বিবর্ণ সভ্যতা

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি
লিখেছেন নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী (তারিখ: মঙ্গল, ১৮/০৮/২০০৯ - ৫:৪০পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

auto

সোয়াইন ফ্লু এর তিনটা উপসর্গের উপস্থিতি নিয়ে লিখতে বসেছি। জ্বর, কাশি এবং প্রচন্ড শরীর ব্যাথা। সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ে বেশি সময় থাকতে পারলাম না। সুপারভাইজার থিসিসের ডিজাইন চাপ্টার শেষ করে আজকে তার কাছে জমা দিতে বলেছিল। টলতে টলতে গিয়ে বললাম সম্ভব নয়। আমার দিকে তাকিয়ে সে দ্রুত বললো, "দরকার নাই। আগে সুস্থ হও"। ওষুধ কিনে এনেছি। দুইদিন খেয়ে দেখি। না হলে টেস্ট করাতে যাবো বুধবার। আয়ারল্যান্ডে সোয়াইন ফ্লু প্রচন্ড ভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। রিস্ক নেয়া ঠিক হবে না মনে হচ্ছে। যাইহোক, ভূমিকা প্রয়োজনের তুলনায় বেশিই হয়ে গেলো। এবার আসল কথায় আসি। এই লেখাটা মাথার মধ্যে ঘুরঘুর করছে কাল থেকে। আমার মাথায় একবার কিছু ঢুকলে সেটা যন্ত্রনা দিতে শুরু করে। বের না হওয়া পর্যন্ত পোকার মত শব্দ করে অস্থির করে তোলে। অতএব জ্বর নিয়েও লিখতে বসলাম। এই পোকা মাথা থেকে বের করা দরকার।

২০০৭-এর আগে

বছর পাঁচেক আগের ঘটনা। বাংলাদেশের চলচিত্র শিল্পে তখন চরম মন্দা চলছে। হলে গিয়ে নাকি শুধু রিক্সাওয়ালারা ছবি দেখে - এ রকম একটা কথাও তখন ছড়িয়ে পড়েছিল। মাঝে মাঝে কিছু ছবির কাট-পিস দেখার সৌভাগ্য(!) হয়েছিল। তাতে অবাক হতে হতো এটা বাংলা ছবি নাকি দক্ষিন ভারতীয় এ্যাডাল্ট ফিল্ম। সে সময় কয়েকবার পত্রিকায় পড়লাম কিছু সিনেমা হলে নাকি খাটও আছে। ছবির দৃশ্য এবং খাটের প্রয়োজনীয়তা - বুদ্ধিমান পাঠকের দুই যোগ দুই চার করে নিতে সমস্যা হবে না আশা করি। মনেমনে বলে ছিলাম, হায়রে সভ্যতা। শেষ পর্যন্ত সিনেমা হলের সোফা কাম বেডে?

২০০৭-এর পর

আমি তখন মাত্র ডাবলিন এসেছি। বাংলাদেশী বা এমন কি বাঙালী বলতে কাউকে চিনি না এখানে। ডিসিইউ এবং ইউসিডিতে শুনেছি অনেক বাংলাদেশী আছেন। কিন্তু ট্রিনিটিতে সেটা অমাবস্যার চাঁদের চেয়েও বিরল। ট্রিনিটিতে আমার অবস্থা এমন ছিল যে ব্রিটিশ ইংলিশ শুনলে মাতৃভাষা মনে হতো! আইরিশ একসেন্ট এতটাই দূর্বোধ্য লাগতো যে কেউ ব্রিটিশ একসেন্টে কথা বললে মনে হতো, আহ! এইতো সব বুঝতে পারছি। এ রকম যেখানে অবস্থা তখন বাংলা শুনতে পাওয়ার প্রশ্নই আসে না। সেই সময়টা আমার জন্য খুব কঠিন ছিল। সকালে বাসা থেকে বিশ্ববিদ্যালয় এবং রাতে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাসা - এই ছিল দিনের রুটিন। এক রকম নিজের ভেতরে নিজেকে অবরুদ্ধ করে রাখতাম।

সেই ডাবলিন জীবনের প্রথম দিকের ঘটনা। একদিন রাতে ট্রিনিটি থেকে বের হয়েছি, উদ্দেশ্য বাস ধরা। প্রায় মিনিট পনেরো হেটে সিটির ভেতরে এ্যাবি স্ট্রিট থেকে বাস ধরতে হতো। আমি ট্রিনিটির পাশ দিয়ে পিয়ার স্ট্রিট ধরে হাটছি। এই রাস্তাটা শহরের অন্যতম ব্যস্ত এবং বড় রাস্তা। ফলে মানুষ চলে কম-বেশি সব সময়। হঠাত দেখি এক যুগল। মেয়েটাকে ট্রিনিটির দেয়ালের সাথে চেপে ধরে ছেলেটা তার কোমর মেয়েটার কোমরে বিশেষ ভঙ্গিতে ঘষছে। এর পর ছেলেটা আস্তে আস্তে মেয়েটার জিন্সের জিপার খোলা শুরু করলো। আমার কাছে তখন মনে হচ্ছিল আমি যেন লাইভ রেডেট মুভি দেখছি। অনেকটা হা করেই তাকিয়ে ছিলাম ওদের দিকে। হঠাত মেয়েটা আমাকে দেখতে পায়। তারপর যে দৃষ্টিটা দেয় সেটার অর্থ অনেকটা - “কী? আর কোন কাজ-কাম নাই?”। বেশ লজ্জা পেয়ে যাই আমি। তাড়াতাড়ি চোখ নামিয়ে হেটে চলে আসি। পরে আমার বারবার মনে হয়েছে, এ রকম খোলা রাস্তায় তারা 'করতে' পারে কিন্তু তাতে তাদের লজ্জা লাগে না। কিন্তু আমি দেখে ফেলায় লজ্জা পাচ্ছি কেন? কোন উত্তর পাই নি। বিবর্ণ সভ্যতার দেখা পেতে শুরু করি সেদিন থেকে।

আরেক দিনের ঘটনা। ডাবলিন শহরের ভেতরে একটা চিপা গলি আছে যেখানে শুধু টেক্সি দাড়ায়। গলির মাথা থেকে একেকজন টেক্সি নিয়ে চলে যায়। ফলে গলির ভেতরে তেমন একটা কেউ ঢোকে না। গলিটা দিনের বেলাতেই খুব নির্জন থাকতো, রাতেতো বটেই। একদিন রাতে সেই গলিতে ঢুকি শর্টকাটে হেটে যাওয়ার উদ্দেশ্যে। খানিকটা যাওয়ার পর দেখি রাস্তার পাশেই আলো আধারীতে একটা মাতাল যুগল শুয়ে আছে। মাতাল বলতে তারা রীতিমত বদ্ধ মাতাল তখন। মূল ক্রিয়াকর্ম মাত্র শেষ হয়েছে। ছেলেটা খুব কষ্ট করে মেয়েটার জিন্স পড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করছে। টেনে জিন্সটা উঠিয়েছে কিন্তু কিছুতেই জিপার লাগাতে পারছে না। মেয়েটা প্রায় পুরো জ্ঞানহীন। তেমন একটা নড়ছেও না। ছেলেটা বারবার চেষ্টা করেই যাচ্ছে। অস্বীকার করবো না, আগের বারের ঘটনা আমার কাছে বেশ রোম্যান্টিক লেগেছিল। কিন্তু এবার নোংরামী লাগলো। অদ্ভুত একটা ঘৃনা অনুভব করছিলাম সেদিন। ঠিক কার উপর জানি না। তবে এই প্রথম বিশ্বের সভ্যতাটাকে আরেকবার বড্ড বেশি বিবর্ণ লাগলো।

ব্যাপারটা এমন না যে আইরিশরা এসব দেখলে কিছু বলে না। কিন্তু তাতে যারা করে তাদের কিছু যায় আসে বলে মনে হয় না। বরং কখনও কখনও তারা যেন মজাই পায়। ২০০৭-এর তৃতীয় ঘটনায় তেমনই একটা চিত্র লক্ষ্য করলাম। এ্যাবি স্ট্রিটে অপেক্ষা করছি বাসের জন্য। কোনাকোনি উল্টা দিকেই লুয়াস অর্থাৎ ট্রাম স্টেশন। সেখান থেকে হঠাত এক মহিলার গগনবিদারী চিৎকার আসতে লাগলো। ভদ্রমহিলা চিৎকার করেই যাচ্ছেন, “লর্ড সেইভ দেম, লর্ড সেইভ দেম"। আর সেই চিৎকার ছাপিয়ে আরেকটা চিৎকারও শোনা যাচ্ছিল, “ওহ বেইবী, ওহ বেইবী।" কৌতুহল দমিয়ে রাখা সম্ভব হলো না। এগিয়ে গিয়ে দেখি মানুষ ভর্তি স্টেশনের মাঝে একটা দোকানের ছয় ইঞ্চির মত কার্নিশের উপরে একটা মেয়েকে কোনক্রমে বসিয়ে তার ছেলেবন্ধু আদিম খেলায় লিপ্ত হয়েছে। মেয়েটা চিৎকার করছে "ওহ বেইবী" বলে আর পাশ থেকে সেই বৃদ্ধা তাদের প্রতি ঈশ্বরের করুনা সৃষ্টির জন্য প্রর্থনা করেই চলেছেন। মহিলা যতই চিৎকার করে, ছেলেটা তার গতি ততই বাড়ায়। পাশে দাড়িয়ে অনেকে তখন মুখ চেপে হাসছে।

পরের বছর, অর্থাৎ ২০০৮ সনে বিভিন্ন জায়গায় আইরিশদের এই পাগলামী দেখেছি। রাস্তায়, ট্রাম স্টেশনে, পার্কে, সিনেমায় – কোথায় না? এর মাঝে সিনেমায় দেখেছি অনেক বার। এটা যেন তাদের জন্য অভয়ারণ্য। বিশেষত আন্ডারএইজডরা সিনেমায় বেশি করে। দ্যা ডার্ক নাইট দেখতে ঢুকে চরম বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হয়েছিল। আমার ঠিক পাশের সিটে বসে পনের বছরেরও কম বয়সী দুটো ছেলে-মেয়ে করছে। আর অন্য পাশ থেকে এক ভারতীয় ছেলে সেটা দেখছে আর আমার মুখের দিকে তাকিয়ে হাসছে। ভাবটা এমন, “ভাই দেখছেন কি করে?”।

যাইহোক, এই লেখা অবতারণার মূল করাণে ফিরে আসি। গতকাল দ্যা টাইম ট্রাভেলার্স ওয়াইফ দেখছিলাম সিনেওয়ার্ল্ডে। মুভি শেষ হয়ে যাওয়ার পরও হলের আলো জ্বলেনি তখনও। সবাই নেমে আসছে, আমিও। হঠাত দেখি মাঝামাঝি সারিতে একটা ২২-২৩ বছরের যুগল আদিম ক্রিয়ায় মগ্ন। তাদের অবস্থা দেখে মনে হচ্ছিল হয়তো ক্লাইম্যাক্সে অবস্থান করছে! অন্য সব সময় একটা বিষয় দেখেছি যে মুভি শেষ হবার আগেই সবাই কর্ম শেষ করে ফেলে। কিন্তু কাল টাইমিংটায় হয়তো গন্ডোগোল হয়ে গিয়েছিল। তাই মুভি শেষ হলেও কর্ম শেষ হয় নি। যাইহোক, একটু পরই আলো জ্বলে উঠলো। ছেলেটার জন্য খুব একটা সমস্যা হলো না কিন্তু মেয়েটা পড়লো বিব্রতকর পরিস্থিতিতে। পাগলের মত নিজের টপস গোছাতে সে ব্যস্ত আর আগ্রহী দর্শক মজা করে তা দেখছে।

আমার ধারনা কতৃপক্ষও এসব কাজে উৎসাহিত করে। তা না হলে প্রতিটা টয়লেটে কেন কনডম, ভাইব্রেটিং রিং বা লুব্রিকেটিং লিকুইড বিক্রির মেশিন থাকবে? সেদিনই হল থেকে বের হয়ে টয়লেটে গিয়ে দেখি ফ্লোরে পড়ে আছে ব্যবহৃত ডিউরেক্সের প্যাকেট। হয়তো খানিক আগেই কেউ প্রস্তুত হয়ে গিয়েছে ব্যবহারের জন্য। নিজের অজান্তেই বলে ফেললাম, হায় রে সভ্যতা!

অনুসিদ্ধান্ত

দ্যা ইকোনোমিস্ট Quality of Life Index বলে একটা র‌্যাঙ্কিং করেছিল সভ্য দেশগুলোর উপর। অর্থাৎ জীবন যাত্রার মান কোন দেশে সবচেয়ে বেশি সেটা বের করার চেষ্টা করেছিল তারা নয়টা বিভিন্ন চলকের মাধ্যমে। সেই লিস্টের প্রথম দেশটার নাম আয়ারল্যান্ড (আগ্রহী পাঠক এখান থেকে লিস্টটা দেখতে পারেন)। গতকাল সেই সভ্যতম দেশের সিনেমা হলে বসে আমার বারবার বাংলাদেশের সেই সব অসুস্থ সিনেমা হল গুলোর কথা মনে পড়ছিল। সত্য বলতে, সেগুলোর সাথে আমি পার্থক্য খুব একটা খুঁজে পাইনি। সেদিন এই সভ্যতম দেশটার সভ্যতা আমার কাছে বড়ই বিবর্ণ লেগেছিল।

১৭ অগাস্ট ২০০৯
ডাবলিন, আয়ারল্যান্ড।


মন্তব্য

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

এখন সোয়াইন ফ্লুর ক্ষেত্রেও একই কথা। "তিনি শুকর-জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন" এই টাইপের কথা জীবনীতে থাকার মানে মৃত্যুর পরেও মান সম্মান পানিতে ভেসে যাওয়া।

ভাইয়া জটিল বলেছেন :-)।

আমার একটা সমস্যা হলো, আমি কোথাও কোন রোগের লক্ষণ পড়লে, সব কিছু কেন যেন নিজের মাঝে মেলাতে শুরু করি এবং এক সময় মিলেও যায়! আজও অবস্থা তেমন হয়েছে। তার উপর পত্রিকার হেডলাইনগুলো আরো বেশি ভয় ধরানো। কিছু দিন আগে একটা হেড লাইন এসেছিল অনেকটা এরকম - "অল্প কিছু দিনের মধ্যে আয়ারল্যান্ড অনেকগুলো মত্যু দেখতে যাচ্ছে"। আল্লহই জানেন কি আছে কপালে!

মামুন হক এর ছবি

ভালো হয়ে উঠুন তাড়াতাড়ি নিয়াজ ভাই। শুভ কামনা রইল।
পশ্চিমা সভ্যতা নিয়ে কিছু বলতেও আজকাল বিরক্ত লাগে। এ রকম মেকি , ইন্দ্রিয় সুখ নির্ভর, শ্যালো , মাত্রাজ্ঞানহীন জীবন ব্যবস্থাকে সভ্যতা বলতেও আমার রুচিতে বাঁধে। অপ্রোয়জনীয় জঞ্জালে পৃথিবী ভর্তি করে দিয়েও তারাই আবার সভ্যতার ধ্বজাধারী।
হায় সেলুকাস!

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

মামুন ভাই, ঠিকই বলেছেন। যতই দেখি, কেন যেন সব মেকি মনে হয়।

শুভেচ্ছা রইলো।

পশ্চিমাবিষ্ট এর ছবি

@ মামুন হক এবং লেখক
পশ্চিমা সভ্যতা বলতে আপনি কি বোঝেন, জানার খুব ইচ্ছা। এত সস্তা আবেগের সুপারফিশিয়াল কথা শুনলে সত্যি হাসি পায়। এমন কথা বলার আগে আমাদের এবং পুরো প্রাচ্য সভ্যতা কতোটা সভ্য, তা আগে নিরপেক্ষ চোখে দেখে নেওয়া দরকার। পশ্চিমী যাবতীয় সুযোগসুবিধা নিত্যদিন ব্যবহার করে উঠতে বসতে তাদের দুর্নাম জপে আমরা নিজেদের সভ্য প্রমাণিত করতে পারছি?

অমিত এর ছবি

মামুন ভাই,
কোনটা মেকি আর কোনটা খাঁটি ? ইন্দ্রিয় সুখ খারাপ কেন ? শ্যালো কোনটা আর ওয়াইড-ই বা কোনটাকে বলব ? মাত্রাজ্ঞানসম্পন্ন জীবন ব্যবস্থা কোনটা ?

হাসান মোরশেদ এর ছবি

আপনার পোষ্ট এবং পোষ্টের বিষয় অবশ্যই আপনার নিজস্ব। আমি আমার মতামতটুকু দেইঃ
এইসব প্রসংগ টেনে 'আমাদের', 'ওদের' তুলনা বড় শ্যালো মনে হয়। এইসব দেশে আমাদের মতো রাখঢাক কম- মানছি। কিন্তু এটা দিয়ে মেপে ওদেরকে অসভ্য প্রমান করা আর প্রাচ্যের সংস্কার নিয়ে আমরাই সভ্য এমন ইংগিত করা ঠিক যুক্তিযুক্ত ঠেকেনা।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

ss এর ছবি

চলুক

সুবিনয় মুস্তফী এর ছবি

হাসানের সাথে একমত। সেক্স খোলা নাকি ঢাকনা, শুধু এটা দিয়ে সভ্যতা মাপা খুব একপেশে। আরো অনেক মাপকাঠি আছে।
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

আমি কিন্তু সভ্যতাকে মাপার চেষ্টা করিনি। কে কি করলো তাতে আমার কিছু যায় আসে না। আমি শুধু একটা জিনিস দেখাতে চেয়েছি - আমাদের দেশে একটা সীমিত পরিসরের মানুষকে একই কাজ করতে দেখেছি। সেই কাজ আজ এখানেও দেখছি। এতে সভ্যতাকে আমি অসভ্য বলছি না, বা মাপার চেষ্টাও করছি। আমার কাছে কেবল সভ্যতাকে বিবর্ণ লেগেছে।

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

আমি আমাদের তুলনা করিনি কিন্তু! আমি শুধু আমাদের একটা সময়ের একটা খুব সীমিত এলাকার সাথে মিলটা দেখিয়েছি।

অবাঞ্ছিত এর ছবি

আপনি যার বর্ণনা দিলেন, এই কাজ তো মনে হয় কম বেশি হিপ্পি রাও করতো।

জীবনযাত্রার মানের সাথে সামাজিক প্রথা, রীতিনীতি ও "টাবু" এর মাঝখানে আপনি সেতুটা কোথায় দেখছেন আমাকেও একটু দেখিয়ে দেবেন?

__________________________
ঈশ্বর সরে দাঁড়াও।
উপাসনার অতিক্রান্ত লগ্নে
তোমার লাল স্বর্গের মেঘেরা
আজ শুকনো নীল...

__________________________
ঈশ্বর সরে দাঁড়াও।
উপাসনার অতিক্রান্ত লগ্নে
তোমার লাল স্বর্গের মেঘেরা
আজ শুকনো নীল...

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

আমি আসলে যে সেতুটা দেখিয়েছি সেটা আপনি মিস করে গিয়েছেন। আমি দেখিয়েছি একই কাজ বাংলাদেশেও হয়। সোজা ভাষায় সিনেমা হলে সেক্স। সেটা এখানেও হয়। বাংলাদেশের সেই সব সিনেমা হলে আপনি-আমি যাই না। এখানে যেখানে হয় সেটা ডাবলিনের খুব নাম করা সিনেমা হল। এখানেই ছিল আমার সেতুটা। সভ্যতাকে আমি অসভ্যও বলি নি - কেবল বিবর্ণ লেগেছে।

অবাঞ্ছিত এর ছবি

আপনি শেষের দিকে এসে সভ্যতা আর জীবনযাত্রার মান সংক্রান্ত যে লিংকটি দিলেন তার প্রেক্ষিতেই আমার মন্তব্য। সংস্কৃতি তো পুরাই আপেক্ষিক নাকি? আমার অবশ্য জীবনে এমন কিছু দেখার সৌভাগ্য (!) কখনো হয় নাই, হয়তো রক্ষণশীল এলাকায় থাকি বলেই। কিন্তু তারপরেও দেশে রাস্তাঘাটে চুম্বনরত কোন জুটিকে দেখলে আমাদের প্রতিক্রিয়া যেমন হবে, এখানে তেমন হয় না।

লুভর এ ভেনাস দ্য মিলোর মূর্তি আমাদের কাছে বিবর্ণ লাগে কি? সভ্যতা আসলে কি?
_________________________
ঈশ্বর সরে দাঁড়াও।
উপাসনার অতিক্রান্ত লগ্নে
তোমার লাল স্বর্গের মেঘেরা
আজ শুকনো নীল...

__________________________
ঈশ্বর সরে দাঁড়াও।
উপাসনার অতিক্রান্ত লগ্নে
তোমার লাল স্বর্গের মেঘেরা
আজ শুকনো নীল...

অমিত এর ছবি

"বাংলাদেশের সেই সব সিনেমা হলে আপনি-আমি যাই না। এখানে যেখানে হয় সেটা ডাবলিনের খুব নাম করা সিনেমা হল। "

ভাই বাংলা থিয়েটারে না যাওয়ার কারণ তো মুভির মান, থিয়েটারে কে কি করল সেটা না।

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

চলুক

পান্থ রহমান রেজা এর ছবি

আপনি তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে ওঠুন, এই কামনা থাকলো!
........................................................................................................

আমি অতো তাড়াতাড়ি কোথাও যেতে চাই না;
আমার জীবন যা চায় সেখানে হেঁটে হেঁটে পৌঁছুবার সময় আছে,
পৌঁছে অনেকক্ষণ ব'সে অপেক্ষা করার সময় আছে।

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

শুভকামনার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।

শাহেনশাহ সিমন [অতিথি] এর ছবি

জলদি সুস্থ্য হউন আর ডাবলিনের বিভিন্ন ঘটনা আমাদের জানান।

সব দেশেই এমন কিছু আছে বস। কোথাও চাঁপা তো কোথাও উদাম, এটুকুই পার্থক্য।

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

শুভকামনার জন্য অনেক ধন্যবাদ।

ঠিকই বলেছেন, সব দেশেই কম-বেশি আছে।

অতিথি লেখক এর ছবি

আমার কি মনে হয় জানেন নিয়াজ ভাই, আমরা মানুষ হিসেবে সবদিক থেকেই উন্নত বিশ্বের লোকগুলোর চেয়ে ভাল। সমস্যা হল, আমাদের টাকা নাই; গরীব দেশ। আর যতটুকু উন্নতি হইতে পারত তাও হইতেছে না রাজনীতিবিদগুলার জন্য। আপনি তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠেন।

/
রেশনুভা

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

আমার মতে যার যার কালচার তার তার কাছে। তবে আমাদের কালচারটা তুলনামূলক ভাবে আমার কাছে বেশি ভালো মনে হয় (আমি বায়াসডও হতে পারি)। তবে আমার এই পোস্টের মূল প্রসঙ্গটা ছিল আমাদের একটা ব্যাড কালচার এখানে খুব স্বাভাবিক ভাবে পালিত হচ্ছে। হয়তো সব কিছুই আপেক্ষিক!

আমাদের দেশ যদি উন্নত হতো তাহলে হয়তো এদের কাছে আমাদের কালচারটা দেখানো যেতো। কিন্তু সেটাতো হবার নয়!

অপনাকে অনেক অনেক শুভেচ্ছা।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।