বাইকুজ্বর ও তার আরোগ্যার্থ প্রেসক্রিপশন
হাইকু, বাংলায় যাকে বলা যায় ক্রীড়মান পদ্য, জাপানের এক বিশেষায়িত কাব্যআঙ্গিক। আকৃতির দিক থেকে জানাশোনার মধ্যে এটিই পৃথিবীর সর্বাপেক্ষা ছোটো কবিতা। উনিশ শতকের শেষদিকে হক্কু নামে সমধিক পরিচিত এই কাব্যআঙ্গিকের হাইকু নামটি দেন জাপানি লেখক মাসাউকা শিকি (১৮৬৭-১৯০২)। প্রথাগতভাবে একটি উ ...
লিখতে বসে অনুভব করি জানলাপথে বাতাস বয়ে আনছে পাণিনির অষ্টাধ্যায়ী ব্যাকরণের বিচ্ছিন্ন পাতা, সাথে হেমশব্দানুশাসন, বোপদেবের মুগ্ধবোধ, চান্দ্র ব্যাকরণ... এমন ব্যাকরণপ্রবাহে ভেসে যেতে যেতেও আজকাল মূকতাই শ্রেয়জ্ঞান করি, শুদ্ধ শব্দ-বাক্য আশা করলে একদল লেখক কেবল মারতে আসা বাকি রাখে, বলে যে পশ্চাৎপদ, এই ভয়ে আজকাল একটুও না-পড়ে ছিন্ন পাতা, ধরে ধরে ভাঁজ করে ১৮ খণ্ড ‘রবীন্দ্র-রচনাবলী’র পাশে ...
টিভি খবর ইতোমধ্যে দু'দুটো গণকবর আবিষ্কারের ব্যাপার নিশ্চিত করেছে। প্রথম আলোর সর্বশেষ সংবাদ বলছে এর একটিতে বিডিআরের ডিজিসহ ৪০ জন এবং অন্যটিতে ৩২ জন সেনাকর্মকর্তার লাশ পাওয়া গেছে। এছাড়াও ম্যানহোল ও সেনা কর্মকর্তাদের বাসা থেকেও লাশ পাওয়া যাচ্ছে। একাত্তরে রাজাকার-আলবদর-আলশামসের যোগসাজশে পাকবাহিনী...
মাত্র মঙ্গলবার রাতে আমাদের সাড়ে এগারো বছর বয়সী একমাত্র ছেলে মুহম্মদ জাফর ইকবালের 'মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস' পড়তে পড়তে জিজ্ঞেস করেছিল, 'শরণার্থী কী?' যথাসম্ভব জবাব দিয়েছিলাম, সে বুঝেও নিয়েছিল বলে ধারণা করি। নইলে বৃহস্পতিবার বিকেলে তিনজনে পায়ে হেঁটে ধানমণ্ডি ছেড়ে পালাবার সময় সে হয়ত আমাদের পরিণতির সাথে শরণার্থী হওয়া ব্যাপারটাকে মিলিয়ে নিতে পারত না।
বুধবার থেকেই খুব উদ্বিগ্নতার ম ...
আমার দুটো নতুন বই চিরপুষ্প একাকী ফুটেছে ও সটোরি লাভের গল্প ৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মেলায় আসে নি। প্রতিদিন প্রকাশক অ্যাডর্ন ও পাঠসূত্রের স্টলে গিয়ে খোঁজ নেই, ভিতরে একটা অধীরতা কাজ করে, বাইরে প্রকাশ হতে দেই না। এরকম সময়ে নিজের আরেকটি বইকে অন্যের নামে ছাপা অবস্থায় দেখা চরম বেদ...
চীন দেশের এক বৃদ্ধা এক ভিক্ষুকে বিশ বছরেরও অধিক কাল সাহায্য-সহযোগিতা দিয়ে আসছিলেন। তিনি তাকে একটি ছোট কুটির বানিয়ে দিয়েছিলেন এবং ধ্যানাবস্থায় তাকে খাইয়ে পর্যন্ত দিতেন। একসময় বৃদ্ধার সাধ হলো এটা যাচাই করে দেখতে যে এতটা সময়ে ভিক্ষুর কী এমন অগ্রগতি হলো।
অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছুতে তিনি এক বালিকার সহায়তা নিলেন। বললেন, ‘‘ওর কাছে যাও ও আলিঙ্গন কর। এবং হঠাৎ তাকে জিজ্ঞেস কর, ‘এখন কী হবে...
কবিতা লিখতে লিখতে প্যাচপেচে কাদা ও মার্সগ্যাসযুক্ত জলাজংলা পেরিয়ে গিরগিটির সামনে পড়েও তেমন অস্বস্তি হয় নি, ভরদুপুরে যেদিন ‘যৌনতা’ বিশেষ্যের সামনে গিয়ে পড়লাম, চিনতে শিখলাম ওর ক্রিয়াভিত্তি, সেদিনই উঠল গা-টা কাঁটা দিয়ে, লজ্জায় এমন জবুথবু অবস্থা হলো যে স্কুল-মিস্ট্রেসের চোখের দিকেও তাকানো গেল না
সেসব দিনে আপনজন থেকে পালিয়ে আমার নিগূঢ় ভূতের সাথে লড়ে যেতে হতো নিশিদিন, সবাই শুধু জ...
একটা পথের শেষে আরেকটা পথ নয়
পুরানো পথের ধুলায়ই বুঝি শরীর রঞ্জিত হলো
তোমার সমূহ ছুঁয়ে থেকে আরেকটা আকাশ বিহার
হলো না বিশেষ
একটা পাতার সবুজে নিবিষ্ট হয়ে
দেখতে দেখতে পুরোটা জীবন প্রায় ক্ষয়ে গেল
পরিধি ডিঙিয়ে কোনো নবোদিত ঠিকানা খোঁজার
সামর্থ্য হলো না
খুঁটি পোতা একটা খাসির মতো ঘুরে ঘুরে
মাঠের ছালচামড়া শুধু উঠিয়ে চলেছি
এক প্রখ্যাত আধ্যাত্মিক সাধক একদিন এক রাজপ্রাসাদের সদর দরজায় এসে পৌঁছলেন। কোনো দ্বাররক্ষকই তাঁকে থামাবার চেষ্টা করল না। তিনি তাঁর ইচ্ছেমতো ভিতরে প্রবেশ করলেন এবং সোজা সিংহাসনে আসীন রাজার সামনে গিয়ে দাঁড়ালেন।
রাজা তৎক্ষণাৎ তাঁকে চিনতে পেরে বললেন, 'আপনার জন্যে আমি কী করতে পারি ?'
'আমি এই সরাইখানায় খানিক বিশ্রাম নিতে চাই', সাধক বললেন।
রাজা অল্প নাখোশ হলেন। বললেন, 'কিন্তু এটা তো...
সবকিছু ফুরালে বসে বাতাস গুনছি-- কোনটা তোমার কানের গা ঘেঁষে এল, কোনটা দূরের বাঁশি, কেশগুচ্ছ তার সুর পান করে বেঁচে থাকে
এই ভরা দুপুরবেলায় বাতাসের যত বাতচিৎ বাঁশঝাড় ঘেঁষে, কাছে দাঁড়ানো ছিলাম বলে ঝরাপাতাদের কাছে সেসবের ঠিকঠাক নোটিশ করেছি, তা না হলে পাতার বেদনা সব থেকে যেত তথ্য-অন্ধকারে, উড়ে উড়ে যেখানে পড়ত গিয়ে, সেখানেই ছড়াত যে, কোনোকালে মিথ্যার সুদীর্ঘ লেজে কেউ আগুন দেখে নি
কথিত গান...