অল ইজ ওয়েল

অদৃশ্য মানব এর ছবি
লিখেছেন অদৃশ্য মানব [অতিথি] (তারিখ: সোম, ২৮/১২/২০০৯ - ১:৫৩অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

থ্রি ইডিয়টসথ্রি ইডিয়টস

(ইহা একটি হিন্দি সিনেমা বিষয়ক ভালোচনা(ভালো+আলোচনা)। হিন্দি সিনেমা নিয়ে যাদের এলার্জি আছে, তারা সপাং করে এই পোস্টের উপর অথবা নিচের পোস্টে টিপি দ্যান)

হিন্দি সিনেমা দেখা যেমন একটি ফ্যাশন হয়ে দাঁড়িয়েছে, হিন্দি সিনেমা না দেখাও তেমনি একটা ফ্যাশন হয়ে দাঁড়িয়েছে। এবং মজার ব্যাপার হচ্ছে, জীবনের কোন না কোন এক সময়ে আমি দুই দলেরই সচল (একটিভ) সদস্য ছিলাম। এক সময় হিন্দি সিনেমা দেখেছি প্রচুর। তারপর একই ত্যানা প্যাচানি দেখতে দেখতে বিরক্ত হয়ে বাদও দিয়েছি। এখন বড়জোর বছরে ১ টা কি ২ টা হিন্দি সিনেমা দেখি।

এই সিনেমা দেখার কারণ মূলত দুটিঃ আমির খান আর রাজু হিরানি (পরিচালক)। দুইজনরেই মোটামুটি ভালো ভক্ত আমি। তা, এই দুইজন এক সাথে জুটি বেধেছে, এখন ভেবে দেখলাম, এ বছরের হিন্দি সিনেমার কোটা তাহলে পূরণ করা যায়। সিদ্ধান্তটি ভুল হয়নি, বলাই বাহুল্য।

রাজু হিরানির আগের দুটি মুভি, মুন্না ভাই এম বি বি এস ও লাগে রাহো মুন্নাভাই এম্নিতেই প্রত্যাশার পারদ আকাশে তুলে দিয়েছে। আগের দুই সিনেমার যাদু এই সিনেমাতেও ধরে রাখা সম্ভব হবে কিনা, তা নিয়ে আমি নিজেও ১০০% শংকায় ছিলাম। আর সিনেমার শুরুটাও মোটামুটি ম্যাড়ম্যাড়ে ছিল। দেখার সিদ্ধান্ত নিয়ে ভুল করেছি কিনা ভেবে যখন উশখুশ করা শুরু করেছি, তখনই আস্তে আস্তে সিনেমায় ঢুকে গেলাম।

'যাদু কা ঝাপ্পি' এর পর হিরানি এবার হাজির হলেন 'অল ইজ ওয়েল' এর যাদুমন্ত্র নিয়ে।

সিনেমাটি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনায় গিয়ে যারা এখনও দেখেননি, তাদের মজা নষ্ট করতে চাচ্ছি না।

শুধু এটুকই বলতে পারি, এ সিনেমাটি আপনাকে হাসাবে, কাঁদাবে, জীবনকে ভালোবাসতে শিখাবে। কখনও আপনি দিল চাহতা হ্যায় এর আমেজ পাবেন, কখনও মুন্না ভাই এমবিবিএস এর আমেজ পাবেন, আবার কখনও লাগে রাহো মুন্না ভাই এর আমেজ পাবেন।

সাথে আরেকটু যোগ করি...এই সিনেমাটি দেখতে বসেছিলাম যতদূরসম্ভব ডাউন থাকা সম্ভব ততটুকু হয়েই। সিনেমাটি শেষ করে মনে হচ্ছে কাল জীবনযুদ্ধের জন্য আরো একবার ঘুম থেকে উঠতে পারবো।

আরো প্যাচাল পাড়তাম, কিন্তু আমার আবার একটু 'মূত্র বিসর্জনে' যেতে হবে দেঁতো হাসি

সব শেষে একটা কথাই বলিঃ যদি আপনি মুভি দেখে হাসতে ভালো না বাসেন তবে এই সিনেমাটি আপনার জন্য নয়।

যাদের দেখার আগ্রহ হচ্ছে, কিন্তু ডিভিডিতে বা হলে গিয়ে দেখার উপায় নেই তারা নিচের লিংকটি ডলা দিতে পারেন

থ্রি ইডিয়টস


মন্তব্য

রনি পারভেজ [অতিথি] এর ছবি

ধন্যবাদ। দেখি ডাউনলোড করে।

তিথীডোর এর ছবি

রাজকুমার হিরানিকে মজা করেই 'রাজু' লিখলেন কি?
হাঃহাঃহাঃ! মুভিটার ভীষণ প্রশংসা শুনছি, দেখতে হবে তো ...
রিভিউ ভাল্লাগেছে!!

--------------------------------------------------
"সোনার স্বপ্নের সাধ পৃথিবীতে কবে আর ঝরে..."

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

অমিত এর ছবি

পুরোটা না দেখলেও ৫৬:০০ তে চতুর এর স্পিচটা দেখা উচিত হাসি

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

ভালো প্রিন্ট আসার আগে দেখবো না... আপনি কি হলে দেখলেন নাকি ?? নাকি ডিভিডিতে ?? প্রিন্ট কীরাম ছিলো ??

... আর এই ছবিটা নিয়ে প্রত্যাশা মিটলো না কিন্তু রিভিউ পড়ে- আরেকটু বড় হলে ক্ষেতি কি ছিলো বস ?? ...

_________________________________________

সেরিওজা

ভ্রম এর ছবি

আহা! প্রায় দেখেই ফেলেছিলাম কাজের ফাঁকে... আরেকটু বাকি, শেষ করে নেব । ছবি দেখে শেষ করতে না পারাটা একটা ভালো মেন্টাল টর্চার বটে...
তাও ভালো চেতন ভগত এর ফাইভ পয়েন্ট সামওয়ান গল্পটা পড়া আছে নইলে অনেক কষ্ট হত... যদিও অনেকে বলছে থ্রী ইডিয়েটসে অনেক পরিবর্তন আনা হয়েছে।

আমার খুব খুব ভালো লেগেছে। বহুদিন পর একটা হিন্দি ছবি দেখে মনে হল সময়তো নষ্ট করিইনি বরং সময়ের গুরুত্বটা বেশ অন্যরকম করে বুঝলাম। আমির খান কি কখনো বুড়ো হবেনা! একি! এত্ত কিউট লেগেছে। শারমান আর মাধবনকে রাঙ দে বাসান্তির পর আর একদম ভালোই লাগেনি কোথাও। অসাধারন প্রত্যাবর্তন! বোমান ইরানীও বরাবরের মতই চ্রম! গল্প, সংলাপ, চিত্রনাটয, নির্দেশনা সব মিলিয়ে চমৎকার একটা ছবি! ওরকম অ্যাটিটিউড থাকলে আসলেই জীবনটা অন্যরকম হত...

থ্রী ইডিয়েটস এর কথা ভাবতেই মনটা হঠাৎকরে ভালো হয়ে গেলো... হাসি

এডিটঃ চতুরের কথা বলতে ভুলে গেলাম! হাহা... কি যে অবস্থা... আমার এক সহপাঠী এখন দুষ্টুমি করে চতুরের মত করে কথা বলে... ওকে সিরিয়াসলি নেয়া অনেক কঠিন হয়ে গেছে ! দেঁতো হাসি

রাগিব এর ছবি

ক্যামেরা প্রিন্ট দেখবেন না, প্রচুর দৃশ্য কাটা আছে।

আমার ২ দিন পেটের মাসল ব্যথা ছিলো, এতোই হেসেছি। চতুরের মতো আঁতেল গাদায় গাদায় দেখা বুয়েটে, কাজেই সব চরিত্রের সাথে আইডেন্টিফাই করা গেছে সহজে।

সবচেয়ে চমক আমির নিজেই। ৪৪ বছরে যিনি ২০ বছরের যুবকের চরিত্রে দিব্যি মানিয়ে যান, তাকে অসাধারণ অভিনেতা বলতেই হয়।

----------------
গণক মিস্তিরি
মায়ানগর, আম্রিকা
ওয়েবসাইট | কুহুকুহু

----------------
গণক মিস্তিরি
জাদুনগর, আম্রিকা
ওয়েবসাইট | শিক্ষক.কম | যন্ত্রগণক.কম

আবির আনোয়ার এর ছবি

অতি "বলাৎকার" মুভি দেঁতো হাসি

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

গড়াগড়ি দিয়া হাসি

ফাটাফাটি একটা মুভি।

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

ভণ্ড_মানব এর ছবি

রিভিউ কেমন জানি ফাকিবাজির উপরে দিয়াই করলেন বলে মনে হলো।
তবে মুভিটা নিয়ে অনেক আগ্রহ কাজ করছে মুভির প্রিভিউ দেখার পর থেকেই। আর আমিরের ভক্ত হিসেবেও এ মুভি এড়িয়ে যাওয়ার কোন কারণই নেই। অপেক্ষায় আছি মুভির ঝকঝকে তকতকে প্রিন্ট দেখার জন্যে। হাসি
__________________________________
যাক না জীবন...যাচ্ছে যখন...নির্ভাবনার(!) নাটাই হাতে...

__________________________________
যাক না জীবন...যাচ্ছে যখন...নির্ভাবনার(!) নাটাই হাতে...

তানবীরা এর ছবি

ইউটিউবে আসা মাত্র দেখে নিবো, এনশাল্লাহ।
*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

অনিকেত এর ছবি

চলুক

অতিথি লেখক এর ছবি

এই মাত্র ছবিটি দেখে হল থেকে বের হলাম, টালমাটাল পায়ে, পুরোপুরি মোহাচ্ছন্ন অবস্হায়। ৩টি ঘন্টা যে কোথা দিয়ে চলে গেল টেরই পাই নি। ছবিটি পুরো ৩টি ঘন্টাই দর্শকদের মনোযোগ ধরে রেখেছে একই গতিতে। অসাধারন একটি ছবি।

ছবিটি দেখে দেশে আন্ডারগ্র্যাড না পড়তে পারার আক্ষেপটুকু আরেকবার নতুন করে চাড়া দিয়ে উঠল। সত্যই নিজের দেশের ছেলে-মেয়েদের সাথে জীবনের ঐ সময়টুকু কাটানো যে কতটুকু আনন্দময় তা বলে বোঝানো যাবে না। বলাই বাহুল্য যে আমার সেই সময়টুকু কেটেছে সদূর আমেরিকার এক বিশ্ববিদ্যালয়ে একাকি! একথা যেমন সত্য যে ছবিটি আমাকে সেই না পাবার বেদনাকে আবার উঠলে দিয়েছে, ঠিক তেমনভাবেই সেই আনন্দময় সময়টুকুকে ৩টি ঘন্টার জন্য উপভোগ করার সুযোগও করে দিয়েছে। অসাধারন এক্সপেরিয়েন্স।

সবশেষে আমির খানের কথা না বললেই নয়। দিল চাহতা হে এর পরে এই ছবি! অসাধারন বললেও কম বলা হবে। দুটো ছবিই আমার দেখা ছবিগুলোর মধ্য পছন্দের তালিকাতে উপরের দিকেই থাকবে।

কানা বাবা

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

ভাই, আপনাদের মন্তব্য পড়ে দেখা শুরু করলাম। কিন্তু আমার তো হাসি পাচ্ছেনা। ইংরেজী সাবটাইটেল সহকারে কোন লিংক আছে নাকি?

অফ্লাইন এর ছবি

এই সিনেমায় হাসানোর চেষ্টা ভাঁড়ামির পর্যায়ে চলে গেছে অনেক জায়গায়। মুন্নাভাই এমবিবিএস বা লাগে রহো মুন্না ভাইয়ের ধারে কাছে যেতে পারে নাই। সচলে এত প্রশংসার মানে বুঝলাম না। আমির খানের প্রতি অতিভক্তির কারণে হতে পারে।

ওয়াইল্ড-স্কোপ [অতিথি] এর ছবি

পোস্টটারে কইষা মাইনাস - খামাকা ৩ ঘন্টা লস করাইলেন। হিন্দী দেখা বাদ দিসিলাম বহু আগেই - তাও প্রশংসা শুইনা দেখতে যাই - দেইখা চরম হতাশ হই। দিল চাহ তা হের ধারে কাছে কিছু না - সস্তা ভাড়ামিতে ভর্তি। এইএমডিবিতে এত হাই রেটিং-এর কারণ বুঝলাম না। তবে আমিরের অভিনয় ঠিক আছে - সেইখানে অভিযোগ নাই।

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

সিনেমা ভাল্লাগে নাই। অনেক জায়গায় জোর খাটিয়ে হাসানোর চেষ্টা করছে বলে মনে হয়েছে।

টিউলিপ এর ছবি

হাইপ-এর ঠেলায় পড়ে দেখলাম। এই ছবি নিয়ে এত মাতামাতি কেন বোঝা কঠিন। গতানুগতিক হিন্দি ছবি। যদিও কমেডি করার ব্যর্থ চেষ্টা করা হয়েছে। হিন্দির ছবির নিয়মিত দর্শকরা পছন্দ করবে বলে মনে হয়।

হিন্দি ছবি না দেখা ফ্যাশন কেন হবে? যেমন, সাম্প্রতিক মডেলের পোশাক পরা ফ্যাশন হতে পারে, তাই বলে ওই পোশাক না পরা বা পছন্দ না করাটাও ফ্যাশন?

অতিথি লেখক এর ছবি

রিভিউ আর শেষের দিককার কমেণ্ট ! পুরোই উলটা! খাইছে

মুভি এখনো দেখি নি ।
মূল বইটা পড়েছি। অত খারাপ লাগে নি । একটা পর্যায়ে বিশ্রি লাগছিল। শেষটা
ভাল দেয়ায় "অত খারাপ লাগে নি" বলেছি ।

তবে মুভিতে সম্ভবত একটা মেসেজ দেবার চেষ্টা থাকবে । হিরানির ইদানিং কালের মুভিতে যা থাকে।

হিরানির পরিচালনা ভাল।
আমির এর অভিনয় ও ।
কিন্তু গাজিনির মত লো লেভেল মুভিতে অভিনয় এর জন্য ওর প্রতি শ্রদ্ধা আমার অনেক খানি ই কমে গেছে । (মেমেণ্টো আগে দেখা ছিল। বুঝতেই পারছেন! )

বোহেমিয়ান

রাফি [অতিথি] এর ছবি

খুব ভালো ছবি।
হাসার সুযোগ অনেক আছে, কিন্তু যে মেসেজ ছিলো সেটাই মুল।

সমুদ্র এর ছবি

"... হিন্দি সিনেমা না দেখাও তেমনি একটা ফ্যাশন হয়ে দাঁড়িয়েছে"
ভালো বলেছেন।

কাল রাতে দেখলাম, হল প্রিন্ট। হেসেছি অনেক, মেসেজও ছিলো, তবে অসাধারণ গোত্রের লাগেনাই, আর কিছু জায়গায় কাতুকুতু টাইপ তো ছিলোই। সব মিলিয়ে বেশ বেশ ভালো, আমির খানের কথা আর কিছু না বলি!

"Life happens while we are busy planning it"

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

হিন্দি সিনেমা দেখা হয় না বহুদিন। খুব আগ্রহ পাচ্ছি না, তবে হাতে পেলে দেখব হয়ত এটা।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।