পিআইও

মনজুরাউল এর ছবি
লিখেছেন মনজুরাউল (তারিখ: সোম, ১৮/০৮/২০০৮ - ৬:৪০অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

রিয়ার ভিউ : মহারাজা বললেন-বন্দির বাকস্বাধীনতা হরণ করা হইয়াছে?
আমর্ত্যবর্গ : আজ্ঞে মহারাজ।
মহারাজা : চিত্ কার স্বাধীনতা ?
আমর্ত্যবর্গ: আজ্ঞে মহারাজ।
মহারাজা: দর্শন-শ্রবণ স্বাধীনতা ?
আমর্ত্যবর্গ: আজ্ঞে মহারাজ।
মহারাজ বললেন, এইবার উহাকে ন্যায় বিচারের লক্ষ্যে সম্মূখে আনয়ন কর,এবং ন্যায় বিচার নিশ্চিত কর।
কারেন্ট ভিউ :রাষ্ট্রের প্রধান নির্বাহী:১৪৪ ধারা জারী করা হয়েছে?
আমর্ত্যবর্গ:ইয়েস স্যার।
প্র.নি: ওরা যে পথে যাবে সে পথ...
আ.ব: কাঁটাতারের ব্যারিকেড স্যার।
প্র.নি: জলকামান,রাবারবুলেট,টিয়ার,মৃদুলাঠি...?
আ.ব: ওয়েল ইক্যুইপড স্যার।
প্র.নি:নিরাপত্তা হেফাজতে...অলমোস্ট...?
আ.ব: ৭৫% কট,২০% দৌড়ের উপর,৫% ফিল্ডে স্যার।
প্র.নি: ওকে এন্ড ওভার।

ফিউচার ভিউ :প্রেসিডেন্ট/প্রধানমন্ত্রী:ওরা কি প্রগ্রাম থ্রো করেছে?
আ.ব: সবচে'বড় দলটা আগামী ৯ মাসের মাথায় একটা মিছিল দিতে পারে।
প্রে/প্র: তারপর ?
আ.ব: তারপরের দলগুলো পর্য়ায়ক্রমে ১৩মাস পর,১৮ মাস পর এবং২বছর পর মিছিল করা যায় কিনা সেই সম্ভনা নিয়ে ১১মাস পর গোলটেবিল করবে।
প্রে/প্র: ওকে এন্ড আউট।

বাংলাদেশে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা,জাতীয় হেফাজত,জনগণের জান-মালের নিরাপত্তা(!)দিতে সরকারের একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা রয়েছে।ডিবি,এসবি,এনএসআই,ডিজিএফআই,মিলিটারী ইন্টেলিজেন্স,কোবরা,চিতা,সোয়াত(অধুনা গঠিত) দিয়ে সরকার দুরমুশ,ষ্টিমরোলার চালিয়ে,জেল-জুলুম করে,হাত-পা
ভেঙ্গেচুরে,গৃহবন্দি করে, মাঝে মাঝে স্রেফ হাওয়া করে দিয়েও সরকার নিশ্চিন্ত হতে পারছে না। যুক্তরাষ্ট্র তাদের '৫৩তম স্টেটের'(!)আবহ আমেরিকানদের ফ্যাশেনেবল প্রসেশনের মত করবার জন্য টাকা-পয়সা ইক্যুইপমেন্ট দিয়ে স্বশরীরে ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থাও করে দিয়েছে।

এমনিতেই জরুরী আইনের রক্তচুক্ষুর ভয়ে বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলের পুরুষ নেতা-কর্মীরা চুড়ি পরেছেন,নারী নেতা-কর্মীরা পুলিশধর্ষকদের ভয়ে গৃহবন্দি। তথাকথিত নিপীড়িত জনগণের সোলএজেন্ট বামপন্থীরা লেজুড়ের ও লেজুড় হয়ে বত্সহারা গাভীর মত ফ্যাফেলিয়ে ঘুরছে। গত দেড় বছরে লাখ লাখ নিপীড়িত অত্যাচারিত মানুষ বাঁচার দাবি নিয়ে পথে নামতে পারেনি। গার্মেন্ট শ্রমিকরা যখনই নামতে গেছে তখনই সর্বস্তরের বাহিনী দিয়ে গেষ্টাপো কায়দায় দমন করা হয়েছে।

তা বলে আন্দোলন -সংগ্রাম আগামীতে হবে না সে ভরসা কোথায়? যদি হয় সেটা যেন অত্যাধুনিক পন্থায় নিমেশেই নির্মূল করা য়ায়, যেন দানাবাঁধার আগেই ছত্রভঙ্গ করে দেওয়া যায়, সে জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যক্ষ সহায়তায় নতুন এক গোয়েন্দা দল গঠন করা হয়েছে_ 'পলিটিক্যাল ইন্টেলিজেন্স অফিস ' বা পিআইও। রাজনৈতিক দল, ছাত্র ও শ্রমিক নেতাদের কর্মকাণ্ড, গতিবিধি সার্বক্ষণিক নজরদারি করতে এবং যে কোনো আন্দোলন দমাতে ঢাকা মহানগর পুলিশের একটি নতুন গোয়েন্দা সংস্থা গঠন করা হয়েছে। পলিটিক্যাল ইন্টেলিজেন্স অফিস (পিআইও) নামের এই নতুন গোয়েন্দা সংস্থার ২০ সদস্যের টিমকে দুই মাস আগে মাঠে নামানো হয়েছে। একজন সহকারী পুলিশ কমিশনারের অধীনে পিআইও ইতিমধ্যেই কাজ শুরু করেছে।

এই পিআইও সম্পর্কে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সমালোচনার সবচেয়ে মোক্ষম সমালোচনা এসেছে বেগম মতিয়া চৌধুরীর কাছ থেকে। তিনি বলেছেন--
'সরকারের রোডম্যাপ অনুযায়ী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বাকি মাত্র ৪ মাস। এ অবস্থায় জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার না করে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আতঙ্ক ছড়াতে ২০০৬ সালের একটি অধ্যাদেশ এখন বাস্তবায়ন করা হয়েছে। এতে বুঝা যায় 'কুম্ভকর্ণের' নিদ্রা ভঙ্গ হয়েছে। এর পেছনে নানা ষড়যন্ত্র থাকতে পারে। সরকার বড়ো বড়ো অপরাধ দমন করতে না পেরে রাজনৈতিক দলের পেছনে লেগেছে। ভোটের আগে লাঠিতে তেল দিচ্ছে, বন্দুকে গ্রিজ দিচ্ছে।'

মতিয়া চৌধুরী যা পারলেন কেন তাবড় তাবড় সব নেতারা তা পালেন না সেটা একটা জনগুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন বটে !


মন্তব্য

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

সমস্যা হলো এরপরে নির্বাচন হয়ে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় গেলেও তখন মতিয়ারা কিছু বলবেন না, তখন কথা বলবেন হাসিনারা এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সব কাজের বৈধতার প্রতিশ্রুতি হাসিনা বেগম অনেক আগেই দিয়ে রেখেছেন।

আপনার লেখা ভালো লেগেছে। অন্যরকম একটা গতি আছে।

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

মনজুরাউল এর ছবি

এই নিয়েই তো এ দুর্ভাগা মানুষদের বসবাস ! ঘুরে ফিরে সেই -
থোড় বড়ি খাড়া_খাড়া বড়ি থোড় ।

ধন্যবাদ।

.......................................................................................
আমাদের মাতৃগর্ভগুলি এই নষ্ট দেশে
চারদিকের নিষেধ আর কাঁটাতারের ভিতর
তবু প্রতিদিন রক্তের সমুদ্রে সাঁতার জানা
হাজার শিশুর জন্ম দেয় যারা মানুষ......

.......................................................................................
আমাদের মাতৃগর্ভগুলি এই নষ্ট দেশে
চারদিকের নিষেধ আর কাঁটাতারের ভিতর
তবু প্রতিদিন রক্তের সমুদ্রে সাঁতার জানা
হাজার শিশুর জন্ম দেয় যারা মানুষ......

মাহবুব লীলেন এর ছবি

১৫ ফেব্রুয়ারির ইলেকশন এবং সেই ইলেকশনে গঠিত ৬ষ্ঠ সংসদ কিন্তু কেউ বাতিল করেনি
করার কথা ভাবেওনি

ধানের জমিতে সমুদ্র থেকে বালতি দিয়ে জল তুলে এনে যখন চিংড়ি ঘেরে ৯ম সংসদ গঠিত হবে
তখন নবমের লোকজনতো বলবেই না
আর দশমে যদি অন্য কেউ যায় তবে নবমকে বলবে অতীতের সামান্য ঘটনা...

০২

কিন্তু আমাদের টিকে থাকা রাজনীতির শেষ অবলম্বন এখনও মতিয়া চৌধুরী...

মনজুরাউল এর ছবি

কিন্তু আমাদের টিকে থাকা রাজনীতির শেষ অবলম্বন এখনও মতিয়া চৌধুরী...

খুব খাঁটি কথা।
মতিয়া চৌধুরী প্রতিবাদ করতে পেরেছেন,কারণ তিনি 'পিআইও'কে ব্যবহার করার চেষ্টা করবেন না। তাবড় রা পারেননি,কারণ তারা ব্যবহার করবেন।

.......................................................................................
আমাদের মাতৃগর্ভগুলি এই নষ্ট দেশে
চারদিকের নিষেধ আর কাঁটাতারের ভিতর
তবু প্রতিদিন রক্তের সমুদ্রে সাঁতার জানা
হাজার শিশুর জন্ম দেয় যারা মানুষ......

.......................................................................................
আমাদের মাতৃগর্ভগুলি এই নষ্ট দেশে
চারদিকের নিষেধ আর কাঁটাতারের ভিতর
তবু প্রতিদিন রক্তের সমুদ্রে সাঁতার জানা
হাজার শিশুর জন্ম দেয় যারা মানুষ......

রণদীপম বসু এর ছবি

মতিয়া চৌধুরী যা পারলেন কেন তাবড় তাবড় সব নেতারা তা পালেন না

এবার উল্টো করে অর্থাৎ সঠিকভাবে দেখুন, উত্তর সহজ।
মতিয়া চৌধুরী অন্য নেতাদের চেয়ে ছোট নন, বরং তাদের চাইতে অনেক উঁচু মাপের। কিন্তু যোগ্য কদর পান নি, আমরা দেইনি তাঁকে। অতএব যা হবার তাই তো হচ্ছে..!

বর্তমানে যা চলছে, পৃথিবীর রাজনৈতিক ইতিহাসও মনে হয় তা থেকে ব্যতিক্রম নয়। এটাই রাজনীতির নিয়ম। রাজনীতি আর যুদ্ধে কোন তফাৎ নাই। আর তাই এখানে অন্যায় বলেও কিছু নাই।
অন্যায় হচ্ছে আমাদের মতো অসহায় আর অথর্বদের একটা নিরূপায় ধারণা মাত্র। এটা স্থান কাল পাত্র ভেদে পাল্টায় । এবং পাল্টাতেই থাকে।
ধন্যবাদ পোস্টের জন্য।

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

মনজুরাউল এর ছবি

রাজনীতি হচ্ছে রক্তপাতহীন যুদ্ধ
যুদ্ধ হচ্ছে রক্তপাতময় রাজনীতি।

.......................................................................................
আমাদের মাতৃগর্ভগুলি এই নষ্ট দেশে
চারদিকের নিষেধ আর কাঁটাতারের ভিতর
তবু প্রতিদিন রক্তের সমুদ্রে সাঁতার জানা
হাজার শিশুর জন্ম দেয় যারা মানুষ......

.......................................................................................
আমাদের মাতৃগর্ভগুলি এই নষ্ট দেশে
চারদিকের নিষেধ আর কাঁটাতারের ভিতর
তবু প্রতিদিন রক্তের সমুদ্রে সাঁতার জানা
হাজার শিশুর জন্ম দেয় যারা মানুষ......

সিরাজ এর ছবি

মতিয়া চৌধুরী যা পারলেন কেন তাবড় তাবড় সব নেতারা তা পালেন না সেটা একটা জনগুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন বটে !

দেখুন রাজনীতি এবং ভালবাসার মত আবেগ সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলোতে এ ধরনের ডিসক্রিট জাজমেন্ট অর্থহীন ও বিভ্রান্তিকর। মতিয়া চৌধুরী অন্য নেতাদের চেয়ে ছোট নন তো বটেই, তিনি ঐ দলের একটি স্তম্ভ। কিন্তু মতিয়া চৌধুরীর মত সত্, স্পষ্টবাদী এবং সোজাসাপ্টা লোক যদি দলনেত্রী হতেন তবে বহু আগেই হয়তো ঐ দল ভেঙ্গে ২৪ টুকরা হতো। রাজনীতিতে ব্যাক্তিগত উৎকর্ষতার চাইতে (এবং আপনার আমার মত সুবিধাবাদীদের বাহবা পাবার চাইতে) দলকে বড় রাখা এবং ব্যাপক জনগোষ্ঠীর বিশ্বাস ও সমর্থনই বড় কথা।

আপনার আমার মত অনেকেই ৭১এর আগে বঙ্গবন্ধুকে বলতো, মুজিব চাষা, জমিদারীর ঐতিহ্য নাই, ইংরেজী জ্ঞান নাই, সুট টাই পরতে জানে না, অক্সফোর্ড, কমেব্রিজ দেখে নি, ওর আবার রাজনীতির যোগ্যতা কি?

'পিআইও' বি-রাজনীতিকরনের একটি নয়া টুল মাত্র। আপনি আপনার লেখায় এই বি-রাজনীতিকরনের কারীগরদের সহযোগীদের নাম বললেও মূল উদ্দোক্তাদের কথা কিন্তু বলেননি!

:.:::....:..::..:.::...:.:.:...:.:..:..:::....::..:...:..:.:.:....:..:.:.:.:.
To see Photos Visit: www.sirajul.com

মনজুরাউল এর ছবি

মূল উদ্দোক্তাদের কথা কিন্তু বলেননি!

আমার এই অক্ষমতাটুকু আপনিই না হয় ঢেকে দিতেন...........

ধন্যবাদ।

.......................................................................................
আমাদের মাতৃগর্ভগুলি এই নষ্ট দেশে
চারদিকের নিষেধ আর কাঁটাতারের ভিতর
তবু প্রতিদিন রক্তের সমুদ্রে সাঁতার জানা
হাজার শিশুর জন্ম দেয় যারা মানুষ......

.......................................................................................
আমাদের মাতৃগর্ভগুলি এই নষ্ট দেশে
চারদিকের নিষেধ আর কাঁটাতারের ভিতর
তবু প্রতিদিন রক্তের সমুদ্রে সাঁতার জানা
হাজার শিশুর জন্ম দেয় যারা মানুষ......

ইয়ামিন এর ছবি

মনজুরাউল লিখেছেন:
এই নিয়েই তো এ দুর্ভাগা মানুষদের বসবাস ! ঘুরে ফিরে সেই -
থোড় বড়ি খাড়া_খাড়া বড়ি থোড় ।

ধন্যবাদ।

.......................................................................................
আমাদের মাতৃগর্ভগুলি এই নষ্ট দেশে
চারদিকের নিষেধ আর কাঁটাতারের ভিতর
তবু প্রতিদিন রক্তের সমুদ্রে সাঁতার জানা
হাজার শিশুর জন্ম দেয় যারা মানুষ......

আমাদের এক বাকবহুল ও বাকসর্বস্ব নেতা এখন আশ্চর্যজনকভাবে মুখে কুলুপ এঁটে বাকরুদ্ধ হয়ে বিদেশে ঘুরে বেড়াচ্ছেন, আর অপরজনকে কোন উপায়ে তার জেষ্ঠ্যপুত্রসহ আইনের ফাঁকগলে বের করে আনা যায় সে প্রচেষ্টা চলছে। তাদের সকলেই আজকের বাংলাদেশের এই অবস্থার জন্য কমবেশী দায়ী। আমাদের "সেনা সমর্থিত" দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিহাদী সরকারের ঈমানী জোশ হটাৎ করে কার ফুঁয়ে নির্বাপিত হল সেটি গবেষণার বিষয় বটে। তাদের সকল স্যাঙ্গাতরাও মোটামুটি ছাড়া পেয়ে যাচ্ছেন অবলীলায়, সহস্র অপকর্মের পরও। এতদিন তবে এই ইঁদুর-বেড়াল খেলার কি প্রয়োজন ছিল সে প্রশ্নের উত্তর কে দেবে? আজ দেখলাম হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ এক মাসে ৭৬ জনের জামিন দিয়েছে, এটা কি বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নাকি বিচার করার স্বাধীনতা সে ব্যাপারেও কারও কারও ধন্দ লাগতে পারে। এই অভাগা জাতির কপালে চিরকাল যেই লাউ সেই কদু!! আমরা উলুখাগড়ারা তবে কি চিরকাল প্রাণই দিতে থাকব??

নির্বাক

পলাশ দত্ত এর ছবি

ক্যানো যে আমি চিহ্ন দেওয়া শিখতে পারলাম না এখনো। একটু শিখিয়ে দেবেন?

এই লেখার মন্তব্যে শুধু একটা চিহ্ন দিতে ইচ্ছা করতেছে।।

==========================
পৃথিবীর তাবৎ গ্রাম আজ বসন্তের মতো ক্ষীণায়ু

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।