আষাঢ়ে গল্প : কবির হোসেনের ঝাপসা ছবি এবং বিবাহ বৃত্তান্ত

বিঃ দ্রঃ এই আষাঢ়ে গল্পের উদ্দেশ্য নিছক মজা করা। কারো মনে কষ্ট দেয়া নহে...........

-----------------------------------------------------------------
মোঃ কবির হোসেন সুদূর জ্যামাইকা থেকে তার ঢাকাস্থ জিগরি দোস্ত হিমেলের সাথে চ্যাটবুকে ফেসিং, স্যরি ফেসবুকে চ্যাটিং করছিল -

কবির : দোস্ত মন ভালো নাই। চিক্কুর দিয়া কানতে ইচ্ছা করতাসে

হিমেল : ক্যান্কীহইছে ??

কবির : জীবনের ৩৯টা বসন্ত গত হইছে, ৪০ও যায় যায়। এখন পর্যন্ত বিয়া কর্তারলাম্না।

হিমেল : ও এই কথা। ব্যাপার্না, চিন্তাইস না। তোর ভালো দেইখা একখান ফটু পাঠা। আইজকা থিকাই ঘটকালি শুরু করতাছি। এক মাসের মইধ্যে তোর বিয়া দিমু এনশাল্লাহ্ ।

কবির : সত্যি কইতাসোস

হিমেল : হ, সত্যি । এখ্খন ছবি পাঠা তুই।

কবির : দুই মিনিটের মইধ্যে পাঠাইতাসি।

হিমেল (কিছুক্ষণ পরে) : ঐ এইডা কী ছবি পাঠাইসোস। সবদিহি ঝাপসা!

কবির : কী করুম দোস্ত, জ্যামাইকায় এখন প্রচুর বাতাস। এত বাতাসে এক জায়গায় স্থির হয়া খাড়ান যায় না। হেই লাইগা যে ছবি তুলি হেইডাই ঝাপ্সা হয়

হিমেল : বাজে কথা রাখ শালা! জলদি ভালো একঠা ছবি পাঠা।

কবির : আচ্ছা আরেক্টা পাঠাইতাসি।

হিমেল (কিছু সময় পরে) : ঐ হালার্পো এইডাও তো ঝাপসা।

কবির : দোস্ত এই ফটুডা যে তুলছিল হেই ব্যাডা একটা আস্তা কানউলা। এক ফুট দূরের জিনিস ঠিক মতো দেখতে পারে না। আর আমার ছবি তুলছে দশ ফুট দূর থিকা।

হিমেল : তাইলে এই ছবি দিসোস ক্যান বাইঞ্চো....???

কবির : রাগিস না দোস্ত পিলিজ। এইবার তরে আমার বেস্ট ফটুডা পাঠাইতাসি।

হিমেল (তৃতীয় ছবি পাওয়ার পরে) : হারামজাদা ! এইডা তো সব চাইতে বেশি ঝাপসা। রেগেটং)

কবির : দোস্ত এই ছবিটা একজন বিখ্যাত ফটুগ্রাফারের তোলা। উনি ইসপেশাল ইফেক্টের জন্য ক্যামেরার লেন্সের সামনে আরেক্টা মোটা কাঁচ ফিট কইরা লইছিলেন।

হিমেল : তাইলে এইডাই তোর বেস্ট ছবি ??

কবির : হ

হিমেল : আচ্ছা খাড়া, এই ছবি দিয়াই আমি তোর বিয়ার ব্যাবস্থা কর্তাছি।

কবির : ঠিক তো ?

হিমেল : হ

কবির : মরজ্বালা এর মইদ্ধে আবার শয়তানরে টানোস ক্যান ?

হিমেল : চিন্তাইস না। তোর বিয়া হইলেই তো হইলো ??

কবির : হ

হিমেল : তাইলে সবুর কর। এক মাস পর তোর ফুলশয্যা।

কবির : সত্যি ?

হিমেল : সত্যি।

---------------------------------------------------------------
দুই সপ্তাহ পরে হিমেলের তত্ত্বাবধানে টেলিফোনে কবুল বলার মাধ্যমে কবির হোসেনের শাদি মোবারক সম্পাদিত হলো। কবির হোসন পাত্রীর ছবি দেখতে চাইলেও হিমেল বলল - ছবি দেখার কোন প্রয়োজন নাই। কারণ পাত্রের ছবির মতো পাত্রীর ছবিও অতিশয় ঝাপসা। অগত্যা কবির ছবি না দেখেই বিবাহ করতে বাধ্য হলো।

তার দুই সপ্তাহ পরে কবির হোসেন মহা আনন্দে জিয়া ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টে পদার্পণ করলো ফুলশয্যার রাতে অংশগ্রহন করার লক্ষে। বাসায় ফেরার সারাটা পথে গাড়িতে একটা গানই বাজলো - আজ মধু রাত আমার ফুলশয্যার................। কবিরের মুখে আর হাসি ধরে না। হিমেলও হাসে দাঁত কেলিয়ে।

কিন্তু বিপত্তি বাধলো রাতে। কবির হোসেন বাসর ঘরে ঢোকার একটু পরেই আ........আ.........আ.........! করে চিৎকার করতে করতে বেরিয়ে এলো।

হিমেল জিজ্ঞেস করে - কী হইছে এমন চিল্লাস কেন?

কবির হিস্টিরিয়া রোগীর মতো কাঁপতে কাঁপতে বলে - ঐটা কী ? আমার বাসর ঘরে ঐটা কী ?

হিমেল : ক্যান তোর বউ !

কবির : কিন্তু এইরম ঝাপসা কেন ?

হিমেল : যেরম ঝাপসা ছবি দিসোস তাতে ঝাপসা বউ পাবি না তো কি ফকফকা বউ পাবি?

কবির : না, এই বিয়া আমি মানিনা। এই বউ আমি চাই না।

হিমেল : ইঁইঁইঁ.......হ্ কইলেই হইলো মানিনা ?! কত কষ্ট কইরা, বনে জঙ্গলে ঘুইরা, দুই মন শুটকি ভেট দিয়া এই পেত্নীটারে জোগাড় করছি। অখন মানিনা কইলেই হইবো ? আমার এক কথা, যেমন ঝাপসা ছবি দিসোস তেমন ঝাপসা বউ পাইসোস। অখন যা বাসর ঘরে ঢুক !

কবির : না...........আ................আ............!

হিমেল : হ................অ...............অ...........!