সত্যবাদী কূটনীতিক?

হিমু এর ছবি
লিখেছেন হিমু (তারিখ: বিষ্যুদ, ১২/০৩/২০০৯ - ৪:০৩পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

আমরা নানাদিক থেকে আক্রান্ত একটি দুর্ভাগা জাতি। একটা সময় ছিলো যখন আমরা কম্বোডিয়া থেকে শ্রীলঙ্কা পর্যন্ত রাজনৈতিক কর্তৃত্ব বিস্তারের চেষ্টা করেছিলাম। একটা সময় ছিলো যখন আমাদের জাহাজগুলো আবিসিনিয়া পর্যন্ত বাণিজ্যে ব্যস্ত ছিলো। সেসব সময় গত হয়েছে। আমরা পরের গোলায় ধান আর পরের ঝাঁকায় মাছ তুলতে তুলতে, কামলা খাটতে খাটতে পরিপূর্ণ একটি কামলা জাতিতে পরিণত হয়েছি। সেদিন বোধহয় আর বেশি দূরে নয় যখন লেবাননের মতো বাংলাদেশেরও সিংহভাগ মানুষ বাস করবে বাংলাদেশের বাইরে।

রেমিট্যান্সের ওপর টিকে থাকার পরও দুধ দেয়া গাইয়ের যত্ন আমরা করি না। বরং গাইটিকে মাঝে মাঝে বুঙ্গি বাজিয়ে জ্বালাতন করি। যারা এই দেশটিকে ত্যাগ করে ভিন দেশে প্রতিকূল পরিবেশে কাজ করে দেশে টাকা পাঠান, তাদের সম্ভাব্য সবরকম উপায়ে ইসেমারার জন্য আমরা নানারকম ব্যবস্থা করে রেখেছি। দেশত্যাগের আগে তারা নানারকম সরকারী বেসরকারী অসহযোগিতার মুখে তো পড়েনই, দেশে ফেরার মুখেও ইমিগ্রেশনে নানাভাবে নাজেহাল হন। আর বিদেশে বাংলাদেশের দূতাবাসগুলোতেও নাকি শ্রমিকদের কোন রকম সহযোগিতা মেলে না। আমরা খবরের কাগজে মাঝে মাঝেই পড়ি, বিভিন্ন দেশের বাংলাদেশ দূতাবাসের বাইরে বাংলাদেশী শ্রমিকদের বিক্ষোভ। কুয়েত থেকে পিটিয়ে এমন শতাধিক শ্রমিককে বার করে দিয়েছে সে দেশের পেটোয়া বাহিনী, রক্তাক্ত জামা নিয়ে দেশে ফিরে তারা হাউমাউ করে কেঁদেছেন। আমরা পরের পৃষ্ঠায় গিয়ে বহির্বিশ্বের খবর পড়েছি তারপর। গাই কানলে আমার কী?

আজ খবরের কাগজে পড়লাম আর বিবিসিতে শুনলাম ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার এর বরাতে, মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ হাই কমিশনের শ্রম কাউন্সেলর জনাব তালাত মাহমুদ খান মালয়েশিয়ার সাংবাদিকদের সাথে এক অন্তরঙ্গ সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, কিভাবে অর্থনৈতিক মন্দায় ভোগা সত্ত্বেও মালয়েশিয়া বাংলাদেশ থেকে ৭০ হাজার শ্রমিক আমদানি করবে। মিডিয়া এ বক্তব্য ছাপাতে দেরি করেনি। ফলস্বরুপ ৫৫ হাজার ভিসা বাতিল করেছে মালয়েশিয়া সরকার।

জনাবে আলা কাউন্সেলর বাংলাদেশি মিডিয়াকে বলেছেন, তাঁর সাক্ষাৎকারটি মালয়েশিয় মিডিয়া নেতিবাচকভাবে ছাপিয়েছে।

এটি কি খুব স্বাভাবিক নয়? যে তথ্যটি তিনি দিলেন, সেটি পেয়ে মালয়েশিয় মিডিয়ার কি খুব আহ্লাদিত হওয়ার কোন কারণ আছে? মালয়েশিয় মেয়েরা নাকি বাংলাদেশী পুরুষ শ্রমিকদের প্রতি রীতিমতো যৌন আকর্ষণ অনুভব করে, এ কারণে মালয়েশিয়া সরকার পর্যন্ত আগে প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে [পড়ুন এখানে]। এমনিতেই মালয়েশিয়ার সাথে বাংলাদেশের শ্রমিক আমদানি-রপ্তানির ব্যাপারে আগে একাধিকবার গন্ডগোল হয়েছে, বিশ্বব্যাপী এই মন্দার সময় এমন একটি তথ্য মিডিয়াকে সেধে যুগিয়ে দেয়ার পরিণতি যিনি আন্দাজ করতে পারেন না, তাকে তো মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ হাই কমিশনের শ্রম কাউন্সেলর হিসেবে কাজ দেয়ার কথা নয়। তবে কি জেনে বুঝেই তিনি এই কাজটি করেছেন? এ ঘটনার সাথে কি সদ্য প্রাক্তন হাইকমিশনার মেজর [অব] খায়রুজ্জামানকে ঢাকায় ঢাকায় প্রত্যাহার করে নেয়ার কোন সম্পর্ক রয়েছে? তালাত মাহমুদ খানের এই নাইভটে সম্পর্কে অনুসন্ধান কি আশা করা যায়?

ইংরেজিতে গাভীকে ষাঁড় দিয়ে গর্ভবতী করানোকে বলা হয়, TO SERVICE A COW। কিন্তু এ-ও মনে রাখা উচিত যে বলদ দিয়ে সার্ভিসিং হয় না। আমাদের অর্থনীতির দুধ দেয়া গাইকে সার্ভিস দেয়ার ব্যাপারে দক্ষ জনশক্তি নিয়োগের ব্যাপারে পররাষ্ট্র ও শ্রম মন্ত্রণালয়ের আন্তরিক হওয়া জরুরি বলে আমার মনে হয়।


মন্তব্য

arman [অতিথি] এর ছবি

আমাদের বেশিরভাগ কুটনীতিকরাই বেজায় অদক্ষ। বেআক্কেল এবং লোভী টাইপের। যেহেতু এদের বড় অংশের নিয়োগ হয় বেআইনীভাবে, এদের ট্রেনিং আর দক্ষতার সুযোগ থাকে না। অনেক ঝানুরা এখন অবসর নিয়েছেন, তাদের পরবর্তী জেনারেশান দের কোয়ালিটি আর গ্রহনযোগ্যতা নেই। সবখানেই বাশ। সর্বাঙ্গে ব্যাথা, ওষুধ দিব কোথা!

রেজওয়ান এর ছবি

এখানে একটি তথ্য দেয়ার প্রয়োজন অনুভব করছি। দুতাবাসে নিয়োগ শুধু পররাষ্ট্র ক্যাডারের লোক দিয়েই হয় না বরং বিভিন্ন মন্ত্রণালয় থেকেও লোক যায় - কমার্স মিনিস্ট্রি -দেয় ইকনমিক উইংএর লোক (কাউন্সেলর, অফিসার) ইত্যাদি, লেবার মিনিষ্ট্রি দেয় লেবার উইংয়ের লোক, সামরিক বাহিনী প্রতিরক্ষা কাউন্সেলর,স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, তথ্য মন্ত্রনালয় ইত্যাদি। তারপরে তো তদবিরের ঠেলায় অন্যান্য মন্ত্রনালয় থেকে প্রেষণে লোক যাচ্ছেই। রাষ্ট্রদুতের অধিকাংশই রাজনৈতিক নিয়োগে - রাজনৈতিক নেতা, স্কুলের প্রিন্সিপাল, এনজিও কর্মকর্তা, সামরিক কর্মকর্তা ইত্যাদি। তাদের কিছুর না আছে সরকারী প্রশাষনের অভিজ্ঞতা না ব্যবস্থাপনা/পাবলিক স্পিকিং স্কিল।

পররাষ্ট্র ক্যাডার থেকে যেসব কুটনীতিকদের গড়ে তোলা হয় তাদের রয়েছে পিএটিসি থেকে ট্রেনিং ছাড়াও ফরেন সার্ভিস একাডেমীর বছরখানেক ট্রেনিং যাতে কিভাবে কাঁটা চামচ ধরতে হবে থেকে শুরু করে পাবলিক স্পিকিং, নেগোশিয়েশন স্কিল, ইংরেজী ছাড়া আর একটি বিদেশী ভাষা, কোন কিছুই বাদ থাকে না। এর সাথে থাকে বাংলাদেশের আনাচে কানাচে ভ্রমণ করে দেশকে চেনা - কারন পুরো দেশটিকে তুলে ধরতে হবে। এছাড়াও কিছুদিন আগে পর্যন্ত আমেরিকার ফ্লেচার কুটনৈতিক বিদ্যালয়ে প্রশিক্ষণ হতো - এখন অন্যান্য দেশের স্কলারশীপে পাঠানো হয়।

কিন্তু দু:খের বিষয় কোন দুতাবাসের যেসব কর্মকর্তা পররাষ্ট্র মণ্ত্রনালয়ের বাইরে থেকে আসে তাদের উপরের কোন ট্রেনিংএর মধ্যে দিয়েই যেতে হয় না। ফলে তাদের কাছ থেকে একটি মানসম্পন্ন কুটনীতিকের সার্ভিস আশা করাটা দুরুহ।

দুর্নীতির ব্যাপারটিও দেখা যায় পররাষ্ট্র ক্যাডারের বাইরের লোকদের ক্ষেত্রে বেশী। কারন মন্ত্রনালয়ের লোকদের ছোট খাট অডিট অবজেকশন না মিটালেও পেনশন আটকে যায় সরকারী নিয়ম অনুযায়ী। কিন্তু যারা প্রেষণে আসে বা হয়ত রাজনৈতিকভাবে বাইরে থেকে নিয়োগ তাদের তো পেনশনের কোন ব্যাপার নেই, নেই কোন পিছুটান। রাজনৈতিক আশীর্বাদপুষ্ট হওয়ায় জানে তাদের বিরুদ্ধে কিছু হবে না। তাদের কিছু হয়ত ভাবে বছর তিনেকের জন্যে সুযোগ পেয়েছি যেভাবে পারি কামিয়ে নেই।

তবে এটি ঠিক প্রেষণে বা রাজনৈতিক নিয়োগের মধ্যেও কিছু খুব ভালো কুটনীতিক পাওয়া যায় যারা খুবই সৎ এবং মেধাবী। পর্যাপ্ত ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা থাকলে তারা আরও ভাল করতেন।

পৃথিবী কথা বলছে আপনি কি শুনছেন?

রানা মেহের এর ছবি

গর্দভের দল সব।
এগুলোকে শ্রমিক বানিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে পাঠানো উচিত
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

দিগন্ত এর ছবি

আপনি একটা বিষয় তুলে ধরেছেন,কিন্তু আমি অন্য একটা বিষয় নিয়ে একই ঘটনার সমালোচনা করছি। আমি এই ঘটনায় বাংলাদেশ সরকারের অবস্থান দেখে খুবই অবাক ও হতাশ হয়েছি। জনশক্তি রপ্তানী কোনো নিম্নমাণের কাজ নয়, জনশক্তি মালয়েশিয়াতে ভিক্ষা করতে যায় না। ২০০৭ এ মালয়েশিয়া ভিসা দিয়ে যাদের নিয়ে গিয়েছিল তাদের ইচ্ছামত দেশে ফেরত পাঠানো একরকমের প্রতিশ্রুতি বা চুক্তিভঙ্গ। মনে রাখেন, বাংলাদেশের জনশক্তি আছে বলে মালয়েশিয়া ইউরোপ আমেরিকায় রপ্তানী বাড়াতে পারে, আর তারা শস্তায় শ্রমিক পায় বলেই সেটা করতে পারে। লাভের গুড়টা বেশী যায় মালয়েশিয়ার কোম্পানীগুলোর পকেটেই, অল্প কিছু আসে গরিব শ্রমিকদের কাছে। লাভের সময়ে ইচ্ছামত পকেটে ঢোকানো আর দুর্দিনে তাড়িয়ে দেওয়ার মধ্যে মালয়েশিয়ার ব্যবসা বোধগম্য, কিন্তু বাংলাদেশ সরকারের ভূমিকা স্পষ্ট নয়। বাংলাদেশ সরকারের উচিত এর বিরোধিতা করা। নতুন করে আর কাউকে ভিসা দেওয়া হবে না, সেটা মানা যায়, কিন্তু যাদের চুক্তি করে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, যারা অনেকেই জমি বেচে মালয়েশিয়া পাড়ি দিয়েছে তাদের মাথায় কোপ মারা বাংলাদেশ সরকারের মেনে নেওয়া উচিত নয়।

পরেরবার থেকে জনশক্তি রপ্তানীর সময় সরকারের উচিত ব্যাপারগুলো পরিষ্কার করে দেওয়া লোকজনের সামনে - আর মালয়েশিয়া সরকারের ওপর চাপ তৈরী করা উচিত (প্রয়োজনে আরো জনশক্তি রপ্তানীকারক দেশগুলোর সাথে জোট বেঁধে) জব-লস ইন্স্যুরেন্স জাতীয় কিছু করা যায় কিনা এই শ্রমিকদের জন্য।

মেনে নিলাম যে বাংলাদেশী ডিপ্লোম্যাট এই মন্তব্য করেছেন তিনি রাজনৈতিকভাবে স্পর্শকাতর একটি ইস্যু নিয়ে অহেতুক মন্তব্য করেছেন। তবে তার প্রতিক্রিয়াতেই এই সিদ্ধান্ত এমনটা মনে হয় না। সাধারণভাবে, মালয়েশিয়ার শিল্পমহল শস্তাশ্রমের পক্ষে ও তারাই লবি করে শ্রমিক আমদানীর জন্য। সাধারণ জনগণ বহিরাগত শ্রমিকদের প্রতিযোগী হিসাবে দেখে ও বর্তমান অর্থনৈতিক মন্দার বাজারে তাদের খুশী করার জন্য জনশক্তি আমদানী বন্ধ করা একটা সহজ উপায়, এর সাথে মন্তব্যের সম্পর্ক নাও থাকতে পারে।

তবে হ্যাঁ, আমি মালয়েশিয়ার সাথে বাংলাদেশের জনশক্তি বিষয়ক কোনো চুক্তি আছে কি না জানি না, থাকলে তার আওতায় দুমদাম ভিসা ক্যানসেল করে দেওয়া যায় কিনা সেটা বাংলাদেশ সরকারের খতিয়ে দেখা উচিত।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

জ্বিনের বাদশা এর ছবি

আপনার সাথে একমত, বাংলাদেশ সরকারের উচিত মালয়শিয়া সরকারের কাছে নায্যদাবী নিয়ে নেগোসিয়েশন করা।

তবে, আপনি ভুল বুঝলেন নাকি আমি ভুল বুঝলাম! আমার তো ধারনা ছিলো নতুন যে ৫৫ হাজার লোক মালয়শিয়া যাবার জন্য ভিসা পেয়েছে, কিন্তু এখনও যায়নি (যাদের কথা জনাব তালাত মাহমুদ সাক্ষাৎকারে বললেন), শুধু তাদের ভিসা বাতিল হয়েছে। যারা ওদেশে এখন কাজ করছে তাদের কি ভিসা বাতিল হয়েছে?

তবে সেটা হলেও, একবার ভিসা দিয়ে আবার সেটা বাতিল করলে দোষটা মালয়শিয়া সরকারের ঘাড়েই পড়ে, ভিসা প্রসেসিং ফি, বিমানভাড়া, কনসোলেশন ফি -- এসব বাংলাদেশের ৫৫ হাজার শ্রমিকের পাওনা রয়ে যায়। বাংলাদেশ সরকারের উচিত যথাযথ কূটনীতির মাধ্যমে এসব আদায় করে নেয়া।
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

দিগন্ত এর ছবি

দুঃখিত, আমি ভুল বুঝেছি। এরা এখনও বাংলাদেশেই আছে। তবে তাতে আমার অবস্থান বলাচ্ছে না।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

দিগন্ত এর ছবি

মালয়েশিয়া সরকার বলেছে তারা রিফান্ড দেবার চেষ্টা করছে।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

চেষ্টা করছে

না করলে আমাদের কিছু করার থাকবে কিনা সেটাই প্রশ্ন...

দিগন্ত এর ছবি

আর এই টাকাটা গরিব মানুষের খেটে খাওয়ার টাকা ...


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

জ্বিনের বাদশা এর ছবি

বুঝলামনা, এই তিন হাজার ডলার কি জনপ্রতি, না মোট ৫৫ হাজার শ্রমিক সবার অংশ মিলে?
জনপ্রতি হইলে এমাউন্টটা বেশী বেশী লাগে(সোয়া দুই লাখ), আবার ৫৫ হাজার শ্রমিক হইলে পারহেড পড়ে ৪ টাকার একটু বেশী মন খারাপ
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

দিগন্ত এর ছবি

এদের হিসাবমত জনপ্রতি।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

জ্বিনের বাদশা এর ছবি

তাহলে তো একেবারে খারাপনা
আশা করি মালয়শিয়া সরকার সত্যি সত্যিই প্রতিশ্রুতি রাখবে
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

দিগন্ত এর ছবি

৫৩২ জনকে এমনকি কুয়ালালামপুর বিমানবন্দর থেকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এদের মাথাপিছু খরচাটা ভাবুন। আর প্রতিশ্রুতিতে টাকা ফেরত দেবে বললেও কিভাবে আর কবে ফেরত দেওয়া হবে সে নিয়ে কিছুই বলা নেই। এখন ভিসা-ধারী লোকজনে আত্মহত্যা না করতে শুরু করে ...


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

জ্বিনের বাদশা এর ছবি

ভাগ্য ভালো যে আজ জানা যাচ্ছে, এই ৫২৩ জনকে মালয়শিয়ার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ(কোম্পানী) গ্রহন করে নিয়েছেন ...

তবে বাকীদের কপাল খারাপ ... আপাততঃ আর নেয়া হবেনা ...

বিদেশ যাবার জোগাড়যন্ত্রের জন্য একেকজন যুবককে কি পরিমাণ কষ্ট করতে হয়, তার কিছুটা আমার জানা আছে ... সেক্ষেত্রে এদেরকে খরচ হওয়া টাকা ফেরত দিলে ন্যায়বিচার হয় মনে হলেও, একটা কনসোলেশন মানি অবশ্যই মালয়শিয়া সরকারের দেয়া উচিত
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

জিজ্ঞাসু এর ছবি

দিগন্ত যে মত দিয়েছেন তার সাথে একমত পোষণ করছি। বাঙলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে অনেক বেশি কার্যকর ও শ্রমিকবান্ধব নীতিমালা বিবেচনা করা দরকার। একটা ব্যাপার দুঃখজনক, যে সরকারই ক্ষমতায় আসে তারা বিভিন্ন এজেন্সির মাধ্যমে শ্রমিকদের অতিকষ্টে উপার্জিত টাকা লুটপাট বন্ধে কোন ভূমিকা রাখে না। হিউম্যান ট্রাফিকিং বন্ধে কোন কার্যকর উদ্যোগ নেই। গণমাধ্যমে গণসচেতনতারও কোন উদ্যোগ দেখি না। এজন্য জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মানুষ জীবিকার সন্ধানে কখনো বেহাল নৌকায় গভীর সমুদ্রে ডুবে মরে কখনও তারা ধুলিধূসর মরুভুমিতে তৃষ্ণায় বুক ফেটে মারা যায়। একটা স্বপ্নময় জীবনের আশা নিয়ে তারা জমি বেচে ঘর থেকে বের হয়। ফেরে লাশ হয়ে। কেউ ফেরে নিঃস্ব হয়ে। সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ক্ষমতা নিয়েই এক মহান ঘোষণা দিলেন তিনি আঞ্চলিক টাস্কফোর্স গঠন করে সন্ত্রাস মোকাবেলা করবেন। বিষয়টা আমাদের দেশের সাধারণ জনগোষ্ঠীর কাছে কোন অর্থবহন করে না। তিনি পাশাপাশি প্রবাসী বাঙলাদেশী শ্রমিকদের দেশ থেকে শুরু করে বিদেশে আমাদের দূতাবাসগুলোর মাধ্যমে সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে তা কার্যকর করবেন কি?

___________________
সহজ কথা যায়না বলা সহজে

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

প্রবাসী শ্রমিকেরাই বাংলাদেশে বৈদেশিক মুদ্রার সবচে' বড় যোগানদাতা। তা আমরা গার্মেন্টস ইণ্ডাস্ট্রী নিয়ে যতই লাফালাফি করি না কেন। মাস্টার এলসি আর ব্যাক-টু-ব্যাক এলসির হিসেবের ফাঁকিবাজীর খেলায় দেশের প্রকৃত বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের হিসেব সেখানে চাপা পড়ে যায়। যাক গে, সেসব কথা, প্রবাসী শ্রমিকদের দেশে-বিদেশে শোষন-বঞ্চনা আর জালিয়াতীর শিকার হবার কথা সম্ভব হলে পরে কখনো বলব। হিমু যে প্রসঙ্গে বলেছেন সেই কথা বলি।

আমরা কিন্তু কখনো দেখিনা যে একজন রাজনীতিবিদ বা একজন সাংবাদিক বা একজন অবসরপ্রাপ্ত সামরিক কর্মকর্তাকে ডেপুটেশনে কোন জেলার জেলা প্রশাসক বা কোন মন্ত্রনালয়ের সচিব বা সচিবালয়ের অন্য কোন ক্যাডারভুক্ত পদে নিয়োগ দিতে। অথচ বিদেশে বাংলাদেশ মিশনগুলোতে এমন নিয়োগ হর-হামেশাই হচ্ছে। এতে পেশাদার কূটনীতিকদের হতাশ করা হয়। মিশনগুলোর কাজে আর পেশাদারিত্ব পাওয়া সম্ভব হয় না। বিদেশে বাংলাদেশ মিশনগুলোতে নিয়োগের ক্ষেত্রে সরকারের নীতি যদি এমনই হয়, তাহলে উচিত বিসিএস থেকে পররাষ্ট্র ক্যাডারটি তুলে দেয়া। পররাষ্ট্র ক্যাডারের প্রশিক্ষিত কর্মকর্তাদের মাথার উপর বা সহকর্মী হিসেবে রাজনৈতিক বিবেচনায় নিয়োগপ্রাপ্ত ব্যাক্তিরা যখন বসেন তখন ঐসব মিশনের কাজে দক্ষতা আশা করা যায় না। দেশের পররাষ্ট্রনীতিটি সুলিখিত ও খুব স্পষ্ট কিনা জানি না। তবে কূটনীতির খেলায় বাংলাদেশের ক্রীড়া দলগুলোর মত আমাদের ক্রমাগত পরাজয় দেখতে দেখতে আমাদের পররাষ্ট্রনীতিটি আসলেই কী তা নিয়ে মনে সংশয় জাগে।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

নীড় সন্ধানী [অতিথি] এর ছবি

বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশী বৈদেশিক মুদ্রার যোগানদাতারা সবচেয়ে বেশী অবহেলার শিকার। যেমন অবহেলিত কুটনৈতিক পাড়ার কাছে, তেমনি লান্ছিত ইমিগ্রেশানে। দুধেল গাইয়ের উপকারিতা নিয়ে যতটা বক্তৃতাবাজি হয় তার কিয়দংশও যদি সেই গাইয়ের যত্নে ব্যয় করা হতো, বাংলাদেশের চেহারাই বদলে যেতো। হয়তো পররাষ্ট্র মন্ত্রকের কর্তাগন অনেক বড় বড় কাজে ব্যস্ত, তাই বছরে আট নয় বিলিয়ন ডলারের যোগানদাতা গরীব শ্রমিকদের স্বার্থ নিয়ে কাজ করার সুযোগ পান না তেমন।

মালয়েশিয়ায় শ্রমিক নিয়োগের অনিয়ম নিয়ে বহুদিন যাবৎ হৈচৈ হয়েছে। রিক্রুটিং এজেন্সীর দালালদের কাছে বহু শ্রমিক সর্বশান্ত হয়েছে। কিন্তু তবু কোন সরকারকেই কেন যেন কঠোর কোন পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি। এবারের ক্ষতিগ্রস্থের তালিকায় ৫৫ হাজার নতুন করে যুক্ত হলো সরকারীভাবেই। মনে হয়না এরা কোন ক্ষতিপুরন পাবে। বিশ্বমন্দা পরিস্থিতিতে এরকম দুঃসংবাদ আরো আসতে পারে।

আসলে মালয়েশিয়ার সোনার হাঁসটাকে আমরা ঠিকমতো লালন করতে পারিনি কখনোই। বরং অতীতে সাকাচৌর মতো বিতর্কিত লোককে ওআইসির মহাসচিব পদে মালয়েশিয়ার বিপরীতে দাড় করানোর মতো বালখিল্যতার মূল্যও কম দেইনি।

শিক্ষানবিস এর ছবি

আমাদের অর্থনীতির দুধ দেয়া গাইকে সার্ভিস দেয়ার ব্যাপারে দক্ষ জনশক্তি নিয়োগের ব্যাপারে পররাষ্ট্র ও শ্রম মন্ত্রণালয়ের আন্তরিক হওয়া জরুরি বলে আমার মনে হয়।

সহমত.......

প্রশাসকদের কি কোনদিনই বোধদয় হবে না!!!!!!!!!!


অন্ধকারের উপর লাঠিপেটা করে লাভ নেই, আলোক জ্বালালেই অন্ধকার দূর হবে

আনিস মাহমুদ এর ছবি

কুটনীতিকের বিশেষণ হিসেবে 'সত্যবাদী' শব্দটি গালির সমার্থক।

.......................................................................................
আমি অপার হয়ে বসে আছি...

.......................................................................................
Simply joking around...

সুবিনয় মুস্তফী এর ছবি

ফিলিপিনের ফ্লোর কন্তেমপ্লাসিওন জীবন দিয়ে তার দেশের লক্ষ লক্ষ অভিবাসী শ্রমিকদের জন্যে যথাযথ সম্মান আর রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে কূটনৈতিক সুরক্ষা নিশ্চিত করেছিলেন। ফিলিপিনোদের কাহিনী নিয়ে নিউ ইয়র্ক টাইমস দুই বছর আগে এক বিশাল প্রতিবেদন ছাপিয়েছিল। A Good Provider Is One Who Leaves। সেখান থেকে একটা উদ্ধৃতি তুলে দিচ্ছি, শ্রমিকদের সম্মানের একটা উদাহরণ। অনুবাদ ছাড়াই দিয়ে দিলাম -

With about one Filipino worker in seven abroad at any given time, migration is to the Philippines what cars once were to Detroit: its civil religion. A million Overseas Filipino Workers — O.F.W.’s — left last year, enough to fill six 747s a day... A kilometer of crimson stretched across the Manila airport, awaiting a planeload of returning workers and the president who would greet them. The V.I.P. lounge hummed with marketing schemes aimed at migrantsand their families. Globe Telecom had got its name on the security guards’ vests. A Microsoft rep had flown in from the States with a prototype of an Internet phone. An executive from Philam Insurance noted that overseas workers buy one of every five new policies. Sirens disrupted the finger food, and a motorcade delivered the diminutive head of state, President Gloria Macapagal-Arroyo, who once a year offers rice cakes and red carpet to those she calls “modern heroes.”

প্রেসিডেন্ট যায় বিমান বন্দরে রিসিভ করতে, হিরো বলে সম্মান জানায়। আমাদের দেশে এমন হবে কবে?
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর

সিরাত এর ছবি

ভাল লাগলো।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।