মুহূর্ত নির্মিতি

মুজিব মেহদী এর ছবি
লিখেছেন মুজিব মেহদী (তারিখ: শুক্র, ০৭/১২/২০০৭ - ৩:১৩অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

৬ নভেম্বর ১৯৯৫। বাসে করে ঢাকা থেকে খুলনা যাচ্ছি, জীবনে প্রথম। ওটাই প্রথম অত দীর্ঘ ভ্রমণ আমার। কবিতার সাথে তখন মাত্র অর্ধযুগের দহরম মহরম। যা দেখি তাই সুন্দর লাগে ধরনের বয়স। পরবর্তী জীবনের অভিজ্ঞতায় দু'য়েকটা বিশেষ ব্যতিক্রমী অঞ্চল ছাড়া গোটা দেশের ভূ-প্রকৃতিকেই প্রায় একইরকম মনে হলেও, সেবার আমার চোখে বৈচিত্র্যের আর শেষ ছিল না যেন। বাসের জানালাগুলো খুবই চঞ্চল হয়ে উঠেছিল একজোড়া তৃষ্ণার্ত চোখের নাচুনিতে। বসেছি একপাশের জানালায়, কিন্তু বারেবারেই মনে হচ্ছিল, আহা, ওপারে বুঝি অদেখা রয়ে যাচ্ছে কোনো বিরল সুন্দর! বাসের যাত্রীদের মধ্যকার কেউ কেউ যাত্রার খানিক পর থেকেই সশব্দে ঘুম যাচ্ছিল, আমার পোড়াচোখের ওই দুর্মতি ছিল না। বরং এ জানালা থেকে ও জানালা, এই বাম তো এই ডান, এই আবার সম্মুখ। এর মধ্যেই কখন যে কাগজ-কলম বের করে নিয়েছিলাম খেয়ালই করতে পারি নি। এটা ওরকম বয়সেই সম্ভব। এখন তো মাথায় কবিতা কিলবিল করলেও জনসমক্ষে কাগজ-কলম বের করে লিখে ওঠা হয় না কিছুই। মাত্র যুগটাক ব্যবধানেই মানুষ কত বদলে যায়! কিন্তু সেবার, মনে পড়ে, যশোর অবধি গিয়ে খাতার পাতার শাদাকে অন্ধকার এসে একেবারে গ্রাস করে নেবার আগপর্যন্ত অসম্বিত থেকে আসা একটা তাড়না আমাকে দখল করে রেখেছিল। সেবার যেটুকু আঁকিবুকি করা সম্ভব হয়েছিল, এক দশকাধিকাল সেটা আঁচড়মুক্তই থেকে গিয়েছিল। কৌতূহলবশত পাণ্ডুলিপির স্তূপ ঘেটে খসড়াটি নতুন করে পড়তে গিয়ে ওই মুহূর্ত নির্মিতির প্রতি একটা প্রেমবোধ আঁচ করতে পারি। আদি ও আসল নকশামালার কোনো বিকৃতি না-ঘটিয়ে একাধটু চুনকাম সহযোগে খসড়াটির প্রকাশোদ্যোগের নেপথ্যে ওই প্রেমবোধটিই একমাত্র বিলাস। আশ্চর্য হবো না যদি পাঠকদের কেউ কেউ আদৌ কোনো সংবেদনের বালাইটিই এতে খুঁজে না পান। মানুষের মধ্যকার সৌন্দর্যধারণার বৈচিত্র্য ও রুচিবৈভিন্ন্যের প্রতি আস্থা ও শ্রদ্ধা জ্ঞাপনের মানসিকতা এ লেখকের আছে।

সাভার : জল ও হাওয়া
কালীগঙ্গায় বিনাশী ঢেউ।
বাতাসপ্রবর এসে
দু'হাতে সরালো বস্ত্র জলের দেবীর।
কামাতুরা দেবী বিছায়ে দিলেন
তার ভেজাদেহ, জলের শয্যায়।
কে একজন বেরসিক
অসময়ে উড়িয়ে আনলে ধুলো
লগন বিফল হয়ে গেল।

মানিকগঞ্জ ১ : কুড়ানি
অবসর ফুরিয়ে গেছে, এদিকে এখন মাড়াই।
এখন শুধু মাঠ, এখন শুধু সোনা।
দারুণ ঠাণ্ডায় হিম হয়ে যাচ্ছে
ঘরের গরম ভাত।

পেছনে ডাকলে কেউ ফিরে তাকাবি না
বয়ে গেল বয়ে যায় হিজা কুড়াবার বেলা।

মানিকগঞ্জ ২ : স্নানক্রিয়া
স্নান একটা শিল্প, যদিও স্নানার্থী জানে না
অন্যে দেখে মহিমা বাড়ায়
জলের আদরে ফোটে ফুল
সুগন্ধ ছড়ায়।

প্রাণীদের এটি চিরকালই শৌখিন ক্রিয়া।

সাটুরিয়া : একা এবং অন্য একজন
হিজল বিলের মধ্যিখানে একাগাছ
ডালে এক দলছুট ভিংরাজ পাখি।
পাখি বলে-- গাছ হে, কষ্ট কি কিছু ?
গাছ বলে-- পাখি হে, জগত্সত্য শোনো
দলে থাকলেও একাকিত্ব ছোটে পিছুপিছু।

মহাদেবপুর : ভালোবাসা
ঝুলব্রিজে পারাপার, তবু
আমাদের টোল-ট্যাক্স নেই।
হাসতে, হাসাতে জানি
কথা জানি ভালোবাসিবার।

ভালোবাসা পৃথিবীর, জেনো
সমুদয় সীমানা ডিঙোবার বিলাস টিকিট।

শিবালয় ১ : দূরত্ব
শুধু অসঙ্গতি শুধু বিচ্ছিন্নতা, তাই
শিবালয়ে ঢুকেছি এসে অলিঙ্গ প্রাণী
আমাকে পূজছে যারা তারাও অযোনি।

শুধু বিচ্ছিন্নতা শুধু অসঙ্গতি
নিজেকে আড়াল করে
বাওড়ে ভিড়ল এক
নাও বৈঠাহীন।

শিবালয় ১ : ইছামতি
বোন ইছামতি, শীর্ণা মেয়ে ওহে!
এত ভালোবাসা শিখলে কোথায় ?

বুক ভরা মাঝি, বুক ভরা শুধু নাও।

তোমার নদীতে শুনি কতই জোয়ার ?
এবারটা খোলো তবে মনের দুয়ার।

আরিচা : পারস্পরিকতা
চলো ইলিশ হই পদ্মায় ভাসি
থৈ থৈ জল ঝিকমিক।
চলো স্রোত হই বয়ে চলি
ঝাটকা হই কাঠের পাটাতনে।
চলো চিল হই উড়ি
শিকার নেশায় করি বাতাস ভজন।

চলো নিচে নামি
ডুবে যাই দু'জনে দু'জন।

দৌলতদিয়া : নদীর ঔরস
জেলে নাও ঝিরঝির
চলমান জালের পতন।
ও নদীরে...
ভাণ্ডে তোর মণিমুক্তারাজি
বহু গোপন সম্পদ।
স্রোতে যে সাঁতরায় সে নদীর সন্তান
নদীর ঔরস বড়ো ভীষণ ধেয়ানি।

গোয়ালন্দ : গান
সবুজিমা ছেড়ে আমরা লালে এলাম
মাঝে জলের প্রবাহ, স্রোত।
পথঘাট মেতে আছে কর্মসংগীতে,
আমরাও।

সবুজের এপারে লাল, লালের ওপারে সবুজ
আমার ওপারে সে, তার এপারে আমি।

লাল দুঃখ ও সবুজ আনন্দে মাখামাখি
পালাগান
তুমি সবখানে আছ।

আহ্লাদীনগর : পথ
ইংরেজি 'এস' আকৃতির পথ ঘেঁষে খেজুরের বন
গুড়ের গন্ধে আড়াল খসে পড়ে।
যারা মাছির সওদাগর তাদের এ আহ্লাদীনগর।

আমার 'এম' আমার সম্পূর্ণ সত্তার।
ইন্ডিগো ইন্ডিগো গ্রাম এবং রাজশাহীর আম
ম্যাঙ্গো থেকে আরেকটা 'এম' নিয়ে
তোমার বুক চিরে রচিত হলো
আমার দারুণ পথ-- এসএম অ্যান্ড এম।

রাজবাড়ি : নাম
তুমি ক্রমে দূরে সরে যাচ্ছ, আমি যাচ্ছি
আমাদের শুধু চলা দুই বিপরীত দিকে।

তুমি যার সাথে মিশেছো, আমিও মিশেছি। পুড়েছো
তুমি যার প্রেমে, আমিও তারই...

আমরা একই মানুষের দুই ভিনগামী নাম।

কেশবপুর : শালিক
শালিক নামছো শালিক উড়ছো
আমি যাচ্ছি কাছ দিয়ে তার।
চেয়ে দেখো সুনয়না
সুনাসিকা সুদন্ত সুঠোঁট
চেয়ে দেখো পাতিহাঁস।

একদিন পায়ে ছিলাম, আজ পাখায়
ফের একদিন তোমার আলসদৃশ সিঁথিপথে
হাঁটব একাকী।

কানাইপুর : ধন্ধ
এদিক তাকালে ওদিকে গুমোট অন্ধকার
একজন খুশি তো অন্যে বেজার।
এক আখড়ায় দু'পির চলে না।

এ বনে পাখি তো ও বনে বাঁদর
এদিকে আনন্দ ওদিকে উল্লাস
ওদিকে বেদনা এদিকে বিষাদ।

একসঙ্গে দু'জনের হওয়া যায় না বলে
আবারো আসতে হবে ফিরে।

মধুখালী : বিনিময়
এবার শুধু দেখব, খাব না।
এবার শুধু শুঁকব, চাটব না।

এবার শুধু সর্ষেক্ষেত, তেল না।
এবার শুধু আখক্ষেত, গুড় না।

এবার শুধু বালিকা, নারী না।
এবার শুধু কোমলা, পাকা না।

আসো সবটা দেই, আসো সবটা নেই
আসো বিনিময় করি।

কামারখালী ১ : সম্পর্ক
মেঘের আঁড়ে লুকাচ্ছ সূর্য কালো ঘোমটায়
কবে এমন নতুন হলে যে লাজ করছো।

আসো খেলি আলো আলো খেলা
আসো হাঁটি পায়েচলা পথ।

দারুণ হোঁচটে উলটিয়ে নোখ
আসো একে অন্যের পা বেঁধে দেই
রক্ত মুছি।

কামারখালী ২ : বার্তাবাহক
মধুর সুভাণ্ড তুমি মধুমতি কারে পেতে চাও ?
কার লাগি ঘর বাঁধো জমিজিরাতের প্রেমে ?

কার লাগি রাতদিন কাঁদো ?
তোমার সে কোথায় থাকে, কী করে ?
খুব বুঝি ব্যথা দেয়, নেয় না খবর ?
তিনমাস সাথে শুয়ে নয়মাস বাঁকে বাঁকে ঘোরে
টই টই ?

কখনো সমুদ্রে গেলে
তোমার খবর ঠিক পৌঁছে দেব আমি।

মাগুরা : সুলতান
মাগুর মাছের পেট থেকে নেমে গেছে
তোমার বাড়ির দিকে পথ।
চিত্রা নদীর ছেলে তুমি রঙিন স্বপ্নচারী
মাছের পেটে তোমার নাম লেখা আছে।

পেশিপুরুষ সমুদ্র সুলতান
না-বলে সহসা বেড়াতে গিয়েছ কোন নদে ?

আমরা তো কেঁদে কেঁদে কাদা।

ঝিনেদা : পাপ
ছায়া ঢাকা পাখি ডাকা নির্জন বাহারি নীড়
শীতল সবুজ মাখা।

নদী নেই জলগুলো ঘোলা
তবু গাছের প্রাচুর্যে ভাবি
এ শহর আত্মীয় আমার।

সোনাগুলো রঙ পাচ্ছে মাঠে মাঠে
তার দেহে বিলি কেটে সামনে গেলাম।
পরনারী আমাদের হাতছানি দিল।

যশোর : অন্ধকার
অন্ধকারের ভিতর দিয়ে যাচ্ছি
যেটি আলোর যৌনাঙ্গ এবং পিচ্ছিল ভয়ানক।

শুধু যাচ্ছি, আসছি না
আসা-যাওয়া একত্রে হলে রেতঃপাত ঘটে
এটি কখনো সখনো দুর্ঘটনারূপী
আর দুর্ঘটনাও চিরকাল পিছলপ্রিয় হয়।


মন্তব্য

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

দুর্দান্ত আইডিয়া। মানিকগঞ্জের স্নানকবিতার শানে নুযূলটা একটু দেন। বাংলা ছবিতে এই শিল্পকে পুরা অশলীল বানিয়ে ফেলে!
আরিচারটা সবচে' ভালো লেগেছে।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

মুজিব মেহদী এর ছবি

প্রতিটি খণ্ডের শানে নযুল যাতে আলাদা করে বলতে না হয়, সেজন্যই শুরুতে অত বকবক করেছি। এরপরও যদি আপনি জানতে চানই তাহলে এটি ছাড়া আর কীই-বা বলার আছে যে পথিপার্শ্বের এক জলাশয়ে একজন সোমত্তাকে খুবই ডোন্ট-কেয়ার ভাব নিয়ে স্নান করতে দেখেছিলাম, যার থেকে সৌন্দর্য ছিটকে বেরোচ্ছিল রশ্মিপ্রায়। অজস্র রশ্মিরই একটি এসে আঘাত করেছিল আমার পোড়াচোখে। আর তাতেই ওই কয়েক লাইন।
...................................................................
অসংখ্য 'নেই'-এর ভিড় ঠেলে
জ্বলজ্যান্ত 'আছে' খুঁজে পাওয়া হলো আসল ফকিরি

... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ...
কচুরিপানার নিচে জেগে থাকে ক্রন্দনশীলা সব নদী

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

এইবার শানে নুযূল পূর্ণতা পাইলো। শুরুর আলোচনায় খালি অ্যাবস্ট্রাক্ট কথাবার্তা।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

হাসান মোরশেদ এর ছবি

আমি বরং 'ঝিনেদা'র কথা জিগাই । পাপ কেন হে কবি?

স্থানের জন্য এই সংবেদন-ভালো লাগলো ।

-----------------------------------------
মৃত্যুতে ও থামেনা উৎসব
জীবন এমনই প্রকান্ড প্রচুর ।।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

মুজিব মেহদী এর ছবি

খুবই ন্যায্য প্রশ্ন। এখন আবার করে পড়ে দেখলাম, কিন্তু ওই খণ্ডের শরীর কিছুতেই 'পাপ' নামটিকে গ্রাহ্য করছে না। তাহলে এল কোত্থেকে, কেন? স্মৃতি হাতড়ে দেখলাম, সম্ভাব্য একটা ব্যাখ্যা আছে এর। সাহস করে বরং বলেই ফেলি।
ময়মনসিংহের বাইরে সমবয়সী যে ক'জন কবির সঙ্গে আমার/আমাদের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক হয়, তাঁদের মধ্যে ঝিনেদার টোকন ঠাকুর (মহীন মৃত্তিক, ঈষৎ মৃত্তিক ইত্যাদি গোটা দশেক নাম ছিল ওর)ও একজন। তখন ও লিখত মহীন মৃত্তিক নামে। ততদিনে ও ময়মনসিংহে এসে আমাদের সঙ্গে দেখা করে গেছে। আমরা ওর শহরে যাব বলে কথা দিয়েও যেতে পারি নি। নিয়মিত চিঠি চালাচালি হয়। লেখাপত্র নিয়ে কথা হয়। পরস্পরকে আমরা তুই সম্বোধন করি। তো, এমন ঘনিষ্ঠ বন্ধুর জন্মশহরের উপর দিয়ে যাচ্ছি অথচ ওকে মিট করতে পারছি না এটা কেবল অপরাধ বলেও মানা যায় না, এজন্যেই হয়ত ঘটনাটা 'পাপ' অভিধা পায়। এ শহর আত্মীয় আমার কেবল গাছের প্রাচুর্যের কারণে যে নয়, তা বলতেই পারি। ঝিনেদার সাথে আত্মীয়তার আর কোনো সূত্র ততদিনে, এমনকি এতদিনেও স্থাপিত হয় নি আমার।

পুনশ্চ: এখন আমরা দু'জনই ঢাকায় পরস্পরের খুব কাছাকাছি থাকি, কিন্তু ওরকম দুর্মর টান আর কেউই হয়ত বোধ করি না। মাঝে মাঝে এমনি এমনি দেখা হয়, খুচরো কথাবার্তা হয়। ফোনালাপ হয়। এই যা।

...................................................................
অসংখ্য 'নেই'-এর ভিড় ঠেলে
জ্বলজ্যান্ত 'আছে' খুঁজে পাওয়া হলো আসল ফকিরি

... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ...
কচুরিপানার নিচে জেগে থাকে ক্রন্দনশীলা সব নদী

হাসান মোরশেদ এর ছবি

এরকম একটা চর্চা ছিলো একদা ।
ই-মেইল,মোবাইল ফোন তো আর আসেনি তখনো । চিঠি চালাচালি হতো । চিঠির মাধ্যমেই জানাশুনা,বন্ধুত্ব গড়ে উঠতো । সময় সুযোগ সামর্থ্যে কুলোলে বন্ধুর বাড়ী ঘুরে আসাও হতো ।
আমি ময়মনসিংহে গিয়েছিলাম একবার এরকম গড়ে উঠা বন্ধুদের এক আড্ডা চক্রে । বোধ ক্রি সেটা '৯৬ । কুমিল্লা,চট্রগ্রামে ও গিয়েছি । সিলেটে ও আসতো অনেকে ।
যেনো বড় দ্রুত বদলে গেলো সবকিছু ।
ভালো লাগলো জেনে ।
-----------------------------------------
মৃত্যুতে ও থামেনা উৎসব
জীবন এমনই প্রকান্ড প্রচুর ।।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

মুজিব মেহদী এর ছবি

'৯৪ পর্যন্ত দুপুরে একটা পুড়ি আর রাস্তার কলের ফ্রি পানি খেয়ে রাত পর্যন্ত ময়মনসিংহ শহরের পথেঘাটেই পড়ে থাকতাম। '৯৬ এ আমি রীতিমতো চাকুরিজীবী, তাই দেখা হয় নি। নইলে আপনার শ্রীমুখ আমার অদেখা থাকত না হয়ত।
ময়মনসিংহের কার কার সাথে আপনার যোগাযোগ ছিল?
আমি সিলেটে গেছি '৯৬ ও ২০০০-এ। তখন শুভেন্দু ইমাম, মোস্তাক আহমাদ দীন, শামীম শাহান, শাহ শামীম আহমেদ, এটি এম আহমেদ কায়সার প্রমুখের সঙ্গে দেখা হয়েছিল, আড্ডা হয়েছিল। আহমদ মিনহাজ, আহমেদুর রাশীদ, মাহবুব লীলেন, জফির সেতু, পাঁশু প্রাপণ এঁদের সঙ্গে দেখা করতে চেয়েও পারি নি। দুর্ভাগ্য আমার। ঢাকায় আহমেদুর রশীদ, মাহবুব লীলেন ও জফির সেতুর সাথে পরে বহুবার দেখা-কথা হয়েছে। মিনহাজকে এখনো মুখোমুখি পাই নি। খুবই জ্ঞানী মানুষ তিনি।
এখন তো মনে হচ্ছে আপনাকেও মিস করেছি।
...................................................................
অসংখ্য 'নেই'-এর ভিড় ঠেলে
জ্বলজ্যান্ত 'আছে' খুঁজে পাওয়া হলো আসল ফকিরি

... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ...
কচুরিপানার নিচে জেগে থাকে ক্রন্দনশীলা সব নদী

হাসান মোরশেদ এর ছবি

কায়সার প্রায় ছোটবেলার বন্ধু । লীলেন ভাই,সেতু ভাই খুব কাছের মানুষ । শাহান ভাই ও । বাকী সবাই ও ঘনিষ্ঠজন । হুম মিনহাজ এর মতো প্রাবন্ধিক এ সময়ে ক'জন আছেন ,কে জানে? ভীষন প্রচারবিমুখ ভালো মানুষ ।

ময়মসিংহে যে বন্ধুর বাড়িতে গিয়েছিলাম ও লেখক নয় কিন্তু ফটোগ্রাফার হিসেবে তুমুল নাম করেছিল সে সময় । অভিজিৎ সাহা রাজু । একদম শহরেই । গলিটার নাম মনে হচ্ছেনা এখন ।

মুজিব ভাই,আপনে তো দেখি সিলেটীদের স্বজন হাসি । এটা বেশ ব্যতিক্রম চোখ টিপি
-----------------------------------------
মৃত্যুতে ও থামেনা উৎসব
জীবন এমনই প্রকান্ড প্রচুর ।।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

আহমেদুর রশীদ এর ছবি

পুরনো স্মৃতি উসকে দিলেন।
আমার পরিচয় হয়েছিল ভ্যান জিভান / জুপিটার টোকন এর সাথে। বেশ কিছু চিঠি চালাচালি হয়েছিল।যেবার সে ঢাকা এলো,আসার আগে চিঠি লিখেছিল-ঢাকা আসছি।বই মেলায় দেখা হবে।সেই দেখা আজো হয়ে উঠেনি।যদিও আমি তারে দেখি.........................................................

***কবিতা গুলো জোস লেগেছে।

---------------------------------------------------------

ঘাস তুমি ঘাসের মতো থাকো মাটি ছুঁয়ে
যে দেখার সে নতজানু হয়ে ছুঁবে তোমার আঙুল
অবরুদ্ধ মাঠ থেকে তুমি লাফিয়ে নেমোনা প্লিজ পাথরের পথে
________________________________________
http://ahmedurrashid.

মুজিব মেহদী এর ছবি

রশীদ ভাই, আপনি তো ওর আরো দু'টো নাম মনে করিয়ে দিলেন।
নাম পালটানোর খেলা ওর টোকন ঠাকুরে এসে থেমে গেল রীতিমতো।
জানেন তো, এখন কবিতার চেয়ে ও ফিল্ম নিয়েই বেশি ব্যস্ত।
...................................................................
অসংখ্য 'নেই'-এর ভিড় ঠেলে
জ্বলজ্যান্ত 'আছে' খুঁজে পাওয়া হলো আসল ফকিরি

... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ...
কচুরিপানার নিচে জেগে থাকে ক্রন্দনশীলা সব নদী

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।