প্রাপ্তিযোগ

মাহবুব লীলেন এর ছবি
লিখেছেন মাহবুব লীলেন (তারিখ: বিষ্যুদ, ০৭/০৭/২০১১ - ৪:১৮অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

ভেঙে পড়ার আগে নিজেকে একটু ঠেস দিয়ে দাঁড় করাতে হয় যাতে ফটোগ্রাফার ভেঙে পড়ার সবগুলো ভাঁজে ফোকাস শার্প করে নিতে পারে। ভেঙে পড়ার আগে একটু নড়েচড়ে ভেঙেপড়া সবগুলো ভাঁজে আলো ঢুকতে দিতে হয় যাতে ফটোগ্রাফার সবগুলো ভাঁজ ঠিকঠাকমতো ক্যামেরাবন্দী করতে পারে। ভেঙেপড়ার আগে একটু সোজা হয়ে ফটোগ্রাফারের রেডি-ওয়ান-টু-থ্রি শুনে ঝুপ করে ফ্রেম বুঝে একসাথে ভেঙে পড়তে হয় যাতে ভেঙেপড়ার অ্যাকশনগুলো ফটোগ্রাফিতে জীবন্ত হয়ে উঠে...

ধর্ষিত হবার পর লোকালয়ে গিয়ে ধর্ষণকর্ম প্রকাশ করতে হয় যাতে লোকজন ধর্ষণচিত্র অনুমান করতে পারে। ধর্ষিত হবার পর ধর্ষণপথ উন্মুক্ত করে হাসপাতালে পরীক্ষা দিতে হয় যাতে ডাক্তারগণ ধর্ষণের প্রমাণ পেতে পারে। ধর্ষিত হবার পর সাক্ষীসহ ধর্ষণ প্রক্রিয়া বর্ণনা করে আদালতকে ধর্ষণঘটনা বিশ্বাস করাতে হয় যাতে বিনাতর্কে সবাই ধর্ষণবিরোধী মিছিলে শামিল হতে পারে...

দরিদ্র হবার সময় খালি হাতে বাজরে যেতে হয় যাতে বিক্রেতারা কেনাকাটায় অক্ষমতা ধরিয়ে দিতে পারে। দরিদ্র হবার সময় অনাহারে থাকতে হয় যাতে কেনাকাটার অক্ষমতাটা সবাই বিশ্বাস করতে পারে। দরিদ্র হবার সময় অনাহারে মারা যেতে হয় যাতে মৌলিক অধিকার বিষয়ে নাগরিক সমাজ আন্দোলন জমিয়ে তুলতে পারে...

এবং কেবল তারপর পত্রিকায় পাওয়া যাবে নতুন সুসমাচার যেমন- ভেঙেপড়া ছবির আন্তর্জাতিক পুরস্কারপ্রাপ্তি কিংবা ধর্ষকের যাবজ্জীবন শাস্তির বিধান কিংবা সবার জন্য খাদ্যের রাষ্ট্রীয় নিশ্চয়তা যাতে মরে যাবার পর ভেঙেপড়া মানুষ খেয়ে দেয়ে উঠে দাঁড়িয়ে ধর্ষকের ফাঁসির দৃশ্যটা সরাসরি টিভির পর্দায় দেখতে পারে...
২০১১.০৭.০৬ বুধবার


মন্তব্য

কবি-মৃত্যুময় এর ছবি

অভিনয় রাজনীতিকদের হাতিয়ার............এটা তারা ভালো পারে............

০২
মর্মান্তিক সমাজাচার, কিছু বলার নাই............ মন খারাপ এসব আর সহ্য করতে ইচ্ছে করে না, পারলে সব গুঁড়িয়ে দিতাম........ মন খারাপ

০৩
আগুন সবখানে বাসে, বাজারে, দোকানে, রাস্তায়, পত্রিকায়...............

বস, যথারীতি যেমন বস লেখেন তেমনি হইছে, তবে দমটা ছাড়তে দিছেন এইবার.......... চলুক

মৌনকুহর. এর ছবি

তবে দমটা ছাড়তে দিছেন এইবার

হাসি

মাহবুব লীলেন এর ছবি

দম নেন। দম ধরে রাখা বুদ্ধিমানের কাজ

The Reader এর ছবি

হায়রে সমাজ , হায়রে বিবেক , হায়রে দুনিয়া ...।।

মাহবুব লীলেন এর ছবি

অত হায় হায় করলে তো মুশকিল

এম আব্দুল্লাহ  এর ছবি

ব্লগিং করার মাঝে একটু বিরতি দিয়ে ঘুমোতে যেতে হয় যাতে লীলেন ভাই একটি পোস্ট দিতে পারে।
ধন্যবাদ।
এম আব্দুল্লাহ

মাহবুব লীলেন এর ছবি

এইবার তাহলে আমি ঘুমাই। আপনি একটা পোস্ট দেন

মৌনকুহর. এর ছবি

গুরু গুরু

মাহবুব লীলেন এর ছবি

ধন্যবাদ

তানিম এহসান এর ছবি

স্যালিউট, স্যালুট সহ আরো যত নাম, সব, সব দিলাম!!

মাহবুব লীলেন এর ছবি

সাধু সাধু

বন্দনা কবীর এর ছবি

অসাধারন!!! এটাই মূল চিত্র। কার??? কিসের???

মাহবুব লীলেন এর ছবি

নিশ্চয়তা দিচ্ছি মূল চরিত্রটা আপনার না

নীলকান্ত এর ছবি

শেয়ার দিলাম বস।


অলস সময়

মাহবুব লীলেন এর ছবি

ধন্যবাদ। দেন শেয়ার

মাহবুব এর ছবি

ভাই,

কিনে নেওয়া সময়ে আমরা সহবাসে মৈথুনের সময়টাকে টানতে চাই যোগ্যতারও অধিক সময় ধরে। পারি কি কখনো? অথচ না পারাতে আমাদের কোনো ক্ষতি হয় না।

ধর্ষনের জন্যে আমরা নিজের মৈথুন কর্মের সামর্থ্য বিচার করি না কখোনই।
আবার যারা সামর্থ্যের ভয়ে এখনো ব্যভিচার করছে না তাদের কোনোদিন বিচারের জন্যে দাঁড়াতে হয় না, তারা বিচার চায়ও না কখোনো।

উদরের চার বাটের ক'বাট খাদ্যে ভরপুর আর ক'বাট পানি ভরপুর করে বাকি ক'বাট নো ম্যান্স ল্যান্ড রাখতে হয় তারসব কিছু জেনে খাবার খেতে বসলেও খেতে খেতে আমরা বই'র হিসাবটা বই'য়েই পাঠিয়ে দিয়ে উদরপূর্তি করি জিহ্বার হিসাবে।

-"প্রতিকারের চে প্রতিরোধই উত্তম" এবং আমরা উদর পূর্তি করে খাই।
:লাভ হবে না কোনো

মাহবুব লীলেন এর ছবি

অনেক কিছুই বললেন বুঝতে পারলাম কিন্তু অনেক কিছুই বোধহয় মাথার উপর দিয়ে গেলো

ধৈবত(অতিথি) এর ছবি

চমতকার, বর্ণনা এবং কন্টেন্ট।

মাহবুব লীলেন এর ছবি

ধন্যবাদ

মিলু এর ছবি

তালগাছটা আপনাকে দিলাম

মাহবুব লীলেন এর ছবি

তালগাছটা আমারে দিলেন না নিজের জন্য রাখলেন?

নিত্যানন্দ রায় এর ছবি

চলুক

কি বলবো, ভাষাহীন, নির্বাক।

মাঝে মাঝে বেচে থাকা অর্থহীন মনে হয় কিছু একটা করতে পারি না বলে।

মাহবুব লীলেন এর ছবি

যাদের অর্থযোগ করার ক্ষমতা আছে তাদেরই কেবল মাঝে মাঝে বেঁচে থাকা অর্থহীন মনে হয় নতুন অর্থ খুঁজে বের করার জন্য

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

লাজবাব!


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

দুর্ধর্ষ

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

অনিন্দিতা চৌধুরী এর ছবি

হুম, এটা অনেকটা ভাল লাগল।
শেষের প্যারাটা কি এভাবেই লিখতে চেয়েছিলেন?

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।