নোনুকা জলের মতন সাদা, দূর যেন বিলের জলে
ফুটেছে এক শুভ্রপদ্ম ; রৌদ্র-জলের খেলায়
ভোরের বুকে যেমন ফোটে নিসর্গ। মেয়ের মাথাভর্তি
সোনালিচুল, আচমকা মনে হয় মেঘ, মেঘরঙ
সোনালিঘরবাড়ি। চোখের পারায় নীহারিকারঙ, ভ্রূ-তে
সে পরেছে কাজল, এ নিশ্চিত শিল্পের লক্ষণ!
তার আয়ত চক্ষুদ্বয় নীল, চোখ ও মুখ জুড়ে অবিকল
অবিরাম সলিল উৎসব যেন। অস্ফুট তার আধেক-
কথার কাকলি, ঝিনুকের বুকে লুক্কায়িত মতি,
যেন তা গন্...
নিশিতেও নিশান্ধনিশাচর, নিশান্তে ঘুমোতে যাবে,
তাতে কী কারও কষ্ট হবে ? এই যে শয্যায় শুয়ে আছেন
যে রমণী, তার পিঠ থেকে খসে পড়ে আছে
রুপোলী শাড়ী। তিনি কী জানেন এই সৌন্দর্য
আমি রাত জেগে পাহারা দিয়েছি ?
একটি পূর্ণতম কবিতার কাগজ ভেবে।
অথবা, যেখানে জীবনে কিছু লেখা যায়।
তার তন্দ্রাতুর খোলা-চওড়া পিঠে,
গ্রীবায় চুপিচুপি চুম্বন করতে আসবেন না ঈশ্বর,
তাই বলেছি, খুব দুর্ভাগ্য নিয়ে জন্মেছেন তিন...
শুভ্রমালা পরিয়ে দিতে দিতে নদীর গ্রীবায়
জল ঘেষে উড়ে গেল লম্বাসারির বকগুলো।
রোদে টলটল করছে জলের শরীর
নৌকোর মাথাটা
ভরনদীর মুখে এগোতেই
অনেক উঁচুতে উঠে
ওরা আমাদের অতিক্রম করলো।
ওদের কন্ঠে ডাক শোনা গেল জীবনের :
বাড়ি ফিরে এসো? বঙ্গোপসাগরের হাওয়ায়
অন্তত একদিন ভালোমত বেঁচে যাও।
আমরা কী জানি সুন্দর
এ ভাবে আমাদের অবজ্ঞা করবে!
না হয়- যেতাম না ওদের রাজ্যে, বসে
থাকতাম আরও এক বিপন্ন আ...
কালির উপর আঁকা ছাইমাটি আকাশ, তারই এক ফাঁক থেকে
তপন তাতিয়ে উঠে। কালোচুল সোনালি হাসে, রোদে ভেসে যায়
কবিতার খাতা, ডাইনে-বামে তার ঝাঁকড়া চুলের বাবরি দোলায়
বাঁওড়ি বাতাস, খোলা মাঠে কলম হাতে কবিকে দেখে। উজান ঠেলে
হাওয়ায় ভেসে শূন্যে দাঁড়ায়, আর দোল খেয়ে বলল যুগলপাখি ঃ
যাকে নি:সঙ্গতা দিয়েছে মানুষ, সে তো হাওয়ার হাত ধরে হাঁটে।
তাকে অনুষঙ্গ দেয় দূরের সবুজ-পাহাড়, পাতায়ও সুলিখিত হয়
ঝিরিঝিরি ব...
বাঁশি বাজবে না, বাজবে না বলে থরথর কান্নায়
ডানা ভাসালো ভিজে প্যাঁচার মতো কঠিন কুয়াশায়।
তার অনিহা হরণ করে দেখ কেমন ডাকছে সন্ধ্যা ;
রূপসীঢেলা তাকিয়ে আছে বিলের মধ্যে, আকাশে নাক্ষত্রিকলহরী,
হাওয়ার মুখে বাঁশি ধরেছে কৃষ্ণ : 'যমুনা তীরে কে বাজায়' ?
কবিতা সুন্দর
এই আমি আমার লাবণ্য ক্ষয় করে
আয়ু-স্নায়ু ক্ষয় করে তোমাকে দিচ্ছি
আমি কী বুঝি না- আর সবকিছু থে...
তোমার থাকা আর না থাকার মধ্যে বিস্তর ব্যবধান।
খালিপিঠে হাত রেখে বোঝা যায়, উষ্ণতা কতটুকু দরকারী ,
নাস্তার টেবিল সেজেগুজে মন্দির, আসবেন প্রেমের পুরোহিত,
ঝলমল জানালা খুলে দেবে দিনের দেবতা, একটা অর্থ দাঁড়াবে জীবনের।
উনুনগুলো জ্বলবে, নৃত্য জুড়েদেবে আধ-ফোটাচাল, মাছের ঝোল উষ্ণঘ্রাণ
ভাপ-উঠাভাত টেবিল থেকে বলবে, তোমার হলো, এতোক্ষণ কী করো!
গোসলখানা থেকে তড়িঘড়ি বেরোবে, ঝাঁকড়া চুল টাওয়েল ...
৭.
হে স্বপ্ন, থামলে কেন হে?
এখানে এই নদীটিই ছিল-
সবচে সুমিষ্ট জলের। এখানেই,
বহু যুদ্ধবিগ্রহ, ঘটে গেছে রক্তপাত! জানো?
এটাতো চিনি, অগেও দেখেছি,
এসব কথা আগেও শুনেছি ;
একসময় জিজ্ঞেস করলাম-
আমাকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছো হে-মরুচারী?
অন্য কোথাও নিয়ে যাও, অন্য কিছু বলো-
যা দেখিনি, শুনিনি কখনো, এমন পবিত্র!
আমি স্বপ্নের মধ্যে বেঁচে ছিলাম, আমাকে
স্বপ্নে ফিরিয়ে নাও ; কেন থামলে, হে উট! হে স্বপ্ন ...
৮.
...
৪.
বিচিত্রভূমিরূপ :
সামুদ্রিক ঢেউয়ের মতো উঁচু হয়ে
নেমে গেছে-
কারা যেন আগুন জ্বালিয়েছে
সমতলে। হে আমার ভ্রমণসঙ্গী :
এরা কারা, এটা কী পৃথিবী-
এ কী জীবন নাকি?
এরা, যাযাবর ;
এটা যুদ্ধহীন বিকল্প জীবন ;
সমস্তকোণঠাসা-মানুষের
সর্বশেষ বেঁচে থাকা। মানে?
মানে, অখণ্ডতা নয় ; খণ্ডিতপৃথিবী, খণ্ডিতজীবন।
আমার চোখ থেকেও এখন অনায়াসে
ঝরতে পারে, দু:খের
ঘোর-মরুকুয়াশা ...
যাচ্ছি ...
৫.
গভীরতম নির্জ...
নিতে এসেছে আমাকে
ঝকঝকে জ্যোৎস্না
চিক্চিকে বালির উপর দাঁড়িয়ে আছে মরুজাহাজ।
কি করে চড়তে হয়
অত উঁচুতে তাকিয়া পাতা
কোনো কালে ছিলাম নাকি মরুচারী, মুসাফির?
অমনি হাঁটুগেড়ে বসলো :
কোথায় নিয়ে যাবে-এই মরুজাহাজ? তাও জানিনা।
এ ভাবে যাত্রা করতে আমার কষ্ট হয়,
তবু করলাম একসময় :
সমুখে স্বর্ণের ধুধু ...
পেছনে রুপোলি ধুধু ...
উড়িয়ে, যাচ্ছি ...
২.
গোয়েন্দার মাথাটা ভিজে, ধূসর।
চোখজোড়া ঘোর-প্যাঁ...
সমস্ত আন্তরিক মুখ আলোঝলমল এস্টেশনগুলো
এক উন্নাসিক নাকে ঘষে উঠিয়ে ফেলে
আমরা দাঁড়ালাম যে এস্টেশনে;
বাতি জ্বলে নিভে গেছে অনেক আগেই,
লোকহীন-এলাকা বিদ্রুপবহ্নি জ্বেলে
সাদা হাড়ের মত তাকিয়ে আছে আর
আমরা দাঁড়িয়ে আছি বিশ্বাসে অনড় :
যেন কোনো সৌভাগ্যের ট্রেন আসবে, বহুদূর থেকে
আমাদের নিতে।
কুয়াশায় ঢাকা পড়েছে পথ। জীবনগত অভাব আর
আমাদের পায়ের তলায় সভ্যতার ক্ষয় ছিঁটিয়ে রেখেছে
তুষার ; ...