পাতালের জীবন আর রুশ দেশের রূপকথা

রিসালাত বারী এর ছবি
লিখেছেন রিসালাত বারী [অতিথি] (তারিখ: শুক্র, ২৪/০২/২০১২ - ৮:৩৯অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

নিস্কর্মা শেইদুল্লাকে মনে আছে তো? সেই যে কোন কিছু না করেই স্রেফ বসে বসে ধনী হয়ে যেতে চেয়েছিল, আর অবলীলায় হাতের কাছে আসা ধন-রত্ন পায়ে ঠেলে চলে যাচ্ছিল শুধু সামান্য পরিশ্রমের ভয়ে! শেইদুল্লাকে আইডল বানাতে চেয়েও কখনো পারিনি। আলদার কোশে আর শিগাই বাইয়ের গুনগুলি রপ্ত করতেই যেন ছুটে চলেছি দিন-রাত। বোকা ইভানের মত চুল্লির উপর বসে ব্যাঙের ছাতা খাওয়ার সাধ আমার বহুদিনের। আর সবাই যখন ঘুমিয়ে যাবে তখন তেপান্তরের মাঠে গিয়ে চিৎকার করে ডাকবো সিভকা-বুর্কাকে। তার এককান দিয়ে ঢুকতে না পারলেও ক্ষতি নেই বিশেষ। জাদুকরী ভাসিলিসাকে পাওয়ার লোভে ব্যাঙের ঠোঁটে চুমু খাইনি কোনদিন। কি জানি, স্বপ্ন ভঙ্গের ভয়েই হয়তো।

জাদুকরী ভাসিলিসা বা বুদ্ধিমতি আনাইৎ কে স্বপ্নে দেখিনা বহুদিন। সূর্যের বোন ইলিয়ানার কথাও ভুলে গেছি। তবুও ঘুরেফিরে মুরগীর এক ঠ্যাঙের উপর দাঁড়ানো ঘূর্ণায়মান একটা কুঁড়েঘর মনে উঁকি দেয়। পিশাচ রাজার প্রাণের সন্ধানে বের হয়ে পথের খোঁজে সেই কুঁড়েঘরে রাত্রিযাপন আর বাবা ইয়াগার সাথে এক কাপ চা খেতে আজকাল বেশ ইচ্ছা হয়। হারানো পথ খুঁজে পেতে কেউ যদি দিত একটা লাল সুতোর গুটি! সুতোর গুটি গড়িয়ে দিয়ে নিশ্চিন্তে হেঁটে যেতে পারতাম তার পিছু পিছু!

সরোজিনি নদীর কালো জলের উপর দাঁড়ানো কালিনা সাঁকো দেখি না বহুকাল। দ্বাদশ মুন্ডু দানবের সবকটা মাথা এক কোপে আলাদা করতে আমার দরকার একটা দামেস্কাসের ইস্পাতের তলোয়ার। স্তেপের পর স্তেপ হেঁটে খোঁজা হয়নি সেই তলোয়ার। শুঁড়িখানা থেকে উপাসনালয়ে চষে বেড়ানো হয়নি আমার। ভুলে গেছি সেইসব আড্ডার কথা, “যেখানে চলতো আসবমত্ত বেশ্যার নাচ, জুয়ারির চোখে চোখ রাখতো সন্ন্যাসী”। বুড়ি ডাইনী উবীর আর পবন-দেব কতুরার হাত থেকে বাঁচতে বেছে নিয়েছি তাই পাতালের জীবন।

ঊনত্রিশ বছর যুদ্ধ শেষে বাড়ি ফেরার পথে কাঁধের ঝোলায় যমদূতকে পুরে ছুঁড়ে ফেলতে চেয়েছিলাম দানিয়ুবের গহীনে। বারোলদই মের্গ্রেনের বীরপুত্রও হতে চাইনি। শুধু আলতিনসাকা’র সোনার গুটিটা পকেটে নিয়ে একবার শীষ বাজতে চাই ডাকাত সলভেই’র মত।


মন্তব্য

মরুদ্যান এর ছবি

কালকেই বইটার ই-বুক ভার্সনটা দেখতেসিলাম! আহা সেই দিন গুলা! মন খারাপ

রিসালাত বারী এর ছবি

আহা সেই দিন গুলা! ইবুকের লিঙ্ক দে।

মন মাঝি এর ছবি

মাশার ইচ্ছাপূরণের ফুলটার কথা মনে আছে? ঐ যে সেই ৭ পাপড়িওলা জাদুর ফুলটা যেটার একটা পাপড়ি ছিড়ে যেই উইশ করা যায় সেইটাই পূরণ হয়ে যায়? আমি ঐ ফুলটার একটা পেয়েছিলাম। আমি তার একেকটা পাপড়ি ছিঁড়ে আপনি উপরে যা যা চেয়েছেন তার সব কিছু কতবার যে করে এসেছি! হা হা...

আপনার লাগবে একটা পাপড়ি ?

****************************************

রিসালাত বারী এর ছবি

মোটে একটা পাপড়ি দিবেন! মন খারাপ এই ফুলের বাগানটা দরকার আমার।

পড়ার জন্য ধন্যবাদ।

সবুজ পাহাড়ের রাজা এর ছবি
রিসালাত বারী এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

উচ্ছলা এর ছবি

ঈশ্ মনে পড়ে গেল সেইসব রূপকথার দিন-রাত্রি।
লেখা খুব ভাল লেগেছে। একদম অন্যরমকম সুন্দর লেগেছে।

রিসালাত বারী এর ছবি

হাসি থ্যাক্কু।

তদানিন্তন পাঁঠা এর ছবি

বিশাল এক মন্তব্য লিখেছিনু, এ্যাজাক্স এরর দিয়া খায়া ফালাইছে। দুঃখে মোর পরান উষ্ঠাগত। তাই আর বেশি কিছু কমুনা। খালি কই আপনি এইগুলা মনে করায়দিয়া ঠিক কাম করেন নাই। পেট পুড়তাছে। মন খারাপ

লেখায় উত্তম জাঝা!

রিসালাত বারী এর ছবি

এইসব ষড়যন্ত্রের বিচার চাই। মন্তব্য ফেরত চাই। রেগে টং

আসলেই ঠিক কাম করি নাই। যান, আমারে মাইনাচ। পড়ার জন্য ধন্যবাদ।

তিথীডোর এর ছবি

আহ, ছেলেবেলা...

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

রিসালাত বারী এর ছবি

সেটাই।।।

পড়ার জন্য ধন্যবাদ।

কৌস্তুভ এর ছবি

ধুর, শুরু হতেই ফুস করে শেষ হয়ে গেল!

রিসালাত বারী এর ছবি

ফাঁকিবাজের তালিকা থেকে নাম কাটান গেছে। এইবার তিন মাসের জন্য নিশ্চিন্ত দেঁতো হাসি

কৌস্তুভ এর ছবি

তবেরে!

তারেক অণু এর ছবি
রিসালাত বারী এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

প্রদীপ্তময় সাহা এর ছবি

বেশি কথা বলব না ।
দুঃখ আর আনন্দ দুটোই হচ্ছে ।

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

ফাঁকিবাজের দল থেকে নাম কাটা গেছে বলে আবার তিন মাসের নামে ঘুম দিয়েন না ।

রিসালাত বারী এর ছবি

হাসি

ফাহিম হাসান এর ছবি

চমৎকার

রিসালাত বারী এর ছবি

হাসি আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

সাফিনাজ আরজু এর ছবি

চলুক
লাল ছেলেবেলা ...... হাসি

__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---

রিসালাত বারী এর ছবি

হাসি আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।