সেলুকাস! তুমি কোথায় বাপ!

আসাদুজ্জামান রুমন এর ছবি
লিখেছেন আসাদুজ্জামান রুমন (তারিখ: বুধ, ১৪/০৫/২০০৮ - ৫:৫৮পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

দেশের সংখ্যা গরিষ্ঠের ধর্মে আছে পর্দা করেন।
মাননীয়রা তাই আমাদের রাজনৈতিক নেতাদের জন্য পর্দার ইন্তেজাম করেছেন।

যেহেতু গলার স্বর পর পুরুষ শুনতে মানা তাই মাইক কিংবা শব্দযন্ত্র ব্যবহার করে নিজের গলা পরপুরুষকে শোনানোর তীব্র বিরোধী তাঁরা।

আর নিজের রক্তের লোক ছাড়া অন্য কাউকে দেখা দেওয়া বেশরীয়তি কারবার। তাই শ'দুয়েক 'রক্তের লোক' নির্ধারণ করে দিয়েছেন মহামান্যরা।

আপনারা মিলাদ দ্যান, শোকরানা নামায পড়েন জায়জামাজে দাঁড়িয়ে। মান্যবরদের গলায় ফুলের মাল্যদান করেন। তাঁরা আছেন বলেই এখনো কেয়ামত নাযেল হয় নাই, এখনো পৃথিবীর বুকে ধর্মকর্ম করে লোকজন কিছু করে খাচ্ছে। অবশ্যই ইহ এবং পরজনমে তাঁরা পাবেন উত্তম জা'ঝা। তাঁরা না থাকলে কী যে হতো আমাদের ধর্মের হাল, ভাবতেই গলা শুকিয়ে যায়!

কিশোরগঞ্জের হাওড় এলাকায় টুপ করে ডুবে গেলো একটা লঞ্চ। তাতো ডুববেই। এটা আল্লাহ্'র কুদরত। মন্দ লোকেরা বলে আল্লাহ্'র গজব, ঠাডা ইত্যাদি। তাছাড়া টাইটানিকও ডুবেছিলো, আর এতো সাধারণ বঙ্গদেশীয় নিয়মনীতি না মেনে তৈরী করা কম ধারণ ক্ষমতায় দশগুণ বেশি যাত্রী ঠাঁই দেওয়া এক সামান্য লঞ্চ!

অর্ধদশক লাশ মিলেছে? ব্যাপার না! মন্ত্রীর সমমর্যাদার উপদেষ্টা হয়তো বলবেন, আল্লাহ্'র মাল আল্লাহ্ তুলে নিয়ে গেছেন কার কী করার আছে! বরং যে গোটা পঞ্চাশেক মুশরিক(!) আল্লাহ্'র ইচ্চার বিরুদ্ধে গিয়ে সাঁতরে তীরে উঠে গেলো তাদেরকেও ফেরত পাঠানো হোক ডুবন্ত লঞ্চে। কত্তো বড় সাহস, আল্লাহ্'র সঙ্গে বিতলামি!

আমি বলি কি, মরেছো ব্যাটা বেশ হয়েছে। চল্লিশ টাকা দরে চাল কিনে খাওয়ার যাতনা থেকে তো মুক্তি পেলে! যে মা-বাবা-ভাই-বোনটি ঘোড়াউত্রা নদীর তীরে চোখের জলে বুক ভাসাচ্ছো, তারা ফিরে যাওরে ভাই। বাড়ি গিয়ে তিন গ্লাস আর্সেনিক মিশ্রিত কলের পানি খেয়ে পেটে পাত্থর বেঁধে ছেঁড়া চাটাইয়ে গা এলিয়ে দাও। এখনকার মননীয়রা খোদ আল্লাহ্'র পছন্দের পুরুষ। তারা আল্লাহ্'র ইচ্ছের বিরুদ্ধে একটা সেন্টিমিটার ও নড়বে না। বছর বছর যতোই লঞ্চ ডুবুক, যতোই খালি হোক তোমাদের বুক-কোল, তার প্রতিকার করা হবে না।

ভুলে যেওনা সবই হয় আল্লাহ্'র ইচ্ছায়। তিনিই সব কিছুর হুকুমদাতা। আসমানী হুকুম না হওয়া পর্যন্ত দাঁতে দাঁত চেপে অপেক্ষা করো পরবর্তী লঞ্চ ডুবার। তখন তোমার চান্স আসলেও আসতে পারে।
ফি আমানিল্লাহ্!


মন্তব্য

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

মন খারাপ

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

আসাদুজ্জামান রুমন এর ছবি

মন খারাপ

মাহবুব লীলেন এর ছবি

একটা দ্বিমত
একটা একমত

দ্বিমত
যারা লঞ্চের ভেতরে থেকে মরেছে তারা কিন্তু পর্দার সহিত মৃত্যুবরণ করেছে
সুতারং তারা আইন ভঙ্গ করেনি

একমত
যারা পর্দাভঙ্গ করে সাঁতরে তীরে উঠেছে তাদেরকে আবার পর্দার খাতিরে ডুবন্ত লঞ্চে ফেরত পাঠানো উচিত...

আসাদুজ্জামান রুমন এর ছবি

দ্বিমতই পোষন করেন অথবা হোন একমত, আপনাকে জাঝা।

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

পরমকরুণাময় আপনাকে জাঝা দিক।
নার্গিস আসে নাই এই জন্য শোক্রানা আদায়ের কথা কেউ বল্ল না।

আসাদুজ্জামান রুমন এর ছবি

নার্গিসের ব্যাপারটাও তোলা যেতো কিন্তু তখন দেশ ছেড়ে বিদেশের দিকে দৃষ্টি চলে যেতো। এটা আপাততঃ করার ইচ্ছে ছিলো না। হুজুরদের বিশেষ মহিমার কথা বর্ণনেই এই অধম নিজেকে উৎসর্গ করলো নিজেকে এবার।

আপনার মন্তব্যের জন্য আপনার জন্যও নিশ্চয় বরাদ্দ থাকবে জাঝা ।

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

ধন্যবাদ।
অফটপিকেঃ আপনার চশমাটা কোন কোম্পানির?

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

হা হা।
আবার দেখেন, কোন নাইপ্ত্যার দোকানে গেছিলো, - জুলফি মাঝে ছেঁচে দিছে। হিক হিক।

মুশফিকা মুমু এর ছবি

মন খারাপ

এখনকার মননীয়রা খোদ আল্লাহ্'র পছন্দের পুরুষ। তারা আল্লাহ্'র ইচ্ছের বিরুদ্ধে একটা সেন্টিমিটার ও নড়বে না। বছর বছর যতোই লঞ্চ ডুবুক, যতোই খালি হোক তোমাদের বুক-কোল, তার প্রতিকার করা হবে না।

বুঝলাম না, "মননীয়রা" মানে কাদের কথা বলছেন? পলিটিকাল গ্রুপ নাকি নামাজি লোকজন?
------------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে ‍‍

------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে ‍‍

আসাদুজ্জামান রুমন এর ছবি

পুষ্পবনের সকল পুষ্প যদি অন্তরে গিয়ে বাগান তৈরী করে তাহলে কন্টকাকীর্ণ সময়ের মানুষগুলোর কথা না শুনলেও চলে মিস মুমু।
কাউকে কাউকে কখনো কখনো এইসব কন্টক থেকে দূরে থাকাই শ্রেয় মনে হয়। হাসি

আপনাকেও জাঝা ।

মুশফিকা মুমু এর ছবি

রুমন ভাই এতদিন পর আপনি আমাকে এত শ্যালো ভাবলেন?
-------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে ‍‍

------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে ‍‍

অতিথি লেখক এর ছবি

দির্ঘশ্বাস...সবই আল্লাহর ইচ্ছা।
-নিরিবিলি

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।