সাকিন সুন্দরবন ৭। জল দানো

মাহবুব লীলেন এর ছবি
লিখেছেন মাহবুব লীলেন (তারিখ: শনি, ২২/০১/২০১১ - ২:২১পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

সুন্দরবন টিকবে না বেশিদিন। মানুষের হাতে-মুখে বেড়ে চলা গজদন্ত ঠেকাতে না পারলে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে সুন্দরবন। প্রায় এরকম একটা বক্তব্য শুনতে শুনতে সুন্দরবনে একদল দেশি বিদেশি পরিবেশবাদীর সফরসঙ্গী হয় ফটোগ্রাফার নয়ন। তার কাজ পুরো ভ্রমণের ছবি তোলা

নয়নের ক্যামেরায় যাত্রার ছবি তুলতে তুলতে সুন্দর মনোরম পরিচ্ছন্ন চমৎকার এক ব্যবস্থায় এরা এসে সুন্দরবনে ঢোকে। নদী দিয়ে যেতে যেতে ভাসমান প্লাস্টিক দেখে তারা চিৎকার করে উঠে- ছবি তোলো। এটা পরিবেশের বিষ...

ছোটছোট প্লাস্টিকের ঠোঙায় বোতলে নয়নের ক্যামেরা প্রায় বোঝাই হয়ে গেলে সে জানতে চায়- বন থেকে ক্যামেরা দিয়ে প্লাস্টিক না কুড়িয়ে প্লাস্টিক কারখানায় গিয়ে একসাথে সব প্লাস্টিকের ছবি তুললে কেমন হয়?

পরিবেশবাদীরা এর তার মুখের দিকে তাকিয়ে তাকে জানায় কারখানার ছবি তুললে সেটা অর্থনীতির ছবি হয়ে যাবে। পরিবেশের নয়
- তাহলে যদি জাহাজঘাটে গিয়ে ছবি তুলি? যেখান দিয়ে প্লাস্টিকের কাঁচামালগুলো আসে?
- সেটা হয়ে যাবে বৈদেশিক বাণিজ্যের অংশ

নয়ন বুঝে যায় প্লাস্টিক আমদানিও নয়; প্রস্তুতিও নয়। প্লাস্টিকের ব্যবহারটাই শুধু পরিবেশের এখতিয়ারে পড়ে। তাই নয়ন শুধু নদীর মধ্যে ভাসমান প্লাস্টিক খোঁজে। এর মধ্যে হৈচৈ করে তার নাম ধরে ডাক শুনে জাহাজের কোনায় গিয়ে দেখে সবাই হুমড়ি খেয়ে পড়েছে জাহাজের পাশ দিয়ে ভেসে যাওয়া একটা জেলে নৌকার উপর। জেলেরা মাছ ধরে আর বিড়ি ফুঁকে। সবাই নয়নকে তাড়া দেয় মাঝিদের বিড়ি খাওয়ার ছবি তুলতে। নয়ন ছবি তোলে আর বাকিরা চিৎকার দিয়ে মাঝিদের জিজ্ঞেস করে- তোমরা কি জানো একটা বিড়ির ফিল্টারকে ধুয়ে পরিশুদ্ধ করতে কয়শো লিটার পানি লাগে?

বিড়ির দিকে আঙুল তুলে এমন চিৎকারে ভদ্রলোকদের সামনে বিড়ি খাওয়া বেয়াদবি মনে করে জেলেরা একসঙ্গে নদীতে বিড়ি ছুঁড়ে ফেলে কাঁচুমাচু হয়। হায় হায় করে হাহাকার করে উঠে সবাই। সবাই চিন্তিত হয়ে উঠে সুন্দরবনের মাঝিরা মানুষের ভাষা বোঝে না বলে। চিন্তিত হয়ে উঠে তাদের চিন্তাহীনতা দেখে। এর মধ্যে কেউ একজন একটা ডাবের খোসা ছুঁড়ে ফেলে পানিতে। মাঝিদের ছেড়ে হৈহৈ করে এবার তাকে গিয়ে কামড়ে ধরে সবাই- এইটা কী করলা?

কিন্তু এইবার দুই দলে ভাগ হয়ে যায় দলটা। কেউ বলে মারাত্মক অন্যায় হয়েছে। কেউ বলে সমস্যা নেই ডাব একটা অর্গ্যানিক জিনিস তাই পানিতেই দ্রুত পচে যাবে। এইসব ঝগড়ার ছবি তুলতে তুলতে নয়ন ডাবফেলা পরিবেশবাদীকে একটা ধাক্কা দেয়- এরেও তাহলে পানিতে ফেলে দেই। এও তো অর্গ্যানিক। পচে গিয়ে পরিবেশের সাথে মিশে যাবে...

হাসতে হাসতে সবাই নয়নকে সমর্থন করে- এদেরকে ফেলে দেয়াই উচিত

নয়ন এইবার সবাইকে বলে- তাহলে গার্ডদের ডেকে বলেন ওই মাঝিদেরও যেন গুলি করে পানিতে ফেলে দেয়। তাহলে ওরা পচে গিয়ে আর বিড়ির ফিল্টার ফেলে নদীর কোনো ক্ষতি করতে পারবে না...

সন্ধ্যার দিকে জাহাজ এক জায়গায় দাঁড়িয়ে গেলে নয়ন জাহাজের পেছনে পানির উপরে ভাসমান তেলের ছবি তোলে। একজন পরিবেশবাদী এসে তার পিঠে হাত রাখে- এই ক্ষতিটা কিন্তু হবেই। অবশ্য আমরা অন্যদিকে পরিবেশকে পুষিয়ে দেই...

নয়ন ক্যামেরা ঘুরিয়ে পরিবেশবাদীর একটা ঝকঝকে ছবি তুলে জিজ্ঞেস করে- কীভাবে পোষান?
- জীবনযাপনের জন্য অনিবার্য অনেক বিষয় পরিবেশের কিছু ক্ষতি করে। সেজন্য আমরা চেষ্টা করি অন্যদিকে পরিবেশের উপকার করে সেই ক্ষতি পুষিয়ে দিতে...

নয়ন আরেকটা ছবি তোলে তার- তাহলে যে কারখানাগুলো পানিতে তেল আর বাতাসে ধোঁয়া ছাড়ে তারাও করে?
- উন্নত দেশগুলোতে করে
- সুন্দরবনে কেউ করে না?

পরিবেশবাদী এইবার হৈচৈ করে উঠে- তারা কীভাবে করবে? তারা তো বিষয়টা জানেই না
- তাহলে যারা সুন্দরবনের কাঠে ফার্নিচার বানায়- মাছ খায়- ড্রয়িংরুমে হরিণের শিং টানায়- বাঘের দাঁতের লকেট বানায় কিংবা ছাল টানিয়ে রাখে কিংবা সুন্দরবনের নদীতে ডিজেলের ট্রলার- জাহাজ চালায় তারা তো নিশ্চয়ই জানে?
- তারা নিশ্চয়ই জানে। কিন্তু করে না
- তাহলে আমরা তাদের কাছে না গিয়ে মাঝিদের কাছে কেন এলাম?

সকলের ডাক পড়ে টিভিরুমে। বাঘের উপর একটা ডকুমেন্টারি দেখবে সবাই। পরিবেশবাদীর সাথে নয়নকেও যেতে হয় টিভিরুমে। এক অবাঙাল মানুষের বানানো বাঙাল বাঘের চলচ্চিত্র। সারা চিত্র জুড়ে সুন্দরবনের বাঘ। বাঘ হালুম করে। বাঘ ঘুমায়। বাঘ হাঁপায়। বাঘ ঘুরে বেড়ায়। বাঘ বাচ্চা দেয়। বাচ্চারা খেলে- মারামারি করে...

প্রতিটা দৃশ্যের সাথে সেই ভিডিও ব্যাখ্যা করে দেয় বাঘ কোন সময় কী করে না করে। ভিডিও চিনিয়ে দেয় এই বাঘ মা বাঘ; এইগুলা তার ছানা। সেই ভিডিও জানায় এই বাঘিনি জানে তার নাগালের মধ্যেই এক বিদেশি বসে আছে একটা ক্যামেরা নিয়ে। কিন্তু সে তাকে কামড়ায় না। কারণ সুন্দরবনের বাঘ বড়ো বেশি ভদ্র বাঘ। সে ক্যামেরায় পোজ দেয়া জানে- অতিথির কদর করা জানে। তারপর ছানাপোনা নিয়ে সেই বাঘ যখন খেতে বসে তখন নয়নের চোখে পড়ে হরিণের নামে বাঘ যা খায় তার রং কালো। সুন্দরবনে কালো হরিণ আছে কি নেই সে সম্পর্কে ভিডিও কিছুই জানায় না। ক্যামেরার সামনে বাঘ ধরে রাখতে সেখানে কেউ মৃত ছাগল বেঁধে রেখে গেছে কি না সে সম্পর্কেও ভিডিও বলে না কিছু। ভিডিও একবারও বলে না এক বছর বয়েসি তিনটা বাচ্চা নিয়ে বাঘিনি কেন শিকার ছেড়ে খালি ক্যামেরার সামনে ঘোরে। অনেকদিন কোনো শিকার না ধরেও কেন তিন বাচ্চার মা বাঘিনি ক্যামেরাওয়ালাকে অত খাতির করে সে সম্পর্কেও কিছুই বলে না ভিডিও...

মুগ্ধ হয়ে সবাই বিদেশি ভাষায় বাঙাল বাঘের বর্ণনা শোনে। বাঘ দেখাতে দেখাতে বাঘের বিরতি দিয়ে ভিডিও আরো কিছু সুন্দরবন দেখায়। সুন্দরবনের বন মোরগ- হরিণ- শুয়োর- গুঁইসাপ- পাখি এবং ভোঁদড়। তারপর দেখায় বনের ভেতরে একটা অস্থায়ী পড়ো ভিটে। সেখানে ভিডিওর জন্য খুঁটি গেড়ে মাচান বানানো হয়েছিল। কিন্তু মাচানের খুঁটিগুলো কেউ তুলে নিয়ে গেছে। ভিডিও আবার পুরো পরিবারসহ বাঘিনির কাছে ফিরে এসে জিজ্ঞেস করে- আপনাদের কি মনে হয় এই বাঘেরা আমার ঘরের খুঁটি তুলে নিয়ে গেছে? এ প্রশ্নের উত্তরে পরিবেশবাদীরা সবাই মাথা নেড়ে মনে মনে অসম্মতি জানায়। ভিডিও তারপর চলে যায় সুন্দরবনের একটা নদীতে। সেখানে এক সঙ্গীর সাথে ছোট নৌকায় বসে মাছ ধরে আব্দুল ওহাব। ভিডিও এবার আব্দুল ওহাবের চেহারা ক্লোজ করে জিজ্ঞেস করে- নাকি আপনাদের মনে হয় এরাই খুঁটি নিয়ে গেছে?

সকলেই একসাথে সম্মতি জানায়- এরাই চোর...

শেষ দৃশ্যে পরিচালক বাঘের অনুচ্ছেদ শেষ করে সুন্দরবন থেকে জাহাজে করে তার ফিরে যাবার দৃশ্য দেখাতে দেখাতে প্রশ্ন করেন- বলেন তো; সুন্দরবনে হিংস্র কারা? বাঘ নাকি মানুষ?

এইবার একসাথে সবাই নিশ্চিত হয়ে যায় সুন্দরবনে সবচেয়ে হিংস্র সুন্দরবনের মানুষ। এরা বাঘ খায়- খুঁটি খায়- গাছ খায়- নদী খায় আর খায় পৃথিবীর বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট সুন্দরবন...

- ম্যানগ্রোভ ফরেস্টের বাংলা কী?

এক অবাঙালি পরিবেশবাদী সকল বাঙালির দিকে তাকিয়ে প্রশ্নটা করে। বাঙালিরা মুখ চাওয়াচাওয়ি করে। ক্যামেরা থেকে চোখ সরায় নয়ন- লোনাপানির বন

বাঙালিরা এইবার অবিশ্বাসের দৃষ্টিতে নয়নের দিকে তাকিয়ে আধাআধি মাথা নাড়ে- না না না। না মনে হয়। মনে হয় ঠিক এরকম না। ম্যানগ্রোভ ফরেস্টের বাংলা বোধহয় অন্যকিছু হবে...
কিন্তু কেউই আর ম্যানগ্রোভ ফরেস্টের কোনো বাংলা খুঁজে বের করতে না পেরে এই সিদ্ধান্তে পৌঁছায় যে এর কোনো বাংলা নেই। ক্যামেরাটা আবার চোখে তুলতে তুলতে নয়ন একটা হাসি দেয়- এখন পর্যন্ত বাঙাল বাঘেরই একটা বাংলা নাম ঠিক করা গেলো না; আর ঠিক করবেন ম্যানগ্রোভ ফরেস্টের বাংলা। দরকারটাই বা কী? আপনারা তো সুন্দরবনকে আন্তর্জাতিক বানিয়ে জাতিসংঘের মানচিত্রে ঢোকাবেন। ইংরেজি থাকলেই আপনাদের চলবে। ম্যানগ্রোভের বাংলা নিয়ে না হয় সুন্দরবনের জেলে বাউলিরাই ভাবুক...

বাঘের ভিডিও শেষ হয়ে গেলে আরেকটা ডিভিডি চালু হয় পরিবেশ নিয়ে। ভিডিওটা মার্কিন আলগোর সাহেবের বানানো আর উপস্থাপন করা। আলগোর সাহেব নিজের মার্কিন দেশে প্রেসিডেন্ট ইলেকশনে হেরে গিয়ে সারা পৃথিবী ঘুরে বেড়াচ্ছেন পরিবেশের ডান্ডা নিয়ে আব্দুল ওহাবদের ধরার জন্য...

তিনি দেখান পৃথিবীর কোনো এক মেরুতে বরফের পাহাড় ধ্বসে পড়ছে সমুদ্রে। সবাই মনে মনে একমত হয় আব্দুল ওহাব দায়ী এই বরফ ভাঙার জন্য। তিনি দেখান একটা শ্বেত ভাল্লুক পানির মধ্যে সাঁতরাতে সাঁতরাতে ঠাঁই পাচ্ছে না কোথাও। যে বরফেই সে উঠতে চায় সেই বরফই ভেঙে পানি হয়ে যায়। সবাই বুঝে যায় এই শ্বেত ভালুককে আশ্রয়হীন করার জন্যও দায়ী আব্দুল ওহাব...

তারপর আলগোর সাহেব বিমানে উঠে ভাসতে থাকেন এক দেশ থেকে আরেক দেশে। সবগুলো আব্দুল ওহাবের দেশে তিনি যান। হোটেল-ভার্সিটি-পার্লামেন্টে গিয়ে আব্দুল ওহাবের নামে সতর্ক করে দেন ভবিষ্যৎ মানব প্রজন্মকে। তিনি পরিষ্কার জানিয়ে দেন লোকালয়ের দিকে সমুদ্র ধেয়ে আসছে আব্দুল ওহাবের জন্য। এই বদমাশকে এখনই না রুখলে পৃথিবীর মানচিত্র কতটুকু বদলে যাবে তিনি গ্রাফ এঁকে বুঝিয়ে দেন সবাইকে। তিনি মানচিত্রের উপর দাগ টেনে দেখিয়ে দেন কয়েকদিন পর পৃথিবীর কোন কোন দেশের অস্তিত্ব পানির নিচে আবিষ্কার করা লাগবে। সেই মানচিত্রে বাংলাদেশের নাম অনুমান করে আতঙ্কিত হয়ে উঠে পরিবেশবাদীরা সবাই। গলায় গলা মিলিয়ে সবাই প্রতিজ্ঞা করে আব্দুল ওহাবকে ঠেকানোর জন্য। তারপর ভিডিও শেষ হয়ে গেলে আব্দুল ওহাবের আতঙ্কে চিন্তিত হতে হতে সবাই জাহাজের ভেতরে বসে বিদেশি ভাষায় সুন্দরবনের বই পড়ে। ছবি দেখে। ছবির নিচে ইংরেজিতে নাম দেখে চেনে সুন্দরবনে আছে ক্রকোডাইল- মনিটর লিজার্ড- লেপার্ড ক্যাট- বেঙ্গল টাইগার- স্পটেড ডিয়ার আর ডট ডট ডট এনিমেল। বই পড়তে পড়তে আবারও সবাই নিশ্চিত হয় এইসব প্রাণীদেরও প্রধান শত্র“ আব্দুল ওহাব...

জাহাজ চলে সুন্দরবনের বড়ো বড়ো নদী বেয়ে। জাহাজে ঝড় উঠে সুন্দরবনের পরিবেশ নিয়ে। জাহাজে মানচিত্র দেখে চেনা হয় সুন্দরবনে নদী শাখানদী ও আন্তর্জাতিক সীমা। জাহাজ থামে দেখার মতো জায়গায়। জাহাজ থেকে নেমে সবাই সৈকতে ফুটবল খেলে জাহাজযাত্রায় হাতপায়ের জট খুলে স্বাস্থ্যচর্চা করে। সৈকতের দূর প্রান্তরে মৃত কচ্ছপ- মৃত ডলফিন দেখে অনুশোচনা করে। তিনদিন কি চারদিন কি পাঁচদিনের পুরোনো মৃত তা নিয়ে বিতর্ক করে। কচ্ছপের সাথে জেলেদের কুসংস্কারের অসারতা নিয়ে বিরক্তি প্রকাশ করে। দূর সমুদ্র থেকে এইসব অতিথি নারী কচ্ছপেরা শুধুই ডিম দেয়ার জন্য তীরে আসে। এরা জালে আটকা পড়লে অপয়া ভাবার কিছু নেই। রড কিংবা লাঠি দিয়ে পিটিয়ে তাদের খোল ফাটানোর কিছু নেই। এদেরকে তাদের পথে যেতে দিয়ে মাছ ধরার জন্য আবার জাল ফেললেই হয়...

মৃত কচ্ছপের ছবি তুলতে তুলতে নয়ন জিজ্ঞেস করে- না মেরে জালে আটকানো কচ্ছপ জাল থেকে ছাড়ানোর উপায় কী?
- জাল কেটে দিলেই হয়
- জাল কেটে ফেললে সমুদ্রে আবার মাছ ধরবে কীভাবে?

পরিবেশবাদীরা এইবার মুখ চাওয়াচাওয়ি করে- কচ্ছপের সিজনে তাহলে জেলেরা মাছ না ধরে অন্যকিছু করবে
- যেমন?
- যেমন অন্যকিছু। মানে অন্য কোনো পেশা

নয়ন একটা হাসি দেয়- কচ্ছপের সিজনে তাহলে জেলেরা কচ্ছপকে সমুদ্র ছেড়ে দিয়ে মাছ ধরার নৌকা নিয়ে ডাকাতি করে তীরে এসে কচ্ছপের ডিমে তা দেবে। তাই না?

পরিবেশবাদীরা কচ্ছপের মৃত্যু কিংবা জেলেদের ডাকাত হয়ে উঠা কোনোটাই স্বীকার করতে না পেরে আবারও ব্যস্ত হয়ে পড়ে পচে ফুলে ওঠা মৃত ডলফিন আর কচ্ছপ নিয়ে। মৃত ডলফিন আর কচ্ছপের শরীর পরীক্ষা করে মানুষের আঘাত ছাড়া কোনো দাঁত কিংবা নখের আঁচড় আবিষ্কার করতে না পেরে সবাই নিশ্চিন্ত হয় এই সৈকতে কোনো মাংসাশী নেই। তারপর তারা মেতে উঠে বাতাসের স্রোতে পরতে পরতে গড়া বালির আস্তর- বালিতে পড়ে যাওয়া গোলফল- ঝিনুক এবং বুক পর্যন্ত বালিতে দেবে যাওয়া মৃত গাছগুলো নিয়ে...

তারপর গাইডের কথায় কোথাও জড়সড় হয়ে আবার কোথাও সমস্বরে চিৎকার দিয়ে বাঘকে ভয় দেখিয়ে তারা ফিরে আসে জাহাজে। ফিরে এসে জাহাজে বসে লুডু খেলা হয়- ক্যারম খেলা হয়- দাবা খেলা হয় আর সৈকতে কোন গাছটাকে কে কতটুকু দেবে যাওয়া অবস্থায় দেখেছে তার গবেষণা হয়। গবেষণা হয় এইগাছগুলো কতদিন ধরে গেছে সমুদ্রের পেটে। গবেষণা হয় একশো বছর আগে সমুদ্রের কতটুকু ভেতরে ছিল সুন্দরবন আর আগামী একশো বছরে সুন্দরবনের কতটুকু নেবে সাগর। তারপর সবাই আবার চিন্তিত হয়ে পড়ে। সমুদ্র কয় ফুট বাড়লে কার কার বাপের ভিটা চলে যাবে নদীতে তার হিসাব করা হয়। হিসাব করা হয় কত ফুট সমুদ্রজল বাড়লে তলিয়ে যাবে দেশ। তারপর সবাই চিন্তিত হয়ে পড়ে নিজেদের সন্তানদের জন্য। এই জলেডোবা ভবিষ্যতের দেশে সন্তান না রাখার সিদ্ধান্তে একমত হয়ে উঠে সবাই। তারপর বসে বসে ঠিক করা হয় কোন দেশে কে কার সন্তানকে পাঠাবে। তারপর যার যার সন্তানদের যথেষ্ট রকম উঁচু উঁচু দেশে পাঠানো নিশ্চিত করে সবাই আবার পুরো দেশকে নিয়ে চিন্তিত হয়- এই হতভাগা দেশটার কী হবে তাহলে?

- কেন? দেশ ছাড়া আগে আপনারা দেশটাকে লখিন্দরের মতো ভেলায় ভাসিয়ে দেবেন...

নয়নের কথায় কেউ হাসে। কেউ দুঃখিত হয়। তারপর অন্ধকার নেমে এলে এক ক্যান বিয়ার কিংবা দুয়েক ঢোঁক ওয়াইন গলায় ঢেলে সবাই যার যার কেবিনে ঢুকে লেপমুড়ি দিয়ে শুয়ে পড়ে...

সকলে ঘুমিয়ে গেলেও জেগে থাকে নয়ন। আস্তে আস্তে হেঁটে গিয়ে দাঁড়ায় টিভিরুমের দেয়ালে টানানো সুন্দরবনের মানচিত্রের কাছে। নদীযাত্রার শুরুতেই গাইড এই মানচিত্র ধরে দেখিয়ে দিয়েছে ভ্রমণের রুট। বিভিন্ন স্পটে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে কোনখানে বাঘের উপদ্রব- কোনখানে ডাকাত- কোনখানে কুমির- কোনখানে চোরাবালি আর সবাই ঠিক কোনখানে আছে তখন...

মানচিত্রে আঙুল বোলাতে বোলাতে নয়ন বিড়বিড় করে। ভিডিওতে দেখা আলগোর সাহেবের স্টাইল নকল করতে করতে তার গলা বেশ চড়া হয়ে আসে। এক হাত মাজায় রেখে আরেক হাতে মানচিত্রের বিভিন্ন স্পট ধরে অদৃশ্য দর্শকদের উদ্দেশ্যে সে শুরু করে সদ্যশেখা সুন্দরবন পাঠ- ইনি বঙ্গোপসাগর... ইনি শাসন করেন বন জল অন্তরিক্ষ ও প্রাণীকূল; হোক সে বনকর্তা ডাকাত জেলে বাঘ কুমির কিংবা নিতান্ত কাঁকড়া। ইনার জোয়ার ভাঁটা প্লাবন আর ঝড় জলোচ্ছ্বাসের আইন মেনে নিয়েই সুন্দরবনে সকলের বাস বাধ্যতামূলক...

তারপর এই যে; ইনি বাঙাল বাঘ; বেঙ্গল টাইগার। ইনি শাসন করেন বন। সমুদ্র ছাড়া কাউকে পরোয়া করেন না ইনি। বনের সর্বত্রই সকলে প্রার্থনা করে ইনার চোখের সামনে যেন শত্র“ও না পড়ে... ইনি সাপ; বনে ঢোকা মানুষ ভয়ে ভয়ে থাকে ইনার মুখোমুখি পড়ার। ...ইনারা কামট আর কুমির; ইনরা শাসন করেন জল। মাছ আর মাছধরা মানুষেরা ইনাদের সমীহ করে চলার নিয়ম। ...ইনারা বনবিভাগ; ইনরা শাসন করেন বনে মানুষের গতিবিধি; সকল মনুষ্য প্রজাতির বনপ্রবেশ ইনাদের অনুমতি সাপেক্ষ। ...ইনারা জলদস্যু; ইনারা নিয়ন্ত্রণ করেন সুন্দরবনের অর্থনীতি; ইনাদের মর্জির উপর নির্ভর করে সুন্দরবনের জেলে মাছ নিয়ে নাকি নৌকা নিয়ে নাকি প্রাণ নিয়ে ফিরে যাবে বাড়ি... আর...

নয়ন পুরা মানচিত্রে একবার হাত বোলায়। কোনো নির্দিষ্ট জায়গা চিহ্নিত করতে না পেরে দুই হাত দিয়ে মানচিত্র চেপে ধরে। তারপর ঘাড় ঘুরিয়ে দর্শকদের উদ্দেশ্যে বলে- আর এই লোক সুন্দরবনের মানুষ আব্দুল ওহাব; যে সবাইকে বলতে বাধ্য- শ্রেণীমতো আদাব ও সালাম...

মানচিত্রপাঠ শেষ হবার আগেই পুরো জাহাজটা হঠাৎ করে দুলে উঠে। নয়ন টিভিরুম থেকে দৌড়ে খোলা জায়গায় গিয়ে দাঁড়ায়। নোঙরের ঝনঝন আওয়াজের সাথে কেঁপে কেঁপে উঠে জাহাজ। নয়ন দৌড়ে এগিয়ে যায় জাহাজের সামনের রেলিংয়ের কাছে। হা করে তাকিয়ে দেখে পানি থেকে অনেক উপরে ঝুলে আছে জাহাজের নোঙর। আর ইঞ্জিন চালু না করেই আস্তে আস্তে জাহাজটা চলতে শুরু করেছে সামনের দিকে...

নোঙরের শিকল টান টান হয়ে আছে সামনের দিকে। অনেক দূরে শূন্যে ঝুলে আছে জাহাজের নোঙর। নয়ন চোখ কুঁচকে নোঙরের টানটান শেকলের উপর দিয়ে চোখ পিছলে নিয়ে সামনের দিকে তাকায়। আবছা আলোয় তার চোখে পড়ে বিশালদেহী এক মানুষ। লুঙ্গি কাছা মেরে পরা। নগ্ন শরীর। কালো কুচকুচে দেহটা ঝুঁকিয়ে নোঙরের শেকল হাতের মুঠোয় পেঁচিয়ে ধরে সামনের দিকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে নয়নদের জাহাজ। নয়ন চিৎকার করতে গিয়ে থেমে যায়। দানবের মতো মানুষটা ঘাড় ঘুরিয়ে একটা হাত বাড়িয়ে দেয় নয়নের দিকে

নয়ন এক পাও নড়তে পারে না। দানবটা মুখ এগিয়ে জাহাজের আলোর কাছে নামিয়ে আনলে নয়ন বিস্ময়ে আবিষ্কার করে এই দানব বাঘের ভিডিওতে দেখা নৌকার মাঝি আব্দুল ওহাব...

আব্দুল ওহাব হাত বাড়িয়ে সুন্দরী গাছের গোড়ার মতো বিশাল একটা আঙুল এনে নয়নের চোখের সামনে নাচায়- চুপ করে থাক। তোরে ছবি তোলার দেশে নিয়ে যাব আজ...

নয়ন দাঁড়িয়ে থাকে জাহাজের মাস্তুলের মতো। আব্দুল ওহাব আবার ঘুরে পানিতে ছপছপ শব্দ তুলে জাহাজটাকে টানতে টানতে এগিয়ে যায় সামনের দিকে...

টানতে টানতে জাহাজটাকে নদী ছাড়িয়ে বঙ্গোপসাগরে নিয়ে যায় আব্দুল ওহাব। সমস্ত সাগরের জল তার হাঁটু সমান। লাথি মেরে মেরে সমুদ্রের ঢেউ ভেঙে জাহাজটাকে এবার সে টানতে থাকে ভারত সাগরের দিকে। আব্দুল ওহাব টানতেই থাকে সামনে ঝুঁকে; নয়ন দেখে ভারত মহাসাগর ছাড়িয়ে... লোহিত সাগর ছাড়িয়ে জাহাজটা গিয়ে ঢুকছে এডেন সাগরের জলে। এবার একটু জিরায় আব্দুল ওহাব। আস্তে আস্তে টেনে জাহাজটা নিয়ে যায় তীরে। আস্তে আস্তে স্পষ্ট হয়ে আসে তীর। সমুদ্র ছেড়ে ডাঙায় উঠে যায় আব্দুল ওহাব আর নয়ন তাকিয়ে দেখে তার সামনে কালো দেশ সোমালিয়া...

লুঙ্গি কাছা মেরে সোমালিয়ার তীরে দাঁড়ায় কালো কুচকুচে আব্দুল ওহাব। হাত বাড়িয়ে এক ঝটকায় নয়নকে মুঠোয় করে জাহাজ থেকে নিয়ে তীরে ছুঁড়ে ফেলে- তোল। ছবি তোল

নয়নের সামনের কালো সোমালিয়ার তীরবর্তী মানুষ। নয়ন ক্যামেরা চোখে তোলে। কিন্তু এ কী? কালো কালো সব মানুষের শরীর ভর্তি সাদা সাদা দাগ আর ক্ষত। নয়ন ক্যামেরা সরিয়ে চোখ কচলে তাকায়। হাজার হাজার বিকলাঙ্গ কালো শিশু শরীরে সাদা সাদা ক্ষত নিয়ে গড়াতে গড়াতে এগিয়ে আসছে তার ক্যামেরার দিকে- তোল। ছবি তোল আমাদের...

ক্যামেরা নিয়ে নয়ন পাগলের মতো দৌড়াতে থাকে জাহাজের দিকে। তাকে ধাওয়া করে আসে হাজারে হাজারে বিকৃত শিশু আর ক্ষতওয়ালা কালো কালো মানুষ। আব্দুল ওহাব দূরে দাঁড়িয়ে দাঁত বের করে হাসে। ক্যামেরা মাথার উপরে তুলে নয়ন দৌড়াতে দৌড়াতে গলাপানি পর্যন্ত এসে পড়লে আব্দুল ওহাব হাত বাড়িয়ে তাকে তুলে নিয়ে আবার ছেড়ে দেয় জাহাজের ছাদে। নয়ন তাকিয়ে দেখে তার সমস্ত পোশাকের রং বদলে গেছে সমুদ্রের ভিন্ন রংয়ের পানিতে ভিজে। বিকট দুর্গন্ধ বের হচ্ছে তার সমুদ্রভেজা পোশাক থেকে। এবং সমস্ত শরীর জুড়ে শুরু হয়েছে প্রচণ্ড চুলকানি...

জাহাজের ছাদে পোশাক খুলে রেখে শরীর চুলকাতে গিয়ে নয়নের চোখে পড়ে দূর সমুদ্রে আরেকটি জাহাজ। কুমিরের মতো পানিতে পিঠ ভাসিয়ে একটু একটু করে পেটমোটা সাদা জাহাজটা এগিয়ে আসছে। আসতে আসতে জাহাজটা থেমে যায় হর্ন অব আফ্রিকার কাছে সমুদ্রের ভেতর। অনেকক্ষণ থেমে থাকে জাহাজটা। ক্যামেরা জুম করে নয়ন দেখে সেই জাহাজের পেট থেকে সমুদ্রে উড়ে উড়ে পড়ছে হাজারে হাজারে ড্রাম আর বেরল। সেই ড্রাম আর বেরলগুলো সমুদ্রের ঢেউয়ে একটু একটু করে এগিয়ে আসছে সোমালিয়ার তীরে। আসতে আসতে নয়নদের জাহাজে ধাক্কা লেগে ফেটে যায় অনেকগুলো ড্রাম। সেই ড্রামগুলো থেকে বের হয়ে পানিতে মিশে যায় তীব্র কিছু রং। কিছু তরল। সেই তরলে- সেই রংয়ে বদলাতে থাকে সমুদ্রের পানি...

কাছের পানিতে ছপছপ শব্দ শুনে নয়ন তাকিয়ে দেখে ঝাঁকি জাল নিয়ে সমুদ্রে মাছ ধরতে নেমেছে আব্দুল ওহাব। প্রতিটা ক্ষেপে হাজারে হাজারে মাছ উঠে আব্দুল ওহাবের জালে। জালের পেটে হাত ঢুকিয়ে আব্দুল ওহাব মাছ বের করে আনে। কিন্তু সব মাছ মৃত বীভৎস পচা। আব্দুল ওহাব মাছ ফেলে দিয়ে সমুদ্রের অন্যপাশে আবার জাল ফেলে। আবারও জাল ভরে উঠে মৃত আর বীভৎস মাছে। নয়ন তাকিয়ে দেখে সমুদ্রের পানি লেগে আব্দুল ওহাবের রানের কাছে শরীরের রং বদলে যাচ্ছে। সেখান থেকে আস্তে আস্তে বের হচ্ছে সাদা সাদা ক্ষত আর পুঁজ। জালের পরে জাল মারতে থাকে আব্দুল ওহাব। কিন্তু প্রতিবারই তার জাল ভরে উঠে মৃত মাছে। আব্দুল ওহাব পাগলের মতো জাল নিয়ে এদিক সেদিক তাকায়। তাকাতে তাকাতে তার চোখে পড়ে দূরের সমুদ্রে সেই সাদা জাহাজ। সাদা জাহাজটা তখন হালকা হয়ে সাদা পতাকা তুলে ফিরে যাচ্ছে আটলান্টিকের দিকে। আব্দুল ওহাব হাতের জাল ছুঁড়ে ফেলে সেই জাহাজকে ধাওয়া করে। ঝুপঝুপ করে সমুদ্র দিয়ে দৌড়ে গিয়ে এক থাবায় জাহাজটা ধরে ফেলে। জাহাজের ভেতরে হাত ঢুকিয়ে জাহাজের কাপ্তেনকে শূন্যে বের করে আনে। নয়ন অবাক হয়ে দেখে সেই জাহাজের কাপ্তেন স্বয়ং আলগোর...

আব্দুল ওহাব আলগোরকে শূন্যে ঝুলিয়ে তার কোট-প্যান্টের পকেট হাতড়ায়। আলগোরের পকেট থেকে বের হয়ে আসে কাড়ি কাড়ি ডলার। মুঠোয় মুঠোয় ডলার মুখে পুরে চিবোতে থাকে আব্দুল ওহাব। কিন্তু ক্ষিদে মিটে না তার। তার পেটের চামড়া লেগে থাকে পিঠের চামড়ার সাথে। আব্দুল ওহাব এদিক সেদিক তাকায়। তার চোখে পড়ে এডেন উপকূলে দাঁড়িয়ে থাকা নয়নদের পরিবেশবাদী জাহাজ। আলগোরকে ছেড়ে ছপছপ পানি ভেঙে আব্দুল ওহাব এবার তেড়ে আসে নয়নদের জাহাজের কাছে। জাহাজের খোলে হাত ঢুকিয়ে এক এক করে বের করে আনে সবাইকে। এক এক করে সবাইকে এক হাতে ঠ্যাং উপরে তুলে উল্টো করে আরেক হাতের তালু মুখের নিচে রেখে বোতল ঝাঁকুনি দেয়। ঝাঁকুনিতে সবার পেটের খাবার বের হয়ে আসে আব্দুল ওহাবের পেতে রাখা হাতের তালুতে। আব্দুল ওহাব হাতের তালু চেটে চেটে খায় আধা হজম হলুদ ভাতের মণ্ড। বমি...

ডাকাত... ডাকাত... ডাকাত... কালো ডাকাত...

চিৎকার শুনে সবাই তাকিয়ে দেখে প্যাসিফিক-আটলান্টিকের দিক থেকে আরো অসংখ্য জাহাজে কামান-বন্দুক-সৈনিক নিয়ে ফিরে আসছেন আলগোর সাহেব। তাদের দেখে লুঙ্গি কাছা মেরে আরব সাগরের ভেতর দিয়ে দৌড় লাগায় আব্দুল ওহাব। পেছন থেকে বর্ষার মতো গুলি গিয়ে বিঁধে তার পিঠে। পিঠে গুলি নিয়ে ধুঁকতে ধুঁকতে আব্দুল ওহাব পালিয়ে গেলে আলগোর সাহেব নয়নদের কাছে এসে এডেন উপকূলকে আব্দুল ওহাবমুক্ত ঘোষণা করলে সবাই নিশ্চিন্তির নিশ্বাস ছাড়ে। তার হাতে হাত রেখে সবাই আব্দুল ওহাবমুক্ত বিশ্বের প্রতিজ্ঞা করলে তিনি জানিয়ে দেন সুন্দরবন বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ হলে সারা জীবনের জন্য সুন্দরবনে ঢোকার অধিকার হারাবে আব্দুল ওহাব...

সকলে তার কথায় আশ্বস্ত হয়ে তার লড়াইয়ে কাঁধ মেলানোর প্রতিজ্ঞা করে আর ফিরে আসার পথে নয়নের ক্যামেরার জুম লেন্সে ধরা পড়ে দূর বঙ্গোপসাগরে দাঁড়িয়ে থাকা আলগোরের মাতো একটি সাদা আর পেটমোটা জাহাজ...

সাকিন সুন্দরবন ৮। মালজোড়া

সাকিন সুন্দরবন ৬। জলপ্রহরী

সাকিন সুন্দরবন ৪। বনপর্যটক

সাকিন সুন্দরবন ৩। ঘেরাটোপ

সাকিন সুন্দরবন ২। মরণখোর

সাকিন সুন্দরবন ১। বনমজুর


মন্তব্য

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

কমেন্ট করা হয় না। কিন্তু পড়তেসি।


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

মাহবুব লীলেন এর ছবি

মাঝেসাঝে কমেন্ট দিয়েন। তাইলে সংশোধন করার সুযোগ পাবো

অতিথি লেখক এর ছবি

সত্যি বলতে কি, লেখাটা পুরাটাই খাপছাড়া টাইপ এর লেগেছে-
প্রথমে সুন্দরবন ও পরিবেশ রক্ষা পর্যন্ত ঠিক ছিলো কিন্তু হঠাৎ করেই বিবিসি'র ভিডিও তার পর আবার একলাফে আলগোর ও তার পরিবেশ বিষয়ক ভুমিকা- আরেক লাফে সোমালিয়া, ডাকাত, কালো মানুষ ও তাদের অধিকার..., মানে এলোমেলো হয়ে গেলো সব কিছু।
সমসাময়িক ঘটনা প্রবাহ এবং লেখকের সকল ভাবনা একটি গল্পের মাধ্যমেই প্রকাশ করার প্রচেষ্টা লক্ষ্য করা যায়।
আমার মনে হয় একটি লেখায় অনেক বিষয় না এনে ভিন্ন ভিন্ন গল্প লেখা যেত।

--
কালো ও সাদা

মাহবুব লীলেন এর ছবি

বিশ্লেষণটা মনে ধরেছে
পরামর্শটাও

দেখি। এইটারে একটু বার্নিশ করি এইবার

মাহবুব লীলেন এর ছবি

লেখাটায় বেশ কিছু পরিবর্তন করলাম

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।