শান্তনু: যার কথা মনে পড়লেই নিজেকে অপরাধী মনে হয়

ঝরাপাতা এর ছবি
লিখেছেন ঝরাপাতা (তারিখ: রবি, ১০/০৮/২০০৮ - ২:৪৬পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

শান্তনুর কথা আমি ভুলেই গিয়েছিলাম। মনে রাখারও অবশ্য খুব একটা কারণ নেই। সে কবেকার কথা! আমরা একই স্কুলে পড়তাম। একই স্কুলে পড়লেও তার সাথে খুব বেশি হৃদ্যতা ছিলো না। এর মূল কারণ ছিলো, ও ছিলো খুব শান্ত স্বভাবের। আর আমি ছিলাম হাড়-বজ্জাত টাইপের ছেলে। আমার ইয়ার দোস্তরা সব ছিলো আমার মতোই দুষ্টের শিরোমণি, লঙ্কার রাজা। তাই শান্তনুর সাথে আমাদের কারোই তেমন একটা অন্তরঙ্গ সম্পর্ক গড়ে ওঠেনি কখনো।

আমরা তখন ক্লাশ ফোরে পড়ি। সেসময় দেশে কি যেন একটা বিষয় নিয়ে ভীষণ গন্ডগোল চলছিল। মাঝে মাঝে স্কুলে যাওয়ার পথে বড়দের কথার অংশবিশেষ শুনতে পেতাম- 'আজকে রাতে মালাউনদের মন্দিরটা ভেঙ্গে দিতে হবে। শুয়রের বাচ্চাগুলোকে উচিত শিক্ষা দিতে হবে। সবাইকে প্রস্তুত থাকতে বলো।' সব কথা বুঝতাম না, তবে এটুকু বুঝতাম একটা মারামারি হবে। এরই মাঝে একদিন খবর পেলাম শান্তনুরা তাদের বাড়ি-ঘর সব বিক্রি করে দিয়ে একেবারে ওপাড়ে চলে গেছে। তারা আর কখনো এদেশে ফিরে আসবে না। শান্তনুর সাথে আমার বন্ধুত্ব ছিলো না বলেই হয়তো তার এভাবে হঠাৎ চলে যাওয়াটা আমার মনে খুব একটা প্রভাব ফেলেনি।

সময় কেটে গেছে অনেক। আমি এখন নিপাট ভদ্রলোক। পড়াশোনা শেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করছি। সেবার ঈদ উপলক্ষে গ্রামে গেছি কয়েকটা দিন থাকবো বলে। একদিন সকালে দেখি বাড়ির উঠোনে রিক্সার টুংটাং শব্দ। শব্দ শুনেই ঘর থেকে বেরিয়ে এলাম। সুদর্শন এক তরুন রিক্সা থেকে নেমে ভাড়া মিটিয়ে আমার দিকে এগিয়ে এসে বললেন, 'আপনি কি মি. আরেফিন'? আমি একটু ইতস্তত: করে বললাম, 'হ্যাঁ- কিন্তু আমি আপনাকে ঠিক চিনতে পারছি না'। একটু হেসে আগন্তুক তরুণ বললো- 'তা অবশ্য চেনার কথা না। বিশ বছর আগেকার বন্ধুকে কে চেনে বলো'! আমি অবাক হলাম- 'বিশ বছর আগের বন্ধু'!! 'হুম, আমার নাম শান্তনু, শান্তনু মজুমদার। বিশ বছর আগে আমি আর তুমি একই স্কুলে পড়তাম, কমলগঞ্জ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। কি মনে পড়ছে'? আমি ক্ষণিক সময়ের জন্য স্মৃতির অ্যালবামটাকে সাফল করি। হ্যাঁ মনে পড়ছে, এই সেই শান্তনু- ধীর-স্থির- পিঠে স্কুল ব্যাগ ঝুলিয়ে প্রতিদিন পরিপাটি পোশাক আর সিঁথি করা চুলে স্কুলে আসত- স্কুল শেষে সোজা ঘরে ফিরে যেত। আমি উচ্ছ্বাসে উছলে উঠি- 'হ্যাঁ শান্তনু, সেই কবে হঠাৎ করে একদিন তোমরা সবাই উধাও হয়ে গেলে। তোমার সাথে আবার দেখা হবে সত্যিই ভাবিনি। এভাবে চলে গিয়েছিলে কেন?' আসলে এ শুধু বলার জন্য বলা। আমি এখন খুব ভালো করে জানি- কেন শান্তনুরা দেশ ছেড়ে, মাটির মায়া ছেড়ে অন্যদেশে পাড়ি দেয়- কেন পূর্বপুরুষের শেকড়ের টান ছেড়ে তারা রিফিউজি হয়, সারাজীবন ভিনদেশী বাঙ্গাল বলে উপেক্ষার জীবনকে বেছে নেয়। শান্তনু বলে- 'সে অনেক কথা। বলা যাবে ক্ষণ। তুমি কি আমার সাথে একটু বেরুবে? আমাদের আগের বাড়িটা একটু দেখতে যাবো'। 'হ্যাঁ নিশ্চয়, তার আগে তুমি একটু হাত মুখ ধুয়ে ফ্রেশ হয়ে এসো। খাওয়া দাওয়া করো। তারপর যাওয়া যাবে।' শান্তনু আপত্তি করলো না।

দুপুর গড়িয়ে বিকেল হতে চলেছে। আমি আর শান্তনু হাঁটছি পাশাপাশি গাঁয়ের মেঠো পথ ধরে। এই সেই ছেলেবেলার পথ, যে পথে এখনো লুকিয়ে আছে আমাদের ছোটবেলার স্মৃতি, হয়তো খুঁজলে বেরিয়ে আসবে দু'একটা অশ্বরাজ মার্বেল, ঢেলা পাকানো গুলতি। আমি শান্তনুকে জিজ্ঞেস করি, 'এখানে আসতে কষ্ট হয়নি'? 'সে হয়েছে, তবে কেমন জানি এক রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা। নিজের জন্মভূমির কাছে ফিরে আসা, মাটির ঘ্রাণ নেয়া, ঠিক যেন মায়ের ঘ্রাণ নেয়া। আমি ঠিক বোঝাতে পারবো না'। আমি মনে মনে বলি- আমি বুঝিরে শান্তনু। এই মাটি থেকে আমিও যে দু'বছর দূরে ছিলাম। তার মতো করে না হলেও আমিও বুঝতে এ মাটির আকর্ষণ। শান্তনু বলে চলে- 'বাবার কাছ থেকে খুব ভালো করে বুঝে নিয়েছিলাম কিভাবে আসতে হবে। বাজারে নেমে ফিরোজ চাচার কথা বলতেই রিক্সাওয়ালা নিয়ে আসলো। আর আসার পথে ওর মুখেই জানলাম তুমি বেশ কয়েকদিন ধরে গ্রামে আছো।' 'হ্যাঁ, আমি কয়েকটা দিন আছি, তারপর আবার শহরমুখী হবো'।

আমরা শৈশবের স্মৃতি বিনিময় করতে থাকি। অবাক হলাম, শান্তনু কি নিপুণভাবে আমার ছেলেবেলার দস্যিপনার কাহিনিগুলো একের পর এক বলে চলেছে যার বেশিরভাগই আমার নিজেরই মনে নেই। কথা প্রসঙ্গে জানতে পারি- শান্তনু খড়গপুর আই.টি থেকে পাশ করে বড় একটা সফটওয়্যার ফার্মে জয়েন করেছে বছর পাঁচেক হলো। বেশ ভালো পজিশনেই আছে। বড় বোনের বিয়ে হয়ে গেছে। মোটামুটি সুখেই আছে। হাঁটতে হাঁটতে একসময় আমরা বাঁধানো পুকুর ঘাটটার পাশে এসে থামি। শান্তনু নষ্টালজিয়ায় আক্রান্ত হয়। এই পুকুরে কতো ভরদুপুর সে দাপড়ে বেরিয়েছে! আমি ওর হাত ধরে টা দেই, ভিতরে চলো। উঠোনে এসে থমকে দাঁড়ায় শান্তনু। 'জানো, এখানে একটা মন্ডপ ছিলো, বাবা জলের দামে বাড়িটা বিক্রি করার সময় এটা বিক্রি করেনি, এমনি দিয়ে দিয়েছিলো, শুধু অনুরোধ করেছিলো, মন্ডপটা যেন ভাঙ্গা না হয়। দেখো ওটা এখন ধান মাড়াইয়ের চালা। ' একটা দীর্ঘশ্বাস শান্তনুর বুক থেকে বেরিয়ে এসে বাতাসকে আরো ভারী করে দেয়। আমি ওর হাত চেপে ধরে বলি, 'ভিতরে চলো'। শান্তনু ঘুরে ঘুরে দেখে, যে বাড়িতে তার জন্ম, যে বাড়িতে কেটেছ তার দুরন্ত শৈশবের অনেকগুলো দিন, সে বাড়িটিকে সে স্মৃতির অতল থেকে তুলে এনে মেলাতে চায় বার বার। কিন্তু হায়, সে যে কখনো মিলবে না সেটা কি শান্তনু বুঝতে পারছে না? নাকি এই স্মৃতি আর আবেগময়তা কিছু সময়ের জন্য স্তব্ধ করে দিচ্ছে বাস্তবতাকে? আরো কিছু সময় কাটানোর পর আমরা ফিরতি পথ ধরি।

আমি শান্তনুকে জিজ্ঞস করি, 'তোমার কি দেশে ফিরে আসতে ইচ্ছে করে না'? দৃঢ় নিরুত্তাপ কন্ঠে সে বলে- 'হ্যাঁ খুব করে। কিন্তু আমি কখনো এই দেশে ফিরবো না'? 'কিন্তু এ তোমার জন্মভূমি, এ মাটির কাছে তোমার আজন্মের ঋণ।' -আমি বলি। 'ছিলো- প্রায় বিশ বছর আগে শোধ-বোধ হয়ে গেছে।' 'মানে?' শান্তনু বলে চলে- মানে- বিশ বছর আগে যেদিন এ দেশে আমাকে সংখ্যালঘুর কাতারে ফেলে দিলো, যেদিন আমরা সবাই গভীর উৎকন্ঠায় বাড়ির পেছনের ঝাড়ে নিশুতি রাতে আশ্রয় নিয়েছিলাম সাপ-খোপের ভয়কে উপেক্ষা করে, দশদিনের শিশুর মুখ চেপে ধরে ভয়ার্ত মা কান্নাকে রোধ করতে চেয়েছিলো প্রাণপণে, রাতের অন্ধকারে তারা লুটপাট করে নিয়ে গেলো আমাদের গেরস্থালি-আসবাব যাবতীয় সব, আমাদের মা-বোনরা সম্ভ্রম হারালো, বাবা-দাদারা খুন হলো সেদিন থেকে সব ঋণ-টিন চুকে গেছে'। 'এখন তো পরিস্থিত পাল্টেছে'। আমি বলি- 'এখন মানুষ অনেক বেশি সচেতন, আগের মতো পরিস্থিতি আর হবে না'। বিকট হাসিতে ফেটে পড়ে শান্তনু- 'সচেতন? শোন, আমাদের যাদের কিছু সহায়-সম্বল ছিলো তারা ওপাড়ে গিয়ে কোনভাবে হোক ঠাঁই পেয়েছ। হ্যাঁ, তাদের বেশিরভাগই খুব কষ্টে আছে, তবুও জীবনের নিরাপত্তাটুকু তো আছে। আর যাদের যাবার সামর্থ্য নেই তাদের ভাগ্যে কি ঘটেছে জানো? আমার এক পিসি মানে ফুফু থাকেন গাঁয়ে। গত নির্বাচনের পরে ক্ষমতাসীন দলের পান্ডারা কি করেছিলো জানো? দুই লাখ টাকা দাবী করে চিঠি দিয়েছিলো, না হলে তারা পিসির দুই মেয়েকে তুলে নিয়ে যাবে। পিসি বছরের পর বছর ধরে মেয়েদের বিয়ের জন্য সঞ্চয় করা টাকা থেকে দুই লাখ টাকা তাদের হাতে তুলে দেয়। তবুও তার বড় মেয়ে রক্ষা পায়নি। দিন-দুপুরে তাকে সবার সামনে টেনে-হিচড়ে ধানক্ষেতে নিয়ে গণধর্ষন করে নরপশুরা। আমার সেই অভাগী বোন দুইদিন সংজ্ঞাহীন ছিলো, তৃতীয়দিন তার জ্ঞান ফেরে, চতুর্থদিন ফ্যানের সাথে ওড়না জড়িয়ে সে আত্মহত্যা করে। এরপরও কি তুমি বলবে, এখন আর আগের মতো অবস্থা নেই? পরিস্থিতি বদলে গেছে? '

আমি চুপ করে থাকি কিছুক্ষণ। নি:শব্দ চাবুকের মতো ফালা ফালা করে চলেছে বুকের এপাশ-ওপাশ। আমি জিজ্ঞেস করি- 'আচ্ছা যেখানে আছো সেখানে কি খুব ভালো আছো? সেখানের সবাই কি খুব ভালো আছে'? শান্তনু একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে একটু লঘু হয়। কিছুক্ষণ চুপ করে থাকে। তারপর বলে- 'না, সেখানেও সবাই ভালো নেই। সেখানেও ধর্মান্ধ গোষ্ঠীর উন্মাদনা, নির্যাতন-হত্যা-ধর্ষণ, মধ্যযুগীয় বর্বরতা। এখানে সখীপুর, ওখানে গুজরাট, একই দৃশ্যপট, শুধু পাত্র-পাত্রী ভিন্ন।'

আমরা দু'জনেই চুপ করে থাকি, কিছুক্ষণ, অনেকক্ষণ। শেষ বিকেলের রোদ মিলিয়ে যেতে শুরু করেছে। ছোট ছোট ঘাসফুলগুলির উপর উড়ে উড়ে চুমু খেয়ে যাচ্ছে বাদামী ফড়িঙ-এরা। মৃদু বাতাস এসে নাড়িয়ে দিয়ে যাচ্ছে ধানক্ষেত, আস্তে আস্তে পরিণত হচ্ছে সবুজ ঢেউ, যেন বাধভাঙ্গা সবুজ উচ্ছ্বাস। আমি আর শান্তনু দু'জনেই উপভোগ করছি শেষ বিকেলের ছবি। শান্তনুর চোখে পানি। আমি ওর কাঁধে হাত রেখে বলি- আমাদের দেশটা খুব সুন্দর, তাই না? শান্তনু কিছু বলে না, শুধু মাথাটা দোলায় কয়েকবার।

পরদিন ভোরেই শান্তনু চলে যায়। আমি তাকে বাসে তুলে দিয়ে বাড়িতে ফিরে আসি। ফিরে এসে আমি ভাবি, শান্তনু কেন তুমি এলে? কেন তুমি আমাকে সারাজীবনের জন্য অপরাধী করে গেলে? তোমার জীবনের যতটা দীর্ঘশ্বাস তুমি এই ক্ষণিক সময়ে আমাকে উপহার দিয়ে গেলে, তার ভার বইবার ক্ষমতা যে আমার নেই। শান্তনু তুমি আমাকে ক্ষমা করো বন্ধু।


মন্তব্য

রণদীপম বসু এর ছবি

যে দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে মানুষ হালকা হয়, সেই দীর্ঘশ্বাসই উল্টো বুকের ভেতরে ঢুকিয়ে দিলেন ! লেখাটা এতো আবেগী আর হৃদয়স্পর্শী হয়েছে যে, কী বলবো, মনটাই হু হু করে ওঠছে।

সুনীলের সেই কবিতার দুটো চরণ অনুরণিত হচ্ছে ভেতরে এখন-

আমি কেমন করে বেঁচে আছি
তুই এসে দেখে যা নিখিলেশ
এই কি মানুষ জন্ম, না কি শেষ পুরোহিত কঙ্কালের পাশা খেলা.........

পাশাপাশি আপনার কলমের প্রশংসা করছি এবং অভিনন্দন।

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

জুলিয়ান সিদ্দিকী এর ছবি

....ক্ষমা করো বন্ধু!
____________________________________
ব্যাকুল প্রত্যাশা উর্ধমুখী; হয়তো বা কেটে যাবে মেঘ।
দূর হবে শকুনের ছাঁয়া। কাটাবে আঁধার আমাদের ঘোলা চোখ
আলোকের উদ্ভাসনে; হবে পুন: পল্লবীত বিশুষ্ক বৃক্ষের ডাল।

___________________________
লাইগ্যা থাকিস, ছাড়িস না!

দ্রোহী এর ছবি

দীর্ঘশ্বাস ফেলা ছাড়া আর কীইবা করতে পারি? কখনোই এর চাইতে বেশি কিছু করিনি, করতে চাইনি!


কী ব্লগার? ডরাইলা?

নিঝুম এর ছবি

আমাদের দেশে হিন্দু সম্প্রদায়দের লোক দের কোন কোন অসভ্যরা " মালাউন" নামে ডেকে থাকেন । এর প্রতিবাদ যেদিন থেকে আমরা করতে শিখিনি, সেদিন থেকে আমরা অনেক অনেক শান্তনু কে কিভাবে যে দূরে ঠেলে দিয়েছি ... আমরা নিজেরাই হয়ত জানিনা । আমার খুব কাছের একজন মানুষ ছিলো শুকু বিন্দু অধিকারী । হিন্দু বলে তার সাথে এত সখ্যতা অনেকেই ভালো চোখে নিত না । আজ আপনার বন্ধু শান্তনুর কথা বলাতে খুব মনে পড়ছে শুকু'র কথা । অনেক আগে একবার বলেছিলো, " নিঝুম ভাই, আব্বা ইন্ডিয়ায় চলে যেতে চায় । " শুকু'র চোখে মুখে কি এক করুন আর্তি আমি দেখেছিলাম ... অনেক অনিচ্ছা, অনেক কষ্ট থেকেই হয়ত তার বাবার এ সিদ্ধান্ত । নিজের দেশ ছেড়ে কিছুদিনের জন্য বাইরে থাকা , আর, নিজের দেশ কে নিজের দেশ ভাবতে না পারা কিংবা ফিরে আসতে না পারার ভেতর অনেক পার্থক্য অনেক কষ্ট...

অনেক ।
--------------------------------------------------------
... বাড়িতে বউ ছেলেমেয়ের গালি খাবেন, 'কীসের মুক্তিযোদ্ধা তুমি, কী দিয়েছ আমাদের'? তিনি তখন আবারো বাড়ির বাইরে যাবেন, আবারো কান পাতবেন, মা জননী কি ডাক দিল?

---------------------------------------------------------------------------
কারও শেষ হয় নির্বাসনের জীবন । কারও হয় না । আমি কিন্তু পুষে রাখি দুঃসহ দেশহীনতা । মাঝে মাঝে শুধু কষ্টের কথা গুলো জড়ো করে কাউকে শোনাই, ভূমিকা ছাড়াই -- তসলিমা নাসরিন

ক্যামেলিয়া আলম এর ছবি

বিতাড়িত মানুষ মাত্রেই জানে কত বেদনা তার রক্তে বাসা বেঁধে আছে---- আপনার লেখা অসম্ভব ভাল।
.....................................................................................
সময়ের কাছে এসে সাক্ষ্য দিয়ে চ'লে যেতে হয়
কী কাজ করেছি আর কী কথা ভেবেছি..........

.....................................................................................
সময়ের কাছে এসে সাক্ষ্য দিয়ে চ'লে যেতে হয়
কী কাজ করেছি আর কী কথা ভেবেছি..........

নিঘাত তিথি এর ছবি

লেখাটার গভীর আবেগ এবং অপরাধবোধ ভীষণভাবে দাগ কেটে গেলো মনের গভীরে। অনেক জমে থাকা কথা বুক থেকে উঠে আবার গলায় এসে আটকে যাচ্ছে...ওসব বলে তো কিছু হয় না, যদি না কিছু বদলাতে পারি।
----------------------------------------------------
আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ

----------------------------------------------------
আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ

মৃদুল আহমেদ এর ছবি

এখানে মন্তব্য করাটাই আসলে অমূলক।
শান্তনুর পিসিমা বা তার বোনের কষ্ট আমরা কোনোদিনই বুঝতে পারব না।
সুন্দর কিছু শব্দ চয়নের মধ্য দিয়ে আন্তরিক দুঃখপ্রকাশটা হবে পুরোপুরি ভণ্ডামি।
---------------------------------------------
বুদ্ধিমানেরা তর্ক করে, প্রতিভাবানেরা এগিয়ে যায়!

--------------------------------------------------------------------------------------------
বললুম, 'আমার মনের সব কপাট খোলা ভোজরাজজী। আমি হাঁচি-টিকটিকি-ভূত-প্রেত-দত্যি-দানো-বেদবেদান্ত-আইনস্টাইন-ফাইনস্টাইন সব মানি!'

সৈয়দ আখতারুজ্জামান এর ছবি

পড়ে মুগ্ধ হলাম সুন্দর লেখার জন্য আর বেদনায় মুর্ছা গেলাম বাস্তবতা অনুভব করে। কী আর বলবো!

আর আমি ছিলাম হাড়-বজ্জাত টাইপের ছেলে।

দেখলে কিন্তু মনেই হয় না।

সুলতানা পারভীন শিমুল এর ছবি

ভালো লাগলো লেখাটা।
আর কষ্ট হয় তাদের জন্য।

...........................

সংশোধনহীন স্বপ্ন দেখার স্বপ্ন দেখি একদিন

...........................

একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা

মনজুরাউল এর ছবি

স্মৃতি সতত সুখের ................................................
তা সে যতই কষ্ট-বেদনার হোক কিংবা ভাললাগার হোক

.......................................................................................
আমাদের মাতৃগর্ভগুলি এই নষ্ট দেশে
চারদিকের নিষেধ আর কাঁটাতারের ভিতর
তবু প্রতিদিন রক্তের সমুদ্রে সাঁতার জানা
হাজার শিশুর জন্ম দেয় যারা মানুষ......

.......................................................................................
আমাদের মাতৃগর্ভগুলি এই নষ্ট দেশে
চারদিকের নিষেধ আর কাঁটাতারের ভিতর
তবু প্রতিদিন রক্তের সমুদ্রে সাঁতার জানা
হাজার শিশুর জন্ম দেয় যারা মানুষ......

মুহম্মদ জুবায়ের এর ছবি

৪৭ থেকে ৭১ পর্যন্ত পাকিস্তান রাষ্ট্রের কাঠামোর ভেতরে শান্তনুদের ভিটেছাড়া করার ব্যবস্থা বারবার হয়েছে। স্বাধীন বাংলাদেশেও যে এসব ঘটবে, আমরা মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্মের মানুষেরা স্বপ্নেও ভাবিনি। অথচ বাস্তব এই যে, এতো সাম্প্রদায়িকতার বিষ এতো তীব্র বোধহয় পাকিস্তান আমলেও ছিলো না। এই বিষের বাষ্পে আমাদের জাতিগত অর্জনগুলি সব ম্লান হয়ে যায়।

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

স্যাম এর ছবি

।।।।।।।।।।।। মন খারাপ ।।।।।।।।।।।

তানিম এহসান এর ছবি

..............

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।