ডিটেকটিভ গল্প: সেলিব্রিটি প্রবলেমস ১০ (শেষ পর্ব)

জ্বিনের বাদশা এর ছবি
লিখেছেন জ্বিনের বাদশা (তারিখ: মঙ্গল, ১৪/০৮/২০০৭ - ৭:০৯পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

ভুঁইয়া টাওয়ারের ছ'তলার ওয়েইটিং রুমে বসে টিভি দেখতে দেখতে মিটিমিটি হাসছে হাসনাইন। এর মধ্যে পুলিশ ময়না তদন্তের জন্য পিয়ার লাশ নিয়ে গেছে হাসপাতালে; রেশমার মা এসেছিলেন ভুঁইয়া টাওয়ারে, তিনি পুলিশের সাথে গেছেন ঢাকা মেডিকেলে। রওনক আর সাথের মেয়েটিও চলে গেছে। তানিমকে যেতে দেয়া হয়নি, যেহেতু সে পিয়ার বয়ফ্রেন্ড ছিল, পিয়া সম্পর্কে কিছু তথ্য জানার জন্য, এরকম কথা বলে তাকে রেখে দেয়া হয়েছে। লুৎফা আর আখতারও চলে গেছে, হামিদ সাহেব, টুটুল আর লাবু ভাইকে থাকতে বলা হয়েছে। রেশমাকে থাকতে বলা হয়েছে নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে। গুলশান থানায় জেনারেল ট্রুপ থেকে ২/৩জন পুলিশকে আনানো হচ্ছে গ্রেফতার করার জন্য।

রাজু জানে যে একটু আগে জগলুকে নিয়ে হাসনাইন শর্টকাট সিঁড়ি দিয়ে পার্কিং পর্যন্ত গিয়ে দেখে এসেছে যে পাঁচমিনিটে খুন করে ফিরে আসা সম্ভব, বিশেষ করে তারুণ্যের গেস্টরুমটা সেই শর্টকাট সিঁড়ির খুব কাছে যেহেতু, তাই রেশমার জন্য কাজটা আরো সহজ। কিন্তু কথা হলো, এটা তো কোনভাবেই প্রমাণ করেনা রেশমাই খুনটা করেছে। কারণ, রেশমার বিরুদ্ধে মূল অভিযোগ একটাই, তা হলো সে গেস্টরুমে বসে গান না শুনে অন্য কিছু করেছে। কিন্তু তাতেই সে-ই খুনটা করেছে তা কিভাবে বলা যায়?

অথচ রাজু খুব অবাক হচ্ছে এই দেখে যে, হাসনাইন নিশ্চিন্ত মনে টিভিতে প্রভা রহমানের অনুষ্ঠানের পুনঃপ্রচার দেখছে আর মিটিমিটি হাসছে।

রাজু খানিকটা শংকিত হয়, সে ভাবে, 'হাসনাইন ভাই তো আসলেই একটু বোকা বোকা, কি না কি ব্যাড়াছ্যাড়া বাঁধিয়ে ফেলে!' একটু শংকিত চোখেই সে হাসনাইনের দিকে তাকিয়ে থাকে, কারণ হাসনাইন অলরেডী গ্রেফতার করার জন্য ফোর্স পাঠাতে বলে হাত-পা গুটিয়ে বসে আছে।

হাসনাইন রাজুর শংকিত চেহারাকে অগ্রাহ্য করে বলে, 'রাজু, আমি আসলেই দেখলাম, এমন কটকটে টিয়া শাড়ীতেও কিন্তু প্রভা রহমানকে বেশ ভাল দেখাচ্ছে! রেশমা ম্যাডামও একই কথা বলছিল। নাহ্, শোবিজ লাইনের এদের দেখার চোখ আছে। দেখ, মহিলাকে খারাপ দেখাচ্ছেনা কিন্তু!'

রাজুর হতাশা বাড়ে, তাও হাসনাইনকে সে সম্মান করে বলেই মাথা বাঁকিয়ে তাকায়, হুঁ হাঁ করে।

'কি? চমৎকার না?' হাসনাইনের গলা আরো সুখী সুখী হয়ে উঠে। সব কেমন রহস্যময় ঠেকে রাজুর কাছে এখনও, আর কালাম তো আগেই বিরক্ত।

বাড়তি পুলিশ তিনজন চলে আসলে হাসনাইন তাদের বাইরে রেখে তারুণ্যের অফিসে ঢোকে। হামিদ সাহেবকে বলে রেশমার সাথে স্টুডিওতে বসে কথা বলার অনুমতি নেয়, টুটুলকে বলে আজকের প্রোগ্রামের রেকর্ড করা সিডিটা নিয়ে নেয়। কানে হেডফোন দিয়ে সিডিটাকে ফাস্ট ফরোয়ার্ড করে এ্যাডজাস্ট করে, তারপর রেশমাকে বলে,
'চলুন, আপনার সাথে কিছু কথা আছে।'

'কেন? একটু আগেই তো আমার জবানবন্দী নিলেন?' রেশমা প্রতিবাদের স্বরে বলে।

'আমাদের যতবার ইচ্ছে জবানবন্দী নেবার অধিকার আছে।' হাসনাইনের গলা হঠাতই খুব নিষ্ঠুর, দয়ামায়াহীন শোনায়।

স্টুডিও রুমে ঢুকেই হাসনাইন কোন ভুমিকা ছাড়াই বলল, 'নিজের কাজিন, এতদিন ধরে একসাথে ছিলেন, এই মেয়েটাকে কেন খুন করলেন?'

'আপনি কি যা তা বলছেন? আপনাকে আমি ... আপনার নামে আমি মামলা করব! আপনি আমাকে অযথা অপমান করছেন, সবাই দেখছে।' রেশমা রাগ আর কান্নামাখা কন্ঠে বলে।

হাসনাইন ঠান্ডা গলায় বলে, 'আপনি যদি এমন উত্তেজিতভাবে কথা বলেন তাহলেই সবাই দেখে ভাববে যে আপনাকে আমি সন্দেহ করছি, তা নাহলে কেউ বুঝবেনা, ভাববে জবানবন্দী। সো, ম্যাডাম, শান্ত হোন।'

রেশমা থরথর করে কাঁপতে থাকে। তার ধারনা ছিল তাকে কোনভাবেই সাসপেক্ট হিসেবেও ভাববেনা কেউ; আর এখন এত সহজেই শুধু সাসপেক্ট না, একেবারে ক্রিমিনাল ভেবে ফেলেছে!

হাসনাইন আবার শুরু করে, 'ম্যাডাম, কারণটা বলে ফেলুন, এমনিতে অনেক রাত হয়েছে। আপনি যত তাড়াতাড়ি করবেন, সবার জন্য ততভাল। বাড়ী ফিরতে পারবে। বাই দ্য ওয়ে, আপনাকে আজ হাজতে যেতে হবে, বাড়ী ফিরতে পারবেননা।'

'আপনার ফাজলামো সব সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছে, মিঃ হাসনাইন।'

'কেন? আপনি কি ভাবছেন আমি আন্দাজের উপর এসব ধারনা করছি? শুনুন, খুনটা যে আপনি করেছেন সেবিষয়ে আমার বিন্দুমাত্র সন্দেহ নেই; এখন শুধু জানার বাকী, আপনি কেন করেছেন? হিংসা, লোভ, ঘৃনা নাকি প্রতিশোধের জন্য?'

'আচ্ছা? কেন আপনি গোয়ার্তুমি করছেন? বললাম তো আমি পিয়াকে অনেক আদর করি, আর ঐ লোকটা আমাদের পেছনে অনেকদিন ধরে লেগেছিল, এবং কালাম সাহেবই তো বললেন, অপরাধী হয়ত আমার কার্ডিগান দেখে পিয়াকে ভেবেছে আমি, খুনকরে ফেলেছে। আপনি কেন প্যাঁচাচ্ছেন?'

'কার্ডিগানটা কি আপনিই পিয়ার গায়ে তুলে দেননি? এটা তো আপনারই প্ল্যান ছিল।'

'হাহ্! আপনার কল্পনাশক্তি দেখে আমি অভিভূত। আপনি কি আমার এই কার্ডিগান পরানো দেখেই আমাকে সন্দেহ করেছেন?'

'নাহ, মোটেও তা না। আপনাকে গুছিয়ে বলি, একজন আপনাকে ফোনে, চিঠি দিয়ে উত্তক্ত করছে, আর আপনি সেসব দিন-তারিখ-মাস-বছরসহ ডায়রীতে টুকে রাখছেন মহা উৎসাহে -- এটা কি একটু অবান্তর ব্যাপার না? আপনি কি দেখাতে পারবেন এর আগেও আপনি ভক্তদের বা বখাটেদের উত্তক্ত করার ইতিহাস ডায়েরীতে টুকে রাখতেন?'

'ওহহো, এই কারণ? হাসনাইন সাহেব, আমার মেমরী খুব শার্প, আমি ডায়েরীতে প্রতিদিন টুকিনি, লোকটা আমাকে উত্তক্ত করা শুরু করার এক সপ্তার মাথায় আমি ঠিক করি যে পুলিশে জানাব, তাই তখন আগের এক সপ্তার সবকিছু ডেটওয়াইজ লিখি। এরপর সময় হয়নি পুলিশে জানানো, কিন্তু ডায়েরীতে লেখা চলেছে। যাস্ট দ্যাট !'

'আই সী, গুড পয়েন্ট!! এখন তাহলে বলুন ব্রেকের পাঁচ মিনিট কি করছিলেন? প্লিজ মিথ্যে কথা বলবেননা! আপনি গানটি শোনেননি?'

'কি বলছেন এসব, আমি গানটি শুনেছি; এটা ঠিক যে আমি পুরো শুনতে পারিনি এবং শেষ লাইনের আগের লাইনে একটা ভুল আমি লিরিক্সে করেছি। আপনি কি সেজন্য ভাবছেন আমি শুনিনি? হি হি হি, এমন ভুল তো হয়ই!'

'সিডিটা আপনার কাছে আছে ম্যাডাম?' হাসনাইন সবজান্তার হাসি দেয়।

'আছে। আমার ব্যাগেই রেখেছি।'

'বের করে দেখুনতো খুলে।' হাসনাইন মিটিমিটি হাসে।

ব্যাগ থেকে সিডির বাক্স বের করে সেটা খুলে দেখে রেশমার নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারেনা। সে হতভম্বভাবে বলে, 'এটা কিভাবে সম্ভব!'

হাসনাইন ঠোঁটে ক্রুর হাসি ঝুলিয়ে বলে, 'স্যরি ম্যাডাম, ওটা আমার দোষ ছিল। আপনার সিডি দুটো শুনতে গিয়ে আমি পাল্টে রেখেছিলাম, অনেস্টলি বলছি, মনের ভুলে পাল্টে রেখেছি। পরে আপনি যখন সিডি নিয়ে বেরিয়ে গেলেন, তারপর মনে পড়ল আমি কি ভুলটা করেছি। কিন্তু আপনি সেটা নিয়ে কাউকে কিছু বলেননি! সেখান থেকে আমি ধরে নিতে পেরেছি যে আপনি গানটি শুনেননি, মানে সিডির বাক্সই খোলেননি। কিন্তু আপনি বারবার বলেছেন যে আপনি গানটি শুনেছেন। এথেকেই প্রমাণিত হয় আপনি মিথ্যা বলছেন, আপনি লুকোচ্ছেন ঐ সময় আপনি কি করছিলেন।'
হাসনাইন দম না নিয়েই কথাগুলো বলে।

রেশমার মুখ ফ্যাকাশে হয়ে যায়, সে খুব দ্রুত ভাবতে থাকে কি বলা যায়। কিন্তু পরমুহূর্তেই নিজেকে স্বাভাবিক করে নিয়ে তারপর বলতে থাকে, 'আচ্ছা এখন আমি আপনাকে যে কথাটা বলব এটা শুধু আপনার আর আমার মধ্যে থাকবে, ওকে? তাহলে বলতে পারি। এটা কি সম্ভব?'

'তদন্ত রিপোর্টে তো যাবেই, তবে সেটা কেউ জানবেনা।'

'তাহলে বলি শুনুন, আমার মোবাইলটায় আসলে রেডিও ধরা যায়। আমি সেই সময় টয়লেট থেকে গেস্টরুমে আসার পর ভাবলাম ধুরো গানটা তো অনেকবার গেয়েছি রেকর্ডিংয়ের সময়, এখন বরং রেডিও ধরে প্রভা রহমান কেমন গায় শুনে দেখি। তারপর মোবাইল রেডিও টিউন করে প্রভার গানটা শুনলাম।' বলে রেশমা বেশ কড়া আবেদনময়ী এক হাসি দেয়।

'ওহ, তাই? এটা সবাই জানলে ভাববে আপনি প্রভার ভক্ত, তাই বলতে চাচ্ছিলেননা?' হাসনাইনের গলা কিছুটা আপ্লুত।

'আরে নাহ, ভক্ত না। একটু চেক করা আর কি! বিট অভ রাইভাল ফিলিংস!! কিন্তু প্রভাকে আমি রাইভাল ভাবি জানলে লোকে আমাকে কি ভাববে?' রেশমার গলা বেশ স্বাভাবিক হয়ে আসে।

'তা ঠিক। তবে আপনি একদম ভাববেননা। প্রভার গানের প্রতিভা আপনার ধারেকাছেও নেই, অনেস্টলি।' হাসনাইন বলে যায়।

'ওয়াও, হোয়াট আ কমপ্লিমেন্ট, থ্যাংক্যূ।' রেশমার মুখে মিষ্টি হাসি।

'কিন্তু সমস্যাটা হলো, ম্যাডাম, আপনি আপনার ক্যারিয়ার নিয়ে আর এগুতে পারবেন কিনা?' হাসনাইনের গলা আবারও শীতল হয়ে এল।

'কেন?' রেশমাকে কিছুটা হতভম্ব শোনায়, 'আমার অসুবিধা কি?'

'কারন, এমন পরিকল্পিত খুনের শাস্তি সাধারণত ফাঁসি। আর আপনি সেলিব্রিটি, আপনার ক্ষেত্রে এটা পাবলিক হয়ে যাবে, আপনাকে বাঁচানো কঠিন হবে।'

'আপনি আবারও কি শুরু করলেন!! আমি বললামনা আমি রেডিও শুনছিলাম।'

'আপনি কি প্রমাণ করতে পারবেন আপনি রেডিও শুনছিলেন?' হাসনাইন বলেই মিটিমিটি হাসল।

'কিন্তু আপনিই কি প্রমাণ করতে পারবেন এটা দিয়ে যে ঐ সময় আমি রডিও না শুনে খুন করছিলাম? আমি যাস্ট আমার নতুন গানটা শুনিনি! ব্যাস!! আর তো কিছুনা, আপনি প্যাঁচচ্ছেন কেন?'

'হুমম, তা ঠিক আমি প্রমাণ করতে পারবনা। তবে আপনি মনে হয় প্রমাণ করতে পারবেন যে আপনি ঐ সময় প্রভা রহমানের গান শুনেছিলেন।' হাসনাইন আবার ক্রুর হাসি ঝোলায়, বলতে থাকে, 'কারণ, আপনাকে যদি আমি বা অন্য কোন ইনভেস্টিগেটর জিজ্ঞেস করে প্রভা ঐ সময়টাতে ঠিক কোন গানটা গাইছিলেন, সেটা বলতে পারলেই তো প্রমাণ হয়, তাইনা? আপনার কি মনে আছে ঐ সময় প্রভা কোন গানটা গাইছিলেন?'

রেশমার মুখে বিজয়ীর হাসি, সে কনফিডেন্স নিয়ে বলে, 'অবশ্যই মনে আছে, তখন সে 'ঘুম ঘুম চাঁদ' হারানো দিনের গানটা গাইছিল। কি? এবার খুশী তো?'

হাসনাইন চোখ স্বাভাবিক করে জিজ্ঞেস করে, 'গুড! তাহলে তো আপনি পার পেয়ে যাবেন। তবে রেডিওর অনুষ্ঠান চলাকালে আপনি লুৎফা ম্যাডামকে বলছিলেন, গানের চেয়ে প্রভা রহমানের সাজ আপনার বেশী ভাল লেগেছে, তাইনা?'

'নাহ্, সাজ মোটেও ভাল হয়নি; তবে এমন কটকটে টিয়া ড্রেস আর এমন চকমকে সোনালী এক্সেসরীজের পরও তাকে বেশ ভাল লাগছিল, এটা বলটেই হবে। দেখে আমি শুধু ভেবেছিলাম, আমি পরলে কেমন দেখাত? উফফ্, হরিবল্! মেয়েটা আসলেই সুন্দর' রেশমা বলে যায়।

'তাই না? টিয়া শাড়ী আর সোনালী চকমকি! আসলেই তো! জঘন্য লাগার কথা।'

'মিঃ হাসনাইন, ওটা শাড়ী না, ওটা লেহেঙ্গা। আমরা একনজর দেখেই বুঝে ফেলি।' বলেই রেশমা দুহাতে মুখ ঢেকে ফেলল। তার দুচোখ আতংকিত হয়ে গেছে।

হাসনাইন যেন ঠিক এই মুহূর্তটারই অপেক্ষায় ছিল, সেই ক্রুর হাসি, সেই সবজান্তা চেহারা, সেই শীতল গলা সব ফিরে এল, 'এই তো লাইনে এসেছেন। গেস্টরুমে কি টিভি আছে?'

'আছে নিশ্চয়ই, আমি তো সেখানেই দেখলাম।'

'আপনি না মোবাইলে শুনলেন প্রভার গান? শুনু ম্যাডাম, গেস্টরূমে কোন টিভি নেই, ইনফ্যাক্ট তারুণ্যের অফিসেই টিভি নেই। টিভি আছে শুধু ওয়েইটিং রুমে। আপনি যখন গেস্টরুমে, আমি তখন ওয়েইটিং রুমে, কালামও ছিল জগলুও ছিল। আপনাকে আমরা কেউই সেখানে আসতে দেখিনি, আপনিও ঐ পাঁচ মিনিট ছাড়া তারুণ্যের অফিস থেকে বেরোননি। রাইট?'

রেশমা নিশ্চুপ।

হাসনাইন বলে গেল, 'তাহলে আপনি প্রভা রহমানের টিয়া রঙের সাজ দেখলেন কোথায়? আবার শাড়ী না লেহেঙ্গা সেটাও দেখলেন কোথায়? তাও আবার একনজর? রেডিওতে তো তার কটকটে সাজ নিয়ে কিছুই বলেনি, শুধু গান শুনিয়েছে।'

রেশমা করুণ চোখে তাকিয়ে থাকে হাসনাইনের দিকে। কিন্তু তারপরপরই নিজেকে সামলে নিয়ে বলে, 'আমি অনুষ্ঠান শেষ হবার পর একটু আগে ওয়েইটিং রুমে একবার উঁকি দিয়েছিলাম। তখন দেখেছি টিয়া রঙের লেহেঙ্গা।' তার গলায় শেষ প্রচেষ্টার সুর।

'নাহ, আপনি এখন প্রভা রহমানের পোষাকের রং কিভাবে জানেন সেটা নিয়ে আমি কোন প্রশ্ন তুলিনি।' হাসনাইনের গলার আত্নবিশ্বাস বেড়ে যায়, সে বলতে থাকে, 'কিন্তু রেডিও অনুষ্ঠান প্রচার হবার সময় আপনি সেটা কিভাবে জানতেন?'

হাসনাইনের মিটিমিটি হাসি রেশমার অসহ্য লাগে। সে বিরক্তভাবে বলতে থাকে, 'এমন ইডিয়টের মতো হাসছেন কেন? আমি তো তখন জানতামনা তার ফ্যাশন সম্পর্কে!'

হাসনাইন পকেট থেকে একটা সিডি বের করে সেটিকে দেখিয়ে বলতে থাকে,'টুটুল ভাইর কাছ থেকে আজকের অনুষ্ঠানের রেকর্ডেড সিডিটা নিয়েছি; আপনি আর মিস লুৎফা প্রভা রহমানকে নিয়ে কথা বলছিলেন। আপনি কি সেই কথোপকথন শুনবেন? চালু করে শোনাব?'

রেশমার হঠাৎ মনে পড়ে যায়, লুৎফা যখন বারবার তার মুখ থেকে প্রভা রহমানের গান কেমন এটা জানতে চাইছিল, তখন সে প্রভার গানের প্রশংসা না করে, রূপের প্রশংসা করেছিল, উৎকট সাজেও যে প্রভাকে সুন্দর লাগে সেকথা বলছিল। তার সারাশরীর হিম হয়ে আসে, এই মুহূর্তে সামনে দাঁড়ানো হাসনাইনকে তার সাক্ষাৎ শয়তান মনে হয়, এই লোকটা সবকিছু মনে রাখে কিভাবে?

হাসনাইন নির্বিকারভাবে বলে যেতে থাকে, 'গার্ডম্যানের কাউন্টারের জানালা দিয়ে রুমের অন্যপাশে থাকা টিভির পর্দা পুরোটাই চোখে পড়ে; মুসলিম আজ সারা সন্ধ্যাই টিভির দিকে তাকিয়েছিল, ইন ফ্যাক্ট প্রতিদিনই সে তা--ই করে। সে যখন প্রভা রহমানের গান দেখছিল, আপনি তখন তার জানালার পাশ দিয়ে পা টিপে টিপে যাচ্ছিলেন পার্কিংয়ে, টিভিতে গান গাইতে থাকা প্রভা রহমান আপনার চোখে পড়ে যায়। এছাড়া আর কোন উপায়ে আপনি তাকে দেখবেন,বলুন?'

রেশমা মাথা নিচু করে থাকে।

হাসনাইন বলে, 'গ্লাভসটা কোথায় রেখেছেন? আমাদের তদন্তের কাজে লাগবে।'

রেশমা নার্ভাসভাবে বলে, 'একটু পরে দিই।'

হঠাৎ রেশমার কাতর চেহারা দেখে হাসনাইনের কষ্ট হয়, এক মুহূর্তের জন্য তার মনে হয় এখনও ব্যাপারটা সে নিজে ছাড়া আর কেউ জানেনা। সে চাইলেই মেয়েটিকে বাঁচিয়ে দিতে পারে, হয়ত এর বিনিময়ে মেয়েটিকে সে সারাজীবনের জন্য পেয়ে যেতেও পারে। রাজুকে বললেই তো হবে, রেশমা তখন মোবাইলে গান শুনছিল, রাজু তো কটকটে টিয়া শাড়ীর কমেন্টের কথা জানেনা। হাসনাইনের একটু ভাল লাগতে শুরু করে।

কিন্তু পরমুহূর্তেই তার মনটা আবার খারাপ হয়ে যায়, এটা তার স্বপ্ন ছিল! গোয়েন্দা হবে, অন্তত একটা হলেও রহস্যের সমাধান করবে। আজ সে তার স্বপ্নপূরণ করতে পেরেছে, এখন আসামী যত সুন্দরীই হোকনা কেন, আসামীর প্রতি তার আকর্ষণ থাকুক বা না থাকুক, সেই কৈশোর থেকে পেলে আসা স্বপ্নকে তো সে ফেলতে পারবেনা! স্বপ্নের জয় হবে, নাকি আকর্ষণের? হাসনাইন কয়েকমুহুর্ত চিন্তিত থাকে, তারপরই তার মনে হয়, 'স্বপ্ন ছাড়া মানুষ বাঁচে কিভাবে, স্বপ্ন দেখতে পারে বলেই তো মানুষ আর সব জীবের চেয়ে আলাদা।'

রেশমা কাতরচোখে হাসনাইনের দিকে চেয়ে থাকে, মৃদুস্বরে বলে, 'হাসনাইন সাহেব, একটা কথা বলি?'

'বলুন'

'আপনার নিশচয়ই বন্ধুবান্ধব খুব কম?'

হাসনাইন হাসতে হাসতে বলে, 'আপনারও কি তাইনা?'

রেশমা হঠাৎ প্রচন্ড আকুতি নিয়ে বলে, 'আমার বন্ধু হবেন? সারাজীবনের জন্য, খুব ভাল বিশ্বস্ত বন্ধু?'

হাসনাইন নির্বিকার হয়ে তাকিয়ে থাকে রেশমার দিকে, রূঢ় শীতল গলায় বলে, 'না'।

রাত সাড়ে বারোটার দিকে রেশমাকে ধরে নিয়ে যায় পুলিশ। হাসনাইনের আর তর সয়না কখন আগামীকাল সকাল নয়টা বাজবে। জানতে হবে কেন এই ভয়াবহ খুনের পরিকল্পনা করেছে রেশমা? কি দোষ করেছিল পিয়া? পিয়ার মৃত্যুর পর রেশমা যদি ধরা না পড়ত তাতে তার কি লাভ হতো? তার সাথে কি আর কেউ ছিল কিনা এই হত্যাপ্রকল্পে? তবে সে কাহিনী আজ না, পরে আবার কখনও সময় হলে সে কাহিনী বলব।

## গল্পটি একটি বিদেশী গল্পের ছায়া অবলম্বনে লেখা

(সমাপ্ত)


মন্তব্য

জ্বিনের বাদশা এর ছবি

যাক! অবশেষে একটা সিরিজ নামাতে পারলাম! হাসি
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

নজমুল আলবাব এর ছবি

মিয়া লাস্টে আবার কি গল্পের ইঙ্গিত দিলেন? এখন সেটা বলেন। এমনিতেই এই সিরিজ পড়তে গিয়া টেনশনে ছিলাম এখন আবার দিলেন আরেক টেনশন। তাড়াতাড়ি কাহিনি বলেন।

গল্পটা পড়ে দারুন ভাল লেগেছে। আরামবোধ করেছি জনাব কাজি জ্বিনের বাদশা হাসি

ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল

জ্বিনের বাদশা এর ছবি

ধন্যবাদ, নজমুল ,,, অনুপ্রেরণা পাচ্ছি

শেষে কাহিনী একটু ঝুলিয়ে রাখলাম আরকি ,,, হে হ হে ,,,পুঁজিবাদী দুনিয়া বলে কথা চোখ টিপি
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

আহ!
পুরাটাই লেমন জুস।
শেষের চমকটা দারুন। আর আত্মরক্ষার যে চেষ্টা রেশমা করলো, তেমনটা এক ব্লগারকে দেখেছিলাম ব্লগ বিতর্কে। আমার খালি হাসি পায়। নিজের দোষ কতোই আর ঢাকা যায়? হা হা।
ভ্রাত: উপদেশ কিংবা পরামর্শ যা-ই বলেন, শেষের কাহিনীটা নিয়ে আসেন। ডিটেইলের রসদ রেডি করে ফেলেছেন। খালি একটু লম্বা করবেন, ঘটনাগুলো দিন সপ্তায় চলে যাবে। তারপর সোজা প্রকাশকের টেবিলে। সেবা প্রকাশনী ফার্স্ট চয়েজ। এনিওয়ে, বইমেলা ২০০৮ এ প্রকাশ দাবী করছি। আমি অগ্রিম ৩ কপির অর্ডার দিয়ে রাখলাম।
সবশেষে, সুন্দর সিরিজের জন্য শুভেচ্ছা।

ঝরাপাতা এর ছবি

বোকা ডিটেকটিভই শেষ পর্যন্ত ফাটায়া দিলো রে। ভালো লেগেছে। কিন্তু কেন খুন করেছে সেটা না বলাটা মহাঅন্যায় হয়েছে। এই অন্যায়ের দন্ড হচ্ছে অতিসত্ত্বর নুতুন পোস্ট দেয়া।


রোদ্দুরেই শুধু জন্মাবে বিদ্রোহ, যুক্তিতে নির্মিত হবে সমকাল।


বিকিয়ে যাওয়া মানুষ তুমি, আসল মানুষ চিনে নাও
আসল মানুষ ধরবে সে হাত, যদি হাত বাড়িয়ে দাও।

ঝরাপাতা এর ছবি

যখন প্রভা রহমানের গান দেখছিল, আপনি তখন তার জানালার পাশ দিয়ে পা টিপে টিপে যাচ্ছিলেন পার্কিংয়ে, টিভিতে গান গাইতে থাকা প্রভা রহমান আপনার চোখে পড়ে যায়। এছাড়া আর কোন উপায়ে আপনি তাকে দেখবেন,বলুন?'

এই জায়গাটাতে কাহিনিটাকে দৃর্বল মে হয়েছে। রেশমা যখন খুন করতে যায় তখন নিখুঁতভাবে প্রভা রহমানের ড্রেস আপ খেয়াল করাটা একটু কেমন যেন। কারণ পাঁচ মিনিটে তাকে কাজটা শেষ করতে হবে। সেসময় তার মনোযোগের পুরোটা জুড়ে থাকার কথা গার্ড আর সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করার ভাবনা।


রোদ্দুরেই শুধু জন্মাবে বিদ্রোহ, যুক্তিতে নির্মিত হবে সমকাল।


বিকিয়ে যাওয়া মানুষ তুমি, আসল মানুষ চিনে নাও
আসল মানুষ ধরবে সে হাত, যদি হাত বাড়িয়ে দাও।

জ্বিনের বাদশা এর ছবি

শিমুল, ঝরাপাতা, মোরশেদ ভাই, অতিথি, আপনাদের স্পেশ্যাল থ্যাংকস পুরো সিরিজটাধৈর্য্য ধরে পড়ে, কমেন্ট করে উৎসাহ দানের জন্য

শুভ ভাই বলছিলেন একবার, একেকটা কমেন্ট একটা সন্তানের মতো ,,এখন কিছুটা অনুভব করতে পারি ,,,একেকটা কমেন্ট দেখলে মনটা ভীষন খুশী হয় ,,, এজন্যই হয়ত মানুষ লেখে

শিমুল, আপনার "ঘটনাগুলো দিন সপ্তায় "নেয়ার পরামর্শটা পছন্দ হয়েছে ,,, যদি শুধু হত্যার কারণ নিয়ে নতুন পর্ব লিখি এটা ফলো করব, অনুমতি নিয়ে নিলাম ,,,তবে আমি এখন আরেকটু প্যাঁচাতে চাচ্ছি ,,,প্লট চিন্তা করছি যেটা একটু কঠিন মনে হচ্ছে ,,,যুতসই প্লট দাঁড় করাতে না পারলে হত্যার কারণ নিয়ে লিখব
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

জ্বিনের বাদশা এর ছবি

ঝরাপাতা, চমৎকার সমালোচনা ,,

আসলে এটা দেখাতে চেয়েছি যে রেশমা তো শোবিজ লাইনের ,,, টপ লেভেলের 'সাজুনে বুড়ি' তাই ,,,এরা সাধারণত প্রথম দর্শনেই মানুষের ফ্যাশনটাই যে দেখে সেটা বোঝাতে চাইছিলাম

এ প্রসঙ্গে একটা মজার অভিজ্ঞতা শেয়ার করি,
সেদিন বউয়ের সাথে বসে বিয়ের এ্যালবাম দেখছিলাম ,, একটা ছবি দেখে আমি বললাম, 'অমুক তো খুব সুন্দর করে শাড়ী পরেছে!'
বউ বলে, 'আরে ধুরো! এটা শাড়ি না তো, লেহেঙ্গা'
আমি আবারও চেক করলাম, বললাম, 'কিভাবে লেহেঙ্গা হয়, পুরা শাড়ীর মতো দেখাচ্ছে'
তারপর আর যাই কোথা বাবা, সে পুরো দশ মিনিট ধরে শাড়ী লেহেঙ্গার পার্থক্য বয়ান করল ,,,এক কান দিয়ে ঢোকে অন্য কান দিয়ে ,,, হে হে হে ,,,তখন সে দাবী করল, এসব নাকি একনজরেই বোঝা যায় ,,,!!!

আমার অজ্ঞতায় বউকে বিরক্ত দেখে মিনমিনিয়ে বললাম, 'কি করব বলো? আগে তো কখনো মেয়েদের পোষাক অত ভালভাবে খেয়াল করিনি'

জীবনে আর লাগে কি, বউ তো মহাখুশী ,,,কতক্ষণ পরে বলে, 'চা খাবে?' চোখ টিপি

তো সেই অভিজ্ঞতা থেকে রেশমাকে এক নজরেই বুঝিয়ে দিলাম লেহেঙ্গা ,,, আর টিয়া রং কটকটে
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

আমার অজ্ঞতায় বউকে বিরক্ত দেখে মিনমিনিয়ে বললাম, 'কি করব বলো? আগে তো কখনো মেয়েদের পোষাক অত ভালভাবে খেয়াল করিনি'
জীবনে আর লাগে কি, বউ তো মহাখুশী ,,,কতক্ষণ পরে বলে, 'চা খাবে?'

ভ্রাত: এরকম ছোটোছোটো ঘটনাগুলো নিয়ে একটা সিরিজ চালু করেন তো। আমরা যারা আগামীতে দিল্লীর লাড্ডু খাবো, তারা যেনো চা-ও খেতে পারি। হাসি

জ্বিনের বাদশা এর ছবি

শিমুল,
সে দায়িতৃ অন্য বিবাহিতদেরও নিতে হবে ,,, চোখ টিপি
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

মুহম্মদ জুবায়ের এর ছবি

পুরোটা শেষ করলাম। মাঝখানে মন্তব্য করা হয়নি, কাহিনীর টানে পরের পর্বে চলে গেছি।

তিনটি অভিনন্দন

১. লেখাটা শেষ করেছেন। বলেছেন প্রথমবারের মতো সিরিজ পুরো করলেন। এবার নিশ্চয়ই আত্মবিশ্বাস বাড়লো। কিছুদিন আগে একটা সিরিজ উপন্যাস শুরু করেছিলেন, এবার সেটা চাই। অবশ্য তার আগে অন্যদের সঙ্গে আমারও দাবি সেলিব্রিটি প্রবলেমস-এর পরের পর্ব।

২. এই লেখাটা ভালোভাবে সম্পূর্ণ করেছেন। গল্পের বিন্যাস, ঘটনাক্রম এবং চরিত্রগুলোর বৈশিষ্ট্য দাঁড় করানো ভালো হয়েছে। আপনার গল্পের পরিসর বেশি না হলেও এর মধ্যেই কাজগুলো মুনসিয়ানার সঙ্গে করেছেন।

৩. লেখাটা লিখতে আপনাকে কোনো কষ্টই করতে হয়নি মনে হলো। সাবলীল গতি ছিলো। সঙ্গে টেনে রাখার কৌশলের ঠিক প্রয়োগ।

মহিলাদের পর্যবেক্ষণ শক্তি নিয়ে আমার অভিজ্ঞতা দিয়ে শেষ করি। দুই ভদ্রমহিলা গল্প করছেন। যথারীতি তৃতীয় এক মহিলার প্রসঙ্গ এলো। তুললেন প্রথমজন। দ্বিতীয়জন ঠিক মনে করতে পারলেন না ওই তৃতীয়জনকে। প্রথমজন বছর চারেক আগের এক পার্টির কথা উল্লেখ করে তৃতীয়জনের শাড়ির রং এবং বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করতেই দ্বিতীয়জনের মুখ উজ্জ্বল হয়ে উঠলো, হ্যাঁ হ্যাঁ মনে থাকবে না?!

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

নজমুল আলবাব এর ছবি

শয়তানী হাসি

এই হাসিটা জুবায়ের ভাইয়ের ছয় লাইনের গল্পের জন্য...

আজ নয় গুন গুন গুঞ্জন প্রেমের, চাঁদ ফুল জ্যোছনার গান আর নয়

জ্বিনের বাদশা এর ছবি

অসংখ্য ধন্যবাদ জুবায়ের ভাই, এরকম মন্তব্যতো প্রেরণা জোগাবেই। হাসি
এখনও সেলিব্রিটি প্রবলেমসের অবশিষ্টাংশের প্লট নিয়ে চিন্তা করছি, দাঁড় করিয়ে ফেলব শিগগিরই।
"এখানে ওখানে"ও ধরতে হবে ,,, মাই গড!

৬ লাইনের গল্পটা, ঝাক্কাস!
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।