শেষ বেলার গল্প

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: রবি, ১৮/০৯/২০১১ - ৭:২১পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

পদার্থ‌বিজ্ঞানে নিঊটন যে গতি সম্পর্কি‌ত তৃতীয় সূত্রটি দিয়েছেন সেটা মানুষের মনের উপরও ক্রিয়া করে কিনা এ ব্যাপারে গবেষণা প্রয়োজন । এই যেমন আমার জীবনে আমি বহুক্ষেত্রে এটার প্রমাণ পেয়েছি । হয়তো কোন বিজ্ঞানী এই ব্যাপারে ভবিষ্যতে এই ব্যাপারে আমাদেরকে জানাবেন কিন্তু আমি এটা অনুভব করতেসি প্রতিনিয়ত ।

এই যেমন ছোটবেলায় ফুটবল খেলাটা আমি একদমই পছন্দ করতাম না কিন্তু এখন অন্যকোন খেলার চেয়ে ফুটবলই আমার পছন্দের খেলা । আমাদের কোন গাড়ী ছিল না তাই গাড়ী একদমই সহ্য করতে পারতাম না অথচ এখন নতুন কোন মডেলের গাড়ী দেখলেই বুকটা আনচান করে উঠে ।

নারী সঙ্গ আমি কোন দিনই পাই নাই , ভীতুর ডিম হওয়ার কারণে মেয়ে মানুষ দেখলে সাড়ে তিন হাত সর্ব‌নিম্ন দূরত্ব বজায় রাখতাম । এমনকি মেয়েদের সাথে একই ব্যাচে পড়ালেখা করতেও আমার সমস্যা হতো । সেই আমি পরবর্তী‌তে মেয়ে মানুষের পিছনে ছুটে হয়রান হয়েছি ।

মানুষের মনের উপর নিউটন ব্যাটার এই সূত্রটার সর্ব‌শেষ প্রয়োগ দেখলাম গতকাল রাতে । চারটা বছর ধরে যে আমি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম শুনলে ভুরু কুঁচকে থাকতাম সেই আমার কি হলো আজ ? যান্ত্রিকতাময় এই বিদ্যাপীঠের প্রতিটি দিন আমার কাছে অসহ্য লাগতো । সবাই ব্যস্ত , কারো ফুসরতের কোন অবসর নাই । এখানে সবাই চলে ঘড়ির কাঁটা মেনে । ল্যাব , ক্লাস , ক্লাস টেস্ট , এসাইনমেন্ট - এই শব্দগূলো ছাড়া এখানকার মানুষগূলোর মুখে কোন কথাই যেন নাই । আমার অস্হি‌র লাগতো , মনে হতো কবে বের হবো এই জেলখানা থেকে ? মনে -প্রাণে চাইতাম এই জায়গাটা ছেড়ে চলে যেতে । আসলে যে পেয়েছি এখান থেকে সেটা সম্পর্কে‌ হয়তো আমি অসচেতন ছিলাম । কিন্তু আমার এই অন্যায় ব্যবহার ভেঙ্গে গেলো গতকাল রাতে । মোস্তাকিম কালই ফেসবুকে খুলে ফেললো RAG 2011(CANVAS 06) নামের একটা গ্রুপ । আমাকে এড করার পর থেকেই আমার মনের পর্দা‌য় একে একে ভেসে উঠতে শুরু করলো গত চার বছরের সব স্মৃতিগুলো । আমাকে দিশেহারা করে দিল একেবারে । মনটা খারাপ হয়ে গেল এটা ভেবে যে এই জায়গাটা এখন সত্যিই ছেড়ে চলে যেতে হবে । না চাইলেও চলে যেতে হবে । গত চারটা বছর এই ক্যাম্পাসের প্রতিটি কোণে অজস্র স্মৃতিগাঁথা আমার হৃদয় মন্দিরে নাড়া দিয়ে গেল । আমি বুঝতে পারলাম যে হাজারো অভিমান , হাজারো অভিযোগের আড়ালে আসলে আমি এই জায়গাটাকে অনেক ভালোবেসে ফেলেছি । এখন বেলা ফুরিয়েছে , চলে যাবার সময় এসে গেছে প্রায় । এই শেষবেলায় এটুকুই বুঝতেসি যে বুয়েটিয়ান হওয়াটা অনেক ভাগ্যের ব্যাপার যে আগে বুঝি নাই । এই প্রতিষ্ঠানটার জন্য আমার ভালোবাসা ফুরোবে না কখনো । আমার মনের অবচেতনায় নিউটন আমার মনের উপর তার সুত্রটি নিয়ে খেলায় মেতে উঠলো যেন !!!
--- জাতির বিবেক


মন্তব্য

কৌস্তুভ এর ছবি

নিউটনের তৃতীয় সূত্রের সাথে আপনার মনোভাব পরিবর্তনের যে সম্পর্ক করতে চাইছেন সেটা খুব কষ্টকল্পিত। আপনি ফুটবল পছন্দ করেন না তাই ফুটবলও আপনাকে পছন্দ করে না, এরকম কোনো ব্যাপার হলে ঠিক হত।

রিশাদ_ ময়ূখ এর ছবি

শুরুর প্যারা আর ঘটনা মিলল না। যেমন মেয়েদের ভয় পান। হওয়া উচিত ছিল মেয়েরা আপনাকে উলটা ভয় পায়। অথবা মেয়েদের সাথে কথা বলেন না, এজন্য মেয়েরা আপনার সাথে কথা বলে। কিংবা ফুটবল পছন্দ করেন না দেখে, ফুটবল উল্টো আপনাকে লাথি মেরে ফেলে দিল। বিদায়ের বেলা বড় কষ্টের।

sas এর ছবি

ধুর! রেগে টং
বাইর হইলে বাঁচি। দোস্তরা সব চাকরি বাকরি করে আর আমরা এখনো র‍্যাগ নিয়া কান্দি। ওঁয়া ওঁয়া
বেশি খারাপ লাগলে মাস্টার্সে ভর্তি হ।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।