ধর্মীয় সংস্কৃতি!!

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি
লিখেছেন ইশতিয়াক রউফ (তারিখ: মঙ্গল, ১৫/০৪/২০০৮ - ১০:০৭পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

বিভিন্ন রকম কারণে বেশ ব্যস্ত কিছুদিন ধরেই। মাঝে কিছু অনুষ্ঠানে দেশীয় খাবার-দাবার পরিবেশন করেছিলাম বাঙ্গালিরা মিলে। মুখ্য উদ্দেশ্য ছিল দেশকে সবার কাছে পরিচিত করে তোলা, দেশের খাবার ও সংস্কৃতি সবার কাছে পৌঁছে দেওয়া। ফেসবুকের সুবাদে কেউ কেউ জানেন আমাদের পাগলামোর কথা। সে-যাকগে, আপাতত একটু ভিন্ন কিছু দেখাই সবাইকে।

সংস্কৃতির সাথে ধর্মের কোন যোগ হতে পারে কিনা, এই বিতর্কের কোন চূড়ান্ত জবাব আজ অব্ধি আমার কাছে নেই। আমজনতার জীবনের বহমান চিত্রই সংস্কৃতি, এমনটাই জানি-বুঝি আমি। একেক সংস্কৃতিতে জীবনের একেক উপাদানের প্রাধান্য দেখা যায়। কেউ নাচে, কেউ গায়, কেউ বাজায়, কিন্তু সবাই জীবনের কথা বলে যায়।

একে একে বিভিন্ন দেশের ছাত্রছাত্রীরা স্টেজে গিয়ে নিজেদের মত কিছু করছিল। এমন সময় দেখি আলখাল্লা পরা এক লোক মাইকের সামনে গিয়ে দাঁড়িয়ে। আমি তখন খাবার নিয়ে তুমুল বচসা করছি এক খদ্দেরের সাথে। যেকোন মূল্যে শেষ চিকেনটুকু বিক্রি করতে হবে। ওভেনে তন্দুরী চিকেন বেক করেছিলাম। বিক্রির সুবিধার জন্য একটু কম পোড়াগুলো আলাদা করে "কারি চিকেন" নামে বিক্রি করছিলাম। একই মুরগি দুইবার বিক্রি না করলেও, একই পাত্রের মুরগি দুই নামে বিক্রি হচ্ছিল। বাঙ্গালি চিনবা, বাটপারি চিনবা না, তা কি হয়?

যাক সে-কথা। আলখাল্লা দেখে আমি ঠাট্টা করে পাশের জনকে বলছিলাম, এবার কি আযান দিবে নাকি? বলতে বলতেই "আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার!" বিস্ময়ের ঘোর কাটতেই দেখলাম একে একে আযান, খুতবা, এবং নামায চলছে। সৌদি আরবের ছাত্রেরা তাদের "সংস্কৃতি"র সাথে পরিচিত করছে আমাদের। তাকিয়ে আরো কিছু চেনা মুখ দেখলাম। হাতে গোনা দুয়েকটা মিশরীয়, বাকিগুলো পাকিস্তানি। অবাক হলাম না। চোখের সামনে চার রাকাত ফরজ আদায় করা হল। কেউ কেউ আবার জুতা পায়েই নামায পড়ে ফেললো। শুধু চেয়ে চেয়ে দেখলাম আমার ধর্মের অধঃগতি। দেখুন আপনারাও।


মন্তব্য

দিগন্ত এর ছবি

এদের জন্য আমরা ডুবব ...

একদম ঠিক বলেছেন ... কাগজে আমিও গুজরাটের খবর পড়ে মনে মনে এই গজগজ করি ... আর কিই বা করতে পারি ... সামাজিকভাবে ব্যাকওয়ার্ড রয়ে গেছে।


হাতি ঘোড়া গেল তল, মশা বলে কত জল।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

আজমীর এর ছবি

এজন্যই ইসলামের আহবান বিশ্ববাসীর কাছে ভুলভাবে পৌঁছায়। প্রকৃত অর্থে ইসলামের ক্ষতি অন্য কেউ নয়, স্বয়ং মুসলমানেরাই করে যাচ্ছে।

আজমীর
Smile costs nothing but gives much, so keep smiling.
Kids are always cute.

আজমীর
Smile costs nothing but gives much, so keep smiling.
Kids are always cute.

রাতুল এর ছবি

একমত।
এইজন্য আগে নিজেগো ঠিক হওন দরকার।

রাতুল এর ছবি

ইহাকেই বোধ হয় বিবর্তন বলে।

অতিথি লেখক এর ছবি

"সৌদি আরবের ছাত্রেরা তাদের "সংস্কৃতি"র সাথে পরিচিত করছে আমাদের। তাকিয়ে আরো কিছু চেনা মুখ দেখলাম। হাতে গোনা দুয়েকটা মিশরীয়, বাকিগুলো পাকিস্তানি। অবাক হলাম না। ""

অবাক না হওয়ারই কথা।

eru

-------------------------------------------------
সুগন্ধ বিলোতে আপত্তি নেই আমার
বস্তুত সুগন্ধ মাত্রই ছড়াতে ভালবাসে।

স্বপ্নাহত এর ছবি

স্লো নেট কানেকশনের জন্য ঠিক ঠাক দেখতে পারলাম না মন খারাপ

---------------------------

থাকে শুধু অন্ধকার,মুখোমুখি বসিবার...

---------------------------------

বাঁইচ্যা আছি

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

স্লো নেট কানেকশনের জন্য ঠিক ঠাক দেখতে পারলাম না মন খারাপ

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

যারা দেখতে পারেননি, তাদের জন্য সংক্ষিপ্ত বিবরণ।

একদিকে স্ট্রিট ফেয়ার চলছিল, অন্যদিকে স্টেজে চলছিল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। একেক দেশের একেক রকম গান-বাজনা চলছিল। এর মধ্যেই সৌদি আরব, মিশর, আর পাকিস্তানের কিছু ছাত্র স্টেজে উঠে আযান-খুতবা সহ চার রাকাত ফরজ নামায পড়ে ফেললো। আমাদের নবী(সঃ) কেন এবং কতটা ভাল, আমাদের ধর্ম কেন ভাল, ইত্যাদি সমেত পুরো "দ্বীনের দাওয়াত" যাকে বলে।

মজার ব্যাপার ছিল, এই ধর্মীয় বাড়াবাড়ির ঠিক পরের গ্রুপ ছিল আফ্রিকান ছাত্রদের। হাত-পা ছুড়ে সে কী উদ্দাম নাচ! তারপরেই ছিল লাতিনাদের সাল্‌সা। আর কী লাগে?! চোখ টিপি

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

হাসি

সুলতানা পারভীন শিমুল এর ছবি

স্লো নেট।
তবে দুধের স্বাদ ঘোলে মিটলো বর্ণনায়।

...........................

সংশোধনহীন স্বপ্ন দেখার স্বপ্ন দেখি একদিন

...........................

একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা

দ্রোহী এর ছবি

আজমীরের বক্তব্যের সাথে একমত। ইসলামের ক্ষতি মুসলিমদের চাইতে বেশী কেউ করেনি।

ভিডিওটা দেখলাম। ধার্মিক মুসলিম হতে গেলে খানিকটা বেক্কল হতে হয় এই কথাটা আরও একবার বুঝতে পারলাম (এইধরনের রামছাগলীয় বুদ্ধি আরও কয়েকবার দেখেছি।)।


কি মাঝি? ডরাইলা?

লুৎফুল আরেফীন এর ছবি

হাস্যকর বটে!

আমি ২ টা কথা কই। সংস্কৃতির সাথে ধর্মের টুটকো একটা সম্পর্ক আছে। এর কারণ হয়তো এই যে, ২টোরই সম্পর্ক আবার জীবনের সাথে।

যেমন মানুষের নামকরণ একটা সংস্কৃতিক কর্মকান্ড বৈকি। সেটা ধর্ম দ্বারা পুরোপুরি প্রভাবিত।

___________________________
বুড়োরা সবাই সমস্বরে বললো, "নবজন্ম", আমি চাইলাম "একটা রিওয়াইন্ড বাটন"

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

হুম... হাসি

দিগন্ত এর ছবি

নামকরণটা আমার মনে হয় স্বাধীন ... মানে আপনি চাইলে অন্য ধরণের নামও রাখতেই পারেন ... ধর্মীয় বাধানিষধ নেই। নামকরণের ক্ষেত্রে আইডেনটিটির ব্যাপারটাই আসে ...


হাতি ঘোড়া গেল তল, মশা বলে কত জল।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

অতিথি লেখক এর ছবি

অনেক পুরানো পোস্ট, তবু মন্তব্য করছি ।

আমার জানা মতে ইসলাম ধর্মে নাম করনের ব্যাপারে কোন বিধি নিষেধ নাই । আরবী নাম রাখতেই হবে - এটা একেবারেই ভুল ধরনা । এটা আমাদের পূর্বপুরুষদের কে শিখিয়েছে কয়েকশো বছর আগের পীর ফকিরের দল । আর এই যুগে মোল্লার জাতে উঠার জন্য সৌদির সাথে মিলিয়ে আগা পাশ তলা আরবী নাম লাগায় আর সবাইকে তাই শেখায় ।

এখন পৃথিবীর অনেক দেশের মুসলিম লোকেই মাতৃভাষায় নাম রাখে । একটা দুটা শব্দ আরবী থাকলে বা না থাকলে কেউ কিছু মনে করে না । উদাহরন মালয়শিয়ার মাহাথির মুহাম্মদ, থাইল্যান্ড জেনারেল সেনধি, চীনের মুহাম্মদ ঊ ( ইনি একজন বিশিষ্ট মুসলিম স্কলার ) ।

- এনকিদু

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

হুম, ধন্যবাদ। ধর্মের বাড়াবাড়িগুলো নিয়েই আমার যত আপত্তি। এগুলো বাদ দিলে ধর্মের নীতি, আদর্শ, শিক্ষার সাথে সম্পূর্ণ একমত আমি।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।