আধখানা বই

শাব্দিক এর ছবি
লিখেছেন শাব্দিক [অতিথি] (তারিখ: মঙ্গল, ১৮/১১/২০১৪ - ৭:১৪অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

বই পড়তে আমার বেশ সময় লাগে, কিংবা বলা যায় বেশ সময় নিয়ে আমি একেকটা বই পড়ি। অনেক সময় একেকটা বই তিন মাস চার মাস ধরেও পড়তে থাকি। আবার এক সাথে তিন চারটা বই পড়তে থাকি। বেশিরভাগ বই পড়ুয়াদের দেখেছি একটা বই এক নিঃশ্বাসে শেষ করে ফেলে। আমি এভাবে পড়তে পারি না সব সময়। একখান বই অর্ধেক পড়ে আবার আরেকটা পড়তে শুরু করি। আবার আরেকটা, আবার আরেকটা, আবার হয়ত প্রথমটাতে ফিরে গেলাম, এরপর আবার তৃতীয়টা, তা থেকে দ্বিতীয়টা।
আমার অর্ধেক পড়া বইয়ের সংখ্যা অনেক। অনেক সময় দেখা গেল পাঁচ বছর আগে আধখানা পড়া বই প্রথম থেকে পড়তে শুরু করি। কিন্তু তারপরও একটা বই শেষ না করা পর্যন্ত অস্বস্থি কাজ করে। আবার একটা বই শেষ করে ফেললে অন্যরকম মন খারাপ হয়, মনে হয় শেষ হয়ে গেল কেন বইটা। যতক্ষন বইটা পড়ি চরিত্রগুলো আমার জীবনের একটা অংশ হয়ে থেকে। মনে হতে থাকে প্রতিদিনকার জীবনে বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়স্বজনের মত এরাও যেন আমার আমার জীবনে আছে। বইটা শেষ করে ফেললে মনে হয় এরা ফুরিয়ে গেল জীবন থেকে।

আগে হাতের কাছে যা বই পেতাম তাই পড়তাম, অথবা বলা যায় আগে হাতের কাছে অনেক বই পেতাম। ইউনিভারসিটির হলগুলোতে সবার রুমে কিছু না কিছু হাত পা এমন কি পাংখাওয়ালা বই ছিল। কোন রুমের বই কোন রুমে চলে যেত তার কোন ঠিক ঠিকানা নাই। ২০১ নম্বররুমের বই ঘুরতে ঘুরতে চলে গেল ২০৫ এ, A ব্লক থেকে ঘুরে ফিরে আবার B ব্লকে চলে এল। জাহানার ইমাম হলের বই এক ব্লক থেকে ঘুরে কামালঊদ্দিন হল হয়ে প্রীতিলতার ৩১২ নম্বর রুমে ফিরে এল। এভাবে ঘুরে ফিরে আসা বইগুলি ঠিক কোন গোত্রীয়, কোন লেখকের বা কি জাতের বলা কঠিন। ওই সময় পড়া বইগুলি অবশ্য আধা পড়ে ছেড়ে দিতাম না, ওসব বই শেষ না করে হাতছাড়া হয়ে যাবার ভীতি প্রচন্ড থেকে পরীক্ষার আগের রাতেই পড়ে ফেলতে হত। আর পরীক্ষার আগের রাতে গল্পের বই পড়াটা যে এ্যালার্ম অফ করে ঘুমানোর মত নির্মল আনন্দের তা তো বলাই লাগে না।

আরো আগে বাড়িতে অনেক বই ছিল। বাড়ির বইগুলিও হলের বইয়ের মত সচল। তবে হলের বই গুলি ট্রেস করা কিছুটা হলেও সম্ভব কারণ সবার সাথে প্রতিদিন আড্ডা হয়, কিন্তু বাড়ির বইগুলি ট্রেস করা অসম্ভব ছিল। ওই আমলে আমাদের বাড়ির বই থেকে শুরু করে তৈজসপত্র সবকিছুরই পাখা গজাত।

খোলা আমার দুয়ারখানা, ভোলা আমার প্রান
কখন যে কার আনাগোনা, নেইকো সাবধান।

এইরকম অবস্থাই ছিল আমাদের বাড়ির। তাই বই কিনে পড়ার প্রয়োজন বা সামর্থ্য কোনটাই তেমন ছিল না। একটা যদি পাই অমনি ধরে গাপুস গুপুস.........। মাঝে মাঝে এতে করে কিছু বিরূপ মানসিক প্রতিক্রিয়ায় ও ভুগেছি। যেমন এস এস সি পরীক্ষার আগে হুমায়ুন আজাদের “নারী” বইটা পড়ার বিভীষিকাময় স্মৃতি মনে হলে এখনো গায়ে কাঁটা দেয়। পরে মনে হয়েছে ঐটা অবশ্যই রং টাইমিং ছিল। বাড়ির কেউ খেয়াল ও করেনি যে বইটা আমি পড়ছিলাম। ঐ সময়গুলো সিলেক্ট করে বই পড়া হত না।

আজকাল অবশ্য সিলেক্ট করে বই পড়া হয়, না বলে বলা ভাল সিলেক্ট করে বই কেনা হয়। দুটো কারণে আমি বোধ করি বই কেনা আগের তুলনায় বেশি হয়। প্রথমত নিজের উপার্জন, মানে হাত খরচ না, প্রকৃতপক্ষে কামলা দিয়ে উপার্জন করে বই কেনার ভাল পয়সাকড়ি জুটে। আর দ্বিতীয় কারণ হল আগের মত পরিবেশ থেকে অটো যথেষ্ট পরিমান বইয়ের সমাগম জীবনে ঘটে না। আমার আশেপাশের মানুষের সংখ্যাই কমে গেছে। যারা আছেন তারাও যথেষ্ট সময় চোখের পাতা আটকে রাখেন ফেইসবুকের বুকে আর নয়ত ভীষণ টেলিভিশনে।

আগে বই কেনা হত হাত খরচের পয়সা বা জমানো টাকায়, বইয়ের দোকানে যেটা সামনে পড়ল লোভ না সামলে কিনে ফেলা হত। তাতে আমার অনেক অখ্যাত বই পড়া হলেও সুখ্যাত বা কুখ্যাত বই না পড়া থেকে গেছে। বই পড়ুয়ারা চোখ কপালে তুলে প্রায়ই বলে, সেকী তুমি তমুক বিখ্যাত রচনাবলী পড়নি। চাকরী জীবনের প্রথম দিকে গল্পগুচ্ছ কেনা দেখে আমার মাতৃদেবী স্বয়ং অবাক হয়ে বললেন, তুমি গল্পগুচ্ছ আগে পড়নি। কি মূর্খ কন্যা সন্তান বড় করেছেন তিনি ভাবতেই পারছিলেন না। আমি আমতা আমতা করে বললাম, পড়েছিলাম, রিভিশান দিব আবার।

আমার অবশ্য এতে বিরাট দুঃখ নাই। বিখ্যাত সব বই না পড়লে আমার জীবন বৃথা এমন কোন ধারনা আমি পোষণ করিনা। যার কারণেই বহু আধখান পড়া বই ফেলে রাখা হয়। মুড নাই তাই অসাধারণ কোন বই বিরক্ত লাগছে, কি করার আছে? মৌলি প্রায়ই বলে শরৎচন্দ্র পড়তে পড়তে তুই কিভাবে মাসুদরানা পড়া শুরু করে দিস, আমি বুঝি না।

তা যাই হোক, বই কেনার কথা বলছিলাম। এখন যখন বই কিনি তখন সিলেক্ট করে বই কিনি। স্পেসিফিক কোন বই বইয়ের দোকানে গিয়ে খুঁজি এবং লিস্টি ধরে খুঁজে পেতে বই কিনি, ব্যতিক্রম অবশ্য বইমেলা।
এতে করে দুইধরনের বই বেশি কেনা হয়। বিশেষ কোন বই যা সবাই পড়েছে কিন্তু আমি পড়িনি বলে আমার জীবন বৃথা যাচ্ছে মনে করা হচ্ছে, অর্থ্যাৎ আসলেই কোন ভাল বই। অথবা পুরোনো কোন বই যা নিজে নিজে হেঁটে এসেছিল আমার কাছে অনেক আগে স্মৃতিটুকু ফেলে চলে গেছে, সেগুলো শেষ করা বা সংগ্রহে রাখার জন্য কেনা। স্বর্গীয় এক আনন্দ আছে পুরানো সেই চরিত্রগুলি জীবনে আরেকবার ফিরে পাবার মধ্যে, যেমন পুরনো বন্ধুর সাথে অনেকদিন পর দেখা হলে অনুভুত হয়।


নটে গাছটি মুড়ালো--------

মির্চা এলিয়াদের লা নুই বেঙ্গলী প্রায় পনের বছর পর আবার পড়ছিলাম আজকে আর কালকে দেখা হল ছোট্টবেলার বন্ধু, যে দুরন্ত ভলিবল খেলোয়াড় ছিল সে কিনা আজ গুরুগম্ভীর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষিকা। মনের মাঝে কোথায় যেন একটা টান লাগে, অনুভূতি দুটোর মাঝে আশ্চর্য এক মিল খুঁজে পাই।


মন্তব্য

তিথীডোর এর ছবি

আমি পড়ুয়া হিসেবে ভাল। এবং একরোখা। যেটা হাতে নেই, একবারে শেষ করে উঠি। অবশ্য আংরেজি বইয়ের কথা আলাদা।

একসময় যা হাতে পেয়েছি...লুকিয়ে-চুরিয়ে, ধার করে যা নাগালে পেতাম-- গিলতাম সব-ই। নারী পড়েছি ক্লাস ফাইভে। সিরিয়াসলি!
বুঝিনি কিছু, কিন্তু আসলেই পড়েছি।

কামলাজীবনের একমাত্র আনন্দ ছিল নিজের পয়সায় মন ভরে বই কেনার আনন্দ। আমার ছিল ছোট্ট একটা নৌকরি আর বাতিঘরের ছিল অঢেল গ্রন্থভাণ্ডার! আহা!

এখন বই পড়া ল্যাপটপ আর কিন্ডলেতে। এই পোড়ার দেশে খেয়েপড়ে বেঁচে থাকতে হলে (চোখের সামনে বই না থাকলে ভাত খেতে পারি না দেঁতো হাসি ) আর উপায় কী!

গত সপ্তাহটায় ঘরে অবশ্য হার্ড কপি এসেছে কিছু। পুরোনো বইয়ের দোকানে ৫ ডলারের বিনিময়ে ঝকঝকে মলাটে The Fault in Our Stars পেয়ে নিয়ে নিলাম, অনলাইনে অর্ডার দিয়েছিলাম Calvin and Hobbes সিরিজ।
সন্ধ্যায় বাসায় ফিরে দেখি তারই তিনখানা দরজার সামনে অপেক্ষমান।
মুহুহুহু। হাসি

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

শাব্দিক এর ছবি

এক রোখা পড়ুয়া ভাল পাই, তবে হয়ে উঠতে পারিনি কখনো।

পনের বছর বয়সটা অল্প নারী অল্প বালিকা, সময়টা ঠিক এ ধরনের বই পড়ার উপযুক্ত না, তার চেয়ে বোধ করি কিছু না বোঝাটা ঢেড় ভাল।

বাতিঘরের সচিত্র প্রতিবেদন পড়ে যাবার প্রবল ইচ্ছা, চট্টগ্রাম গেলে অবশ্যই উঁকি দিব।
এখন পর্যন্ত যথেষ্ট পরিমান হার্ড কপি বই পড়ার সুযোগ এবং সামর্থ্য থাকায় বেশ নাক উঁচু করে বলতে পারি সফট কপি বই বিরক্তিকর, তবে নাকটা কতদিন ওই পসিশানে থাকবে বলতে পারছি না।

ঝকঝকে মলাটের বইগুলি পড়ে রিভিউ দিতে ভুল না।

---------------------------------------------------------
ভাঙে কতক হারায় কতক যা আছে মোর দামী
এমনি করে একে একে সর্বস্বান্ত আমি।

সাফি এর ছবি

তোমারে কেলভিন এন্ড হবস ধরায়ে দিয়ে তো ভালই খসাইলাম দেখি!

তিথীডোর এর ছবি

হ। আপনি একটা অভিশাপ।

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

শাব্দিক এর ছবি

বেচারা খুকী! বিদেশ বিভূঁইয়ে লোকে এমন ঠকাচ্ছে বুঝি? চিন্তিত

---------------------------------------------------------
ভাঙে কতক হারায় কতক যা আছে মোর দামী
এমনি করে একে একে সর্বস্বান্ত আমি।

তারেক অণু এর ছবি

ভালো লাগলো , সাধারণত কয়েকটা বই মিলিয়েই পড়া হয়, তারপরও সেরাম হলে একটানা পড়ারই চেষ্টা করি ।

লেখা-পড়া জারি থাকুক

শাব্দিক এর ছবি

হুম, সেরাম বই যে আসলেও সেরাম তা বুঝতে আবার আমার মুড লাগে, মাথা মোটা কিনা। মন খারাপ

যদিও লেখাপড়ার শেষ নাই, লেখা পড়া বৃথা তাই।
তবুও এক জীবন বৃথাই কাটাতে চাই। হাসি

---------------------------------------------------------
ভাঙে কতক হারায় কতক যা আছে মোর দামী
এমনি করে একে একে সর্বস্বান্ত আমি।

নির্ঝর অলয় এর ছবি

চলুক

শাব্দিক এর ছবি

হাসি

---------------------------------------------------------
ভাঙে কতক হারায় কতক যা আছে মোর দামী
এমনি করে একে একে সর্বস্বান্ত আমি।

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

আমিও একসাথে অনেকগুলা বই পড়া শুরু করি, বা অন্যভাবে বলতে পারেন, একটা বই শেষ না করেই আরেকটা ধরে ফেলি, এরকম চলতেই থাকে। মুডের ওপর নির্ভর করে কোনটা কখন পড়ব। যেটা পড়তে ভাল লাগে সেটা একসময় ঠিকই পড়া শেষ হয়ে যায়, কিছু বাকি থেকে যায়, শেষ হয় না। না হোক, জীবনে কীই বা ঠিকমত শেষ হয় বলেন‍!

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

শাব্দিক এর ছবি

মুড বড় খারাপ লোক, নিজের ইচ্ছা মত কিছুই করতে দেয় না। আধখান পড়া বইয়ের মত জীবনটাও আধখানাই থেকে যায় এর জন্য। তয় ব্যাপার না!

---------------------------------------------------------
ভাঙে কতক হারায় কতক যা আছে মোর দামী
এমনি করে একে একে সর্বস্বান্ত আমি।

নির্ঝর অলয় এর ছবি

চলুক
লেখকের পাঠাভ্যাসের সাথে আমার মিল আছে, কিন্তু সবচে বেশি মিল ত্রিমাত্রিক কবির সাথে। আমি সাধারণত স্বল্প সময়ের ব্যবধানে ৪-৫ টা পর্যন্ত বই শুরু করি। তারপর মুড অনুযায়ী শেষ করি, তবে আদ্যোপান্ত পড়ি সব বইই- এবং খুঁটিয়ে বেশ। এই মুহূর্তে পড়ছি
১। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও পূর্ববঙ্গীয় সমাজ- সরদার ফজলুল করিম
২। নিঃসঙ্গতার শতবর্ষ- জি,এইচ, হাবীব অনূদিত
৩। প্রিয়বরেষু আইনস্টাইন
৪। সুরসম্রাট মান্না দে- মানস চক্রবর্তী সম্পাদিত স্মারকগ্রন্থ

একসাথে শুরু করে শেষ করা বইটা হল ডঃ মু জা,ই এর "পিশাচিনী।" এর মধ্যে ৩ ও চার কাগুজে কপি বাকিগুলো টেব। তবে আমি এখন কাগজের বইয়ে বেশি আসক্ত।

শাব্দিক এর ছবি

যাক, আমার মতন পাপী ম্যালাই আছে দেখছি।

---------------------------------------------------------
ভাঙে কতক হারায় কতক যা আছে মোর দামী
এমনি করে একে একে সর্বস্বান্ত আমি।

ওমেশু এর ছবি

ভাল লাগলো পড়ে। আগে অনেক গল্প উপন্যাস পড়া হতো এখন ঐ ভাবে হয় না, সপ্তাহ আগে হসপিটাল এ থাকতে হল তাই সময় পেলাম একটা বই পড়ার "Half Girlfriend by Chetan Bhagat" ভালই লাগলো পড়ে, সময় এর অভাবে, জীবনের বেঁচে থাকার সংগ্রামে দিনের পুরোটাই চলে যায়, যতটুকু সময় রয়ে যায় তা আবার ভাগ করতে হয় পরিবার - আত্মীয়স্বজনদের মাঝে, এর মাঝে চেষ্টা করা উচিত কিছু পড়ার, অজানা কিছু জানার। তাও ভালো বলতে হয় সচলায়তন খুলে কিছু পড়া - জানা যায়। তাই বেশী বেশী লিখেন আর আমি পাঠক কিছু সময় রাস্তার Trafic - এ বসে পড়ি।

শাব্দিক এর ছবি

মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ ওমেশু। আশা করি এখন সুস্থ আছেন।
আপনার চেষ্টা সফল হোক।
সব সময় ভাল থাকুন, সুস্থ থাকুন, হসপিটালে নয় সুস্থাবস্থায় ভাল বই পড়ুন এ কামনাই রইল।

---------------------------------------------------------
ভাঙে কতক হারায় কতক যা আছে মোর দামী
এমনি করে একে একে সর্বস্বান্ত আমি।

সুলতানা সাদিয়া এর ছবি

আমি কিন্তু এক টানে বই পড়ে ফেলি, তরকারি তাই পুড়েও ফেলি।

-----------------------------------
অন্ধ, আমি বৃষ্টি এলাম আলোয়
পথ হারালাম দূর্বাদলের পথে
পেরিয়ে এলাম স্মরণ-অতীত সেতু

আমি এখন রৌদ্র-ভবিষ্যতে

শাব্দিক এর ছবি

হো হো হো
যাক আমার তাহলে তরকারি পোড়ানোর ভয় নাই। খাইছে

---------------------------------------------------------
ভাঙে কতক হারায় কতক যা আছে মোর দামী
এমনি করে একে একে সর্বস্বান্ত আমি।

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

আগে একটা বই শুরু করলে শেষ না করে উঠতে পারতাম না। এখন গাদাখানেক আধখানা বই জমিয়ে ফেলেছি। কতকগুলোর কথা ভুলেও গেছি। আধখানা বই একটা অভিশাপ! মন খারাপ

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

শাব্দিক এর ছবি

হ, আধখানা বই নিদারুন অভিশাপ! মন খারাপ

---------------------------------------------------------
ভাঙে কতক হারায় কতক যা আছে মোর দামী
এমনি করে একে একে সর্বস্বান্ত আমি।

সত্যপীর এর ছবি

নীলক্ষেত থিকা বই কিনা দুপুরে আলু-গরুর মাংস দিয়া ভাত খাইতে খাইতে পড়ার দিন গিয়াছে। দ্য ডেজ আর গন। এখন হার্ড বই কিনি কালে ভদ্রে, কারণ পড়ার উৎকৃষ্ট সময় হল রাতে বাতি নিভায়ে ঘুমানোর আগে, অফিসে লাঞ্চব্রেকে, আর বাসে বসে। অতএব সেলফোনে ইবুকই ভরসা। পচুর অবৈধ বিজলিবই (বিশেষতঃ ইংরেজি) যোগাড় করি, সেইটার মনোবেদনা ঢাকতে নিয়মিত কিন্ডলে বা গুগলে পয়সা দিয়া বই কিনি আর নিজেরে সান্ত্বনা দেই যে কিছু কিছু কিনতেছি তো...

যাই হোক আধাখানা বই নিয়ে কথা হইতেছিল। পচুর বই আধাপড়া, বিশেষত নন-ফিকশন। যতটুকু দরকার ততটুকু পড়ি, তারপর রাইখা দেই পরে দরকার হইলে আবার পড়ি। এইরকমই চলতেছে বেছতো জীবন...

..................................................................
#Banshibir.

শাব্দিক এর ছবি

হ, লিটারালি দ্য ডেজ আর গন। তয় বিজলি বই যাই পড়ি না পড়ি, আপনের বদৌলতে ইতিহাস ম্যালা জাইনা ফালাচ্ছি।
বি টি ডব্লিওঃ বিজলি বই নামটা ব্যাপক পছন্দ হইসে। বাংলা শব্দমালায় সংযোজনের জোড়েসোড়ে আবেদন জানাই।

---------------------------------------------------------
ভাঙে কতক হারায় কতক যা আছে মোর দামী
এমনি করে একে একে সর্বস্বান্ত আমি।

সাফি এর ছবি

অনেকদিন পরে দেখলাম।

বই আমিও প্রচুর পড়ি। তবে এক সাথে ৪-৫টা বই পড়ি। এক সময়ে হঠাত যে কোন একটা বই টান দিয়ে শেষ করে ফেলি। আমি চেষ্টা করি বই শেষ করতে। কিন্তু কিছু বই এত চেষ্টা করেও শেষ করতে পারিনি। ঐগুলো তাও রাখি সাথে। যদি ঠুকে ঠুকে শেষ করা যায়। হার্ড কপি আর কেনা হয়না, আমার বই কেনা এখন শুধুই আমাজন কিন্ডল কেন্দ্রিক।

শাব্দিক এর ছবি

অনেকদিন পরে দেখেও পড়ার এবং মন্তব্য করার জন্য এই শীতের ফ্রেস আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-
ঠেকে ঠুকে যেভাবেই হোক শেষ করতে পারলেই হল। আধখানা বই থাকলেই সমস্যা।

---------------------------------------------------------
ভাঙে কতক হারায় কতক যা আছে মোর দামী
এমনি করে একে একে সর্বস্বান্ত আমি।

মেঘলা মানুষ এর ছবি

আমি প্রথমেই বইয়ের আকারটা দেখি, যদি মনে হয় ৫-৬ ঘন্টায় পড়া শেষ করা যাবে, তখন পড়তে বসি।
হাতে একাধিক বই থাকেল এই তরিকা, আর যদি বাছাই করার সুযোগ না পাই (৫-৬ ঘন্টারগুলো পড়া শেষ), তখন মোটাগুলো পড়তে বসি।

ছোটবেলাই বই পড়া নিয়ে বেশ ঝামেলায় ছিলাম, কেন জানি আমার বাসায় ছোটবেলায় মাসুদ রানা পড়তে দিতে চাইত না খাইছে , তবে এর সাথে সাথে তিন গোয়েন্দা যে 'অত দুষ্ট' বই না, সেটাও বুঝতে চাইত না। তখন, ভাবতাম বড় হয় এমন পড়া পড়ব।
এখন হার্ড ডিস্কের কোন এক চিপায় তিন গোয়েন্দার পিডিএফ পড়ে আছে, পড়া হয় নি।

আহারে, গল্পের বই। বড়ই মিস করি জিনিসটার সংসর্গ মন খারাপ

শুভেচ্ছা হাসি

শাব্দিক এর ছবি

বইয়ের আকার একটা খুবই জরুরী ফ্যাক্টর। বই অর্ধেক পড়ার পিছনে পৃষ্ঠা সংখ্যা জরুরী ভুমিকা পালন করে।
আমার বাসায়ও মাসুদরানার নিষেধাজ্ঞা জারি ছিল, মাসুদ রানার পাঠক ছিলেন স্বয়ং পিতৃদেব। এই কারণেই বোধ হয় এই 'অত দুষ্ট' সিরিজের প্রতি চরম আগ্রহ ছিল, এবং এখনো পড়া হয়।

---------------------------------------------------------
ভাঙে কতক হারায় কতক যা আছে মোর দামী
এমনি করে একে একে সর্বস্বান্ত আমি।

এক লহমা এর ছবি

সবাই কত পড়ে! (খুশীর ইমো)

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

শাব্দিক এর ছবি

আপনাকে "এত পড়ে" মন্তব্য করার জন্য আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-হাসি

---------------------------------------------------------
ভাঙে কতক হারায় কতক যা আছে মোর দামী
এমনি করে একে একে সর্বস্বান্ত আমি।

নীড় সন্ধানী এর ছবি

এই পোষ্টটা দরকার ছিল আমার। কেননা আধপড়া বই নিয়ে আমার মধ্যে একটা অপরাধবোধ ছিল। এখানে দেখলাম আমি একা না। বেশ লাগলো ব্যাপারটা। বইয়ের কথায় আসি। আমার আধপড়া বই প্রচুর। বেচারীদের বহুদিন বসিয়ে রেখেছি শেষ করবো বলে। আমার কাছে এক যুগ আগের আধপড়া বইও আছে শেষ করার অপেক্ষায়। ইহজনমে আর শেষ হবে কিনা বলতে পারছি না। কিছু বই আছে যাদেরকে ভুলেই গেছি। হঠাৎ চোখে পড়লে মনে পড়ে, আরে একে তো আমি ২০০৬ সালে একবার দেখেছিলাম! আসলে ননফিকশন বই আধপড়া থাকলেও সমস্যা নাই। কিন্তু উপন্যাস জাতীয় জিনিস একটানে শেষ করতে না পড়লে বইটা পড়ার কোন মানে হয় না। আমেজটা থাকে না। তবে থ্রিলার অতি অবশ্যই এক টানে পড়েছি। মাসুদরানা পড়ার বয়সে যখন বইটা হাতে নিতাম, শেষ পাতায় না আসা পর্যন্ত থামতে পারতাম না। মাঝখানে কেয়ামত হয়ে গেলেও। এখন আর ফিকশন থ্রিলার তেমন পড়া হয় না। আধপড়া বইয়ের সংখ্যা তাই বাড়তেই আছে। আধপড়া বই নিয়ে একটা অনুশোচনামূলক পোস্ট লিখতে ইচ্ছে করছে। হাসি

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

শাব্দিক এর ছবি

মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ ভাইয়া। আমার এই পোস্ট ও বলতে গেলে অনুশোচনা থেকে লেখা। আমার মত, আমাদের মত আরো অনেকেই আছে ভেবে অনুশোচনা কমে আসছে। দেঁতো হাসি

---------------------------------------------------------
ভাঙে কতক হারায় কতক যা আছে মোর দামী
এমনি করে একে একে সর্বস্বান্ত আমি।

মরুদ্যান এর ছবি

ওয়ার এ্যান্ড পিস আজো শেষ কত্তে পাল্লাম না। ওঁয়া ওঁয়া

-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------
যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চল রে

শাব্দিক এর ছবি

মাত্র একখান? আমার এমন কত পিস যে বাকি মন খারাপ

---------------------------------------------------------
ভাঙে কতক হারায় কতক যা আছে মোর দামী
এমনি করে একে একে সর্বস্বান্ত আমি।

অতিথি লেখক এর ছবি

লেখায় ভালো লাগা। অনেক।

ভালো লাগা প্রাণবন্ত মন্তব্য ও প্রতিমন্তব্যেও।

শুভকামনা জানবেন শাব্দিক। অনিঃশেষ। সবসময়।

দীপংকর চন্দ

শাব্দিক এর ছবি

অসংখ্য ধন্যবাদ দীপংকর সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

---------------------------------------------------------
ভাঙে কতক হারায় কতক যা আছে মোর দামী
এমনি করে একে একে সর্বস্বান্ত আমি।

হিমু এর ছবি

ভূটান নিয়ে আপনার পোস্টে ছবিগুলো ঠিকমতো সংযোজিত হয়নি। ঠিকমতো যোগ করে আবার পোস্ট করুন প্লিজ। পোস্ট করার আগে প্রিভিউতে একবার দেখে নেবেন।

শাব্দিক এর ছবি

ধন্যবাদ।

---------------------------------------------------------
ভাঙে কতক হারায় কতক যা আছে মোর দামী
এমনি করে একে একে সর্বস্বান্ত আমি।

আয়নামতি এর ছবি

পড়ার বইয়ের বাইরের পড়া তো মনের আনন্দেই হতে হয়।
কাজেই যখন আনন্দ এসে ডাকবে তখন ধেই ধেই করে পড়ে নিলেই হলো।
আধা বই, পাকা বই ভ্রান্তধারমা।
এমনো তো হতে পারে পিয় একখান বই নিলাম হাতে,যমদূত এসে হাঁক দিলো, ওহে মোমেনা, তওবা করি বইফড়াডা চাড়।
তখন? ফট্টাস করেই মরে যেতে হবে! যেহেতু মানুষের জীবনটা অনিশ্চিত এক থ্রিলার গল্পের মত, তাই আধখানা বই কিংবা জীবন নিয়ে আফসুস না করে তাইরেনাইরে করেই কাটাতে চাই। বেশ লাগলো হে পোস্ট/মন্তব্য! নতুন বছরের শুভেচ্ছা থাকলো।

শাব্দিক এর ছবি

ধন্যবাদ আয়না' আফা। দোয়া রাইখেন দূত আসার আগে পন্ত যেন তওবা করি বইফরাডা না চাড়তে হয়, আধেক হোক পুরা হোক কিছু না কিছু আনন্দ নিয়ে পড়তারি।
আপ্নেকেও নতুন বছরের শুভেচ্ছা। হাসি

---------------------------------------------------------
ভাঙে কতক হারায় কতক যা আছে মোর দামী
এমনি করে একে একে সর্বস্বান্ত আমি।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।