সমুদ্রে পেতেছো শয্যা: আড়িয়াল বিল কি ফুলবাড়ি বাস্তবায়নের জন্যে লাল-হেরিং?

হিমু এর ছবি
লিখেছেন হিমু (তারিখ: বিষ্যুদ, ০৩/০২/২০১১ - ২:১২পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

১.
হেরিং মাছটা সস্তায় পাওয়া যায় কৌটায়। মাঝেমধ্যে টাকাপয়সার টানাটানি থাকলে দরিদ্র ছাত্রদের জন্যে কৌটাবন্দী হেরিং, টুনা, ম্যাকেরেল আর সার্ডিন ভরসা। কৌটার হেরিঙের জাতপাত কিংবা গায়ের রং বিচার করা সম্ভব নয়। কিন্তু লাল-হেরিঙের মাহাত্ম্য অন্য জায়গায়। বেশি কষ্ট করলাম না, জ্ঞানের বাটখারাদের মতো গুগল মেরে উইকিপিডিয়ার ভুক্তির প্রথম প্যারাটা তুলে দিচ্ছি।


Red herring is an idiomatic expression referring to the rhetorical or literary tactic of diverting attention away from an item of significance.[1] For example, in mystery fiction, where the identity of a criminal is being sought, an innocent party may be purposefully cast in a guilty light by the author through the employment of false emphasis, deceptive clues, 'loaded' words or other descriptive tricks of the trade. The reader's suspicions are thus misdirected, allowing the true culprit to go (temporarily at least) undetected. A false protagonist is another example of a red herring.

[সূত্র]

২.
এবার কথা বলি আড়িয়াল বিল নিয়ে। আমাদের প্রধানমন্ত্রী একটি প্রকল্প অনুমোদন করেছেন, যার জন্যে ৫০ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হবে। ১ লক্ষ ৬৬ হাজার ৬০০ একর আয়তনের প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী আড়িয়াল বিলের ২৫ হাজার একর অধিগ্রহণ করে, সেই বিল ভরাট করে তার ওপর একটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও উপশহর নির্মাণ করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্যে,

  • কোনো পরিবেশগত প্রভাব সমীক্ষা করা হয়নি।
  • পরিবেশ অধিদপ্তরের কাছে এখনও পর্যন্ত কোনো ছাড়পত্র চাওয়া হয়নি।
  • রামসার কনভেনশন ১৯৭১ ও কনভেনশন অন বায়োডাইভার্সিটি ১৯৯২ এ স্বাক্ষরিত অনুসমর্থন লঙ্ঘন করা হচ্ছে।

প্রকল্পটি বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ (সংশোধন) আইন, ২০১০-এ উদ্ধৃত আইন, "আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইনে যা কিছুই থাকুক না কেন, জলাধার হিসেবে চিহ্নিত জায়গা ভরাট বা অন্য কোনোভাবে শ্রেণী পরিবর্তন করা যাবে না", সরাসরি লঙ্ঘন করে।

এ ছাড়া বিমান-পরিবহন বিশেষজ্ঞ, পানিবিশেষজ্ঞ, ভূমিবিশেষজ্ঞ, জলবায়ুবিশেষজ্ঞ ও কৃষিবিশেষজ্ঞরাও প্রকল্পটি সম্পর্কে নেতিবাচক মনোভাব পোষন করে মত দিয়েছেন। [সূত্র ১, সূত্র ২]

সরকারের মন্ত্রী ও সচিবরা এই প্রকল্পটিকে আশ্চর্য মলম হিসেবেই মিডিয়ায় ক্যানভাসিঙের চেষ্টা করেছেন। কালের কণ্ঠে প্রকাশিত এক সংবাদে জানা যায়:

সম্প্রতি গৃহায়ণ ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আব্দুল মান্নান খান কালের কণ্ঠের সঙ্গে আলাপকালে বলেন, চলতি সরকারের আগামী তিন বছরের মধ্যে অন্তত একটি রানওয়ের কাজ সম্পন্ন করার পরিকল্পনা সরকারের আছে। এখানে বিমানবন্দরের সঙ্গে সড়ক ও মহাসড়ক যুক্ত থাকবে। এ ছাড়া এই এলাকায় গড়ে তোলা হবে এঙ্পোর্ট প্রসেসিং জোন, ট্রেড সেন্টার, পর্যটন স্পট ও অন্যান্য শিল্প। এসবের সরাসরি সুফলভোগী হবে মুন্সীগঞ্জের মানুষ। বিদ্যুৎ-গ্যাস যাওয়ায় এলাকার মানুষের জন্য একটি বিশাল সম্ভাবনার দ্বার উন্মুক্ত হবে। অন্তত ১০ লাখ লোক বিমানবন্দর প্রকল্পের সরাসরি সুফল পাবেন। একটি বিশ্ববিদ্যালয়ও মুন্সীগঞ্জে স্থাপন করা হবে। মুন্সীগঞ্জে যাঁদের পাঁচ কাঠা জমি আছে, তাঁরা বুঝতে পারবেন, এই জমির কী মূল্য। প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, বিমানবন্দরটি হলে সোনা ও হীরার খনিতে পরিণত হবে মুন্সীগঞ্জের মাটি। মানুষের ভাগ্য খুলে যাবে।

আড়িয়াল বিল এলাকার মানুষ বিমানবন্দর নির্মাণের বিরুদ্ধে অবিচল থাকলে সরকার বিকল্প চিন্তা করতে পারে। সে ক্ষেত্রে ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলায় বা মাদারীপুরের রাজৈরে বিমানবন্দর নির্মাণের কথা ভাববে সরকার। বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন সচিব শফিক আলম মেহেদী এ ইঙ্গিত দিয়েছেন।

সরকারের পক্ষ থেকে মূলা ঝুলানো হয়েছে:

গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, আড়িয়াল বিলের ২৫ হাজার একর জমিতে বিমানবন্দর ছাড়াও বঙ্গবন্ধুর নামে একটি আধুনিক শহর গড়ে তোলার বৃহৎ পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। এটা হলে মুন্সীগঞ্জসহ দোহার-নবাবগঞ্জের আমূল উন্নয়ন সাধিত হবে। প্রচুর কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে। পুরো প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ১০ হাজার একর জমি অধিগ্রহণ করতে হবে। এ ক্ষেত্রে জমির মালিকরা যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হন, সে জন্য তাঁদের বাজারমূল্যের চেয়ে তিন গুণ দাম দেওয়া হবে। মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা কালের কণ্ঠকে বলেন, যাঁদের জমি অধিগ্রহণ করা হবে, আধুনিক আবাসিক শহরে তাঁদের প্লট বরাদ্দ দেওয়া হবে।

সরকারের পরিকল্পনা রয়েছে আড়িয়াল বিলে বিমানবন্দর হলে সরাসরি ঢাকার সঙ্গে মুন্সীগঞ্জে মাত্র ৩০ মিনিটে যাতায়াতের ব্যবস্থা করার। এ জন্য ঢাকার জিরো পয়েন্ট থেকে আড়িয়াল বিল পর্যন্ত ২৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এলিভেটেড এঙ্প্রেসওয়ে নির্মাণ করা হবে। এ ছাড়া থাকবে সরাসরি আধুনিক রেল যোগাযোগব্যবস্থা। মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরে একটি বৃহৎ রেলওয়ে জংশন হবে। এখান থেকে গজারিয়া, দাউদকান্দি, লাকসাম, সিরাজদিখান, শ্রীনগর, ফতুল্লা, নিমতলা, কেরানীগঞ্জ, দৌলতদিয়া, দোহার, পাটুরিয়া, হরিরামপুর, সিঙ্গাইর, টঙ্গী ও জয়দেবপুরে আধুনিক রেলযোগাযোগ ও সড়ক যোগাযোগ স্থাপিত হবে।

[সূত্র]

ওদিকে আড়িয়াল বিলে ভূমি অধিগ্রহণ ঠেকাতে সম্মিলিত জনতার সাথে সংঘর্ষে পুলিশবাহিনীর এক সদস্য নিহত এবং শতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন [সূত্র] । সরকার এই সংঘর্ষের জন্যে বিরোধী দলীয় নেত্রী খালেদা জিয়ার নামে মামলা ঠুকে দিয়েছে, আর আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই প্রকল্প থেকে সরে আসার ইঙ্গিত দিয়েছেন। [সূত্র]

৩.
ওদিকে বিডিনিউজ২৪ ডট কমে প্রকাশিত খবর থেকে জানা যাচ্ছে, এশিয়া এনার্জি, যা নাম পাল্টে এখন জিসিএম নামে পরিচিত, ফুলবাড়ি নিয়ে সরকারের সঙ্গে আলোচনায় বসেছে। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা তৌফিক এলাহী চৌধুরী যে ফুলবাড়ি নিয়ে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের আবদারের [পড়ুন হুকুম] সাথে একমত, সে খবর আগেই এসেছিলো উইকিলিকসের ফুটো গলে, আজ আবারও এলো। [সূত্র]

৪.
আড়িয়াল বিল নিয়ে দুই দলের নাটকের ফাঁকে পর্দার আড়ালে কি ফুলবাড়িতে দাঁত বসাবে জিসিএম? তৌফিক এলাহী চৌধুরী কি পারবেন এই মেয়াদে আখের গুছিয়ে নিতে? ফুলবাড়ির জনতা কি বিম্পির মতো লীগের আমলেও প্রতিরোধে সক্ষম হবে? জানতে হলে টিকে থাকুন। লোডশেডিং, বন্যা, ভূমিকম্প, জলাবদ্ধতা সয়ে টিকে থাকুন কোনোমতে।

[/justify]


মন্তব্য

আকাশসাব্বির এর ছবি

অস্বাভাবিক কিছু নয়।

একটু ভাল করে মনে করলে দেখবেন, ২৫ ফেব্রুয়ারি র পিলখানা হত্যাকান্ডের মাস্ খানেক পরেই প্রথম আলু ও অন্য কএকটি পত্রিকায় ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলা নিয়ে ব্যাপক লেখালেখি হয়, মানুষের চোখ সরিয়ে নিতে।

সবুজ পাহাড়ের রাজা এর ছবি

অদ্ভুদ এক দেশে থাকি ।
অবস্থা এমন যে আমরা বাংলাদেশীরা প্রতি পাঁচ বছর পর পর জোঁক নির্বাচিত করি আমাদের রক্ত শুষে পান করার জন্য ।

--------------------------------------------
আমার চারপাশ ডট কম

অতিথি লেখক এর ছবি

জোঁক নির্বাচিত না করে উপায় আছে, গণতন্ত্রের নামে আমরা পরিবারতন্ত্র বানিয়ে রাখব, নির্বাচনের পরে হাহুতাশ করব- "ইশ কি ভুলটাই না করছি!!" অথচ নতুন একটা দল গড়ার সামর্থ যেমন নেই। নতুন একটা দলকে গ্রহন করার মানসিকতা ও নেই...সেই একি আলীগ-বিনপি; আর তাদের তাবেদার জামাত-জাতীয় পার্টি।
এই সত্য তারাও জানে। তাই পালা করে রক্ত শুষে পান করতে ক্ষতি কি?

আড়িয়াল বেঁচে গেল...কিন্তু এই অপ্রয়োজনীয় বিমান-বন্দর প্রকল্প বাতিল হয়নি। যদি একবার আলীগ এটা শুরু করতে পারে, পরের বার বিনপি নির্বাচিত হলে ঠিক বাস্তবায়ন করবে, শুধু নামটা পরিবর্তন করে দিবে।
এই ৫০ হাজার কোটি টাকা দিয়ে দেশের অনেক বাস্তব সমস্যা সমাধান করা যায়। জানি হবে না, তবু আশা করব আলীগের বোধোদয় হবে।

দুর্দান্ত এর ছবি

সহমত। আমাদের দেশের দুই দল সংসদে ও রাস্তায় যুদ্ধ যুদ্ধ খেলে ঠিকই। কিন্তু বড় দাঁও এর বেলায় তারা দিয়ে থুয়েই কাজ করে। তুম ভি খুশ, হাম ভি খুশ।

দিগন্ত এর ছবি

সরকার তো আবার এই বিমানবন্দর পরিকল্পনা বাতিল করেছেন।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

হিমু এর ছবি

সরকার বিমানবন্দর পরিকল্পনা বাতিল করেছে বলে মনে হচ্ছে না, কেবল স্থান পাল্টানোর ইঙ্গিত করেছে। নিতান্ত পতিত জমি না হলে এ প্রকল্পের পরবর্তী গন্তব্য হবে আরেকটি আড়িয়াল বিল।

সোভিয়েত ইউনিয়ন যখন আফগানিস্তানে মার্চ ইন করে, জ্বিগনিয়েভ বঝেজিনস্কি [এই ব্যাটার নাম বাংলায় লেখা যায় না আসলে, Zbigniew Brzezinski] তখন উল্লসিত হয়ে বলেছিলো, এইবার ব্যাটারা নিজেদের ভিয়েতনামের পাকে আটকা পড়েছে। আড়িয়াল বিল হচ্ছে লীগের কানসাট। সময়মতো পিছিয়ে আসা মঙ্গলজনক, কিন্তু যারা হালুয়ারুটির লোভে এই নজমুলহুদীয় প্রকল্পে বাতাস করছে, তারা তো থামবে না। ফলে মিডিয়ার সামনে একটা স্মোক স্ক্রিন তৈরি হবে আবারও। সবাই ব্যস্ত থাকবে এই তুঘলকি বিমানবন্দরপ্রকল্প নিয়ে, চিপা দিয়ে এশিয়া এনার্জি ঠিকই ফুলবাড়ির মাটি কোপানো শুরু করবে।

অতিথি লেখক এর ছবি

কোনটা যে হেরিং আর কোনটা তিমি, ২ বছর পরে এখন আর তার কিছুই বুঝতে পারছি না। মাঝে মাঝে দুর্জনের কথাই সত্যি মনে হয় এখন - যুদ্ধাপরাধীর বিচার, চার নেতার বিচার, তাহের বিচার, এই বিচার - সেই মামলা - ঐ উচ্ছেদ, এই সংশোধন, ঐ পূনর্মুদ্রন, সেই রায়, বিশ্বকাপ, মঙ্গলগ্রহকাপ, সৌরজগতকাপ - এইসবই সম্পূর্ণ ন্যায়সঙ্গত হয়েও শেষমেশ আসলে ম্যাংগো পাব্লিকের জন্য "মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সরকারের" তরফ থেকে মহান রেড-হেরিং উপহার !

আর তিমিগুলি হয়তো - তেল-গ্যাস চুক্তি, ফুলবাড়িয়া, ট্রানজিট, আড়িয়াল বিল, এক্সিম, টাটা, সমুদ্র-সীমা, এবং আরো বড় বড় যত সব ইস্যু। আমরা যখন যাবতীয় ন্যায়সঙ্গত এ্যাবস্ট্রাক্ট রেড-হেরিংয়ের পিছনে ওয়াইল্ড গুজ চেজ করে বেড়াবো, তখন ওদিকে অত্যন্ত কঙ্ক্রীট তিমিগুলি সব চোখের সামনে থেকে লোপাট হয়ে যাবে হয়তো।

বাংলাদেশ মনে হয় বিশেষ দুই পরিবারের ব্যক্তিগত জমিদারি। এটা নিয়ে তারা যেন যা ইচ্ছা তাই করতে পারে। হাইড্রোজেন বোমা মেরে এই শালার দেশটাকে তারা উড়িয়ে দিলেও কার কি বলার আছে ?!

মনমাঝি

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

আওয়ামী লীগ কী পরিবর্তন আনলো সেটা জানতে ইচ্ছে করছে। এখন পর্যন্ত ওদের উপর বিশ্বাস আছে। তবে মনে হচ্ছে ওরা পিছলে পড়ছে। যেটা দু:খজনক। যুদ্ধাপরাধী সহ অন্য ইস‌্যুগুলোর আদৌ সমাধান হবে কি? সন্দেহ বাড়ছে।

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

প্রথম পাতায় জাস্টিফাই ট্যাগের সতর ঢাকতে সামারীটা স্প্লিট করো। তারপর সামারীতে ক্লোজিং জাস্টিফাই ট্যাগ যোগ করো এবং বডিতে ওপেনিং জাস্টিফাই ট্যাগ যোগ করো।

অতিথি লেখক এর ছবি

আমরা নিজেকেও চিনি কি ঠিক করে??
ঢাকায় মানুষের স্থান সঙ্কুলান হচ্ছে না, ট্র্যাফিক জ্যাম, সিমেন্টের জঙ্গল অপরিকল্পিত, ভুমিকম্পে কেয়ামত হবে, সরকার দোষী ইত্যাদি ইত্যাদি-> ফলাফলে বড় বড় কথা, পুস্ত।
সেটার সমাধানে যেতে হবে ঢাকার আশেপাশেই, যেকোন প্রকল্প হাতে নিলেই কিছু স্থানীয় মানুষ ক্ষতিগ্রস্থ হবেই এটা নিশ্চিত, এখন জাহাজ বন্দর বানাও আর ঊট বন্দর বানাও বা সামান্য একটা ব্রীজ বানাও, পাশাপাশি কিছু মানুষ লাভবানও হবে, তাইলে এখন কি করা? ঢাকার কিঞ্চিত বিকল্প হিসেবে লালমনিরহাটকে বেছে নেয়া?

মাহবুব রানা এর ছবি

রামসার কনভেনশন সম্ভবত শুধু রামসার সাইট সংরক্ষনের জন্য প্রযোজ্য। মোট ১৯১২ টি রামসার সাইটের মধ্যে বাংলাদেশে আছে ২ টি: হাকালুকি আর সুন্দরবন।

আইনে যা-ই থাকুক, স্থানীয় জনগনের ইচ্ছার বিরুদ্ধে কোনো প্রকল্প বাস্তবায়নের আগে এর পরিনতি চিন্তা করতে হবে সরকারকে।

দুর্দান্ত এর ছবি

হেরিং হতো, যদি এই প্রকল্পে প্রশাসনের কোন লাভ না থাকতো।
এখানে তো লাভই লাভ। মোট কথা নির্বাচনের আগে 'ক' পরিমান টাকা নিয়ে বেরুবে।
এখন সেটা ফুলবাড়ী থেকে আসুক আর আড়িয়াল বিল থেকে আসুক আর এলেভেটের এক্সপ্রেস থেকে।

অতিথি লেখক এর ছবি

বাংলাদেশের মতো দেশের সাহস হয় কি করে? যে দেশ এখনো চারটি প্রধান শহরেই নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুত দেবার ব্যবস্থা করতে পারেনি, যে দেশের প্রধান দুটো শহরে আসা যাওয়ার জন্য একটি ভদ্র গোছের হাইওয়ে নেই, যেদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা, শিক্ষা, স্বাস্থ্য এখনো গ্রহনযোগ্য সীমারও অনেক নীচে তখন সেই দেশ এরকম বিলাসী প্রকল্পের কথা মুখে আনলে ধৃষ্ঠতা কিংবা মূর্খতাই প্রকাশ পায়। সারা বিশ্ব যখন নিদারুণ অর্থনৈতিক মন্দা নিয়ে শংকিত, সেরকম সময়, ভিক্ষার টাকা দিয়ে এরকম বিলাসী প্রকল্পের কথা মুখে আনা ভিখারীর লেক্সাস কেনার আবদারের মতো লাগে না?

ধুসর গোধূলি এর ছবি

অই ব্যাটা ফিশারিজ, আড়িয়াল বিলে কি হেরিং পাওয়া যায়? আড়িয়াল বিলের প্রেক্ষিতে উদাহরণ দিবি টাকি মাছের, টেংরা মাছের। আর লাল রঙা মাছ চাইলে দিবি চ্যালা মাছের উদাহরণ। তা না কইরা দিলি একটা বিদেশি মাছের উইকি(লিক্স) মাইরা।

দেশের উন্নতি করতে দে। বিমান বহরে বিমান নাই, সেইদিকে কারো কোনো ভ্রুক্ষেপ নাই। এয়ারপোর্টই উন্নতির একমাত্র চাবিকাঠি। এই এয়ারপোর্টে কি বড় বড় পাল তোলা বজরা বান্ধা থাকবো? বিমান বাংলাদেশ বজরা!

হালায়, পাবলিক মরে শীতের চোটে, আর এইদিকে নেতারা আছে এয়ারপোর্ট নিয়া। সবকয়টারে রাইন নদীতে চুবায়া রাখোন দরকার খালি গায়ে। তাইলে বুঝতো, জরুরী কোনটা!

অতিথি লেখক এর ছবি

বাংলাদেশের মতো দেশের সাহস হয় কি করে? যে দেশ এখনো চারটি প্রধান শহরেই নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুত দেবার ব্যবস্থা করতে পারেনি, যে দেশের প্রধান দুটো শহরে আসা যাওয়ার জন্য একটি ভদ্র গোছের হাইওয়ে নেই, যেদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা, শিক্ষা, স্বাস্থ্য এখনো গ্রহনযোগ্য সীমারও অনেক নীচে তখন সেই দেশ এরকম বিলাসী প্রকল্পের কথা মুখে আনলে ধৃষ্ঠতা কিংবা মূর্খতাই প্রকাশ পায়। সারা বিশ্ব যখন নিদারুণ অর্থনৈতিক মন্দা নিয়ে শংকিত, সেরকম সময়, ভিক্ষার টাকা দিয়ে এরকম বিলাসী প্রকল্পের কথা মুখে আনা ভিখারীর লেক্সাস কেনার আবদারের মতো লাগে না?

---------------------------------------------------------------------------------------------------------------
কাউসারআলম2020

তাসনীম এর ছবি

বিমানবন্দর এখন উত্তরবঙ্গের কোথাও হবে। হাসিনার নিউজ কনফারেন্স দেখলাম।

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

তারাপ কোয়াস এর ছবি

হিমু ভাইয়ের আশংকা সম্ভবত সঠিক। আজকে আলু পেপারে লিখছে এমসিসিআই এর প্রতিনিধিরা প্রধানমন্ত্রীকে "বিদ্যুৎ উৎপাদনে দেশি কয়লা ব্যবহারের অনুরোধ" করছেন! তাদের বক্তব্য:

যেসব দেশের কয়লা মজুদ আছে, তারা বিদ্যুৎ উৎপাদনে কয়লা ব্যবহার করে। এ দেশেও কয়লার মজুদ বেশ ভালো। তাই ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের পুনর্বাসন ও পরিবেশগত সুরক্ষার নিশ্চয়তা বিধান করার পর কয়লা আহরণ শুরু হওয়া প্রয়োজন।
বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য আমদানি করা কয়লার ওপর নির্ভর করলে দেশের জ্বালানি নিরাপত্তা বিদেশি সরবরাহের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়বে এবং ব্যয় অনেক বেশি হবে

হঠাৎ করে এমসিসিআই এর এই দেশীয় কয়লাপ্রেম 'কেমুন জানি লাগে'।


love the life you live. live the life you love.

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।