মুজিব-তাজের নেমেসিস দেয়াল

মাসকাওয়াথ আহসান এর ছবি
লিখেছেন মাসকাওয়াথ আহসান (তারিখ: সোম, ০৬/০৯/২০১০ - ১০:১৮অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

বাংলাদেশে ৭৫ থেকে ৯৬ বিএনপি জামায়াত বলয়ের সংবিধান ও ইতিহাস বিকৃতির রিরংসায় অনেক তরুণ পাঠ্যপুস্তকের অপভ্রংশ  তথ্য পড়ে সংশয়াপন্ন হয়েছেন। এই পোস্টে তাদের সোচ্চার মন্তব্য প্রত্যাশা করছি।সংলাপের মাঝ দিয়ে সহমত না হলেও সমানুভূতির ক্ষেত্র তৈরী হতে পারে সেই আশাতেই এই লেখার আয়োজন।

 

 ৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু হত্যার পর বাংলাদেশের ইতিহাস জানতে পারিনি। আওয়ামীলীগের লোকজনকে বিপন্ন দেখেছি,বিএনপি নামে একটি দল তৈরী হতে দেখেছি। পরে একই কায়দায় জাতীয় পার্টি হয়েছে।বিএনপি এবং জাতীয় পার্টি বঙ্গবন্ধুকে বাংলাদেশের ইতিহাস থেকে মুছে দিতে মিডিয়া ক্যু করেছে। নব্বুইএর আগে পত্রিকা পরে প্রাইভেট চ্যানেল এসে কিছু সত্য জানাতে চেষ্টা করেছে আমজনতা। বিবিসি-ভোয়া-ডয়চেভেলে শুনে গ্রামের মানুষ কিছু সত্য পেয়েছে। কিন্তু সেসবি ছিল অন্ধের হাতি দর্শনের মতো।

 

প্রাইভেট টিভি আর ইন্টারনেট প্রযুক্তি এসে যাওয়ার কারণে বাংলাদেশের ইতিহাসের অনুরাগী পর্যবেক্ষকদের বয়ানে,এবং প্রামাণিক দলিল ও ড্যানব্রাউন পদ্ধতিতে প্রতীক অনুসরণ করে এদেশের জনসংখ্যার সংখ্যাগুরু তরুণ খুঁজে পেল তাকে> বাঙ্গালীর হাজার বছরের শেকলচারী জীবনের অবসানে একটি ৭মার্চ কবিতার জনক টুঙ্গিপাড়ার জেদী ছেলে মুজিব, রেসকোর্সে আমজনতার উদ্দাম আকাংক্ষার হাওয়ায় মুক্তির সহিস হয়ে যিনি চেপে বসলেন মুক্তিযুদ্ধের অগ্নি চন্দ্রযানে।ছয় দফা থেকে মুক্তিযুদ্ধ,৩০লাখ জীবন,লাখ লাখ নারীপুরুষের ত্যাগ,মুক্তিযোদ্ধাদের ঘুরে দাঁড়ানো,মুজিবের অনুসারী তাজউদ্দীন তার নেতার বাংলাদেশ মহাকাব্যের প্রকাশনায়, থুসিডাইসিসের মতো রণাঙ্গণে গেলেন,ফিরে এসে মিলিয়ে নিলেন রেসকোর্সের আগুণ কতোটা পৌঁছেছে যুদ্ধক্ষেত্রে ,মুজিব ভাই কোন হঠাত উঠে দাঁড়ানো আকাশ মানুষ নন, গত ষাট দশক ধরে ক্রমশ উঁচু হতে থাকা উচ্চতা।

 

তাজউদ্দীন সে যুদ্ধের কমান্ডার আবার নিজেদের তৈরী করা বিজয় ইতিহাসের লেখক।এই মানুষটি যুদ্ধপরবর্তী রাজনীতিতে কতিপয় দুর্নীতির প্লেগে আক্রান্ত আওয়াম তরুণ নেতার ঔদ্ধত্যে-ঈর্ষায় ক্ষমতাবলয় থেকে দূরে সরে যেতে বাধ্য হয়েছেন। মুজিব হচ্ছেন সেই ট্যাজেডীর নায়ক যাকে তার অনুজপ্রতিম তাজ থেকে দূরে রাখা হয়েছে।মুজিব এবং তাজের মাঝে বেড়ে ওঠা দুর্নীতির প্রাচীরটিই বাংলাদেশ ট্র্যাজেডীর বার্লিন ওয়াল।মুজিব-তাজ দূরে সরে যাওয়ার মাঝ দিয়ে পাকিস্তানের জঙ্গী প্রাসাদটি মাথা চাড়া দেয় বাংলাদেশে।খন্দকার মুশতাক সেই সি আই এ-আই এস আই ঢাকা অপারেটিভ যার কাজ ছিল,সমাজতন্ত্রের পথে এগিয়ে যাওয়া মুজিব কে মেরে দেয়া।মুজিব-তাজ ব্যাটিং জুটি ভেঙ্গে দেবার পর একাকী মুজিব চোরসংকুল রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক অণুসারীদের মাতস্যন্যায়ে বিপন্ন হয়ে ক্লান্ত বোধ করেছেন।বেনেভোলেন্ট সোশাল ডিকটেটর হয়ে কিউবার কাস্ত্রোর মতো যদি বাংলাদেশে সামাজিক সাম্য ফিরিয়ে আনা যায়,সেই চেষ্টাই করলেন তিনি বাকশালে।কিন্তু চারপাশের দুর্নীতি বাজ বসন্তের কোকিলেরা সেটাকে বাকশিয়ালে রূপান্তর করল।

 

অর্থনীতিবিদ আতিউর রহমান এই মুজিব-তাজ সম্পর্ক নিয়ে গবেষণা করেছেন। তিনি অর্থনীতিবিদ হিসেবে রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়নের গতিপ্রকৃতির দিকেও চোখ রাখেন। ফলে উনি একজন অভাজন হিসেবে এই দুই নেতার বিচ্ছেদকেই বাংলাদেশের স্প্যানীশ ট্যাজেডীর সুচনা বিন্দু বলে মনে করেন।

 

ঢাকার সিভিল প্রশাসনে তাজউদ্দীন থাকলে সি আই এ বা আই এস আই হ্যান্ডলিং সহজ হত, মুক্তিযুদ্ধের সময় তাজ,  সি আই এ-আই এস আইজনিত মুশতাক ষড়যন্ত্র অঙ্কুরেই বিনাশ করেছিলেন।মুশতাকের ফন্দী ছিল পাকিস্তানরাজটা ধরে রাখা।সেটা মার্কিন প্রশাসন মুশতাককে দিয়ে বাস্তবায়নের আশা পোষণ করেছিল।আর এক গ্রাম্য রাজনীতিবিদ ছিলেন,যিনি মুক্তিযুদ্ধের সময় হঠাত উত্তেজিত হলেন,মুজিব তো হিরো হয়্যা গ্যালো।তার মুস্লিম রেনেসার বন্ধুরা বললেন মুজিব হিন্দু হয়ে গেলেন। ইন্দিরা গান্ধী ঈর্ষানিত বিভ্রান্ত ভাসানীকে তাপানুকূল গৃহে নামাজ পড়ার ব্যবস্থা করে দিলেন। ভাসানীর আর পিকিং যাওয়া হল না, তাই জাতির জনক হবার ক্ষমতা জায়নামাজে আটকে গেল।যুদ্ধের পর মুজিব ফিরে নানাভাবে ভাসানীর গালফোলানো কমাতে চেষ্টা করেছেন। কাজ হয়নি,গ্রামের মাতবরের গোসসা বাবা, এতো সহজ না।হাঁটুর বয়েসী,একঘরমে দো-পীর যাও বাছা শো রাহো।পরিণতি ১৫ আগস্ট,১৯৭৫।

 

৭২-৭৫ সময়ে বাংলাদেশের কিছু ব্যর্থ বাম তখন আওয়ামীলীগ মুক্তিযুদ্ধের সুফল কুড়াচ্ছে,আমরা ভাগ পাচ্ছিনা এই যাতনায়,বা সত্যিই দেশপ্রেমিক কিছু লোক বিভ্রান্ত হয়ে যত দোষ শেখ মুজিব সিনড্রোমে আক্রান্ত হল। পুঁথি পড়ো বুদ্ধিজীবীরা শেখ মুজিবের প্রশাসনিক দক্ষতা নিয়ে ভ্রু কুঁচকাতে শুরু করলো।এই বুদ্ধিজীবীরা একগ্লাস পানি ঢেলে খায়না,শুধু কে কী করতে পারলো না,কী করলে পারা যায় এইসব চর্বন করা অকর্মণ্য লোক।

 

 ওইদিকে সেনা কর্মকর্তারা তাদের পাকিস্তানী ব্যাচমেটদের জেল্লা দেখে ভাবলো গণতন্ত্রের নিকুচি করি,আমার দরকার জেল্লা। মোটামুটিভাবে মুজিব একা একা লড়াই করতে করতে যখন ক্লান্ত, তাজ ওএসডি,মুশতাক বার্ডে বসে পনেরো/আটের নক্সা চূড়ান্ত করছেন। জুনিয়র সেনারা জিয়ার সঙ্গে কথা বলেছে।জিয়া হতাশ। তিনি সিনিয়র হওয়া সত্তেও উনাকে ডেপুটি করা হয়েছিল। কারণ কালুর ঘাট বেতারে মুজিবের পক্ষে ঘোষণা পাঠের পর হঠাত উচ্চাভিলাসী হয়ে ভুল করে হলেও নিজেকে সরকার প্রধান দাবী করেছিলেন। সেনাবাহিনীর চাকরীর মানসিক যোগ্যতা তিনি ওইদিনি হারিয়েছেন। মুজিব উদারতা বশত সেনাপ্রধানের সুবিধাদী দিয়েই তাকে ডেপুটি করে রেখেছিলেন। কালুরঘাট স্ক্যান্ডালের পরে কথা বার্তায় জিয়া সংযত ছিলেন, কিন্তু জুনিয়র কর্মকর্তাদের ইনিয়ে বিনিয়ে মুজিব হত্যায় গোএহেড দিয়েছিলেন,খুনীদের বয়ানে তার প্রামাণিক ফুটেজ ইউটিউবে আছে।অবশ্য মুজিব বেচে থাকলেও জিয়া তার প্ল্যান বি হিসেবে বিচিত্রায় বাকশালের সুকৃতি নিয়ে স্তুতি লিখেছিলেন জাতির জনকের মানভঞ্জন করতে।

 

মুশতাক জুনিয়র পাকিস্তান পন্থী সেনা কর্মকর্তা আর জয়ান দিয়ে মুজিবকে মেরে কায়েদে আজমের পোষাক পরে বাংলাস্তান রচনা করার আয়োজনের মসনদে বসে সেই  বঙ্গবন্ধুর পছন্দের চার তাজউদ্দীন-নজরুল-মনসুর-কামরুজ্জামানকে ঢাকা জেলখানায় ঘাতক পাঠিয়ে আওয়ামীলীগের শেষ ঠিকানা মুছে দিলেন।মার্কিনীরা মুজিব খুনীদের কাদাটা গায়ে রাখতে চায়নি। অবশেষে মুশতাকের পাকিস্তান পিতা ভুট্টো চার্টার বিমানে করে মুজিব ঘাতকদের ব্যাংকক থেকে গাদ্দাফীর অভয়ারণ্য তিপোলিতে পৌঁছে দিলেন।বলা বাহুল্য গোলাম আজম সে সময় আবার বঙ্গভবনে জিয়াফতের দাওয়াত পেয়ে গেছেন।

 

 সি আই এ-আই এস আই সমর্থিত মুশতাক সরকারকে উতখাত করতে র একটা শেষ চেষ্টা করে।কারণ বাংলাদেশ আবার পাকিস্তানের পথে গেছে সুতরাং ভারতের যেই লাউ সেই কদু হজবরল অবস্থা,৭১এর ইনভেস্টমেন্ট সাঙ্ককস্ট।কাশ্মীরেও পাকিস্তান,বাংলাদেশ সীমান্তেও পাকিস্তান।তাই মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষে খালেদ মুশাররফএর একটি মৃদু কু।মুশ্তাকের তাসের ঘরের পতন।

 

বাংলাদেশ পন্থী সমাজতান্ত্রিক নেতা কর্ণেল তাহের ৭নভেম্বর বিপ্লব করে খালেদ মুশাররফ কে সরিয়ে দেন। ভাসানীর পছন্দের, ৬৫র পাক-ভারত যুদ্ধের পদক জেতা জিয়া বর পেয়ে বর হয়ে টোপর পরে বসলেন।মুশতাক ওএসডি হয়ে গেল। সেনানায়ক জিয়া অবৈধ কৌর্ট মার্শালের প্রহসন করে ৭নভেম্বর বাংলাদেশ বিপ্লবের নায়ক তাহেরকে সরিয়ে দিলেন।বাংলাদেশের স্প্যানীশ ট্র্যাজেডীর নায়ক জিয়া বললেন, আই উইল মেক পলিটিক্স ডিফিকাল্ট। বহুদলীয় গণতন্ত্রের সার্কাসে যুদ্ধাপরাধীসহ চিড়িয়াখানায় আটকে থাকা সব হিংস্র জন্তু ছেড়ে দিলেন লোকালয়ে,পাহাড়ে,সংসদ্ভবনে।

ভাসানী খুশীমনে মরে গেলেন তার উত্তরসূরী জিয়াকে রেখে যেতে পেরে, যে বাংলাদেশকে ইসলামীসমাজতন্ত্রের পথে চালাবে। জিয়া দেশ ব্যাপী অনেক খাল কাটলেন,সেখানে কিলবিল করে ঘুরতে থাকল যুদ্ধাপরাধী কুমিরেরা।জিয়া ভারত প্রত্যাগত শরণার্থীপরিবারে বেড়ে ওঠা।তার ভারত বিদেষ সহজাত।আর একটা পাকিস্তান পাকিস্তান ভাব চলায় বলায় এবং কলায়। তবে সার্ক ফোরাম তৈরীতে জিয়ার উদ্যোগ সম্ভবত তার একমাত্র সংবেদনশীল কাজ।তিনি আর্থিক সততার রোগী ছিলেন,অল্পাহারী ছিলেন খেতেন শুধু মিডিয়া এন্ড পাওয়ার ফুটেজ।জিয়া ভারতের সঙ্গে একটা গোলশূণ্য ড্র রেখে আরব জাহানের দিকে হাত বাড়িয়েছিলেন।কিন্তু ইঙ্গ-মার্কিন লবি ইরানের শাহর মতো করে জিয়াকে চেয়েছিল,সে আবার মুসলিম দুনিয়ার আরেক গাদ্দাফী বা না হয়ে পড়ে সেই জন্য চট্টগ্রামে তাকে বার্ণ করে দেয়া হয়। শর্টকার্ট সাফল্যে রিস্ক ফ্যাক্টর তো থাকবেই।

 

টোপর পরে চলে এলেন আসল বর সেনানায়ক এরশাদ গণতন্ত্রের কবিপুত্র বিএনপির অন্তর্জলী যাত্রার আব্দুস সাত্তারকে সরিয়ে দিয়ে।জিয়া সংবিধান থেকে ধর্মনিরপেক্ষতা তুলে দিয়েছিলেন,তার জলপাইতো ভাই এরশাদ রাষ্ট্র ধর্ম ইসলাম করে ফেললেন।বঙ্গবন্ধুর ব্যাপারে জিয়ার মতোই স্পিকটি নট। পাহাড় আড়াল করা বামনের লাইট এন্ড সাউন্ড জিয়া-এরশাদ-যুদ্ধাপরাধী ছায়া নৃত্য তাই আজো দৃশ্যমান কতিপয় বিভ্রান্ত বা নৈরাশ্যের কাছে সমর্পিত বাঙ্গালী মানসে।এরশাদ মুজিব ঘাতক আর যুদ্ধাপরাধীদের জিয়ার মতোই জামাই আদরে রেখেছিলেন। জিয়া অবশ্য তারা গাদ্দাফীর কাছে একসঙ্গে বসে আবার কী শেখে এই আশংকায় তাদের রাজদূতের সেরা চাকরী দিয়েছিলেন। খুনের বদলে পুরস্কার জিয়া-এরশাদ-খালেদা-জিয়া তারেক, বাংলাদেশের জনমনে এই প্রতীক পুঁতে দিয়েছেন।

 

জিয়ার উত্তরসূরী তারেক আবার সেই মুসলিম উম্মাহর পথে হেঁটেছেন।বাংলাদেশকে তালিবান জিহাদের গরম বিছানা আয়োজনে বাংলাভাইকে উকিলমামা ডেকেছেন। তারেক জেহাদের পক্ষে নিজামীর মতো করেই সাফাই গেয়েছেন হাওয়াভবনে বসে এক প্রকাশ্য ছায়া সরকার হিসেবে। সংখ্যালঘু নির্যাতনের পাকিস্তানের বর্বর দখলদার বাহিনীর মতো নির্মমতায় হাওয়াবাদীরা হিন্দু পরিবারকে পেট্রোল ঢেলে পুড়িয়ে মেরেছে।

 

এখন যদি আরেকবার ঘটনাচক্রের দিকে ফিরে তাকান তাহলে আওয়ামীলীগকেই একমাত্র সেক্যুলার সরকার হিসেবে টেনে কষে পাশ মার্ক দেয়া যায়। অন্তত বাংলা হবে তালিবান এই ঝুঁকিটা নেই আওয়ামীলীগে।

 

এখন আওয়ামী লীগ এই টেনে কষে পাশ মার্ক নিয়ে যদি খুশী থাকে তাহলে আমরা জানি আবার যেই লাউ সেই কদু। হারেরেরেরে করে বিএনপিজামাতঘাম্পন্থীর দল বাংলাদেশ টেলিভিশনে সাঈদির খোতবা শোনাবে,ওসামা বিন লাদেন দুদিনের গুপ্ত সফরে এসে ১৫ আগস্ট খালেদা জিয়ার জন্মদিনের কেক কেটে যাবেন। তাতে এমেরিকা খুশী হবে ভূরাজনৈতিক দিক থেকে চীন-ভারতকে চোখে রাখতে বাংলাদেশ হটস্পট।যেভাবে আফঘানিস্তান-পাকিস্তানে প্রথমে রাশিয়ার বিরুদ্ধে তালিবান পুষে পরে নিজেদের হাতে তৈরী ফ্রাঙ্কেস্টাইন তালিবান বা লাদেনের কায়দাকানুনের বিরুদ্ধে ওয়ার এগেন্সট টেরর খেলছেন।তাই আওয়ামী লীগের সামনে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার দ্রুত নিরাপদ ভাবে শেষ করার পেছনে যে জঙ্গীবাদী ঝুঁকি রয়ে গেছে সেদিকে মনোযোগ না দিলে আবার ঐযযা হতে পারে।

 

আমাদের প্রতি প্রতিক্রিয়াশীলতা শাসিত তুলনা-প্রতিতুলনার বিনোদনের অজুহাতে আমরা ফ্রিডম অব নন্সেন্স উপভোগ করি এমনকি জাতির জনককেও কিছুটা খাটো করে ক্ষার আনন্দের নেশা অকর্মন্য কথা সমাজের।মুজিব বড়ো না তাজ এই আলোচনায় সময় নষ্ট করে কি লাভ? বরং মুজিব আর তাজউদ্দীনের মাঝে ক্ষমতা দূর্নীতির নোনা ধরা দেয়ালটাকে কীভাবে গুঁড়িয়ে দেয়া যায় সে আলোচনা আরো বেশী বেশী করে তোলা দরকার।

 

ছবি,লাইটস  সাউন্ডস

 


মন্তব্য

মাহবুব লীলেন এর ছবি

সাম্প্রতিক আপনার একেকটা লেখায় অনেক বেশি তথ্য চলে আসে মনে হচ্ছে

মাসকাওয়াথ আহসান এর ছবি

এগুলোকে লেখার কাঁচামাল হিসেবে জড়ো করছি,কেউ যদি পরে গুছিয়ে লেখে।
সম্ভবত একজন আরিফ জেবতিকের সম্পাদনা দরকার আর আপনার একটু সচেতন করে দেয়া। অনেক ধন্যবাদ।

যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এখনি,নইলে কোন দিন নয়।

যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এখনি,নইলে কোন দিন নয়।

মাহবুবুল হক এর ছবি

পাহাড় আড়াল করা বামনের লাইট এন্ড সাউন্ড জিয়া-এরশাদ-যুদ্ধাপরাধী ছায়া নৃত্য তাই আজো দৃশ্যমান কতিপয় বিভ্রান্ত বা নৈরাশ্যের কাছে সমর্পিত বাঙ্গালী মানসে

দারুন ! বর্ণনার ভাষায় কী যেন একটা আছে।

--------------------------------------------------------
দেয়ালে দেয়ালে মনের খেয়ালে লিখি কথা
আমি তো বেকার পেয়েছি লেখার স্বাধীনতা

--------------------------------------------------------
দেয়ালে দেয়ালে মনের খেয়ালে/ লিখি কথা ।
আমি যে বেকার, পেয়েছি লেখার/ স্বাধীনতা ।।

মাসকাওয়াথ আহসান এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ।

যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এখনি,নইলে কোন দিন নয়।

যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এখনি,নইলে কোন দিন নয়।

আনন্দ [অতিথি] এর ছবি

যত সময় যচ্ছে আপনার লেখা ভালো লাগছে , আগে ভালো লাগত না . আমি এখন আপনার বেশিরভাগ কথা ই সমর্থন করি. আসলে একমাত্র রাজনীতি ই পারে মানুষের জীবন কে বদলাতে . আমাদের দুর্ভাগ্য যেখানে সবচেয়ে বড় মনের মানুষ দরকার সেখানে সবচেয়ে হিংস্র মানুষ গুলো বসে আছে. আপনার মত হাজার হাজার কন্ঠ তৈরী হোক বাংলার সহরে গ্রামে , প্রবাসে .. সেই কামনায়

আনন্দম !

মাসকাওয়াথ আহসান এর ছবি

জগতে আনন্দযজ্ঞে আপনার আমন্ত্রণে কৃতজ্ঞতা। আমি আপনার মতোই আশাবাদী।

যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এখনি,নইলে কোন দিন নয়।

যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এখনি,নইলে কোন দিন নয়।

নৈষাদ এর ছবি

৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু হত্যার পর বাংলাদেশের ইতিহাস জানতে পারিনি।
- আগেরটাও তো ভালভাবে জানতে পারলাম না। অবজেক্টিভলি পুরো ব্যাপারটার বর্ণনা কোথায় পাই না। শুধু নিজেদের দৃষ্টিকোণ থেকে ছোট ছোট ঘটনার উপর আলোকপাত…।

পুঁথি পড়ো বুদ্ধিজীবীরা শেখ মুজিবের প্রশাসনিক দক্ষতা নিয়ে ভ্রু কুঁচকাতে শুরু করলো। এই বুদ্ধিজীবীরা একগ্লাস পানি ঢেলে খায়না, শুধু কে কী করতে পারলো না, কী করলে পারা যায় এইসব চর্বন করা অকর্মণ্য লোক…।
সহমত। সেই সময়ের প্রক্ষিতে বিভিন্ন উদ্যোগের সাফল্য এবং ব্যর্থতার একটা অবজেক্টিভ আলোচনা দরকার।

মাসকাওয়াথ আহসান এর ছবি

নৈষাদ, মূলধারা ৭১ বইটা বেশ ভালো, দেখতে পারেন,বা দেখে থাকবেন। তবে রাজনৈতিক মেরুকরণের বাইরে সচেতন নারীপুরুষ যাদের ঐসময় অন্তত বোঝার বয়স হয়েছিল তাদের বর্ণনা থেকে আসল ছবিটা একটু একটু করে বেরিয়ে আসতে থাকে, মুজিব যেটাকে চোরের খনি বলছেন,যেখানে তাজউদ্দীনের কাজের পরিবেশ নেই, ১৬ ডিসেম্বর যুদ্ধ না করেই একদল মুক্তিযোদ্ধাদের মিছিলে ঢুকে গেল,এই সুবিধাবাদী সিক্সটিনথ ডিভিশন ৭২-৭৫ মুক্তিযুদ্ধের সুফল কুড়িয়েছে, পরে যুদ্ধাপরাধীদের সঙ্গে ছেলে মেয়ের বিয়ে দিয়ে বহুদলীয় গণতান্ত্রিক সার্কাসের সুফল কুড়িয়েছে। এই চোরেরাই এখন রিমলেস চশমা আর ফতুয়া পরে টকশো করে বেড়াচ্ছে আর রাষ্ট্রীয় ভোজ সভায় বাঁধানো দাঁত বের করে হাসে। একটা এলিট চেকনাই এসেছে এদের বরাহ মুখমন্ডলে ।এরা আওয়ামী লীগ নয় বিএনপিও নয়, দুধের মাছি,এরা দুই দলে বসে বসে টেন্ডার সন্ত্রাসী চাঁদাবাজ গুয়ে মাছি তৈরী করে। আর প্রথমত রাজনৈতিক দলদুটো ব্যর্থ তা নিয়ে অনেক আলোচনা হয়েছে। তাই ৭২-৭৫ এ বোঝার বয়েস ছিল এমন আমজনতার ইন্টারভিউ করতে পারেন, বই-পুস্তক আর লিঙ্কালিঙ্কিতে এই ক্ষেত্রে সাফল্যের সম্ভাবনা বোধ হয় কম। ভালো থাকবেন।

যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এখনি,নইলে কোন দিন নয়।

যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এখনি,নইলে কোন দিন নয়।

ধুম্রজাল এর ছবি

ইতিহাস রচনা করা যে এত সহজ সেটা বুঝলাম আপনার লেখা পড়ে। তাও এত স্বল্প পরিসরে।
লিখতে পারেন। তাই বলে ইতিহাস নিজের মত করে লিখবেন?

নাকি ব্যালেন্স করছেন এর আগেরটা তারেকের চামচামি করসেন এইজন্য?

কালুরঘাট স্ক্যান্ডালের পরে কথা বার্তায় জিয়া সংযত ছিলেন, কিন্তু জুনিয়র কর্মকর্তাদের ইনিয়ে বিনিয়ে মুজিব হত্যায় গোএহেড দিয়েছিলেন,খুনীদের বয়ানে তার প্রামাণিক ফুটেজ ইউটিউবে আছে।- এর মাঝে নয় মাস একটা যুদ্ধের ইতিহাস আছে তা বেমালুম গিলে ফেললেন ?

তিনি আর্থিক সততার রোগী ছিলেন,অল্পাহারী ছিলেন খেতেন শুধু মিডিয়া এন্ড পাওয়ার ফুটেজ।- আর্থিক সততা আর অল্পাহার যে রোগ তা আলহামদুলিল্লাহ আপনার লেখা পড়ে আমরা আবাল পাঠকগন অবগত হলাম।

মুজিব বড়ো না তাজ এই আলোচনায় সময় নষ্ট করে কি লাভ?- এই অসুস্থ
আলোচনা টা কোথায় হইসে লিন্কটা দিবেন? একজন পিতাকে, একজন লিডারকে তারই সাবর্ডিনেটের সাথে তুলনা আর তা নিয়ে আলোচনা ফাঁদা - অসুস্থা

মাসকাওয়াথ আহসান এর ছবি

এই যে পট করে চামচামি শব্দটা ব্যবহার করেন,এটা জীনগত আমাদের বিকৃতি। যাদের দুটো হাত আছে তারা সতভাবে হয়ত আপনার আদর্শের নেতাদের মত মহান বা হাওয়ারাজ হতে পারেনা,তবে সত্য সুন্দর মঙ্গলময় জীবন অর্জন করতে পারে। আশা করছি আপনার পরের প্রজন্ম সাফল্য সম্পর্কে চামাচামি-ব্যালান্স এইসব টেন্ডার সন্ত্রাসীদের কয়েনেজ না শিখে নতুন ভাবনায় অভ্যস্ত হয়ে উঠবে। ভালো থাকবেন।

যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এখনি,নইলে কোন দিন নয়।

যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এখনি,নইলে কোন দিন নয়।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।