ঘুরে এলাম সান্দাকফু-ফালুট -২

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: শুক্র, ০৯/০৯/২০১১ - ৭:৩৫অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

দেখে এলাম সান্দাকফু-ফালুট-১

সারারাত আধো ঘুম, আধো জাগরন আর কানে ক্রিস রিয়া, অ্যাল ষ্টুয়ার্ট, পিঙ্ক ফ্লয়েডের মধুর গুঞ্জনের পর বুড়িমারি সীমান্তে যখন পৌছলাম তখন ভোর হয়ে গেছে। বাস দাড়ালো শ্যামলী কাউন্টারে। কন্ডাক্টর অবশ্য তার আগেই সবার কাছ থেকে পাসপোর্ট সংগ্রহ করে রেখেছে। ট্রাভেল ট্যাক্স আর কাষ্টমস্ ক্লিয়ারেন্স পরিবহন হিসাবে সিস্টেম করা আছে, টাকা দেয়া ছাড়া যাত্রীদের আর কোন ঝামেলা পোহাতে হয়না। বাক্স পেটরাও ওপারে অপেক্ষারত বাসে পৌছে দেয়া বাস কতৃপক্ষের দায়িত্ব। পোর্টারকে বখশিস হিসাবে কিছু দেয়া অপশনাল। শ্যামলীর এই ব্যাপারটা নির্ভার করে সবসময়ই। সারারাত জার্নি করে ভোর বেলা এতসব লাগেজের দিকে খেয়াল রাখা আসলেই মুশকিল। আমার আবার হারানোর বাতিক আছে, কোন ট্যুর কিছু না হারিয়ে শেষ করতে পারিনা।

বাস থেকে নেমে হাত পায়ের গিট্টু ছুটিয়ে প্রত্যুষের শীতল সমীরন দিয়েই ব্রেকফাষ্টের ইনট্যানজিবল পর্বটা সেরে নিলাম। অতঃপর ভোরের অত্যাবশ্যকীয় কম্ম গুলো সম্পাদন করে আশেপাশের অঞ্চল রেকি করতে বের হলাম।
সারারাত জার্নির ধকল সত্বেও মনটা অকারন পুলকে ভরে আছে। ভ্রমনে আমার এই ই হয়, সবকিছুই ভালো লাগে। আধ ভাঙ্গা ছাপড়া হোটেলে বসে চা শিঙ্গারা খাওয়া ও অমৃতসম মনে হয়। বুড়িমারি বর্ডার অবশ্য একদমই বেসিক। কিন্তু সীমান্তের একটা আলাদা ব্যাপার আছে। কয়েক কদম হাটলেই ওপারে একটি নতুন দেশ, সেখানে মানুষ হাসিনা, খালেদা দন্দ্ব নিয়ে মাথা ঘামায়না, প্রথম আলো পড়েনা, গ্রামীন ফোনে কথা বলেনা, ভাইয়ের বদলে দাদা বলে, পোশাক আশাক ও কেমন যেন অন্যরকম – এ সবই কেমন অবাক করে আমাকে। একই ভুখন্ডের অবিচ্ছিন্ন বিস্তার কিন্তু ভ্যালুজ, জীবনাচার কিভাবে বদলে দেয় একটি কাটাতারের বেড়া, হয়তো কিছুটা ধর্ম কিংবা আরো কিছু! সমাজ বিজ্ঞান নাকি বলে কালচার চেঞ্জেস্ ইন এভরি ফাইভ (নাকি টোয়েন্টি) কিলোমিটারস্, কথাটা কি সত্যি? এখানে তো দেখি কালচার চেঞ্জেস ইন ফিউ হানড্রেড স্টেপস্।

আমার বাকি দুই সঙ্গী ব্রেকফাষ্টের জন্য হোটেল খুজে বের করে ফেলেছে ইতিমধ্যে। ‘বুড়ির হোটেল’। আগে এটি ছিলোনা। বুড়িমাড়ির ‘বুড়ির হোটেল’- স্বার্থক নাম ই বটে। যার নামে নাম সেই বুড়ি বসে আছে কাউন্টারের পাশে, দাবড়ানি দিচ্ছে বয় বেয়ারাদের। গরম গরম পরটা ভাজা হচ্ছে, দেখেই জিভে জল এসে যায়। সামনের দিন গুলোতে এরকম দিশি নাস্তা আর পাবোনা, তাই খান কয়েক পরটা নিমিষেই উড়িয়ে দিলাম ঝাল মুরগি আর ডাল ভাজি দিয়ে। বাকিরা ও। সীমান্তের দাপ্তরিক কর্মকান্ড শুরু হতে তখন ও অনেক বাকি, তাই ধীরে সুস্থে নাস্তাপর্ব শেষ করে বেনসনে সুখ টান দিতে দিতে চারিদিক অবলোকন করতে লাগলাম। পেটে দানাপানি পড়াতে মুডটা যেন আরো চাঙ্গা হয়ে উঠলো।

বুড়ির হোটেল-

Burir Hotel @ Burimari border

দীঘি (জিরো পয়েন্ট)-

The canal near zero point (burimari border)

আমাদের তিনজনের গ্রুপটি একই সাথে হোমজেনাস আবার হেটেরোজেনাস। তিনজনই একই সাথে একই প্রতিষ্ঠানে কর্মজীবন শুরু করি, আবার বছর খানেকের ভেতর ধারাবাহিক ভাবে পুরোনো প্রতিষ্ঠান ছেড়ে বর্তমান কর্মস্থলে জয়েন করি। তিনজনের ই সর্বশেষ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এক। আকার আকৃতিতে ও স্বভাবে আবার তিনজন একদমই তিনরকম। দুজন লরেল এন্ড হার্ডির বঙ্গীয় সংস্করন আর আমি মাঝারি বিল্ট (যদিও নিজেকে স্লিম ও স্লেন্ডার বলতেই ভালোবাসি)। ভ্রমন বিশেষ করে ট্রেকিং তিনজনেরই প্যাশন। এই লেখা যখন লিখছি তখন ও এই তিনজন আরেকটি বড়সড় ট্রেকিংয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছি। সময় বইতে লাগলো কখনো দৌড়ে, কখনো গড়িয়ে গড়িয়ে। অবশেষে খবর এলো কাষ্টমস্ আর ইমিগ্রেশনের স্যারেরা এসে পৌছেছেন, কিছক্ষনের মধ্যেই আমাদের ওপার বাংলায় পাঠিয়ে ধন্য করবেন। কাউন্টারে মোবাইল ফোনের ব্যাটারি গুলো শেষ বারের মত রিচার্জ করে নিলাম।

@ Burimari counter

বাসের কন্ডাক্টরের হাক ডাক শোনা যাচ্ছে। জনস্রোত নড়তে শুরু করেছে। অল রেডি সেট গো। দৃপ্ত পায়ে তিন অভিযাত্রী এগিয়ে চললাম জিরো পয়েন্টের দিকে। স্বদেশ এবং বৈদেশ দুদিকের ইমিগ্রেশনেই আমি সবসময় কেমন যেন একটু ক্যাবলাকান্ত (পড়ুন চোর চোর) হয়ে যাই। দৃপ্ত পদ নড়বড়ে ঠেকে একটু। পুর্ব জন্মে স্মাগলার ছিলাম নাকি! মনে হয় এই বুঝি পাসপোর্টে কোন ভুল ধরে আমাকে ফেরত পাঠিয়ে দিবে অথবা ব্যাগ থেকে পুরিয়া উদ্ধার করে বলবে ড্রাগ ডিলার। আর কারো এমন হয় কিনা জানিনা কিন্তু আমার হয়, বেশি হয় বিমান যাত্রায় বৈদেশ গমনে। যদিও বরাবরের মত কোন ঝামেলা ছাড়াই সীমান্ত অতিক্রম করলাম। লাগেজ গুলো এ প্রান্তের অপেক্ষারত বাসের পেটে চালান হয়ে গেছে অলরেডি। বাচ্চা ব্যাকপ্যাকখানি পিঠে ঝুলিয়ে আমরা চললাম ডলার বদল করতে।

ওপারের অপেক্ষায়-

Waiting @ zero point

এই সীমান্তের ভারতীয় অংশের ডলার বদল করার ছোট্ট বাজারখানি আমার বেশ লাগে। কাষ্টমস্ চেকপোষ্ট পেরিয়ে ডান দিকে একটি মেঠো পথ চলে গেছে। দুপাশে সারি সারি বাশ ঝাড় আর বট পাকুড় ছায়া দিছে কিচির মিচির রত ট্যুরিষ্টদের। পথের দু পাশ ঘেষে বাশের মেক শিফট্ মনোহরী দোকানের পসরা। ক্যাডবেরি ডেইরী মিল্ক, ফাইভ ষ্টার, লেইস, হলদিরামের ভুজিয়া, চানাচুর, শনপাপড়ি, আলপেনলিবে, অ্যাপিফিয, গ্র্যাপিফিয, কি নেই . . . ঘুরে ঘুরে দেখি। বেশ লাগে দেখতে। বার রকমের মানুষ ও দেখি। ডলার ভাঙ্গানো হল, টুকটাক স্ন্যাকস্ ও কেনা হলো। তারপর আবার বাসে চড়ার তাগাদা। চেংড়াবান্ধা থেকে শিলিগুড়ি ঘন্টা তিনেকের পথ। । সারা রাতের ক্লান্তি আর গন্তব্যে পৌছার তাড়নায় এই পথের যাত্রা তেমন টানেনা। মাঝে মাঝে হঠাৎ উকি দেওয়া চা বাগান শুধু শিহরন জাগায়। কখন ঘুমে জড়িয়ে গেলো দু চোখ বলতে পারিনা। যখন ঘুম ভাঙ্গে দেখি মহানন্দার চওড়া অথচ শীর্ণ স্রোতস্বিনীর উপর ক্যান্টিলিভার ব্রিজ, তার উপর দিয়ে বাস দৌড়চ্ছে। বুঝলাম শিলিগুড়ি শহরে প্রবেশ করছি। শিলিগুড়ি একটি বর্ধিষ্ণু শহর। পশ্চিমবঙ্গের দ্বিতীয় বৃহত্তম নগরী। এই নগরীতে শিক্ষিতের হার রাজ্যের সর্বোচ্চ এটা জেনে একটু অবাক হলাম। শহরটি মুলতঃ একটি ট্রানজিট সেন্টার; দার্জিলিং, ভুটান আর সিকিমের পর্যটকদের ষ্টপ ওভার ডেষ্টিনেশন। কিন্তু শহরের কাছাকাছি দুরত্বে রয়েছে চমৎকার কয়েকটি বন্যপ্রানী অভয়ারন্য আর চা বাগান। জলদাপাড়া আর মহানন্দা স্যাংচুয়ারী হাতি প্রেমীদের স্বর্গরাজ্য। ওয়াইল্ডলাইফপ্রেমীরা এ পথে ভ্রমনের সময় পছন্দের তালিকায় রাখতে পারেন এ দুটি অভয়ারন্য। দেখার মত চমৎকার কয়েকটি মনাষ্টারি ও আছে।

শিলিগুড়িতে আমরা থামবো মালাগুড়ি মোড়ের হোটেল সেন্ট্রাল প্লাজা কমপ্লেক্সে। শ্যামলীর কাউন্টার ওখানেই। বাস থামলেই আমরা তড়িঘড়ি করে লাগেজ নামিয়ে দোতলার রেষ্টুরেন্টে হাজির হই। তার আগে নিচের ষ্টোর থেকে কয়েক বাক্স ক্যাডবেরি ডেইরি মিল্ক আর ফাইভ ষ্টার কিনে আনি। সামনের দিন গুলোতে উর্ধমুখী হন্ঠনে এগুলোই আমাদের মাইটোকন্ড্রিয়া। সময় তখন দুপুর দেড়টা গড়িয়ে। সামনে আরো প্রায় ৫ ঘন্টার রাস্তা বাকি। যত দ্রুত সম্ভব লাঞ্চ শেষ করে রওনা দিতে হবে। রেষ্টুরেন্টে পরিচয় হলো প্রৌঢ় এক ব্যাংক কর্মকর্তা দম্পতি আর অ্যালিকোর তরুন এক্সিকিউটিভ দম্পতির সাথে। ব্যাংক কর্মকর্তার বয়স পঞ্চান্নর বেশি; স্ত্রীকে নিয়ে এই চড়াই উৎরাই পেরিয়ে দার্জিলিং যাচ্ছেন; স্পিরিট দেখে মুগ্ধ হয়ে গেলাম। আমরাও জুটে গেলাম দু দল নবীন প্রবীন দম্পতির সাথে।

শিলিগুড়িতে দুপুরের খাবার-

Lunch @ Hotel Central Plaza (Shiliguri)

এই পথে পর্যটকরা যাতায়াত করে মুলত মাহিন্দ্রা বা টাটা সুমো জিপ কিংবা মারুতি সেডানে। বাস যদিও চলে তবে সংখ্যায় কম আর সময় ও লাগে অনেক বেশি। এছাড়া রয়েছে দার্জিলিং হিমালয়ান রেলেওয়ের বিখ্যাত টয় ট্রেন। হাতে সময় থাকলে এটি একটি চমৎকার অপশন হতে পারে লেসার (Lesser) হিমালয়ান রেঞ্জের পাহাড় শ্রেনী দেখার। টয় ট্রেন ছাড়ে সকাল ৯ টায় আর দার্জিলিং পৌছে দুপুর ৩ টায়। আমরা আর সদ্য পরিচিত দম্পতিযুগল মিলে ভাড়া করলাম একটা শেভ্রলেট এসইউভি। আমরা যাব ঘুম পর্যন্ত। লাগেজ বাধাছাদা করে রওনা হলাম। শহর ছাড়িয়ে যেতেই বা দিকে শাল, পিয়াল আর সেগুনের বিস্তার। শিলিগুড়ি থেকে দার্জিলিং যাওয়ার এই পথটি আমার দারুন লাগে। প্রথমে এভারগ্রীন, সেমি এভারগ্রীন ক্রান্তীয় বন, চা বাগান আর সবুজে ঘেরা ইন্ডিয়ান আর্মির ইষ্টার্ন কমান্ডের ক্যান্টনমেন্ট, তারপর হঠাৎ করেই চড়াই শুরু সঙ্গে হেয়ার পিন বাঁক। সাত বছর আগে যখন প্রথম আসি এই পথে, কি ভয়ই না পেয়েছিলাম। এখন অবশ্য আর ভয়টয় লাগেনা বরং দাত কেলিয়ে উপভোগ করি। এই পথের প্রথম যাত্রীদের জন্য অবশ্য বাঁক সমৃদ্ধ ত্রিশ ডিগ্রীর অধিক গ্র্যাডিয়েন্টের চড়াই আর হঠাৎ উদয় হওয়া সুউচ্চ পাহাড়ের কালো অবয়ব ব্রেদ টেকিং অনুভুতির সৃষ্টি করবে নিশ্চিত।

লাগেজ তোলা হচ্ছে-

Loading of luggage

দার্জিলিংয়ের পথে-

Outskirt of Shiliguri

Roadside view on the way to Darjeeling

Fids

ভেবেছিলাম আড়াই ঘন্টার মধ্যে ঘুম এ পৌছাতে পারবো কিন্তু স্থানে স্থানে রাস্তায় অনেক পট হোল, রক্ষনাবেক্ষনের কাজ ও চলছে। সময় লাগলো অনেক বেশি। নানা চড়াই উৎরাই পেরিয়ে যখন ঘুম এ পৌছলাম সুয্যি মামা তখন পশ্চিমাকাশে ঢলে পড়েছে। আমাদের অস্বস্তি বাড়লো সামান্য, এর পরের পথ আমাদের অচেনা আর পাহাড়ে সন্ধার পরপরই জীবন যাত্রা স্থবির হয়ে পড়ে। ঘুম উপমহাদেশের সর্বোচ্চ রেলষ্টেশন, উচ্চতা প্রায় ২৬০০ মিটার। এখানে রয়েছে বেশ কয়েকটি দর্শনীয় স্থান – বিখ্যাত ঘুম বুড্ডিষ্ট মনাষ্টারি, বাতাসিয়া লুপ আর যুদ্ধে আত্মদানকারী গোর্খা সৈন্যদের স্মৃতিস্তম্ভ। বাতাসিয়া লুপ একটি বৃত্তাকার রেল টানেল যা তৈরী হয়েছে দার্জিলিংগামী ট্রেনের চড়াই এর গ্রেডিয়েন্ট কমিয়ে আনার জন্য। পরিস্কার আবহাওয়ায় বাতাসিয়া লুপ থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘার ব্যাকগ্রাউন্ডে দার্জিলিং শহরের দুর্দান্ত ভিউ পাওয়া যায়। সহযাত্রীদের সাথে শুভকামনা বিনিময় করে আমরা ঘুমে নেমে গেলাম। কোন খালি টেক্সির দেখা নেই, এদিকে সময় ও বয়ে যাচ্ছে দ্রুত সেই সাথে বাড়ছে শীতের প্রকোপ। খানিক্ষন অপেক্ষার পর একটি যাত্রী বোঝাই জিপ এসে থামলো সামনে, পেছনে কোন রকমে দু জন বসা যাবে। ড্রাইভারকে জানালাম যে আমরা মানেভঞ্জন যাবো, বাংলাদেশ থেকে এসেছি। ড্রাইভার একজনকে দরজায় ঝুলিয়ে দিয়ে আমাদের জায়গা করে করে দিলো। তিন ঢাউস সাইজের হ্যাভারসেক, সাথে বাচ্চা ব্যাকপ্যাক নিয়ে তিনজন কোন রকমে স্কিনটাইট হয়ে বসে পড়লাম। অসংখ্যবার থেমে, যাত্রী নামিয়ে, যাত্রী তুলে আমরা যখন প্রায় ২২০০ মিটার উচ্চতায় সুখিয়াপোখরি পৌছলাম তখন শরীরের নিচের অংশে অনুভতি বলতে কিছু অবশিষ্ট নেই।

সুখিয়াপোখরিকে একটা ভুতুড়ে জায়গা বলেই মনে হল। বেশ ঠান্ডা আর ঘন কুয়াশায় মিটমিট করে বাতি জ্বলছে, কোন প্রানচাঞ্চল্য নেই। শুধু দেখা যাচ্ছে সশস্ত্র সীমা বলের বেশ কয়েকজন সীমান্তরক্ষী আর কয়েকটা ট্রুপ ক্যারিয়ার। ইন্দো-নেপাল আর ইন্দো-ভুটানের সীমান্ত পাহারা দেয় ভারতীয় যে বাহিনী এরই নাম সশস্ত্র সীমা বল (এস এস বি)। সন্ধে সবে গড়িয়েছে মাত্র কিন্তু মনে হচ্ছে গভীর রাত চারিদিকে। খুজে পেতে একটা মারুতি ওমনি মাইক্রো পাওয়া গেল। কিন্তু পুরোটাই রিজার্ভ নিতে হবে। আমরাও তাই চাচ্ছি। ড্রাইভার মাষ্টারজী আর মাষ্টারজীর বাড়ি উভয়ই ভালোভাবে চেনে। সুতরাং নিশ্চিন্তে তার হাতে নিজেদের সঁপে দিয়ে আবারও যাত্রা। প্রায় আধঘন্টা ক্লান্তিতে ভেঙ্গে পরা ড্রাইভের পর অবশেষে পৌছলাম বহু আকাংখিত মানেভঞ্জন- আমাদের সান্দাকফু ট্রেকিং এর বেসক্যাম্প। ২১৫০ মিটার উচ্চতায় ইন্ডিয়া-নেপাল সীমান্তের ঘুম ঘুম এক ক্ষুদ্র জনপদ। ছোট্ট একটি কালভার্ট বিভক্ত করেছে নেপাল আর মানেভঞ্জনকে। শুরু না হতেই শেষ হয়ে যাওয়া তিব্বতী স্টাইলের সেটলমেন্ট। নিচে দোকান আর উপরে আবাসন। মৃদু আলোয় রাস্তায় আড়াআড়ি ঝুলিয়ে রাখা রংবেরঙের প্রেয়ার ফ্লেগ দেখা যাচ্ছে। পর্যটন এখানকার মানুষের আয়ের প্রধান উৎস । গত কয়েকবছর বিদেশী টুরিষ্টদের কাছে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে এই ট্রেকটি। সেই সুত্রে মানেভঞ্জন হয়ে উঠেছে প্রধান লজিষ্টিক সেন্টার। গাড়ি প্রায় সাড়ে আটটা পৌনে নয়টা নাগাদ আমাদেরকে জীবনদার বাড়ির একদম সদর দরজায় নামিয়ে দিলো। নক করতেই তিব্বতী চেহারার সৌম্য দর্শন জীবনদা নেমে এলেন। প্রথম দেখাতেই ভালো লেগে গেল ভদ্রলোককে। জানালেন আমদের জন্যই অপেক্ষা করছেন অনেকক্ষন ধরে।

মানেভঞ্জন (নেপাল ইন্ডিয়া বর্ডার)-

Maneybhanjan

Small town of Maneybhanjan

Maneybhanjan from Jibonda's lodge . .

জীবনদা-

Jibonda

এখানকার অধিকাংশ বাড়ির মত নিচে দোকান আর উপরে খান কতক ঘর নিয়ে জীবনদার বাসা কাম আবাসিক হোটেল। দোতলার বা দিকটায় পরিবার নিয়ে থাকেন আর ডান দিকের অংশটায় ট্রেকারদের থাকার আয়োজন। আমাদেরকে তিন বেডের একটি ঘর খুলে দিলেন। ক্ষুধা, ক্লান্তি আর প্রচন্ড ঠান্ডায় আমাদের তখন ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা। প্রাথমিক কুশল বিনিময়ের পর আমাদের অবস্থা দেখে দ্রুত চায়ের ব্যাবস্থা করলেন তারপর গেলেন রাতের খাবারের আয়োজন করতে। যার যার খাটে নিজেদের সব লাগেজ রেখে ভারমুক্ত হলাম। টয়লেটের ব্যাবস্থা বেশ ভালো। কিন্তু পানির কল ছাড়তেই যেন ইলেক্ট্রিক শক খেলাম। প্রচন্ড ঠান্ডা পানি একদম তরল আগুনের মত ছ্যাকা দিলো। কিছুক্ষন পর জীবনদা পর এক বালতি গরম পানি নিয়ে এলে তা দিয়ে তিনজন কোন রকমে হাত মুখ ধুয়ে ফ্রেশ হয়ে অপেক্ষা করতে লাগলাম কখন খাবার ডাক আসে। এক ঘন্টা পর ডিনারের ডাক যেন কানে মধু বর্ষন করলো। সামান্য আয়োজন কিন্তু ক্ষুৎ পিপাসায় কাতর আমাদের জন্য তাই রাজসিক। বাড়ির অন্দর মহলে পারিবারিক ডাইনিং এ খাবার দেয়া হয়েছে। প্রথমে পাপড় ভাজা আর চাটনি। তারপর সরু চালের ভাত, আলু, ফুলকপির তরকারি সাথে চামরি গাইয়ের ঘি। গরম গরম ভাতের সাথে ঘি বেশ লাগছিলো। খেতে খেতেই কথা হতে লাগলো। দাদা বৌদি দুজনেই বেশ আলাপি, অল্প সময়েই আপন করে নিয়েছেন আমাদের। কথায় কথায় জানলাম উনারা বাংলাদেশে গিয়েছেন। ঢাকা ও ঘুরে এসেছেন। দুজনেই বাংলাদেশের ব্যাপারে বেশ ফ্যাসিনেটেড। বৌদি ইলিশ, গলদা চিংড়ি আর আর জামদানির ভক্ত। গরম গরম খাবার, উষ্ণতা আর ঘরোয়া পরিবেশ লম্বা ভ্রমনের ক্লান্তি প্রায় ভুলিয়ে দিলো।

রাতের খাবার (জীবনদার হোটেল)-

Dinner @ Maneybhanjan

খাবার পর জীবনদার সাথে বসলাম পরেরদিনের প্ল্যান নিয়ে। মানে থেকে সান্দাকফু যাবার বেশ কয়েকটি ট্রেক রুট আছে। দুটি রুট খুব পপুলার। একটি হচ্ছে মানেভঞ্জন-চিত্রে-লামায়ধুরা-মেঘমা-টংলু-শিংগালিলা পার্ক-কালোপোখরি-সান্দাকফু-ফালুট-গুরদুম-শিরিখোলা-রিম্বিক-ধোত্রে-মানেভঞ্জন-ঘুম হয়ে দার্জিলিং আরেকটি হচ্ছে মানেভঞ্জন-চিত্রে-লামায়ধুরা-মেঘমা-টুমলিং-জাউবাড়ি-গাইরিবাস-কালোপোখরি-সান্দাকফু-ফালুট-গোর্খে-সামানদিন-রামাম-শিরিখোলা-রিম্বিক-ধোত্রে-মানেভঞ্জন-ঘুম হয়ে দার্জিলিং। এছাড়া অনেকে রিভার্স অর্ডারেও ট্রেক করে থাকে। আমরা দ্বিতীয়টি বেছে নিলাম। প্রথমটিতে দ্রুত অধিক উচ্চতায় এক্সপোজার নিতে হয়, যা আমরা চাচ্ছিনা আর প্রথম রাত (টংলু) যেখানে কাটাতে হবে সেখানে জায়গা পাওয়া ও অনিশ্চিত। দ্বিতীয় অপশনে আবার হাটতে হবে বেশি কিন্তু অ্যাক্লাইমেটাইজেশনের সুযোগ ও বেশি, রাতে থাকার ও ভালো ব্যাবস্থা। প্রথম রাত্রি যাপন নেপালী গ্রাম টুমলিং। দ্বিতীয় রাত কাটবে নেপাল ইন্ডিয়ার একদম সীমান্তবর্তী গ্রাম কালোপোখরি, তৃতীয় রাত সান্দাকফু, চতুর্থ রাত ফালূট। এরপর শুরু হবে নিচে নামা। অবরোহনে প্রথম রাত্রি যাপন গোর্খে, তারপর শিরিখোলা সেখান থেকে রিম্বিক পৌছে আনুষ্ঠানিক ভাবে হন্ঠনের সমাপ্তি এবং জিপে করে দার্জিলিং যাত্রা। আমাদের গাইড কাম পোর্টার আগেই ঠিক করে রেখেছেন জীবনদা। তিনজনের জন্য তিন শেরপা পোর্টার কাম গাইড। বিদেশী ট্যুরিষ্টদের জন্য এ পথে গাইড ম্যান্ডেটরি। বড় মাউন্টেন হ্যাভারসেক বহন করবে পোর্টাররা আর আমরা ছোট ব্যাকপ্যাকে বইবো অত্যাবশ্যকীয় জিনিসপত্র।

জীবনদার সাথে ট্রেকিং প্ল্যান-

Planning for morning . .

অধম লেখক-

Me (Razib)

পোর্টারদের জন্য গুছিয়ে রাখা ঢাউস লাগেজ-

Our luggage . . Our luggage . .

সকালে উঠতে হবে ভোরে। প্রথমেই পারমিট নিতে হবে ফরেষ্ট ডিপার্টমেন্টের চৌকি থেকে তা না হলে ট্রেস পাসিংয়ের অভিযোগে শ্রীঘরে যেতে হবে কারন এই ট্রেকের ইন্ডিয়ান অংশ ন্যাশনাল পার্কের অন্তর্ভুক্ত। তাছাড়া ফরেন ট্যুরিষ্ট হিসেবেও নাম নিবন্ধন করতে হবে। এখানে সন্ধ্যা নামে খুব দ্রুত, সুতরাং দিন থাকতে থাকতেই টুমলিং পৌছতে পারলে ভালো। পথ প্রায়ই কালো মেঘে ঢেকে যায় পুরোপুরি, তখন ভিজিবিলিটি একদম জিরো (সত্যি কিন্তু, সামনে বাড়িয়ে দেয়া নিজের হাত ও দেখতে পাইনি)। অবশেষে জীবনদার কাছ থেকে আরো কিছু দরকারী টিপ্স্ নিয়ে গুডনাইট জানিয়ে ঘুমোতে গেলাম। ঠান্ডায় ভালো ঘুম হলোনা। লেপ আর কম্বলের ভিতর দিয়েও কাঞ্চঞ্জঙ্ঘা থেকে ধেয়ে আসা কনকনে বাতাস হাড়ের ভিতর সুই ফোটাচ্ছে। এভাবেই আধো ঘুম আধো জাগরনে রাত কাটলো। ভোরে ঘুম থেকে উঠে দ্রুত চা নাস্তা পর্ব শেষ করে লাগেজ গুছাতে বসলাম। অত্যাবশ্যকীয় এবং বার বার প্রয়োজন হবে এমন জিনিস যেমন লাইট জ্যাকেট, সানগ্লাস, ক্যামেরা, উইন্ডচিটার, ক্যাপ, পানির বোতল, লাইট স্ন্যাকস্, ফ্ল্যাশ লাইট, গান শোনার যন্তর এসব নিজেদের ছোট ব্যাকপ্যাকে নিলাম। বাকি সব পোর্টারদের ব্যাগে। জীবনদা গাইড নিয়ে হাজির হলেন। প্রথমজন পঞ্চাশ বছর বয়সী ভেটেরান শেরপা ট্রেকার পলমনজি, প্রায় পচিশ বছর ধরে হিমালয় রিজিয়নে গাইড আর পোর্টারের কাজ করছেন, বাকি দুজন সদ্য টিনেজ উত্তীর্ন তরুন। একজনের নাম প্রেমা লামা আরেকজন সাঙ্গে শেরপা। আমার বরাতে পড়ল সাঙ্গে। গাইডদের সাথে ডিল হচ্ছে ডেইলি তিনশ রুপি ড্রাই (মানে থাকা খাওয়া নিজেদের)। তবে এ ধরনের ট্রেকে অলিখিত কনভেনশন হচ্ছে ট্রেকাররা যে টি হাউসে (হাই মাউন্টেনে ছোট ছোট পাহাড়ী গ্রামে ট্রেকারদের থাকার জায়গাকে টি হাউস বলে) থাকবে সেখান থেকেই গাইড আর পোর্টারদের ফ্রি লজিং আর খাওয়া বরাদ্দ করা হয়। পলমনজীর পিতৃসুলভ মমতা আর সাঙ্গে, লামার খুনসুটি ও দরাজ গলার নেপালি গান আমাদের পুরো ট্রেকে নির্ভাবনায় থাকতে অনেক সাহায্য করেছে।

আমাদের ট্রেইল (সংগৃহীত)-

sandakphu trail map (Collected from net)

ট্রেকের অল্টিচ্যুড ম্যাপ (সংগৃহীত)-

sandakphu_trek_altitude-map (Collected)

জীবনদার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে চমৎকার আতিথিয়তার জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে পথে নামলাম। নীচে নেমেই একটা মনোহরী দোকান থেকে স্থানীয় ভাবে তৈরী ভারী উলের মোজা কিনলাম সবাই। অধিক উচ্চতায় আমাদের শহুরে মোজায় নাকি শীত কাটবেনা। তারপর যথারীতি রিপোর্টিং এবং পারমিট সংগ্রহ করে আনুষ্ঠানিক ভাবে ট্রেকিংয়ের যাত্রা শুরু হলো। প্রথম গন্তব্য ২৭০০ মিটার উচ্চতায় নেপালের ছোট্ট গ্রাম চিতরে (Chitrey)। দুরত্ব দুই কিলোমিটার আর চড়তে হবে প্রায় ৬০০ মিটার। দু পাশে মোচাকৃতি গাঢ় সবুজ পাইনের বিস্তার, তার মাঝ দিয়ে মসৃন পিচ্ ঢালা পথ একেবেকে খাড়া উঠে গেছে। দূরের নাম না জানা বরফ মোড়া শৃঙ্গ সুর্যের প্রথম আলোয় ঝিকিয়ে উঠছে। ঘন নীল আকাশে পেজা তুলার মত সাদা মেঘ ইতস্তত বিক্ষিপ্ত উড়ে বেড়াচ্ছে। বুক ভরে বিশুদ্ধ পাহাড়ী হাওয়া নিয়ে ধীর কদমে আমাদের উপরে ওঠা শুরু হলো।

আমাদের গ্রুপ (আমি ক্যামেরার পিছনে)-

The group ('m missing)

মানেভঞ্জন-

Maneybhanjan

চিত্রের পথে-

The road to Sandakphu

Walking through the pine forest

On the way to Chitrey

The road going up from Maneybhanjan

DSC03915

চমৎকার সুর্যালোকিত সকাল ধীরে ধীরে কনকনে হিম ঠান্ডাকে আরামদায়ক করে তুলছে। আজ সব মিলিয়ে প্রায় চৌদ্দ কিলোমিটার হাটার প্ল্যান। দিনের শেষ গন্তব্য ৩০০০ মিটার উচ্চতায় নেপালী গ্রাম টুমলিং। যে কোন ট্রেকিংয়ে প্রথম কয়েক ঘন্টা সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং। ৮০০০ ফিট উপরে বাংলাদেশের সমুদ্র সমতলের ফিটনেস ধুয়ে মুছে যাবে প্রথম ঘন্টাতেই। শক্ত মানসিকতা খুব দরকার সামনে এগিয়ে যাবার জন্য। ধীর লয়ে আমরা উপরে উঠছি। কোন রকম তাড়াহুড়া বা পরপরস্পরের সাথে হাটার প্রতিযোগিতায় যাচ্ছিনা। অযথা স্ট্রেস নেয়া বা নিজের সামর্থ্যকে স্ট্রেচ করার চেষ্টা করা এই উচ্চতার স্বাস্থকর নয়। হাই অলটিচ্যুড ট্রেকিংয়ে সবসময় কিছু থাম্ব রুল মেনে চলা দরকার। কখোনই অন্য ট্রেকারের সাথে সামর্থ্যের প্রমান দেয়ার প্রতিযোগিতায় নামা যাবেনা। নিজের সীমাবদ্ধতা সম্পর্কে জ্ঞাত হয়ে নিজের শরীরের জন্য বেষ্ট ফিট হাটার গতি নির্ধারন করতে হবে, সব সময় রিল্যাক্স থাকার চেষ্টা করতে হবে, ট্রেক লিডারের উপর আনুগত্য থাকতে হবে, প্রচুর পানি পান করতে হবে আর মাউন্টেন সিকনেসের লক্ষন দেখা দিলে গোপন না করে জানাতে হবে তৎক্ষনাৎ। বাতাস আস্তে আস্তে পাতলা হয়ে আসছে বোঝা যাচ্ছে, শ্বাসপ্রশ্বাসের গতি দ্রুত হতে লাগলো অধিক অক্সিজেন পাওয়ার আশায়। প্রায় দু ঘন্টা পর দমের অভাবে ফুসফুস যখন খাঁচা ছেড়ে বের হয়ে যাবার জোগাড় তখনই দেখা গেল মনোরম পাহাড়ী উপত্যাকায় বৌদ্ধ মঠ, স্তুপা আর কয়েক ঘর পরিবার নিয়ে ছোট নেপালী গ্রাম চিত্রে; চিত্রপটের মতই সুন্দর। খাবার আর বিশ্রাম পাওয়া যাবে ভেবেই মন প্রফুল্ল হয়ে উঠল। এই সব ট্রেকে পাহাড়ী বসতিগুলো ট্যুরিষ্টদের খাবার, পানীয় আর আশ্রয় দিয়ে থাকে। এটি তাদের আয়ের একটি উৎস ও বটে। আমরা তেমনি একটি কাঠের দোতলা বাড়ির নিচতলায় হাজির হলাম। গরম গরম নুডুল স্যুপ আর ধোয়া উঠা চা দিয়ে দিনের দ্বিতীয় ব্রেকফাষ্ট সম্পন্ন করলাম। মনে হলো জীবনে এত সুস্বাদু খাবার কখোনই খাইনি। খাবার আর কিছুক্ষন বিশ্রামের পর বৌদ্ধ মঠ ঘুরে কিছু ফটুক তুলে তারপর আবার রওনা হলাম; গন্তব্য ৭ কিলোমিটার দূরে ২৯০০ মিটার উচ্চতায় মেঘে ঢাকা গ্রাম মেঘমা। পরবর্তী গল্প আরেকদিন হবে না হয় এখন কিছু উলটাপাল্টা ছবি দেখি।

চিত্রের পথে-

Pine forest (on the way to Chitrey)

বৌদ্ধ মঠ (চিত্রে)-

Buddhist monastary @ Chitrey (Nepal)

স্তুপা (চিত্রে)-

Stupa @ Chitrey

দিনের চাঁদ-

Moon in the morning

মানেভঞ্জন থেকে দেখা পাহাড় শ্রেনী-

Panorama from Maneybhanjan

চিত্রে ভ্যালী (নেপাল)-

Small valley @ Chitrey

নুডুল স্যুপ (চিত্রে)-

Noodle soup

মেঘমা পথে যাত্রা-

On the way to Meghma . .

মেঘ ছুতে যাই-

On the way to Meghma . .

মানেভঞ্জন-

Maneybhanjan from above . .

তিন মাস্কেটিয়ার্স-

Trekking started . . .

বারান্দা থেকে দেখা আইস ক্যাপড্‌ শৃঙ্গ-

Mountain range as seen from Maneybhanjan


মন্তব্য

লালকমল এর ছবি

আমি গত ২ দিন যাবত সমরেশ মজুমদারের গর্ভধারিনী পড়তেছি। বইটিতে এই পথের দারুন বর্ণনা আছে। আর এই সময়ে আপনার লেখা।
লেখায় উত্তম জাঝা!

অচিন পাখি এর ছবি

ধন্যবাদ আপনাকে পড়ার জন্য।

তারেক অণু এর ছবি

চলতে থাকুক। বেশ লাগছে পাহাড়ে --

অচিন পাখি এর ছবি

ধন্যবাদ তারেক ভাই। আপনার ভ্রমন কাহিনীগুলো ও দারুন লাগে পড়তে। ভালো থাকবেন।

আরিফিন সন্ধি এর ছবি

ভালো লাগলো, চলতে থাকুক চলুক

অচিন পাখি এর ছবি

ধন্যবাদ ভাই কষ্ট করে পড়ার জন্য। আরো বিরক্ত করবো কথা দিচ্ছি।

রু (অতিথি) এর ছবি

ভালো লাগলো। পোস্ট ভালো মতো পড়ার সুযোগ হয়নি, যতটুকু পড়লাম খুব ভালো লেগেছে। ছবিগুলো চমৎকার।

অচিন পাখি এর ছবি

ধন্যবাদ রু। উৎসাহিত হলাম।

মানিক চন্দ্র দাস এর ছবি

ফিরে আসবো তুমি কেদোনা ফেলে আপোষে চাপা বেদনা...
আপনের লেখা আর ভ্রমন দেইখা হিংসা হয় আর হয় তারেক ভাই এরটা দেইখা। চলুক ভাই...

অচিন পাখি এর ছবি

ধন্যবাদ মানিকদা। আফসোস এক জীবনে হিমালয় দেখে শেষ করতে পারবোনা।

parikshit এর ছবি

আমি এই বাংলায় থেকে ও আজ অবধি এই স্বপ্ন পুরো করতে পারলাম না
দুধের স্বাদ ঘোলে মিটালাম
খুব ভালো লাগছে ভাই চালিয়ে যান ! চলুক

অচিন পাখি এর ছবি

ধন্যবাদ ব্রাদার। আপনিও যাবেন নিশ্চয় একদিন।

দময়ন্তী এর ছবি

আহা দারুণ!

-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'

অচিন পাখি এর ছবি

ধন্যবাদ দময়ন্তী। ভালো থাকবেন।

ঢাকাইয়্যা যাদুকর () এর ছবি

ভাল লাগল অচিন পাখি - তাড়াতাড়ি পরের পর্ব লিখেন - অপেক্ষায় রইলাম

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।