আমাদের সাইকেল ভ্রমনের ইতিবৃত্ত - ০২

কীর্তিনাশা এর ছবি
লিখেছেন কীর্তিনাশা (তারিখ: বুধ, ২২/১০/২০০৮ - ৪:২৮অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

মাওনা থেকে ময়মনসিংহ :

২য় দিন সকাল ছয়টায় আবার যাত্রা শুরু হলো। মাওনা থেকে ময়মনসিংহ ৬০ কিলোমিটারের মতো দূর। রোদ তেতে ওঠার আগেই, ক্লান্তি এসে শরীর গ্রাস করার আগেই, আমরা যত বেশি পথ পাড়ি দেয়া যায় তার চেষ্টা চালালাম। দ্রুত গতিতে চলল আমাদের সাইকেল। দিনের শুরুতে পেশীগুলো বেশ আড়ষ্ট লাগলেও অল্প সময়ের মধ্যেই সব ঠিক হয়ে গেলো। সাইকেল চলল উল্কার গতিতে। নয়টার আগেই ভালুকা পৌঁছে গেলাম। সকালের নাস্তা করার জন্য থামলাম একটা হোটেলের সামনে। তাজা ফল, ডিম ভাজি, পরোটা, মিষ্টি, চা দিয়ে জম্পেশ নাস্তা সেরে বাইরে এসে দেখি বরাবরের মতো আমাদের সাইকেল ঘিরে উৎসুক জনতার ভিড়। সবার সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করে আমাদের পোষ্টকার্ড গিফট করে এগিয়ে চললাম ত্রিশালের দিকে। খুব ইচ্ছে ছিলো দেশের একমাত্র কুমির প্রজনন কেন্দ্রটা দেখে যাবো। ভালুকা থেকে ১৭ কিলোমিটার দূরে হাতিবেড় গ্রামে রেপটাইলস ফার্ম লিমিটেড নামে এ প্রতিষ্ঠানটি আছে। নিরাপদ বেষ্টনি ঘেরা এই ফার্মের ১৪টি পাকা পুকুরে মালয়শিয়া থেকে আমদানি করা কুমির পোষা হয়। পথে পথে ছড়িয়ে রেখে এলাম অনেক দীর্ঘশ্বাস। সব দেখতে গেলে এ ট্যুর আর ৫ দিনে শেষ করা হবে না।

ত্রিশাল প্রায় ২৫ কিলোমিটার দূর। ত্রিশালের পরেই ময়মনসিংহ শহর। গন্তব্য যতই নিকটবর্তী হচ্ছে ততই আমাদের উত্তেজনা বাড়ছে। দুপুরের মধ্যে আমরা ত্রিশাল পৌঁছে গেলাম। মধ্যহ্ন ভোজন এখানে করতে চেয়ে বিপদেই পড়লাম। খাবার হোটেল আর খুঁজে পাই না। আজব ব্যাপার, ত্রিশালে একটা ভালো খাবার হোটেল নেই, বিশ্বাসই করা যায় না। যা মোটামুটি দু’একটা আছে তা আবার ঈদের কারনে বন্ধ। শেষ পর্ষন্ত যেন-তেন মানের একটা হোটেলে কোনমতে খাওয়া সেরে ছুটলাম ময়মনসিংহ শহরের উদ্দেশ্যে। আমাদের আজকের দিনের শেষ গন্তব্য। মনে হলো উড়ে চলছে আমাদের সাইকেল। যদিও পাঁচ কিলোমিটার পর পর কিছুক্ষনের জন্য বিরতি নিয়েছি কিন্তু তারপরেও প্রথম দিনের তুলনায় বেশ ভালোই এগিয়ে চলল আমাদের যাত্রা।

বিকেলের আলো নিভে যেতে শুরু করেছে তখন। দিনের ক্লান্ত দেহ রাতের বিছানায় বিশ্রাম নেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। আমাদের সাইকেল শত কিলোমটার পাড়ি দিয়ে আসা পথের কাহিনী বুকে চেপে শহরের রাস্তায় চাকার দাগ রেখে এগিয়ে চলেছে। রাত কাটাতে আমরা আশ্রয় নিলাম ময়মনসিংহ শহরের এক হোটেলে। আমাদের পরের দিনের যাত্রা বিরিশিরি অভিমুখে।

(এ পর্যন্ত লিখেছেন - সৈয়দ আখতারুজ্জামান)

---------------------------------------------------
এবার আমি কিছু বয়ান করি :

মাওনা থেকে ময়মনসিংহ পুরো রাস্তাই ছিল নয়নাভিরাম। কোথাও দিগন্ত বিস্তৃত ধানেক্ষেতে সবুজের সমারোহ, কোথাও বা বড় বড় ঝিলের বুকে বকের উড়াউড়ি। খিরু নদী সহ আরো ছোট ছোট দুটো নাম না জানা নদী পেড়িয়েছি, সেগুলোও ছিল সুন্দর। তবে গতির তাড়নায় থামতে পাড়িনি অনেক জায়গায়। ছবিও তুলতে পাড়িনি তাই সে সব জায়গার। তারপরও ছবির ভান্ডার আমাদের কম নয়। পুরো ভ্রমনকালে আমরা আড়াই হাজারের মতো ছবি তুলেছি, আমাদের ছোট্ট ডিজিটাল ক্যামেরায়। এ পর্বেও যতগুলো পাড়ছি তুলে দিলাম।

রাস্তা কিন্তু মোটেও নিরাপদ ছিল না। এমনিতেই সরু রাস্তা। তার ওপরে গাড়িগুলো সব শাঁ শাঁ করে উড়ে চলছিল। বিশেষ করে বাসগুলো, সাইড দেবার কোন বালাই নেই, ওভারটেকের কোন সময় অথবা নিয়ম নেই - জওয়ানির জোশে চালাও খালি ! মাঝে মাঝে এমনও হয়েছে কয়েক ইঞ্চির জন্য আমরা বেঁচে গেছি। অথবা সাইকেল নিয়ে ধানেক্ষেতে কিংবা পাশের ঢালু স্থানে নেমে গিয়ে নিজেদের রক্ষা করেছি। এসব অবশ্য আমাদের ভ্রমনকে আরো রোমাঞ্চকর করে তুলেছে। বাসগুলো যে কত বেপরোয়া ভাবে চলে তার নিদর্শন নিচের ছবিগুলোর মধ্যেই পেয়ে যাবেন। একই দিনে আমরা তিন তিনটি বাস দূর্ঘটনার অবশেষ দেখলাম।

পথে পথে মানুষের ভালোবাসা কুড়িয়েছি অনেক। যেমন - ভালুকা ছাড়িয়ে একটু খোলা জায়গা দেখে বিশ্রাম নিচ্ছিলাম। তখন এক বৃদ্ধ চাচা এসে জিজ্ঞেস করলেন - বাজানেরা কুত্থিকা আইছুন? অনেক কথা হবার পর তিনি জোড়াজুড়ি করতে লাগলেন, তাঁর বাড়িতে গিয়ে একটু গুড়-মুড়ি, নাস্তা-পানি খেতেই হবে। অনেক চেষ্টায় তাঁকে নিবৃত্ত করে, একটা চকলেট বড়িয়ে দিলাম তাঁর দিকে - নেন চাচা, একটা চকলেট খান। তিনি হেসে উঠলেন আবার ধমকও দিলেন - ধুর ব্যাটা চকলেট খাওয়ার বয়স আছেনি আমার ? আরেক জায়গায় হঠাৎ আমার সাইকেল বিগড়ালো। মানে সাইকেলের চেইন পড়ে গিয়ে এমন ভাবে আটকালো যে কিছুতেই খুলতে পাড়ছিলাম না। তখন এক কিশোর এসে অনেক টানাটানি করে সে চেইন তুলে দিল। আমি তাকে এটা করার জন্য কোন অনুরোধ করিনি। কিশোরটি ছিল আবার বেশ রোমান্টিক। তার টিশার্টের বুকে লেখা - বিদায় বান্দুবী বিদায়!

শারীরিক ধকলের কথাও একটু না বললে নয়। কিছুদূর সাইকেল চালিয়ে মনে হতো - তৃষ্ণায় বুকের ছাতি বুঝি ফেটে যাবে। ক্লান্তিতে শরীর ঢলে পড়তে চাইতো। আসলে বহুদিন তো এমন একটানা শারীরিক শ্রম করিনি আমরা। প্রচুর পরিমানে পানি, ওরস্যালাইন, ডাবের পানি পান করেও তেষ্টা মিটছিল না। কিছুদূর পর পরই তাই বিশ্রাম। বিকেলের দিকে হলো আরেক যন্ত্রনা - আমার দুই হাটুর জয়েন্টে শুরু হলো ব্যাথা। সাইকেলের প্যাডেলে এক একবার পা দাবাচ্ছিলাম আর যন্ত্রনায় কঁকিয়ে উঠছিলাম। যদিও আখতারকে টের পেতে দেইনি এতটুকু। আর আমাদের চলাও থেমে থাকেনি। সেদিন রাতে ময়মনসিংহে হোটেলে বসে অনেক পরিচর্যায় আর ঔষধ সেবনে সে ব্যাথা কিছুটা সহনিয় পর্যায়ে নিয়ে আসতে পেড়েছিলাম। আখতারের অবস্থা আমার চেয়ে মোটেও ভালো ছিল না। সেও হোটেলে উঠেই চিৎপটাং।

আজকের লেখা শেষ করি এক চমকপ্রদ ঘটনা দিয়ে, যাকে বলে কিনা তাজ্জব কি বাত । তখন আমরা পানি কেনার জন্য একটা ছোট বাজারের কাছে থেমেছি। আখতার গেছে পানি কিনতে আর আমি মহাসড়কে দাঁড়িয়ে আছি। হঠাৎ দেখি আমার অদূরে দুটো কুকুর প্রচন্ড রকম ভালোবাসায় মত্ত। একটা আরেকটার উপরে উঠে প্রচন্ড গতিতে লাগাচ্ছে। ভালো করে লক্ষ্য করে আমি পুরোপুরি তাজ্জব বনে গেলাম। যে কুকুরটা উপরে উপবিষ্ট সেটা তো পুংলিঙ্গের অবশ্যই। কিন্তু যে ব্যাটা নিচে দাঁড়িয়ে আরামে চোখ অর্ধনিমিলিত করে আছে সেটাও দেখি এক মদ্দা কুকুর। আমি বিশাল এক টাশকি খেলাম। কুকুরদের ভেতরেও তাইলে হোমোসেক্সুয়ালিটির ব্যাপার আছে!! আখতারকে ডাকলাম তাড়াতাড়ি - দেখে যা রে দেখে যা! একি তামাশা!! কিন্তু আখতার আর দেখতে পাড়লো না। তার আগেই এক বেরসিক লোক এসে ইট ছুঁড়ে কুকুর দুইটার এমন ভালোবাসার অবসান ঘটালো। কুকুর দুটো কেউ কেউ ঘেউ ঘেউ করে জান বাঁচাতে উধাও হলো। দুনিয়া জুড়া আসলেই বহুত গিয়ানজাম! বহুতই আজিব এই দুনিয়া!!

ছবি পর্ব - ২

দ্বিতীয় দিনের যাত্রা শুরু

উৎসুক মানুষের দেখা পেয়েছি সব স্থানে

ময়মনসিংহ জেলার সীমানায় পৌঁছে গেছি !!

রোমান্টিক কিশোর : টিশার্টের বুকে লেখা - বিদায় বান্দুবী বিদায়

সুন্দর স্পট, তাই ক্যামেরার ক্লিক

পেছনে তাকাই বার বার, বাস না এসে ঘাড়ে পড়ে !

একটু কথাতেই হাসি : এমন হাসির দাম লাখটাকা

'ওরে আমার একটা ছবি তোল'

খিরু নদীর বুকে নৌকা ভেসে চলে

নাম না জানা ঝিল

আমার বাড়ি বেড়াইয়া যাও বাজানেরা!!

খোদর কসম এই বাস আমি উল্টাই নাই!

বাঁয়ের নিচু গাছ দেখতে পায় নাই এই বাসের কাবিল ড্রাইভার

আর এই ড্রাইভার ব্রিজরেও সাইড দিয়েছে

তাহারা দু'জনেই ক্লান্ত

মুক্তির আনন্দে প্রান ভরে নিঃশ্বাস নে!

এ ভাবে যদি বাস চলে, আমরা কোথায় যাই!!

মাছ ধইরা আইলাম

মাছ ধরার পরে বিড়ি, টানে টানে সুখ!

ক্লান্ত ভিষণ, বিশ্রাম চাই

(চলবে)


মন্তব্য

ফাহা এর ছবি

ছবি এবং লেখা- দুইটাই দুর্দান্ত। চলুক

কীর্তিনাশা এর ছবি

ধন্যবাদ হাসি
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

চলুক...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

কীর্তিনাশা এর ছবি

জি চলবে ।

-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

সৈয়দ আখতারুজ্জামান এর ছবি

নজরুল ভাই এইটা কাহিনী পইড়া লিখলো নাকি না পইড়াই লিখলো? আমার জানি কেমন কেমন লাগতাছে... এই লোক কোন কাহিনী পড়লে তেত্রিশ লাইনের কম জবাব দেয় না। পইড়াও মনটা ভইরা যায়। এইবার যে এক অক্ষরেই ছাইড়া দিলো! কাহিনী কি?

জ্বিনের বাদশা এর ছবি

আমিও এই শনিবার থেকা ফুটবল খেলা শুরু করুম চোখ টিপি
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

কীর্তিনাশা এর ছবি

আমিও আছি দলে জ্বিন ভাই। হাসি

-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

সৈয়দ আখতারুজ্জামান এর ছবি

কয় দিন পর মাঠে নামতাছেন জ্বীন ভাই? ঠ্যালা ট্যার পাইবেন। খেইলা আইসা খবর দিয়েন, ক্যামন মালুম হইলো জানায়েন। নিজের ষ্ট্যামিনা সম্পর্কে যা ধারণা আছে দেখবেন তাকে যেন আবার পৌরণিক কাহিনীর মতো না মনে হয়!

জ্বিনের বাদশা এর ছবি

দিলেন তো ভয় পাওয়াইয়া মন খারাপ
দশ বছর পর ... প্রথম একমাস খালি স্ট্রেচিং চলুক
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

হাসান মোরশেদ এর ছবি

দুর্দান্ত রে ভাই, দুর্দান্ত । রঙ্গীলা জীবন আপনাদের, আমরা খালি কামলা খাটি মন খারাপ
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

কীর্তিনাশা এর ছবি

মোরশেদ ভাই, কামলা আমরাও খাটি। শুধু মাঝে মাঝে কামলামি থিকা জোড় করে ছুটি নেই।

-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

সৈয়দ আখতারুজ্জামান এর ছবি

কামলাগিরি থেইক্যা ছুটি নেয়ার চেয়েও বড় সমস্যা ঘরে। খালি পিছুটান! আবার সাথেও যাবে না! কী মুশকিল!

রণদীপম বসু এর ছবি

জম্পেশ হচ্ছে, চলুক !

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

সৈয়দ আখতারুজ্জামান এর ছবি

সময় নিয়ে পড়ার জন্য ধন্যবাদ।

মুশফিকা মুমু এর ছবি

আমার নানীবাড়ি ময়মনসিংহ আসার জন্য স্বাগতম হাসি
খুব মজার একটা কাজ করছেন চলুক , সাবধানে চালাবেন। ছবিগুলিও ভাল লাগল হাসি
------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে ‍‍

------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে ‍‍

সৈয়দ আখতারুজ্জামান এর ছবি

আপনার নানীবাড়ি ময়মনসিংহের কোথায়? আগে জানলে একটা ঢু লাগাতাম নিশ্চয়ই!

আমাদের খুব ইচ্ছে এই কাজটা আমরা আরো সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবো। এর জন্য অনেক তীব্র ইচ্ছে, ত্যাগ এবং অর্থ তিন-ই দরকার। আমাদের প্রথম দুটো প্রয়োজনের তুলনায় অনেকটা বেশিই আছে, কিন্তু তৃতীয়টিতে এসে প্রয়োজনের তুলনায় একেবারেই তেমন কিছু নেই। আগামী এক বছরে আমাদের আরো ৬টি ট্যুর করার প্ল্যান আছে। স্পন্সর খোঁজ করছি। দেখা যাক কী হয়!

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

দারুন! আসলেই নগরাঞ্চলের বাইরের মানুষগুলো অনেক সহজ-সরল, অনেক আন্তরিক, হৃদয় ভরা তাদের ভালোবাসা।
আপনাদের কাহিনী পড়ে আমার মনে পড়ে গেলো নিজের বান্দারবন ভ্রমণের কথা। টানা কয়েকদিন হাঁটতে হয়েছিলো। কিন্তু তারপরও অসাধারণ ছিল সেই অনুভূতি। কিছু কিছু কষ্টের মাঝেও আসলে অনেক আনন্দ থাকে।

সৈয়দ আখতারুজ্জামান এর ছবি

অতি দ্রুত ছবিসহ বান্দরবনের কাহিনী জানতে চাই। আমাদের পরবর্তী ট্যুর বান্দরবন হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। যদিও আমাদের প্রথম বান্দরবন ট্যুর রুমা পর্যন্ত গিয়ে শেষ হয়েছিলো। যাই হোক সে আরেক ভয়ঙ্কর কাহিনী। আপনার অভিজ্ঞতা জানতে চাই। কোন রুটে যাবো, তারপর কেম্নে কী? রুট প্ল্যান করতে সাহায্য চাই। সমস্যা কী কী হতে পারে, সমাধান কী, ইত্যাদি ইত্যাদি...

কীর্তিনাশা এর ছবি

আসলেই নগরাঞ্চলের বাইরের মানুষগুলো অনেক সহজ-সরল, অনেক আন্তরিক, হৃদয় ভরা তাদের ভালোবাসা।

সম্পুর্ন একমত, অপ্র ভাই। শহরের বাইরে যেখানেই গেছি সেখানেই এই সহজ সরল মানুষের সন্ধান পেয়েছি। আসলে জটিল কুটিল মানুষগুলো সব এসে ভীড় করেছে শহরে।
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

পুরাটাই সুন্দর বর্ণনা একেবারে চিরায়ত বাংলার রূপের মত। ভালো লেগেছে ছবিগুলোও। আর আশ্চর্য বিষয়টা ভালো মতো দেখেছেন তো? অনেক সময় অপূর্ণবয়স্ক কুকুর কিন্তু এমনিতেই ওরকম ভাব করে। একসময় কুকুর পুষেছি সেই অভিজ্ঞতার আলোকেই বলছি। অবশ্য আপনার বর্ণনা পড়ে মনে হচ্ছে আপনি হয়তো ঠিকই দেখেছেন। প্রকৃতিতে কত আজব জিনিসই না হয়।

সৈয়দ আখতারুজ্জামান এর ছবি

প্রকৃতিপ্রেমিক যখন এই কথা কইছে, তখন বিশ্বাস করতেই হয়! আপনাকে মন্তব্যের জন্য বিশেষ ধন্যবাদ।

কীর্তিনাশা এর ছবি

প্রকৃতি প্রেমিক ভাই, কুকুর দু'টোকে আমার মোটেই অপূর্নবয়স্ক মনে হয়নি। বরং দুইটাই ছিল রিষ্টপুষ্ট আর নেরীকুকুর মহলের বিশালবপু।

আসলেই প্রকৃতিতে কত আজব জিনিসই না হয়!!

-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

সৈয়দ আখতারুজ্জামান এর ছবি

তার ওপর আবার সময়টা কার্তিকের আশেপাশে। সুতরাং বুঝতে হবে...

রাফি এর ছবি

নিজ এলাকার নাম পড়ে আর ছবি দেখে মজাক পাইলাম।
চলুক...। রাস্তার মানের কথা তো কইলেন না; রাজেন্দ্রপুর থেকে ভালুকা পর্যন্ত বাসের ঝাকিতে তো আমার ক্ষিদা লেগে যায়।

---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!

---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!

সৈয়দ আখতারুজ্জামান এর ছবি

কন্ কী? প্রথম পর্বে তো রাস্তার কথা ছাড়া আর তেমন কিছুই কই নাই! হায় খোদা এমন রাস্তা! তবে ময়মনসিংহ থেকে বিরিশিরি পর্যন্ত রাস্তা আরো ভয়ঙ্কর! সে কাহিনী নিয়ে কীর্তিনাশা আসছে শীঘ্রই। চোখ রাখুন.....

আকতার আহমেদ এর ছবি

লেখেন ভাই লেখেন.. এখনতো আপনাগো সময়.. আমরাও বড় হইলে সাইকেল ভ্রমণে বাইর হমু । তখন আমরাও লিখুম !

সৈয়দ আখতারুজ্জামান এর ছবি

সময়ে কুলাইতে পারি না বইলা এক লেখা দুইজনে মিল্লা লিখতাছি তারপরও এই খোঁচা! সময়ের অভাবে মন্তব্যের জবাবাও দুইজনে মিল্লা দিতাছি! তারপরও মনেহয় আমগো এখন সময়? হায় খোদা উনাকে দৃষ্টি দাও!

কীর্তিনাশা এর ছবি

হ উনাকে দৃষ্টি দাও, আর বেশি বেশি আগুন ঝরা ছড়া লিখতে কও।

-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

আরিফ জেবতিক এর ছবি

ঈর্ষায় প্রথম কিস্তিতে কমেন্ট করিনি । দ্বিতীয় কিস্তিতেও করলাম না ।

সৈয়দ আখতারুজ্জামান এর ছবি

তাই আমরাও কোন মন্তব্য করলাম না! দেখা হলে কথা হবে আরিফ ভাই!

সংসারে এক সন্ন্যাসী এর ছবি

লা-জবাব।
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
Life is what happens to you
While you're busy making other plans...
- JOHN LENNON

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু? চিন্তিত

সৈয়দ আখতারুজ্জামান এর ছবি

সংসার কইরাও সন্ন্যাসী হওয়ার একটা শেষ চেষ্টা করতাছি দাদা। দোয়া রাইখেন।

সৈয়দ আখতারুজ্জামান এর ছবি

সাইকেলের প্যাডেলে এক একবার পা দাবাচ্ছিলাম আর যন্ত্রনায় কঁকিয়ে উঠছিলাম। যদিও আখতারকে টের পেতে দেইনি এতটুকু।
যদিও কাজটা ঠিক করিস নাই। যাত্রানীতির তৃতীয় শর্তের বরখেলাপ। শারীরিক সমস্যা হলে আমাদেরকে সাথে সাথে থামতে হবে, এমন শর্ত ছিলো। তবে আমি কিন্তু সমস্যা হালকা টের পেয়েছিলাম, নইলে কিন্তু তোর আরো স্বতঃস্ফূর্ত থাকার কথা ছিলো। হাঁটুর ব্যথার ব্যাপারটা বুঝি নাই ঠিকই কিন্তু কোথাও যে সমস্যা হচ্ছে এটা আঁচ করতে পেরেছিলাম। তবে সত্যিই ওই সময়টায় আমাদের স্রেফ ছুটে চলা ছাড়া কোন গত্যান্তরও ছিলো না। আমার সেই রাত্রের পিঠের ব্যাথার কথা অনেকদিন মনে থাকবে। মনে হচ্ছিলো মরে যাচ্ছি!

কীর্তিনাশা এর ছবি

তবে সত্যিই ওই সময়টায় আমাদের স্রেফ ছুটে চলা ছাড়া কোন গত্যান্তরও ছিলো না।

ঠিক। নইলে দেখা যেতো - আমার ব্যাথার কথা শুনে তুইও থেমে যেতি। ফলাফল দাঁড়াতো, রাস্তার পাশে দু'জনের ল্যাটকাইয়া পড়ে থাকা।

সেইটা হোত আরো ভয়াবহ, তাই না?

তাই এই শর্ত ভাঙা আসলে সে অর্থে শর্ত ভাঙা না। এটা হচ্ছে, বৃহত্তরও স্বার্থে শর্তের কথা ভুলে যাওয়া।

-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

দেবোত্তম দাশ এর ছবি

একটা বার আমারে সাথে নিয়েন, লাখ টাকার জবান, আপ্নগো পোঁটলা পুঁটলি আমার ঘাড়েই নিমু।
------------------------------------------------------
স্বপ্নকে জিইয়ে রেখেছি বলেই আজো বেঁচে আছি

------------------------------------------------------
হারিয়ে যাওয়া স্বপ্ন’রা কি কখনো ফিরে আসে !

কীর্তিনাশা এর ছবি

পোঁটলা পুঁটলি বহনের প্রাকটিস শুরু কইরা দেন তাইলে। দেঁতো হাসি

-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

দেবোত্তম দাশ এর ছবি

আপ্নেরা কি ট্রেইনে কইরা যাইবেন না ?
------------------------------------------------------
স্বপ্নকে জিইয়ে রেখেছি বলেই আজো বেঁচে আছি

------------------------------------------------------
হারিয়ে যাওয়া স্বপ্ন’রা কি কখনো ফিরে আসে !

কীর্তিনাশা এর ছবি

যাবো না কেন? অবশ্যই যাবো। ট্রেইনে যাবো, প্লেইনেও যাবো। চোখ টিপি
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

সৈয়দ আখতারুজ্জামান এর ছবি

আপ্নেরা কি ট্রেইনে কইরা যাইবেন না ?

কয় কী? ভোল পাল্টাইলেন মনে হইলো? একটু আগে কী জানি কইছিলেন?

সুলতানা পারভীন শিমুল এর ছবি

আমারো একখান সাইকেল ছিলো।
মাগার...

...........................

সংশোধনহীন স্বপ্ন দেখার স্বপ্ন দেখি একদিন

...........................

একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা

সৈয়দ আখতারুজ্জামান এর ছবি

থাইমা গ্যালেন ক্যান? খোলাসা কইরা কন, তারপর কী হইলো...

১৯৯৯ সালে আমাদের প্রথম সাইকেল ট্যুর ছিলো আসলেই এ্যাডভেঞ্চারাস। কীর্তিনাশা আর আমাদের তৃতীয় বন্ধু রুহুল, এদের দুজনেরই সাইকেল ছিলো। কিন্তু আমার সাইকেল জোগাড় করা নিয়ে মহামুশকিলে পড়লাম। কেনার টাকাও নেই, আবার বাসায় জানানোর তো প্রশ্নই ওঠে না। তাহলে ম্যানেজ হবে কীভাবে? পরে আমাদের বাসার দাড়োয়ানের লক্কর ঝক্কর সাইকেল নিয়েই আমি যাত্রা শুরু করেছিলাম। ঐ সাইকেল দিয়ে তা প্রায় হাজার খানেক কিলোমিটারতো চালিয়েছিই।
সুতরাং সাইকেল না থাকলেও আপনার ইচ্ছে থাকলে এক্সপেডিশনে যাওয়া কোন ব্যাপার না। যাবেন নাকি?

সুলতানা পারভীন শিমুল এর ছবি

এইভাবে নিভৃতচারী লোকজনকে লোভ দেখানো ঠিক না।

...........................

সংশোধনহীন স্বপ্ন দেখার স্বপ্ন দেখি একদিন

...........................

একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা

সৈয়দ আখতারুজ্জামান এর ছবি

যারা আসলেই নিভৃতচারী তাদেরকে লোভ দেখিয়েও কোন লাভ হয় না।

কীর্তিনাশা এর ছবি

কিন্তু এই নিভৃতচারীরাই মাঝে মাঝে বড় বড় সব কাজ করে ফেলে।

-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।