দ্বিধা

মাসুদ সজীব এর ছবি
লিখেছেন মাসুদ সজীব (তারিখ: মঙ্গল, ১২/০৮/২০১৪ - ৯:৩৬অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

অনেকক্ষন বসে আছি ওয়েটিং রুমে, এই ওয়েটিং রুমে কোন দেয়াল ঘড়ি নেই। আমি নিজেও হাত ঘড়ি ব্যবহার করিনা। পকেট থেকে মোবাইল বের করার কষ্ট করতে ইচ্ছে হলো না। বিরক্তিতে শীততাপ নিয়ন্ত্রিত ঘরে বসেও মেজাজ আর শীতল থাকছে না। আরে ব্যাটা, শুধু তোর সময়ের দাম আছে আর কারো সময়ে দাম নেই? তুই না সারাদিন এই এসি রুমে বসে কাটিয়ে দিবি আর আমাকে এই অফিস থেকে আবার যেতে হবে মতিঝিল ইসলামী ব্যাংকের হেড ব্রাঞ্চে, রাস্তার জ্যাম, মানুষের ধাক্কাধাক্কি সব সইতে হবে।

এই ভন্ড হাজী ম্যানেজারটার রুমে ঢুকলেই একগাল হেসে বলবে কি খবর দিপু সাহেব আপনাকে তো স্মার্ট লাগছে। বয়স তো আরো কমিয়ে ফেললেন। প্রতিবারি এই একি সম্বোধন, এইসব খাজুই্যরা আলাপে যাওয়ার কোন অর্থ হয় না। তাই নিরুপায় হাসি ছাড়া পাশ কাটানোর কোন পথ দেখিনা। একে দেখলেই মনের ভিতর গালির স্তুপ জমে যায় আমার। এদের সবগুলারে আমার চেনা আছে, সবগুলো মুখে আদর্শ আর নীতির ফুলঝুড়ি ঝরাবে কিন্তু বাস্তবে সবগুলো এক একটা অসততার কারখানা। ম্যানেজার শ্রেণীর উপর রাগ আমার বহুকালের। আমার প্রথম চাকরিটা ছাড়ার পেছনে এমন আরেকটা মেজর জেনারেল ম্যানাজের-ই কারণ। অবশ্য এখন সব ম্যানাজারকেই আমার একেক জন সামরিক জেনারেল মনে হয়। এদের বাহুতে শুধু জেনারেলদের মতো কোন পদচিন্থ বসানো থাকে না কিন্তু এরা সবাই আচার-আচরনে একেকজন জেনারেল।

এদেরকে কে দেখামাত্রই লজ্জা কিংবা সম্মানে কাতুমতু হয়ে সকাল বিকেল সালাম দিতে হবে, জ্বি স্যার জ্বি স্যার করতে হবে, তাদের সাথে হাসতে হবে, তাদের সব কথা সম্মতি দিতে হবে তবেই না আপনি প্রিয় পাত্র হয়ে উঠবেন এবং পুরষ্কার হিসেবে বছর শেষে পদোন্নতি কিংবা মোটা দাগের ইনক্রিমেন্ট পাবেন। অথচ প্রথম চাকরিতে এতসব বুঝে উঠতে পারিনি, তখনো শরীর থেকে ছাত্র জীবনের তেজটুকু হারিয়ে যায়নি। কিন্তু এখন বুঝি, জানি, আপোষ করেই চলার নাম-ই জীবন। আমার সহকর্মী মোর্শেদ ভাই অবশ্য এটা নিয়ে একটা দারুণ ব্যাখা দিয়েছিলো। ব্যাখাটা আমার অনেক পছন্দ হয়েছে, মানুষের দোষ দিয়ে কি লাভ, সৃষ্টিকর্তাও তো এমন"! তাকে ডাকলে তিনি খুশি হয়ে আপনার উপর রহমত দেন, আর না ডাকলে দেন না! তোষামদ সবাই পছন্দ করে দীপু ভাই, সৃষ্টিকর্তাকে কে তোষামদ করলে সেটি হয়ে যায় প্রার্থনা এই যা পার্থক্য।

মেজাজ খারাপ করা এই মধ্যপ্রহরেও মনে পড়ছে আজকের সকালটা শুরু হয়েছিলো মনে বেজায় এক আনন্দ নিয়ে। মিতা আজ তাদের গ্রামের বাড়িতে যাচ্ছে, থাকবে সেখানে পনের-বিশ দিন, আমার দায়িত্ব শুধু প্রতিদিন একবার-দুবার করে ফোন করে খোঁজ নেওয়া আর দিন বিশেক পরে তাকে নিতে শশুর বাড়িতে হাজিরা দেওয়া। উফ কি শান্তি! ভাবছেন শান্তির কারণ কয়েকদিন একা থাকতে পারবো, নিজের মতো থাকতে পারবো, বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে পারবো এইসব। আমার আনন্দের কারণ এগুলো না। গল্প উপন্যাসের নায়কদের মতো আমার এত ভালোমানুষি আদর্শ নেই। অবশ্য এই দেশে-এই সমাজে, ভালো মানুষ-খারাপ মানুষকে যেভাবে সংজ্ঞায়িত করা হয় সেটা আামর কাছে কখনো গ্রহণযোগ্য মনে হয়নি। আমি বাতিল করে দিয়েছি তাদের এইসব ভালোমানুষি সংজ্ঞা। যদিও সবকিছু বাতিল করে দিতে পারিনি, আপোসের চাদর আমার শরীরেও জড়াতে হয়েছে। আমাকেও আপোস-নামায় নাম লেখাতে হয়েছে। তবে ভিতর থেকে কখনো আপোসে জড়াইনি।

এই সমাজে, এই রাষ্ট্রে ভালো মানুষ বলতে যা বুঝায় আমি ঠিক তাই, অন্তত বাহির থেকে! খুব লাজুক, কথা বেশি বলি না, মদ-গাঁজা ছুঁয়ে দেখিনা। খুব পারিবারিক মানুষ, বউকে নিয়ে ছুটির দিনে ঘুরতে যাই, বিরক্তি লুকিয়ে রেখে হাসি মুখে মার্কেটে মার্কেটে ঘুরে বেড়াই, শশুর-শাশুড়ির খোঁজ খবর নেই, বউকে চমকে দিতে মাঝে মাঝে ফুচকা-আইসক্রিম ও নিয়ে বাসায় ফিরি। আদর্শ জামাই বলতে যা বুঝায় তার সব গুণ-ই আমি দেখানোর চেষ্টা করি। চারিদিকেই তাই আমার প্রশংসা ঝরে, অফিস-বাসা সবখানেই আমি ভীষন ভালো মানুষ। কিন্তু আসলে কি তাই? আমি মাঝে মাঝে ভাবি ভালো মানুষের সংজ্ঞা কি?

যে সমাজে আমি বাস করি তার কাছে ভালো কিংবা চরিত্রবান মানুষের একমাত্র সংজ্ঞা পর-নারীতে আসক্ত না থাকা। অর্থাৎ ঘুষ, দখল, দুর্নীতি কোন কিছুই অপরাধ না, এগুলো চরিত্রের বৈশিষ্ট্য না। সেই প্রথাগত-সমাজগত সংজ্ঞা মতে হয়তো আমি ভালো মানুষ কিন্তু আমার কাছে আমি ভালো মানুষ না। কারণ মিছেমিছি আপোসের চাদরে জড়িয়ে প্রতিনিয়ত নিজেক ভালো মানুষের অভিনয় করে যেতে হচ্ছে। আমার যে মামা একদা সচিব ছিলেন তাহার অবৈধ কোটি টাকার বাড়িতে থাকতে আমার মামির কোন কষ্ট কিংবা অনুতাপ হয়নি, নিত্য নতুন গাড়ি করে চড়ে বেড়াতে তার কোনদিন ঘৃণা হয়নি, বরং গর্বে পুরো শরীর জ্বলমল হয়ে থাকতো। বছর শেষে গ্রামে গিয়ে অবৈধ টাকায় গরীব দু:স্থ মানুষকে শ-খানিক শাড়ি আর লুঙ্গি দান করতেন। সেই দান যতটা না ছিলো মানুষের প্রতি ভালোবাসার তারচেয়ে বেশি ছিলো নিজের আর্থিক ক্ষমতা জাহির করার। কিন্তু অফিসের কাজে একবার কক্সবাজার গিয়ে কোন এক উর্বশীর সাথে মামার অবকাশ যাপনের খবর যখন এলো তখনি আকাশ থেকে নক্ষত্র যেমন খসে পড়ে তেমনি মামাও খসে পড়লো। সবাই চারদিক থেকে ছি: ছি: করতে লাগলো। মনে হলো এই প্রথম স্বর্গ থেকে মামার পতন হলো! মামা এতদিন ঘুষ খেয়ে, দুর্নীতি করেও স্বর্গের দেবতা ছিলেন আর একটি নারীর স্পর্শে হয়ে গেছেন স্বর্গচ্যূত শয়তান!

শৈশব আর যৌবনে আমি এসব ভন্ডামিতে ভরা ভালো-খারাপের সংজ্ঞা শিখেছি। পর নারীতে আসক্তি আমার কাছে কখনো অসততার একমাত্র লক্ষন মনে হয়নি। বরং মনে হয়েছে সেটাই স্বাভাবিক। মানুষ হয়তো কিছু নিয়ম তৈরি করে নিজেকে শৃঙ্খলায়িত করার চেষ্টা করেছে। কিন্তু মনোজগতে সেই শৃঙ্খল আনায়ন সম্ভব হয়নি। তাই প্রত্যেক পুরুষ জীবনে অসংখ্য বার কল্পনার রাজ্যে একাধিক নারীর সাথে মধুর সময় কাটায়। প্রত্যেক নারীও হয়তো তাই। কিন্তু বাস্তবে সমাজ-রাষ্ট্র নামক শক্তিমান যন্ত্রগুলোর মাঝে বাস করে তাদের তৈরি এইসব নিয়ম ভাঙ্গা সম্ভব নহে। আমিও ভাঙ্গতে পারিনি সেই নিয়ম।

এতসব ভাবনা যখন মাথার ভিতর সুতা ছেড়া ঘুড়ির মতো দিক-বেদিক উড়তে লাগলো, তখনি আমার ডাক পড়লো জেনারেল স্যারের রুমে। রুমে ঢুকেই সালাম দেওয়ার আগেই জেনারেল তার বিখ্যাত সেই হাসি দিয়ে বললো দীপু সাহেব যে, আসেন বসেন। আজ একটু ব্যস্ত বেশি ছিলাম, আপনি বোধহয় এসেছেন কিছুক্ষন হলো ?
-না স্যার, বেশিক্ষন হয়নি । এই ফাইলটাতে গত তিনমাসের আমাদের কোম্পানিতে আসা সকল গ্রাহকের ঠিকানা, ফোন নাম্বার এবং খরচ সহ অগ্রিম জমাকৃত টাকার হিসেব দেওয়া হয়েছে।
-ম্যাপ দিয়েছেন?
-জ্বি সার। ম্যাপে কে কোন অংশ, কতটুকু নিতে আগ্রহী তাও দেখানো হয়েছে।
- সর্বমোট কয়টা প্লট দেখিয়েছেন?
-৫৫টি স্যার।
-হুম, গুড। এখন যেটা করবেন সেটি হলো আমরা যে জমি আমাদের বলে বিক্রির অগ্রীম টাকা নিয়েছি সেখানে কয়েকটা সাইনবোর্ড লাগিয়ে দিবেন।
-সেটা করা হয়েছে স্যার। কিন্তু সেখানে কিছু সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে।
-কি সমস্যা? আপনাকে যে স্থানীয় এমপি আকবর ভাইয়ের সাথে দেখা করতে বলেছিলাম, দেখা করেন নি ?
-করেছি স্যার। উনি উনার এক চাচাতো ভাই রয়েল সাহেবকে আমার সাথে কথা বলতে বলেছিলেন। আমি কথা বলেছি, উনি সব ব্যবস্থা করে দিয়েছেন কিন্তু স্যার টাকা টা একটু বেশি নিয়েছেন।
-তো আমাকে ফোন করবেন না ? কত দিয়েছেন”?
-দশ লক্ষ স্যার।
-আমার সাথে তো এমপি সাহেবের কথা হয়েছিলো আট লক্ষ টাকা ?
-আপনি স্যার দেশের বাইরে ছিলেন বলে জানাতে পারিনি, ডিরেক্টর স্যারকে জানিয়েছি। উনি বলেছেন সমস্যা নেই দিয়ে দাও। এছাড়া জমির মালিকদের বেশিরভাগ স্যার বিপক্ষ দলের রাজনীতি করে। তাদেরকে বশে আনতে স্যার টাকা বেশি খরচ হয়েছে।
-নকল দলিল করেছেন সবগুলোর?
-জ্বি স্যার। মূল জমির নকল বের করে সবগুলোর নকল দলিল করে দিয়েছেন রয়েল সাহেব। মোট বারটা দলিলে ২৩০ শতক জমি স্যার।
-গুড। আমার সালামি টা কই?
- পকেট থেকে খামে ভরা একটা ভান্ডিল তার টেবিলের উপর রেখে বললাম স্যার আজ তাহলে উঠি।
-ওকে দিপু সাহেব, কোন সমস্যা হলে বলবেন। আর কি যেন নাম বললেন আকবর ভাইয়ের চাচাতো ভাইয়ের?
-রয়েল স্যার।
-ও হ্যাঁ, রয়েল সাহবেকে বলবেন আমার অফিসে একটু আসতে আর আপনিও যোগাযোগ রাখবেন। যত তাড়াতাড়ি পারেন জমিগুলো আমাদের কব্জায় নিয়ে আসতে হবে।
-ওকে স্যার।

সালাম দিয়ে বেরিয়ে পড়লাম দোজখ খানা থেকে। জেল থেকে বের হওয়ার পর যেমন শান্তি অনুভূত হয় আমারো ঠিক তেমনি মুক্ত স্বাধীন লাগছে নিজেকে। যদিও জেলে যাইনি কোনদিন তারপরও মনে হয় জেল থেকে মুক্তির আনন্দ বোধহয় এমনি হয়। প্রতি মাসে একবার হাজী সাহেবের এই জেলখানায় হাজিরা দিতে অসহ্য লাগে। সূর্য ঠিক মাথার উপর এসে তার সবটুকু উত্তাপ ঢেলে দিচ্ছে তবু সেই তাপটুকু ভালো লাগছে সেই ভন্ডামিতে ভরা শীতলতা থেকে। একটা সিগারেট ধরাতে চায়ের দোকানে ঢুকা যায়। ঢাকা শহরে এই এক সুবিধা সব জায়গাতেই চা-সিগারেটের ঝুপড়ি আছে। চায়ের একটা ঝুপড়ি তে ঢুকেই সিগারেট ধরাতেই মনে পড়লো মূল কাজটাই তো করিনি এখনো। সকাল বেলা অফিসে ঢুকে ঠিক মতো খেয়ালও করিনি টুম্পা্ এসেছে কিনা! ঘড়িতে এখন এগারটা চল্লিশ, ব্যাংকের কাজ সারতে সারতে হয়তো একটা বাজবে। তারপর অফিসে গিয়ে দেখা করবো নাকি এক্ষুনি একটা ফোন দিবো টুম্পাকে। মুক্তির আনন্দে ফোন দিয়ে দিলাম টু্ম্পাকে।
- আপনি এতক্ষনে ফোন দিলেন?
- জেনারেল ইয়াইয়ার সাথে ছিলাম এতক্ষন।
- রিনঝিন একটা হাসির শব্দ ভেসে আসলো কর্ণকুটিরে। এই মেয়েটার হাসি অদ্ভুত সুন্দর। হাসির তাল কেটে যাওয়ার আগেই বললো আমরা যাচ্ছি কখন?
-রাত আটটার বাসে। তুমি রেডি হয়ে এসেছো তো ?
- না, ব্যাগ গুছিয়ে রেখেছি, ম্যাসে গিয়ে নিয়ে নিবো।
-তোমাদের নিয়ে এই এক ঝামেলা, একটা না একটা লেজ রেখেই দিবা।
- আপনি শুধু শুধু রাগছেন, এটা কোন ঝামেলা না। বরং ব্যাগ নিয়ে অফিসে আসলে অনেক প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হবে।
- ওকে, আমি লাঞ্চ করে অফিসে আসছি। অফিস শেষে তুমি ব্যাগ নিয়ে বেলী রোড়ে চলে এসো।
-বেলী রোড়ে কেন? ব্যাগ নিয়ে আমি বেলী রোড়ে আসতে পারবো না।
- আরে বাবা, বেলী রোড়ে ক্যাফেটেরিয়াতে সন্ধ্যার পর কিছুক্ষন বসে তারপর গাড়িতে উঠবো আর কি।
-ওকে, রাখছি এখন।

০২
টুম্পা আমাদের অফিসে জয়েন করেছে বছর খানিক হলো। আমার এক বন্ধুর সাবেক গালফ্রেন্ড ছিলো টুম্পা। ওর চাকরি টা হয়েছে আমার-ই মাধ্যমে। অবশ্য আমি তেমন কিছু্ই করিনি, শুধু ওর সিভিটা জমা দিয়েছি। যে পরিমান রুপসী টুম্পা তাতে চাকরি যে হবে সেই ব্যাপারে নিশ্চিত ছিলাম। হয়েছেও তাই, হাজি সাহেবদের চোখে লেগে গেল, ফুলের টবে রাখা কাগজের ফুলের চেয়ে রূপসী কোন তরুনী যে অধিক আকর্ষনীয় তা এরা ভালোই জানে। শুধু হাজী সাহেবদের নয় চোখে অবশ্য এরপর সবার-ই লেগেছে, টুম্পা অফিসে জয়েন করার পর সব বিবাহিতরা আবিষ্কার করলো তারা আসলে ভীষন অসুখী। তাদেরকে একমাত্র সুখের সন্ধান দিতে পারে টুম্পা! আর এরপর থেকেই বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনায় মৌমাছির মত টুম্পার পেছন পেছন লেগে গেল সবাই। কিন্তু টুম্পার মাঝে কৃতজ্ঞতা বোধ ছিলো বলেই তার সবটুকু অকৃত্রিম হাসি আমার জন্যে রেখে দিতো। আমি বিবাহিত সেটা ও জানে, তারপরও একদিন বলে বসলো দীপু ভাই আপনাকে আমার ভালো লাগে। তারপরের গল্প খুবি সাদামাটা যেমনটা হয়ে থাকে অফিসের ভালোলাগাতে। ভালো লাগাটাকে ভালোবাসায় নিয়ে যাওয়ার আগেই আমি বলে দিয়েছি, তুমি যদি শুধু সময়টাকে উপভোগ করতে চাও তাহলে আমার সাথে মিশতে পারো কিন্তু কোন স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে নয়। আমি কারো স্বপ্নের কেন্দ্রে থাকতে চাইনা, অন্যের সুখ স্বপ্ন আমাকে ক্লান্ত করে দেয়। আমি ক্লান্ত হতে চাই না । টুম্পা আমাকে অবাক করে দিয়েই বললো দিপু ভাই- আমিও মিছেমিছি স্বপ্ন নিয়ে কানামাছি খেলতে চাইনা , জোর করে একটা সম্পর্ককে কখনো টেনে নিতে আমিও পক্ষপাতী না। তারপর ঘড়ির কাঁটা ঘুরে সময় গড়িয়েছে অনেক, সময়ের সাথে পাল্লা গিয়ে টুম্পার সাথে অসংজ্ঞায়িত সেই সম্পর্ক শুধু গভীর থেকে গভীরতর হয়েছে।

টুম্পা আসার পর এই জীবনকে প্রথম বার আমার কাছে জীবন্ত মনে হয়েছে। যেমন জীবন আমি চেয়েছিলাম ঠিক তেমন একটাই জীবন আমাকে দিয়েছে টুম্পা। জীবনে এই প্রথম কারও সাথে জড়িয়েছি কোনরকম প্রতিশ্রুতি আর ভালোবাসা নামক মিথ্যে প্রলাপ ছাড়া। ভালোবাসা কে এখন আমার মিথ্যে মন ভুলানো প্রলাপ-ই মনে হয়। টুম্পার প্রতি আমার আকর্ষনের প্রধান কারণ সবকিছুকে তার স্বাভবিক ভাবে নেওয়ার ক্ষমতা। কোন প্রথাগত বিশ্বাসে ও বিশ্বাসী না। সময় আর জীবনকে সে উপভোগ করতে শিখেছে। একদিন তাকে প্রশ্ন করে বসলাম.
-আচ্ছা টুম্পা তুমি কি বিয়ে করে একদিন সংসারী হবা?
- স্মিত হেসে টুম্পা উত্তর দিলো সারাজীবন কি আপনার সাথে কাটাতে হবে? আপনাকে তো আমার কিছু দিন পর ভালো নাও লাগতে পারে?
- আমি সেটা বলিনি, একদিন তো স্থির হতে হবে নাকি?
-আপনার কি মনে হয় আমি এখন অস্থির। তবে আপনি যেটা বুঝাতে চাইছেন সেটা বুঝেছি।
- স্বামী-সংসার নিয়ে স্বপ্ন দেখো না?
-না, এইসব স্বপ্ন ছেড়ে দিয়েছি বহুকাল আগে, তবে বিয়ে হয়তো করবো। একটা ফুটফুটে বাচ্চার মা হওয়ার স্বপ্ন আমারো আছে।
- স্বপ্ন বিসর্জন দিলে কেন? আর স্বপ্ন বিসর্জন যদি দিয়েই থাকো তাহলে আবার সংসার-বা্চ্চার ভাবনায় আচ্ছন্ন হচ্ছো কেন?
- বিয়ে তো মানুষ শুধু ভালোবাসা পেতে করে না। বিয়ের পেছনে অনেকগুলো কারণ আছে, যেগুলো আপনি ভালো করেই জানেন। সেই কারণগুলো থেকে ভালোবাসার স্বপ্নকে বিসর্জন দিয়েছি, কিন্তু ফুটফুটে বাবুর স্বপ্ন বিসর্জন দেইনি, দিতে পারিনি।
-ভালোবাসার স্বপ্নই বা বিসর্জন দিলে কেন?
- আপনি তো জানেন, সেইসব কথা আগেও বলেছি একদিন। ভালোবাসা-ভালোবাসা বলে যারা এসেছিলো কাছে তাদের সবাই চেয়েছে নরম এই মাংসল শরীরটাকে উপভোগ করতে। চেয়েছে আমাকে তাদের একটা উপনিবেশ রাজ্য বানাতে। যেখানে তিনারাই রাজা, আর আমি হয়ে থাকবো হুকুম তামিল করা গরীব প্রজা।
- কি বলো একজনও আসেনি শুধু ভালোবাসা দিতে?
- হা হা, ভালোবাসা সেটা আবার কেমন দীপু ভাই? কতগুলো কমিটমেন্ট দেওয়া আর গোপনে কিংবা প্রকাশ্যে সেই কমিটমেন্টগুলো ভেঙ্গে সাধু সেজে থাকা?
- আমি নিজেও জানিনা ঠিক কাকে ভালোবাসা বলে? তবে এইটুকু জানি আমরা যাকে ভালোবাসা বলি সেটি চিরঞ্জীব কিছু নয়। সেটিও একদিন পুরানো হয়, মন ওঠে যায়।
- আমার তেমন মনে হয়নি, আমার মনে হয়েছে ভালোবাসা হলে দুজন মানুষের শারীরিক ভাবে কাছে আসার অভিনয়, যাকে আমরা প্রেম বলি। কবি সাহিত্যকরা এই মিথ্যেটাকে মহিমান্বিত করে স্বর্গের সাথে তুলনা করেছেন।
-এটা ঠিক, প্রেম ভালোবাসাতে স্বর্গীয় কিছু নেই। আসলে স্বর্গ বলে কিছু আছে সেটাও আমি বিশ্বাস করিনা।

আমাদের আলাপ হতো এমনি, অফিস শেষে বেলী রোড়ে প্রায়ই আমি আর টুম্পা আড্ডা দিতাম। মঞ্চ নাটক ওর খুব প্রিয়। আমাকে ততটা না টানলেও একসময় আমিও সেই মঞ্চ নাটকের প্রেমে পড়ে গেলাম তার অসীম আগ্রহের কারনে। টুম্পার যে বিষয়গুলো আমাকে মুগ্ধ করেছে তার মাঝে অন্যতম প্রকৃতির প্রতি তার ভালোবাসা আর মমত্ব এবং সাহিত্যপ্রেম।কত অজনা কবিদের নাম আর তাদের কবিতা শুনেছি ওর কাছে থেকে। আবৃত্তি করতে পারে চমৎকার, আমি মুগ্ধ শ্রোতা হয়ে সবসময় ওর কবিতা আবৃত্তি শুনি। কোন কোন সন্ধ্যা ওর কবিতার বিষন্নতায় ডুবে যেত গাঢ় অন্ধকারে। চারিদিকে বেজে উঠতো ভাঙ্গনের সুর।

বাড়ছে দূরত্ব ঘরে বাইরে, বাড়ছে সংশয় যত্নে রাখা বিশ্বাসে
বাড়ছে অভিমান আশা ভরসার কেন্দ্রস্থলে, বাড়ছে অবিশ্বাস চারদেয়ালে।
বাড়ছে কষ্ট যোগ বিয়োগের বর্তমানে, বাড়ছে দীর্ঘশ্বাস স্মৃতির বাগানে,
বাড়ছে নীরবতা নিজেকে ঘিরে, বাড়ছে শুণ্যতা ঘিরে থাকা মলিন হাসিতে।
কমছে সময় পথ চলাতে, কমছে আস্থা চেনা জানা জগৎ ঘিরে।

কমছে ঘৃণা স্বার্থন্বেষী মানুষ চিনে, কমছে ভালোবাসা বুকের পাঁজরে,
কমছে উৎসাহ সকল কাজে, কমছে আনন্দ ছড়িয়ে থাকা সবকিছুতে।
কমছে প্রেরণা সৃষ্টি সুখে, কমছে উদ্দীপনা নতুন করে জাগার আহ্বানে।

জীবন এখন নিথর চোখে দূর আকশে হারিয়ে যাওয়া মেঘের মতন
অশ্রুবিহীন অন্ধকারে ডুবে যায় যখন তখন।

এমন অসংখ্য ভালোলাগা কবিতার আমি মুগ্ধ শ্রোতা হতাম। ও চিপস,বাদাম যাই খেতো কোন কিছু রাস্তায় ছুড়ে ফেলতো না। উপযুক্ত স্থান না পেলে সেগুলো রেখে দিতো হাতরে মাঝে কিংবা ওর ব্যাগের মাঝে। আমি অবাক হয়ে ভাবি এই মেয়েটা এতটা অনন্য হলো কি করে? এই বদ্ধ সমাজে সে কিরে এমন ভিন্নরূপে বেড়ে উঠলো? সমুদ্র, পাহাড় আর গ্রাম তার খুবি প্রিয়। গত ছয়মাসে সে একবারও আমাকে নিয়ে মার্কেটে যায়নি, কিছু কিনে দেওয়ার আবদার করেনি। শুধু কথা দিতে হয়েছে একদিন তাকে নিয়ে সমুদ্র দেখাতে হবে, তাকে পাহাড় আর মেঘের কাছে নিয়ে যেতে হবে, ভরা বর্ষায় নৌকায় করে নিয়ে যেতে দূরের কোন গ্রামে। তার চাওয়ার কিছুই পূরণ করা হয়নি আমার। খাঁচায় বন্দি পাখির মতোই ছটপট করতে হয়েছে আমাকে নিজের অপরাগতার জন্যে, কিন্তু মুক্তি পাইনি শৃঙ্খলায়িত জীবনধারা থেকে। মিতাকে রেখে ঢাকার বাইরে রাত কাটানো সম্ভব ছিলো না আমার পক্ষে। ঢাকা শহরে নদী নেই, প্রকৃতি নেই, পাহাড়-সমুদ্র কিছুই নেই। আছে শুধু ইট-বালু সিমেন্টের কতগুলো দালান আর তাতে প্রাণহীন কতগুলো মানুষপাল। গতকাল যখন দেখলাম মিতার ছোট ভাই রাসেল এসেছে মিতাকে নিয়ে যেতে তখন আনন্দে আমার ভিতরটা নেঁচে ওঠলো। তারপরও সেই চিরচেনা দক্ষ অভিনয় দিয়েই বললাম মায়ের শরীর ভালো হলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব চলে আসবে, তোমাকে ছাড়া একা একা অনেক কষ্ট করে থাকতে হবে। আর যদি মায়ের শরীর খুব খারাপ হয় তাহলে ফোন করবে আমি ছুটি নিয়ে যাবো।

আজ আমাদের সেই স্বপ্ন পূরনের দিন, সমুদ্র ছুঁবো টুম্পার স্পর্শে। ওর গাঢ় চুম্বনগুলো লেপ্টে থাকবে শরীর জুড়ে। নতুন করে চেনা হবে অচেনা শরীরটাকে, একান্ত নিবিড় করেই পাওয়া হবে টুম্পাকে। প্রথম যৌবনের মতই ভিতরে একটা উত্তেজনা কাজ করছে। সেই উত্তেজনাকে রাতের জন্যে জমা রেখে চা-সিগারেটের টাকা দিয়ে নেমে পড়লাম মূল সড়কে। মালিবাগ থেকে এই সময়ে বাসে উঠা সম্ভব না। আজ আমার মুক্তির দিন, আজ আর লোকাল বাসের ধাক্কাধাক্কিতে নিজেকে সামিল করবো না। সিএনজি ডেকে নিলাম, মতিঝিলে নেমেই টুম্পাকে আবার ফোন দিয়ে বললাম লাঞ্চ নিয়ে আসবো তোমার জন্যে?
-আপনি কি পাগল হয়ে গেছেন? আমি লাঞ্চ এনেছি সাথে করে।
- ও আচ্ছা, আমি মতিঝিল এখন, আসছি ঘন্টাখানিকের মাঝে।

ইসলামি হালাল ব্যাংকিং এর হালাল ম্যানাজারকে চেকগুলো দিতেই লম্বা একটা হাসি দিয়ে বললেন বসেন চা খান। টাকা কি একাই নিয়ে যাবেন?
-না, এত টাকা নিয়ে যাওয়া মানে জীবনকে হালাল চুরির নিচে রেখে দেওয়া।
- আপনি ভালোই রসিকতা করতে পারেন, ওকে আমাদের গাড়ি করেই লোক দিয়ে আপনাদের অফিসে পাঠিয়ে দিবো। আপনাকে মরতে হবে না।
-ধন্যবাদ, পরের টাকার জেন্য মরার ইচ্ছে নেই।
- চলুন নামাজটা পড়ে আসি।
- এই জেনারেলও জানে আমি নামাজ পড়ি না, এর আগেও একবার তাকে বলেছি বিষয়টা। কিন্তু এই হালাল লোকগুলো বোধহয় এইসব ভুলে যায়। তাকে স্মরণ করিয়ে দিতেই বললাম, আমি নামাজ পড়িনা স্যার।
শ্রাবণ মাসের আকাশ যেমন হুট করে গাঢ় অন্ধকারে ডুবে যায় এই হালাল ম্যানেজারেরও চেহারা হঠাৎ অন্ধকারে ঢেকে গেল। মনে হল এত বড় অদ্ভুত কথা সে তার জীবনে আর শুনে নাই। একে আর কথা বলার সুযোগ দেওয়া যাবে না, সুযোগ দিলেই সে বয়ান শুরু করবে। বয়ান শুনতে শুনতে জীবন ক্লান্ত হয়ে গেছে। আমি উঠে বললাম, স্যার আমাকে একটু বের হতে হবে। পাশেই একটা বন্ধুর অফিস দেখা করেই আসছি। আপনি নামাজ পড়ে আসতে আসতে আমি চলে আসবো।

ব্যাংক থেকে বের হয়েই চায়ের তেষ্টা পেল। আবারো চায়ের দোকানে ঢু দিলাম। আমার সব সময় মনে হয় চা বোধহয় নি:সঙ্গতার সবচেয়ে বড় বন্ধু। পেটও খালি, কিছু কি খেয়ে নিবো? পাশেই রব্বানী বিরানী হাউজ। নি:সঙ্গতার বন্ধুকে আপতত উপেক্ষিত রেখেই বিরানী হাউজে চলে আসলাম। যতটা সু-বাতাস ছড়িয়ে কাছে ডেকেছে খাওয়ার পর ততটাই বিরক্তি জন্ম দিলো। শুধু ওইটুকু সু-ঘ্রানই ছিলো তাতে। অ-স্বাদ হলেও শেষ করতে হয়েছে পেটের শূণ্যস্থান পূরণে। আবারো হালাল ব্যাংকে ঢুকেই দেখলাম সব তৈরি। বস্তায় টাকা, টাকার পাহারাদার সবাই প্রস্তুত শুধু জেনারেলের আদেশের অপেক্ষা। আমাকে দেখা মাত্রই সেই হুকুম জারি করলেন। লম্বা একটা সালাম দিয়ে বিদায় নিলাম।

০৩

গাড়ি ছেড়েছে মিনিট বিশ হলো।টুম্পা আমার বুকে সবটুকু আস্থা রেখে হয়তো ঘুমিয়ে পড়েছে। আমিও বেশ ক্লান্ত , সারাদিন অনেক দৌড়াদৌড়ি করতে হয়েছে। কিন্তু ঘুমাতে ইচ্ছে করছে না, গাড়িতে উঠলে আমি জোর করে হলেও জেগে থাকার চেষ্টা করি। গাড়ির গতির সাথে আমার মনের মাঝে খেলা করে অসংখ্য এলোমেলো ভাবনা, জেগে উঠে ঝাপসা হয়ে যাওয়া অতীত। এই সময়টুকু আমার ভীষন প্রিয়। আমি যদি লেখক হতাম তাহলে হয়তো অনেক কিছুই লিখে ফেলতে পারতাম। জীবন বাবু কিংবা বিভূতির মতো না হোক অন্তত আমার মতো করেই লেখতে পারতাম। অনেক আগে টুকটাক কবিতা লিখতাম, ডায়েরীও লেখার অভ্যেস ছিলো একটা সময়। আপোষের শৃঙ্খলায়িত সেচ্ছায় কারাবাসের পর সেসব এখন সুদূরতম অতীত।

আজ আর সুদূর অতীতটুকু ভাসছে না মনের ক্যানভাসে। সদ্য বিদায় নেওয়া আজ বিকেলের সতেজ স্মৃতিগুলোই ভাসছে সেখানে। বিকেলের পরের সময়টুকু অনিন্দ্য সুন্দরে ভরে ওঠেছিলো। মনে হয়েছিলো ইস! এ গাঢ় সন্ধ্যাটুকু যদি আরো প্রলম্বিত হতো তাহলে কি এমন ক্ষতি হতো? অন্য পাঁচটা সন্ধ্যার মতোই এই বিশেষত্বহীন সন্ধ্যাটুকু শুধু টুম্পার স্পর্শে অনন্য হয়ে উঠেছিলো। আচ্ছা এর নাম কি? এই যে আমার ভিতর যে অনুভূতি জন্মাচ্ছে এর কি নাম দেওয়া যায়? এটা তো মেকি নয়, শুধু একটা শরীরকে নিজের করে পেতে অভিনয় করা নয়? এটাকে যদি ভালোবাসাই বলি তাহলে এর আবেদনও কি একদিন ফুরিয়ে যাবে? এখানেও কি ভালোলাগা সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে কমতে থাকবে?

ক্লান্তিতে কখন যে চোখের আলো নিভে গিয়েছিলো বুঝে উঠিনি। টুম্পার ডাকে ঘুম ভা্ঙলো, বাস দাঁড়িয়ে আছে। রাত বারটা দশ, আর এতক্ষনে কুমিল্লা আসলাম। টুম্পাকে বললাম চলো খেয়ে নেই। ঘুম জড়ানো চোখে নামলাম বাস থেকে। বাস থেকে নেমেই ভূত দেখলাম বোধহয়। বন্ধু শাকিল দাঁড়িয়ে আছে ঢাকাগামী একটা বাসের সামনের দিকে। শাকিল খুব সম্ভব আমাকে দেখিনি, তাই আবার দৌড় দিয়ে ফিরলাম গাড়িতে। টুম্পা অবাক হয়ে বললো কি হলো?
-আমার একটা কাছের বন্ধু শাকিল নাম, সেও দাঁড়িয়ে আছে হোটেলের সামনে। তোমাকে আমাকে একসাথে দেখলে বিপদ হয়ে যাবে।
-হুম। আপনি থাকেন, আমি তাহলে প্যাকেটে করে খাওয়া নিয়ে আসি।
-ওকে, দেরি করো না।

টুম্পা যাওয়ার পর জানালা দিয়ে দেখার চেষ্টা করলাম শাকিলকে দেখা যায় কিনা। না দেখা যাচ্ছে না, বোধহয় গাড়িতে ওঠে গেছে। ভাগ্যিস দেখেনি, দেখলে কি বিপদটাই না ঘটতো! টুম্পা দুটো প্যাকেট হাতে আসছে ধীরলয়ে। এই আবছা আলো আধাঁরে টুম্পাকে কি অপরূপ লাগছে। ওর দুলে দুলে হেঁটে আসা দেখে মনে হচ্ছিলো সমুদ্রের এক একটি ঢেউ পায়ের কাছ মুগ্ধতা নিয়ে আছড়ে পড়ছিলো, আর শরীরে শীতলতার অনুভূতি ছড়িয়ে আবার দূরে কোথাও মিশে যাচ্ছিলো। আচ্ছা মিতার সাথে আগে পরিচয় না হলে কি আমি টুম্পাকে সারাজীবনের জন্যে পেতে চাইতাম? মাথাটা এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে, ছেলেমানুষি গুলো কি আবার ফিরে আসছে? না আমিতো এইসব ভালোবাসা-বাসিতে বিশ্বাসী না। তাহলে কেন এই চিন্তাটা আসলে মাথায়? মানুষের সব বিশ্বাস কিংবা বোধ কি তাহলে পরিবর্তন হয়? টুম্পা এসে যখন ডাক দিলো কি এত ভাবছেন, তখন সংশয়ের গভীর সমুদ্র থেকে মুক্তি মিললো।

খাওয়া শেষ করে টুম্পার হাতে প্যাকেট গুলো তুলে দিতে হলো। এই মেয়েটা পারেও, আবার বাস থেকে নেমে ময়লা গুলো ছোট্র ডাসবিনেই ফেলে দিয়ে তারপর ফিরলো। অনেক বাস যাত্রী টুম্পাকে দেখছে বিস্ময় নিয়ে। কিন্তু এইসব বিস্ময় এদের ঘন্টা খানিক পরেই কেটে যাবে। খাওয়ার উচ্ছিষ্টগুলো আবার জানালা দিয়ে ছুঁড়ে ফেলবে। বাস আবার চলতে শুরু করলো। জানালার কাঁচটুকু অল্পকিছু খোলা রেখেছে টুম্পা, আর সেই খোলা জায়গাটুকু দিয়ে আসা নিস্তব্ধ রাতে স্নিগ্ধ বাতাসটুকু ওর চুলকে এলোমেলো করে দিয়ে যাচ্ছে। কিছু চুল ভাসিয়ে নিয়ে আসছে আমার মুখে, আমি সেই সুবাতাসে বিভোর হয়ে ডুবে যাচ্ছি ভালোলাগার অতলে। টুম্পা বোধহয় ঘুমিয়ে গেছে। জানালাটা বন্ধ করে দিলাম, ও হয়তো এখন গাঢ় ঘুমের দেশে। কোন সম্পর্কহীন একটা মানুষের বুকে সে ঘুমাচ্ছে পৃথিবীর সবচেয়ে নিশ্চিন্ত মনে। মনে পড়লো, আজ মিতাকে একবারও ফোন দেওয়া হয়নি, সকালেই ফোন দিতে হবে।

গাড়িতে চলার সময় নিজের সাথে নিজের কথা বলা আমার পুরানো অভ্যেস। আচ্ছা এই যে টুম্পার সাথে আমি জড়িয়েছি নিজেকে এটা কি কোন পাপ? আমি কি মিতার বিশ্বাসের সাথে প্রতারণা করছি না? উত্তর আসলো ”না” এটা পাপ না। একে পাপ বলে না। তুমি তোমার কমিটমেন্ট রাখছো, মিতাকে তো ছেড়ে যাচ্ছো না।

-তা ছাড়ছি না, কিন্তু এই যে ওকে ফাঁকি দিয়ে অন্য একটা মেয়ের সাথে রাত কাটাচ্ছি? এটা কি বিশ্বাসের সাথে প্রতারণা নয়?

-তোমারা আর তোমাদের সমাজ শরীরটাকে পাপের আখড়া ভেবেছে বলেই তোমার পাপবোধ হচ্ছে। শরীর কোন পাপের স্থান না, দুটো মানুষ কোন সম্পর্ক ছাড়াও শারীরিকভাবে মিলিত হতে পারে নিজেদের ইচ্ছে অনুসারে। আর প্রতারণা শুধু শরীর দিয়ে হয় না। ঘুষ খাওয়া, দুর্নিতি করাও প্রতারণা। তুমিতো ঘুষ খাওনা, প্রতারণা করো না।

-না, তা ঠিক আছে কিন্তু এটাতো ঠিক পাপবোধ ঠিক করে দেয় সমাজ। যে সমাজে বাস করবো সেই সমাজের নিয়ম না মানাই তো পাপ, তাই না?

-তুমি নিজেই বিভ্রান্ত হয়ে যাচ্ছো একটা মেয়ের সাথে রাত কাটাতে? এই একটা রাত তোমার সমস্ত প্রথাবিরোধী চেতনাকে গ্রাস করে নিচ্ছে। শুনো "সমাজ কোন স্থবির কাঠামো নয়, সময়ের সাথে এর ক্রমপরিবর্তন ঘটে" । সাহসী মানুষদেরকেই এগিয়ে আসতে হয় পুরাতন প্রথাগুলোকে বাতিল করে নতুন কাঠামোতে সমাজকে সাজাতে।

ভোর হয়ে আসছে, নিজের সাথে কথা বলা বন্ধ রাখলাম। কক্সবাজারের কাছাকাছি চলে এসেছি মনে হচ্ছে, ফোন বেজে উঠলো। এই সাত সকালে কে ফোন দিলো, বিরক্তিতে ফোন হাতে নিয়ে দেখি মিতার ফোন! এই সাত-সকালে মিতা কেন ফোন করলো? প্রথমবার ফোন ধরলাম না, দেখি আরেকবার করে কিনা? আবারো মিতার নাম ভেসে উঠলো মোবাইলের পর্দায়। ঘুম জড়ানো কন্ঠে বললাম, হ্যালো-

-কোন কথা শুনা যাচ্ছে না, শুধু একটা গোঙানি শুনতে পাচ্ছি। বুকটা ধক করে উঠলো। এরপর কান্না জড়ানো কন্ঠে মিতা বললো দীপ মা আর নেই!

স্তব্দ হয়ে গেলাম। কে যেন কন্ঠ রোধ করে আছে আমার। কি বলবো ঠিক বুঝে উঠতে পারছি না, তারপরও নিজের সাথ যুদ্ধ করে ঠিক কত সময় পর বলতে পারবো না মিতাকে বললাম তুমি শান্ত থাকো প্লিজ, আমি আসছি । টুম্পা বিস্ময়ভরা দৃষ্টিতে থাকিয়ে থাকলো আমার দিকে!

তারও মিনিট বিশ পর গাড়ি থামলো কক্সবাজার বাস-স্ট্যান্ডে। সীমাহীন এক শূন্যতা ঘিরে ধরলো আমাকে। আবারো অপারগতা আর শৃঙ্খলের কাছে পরাজিত হয়ে টলতে টলতে বাস থেকে নামলাম। টুম্পার কথা বাদ দিয়েও এখান যদি আবার ফিরে যাই তাহলে এখান থেকে ঢাকা যেতেই সন্ধ্যা হয়ে যাবে, তারপর সেখান থেকে আবার রংপুর যেতে যেতে রাত পেরিয়ে ভোর হয়ে যাবে। ততক্ষনে লাশ কবর দিয়ে দিবে, এত দেরি হওয়ার স্পষ্ট কারণও তো বলতে পারবো না। আবার টুম্পাকে একা ফেলে কি করে যাবো? যে দিনের প্রতিক্ষায় এতদিন বিভোর ছিলাম তার প্রথম প্রহর-ই আমাকে ফেলে দিলো অসম্ভব এক দ্বিধা আর বিভাজনের কেন্দ্রস্থলে! ফেলে দিলো দায়বদ্ধতার সমীকরণে। কেমন জানি ঘোলাটে হয়ে উঠছে সবকিছু, মাথার ভিতরটা ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে। ঝাপসা হয়ে উঠা চোখে যখন তাকিয়ে আছি দূর সমুদ্রপানে তখন গভীর দীর্ঘশ্বাস থেকে জন্ম নেওয়া টুম্পার কথাটি কানে আসলো, আমার মতো মেয়ের, যাদের দু চোখে সারা বছর-ই অদেখা নোনাজল টলমল করে তাদের নতুন করে সমুদ্র দেখতে হয় না।


মন্তব্য

অতিথি লেখক এর ছবি

সংলাপের মাঝে আবার "_" গুলো একটু বেখাপ্পা লাগছে।

আচ্ছ ব্যাপারটা একটু ঘুরিয়ে যদি দেখি আমরা। গল্পের নায়ক তার বন্ধুকে যখন দেখলো তখন যদি এমন হতো যে বন্ধুর সাথে নায়কের স্ত্রীও আছে। স্ত্রীর কাছেও দমবন্ধ লাগছে সম্পর্কটা। তাহলে নায়কের চিন্তা পদ্ধতি কি হতো? এই প্রশ্নটার উত্তর আমাকে সন্তুষ্ট করেনা।

শরীর বিশ্বাসের কেন্দ্র হতে পারেনা মানলাম কিন্তু যেই ভিত্তির(শারিরীক সম্পর্ক) উপর ভালোবাসা দাঁড়িয়ে সেই ভিত্তিটাই যদি নড়বড়ে হয়ে যায় তাহলে ভালোবাসাটা থাকেনা। আর গৃহস্থলীতে একসময় বোধহয় ভালোবাসাটা দরকারও পরেনা।

সবশেষে , নিয়ম করে কি ভালোবাসা করা যায় নাকি সেটা গৃহস্থলি হয়ে যায়?
চমৎকার টপিকে লিখেছেন। ভালো লিখেছেন ।

-----------------------
আশফাক(অধম)

মাসুদ সজীব এর ছবি

মন্তব্যের জন্যে ধন্যবাদ।

আপনার প্রশ্নটা মূল্যবোধ সম্পর্কিত। মানুষের মূল্যবোধের জীবন অনেক জটিল। মূল্যবোধের মূল পরীক্ষাটা হয় যখন কোনো একটা সামাজিক জটিলতার মাঝ দিয়ে কোন মানুষকে যেতে হয়। কোন মানুষ-ই হয়তো পুরোপুরি শুদ্ধ জীবনযাপন করে না আমি সেটাই দেখাতে চেয়েছিলাম গল্পে।

-------------------------------------------
আমার কোন অতীত নেই, আমার কোন ভবিষ্যত নেই, আমি জন্ম হতেই বর্তমান।
আমি অতীত হবো মৃত্যুতে, আমি ভবিষ্যত হবো আমার রক্তকোষের দ্বি-বিভাজনে।

প্রৌঢ় ভাবনা এর ছবি

চলুক
হাচলত্বের অভিনন্দন!

মাসুদ সজীব এর ছবি

ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা হাসি

-------------------------------------------
আমার কোন অতীত নেই, আমার কোন ভবিষ্যত নেই, আমি জন্ম হতেই বর্তমান।
আমি অতীত হবো মৃত্যুতে, আমি ভবিষ্যত হবো আমার রক্তকোষের দ্বি-বিভাজনে।

তাহসিন রেজা এর ছবি

হাচলত্বের অভিনন্দন!
মাসুদ ভাই, গল্প ভালো লেগেছে।

------------------------------------------------------------------------------------------------------------
“We sit in the mud, my friend, and reach for the stars.”

অলীক জানালা _________

মাসুদ সজীব এর ছবি

ধন্যবাদ তাহসিন ভাই হাসি

-------------------------------------------
আমার কোন অতীত নেই, আমার কোন ভবিষ্যত নেই, আমি জন্ম হতেই বর্তমান।
আমি অতীত হবো মৃত্যুতে, আমি ভবিষ্যত হবো আমার রক্তকোষের দ্বি-বিভাজনে।

অন্যকেউ এর ছবি

হাচলত্বের অভিনন্দন!

লেখায় ক'টা গুরুচণ্ডালি চোখে পড়লো, সময় করে ঠিক করে নেবেন।

আপনি বলেছেন, "কোন মানুষ-ই হয়তো পুরোপুরি শুদ্ধ জীবনযাপন করে না", এটা দেখাতে চেয়েছেন। এদিক থেকে আপাতদৃষ্টিতে আপনার গল্পটা নিজস্ব পরিধিতে সামঞ্জস্যপূর্ণ বলা যায়। কিন্তু মূল চরিত্রের নিজের সাথে যে কথোপকথন, সেটাকে চূড়ান্ত একটা সিদ্ধান্ত হিসাবে মেনে নেবার চেয়ে, এটা আসলেই তার মানসিকতা, নাকি নিজেকে ভুলিয়ে রাখার প্রয়াসে কোনও ছল; সেই দ্বন্দ্বটাও গল্পে একটা ভূমিকা নিতে পারতো।

একটা কথায় একমত হবেন কি না জানি না; আমার মনে হয়, চূড়ান্ত ঘুষখোর আর দুর্নীতিবাজ একজন হাজি সাহেবও নিজের কাজকর্মের মধ্যে একটা ছদ্ম নৈতিকতার আবরণ পরিয়ে নিজের কাছে নিশ্চিন্ত থাকে (এখানে নৈতিকতা বলতে প্রচলিত নৈতিকতা বোঝাচ্ছি না, ব্যক্তিগত নৈতিকতার কথা বলছি, যেটা কিনা ব্যক্তির পশ্চাদ্ভূমি এবং সুবিধা অনুসারে তার মধ্যে গড়ে ওঠে)। আমাদের মূল চরিত্রের স্বগত কথোপকথনের ওপর এই দ্বন্দ্বটাও কিছুটা আশা করেছিলাম।

আপনার চিন্তাগত স্বাধীনতার যে ধারণাটা, সেটা মোটা দাগে ভালো লেগেছে। আপনার লেখার ধরণও বেশ ভালো। যতিচিহ্নের আপাত অনিচ্ছাকৃত ভুল ব্যবহারগুলো আগামি লেখাগুলোয় নিশ্চয়ই শুধরে নেবেন।

আপনার কাছ থেকে এটার মতো আরও অনেক ভালো লেখা আশা করবো। শুভকামনা।

_____________________________________________________________________

বরং দ্বিমত হও, আস্থা রাখো দ্বিতীয় বিদ্যায়।

মাসুদ সজীব এর ছবি

মূল চরিত্র নিজেই স্বীকার করেছে সে নিজের কাছে নিজে ভালো নয়(অস্পষ্ট আকারে), তবে সেই ভালো-খারাপ যে সমাজে নির্ধারণ করেছে সেটি সে মানছে না। অর্থাৎ সমাজ তাকে বাধ্য করেছে নিজের সাথে নিজে কিংবা অন্যের সাথে প্রতিনিয়ত অভিনয় করে যেতে। সে জন্যে সে বলেছে আপোষের চাদর সেও জড়িয়েছে। সমাজ তো তাকে পূর্ণ স্বাধীনতা দিচ্ছে না।

আপনার কথার সাথে একমত। সব মানুষি কম বেশি নৈতিকতার নিজস্ব একটা বৈধতা তৈরি করে। তবে গল্পের মূল উদ্দেশ্য যদি কিছু থেকে থাকে তা হলো আমাদের সমাজে ভালো খারাপের যে সংজ্ঞা (ঘুষ খাওয়া, দুর্নীতি করা) সেটি নিয়ে প্রশ্ন রাখা। এই দেশে যত ঘুষখোর-দুর্নীতিবাজ আছে তাদের কারো স্ত্রী-সন্তান বোধহয় তার জন্যে লজ্জিত হয় না। তার বাবাকে চরিত্রহীন মনে করে না। কিন্তু যখন-ই পর-নারীতে আসক্তির কথা জানবে তখন-ই চরিত্র নষ্ট হয়ে গেল বলে রব উঠে। এটা ঠিক না, পর-নারী কিংবা পর-পরুষে আসক্তি চরিত্র মাপার একমাত্র মাপকাঠি হতে পারে না। মিথ্যে বলা, অন্যায়ের আশ্রয় নেওয়া, ঘুষ খাওয়া, দুর্নীতি করা এগুলোও চরিত্রের মধ্যে পড়ে।

আমি লেখালেখিতে নতুন বলা যায় তাই অনুপ্রেরণার জন্যে কৃতজ্ঞতা এবং শুভেচ্ছা।

-------------------------------------------
আমার কোন অতীত নেই, আমার কোন ভবিষ্যত নেই, আমি জন্ম হতেই বর্তমান।
আমি অতীত হবো মৃত্যুতে, আমি ভবিষ্যত হবো আমার রক্তকোষের দ্বি-বিভাজনে।

অতিথি লেখক এর ছবি

ইটা রাইখ্যা গেলাম...

গুড় হয়েছে। গল্পের গতিময়তা গ্রাস করেছে সামান্য কিছু বানান ভুলের ঝাঁকি। মূল্যবোধের দর্শন ভাবনার খোরাক দিল।
হাচলত্বের অভিনন্দন!

রাজর্ষি

মাসুদ সজীব এর ছবি

ধন্যবাদ। বানান নিয়ে আমার সমস্যা আছেই, চেষ্টা করছি সেটা কাটিয়ে উঠার। কিভাবে এই সমস্যা কাটিয়ে উঠতে পারবো সেটা নিয়ে পরামর্শ আশা করছি। শুভেচ্ছা হাসি

-------------------------------------------
আমার কোন অতীত নেই, আমার কোন ভবিষ্যত নেই, আমি জন্ম হতেই বর্তমান।
আমি অতীত হবো মৃত্যুতে, আমি ভবিষ্যত হবো আমার রক্তকোষের দ্বি-বিভাজনে।

মরুদ্যান এর ছবি

ইন্টারেস্টিং টপিক। হয়তো অবাক হবেন, এইরকম একটা চিন্তা আমার মাথায়ও ঘুরপাক খাচ্ছিল গতকাল হাসি

-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------
যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চল রে

মাসুদ সজীব এর ছবি

ধন্যবাদ, এমনটা হয়। অনেক লেখা পড়ে মনে হয় আরে এটা নিয়ে তো আমার লেখার কথা ছিলো কিংবা এমন ভাবনা টা আমার মাথায়ও ঘুরছে শেষ কয়েকটা দিন। ভালো থাকুন হাসি

-------------------------------------------
আমার কোন অতীত নেই, আমার কোন ভবিষ্যত নেই, আমি জন্ম হতেই বর্তমান।
আমি অতীত হবো মৃত্যুতে, আমি ভবিষ্যত হবো আমার রক্তকোষের দ্বি-বিভাজনে।

Sohel Lehos এর ছবি

গল্প ভাল লাগল চলুক

সোহেল লেহস
-------------------------------------------------------
এইটা কি লেখলেন ভাই! গল্পের ট্যুইস্ট দেইখা পেটে কেমন জানি একটু মোচড় দিল হাসি

মাসুদ সজীব এর ছবি

ধন্যবাদ এবং শুভেচ্ছা হাসি

-------------------------------------------
আমার কোন অতীত নেই, আমার কোন ভবিষ্যত নেই, আমি জন্ম হতেই বর্তমান।
আমি অতীত হবো মৃত্যুতে, আমি ভবিষ্যত হবো আমার রক্তকোষের দ্বি-বিভাজনে।

অতিথি লেখক এর ছবি

ভালো লেগেছে। তবে দৈর্ঘ্যে একটু বড় হয়ে গেছে মনে হয়। নিয়মিত লিখতে থাকুন। আপনার লেখার অপেক্ষায় থাকব।

গোঁসাইবাবু

মাসুদ সজীব এর ছবি

পাশে থাকার জন্যে ধন্যবাদ হাসি

-------------------------------------------
আমার কোন অতীত নেই, আমার কোন ভবিষ্যত নেই, আমি জন্ম হতেই বর্তমান।
আমি অতীত হবো মৃত্যুতে, আমি ভবিষ্যত হবো আমার রক্তকোষের দ্বি-বিভাজনে।

অতিথি লেখক এর ছবি

চলুক
অনেক ভালো লেগেছে আপনার গল্প।
জীবনকে অন্যরকম চোখে দেখিয়েছেন। অনেক সত্যি কথা বলেছেন।

ভালো থাকুন, আরো লিখুন।
শুভকামনা।

--------------------------------
কামরুজ্জামান পলাশ

মাসুদ সজীব এর ছবি

মন্তব্যের জন্যে ধন্যবাদ, পড়ার জন্যে কৃতজ্ঞতা।

-------------------------------------------
আমার কোন অতীত নেই, আমার কোন ভবিষ্যত নেই, আমি জন্ম হতেই বর্তমান।
আমি অতীত হবো মৃত্যুতে, আমি ভবিষ্যত হবো আমার রক্তকোষের দ্বি-বিভাজনে।

অতিথি লেখক এর ছবি

গল্পটা ভালো লেগেছে। সময়োপযোগী একটা গল্প লিখেছেন। সমাজে যেসব মানুষ নিজেদের ঠকিয়ে অন্যদের ঠকায় তেমনই কিছু চরিত্র তুলে ধরেছেন। চলুক

ফাহিমা দিলশাদ

মাসুদ সজীব এর ছবি

ধন্যবাদ হাসি

-------------------------------------------
আমার কোন অতীত নেই, আমার কোন ভবিষ্যত নেই, আমি জন্ম হতেই বর্তমান।
আমি অতীত হবো মৃত্যুতে, আমি ভবিষ্যত হবো আমার রক্তকোষের দ্বি-বিভাজনে।

রণদীপম বসু এর ছবি

বলে-কয়ে লেখাটার কিঞ্চিৎ নিন্দা করতে চাচ্ছি !

সব কথা যদি লেখকই বলে দিলেন তো পাঠকের সেন্স অব হিউমার কিংবা কল্পনার অবকাশ রইলো কোথায় ! ছোট গল্পেরও একটা কাব্যিক স্বভাব রাখাটা কি জরুরি নয় ? কবিতা আর পদ্যের মধ্যে যেটুকু পার্থক্য, গল্পের শরীর আর গদ্য বিবরণের মধ্যেও পার্থক্যটা কিন্তু সেরকমই। তবে কথাগুলো আপনাকে আশাহত করতে বলছি না, বরং আপনার গল্পগুলোকে প্রয়োজনাতিরিক্ত মেদটুকু ঝরিয়ে ঝরঝরে সুঠাম দেহসৌষ্ঠবে উত্তীর্ণ করার প্রেরণা হিসেবে বলছি। মেধা আর শ্রম ব্যয় করে লিখছেন, আশা করি যেন শিল্প-সম্পদ হয়ে ওঠে ওগুলো।
অতিরিক্ত শব্দ বা কথা ব্যবহারের প্রলোভনে পড়েছেন তো ঠকেছেন, এরকমই একটা কথায় বিশ্বাস করলে আশা করি ঠকবেন না। অনেক অনেক শুভকামনা।
সচলযাত্রার মধ্যলগ্নে অভিনন্দন।

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

মাসুদ সজীব এর ছবি

ধন্যবাদ রণদীপম দা, সত্যি বলতে আমি গঠনমূলক সমালোচনার অপেক্ষায় থাকি।

১। আমি যেটুকু বুঝি যেসব গল্প প্রথা কিংবা সমাজের অনিয়মের বিরুদ্ধে সেখানে লেখক স্পষ্ট একটা বক্তব্য দিতে পারেন, সেটি পাঠকের কাছে গ্রহণযোগ্য হয় কি না হয় সেটি গল্পের মান বিচারের সাথে জড়িত। আর একটি গল্প লেখক যে ভাবনায় লেখেন পাঠক যে ঠিক সেই ভাবনার পথ ধরে চলেন এমন কিন্তু নয়। তারপরও স্বীকার করতে দ্বিধা নেই স্বার্থক ছোট গল্পে পাঠককে সম্পৃক্ত করা, তাদেরকে চিন্তা করার সুযোগ দেওয়া জরুরী। আশা করি পরবর্তী লেখায় আপনার পরামর্শগুলো মাথায় রাখবো।

২। ছোট গল্পে কাব্যিক স্বভাবটা রাখা হয়তো গুরুত্বপূর্ণ হয়তো না। কাব্যিক ভাব না রেখেও নিরস আবেগহীন শুকনো, খটখটে ভাষায় লেখে আখতারুজ্জামন ইলিয়াস বাংলা সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ গল্পকার ও উপন্যাসিক। হাসান আজিজুল হকও গল্প লেখাতে কাব্যিক ধারায় যাননি। তবে উনারা পাঠককে চিন্তার জগতে স্বাধীনতা বেশি দিয়েছেন। লেখালেখিতে আমি নতুন সবে মাত্র হামাগুড়ি দিচ্ছি, তাই আপনাদের উপদেশ, পরামর্শ আমার লেখার প্রচেষ্টাকে আরো বেশি সমৃদ্ধ করবে বলে আশা করছি। ভালোথাকুন, সচল থাকুন (সকল অনিয়মিত সচলের মতো আপনিও অনিয়মিতদের খাতায় নাম লেখিয়েছেন অনেক দিন হলো চিন্তিত )

আপনার

-------------------------------------------
আমার কোন অতীত নেই, আমার কোন ভবিষ্যত নেই, আমি জন্ম হতেই বর্তমান।
আমি অতীত হবো মৃত্যুতে, আমি ভবিষ্যত হবো আমার রক্তকোষের দ্বি-বিভাজনে।

রণদীপম বসু এর ছবি

আমার মন্তব্যে সম্ভবত একটা বক্তব্য আসলে বোঝাতে সক্ষম হইনি, সেটা অবশ্যই আমারই ব্যর্থতা। আমি বলেছিলাম

ছোট গল্পেরও একটা কাব্যিক স্বভাব রাখাটা কি জরুরি নয় ? কবিতা আর পদ্যের মধ্যে যেটুকু পার্থক্য, গল্পের শরীর আর গদ্য বিবরণের মধ্যেও পার্থক্যটা কিন্তু সেরকমই।

আমি কি গল্প-শৈলীতে আসলে কাব্য-লালিত্য থাকতে হবে একথা বুঝিয়েছি ? গল্প কি আর কবিতা হয় ? বুঝিয়েছিলাম আসলে কতোটা প্রকাশ করবেন কতোটা করবেন না এবং করলেও কিভাবে করবেন সেরকম কিছু। উদাহরণে বলেছি যে পদ্য আর কবিতার পার্থক্যের মতো। পদ্য হয় বর্ণনাধর্মী যেখানে পাঠক পদ্যের ব্যাখ্যাত পরিধির বাইরে যাওয়ার সুযোগ পায় না। পদ্যকার যা বর্ণনা করেছেন তাই চূড়ান্ত। কিন্তু কবিতা মানে যেখানে একেক পাঠক তার নিজস্ব সৃজন-কল্পনা দিয়ে নিজের মতো করে একটা রসোপলব্ধি গ্রহণ করবে। কবিতার এমন কোন সংজ্ঞা আমার অন্তত জানা নেই যেখানে বলা হয়েছে কবিতাকে আবেগাপ্লুত লালিত্যময় হতে হবে, খটখটে নিরস ভাষা হতে পারবে না। আর রবিঠাকুরের ছোট প্রাণ ছোট ব্যথা কবিতাংশটা ছাড়া গল্পের কোন সংজ্ঞাও আমার জানা নেই। পাঠক হিসেবে আমার উপলব্ধিটা জানিয়েছি আর কি ! এতোটা কেউকেটা হলে আমি নিজেই তো বিশাল গল্পকার হয়ে যেতাম ! ওইটা যে আমার দ্বারা হয় না সেটাও আমি জানি। হা হা হা !!

আশা করি আমার বক্তব্যটা বোঝাতে পারলাম ! ভালো থাকবেন। ধন্যবাদ।

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

মাসুদ সজীব এর ছবি

ছুডুবেলায় হরলিক্স খাইনিতো তাই বুঝতে একটু দেরি হয় সবকিছু দেঁতো হাসি । আপনার কথাগুলো অনেক মূল্যবান, আশা করি আগামীতে এ কথাগুলো আমার লেখাকে আরো শানিত করবে। অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা, আপনিও ভালোথাকবেন হাসি

-------------------------------------------
আমার কোন অতীত নেই, আমার কোন ভবিষ্যত নেই, আমি জন্ম হতেই বর্তমান।
আমি অতীত হবো মৃত্যুতে, আমি ভবিষ্যত হবো আমার রক্তকোষের দ্বি-বিভাজনে।

এক লহমা এর ছবি

ঠিক এই কথাগুলিই বলতে চাইছিলাম। এত সুন্দর করে গুছিয়ে লিখে উঠতে পারিনি, তাই আর লেখা হয়নি। আমি নিশ্চিৎ, গল্পকার এ সমালোচনা আন্তরিক শুভেচ্ছার সাথে গ্রহণ করবেন।

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

মাসুদ সজীব এর ছবি

হাসি অবশ্যই। ধন্যবাদ দাদা

-------------------------------------------
আমার কোন অতীত নেই, আমার কোন ভবিষ্যত নেই, আমি জন্ম হতেই বর্তমান।
আমি অতীত হবো মৃত্যুতে, আমি ভবিষ্যত হবো আমার রক্তকোষের দ্বি-বিভাজনে।

আয়নামতি এর ছবি

একসাথে দুইবার বাহ্! বাহ্! কেন?
প্রথমত, আপনি হাচলত্ব পেয়ে সচল হবার জন্য মুখ হা করেছেন(সেজন্যই কিন্তু হাচল বলা হয় খাইছে ) অভিনন্দন।
আর দ্বিতীয় কথা হলু আপনি গপ লিখেছেন।
লেখালেখি চলুক।

মাসুদ সজীব এর ছবি

আপনাকেও ডাবল ধন্যবাদ হাসি । গপ আগেও একখান লিখেছি, আপনার চোখে পড়েনি হয়তো।

-------------------------------------------
আমার কোন অতীত নেই, আমার কোন ভবিষ্যত নেই, আমি জন্ম হতেই বর্তমান।
আমি অতীত হবো মৃত্যুতে, আমি ভবিষ্যত হবো আমার রক্তকোষের দ্বি-বিভাজনে।

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

ইটা রাইখ্যা গেলাম...
হাচলাভিনন্দন হাততালি

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

মাসুদ সজীব এর ছবি

পপকর্ন লইয়া গ্যালারীতে বইলাম
আপনার জন্যে বুড়ো রবী ঠাকুরের একখান গান উৎসর্গ করতে চায় মন “মাঝে মাঝে তব দেখা পাই, চিরদিন কেন পাই না? চোখ টিপি

-------------------------------------------
আমার কোন অতীত নেই, আমার কোন ভবিষ্যত নেই, আমি জন্ম হতেই বর্তমান।
আমি অতীত হবো মৃত্যুতে, আমি ভবিষ্যত হবো আমার রক্তকোষের দ্বি-বিভাজনে।

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

মানুষের অন্তর্গত টানাপোড়েন, নৈতিকতার সীমারেখা, অন্যের অনৈতিক কাজের ব্যপারে ঘৃণা আর নিজের ক্ষেত্রে র‍্যাশনালাইজিং এইসব যে কোন গল্পের জন্য খুবই ভাল বিষয়। সব মানুষের গল্পই আসলে টানাপোড়েন আর দ্বিধার গল্প। সেই দ্বিধা ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা ভাল লেগেছে।

এইবার একটু সমালোচনা করি দেঁতো হাসি

শেষটায় শাশুড়ি মারা যাবে এটা আন্দাজ করা যাচ্ছিল, যেহেতু এটা থ্রিলার নয় সেক্ষেত্রে সমাপ্তি আন্দাজ করাটা যাওয়াটা দূষনীয় অবশ্যই নয়, তবে এই ধরনের সমাপ্তি কিছুটা ক্লিশে লেগেছে।

লিখতে লিখতে কথোপকথন আর নিজে নিজে চিন্তা করার বিষয়টি আরও সাবলীল নিশ্চয়ই হবে। গল্পের কথোপকথন গুলো কিছু কিছু ক্ষেত্রে জ্ঞান দেয়া টাইপ মনে হয়েছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে নিজের সাথে বোঝাপরার ব্যপারটা একটি দ্বিপক্ষীয় বিতর্কের মত মনে হল। ওপরে রণদা যেমন বলেছেন, সব ক্ষেত্রে সব কথা বলার লোভ সামলাতে পারলে হয়ত আপনার কাছ থেকে আমরা আরও পরিণত গল্প পাব।

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

মাসুদ সজীব এর ছবি

সমালোচনায় চলুক

সকলের উপদেশ/পরামর্শ হাসি মুখে গ্রহন করলাম। চেষ্টা থাকবে নিজের লেখাকে আরো শানিত করার। ধন্যবাদ কবি দেঁতো হাসি

-------------------------------------------
আমার কোন অতীত নেই, আমার কোন ভবিষ্যত নেই, আমি জন্ম হতেই বর্তমান।
আমি অতীত হবো মৃত্যুতে, আমি ভবিষ্যত হবো আমার রক্তকোষের দ্বি-বিভাজনে।

প্রোফেসর হিজিবিজবিজ এর ছবি

আরে বাহ! বেড়ে একটা গল্প ছেড়েছেন তো! চমৎকার লাগলো গল্পের থিমটা। তবে আমার ক'টা কথা আছে -

গল্প বলার সাবলীলতা কয়েক জায়গায় হোঁচট খেয়েছে। আশা করছি এটা পরবর্তী গল্পগুলোতে কেটে যাবে।
গল্পের পরিণতিটাকে অপরিণত মনে হলো। (যদিও টুম্পার শেষের ডায়লগটা দারুণ লেগেছে)।
শুরুতে এবং মাঝে অযথা গল্পকে টেনে বড় করা হয়েছে মনে হলো। আরো সহজে এবং অল্প কথায় বক্তব্য দেয়া যেতো।
নিজের সাথে কথা বলাটা কেন যেন হিমু হিমু মনে হলো আমার কাছে - (এটা আমার পাঠকের দোষও হতে পারে)

পরিশেষে কিছু টাইপো, যেগুলো ভালো একটা গল্প পড়ার আনন্দকে কমিয়ে দিলো -
শীততাপ নিয়ন্ত্রিত -> শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত,ফুলঝুড়ি -> ফুলঝুরি , ম্যানাজের, ম্যানাজার ->ম্যানেজার, পদচিন্থ ->পদচিন্হ, শশুর ->শ্বশুর ইত্যাদি।

লিখে যান, দুহাত খুলে লিখে যান। আপনার গল্পের অপেক্ষায় থাকলাম।

____________________________

মাসুদ সজীব এর ছবি

গল্পটা অনেক তাড়াহুড়ো করে লেখা আর বানানে আমার দুর্বলতা আছে। সেটা কাটিয়ে উঠার চেষ্টা করছি, পড়ার জন্যে এবং পরামর্শের জন্যে ধন্যবাদ। হাসি

-------------------------------------------
আমার কোন অতীত নেই, আমার কোন ভবিষ্যত নেই, আমি জন্ম হতেই বর্তমান।
আমি অতীত হবো মৃত্যুতে, আমি ভবিষ্যত হবো আমার রক্তকোষের দ্বি-বিভাজনে।

মেঘলা মানুষ এর ছবি

ভালো লেগেছে গল্প, আমার মনে হয় সমাজ এখন ঘুষ খাওয়া, চুরি করা -এগুলোকে খারাপ কাজের তালিকা ঠেকে কেটে ফেলেছে।

ভালো থাকুন, শুভেচ্ছা হাসি

মাসুদ সজীব এর ছবি

ধন্যবাদ, আমার গল্পের একটা অন্যতম থিম ছিলো এই সমাজে সৎ আর অসৎ এর সংজ্ঞা নির্ধারনের ভিত্তি, আপনি সেখানে পৌছাতে পেরেছেন। পড়ার জন্যে অসংখ্য ধন্যবাদ, আপনিও ভালোথাকুন।

-------------------------------------------
আমার কোন অতীত নেই, আমার কোন ভবিষ্যত নেই, আমি জন্ম হতেই বর্তমান।
আমি অতীত হবো মৃত্যুতে, আমি ভবিষ্যত হবো আমার রক্তকোষের দ্বি-বিভাজনে।

শামীমা রিমা এর ছবি

অভিনন্দন !
এবার একটু সমালোচনা । গল্পের শুরু আর শেষ ছিল চমৎকার তবে মাঝখানটা একটু বেশি খেজুরে । আশাকরি পরের লেখাগুলিতে আরও সচেতন হবেন । চলুক

মাসুদ সজীব এর ছবি

মন্তব্যের জন্যে ধন্যবাদ হাসি । সচেতন না হয়ে উপায় আছে চিন্তিত

-------------------------------------------
আমার কোন অতীত নেই, আমার কোন ভবিষ্যত নেই, আমি জন্ম হতেই বর্তমান।
আমি অতীত হবো মৃত্যুতে, আমি ভবিষ্যত হবো আমার রক্তকোষের দ্বি-বিভাজনে।

মাসুদ সজীব এর ছবি

ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্যে, আপনার অনুপ্রেরণা সত্যি সাহস দিচ্ছে আরো গল্প লেখার হাসি (যদিও আমি গল্পকার নই, একটু চেষ্টা করছিলাম কিছু একটা দাঁড় করাতে পারি কিনা গল্প হিসেবে) সাথে সাথে বাড়িয়ে দিচ্ছে দায়বদ্ধতা। সবার প্রশংসা কিংবা সমালোচনা আমি সাগ্রহে গ্রহন করি। সত্যি কথা বলতে কি সবার ভালোবাসাা আছে বলেই আলোচনা আর সমালোচনা করছেন। যারা মন্তব্য করেছেন সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা। আর ঠিক এই কারনে সচল ভালেলাগা আর ভালোবাসার জায়গা আমার। প্রিয় একজন মানুষের অনুরোধে সাপ্তাহ খানিকের মাঝেই তিনটে গল্প লেখেছিলাম খুব তড়িগড়ি করে (সেগুলোই আমার লেখা প্রথম গল্প) তাই অনেক ক্লেশ রয়ে গেছে। অনুরোধে হুটহাট আর লেখতে বসবো না এটা শপথ করেছি। আশা করি পরবর্তী গল্পগুলোতে এইসব সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে উঠতে পারবো কিছুটা। আপনিও ভালোথাকুন, শুভেচ্ছা

-------------------------------------------
আমার কোন অতীত নেই, আমার কোন ভবিষ্যত নেই, আমি জন্ম হতেই বর্তমান।
আমি অতীত হবো মৃত্যুতে, আমি ভবিষ্যত হবো আমার রক্তকোষের দ্বি-বিভাজনে।

দীনহিন এর ছবি

আপনার গল্পে এমন কিছু থাকে, যা ছেড়ে দেয়া পাঠকের পক্ষে অসম্ভব হয়ে দাঁড়ায়, কিন্তু সেই হিরেটুকু পেতে পাঠককে কিছুটা ক্লেশ করতে হয়, অথচ চাইলেই কিছু পরিমার্জন করে পাঠকের পাঠ অনায়াস করতে পারেন!

আর দেখুন না, ষষ্ঠ পান্ডবদা, রণদা'র মত মানুষরা পর্যন্ত আপনার লেখা নিয়ে ভাবেন, মূল্যবান মত দেন, এ থেকে বোঝা যায়, আপনার লেখাটা মানের অন্তত সেই স্তরটি অতিক্রম করেছে, যা রনদা, ষষ্ঠ পান্ডবদার মত মানুষদের সময় আদায় করে নিতে পারে!

ভাল থাকুন, আর লিখতে থাকুন, মাসুদ ভাই!

.............................
তুমি কষে ধর হাল
আমি তুলে বাঁধি পাল

মাসুদ সজীব এর ছবি

লইজ্জা লাগে , কবি-প্রফেসর-রণদার মন্তব্য আমাকে অনেকটাই নতুন করে ভাবতে সাহায্য করছে। সচল ভালোলাগার কারণ এখানে গঠনমূলক আলোচনা হয়। নিজেকে সচলের আয়নায় দাঁড় করিয়ে ভুল ত্রুটিগুলো বের করা আর শুধরে নিয়ে নিজের ভাবনাগুলো সবার সাথে ভাগ করাতেই যত সুখ। আপনিও ভালোথাকুন হাসি

-------------------------------------------
আমার কোন অতীত নেই, আমার কোন ভবিষ্যত নেই, আমি জন্ম হতেই বর্তমান।
আমি অতীত হবো মৃত্যুতে, আমি ভবিষ্যত হবো আমার রক্তকোষের দ্বি-বিভাজনে।

অতিথি লেখক এর ছবি

ভাল লাগল লিখাটা পড়ে, কিছু চরম সত্য বিষয় উঠে এসেছে। উদাহরণ দেই -

-না, তা ঠিক আছে কিন্তু এটাতো ঠিক পাপবোধ ঠিক করে দেয় সমাজ। যে সমাজে বাস করবো সেই সমাজের নিয়ম না মানাই তো পাপ, তাই না?

ভবিষ্যতে আরও ভাল ভাল লিখার অপেক্ষায় থাকলাম।

অতিথি লেখক এর ছবি

ভাল লাগল লিখাটা পড়ে, কিছু চরম সত্য বিষয় উঠে এসেছে। উদাহরণ দেই -

-না, তা ঠিক আছে কিন্তু এটাতো ঠিক পাপবোধ ঠিক করে দেয় সমাজ। যে সমাজে বাস করবো সেই সমাজের নিয়ম না মানাই তো পাপ, তাই না?

ভবিষ্যতে আরও ভাল ভাল লিখার অপেক্ষায় থাকলাম।
__________________________________________
সরীসৃপ

মাসুদ সজীব এর ছবি

ধন্যবাদ, চেষ্টা থাকবে হাসি

-------------------------------------------
আমার কোন অতীত নেই, আমার কোন ভবিষ্যত নেই, আমি জন্ম হতেই বর্তমান।
আমি অতীত হবো মৃত্যুতে, আমি ভবিষ্যত হবো আমার রক্তকোষের দ্বি-বিভাজনে।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।