ও ভাই শুনছেন....একটু শুনবেন....

মনজুরাউল এর ছবি
লিখেছেন মনজুরাউল (তারিখ: রবি, ১৩/০৭/২০০৮ - ৩:১৬পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

ও ভাই শুনছেন... একটু শুনবেন........
সকালে ওঠা অভ্যেস নেই। ঘুমোতে যাবার সময়ই হয় ভোর রাতে। সেদিন ঘুম হয়নি। তাই পথে বেরিয়েছিলাম। হাঁটতে। মর্নিং ওয়ার্ক নয়। কোথাও দাঁড়িয়ে থাকা অথবা এমনি চলে বেড়ানো। ওই সাতসকালেই ওই অপ্রশস্ত পথটিতে বেজায় ভিড়। কিচির মিচির শব্দ আর দুড়দাড় হাঁটা। গার্মেন্টস শ্রমিকরা কাজে যাচ্ছে। ওরা হেঁটেই যায়। দু মাইল-তিন মাইল। অনর্গল নিজেদের মধ্যে কথা বলে মেয়েগুলো। হাতে সবারই একটা করে টিফিন কেরিয়ার। আর ভ্যানিটি ব্যাগ। হাঁটছে জোরে। কোনোদিকে তাকায় না ওরা। চাবি দেওয়া রোবটের মতো। একটা নির্দিষ্ট ছন্দে, নির্দষ্ট লয়ে, নির্দিষ্ট গতিতে ছুটছে। লুঙ্গিপরা শরীরের মাঝ বরাবর হাত ঘসতে ঘসতে অশ্লীল মন্তব্য করে দোকানদারগুলো। অর্ধশিক্ষিত বাড়ির দারোয়ানগুলো কেউ কেউ ওই ছুটতে থাকা কাফেলার মধ্যিখানে গিয়ে পড়ে। একটু ঘষা বা একটু ধাক্কা। ওতেই জান্তব উল্লাসের খানিকটা প্রশমিত। মেয়েগুলো গায়ে মাখেনি। হাঁটছেই। হঠাত্ কে যেন পেছন থেকে ডাক দিলো ও ভাই শুনছেন...। দেখলাম পেছনে মাঝবয়সী একজন দাঁড়িয়ে। পাঞ্জাবি-লুঙ্গি পরা মানুষটির একমুখ দাড়ি। একটি ছ-সাত বছরের ছেলের হাতধরা। শুনিনি। কিছুদূর যাওয়ার পর আবার সেই ডাক, ... ও ভাই শুনছেন, একটু শুনবেন... এবার দাঁড়াতেই হলো। মানুষটি এসেছে গাইবান্ধা থেকে। গাইবান্ধা, প্রকৃতির খেয়ালখুশির ল্যাবরেটরি। ধরলা, তিস্তা আর ব্রহ্মপুত্রের সর্বনাশের লীলাভূমি। বানের জলে গ্রামকে গ্রাম তলিয়ে যাওয়া ওখানে নিত্য বছরের। সারা বছরে মাত্র একবারই ওখানে সামান্য কিছু ফসল ফলে। বাকি পুরোটা সময় কোনো কাজ নেই ওখানে। শুকনোয় মরা তিস্তা জমিকে নাব্য করে না। অথচ বর্ষা এলে তার কী রূপ। অষ্টাদশীর উচ্ছ্বলতায় নেচে নেচে জনপদ ভাসায়। মানুষ, গরু-ছাগল সব। চালের উপরকার পাখিটাও খাবার জোটাতে পারে না। দিগন্ত বিস্তৃত জলরাশি। সেই গাইবান্ধার মানুষটি বানভাসি হয়ে ঢাকায় এসেছেন ওখানে একটা ভাঙাচোরা প্রাইমারি স্কুলে পড়াতেন। ঢাকায় এসেছেন ঠিক ভিক্ষে করতে নয়। নিজের এবং অন্যের জন্য কিছু টাকা-পয়সা, খাবারদাবার আর কাপড়চোপড় জোগাড় করতে। এবারকার বন্যাটা খুব একটা মিডিয়া কাভারেজ পায়নি। সরকারি-বেসরকারি কোনো সাহায্য দল বা টিভি-ক্যামেরা কিছুই পৌঁছায়নি। দশ-বারো দিন অপেক্ষা করে অবশেষে ওরা পথে বেরিয়েছে। কিন্তু যেহেতু মিডিয়া কাভারেজ হয়নি, তাই শহুরে মানুষগুলোও হাইটেক, ইন্টারনেট, সভা-সেমিনার, কাব্য-সঙ্গীত, সাদ্দাম-উদে-বুশের মতো জগতের অতি আবশ্যক বিষয়াদি ভুলে বনার্তদের নিয়ে মাতেনি। সেকারণেই ওই মানুষটি শূন্য হাতেই ঘুরে বেড়াচ্ছেন। ভিক্ষুকের মতো চেহারা নয় বলে কেউ খাবারও দেয়নি। ভেড়ার মতো মাথা নিচু করে ছুটতে থাকা একটি গার্মেন্টস শ্রমিক তার ব্যাগ থেকে ১০টি টাকা বের করে দিলো। ওটা দেখেই সম্ভবত আমার মধ্যবিত্ত ছেনাল মানসিকতায় ঘা লাগলো। ডেকে আনলাম বাসায়। কিছু কাপড়-চোপড় আর টাকা দেওয়ায় কেঁদে ফেললেন ঝরঝর করে। আক্ষেপ করে বললেন... খোদা কেন যে ফকির বানালো না... তার বিশ্বাস ফকির হলে তার এই পেশাগত সমস্যাটা হতো না।
এর আরো দুদিন বাদে দুপুরে আদিষ্ট হয়ে প্রেসকাবে গেছি। ছুটির দিন ভরদুপুরে গলা অব্দি গিলে (বাঙালি মাংনা দাওয়াত পেলে গরু-ছাগল-মুরগি সব খায়। ফেলে ছড়িয়ে ঘেমেঘুমে, হাঁসফাঁস করে একেবারে আঙুল দিলে ছোঁয়া যাবে খাদ্যনালীর ওই স্তর পর্যন্ত খায়। খেতে খেতে চলার ক্ষমতা হারালে হজমের জন্য কার্বোনেটেড পানীয় পান করে। তারপর মৌরি ধনে মশলা দেওয়া পানও খায় বমি ঠেকানোর জন্য। ও সময় প্রায় সবাইকেই আন আরবান চতুষ্পদী মনে হয়) সবে পুরানা পল্টনের মোড়ে দাঁড়িয়েছি। আবার সেই কণ্ঠ... ও ভাই শুনছেন... একটু শুনবেন...।
এবার এই কণ্ঠের মালিক এক রমণী। সঙ্গে তিনটি ছেলেমেয়ে। এসেছেন নোয়াখালী থেকে। ওখানে তো বন্যা নেই, তাহলে? জিজ্ঞাসা করতেই বললেন, তিনি সাহায্য চাইতে আসেননি। বড়ো ছেলেটাকে কোথাও ঢুকিয়ে দিতে পারলে মেয়ে দুটিকে নিয়ে গ্রামেই থাকতে পারবেন। ছেলেটা কাস এইট পর্যন্ত পড়েছিল। এখন আর পড়া হয় না। ওদের বাবা ছিল আদমজীর শ্রমিক। চাকরি যাওয়ার পর জমানো টাকাও শেষ। মহিলার ভাষায় তার স্বামী এখন গাঁজা-ভাং খায় আর নারায়ণগঞ্জের এক বেশ্যার সঙ্গে থাকে। শহুরে মানুষরা ভিক্ষেটিক্ষে মাঝেমধ্যে দেন বটে, তবে এ ধরনের কোনো সাহায্য চাইলে স্কেপ করেন। হুজ্জত হাঙ্গামা এড়িয়ে চলতে চান, কেননা শহুরে মধ্যবিত্তরা বরাবরই শান্তিপ্রিয় আদর্শ নাগরিক। ওই মহিলা গত চারপাঁচ দিন ধরে এই শহরে আছেন। চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। বাড়িতে অফিসপাড়ায় কাউকে একটু কমব্যস্ত দেখলেই ডাক দিচ্ছেন ও ভাই শুনছেন... একটু শুনবেন...।
যে কেউ একটু কানখাড়া করলে ওই ডাক শুনতে পাবেন। ওরকম ডাক এখন এই নগরীতে এই দেশে অহরহ শোনা যাচ্ছে। প্রায় এক দেড় কোটি মানুষ এখন এ রকম করে ডাকছে। কেউ বাড়ির বাইরে এসে, কেউ বাড়ির আশপাশেই।এই মানুষগুলোর সংখ্যা হু হু করে বাড়ছে। স্বামী বেকার। গ্রামে কাজ নেই। এনজিওগুলো চড়াসুদে ব্যবসা করছে। গ্রামের ভূমি ব্যবস্থা পরিবর্তিত হয়ে যাচ্ছে। ছোট ছোট জমির খণ্ডগুলো ছোটখাট জোত হয়ে যাচ্ছে। সেখানে প্রচলিত চাষাবাস বদলে বাণিজ্যিক চাষ হচ্ছে। ভূমিহীন অপেশাদার শ্রমিকের ওখানে কাজ নেই। তাদের কাজ করছে শিক্ষিত কৃষিবিষয়ক শ্রমিকরা। জমিতে বুর্জোয়া মুত্সুদ্দি পুঁজির পাশাপাশি বেনিয়া পুঁজিও লগ্নি হচ্ছে। মাইলকে মাইল জমি দখল করে নিচ্ছে ডেভেলপাররা। শহরতলি হলে হাইরাইজ বিল্ডিং হচ্ছে। শহর থেকে দূরে হলে ইকো পার্ক বা ইপিজেড আকারে বিদেশীদের কাছে লিজ দেওয়া হচ্ছে। ওখানে গড়ে উঠবে একশ ভাগ রপ্তানিমুখী শিল্প। আর এসবের জন্য সদর দরজা হাট করে বসে আছে সরকার। ধনীদের পুঁজির নিশ্চয়তাবিধানকারী দৃঢ়চেতা সরকার । পুঁজির কারবারে আবেগ থাকলে চলে না। পুঁজির ধর্মই মুনাফা। তাই সেই লগ্নিপুঁজি কেন্দ্রিক ব্যবসা, রাজনীতি, অর্থনীতি, সংস্কৃতি সবই মুনাফা কেন্দ্রিক, যেখানে মুনাফা নেই সেখানে ক্ষমতাবানরা নেই। বাজার কেন্দ্রিক অর্থনীতিরও একটা ধর্ম আছে, প্রতিযোগিতা। কিন্তু বর্তমান সরকারের এই অর্থনীতি-রাজনীতিতে তাও নেই। আছে প্রটেকশন। সেই প্রটেকশনের জন্য আছে সেনা, পুলিশ, বিডিআর আর ঠ্যাঙ্গাড়ে বাহিনী। এই প্রটেকশনের কারণে যদি জঞ্জাল সাফ করতে হয় তাহলে তারা সেই কাজে সদা সবল। দরিদ্র মানুষই হচ্ছে সেই জঞ্জাল। ভ্যালুয়েবল ট্রান্সফারেল কমোডিটিজের মতো কিছু মানুষ ছাড়া সকল মানুষই তাদের কাছে জঞ্জাল। আমরা পত্রপত্রিকায় এন্তার চেঁচামেচি করি এটা হচ্ছে না ওটা হচ্ছে না, ওটা অমুককে ক্ষতি করবে, ওটা মানুষের অকল্যাণ বলে, কিন্তু সূত্র মেলাই না। তা করতে পারলে দেখতাম একটা লুটেরা সাফারি শ্রেণীকে প্রটেকশন দিয়ে পুরো দেশটা কয়েকটা পরিবারে ভাগাভাগি করে লুট করার জন্যই সেই সব শ্রেণীর প্রত্য মদদে প্রতিষ্ঠা হয়েছে বর্তমান সরকার। এরা সন্ত্রাসীদের হাতে, পুলিশের-মিলিটারির হাতে গত কয়েক বছরে যে ৬ হাজারের মতো মানুষকে মারতে দিয়েছে, তুলনামূলক বিচারে তা খুব একটা বেশি নয়। ৬ হাজারের তিন-চার গুণ মানুষ এদেশের গ্রামগঞ্জে ধুঁকে ধুঁকে মরছে। সেসব মৃত্যু নিরবে। নিভৃতে। শিল্প সাহিত্য অ্যামজুমেন্টের ঘোরে আচ্ছন্ন মধ্যবিত্ত সমাজ দর্পণে ওই ছবি ওঠে না। কোটি কোটি নিরন্ন মানুষের হাহাকার হাইরাইজ ডিঙিয়ে এই কসমোপলিটনে পৌঁছে না। কিন্তু একটু কানখাড়া করলেই শুনতে পাবেন... ক্ষীণ স্বরে ওরা হাজার হাজার জন ডাকছে... ও ভাই শুনছেন.... একটু শুনবেন... কান পাতুন.... কান পাতুন... কান পাতুন...।


মন্তব্য

স্নিগ্ধা এর ছবি

আপনার গল্প, 'অ'গল্প সব কাহিনীই বড় বেশী 'সত্যি কাহিনীর ছায়া অবলম্বনে রচিত'। মোটেই খেয়ে এসে আয়েশ করে আবার সচলায়তন পড়তে শুরু করেছিলাম, আমার নিশ্চিন্ত ভরাপেটের মধ্যবিত্ত মৌতাতটা গেলো একেবারে!

মনজুরাউল এর ছবি

গুরুতর অন্যায় করে ফেল্লাম বোধ হয় ?!কিন্তু আপনি কোট-আনকোট দিয়ে যে " জোর কা ধাক্কা ধীরেছে " মারলেন তার জন্য এই রাত ৩/৫৫ মিনিটে আমার আবার ক্ষিদে পেয়ে গেল যে । এখর কী করি ?
________________________________
এ্যবসল্যুট সত্য বলে কিছু নেই জগতে
যা আছে তা অর্ধসত্য বা খণ্ডসত্য.......।

.......................................................................................
আমাদের মাতৃগর্ভগুলি এই নষ্ট দেশে
চারদিকের নিষেধ আর কাঁটাতারের ভিতর
তবু প্রতিদিন রক্তের সমুদ্রে সাঁতার জানা
হাজার শিশুর জন্ম দেয় যারা মানুষ......

জুলিয়ান সিদ্দিকী এর ছবি

খুবই দু:খজনক হলেও চরম বাস্তব! কিন্তু দিনদিন যে আমরা আমাদের সমবেদনা প্রকাশের মানসিকতা হারিয়ে ফেলছি। আমরা ইদানিং খুব বেশিই ব্যস্ত হয়ে পড়েছি নিজেদের নিয়ে।

পোস্টের জন্য ধন্যবাদ।

____________________________________
ব্যাকুল প্রত্যাশা উর্ধমুখী; হয়তো বা কেটে যাবে মেঘ।
দূর হবে শকুনের ছাঁয়া। কাটাবে আঁধার আমাদের ঘোলা চোখ
আলোকের উদ্ভাসনে; হবে পুন: পল্লবীত বিশুষ্ক বৃক্ষের ডাল।

___________________________
লাইগ্যা থাকিস, ছাড়িস না!

মনজুরাউল এর ছবি

আপনাকেও ধন্যবাদ।
.................................................

আমরা একদিন পেট্রোল ঢেলে সব জ্বালিয়ে দেব....
আমরা একদিন পেট্রোল ঢেলে সব আগুন নিভিয়ে দেব..................

.......................................................................................
আমাদের মাতৃগর্ভগুলি এই নষ্ট দেশে
চারদিকের নিষেধ আর কাঁটাতারের ভিতর
তবু প্রতিদিন রক্তের সমুদ্রে সাঁতার জানা
হাজার শিশুর জন্ম দেয় যারা মানুষ......

সুবিনয় মুস্তফী এর ছবি

শিল্প ঠিকমত গড়তে পারলেও হতো। কিন্তু তাও আধা-খাচড়া। আর সব কিছুর মতই।

আপনার লেখা চলুক।
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর

মনজুরাউল এর ছবি

ওকরকমই। গরিবের 'রানীমেল শাড়ি'আড়ে আসে না। বুক ঢাকলে পেছন খালি হয়,পেছন ঢাকলে বুক উদলা হয়। আধা সামন্তবাদী আর আধাখ্যাঁচড়াপুঁজিবাদী আমাদের শাসকশ্রেণীর পক্ষে এ চে' ভাল কিছু করার ক্ষমতা নেই।
........................
সামনে যা-ই থাকুক ট্রেন চলবে..................................................

.......................................................................................
আমাদের মাতৃগর্ভগুলি এই নষ্ট দেশে
চারদিকের নিষেধ আর কাঁটাতারের ভিতর
তবু প্রতিদিন রক্তের সমুদ্রে সাঁতার জানা
হাজার শিশুর জন্ম দেয় যারা মানুষ......

সংসারে এক সন্ন্যাসী এর ছবি

‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍চমত্কার, ভাবিয়ে-তোলা লেখা।

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
মৌমাছির জীবন কি মধুর?

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু? চিন্তিত

মনজুরাউল এর ছবি

সংসারে এক সন্ন্যাসী' র ভাবনা অন্য হাজার জনে সংক্রমিত হোক
----------------
ধন্যবাদ।

.......................................................................................
আমাদের মাতৃগর্ভগুলি এই নষ্ট দেশে
চারদিকের নিষেধ আর কাঁটাতারের ভিতর
তবু প্রতিদিন রক্তের সমুদ্রে সাঁতার জানা
হাজার শিশুর জন্ম দেয় যারা মানুষ......

আসিফ মোহাম্মদ আদনান এর ছবি

সত্য; চরম সত্য! কিন্তু আমরা এখনো পর্যন্ত নিশ্চিত কিংবা ফলপ্রসু কোন সমাধান খুঁজে বের করতে পারি নাই। বহু অর্থনীতিবিদ কিংবা বুদ্ধিজীবি বহু রকমের সমাধান দিয়ে গেছেন, কিন্তু আমরা বাংলাদেশীরা কখনোই একসাথে এগিয়ে যেতে পারি নাই। আমার কাছে একটা ব্যাপার খুব গুরুত্বপূর্ন মনে হয়; আমাদের আসলে "Mass Level Motivation" জাতীয় কোন ফর্মুলা প্রয়োগ করতে হবে। মানে কি করতে চাই এবং কার্য-কারন সমীকরণ প্রথমে জনগণকে বোঝাতে হবে। আরেকটি কথা, হতাশ হওয়া চলবে না (আমি নিজেকেও বলছি!); হতাশার লাগাম কষে বেঁধে রাখতে হবে।
সবার জন্য শুভ কামনা।

আকাশের সীমানা ভাঙ্গতে চাই!

ফারুক ওয়াসিফ এর ছবি

ভাই আদনান, এ কথা সবাই যদি ভাবতো যে, হতাশার লাগাম বাঁধার সময় এখনই। ভাল লাগল।
কিন্তু "Mass Level Motivation" এর কথা বলা থেকে আমার মনে হলো যে, দোষটা সাধারণ মানুষের, তারা বোঝে না বলেই সমস্যা হচ্ছে। তাদের আইন-কানুন-পাহারা-ড়্যাব-মিলিটারি দিয়ে আটকে রাখা হয়েছে। তাদের সংগঠিত হতে দেয়া হয় না। তাদের বন্দি অবস্থায় ভোট দিতে বলা হয়, আর কোনো উপায় না পেয়ে প্রদর্শনীর কোনো একটি চিড়িয়াকেই তারা ভোট দেয়। আবার তারা ভোট না দিলেও এরশাদ ১১ বছর আর ফখরুরা ২.৫+ শাসন চালাতে পারে।
কিন্তু যারা আমরা এদের টিকিয়ে রাখি, এদের মদদ দিই, এদের হয়ে তর্ক করি, নিজেদের প্রতিষ্টার জন্য এদের হয়ে কাজ করি এবং করতে করতে একসময় ওদের মতো করেই চিন্তা করি, মোটিভেশন তো তাদেরই দরকার। তাদেরই তো পথ দেখানো দরকার। ক্ষমতা নিম্নগামী, উপদেশও নিম্নগামী। কিন্তু দায় যদি আমাদেরই বেশি হয়ে থাকে, তাহলে আমাদেরই তা শুধতে হবে। সেই প্রস্তাব কই?
দেখলেন তো, আপনিও অনবধানতাবশত বলে ফেললেন এনজিও'র ধান্দাবাজি ভাষা, "Mass Level Motivation"

হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।

মনজুরাউল এর ছবি

আমরা একদিন পেট্রোল ঢেলে সব জ্বালিয়ে দেব....
আমরা একদিন পেট্রোল ঢেলে সব আগুন নিভিয়ে দেব..................

.......................................................................................
আমাদের মাতৃগর্ভগুলি এই নষ্ট দেশে
চারদিকের নিষেধ আর কাঁটাতারের ভিতর
তবু প্রতিদিন রক্তের সমুদ্রে সাঁতার জানা
হাজার শিশুর জন্ম দেয় যারা মানুষ......

আলমগীর এর ছবি

আমি মনে হয় বুড়ো হয়ে যাচ্চি! ছোট ছোট প্যারা না হলে খেই হারিয়ে ফেলি।

মনজুরাউল এর ছবি

বলেন কী ! অত উঁচু পাহাড় থেকে ঝাঁপিয়ে পড়তে চাইছেন ! শতায়ূ হোন ।
......................
সমস্যাটার কথা খেয়াল থাকবে।
ধন্যবাদ।

.......................................................................................
আমাদের মাতৃগর্ভগুলি এই নষ্ট দেশে
চারদিকের নিষেধ আর কাঁটাতারের ভিতর
তবু প্রতিদিন রক্তের সমুদ্রে সাঁতার জানা
হাজার শিশুর জন্ম দেয় যারা মানুষ......

ফারুক ওয়াসিফ এর ছবি

কথাটা মনে গেঁথে থাকবে, 'ও ভাই শুনছেন!'

সচলে আরেকজন ভগ্নদূত বাড়লো।
আমাদের ভাল থাকা তাদের খারাপ থাকার সঙ্গে সহিংসভাবে অবস্থান করে। এ সত্যের উপেক্ষাই আজকে সবচে বড় সন্ত্রাস, সবচে বড় জঙ্গিবাদ। মধ্যশ্রেণী তার প্রভুদের সঙ্গে মিলে সব কিছু খেয়ে নিতে, আর তাদের বাসনাই গু দিয়ে দেশটায় ভাসিয়ে দিতে মরিয়া। এদের ঠেকাবে কে? এদের থেকে ইতর শ্রেণীর পয়দা দুনিয়ায় আর কোথাও হয় নাই বোধহয়।

হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।

মনজুরাউল এর ছবি

এবং চিন্তার বিষয় হচ্ছে এই নাপতা ছেনাল শ্রেণীর কলেবর হুহু করে বাড়ছে। এই পরগাছারা এখন সব কিছুই দখলে নেওয়ার ফিকিরে রং বে রংয়ের দোকান খুলে বসেছে।................ধন্যবাদ ফারুক ।
--------------------------------------------------------
আমরা একদিন পেট্রোল ঢেলে সব জ্বালিয়ে দেব....
আমরা একদিন পেট্রোল ঢেলে সব আগুন নিভিয়ে দেব..................

.......................................................................................
আমাদের মাতৃগর্ভগুলি এই নষ্ট দেশে
চারদিকের নিষেধ আর কাঁটাতারের ভিতর
তবু প্রতিদিন রক্তের সমুদ্রে সাঁতার জানা
হাজার শিশুর জন্ম দেয় যারা মানুষ......

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।