্করের সংযুক্তিঃ
দুর্নীতি দমনের মূলা ঝুলাইছে ঠিক...কিন্তু মিলিটারীরা ক্ষমতা এইবার কেমনে নিবো এই বিষয়ে তারা নিজেরাও নিশ্চিত না বইলা আমার প্রতিভাত হয়। রাজনৈতিক আন্দোলনের বিষয়টা নিয়া আমি আমার পূর্বতন বক্তব্যেই থাকি কারন বর্তমান বুর্জোয়া রাজনৈতিক নেতৃত্ব পুরাটাই স্বার্থান্বেষী গ্রুপ। তারা শুরুতে দুর্নীতি দমনের চক্করের ভয়ে দল ভাঙনের অনেক কলাকৌশল করলেও যখন জনগণের অস্বস্তি টের পাইছে তখন আবার পুরান দলের সংহতি নিয়া বক্তব্য দেওন শুরু করছে। এই অবস্থায় একজন মিলিটারী চীফও যেই কারনে আম্রিকায় গিয়া পইরা আছে...নিশ্চিত হার্ভার্ডে’র বক্তৃতা দেওন একজন ষড়যন্ত্রকারীর পরিকল্পণার অংশ হইতে পারে না। তার অন্য উদ্দেশ্য থাকতে বাধ্য। জনগণের মধ্যে যেই অসন্তোষ সেইটা অনেক নেতিবাচক একটা দিকে আগাইলেও তার বাস্তবতা আছে। জনগণ ভাবতাছে অনেক দুর্নীতি-দুঃশাসনের মধ্যেও তারা ভালো ছিলো এখনকার চাইতে। এরজন্যই ঐ অনিশ্চয়তার প্রশ্নটা আসে। নির্বাচন পরবর্তী বাস্তবতা আসলে কি হইবো? মিলিটারীরা অন্য কারো কান্ধে বন্দুক রাইখা দেশ শাসন করবো? সেই কাঁধগুলি কি বিশ্বস্ততার কাঁধ? নাকি আর্মি নিজেই ক্ষমতায় যাইবো? পিডিপ কি একটা নির্বাচনী বৈতরনী পাড় হওনের মতোন ক্ষমতা ধরে? প্রশাসন কি জনগণের রোষের মধ্য দিয়াও নির্বাচনের ফলাফল নিয়ন্ত্রণের ধান্দা করবো? আমার সব সম্ভাবনারেই খুব ভেইগ মনে হইতাছে। এই কারনেই বলতেছি পরিস্থিতিটা অচেনা।
জামাল ভাস্কর : কিছু ব্যাপার নিয়া সন্দেহে আছি । ইসলামাইটেরা আসলে কেমনে আইবো ? ... সেই ইকোয়েশনটা মিলাইতে পারতেছি না ।
হাসিব : ওরা আসলে আমাগো সোসাইটিতে একটা পাওয়ার হিসাবে খাড়ায় গেছে অনেক আগেই, ওদের সরানোর কেউ নাই ।
জামাল ভাস্কর : আমার মনে হয় এইটা থার্ড ওয়ার্ল্ড নিয়া আমরিকার একটা এক্সপেরিমেন্ট ।
হাসিব : সেটাও হতে পারে, এক্সট্রিমিজম থাকলে তাগোরি আখেরে লাভ ।
জামাল ভাস্কর : দে ওয়ান্ট ইসলামাইটস টু রেসিস্ট সোসাল ডেমোক্র্যাটস অর আদার্স হু মাইট বি থ্রেটেনিং ফর দেম ।
হাসিব : হতে পারে । আবার এও হতে পারে যে দেশে এরকম একটা গ্রুপের এক্সিসটেন্স থাকলে নির্বাচিত অথবা অনির্বাচিত গভর্মেন্টগুলারে চাপে রাখা সহজ হয় – পাকিস্তানের মতো ।
জামাল ভাস্কর : সেটাই । তয় আমার মনে হয় এতো সহজে ব্যাপারগুলা হইবো না । ইলেকশন যদি তাড়াতাড়ি করতে পারে তাইলে বাচবো । বাট দেরি হইলে সব প্লান ধরা খাইবো ।
হাসিব : ধরা খাইয়া কি হইবো ? ধরা আগে অনেকেই খাইছে । যাহা ৫২ তাহাই ৫৩ । হাসিনা যেইবার ইলেক্টেড হইলো সেইবার জামাত দুইটা সিট পাইছিলো । সিট গুইনা আমরা তখনো ভাবছিলাম যে জামাত খাইলো একটা ধরা । তো কি হইলো শেষ পন্তো ? সিট গুইনা ওগোরে আন্ডারএস্টিমেট করনটা ঠিক হয় নাই । আর এখন ইসলামিক শাসনতন্ত্র আন্দোলনও সিট পাইবার স্বপ্ন দেখে ।
জামাল ভাস্কর : জামাতরে আওয়ামী লীগ নিজের প্রয়োজনেই রাখবো, রাখছে ।
হাসিব : হ
জামাল ভাস্কর : এই ধরা কংগ্রেস খাইছিলো না ইন্ডিয়াতে ?
হাসিব : ঠিক
হাসিব (সংযুক্তি ২) : যখন প্রাইমারীতে পড়তাম তখন জামাত বলতে চিনতাম একটা দল যাগো কাজকাম ইসলামিক সমাজকল্যান পাঠাগার দিয়া পুলাপাইন রিক্রুট করা । আমাগো খিলগাওতে দুইজন ছিলো এইরম রিক্রুটার । নেপু আর কাশেম । কাশেম পরে খুন হয় । সারা সপ্তাহ পোলাপাইনের সাথে মিস্টি মিস্টি কথা কয়া পাঠাগারে দাওয়াত দেওনই কাম ছিলো তখন ওগো । পাড়ার বাইরে শুনতাম আইডিয়াল স্কুলে শিবির রিক্রুটের কথা । এইটা আমি বলতেছি আশির দশকের মাঝামাঝি থেকে শেষের দিকের কথা । এরপর আমি যখন ২০০১এ ইউনিভার্সিটি ছাড়ি তখন তাগো অবস্থা পুরা ভিন্ন । পাড়ার পাঠাগার থিকা তারা তখন কর্পোরেট চেহারায় রূপ নিছে । ওগো নিয়ন্ত্রনে একটা ভালো ব্যাংক আছে, দুই তিনটা নামকরা হাসপাতাল আছে, চাইর পাচটা প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি আছে । মোল্লাবাদের কর্পোরেট যুগ এই ২০০০ সালের আগেপিছে থিকাই বেশ নজরে পড়তে থাকে । দেশীয় কর্পোরেট কন্ট্রোলের পর ইদানিং আরোও একটা জিনিস আতঙ্কের সাথে ইদানিং খেয়াল করি । আরবী শেখগো তেলের টাকা এখন দেশীয় বিনিয়োগে যোগ হইতেছে । আগে আইলো ওয়ারিদ, তারপর সৌদি যুবরাজ রূপালী ব্যাংকের ইনভেস্টমেন্ট । পুজিবাদে পুজিই যদি ক্ষমতা হয় তাইলে কইতে হইবো এই আন্তর্জাতিক পুজির আগমনে মোল্লাবাদিরা তাগো ক্ষমতারে একটা নতুন উচ্চতায় পাইলো । বোধ্য রাজনৈতিক কারনেই এই বিদেশী টাকার ইনফ্লো কোন গবমেন্টই ঠেকাইবার চেষ্টা করবো না । নির্দোষ ইনভেস্টমেন্টের সাথে লাদেনীয় ইনভেস্টমেন্টও আইবো আস্তে আস্তে । ইসলামাইটরা এইভাবে কিন্তু একটা ভালো অবস্থানে চইলা যাইতেছে । সব সরকারের আমলেই ব্যাঙের ছাতার মতো এরা বাড়ছে । এখনো বাড়তেছে । বাইড়া একটা ক্যান্সারে রূপ নিতাছে ।
ভাস্করের সংযুক্তিঃ
কথা সত্য। আমার পরিচিত এক ছেলের কাজিন তার নাম হামিদ...সে বাংলাদেশ খিউকোশীন কারাতে চ্যাম্পিয়ন ছিলো টানা কয়েকবছর। তার বাড়িতে রাজনৈতিক পরিচয় ভাড়াইয়া একবার যাওয়ার অভিজ্ঞতা থেইকা জানি যে কেবল বিদেশী পুঁজির ছদ্মারণেই না, দেশী অনেক পুঁজিপতিও তাগো টাকা ঢালে জঙ্গীবাদী আদর্শের উন্নয়নে। ঐ ছেলে হারুন এসোসিয়েটস নামে এক বাংলাদেশী ইম্পোর্ট এক্সপোর্ট ফার্মে চাকরী করে। এই সংস্থার টাকায় তারা একটা কারাতে ট্রেনিং ওয়ালা ইসলামী গ্রুপ চালায়। তার মুখ থেইকাই শোনা এইরম আরো শখানেক ইসলামপন্থী গ্রুপের অস্তিত্ব গতো প্রায় ১০ বছর ধইরাই এই দেশে আছে। এখন প্রশ্ন হইলো এরা ক্ষমতায় আসনের মতোন অবস্থায় আছে কি না...আমি মনে করি আছে...আমার হাইপোথিসিস হইলো আম্রিকা এগো সামনে আনবো সোশ্যালিস্ট বা সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক ম্যুভমেন্ট ঠেকাইতে। তারমানে পুঁজিটা খালি ইসলামাইট গ্রুপের না...সাদা চামরার খ্রিস্টানগো কাছ থেইকাও এরা পায় বা পাইবো।
জামাল ভাস্কর : তয় আমি মনে করি মিলিটারি রেজিম দেশরে যেমন ১০ বছর পিছায়া দেয় ... একটা মুভমেন্ট তেমন দেশরে আগায় । ইলেকশন দেরিতে হইলে মুভমেন্ট দাড়াইবো । গ্যাসট্রিটিরে মনে হয় এল্লিগাই পাতাইছে ।
হাসিব : প্রব্লেমটা হইলো এই মুভমেন্টগুলারে দাড় করানোর মতো পাবলিক সাপোর্ট বের করাটা ডিফিকাল্ট হবে । এমনিতেই হাসিনা খালেদা জেলে । মিডিয়া জলপাইগো বগলের তলে । ভরসা রাখার জায়গা নাই । গত দেড় দশকের পাপের ফল ভোগ করতাছি হয়তো ।
জামাল ভাস্কর : আমার মনে হয় মুভমেন্ট এইবার দাড়াইলে বামপন্থীরা সামনে আসার সুযোগ পাইবো ... তারপর যাইহোক .. কিন্তু এইবার ৯০এর চাইতে ভালো অবস্থা হইবো .. ইমিডিয়েট রেজাল্ট আইবোনা এইটাতো আমরা বস সকলেই জানি ।
হাসিব : হ । তয় বামগো লইয়া আমরা কেন জানি খুব একটা ভরসা হয় না । ওরা ৯০ পরবর্তি সবকয়টা ছাত্রআন্দোলন অর্গানাইজ করলেও ছাত্ররাজনীতির জেনারেল ধারনায় নিজেগো অবস্থান এখনো তুইলা নিয়া আসতে পারে নাই। পাবলিক ছাত্ররাজনীতি বলতে এখনো ছাত্রদল-ছাত্রলীগ বোঝে ।
জামাল ভাস্কর : হমম
হাসিব : এই একি কারনে অরা যে জাতীয় রাজনীতিতে নিজেগো অবস্থান তুইলা আনতে পারবো সেইটার নিশ্চয়তা পাই না ।
জামাল ভাস্কর : তয় এইবার ডিইউর ঘটনায় বামরা কম্পারেটিভলি ভালোভাবে ছিলো ... আমার মনে হইছে আমাগো সময়ের জেইউর কথা । আমরা কিন্তু বহুত প্রমিনেন্ট ছিলাম ঐসব মুভমেন্টে । ঐকারনে আমরা ঐ সময়টাতে নিউমেরিকালিও বাড়ছি ।
হাসিব : শুধু আপনেগোটাই না, ৯০এর পর সবগুলা বড় বড় ছাত্রআন্দোলনের লিডারশিপটা বামগো হাতে ছিলো । জলপাইরা প্রেসনোটে ছাত্রদল ছাত্রলীগ নিয়া যা কৈছে সেইটাই পাবলিক বুজছে হয়তো ।
জামাল ভাস্কর : পাবলিক বড় আজব বস ।
হাসিব : হমম । আদতে ছাত্রদল বা ছাত্রলীগের কোন এক্সিসটেন্স ছাত্র রাজনীতিতে আছে বলে তো দেখি না ।
হাসিব (সংযুক্তি ৩) : এইটা নিয়া আমি বেশ হতাশায় ভুগি । দেশে একটা সময় ছিলো যখন আমরিকা কাগুর মতো রুশ কাগু, চীনা কাগুরা ছিলো । সেইসময় ভালো ভালো কথার বাম রাজনীতি করাও হইতো আবার লাল কাগুগো দেশে নানারকম সফর টফর স্কলারশিপ এগুলাও পাওনা যাইতো । পার্টির দিক নির্দেশনা থিকা টাকা পয়সা অনেক কিছুর যোগান তখন সুন্দরমতো ইম্পোর্টেড হইতো । এখনও হয়তো হয়, তবে অবস্থা আগের মতো রমরমা অবশ্যই না । এইসবের সচেতন অথবা অসচেতন লোভে অনেকে হয়তো বাম রাজনীতিতে আয়া থাইকাও গেছে । তাগো চিহ্নিত করাটা খুব কঠিন না । দরকারও না খুব একটা ওগো নিয়া চিন্তা করাটা । দরকার হইলো রাশিয়া পরবর্তি সময়টাতে কোন ধরনের ইনসেন্টিভ ছাড়াই যেসব পুলাপাইনেরা ছাত্র পলিটিক্স, শ্রমিক পলিটিক্সে আইছে তাগো নেতৃস্হানীয়রা আইজকা কই ? আমাগো সময়ে যাগো নেতা হিসেবে মানছি তারা কে কোথায় কি করতেছে ? এরা যদি জাতীয় রাজনীতিতে না আহে তাইলে দেশের বাম রাজনীতির ভবিষ্যত নেতৃত্বটা কারা দিবো ?
জলপাইরা ঢাবির ঘটনা বিষয়ে একটা প্রেসনোট দিছিলো । পইড়া দাপায়া হাসছি কিছুক্ষন একা একা রুমে ভিতরে । হালারা আলমারি থিকা লেজেহোমো অামলের একটা টেমপ্লেট বের কৈরা সেইটারেই কপি পেস্ট কৈরা টাইপ কৈরা তুইলা দিছে । হালাগো নলেজে ছাত্রলীগ ছাত্রদল ছাত্র ইউনিয়ন ছাড়া কোন ছাত্রনৈতিক দল এখনো ঢুকে নাই । সারাক্ষন ওগোরই নাম । ওরা জীবনে ফ্রন্ট ফেডারেশন মৈত্রীগো নামই শুনে নাই । ওগো মতো আম জনতার কাছেও বাম দলগুলার নামগুলান সেইভাবে পৌছায় নাই । যেই কারনে পাবলিক ছাত্ররাজনীতিরে ছাত্রদলছাত্রলীগের কাজকামের সমার্থক ভাইবা সেইটারে বন্ধ করতে সায় দেয় ।
ভাস্করের সংযুক্তিঃ
একদম ঠিক ভাবছেন...তয় ব্যর্থতাটা বামপন্থীগোও...আমরা যখন রাজনীতি করছি, তখন আমাগো বিরুদ্ধে মানে ছাত্রফ্রন্টের বিরুদ্ধেও অভিযোগ ছিলো...আমরা সাধারন ছাত্র-ছাত্রীগো লগে মিশিনা। ফ্রন্টের কিন্তু গণচাদা তোলা ভ্যানগার্ড বিক্রীর মতো নিয়মিত যোগাযোগ পদ্ধতি আছে...তারপরেও আমাগো বিরুদ্ধে তোলা এই অভিযোগ আমরা মানতে বাধ্য হইছিলাম। কারন বাস্তবতা হইলো আদর্শরে জীবনাচরনের লগে মিলাইয়া দেখনের কোন প্র্যাক্টিস আমাগো জীবনেও ছিলো না। আদর্শরে পাইতাম শিবদাস ঘোষের গাইড বই মারফত। পড়ালেখার ঘাটতি এর মূল কারন। যেই সমাজ পাল্টাইতে চাই...তার অনেক উপাদান নিয়া আমরা নাক সিটকাইতাম...কিন্তু বুঝতেই চাইতাম না সেইসবের গ্রহণযোগ্যতা আর তার কারন সমূহরে। আমাগো টাইমে এই উপলব্ধির পর কিন্তু আমাগো গ্রহণযোগ্যতা তৈরী হইছিলো কিছুটা হইলেও...যেই কারনে শিবির আর ধর্ষণ বিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দিতে পারছিলাম সাধারন জনস্রোত নিয়া। সাংগঠনিক ভিত্তিও শক্তিশালী হইছিলো তৎপরবর্তীকালে...
জামাল ভাস্কর : ওরা দুই দিন পর পর মত পাল্টাইতে পারে । কারন পলিটিশিয়ানরা কোন আইডিয়াল কিছু দেখাইতে পারে না । পাবলিক কিন্তু সময়মতো ঠিকই খেপে ।
হাসিব : ঐটাতেই প্রব্লেম হৈছে । খালেদা হাসিনা ও তাগো চেলাচামুন্ডাগো কাজকর্ম দেইখা পাবলিক আসলেই কনফিউজড হয়া গেছে ।
হাসিব (সংযুক্তি : ৪) রাজনীতিবিদরা দিকনির্দেশনা দিতে পারে না সত্য কথা । কিন্তু কোথাও কোন চাগায় ওগা গণজোয়াররে পরিণতির দিকে নিতে কিন্তু রাজনীতিবিদগোরেই লাগে । কাউরে না কাউরে লিডারশিপ নিতেই হইবো । এইটা আমরা ছাত্ররাজনীতি করতে গিয়াও দেখছি । সাধারন ছাত্রগো ব্যানারে আন্দোলন হৈলেও ব্যাকগ্রাউন্ডে অর্গানাইজটা ছাত্ররাজনৈতিকরাই করছে ।
আমি কিছুদিন ধইরাই একটা কথা ভাবতেছি । সেইটা হইলো আপনেরা কন পাবলিক একসময় ঠিকই ফুইসা উঠবো । আমার কথা হইলো এই ফুইসা উঠিনের পর ওগোরে নেতৃত্বটা দিবো কেডায় ? বিএম্পি আম্লিগের নগর পলিটিক্সরের নেটওয়ার্কও তো এখন জ্যাতা আছে বলে মনে হয় না । নেতাগো সবই ফাটকে নাইলে সংস্কারবাদী সাইজা জলপাইগো আচারে তেলের যোগান দিতাছে । হইবোটা কি আমাগো ?
ভাস্করের সংযুক্তিঃ
নেতৃত্ব কে দিবো এইটা বড় প্রশ্ন...তয় আমার মনে হইতেছে এইবার আমরা সঠিক জীবন চর্চ্চা করে এইরম কিছু নেতারে সামনে পামু পাবলিক এইবার তাগো উপ আস্থাশীল হইতে পারবো আবার। বাসদের খালেকুজ্জামান আর আব্দুল্লাহ সরকারের উপস্থিতি এইবার ভালো হইবো। তয় আওয়ামি বিএনপির আন্দোলন খাইয়া ফেলনটারে হয়তো রোধ করন যাইবো না। ঐটাও বামপন্থীগো ব্যর্থতা আর পুঁজিবাদীগো দক্ষতা। পুঁজিপতিরা মিডিয়া ব্যবসায় বিনিয়োগই করতাছে এই কূটকৌশল চরিতার্থ করনের লেইগা।
জামাল ভাস্কর : হমম । বস, বিড়ি আনতে যাই ।
হাসিব : আমিও উঠি । বাজারে যাওন লাগবো । পরে কথা হবে ।
জামাল ভাস্কর : ওকিজ
মন্তব্য
আমাদের চিন্তাই আমাদের আগামী: গৌতম বুদ্ধ
একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...
বিপ্লব ভাইয়ের কমেন্টে বিপ্লব ! পান কৈ এইসব ?
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
হাসিব আমার প্রথম সংযুক্তিটার উল্লেখ নাই বইলা ঐটা বুঝন যাইতেছে না...আপনে ঐটার আগে ভাস্করের সংযুক্তি লেইখা দিলে ভালো হয়। আর আপনের একটা সংযুক্তি মনে হয় ইটালিক হয় নাই...ঐটা ইটালিক কইরা দিয়েন...আর কিছূ কেয়ারলেস মিস্টেক আছে আমার সংযুক্তিগুলিতে...
স্বপ্নের মতোন মিলেছি সংশয়ে...সংশয় কাটলেই যেনো মৃত্যু আলিঙ্গন...
স্বপ্নের মতোন মিলেছি সংশয়ে...সংশয় কাটলেই যেনো মৃত্যু আলিঙ্গন...
কোন সম্ভাবনা আছে বইলা মনে হয় না।
এমনেই ভাইবা কূল পাই না আরো ভাবনায় ফালাইয়া দিলেন। এই অপরাধে আপনারে ৫ দাগ দেয়া হইল।
==============================
আমিও যদি মরে যেতে পারতাম
তাহলে আমাকে প্রতি মুহূর্তে মরে যেতে হত না।
ভাবনাগুলো শেয়ার করেন । নাইলে আমিও ভাবনাইতো হয়া পড়ুম ।
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
এখানে দুই আনা যোগ করতে চাই ।
১/প্রচারহীনতা :
আমার ধারনা সমস্যাটা বামদের জীবনচর্চায় নয়,বামদের পরিকল্পনার কথাটা পরিষ্কার করে পাবলিককে না জানানো ।অন্ধকার ঘরে বসে মুচকি হাসতে হাসতেই সময় চলে যাচ্ছে ।
আমি একজন ভোটার ।
আমি কী জানি ?বিএনপি আওয়ামীলীগরে ভোট দিলে কি পাই,সেটা জানি ।জামাতরে ভোট দিলে ইসলামী শাসন পাবো ।সেই শাসনে চুরি করলে হাত কাটা হবে,সৎ লোকেরা শাসন করবে...ইত্যাদি সম্মন্ধে আমার পরিষ্কার ধারনা আছে ।এখন বামদের ভোট দিলে কী পাবো ?একশ রিক্সাওয়ালাকে জিগান,কেউ কইতে পারবো না ।
তাইলে খাদির পাঞ্জাবি পইরা ব্যক্তি জীবনে সৎ দেখাইয়া লাভ কী ?
বামরা কিভাবে এদেশ শাসন করবে এমন প্রশ্নের কোন সঠিক এবং ডিটেইল উত্তর পাবলিক হিসেবে আমার কাছে
নেই ।
আমার বাপ বামরাজনীতি করতেন,উনি আমাকেই কোন ধারনা দিতে পারেন নাই,আমি করেছি চরম ডান দল বিএনপি ।এই হলো প্রচারনার ক্ষেত্রে অসুবিধা ।
২/ অনৈক্য :
বামফ্রন্টে দল কয়টা ?ভাষ্কর কি বলতে পারবেন ?এই ব্লগের কয়জন সবগুলো বামদলের নাম আর তাদের নেতার নাম বলতে পারবেন ?
সবার যদি একই আদর্শ,তাহলে এতো দল কেন ?এই ক্রমাগত ব্র্যাকেট বন্দী হয়ে যাওয়া দলগুলোর উপর আস্থা পাইনা ।নিজেরাই ঐক্যবন্ধ না,পাবলিককে কিভাবে ঐক্যবন্ধ করবে ?
৩.লেজুরবৃত্তি :
গনরাজনীতিতে,বামরা আন্দোলনের ইস্যু তৈরী করে,কিন্তু শেষ পর্যন্ত আন্দোলনটি তুলে দেয় আওয়ামীলীগের হাতে ।
(আরো কিছু কথা বলার ছিলো,পরে যোগ করবো ।)
বামদের ইমেজেও বড় ধরনের সমস্যা আছে। বাম কখনো মেইনস্ট্রিমরে পটাইতে পারে নাই, এইখানে মেইনস্ট্রিম বলতে আমি রিকশাচালক থেইকা শুরু কইরা মফস্বল হইতে আগত বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র এবং ঘুষখোর আমলা পর্যন্ত বুঝাইতেছি। শিবিরের এবং জামাতের রাজনীতির আদর্শ হইলো ভন্ডামীর মাধ্যমে সমাজের মূল স্রোতের সাথে মিশা যাওয়া। এইটাতে বামরা জামাতের সাথে পারবো না।
আর পরিকল্পনার কথা জানলেই যে পাবলিক দৌড়ায়া আইসা বাম রাজনীতিতে যোগ দিবো সেইটা বিশ্বাসযোগ্য না। ত্যাগী বামপন্থী নেতা হইতে জনগণের কাছে ঘুষখোর আমলা অধিক বিশ্বাসযোগ্য কারণ ঘুষখোর আমলা নিয়মিত মসজিদে যান যেইখানে বাম নেতারে দেখা যায় না।
১.
হাসিবের সাথে আমার আলোচনাটা আসলে নির্বাচনমূখী ছিলো না। একটা সম্ভাব্য আন্দোলনের নেতৃত্ব কে দিবো এই প্রশ্নের অনুসন্ধান ছিলো। তারপরেও আপনের সমালোচনাগুলিরে আলোচ্য মনে করতাছি। বাংলাদেশে যেই নির্বাচনমূখী রাজনীতি আছে সেইখানে জনপ্রিয়তারে বা পরিচিতিরে আপনে একটা ধ্রূবক হিসাবে ধইরা নিতেছেন...কিন্তু আমার অভিজ্ঞতা থেইকা জানি তুমুল জনপ্রিয় বুর্জোয়া রাজনীতির প্রতিনিধিত্বকারী নেতাও এখনকার নির্বাচনে জয় নিশ্চিত করতে পারেন না যতোক্ষন না তার প্রচারণার আর্থিক ভিত্তি জোরালো হয়।
টাকা এই সমাজে এতোকাল নির্বাচনে প্রধান নিয়ামক হিসাবে উপস্থিত হয়। ৯১'এর নির্বাচনে আব্দুল্লাহ সরকার বাসদের প্রতিনিধি হিসাবে নির্বাচিত হওনের সম্পূর্ণ সম্ভাবনা রাখছিলেন...কারন চাঁদপুরের হাইমচর এলাকার বাঁধ বিরোধী কৃষি আন্দোলনে তার মূল ভূমিকা এই সময় তার বিশাল জনপ্রিয়তা তৈরী করছিলো...কিন্তু তারপরেও নির্বাচনের একসপ্তা আগে ৫জন ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান পার্টি অফিসে আইসা মাত্র ৬ লাখ টাকা দাবী করলো...তারা এই ৬লাখ টাকার বিনিময়ে তাগো ভোট ব্যাংক আব্দুল্লাহ সরকাররে দিতে চায় কারন তিনি অতীতেও এই এলাকার মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য বিবেচিত হইছেন। যেই নির্বাচনে সিলিং বাইন্ধা দেওয়া হইছে ৫ লাখ সেইখানে ৬ লাখের ঘুষ দেওনটা কতখানি নৈতিক? বা আব্দুল্লাহ সরকার এই বাড়তি টাকা কই পাইবেন? ফলস্বরূপ আব্দুল্লাহ সরকার নির্বাচনে হাজার দশেক ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হইলেন...
এখন আমার প্রশ্ন এই ধারার নির্বাচন কি এইবারো হইবো? মানুষ কিন্তু বর্তমান ত.স. বিরোধী ক্ষোভের পাশাপাশি পূর্বতন ক্ষমতাশীলগো দুর্নীতির বিরুদ্ধেও খেপা। এখন প্রশ্ন হইলো বর্তমান ত.স. কি আসলেই একটা স্বচ্ছ নির্বাচন অনুষ্ঠিত করনের তাগীদেই ক্ষমতায় আছে? নাকি জলপাই ছায়াতল নির্মাণের নিমিত্তে আছে? যদি দ্বিতীয়টা হয় তাইলে আন্দোলন অবশ্যম্ভাবী...সেইটার নেতৃত্ব কে দিবো? আমি সেই প্রশ্নেই মনে করি জনগণ সততা একটা মানদন্ড হিসাবে মনে করবো এইবারের আন্দোলনে। অন্য অনেক সীমাবদ্ধতা নিয়াই খালেকুজ্জামানরা এই সততার ধারক...যেইটা বামপন্থী আর অন্য কারো অবশিষ্ট নাই এক মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বাদে।
বুর্জোয়া একটা সিস্টেমে নির্বাচনের মধ্য দিয়া ক্ষমতা অর্জন আসলে ঠিক মার্ক্সীয় অনুধাবন হয় না। কারন ঐ সিস্টেমে যেইসব ধান্দাবাজী আছে সেইসবেও অংশ নিতে হয় নির্বাচনে জিততে হইলে। তারপরেও বামপন্থীরা ক্যান নির্বাচনে? আন্দোলন আর নির্বাচন হইলো বামপন্থীগো প্রচারণা কৌশল...মানুষের কাছাকাছি পৌছানের সুযোগ। কারন এই দুই সময়েই মানুষ রাজনৈতিক আলোচনায় রত হয়, তারা দীর্ঘ বক্তব্যও শুননের ধৈর্য্য দেখায়।
২.
বামপন্থীগো অনৈক্য আছে...এই অনৈক্যরে বুর্জোয়া অনৈক্য দিয়া দেখলে হইবো না। সুমন চৌ, আমি আর ফারুক ওয়াসিফ তিনজনই সক্রিয় বামপন্থী রাজনীতি করছি, কিন্তু তিনজন ভিন্ন প্ল্যাটফর্মে ছিলাম ক্ষমতায় আরোহনের তাগীদে না...আমাগো ভিন্নতা ছিলো ক্ষমতায় আরোহন কৌশলের ভিন্নতার কারনে। রাষ্ট্র চরিত্র নির্ধারণের ভিন্নতার কারনে...কিন্তু এই ভিন্নতার ফলশ্রুতিতে যেই তর্কের পাটাতন দরকার সেইটা কোনকালে ছিলো না। জাবি'তে আমরা এইসব নিয়া নিয়মিত তর্ক করতাম কিন্তু অন্য কোন জায়গায় সেই প্র্যাক্টিস কোনকালে হয় নাই, জাবিতো আর দলের কেন্দ্র না। তয় খবর পাইলাম কিছু দল নাকি এখন এই তর্কের পাটাতনে একত্রিত থাকতেছে।
৩.
লেজুর বৃত্তির বিষয়টা আসলে আপনে যেমনে দেখেন সবসময় তার ভেতরকার কারন ঐরম না। বাংলাদেশে কিছু বামপন্থী দল মনেই করে প্রগতিশীল বুর্জোয়াগো প্রতিনিধি হিসাবে আওয়ামি লীগরে ক্ষমতায় প্রয়োজন, সে সঠিক জাতীয়তাবাদী বুর্জোয়া সংস্কার করবো...তারপর বিপ্লব হইবো...এরমধ্যে সিপিবি-ওয়ার্কাস পার্টি অনেকদলই পইরা যায়।
স্বপ্নের মতোন মিলেছি সংশয়ে...সংশয় কাটলেই যেনো মৃত্যু আলিঙ্গন...
স্বপ্নের মতোন মিলেছি সংশয়ে...সংশয় কাটলেই যেনো মৃত্যু আলিঙ্গন...
নতুন মন্তব্য করুন