লক্ষ্যাপার: যুক্ত করো হে সবার সঙ্গে

মনি শামিম এর ছবি
লিখেছেন মনি শামিম [অতিথি] (তারিখ: রবি, ০২/০২/২০২০ - ১১:৩০অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

১.

১০ বছর বয়সের এক দ্বিধান্বিত কিশোরী তখন নমিতা দেবিদয়াল। বাবা মার সাথে বোম্বেতে থাকেন। সহপাঠিরা যখন সবাই সাঁতার শিখতে গেছে তখন মা একপ্রকার জোর করে তাঁকে ধরে নিয়ে এসেছেন কেনেডি ব্রিজের কাছে এক অপরিচ্ছন্ন গলির ছোট্ট একটি বাসায়। উদ্দেশ্য কন্যাকে ক্লাসিকাল মিউজিকের তালিম দেবেন। যাঁর কাছে নমিতাকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে তিনি বিশিষ্ট জয়পুর ঘরাণার শেষ প্রতিনিধি ধন্দুতাই কুলকার্নি যিনি স্বয়ং গান শিখেছেন প্রবাদপ্রতিম কন্ঠশিল্পী কেশরবাই কেরকার এর কাছে। নমিতার মায়ের বাড়িতে গানের চর্চা ছিল, নমিতাই বা এর থেকে দুরে থাকবে কেন, তাই অনিচ্ছাসত্বেও ধন্দুতাইয়ের বাসায় তাঁদের আগমন। নমিতার কন্ঠ শুনে তাইয়ের ভালো লাগে, তাঁকে শিষ্য বানাতে সময় নেননা। শুরু হয় এক কঠোর কঠিন যাত্রা। প্রতিদিন স্কুল শেষে তাঁর বান্ধবীরা যখন বিকেলে পার্কে খেলতে যান তখন নমিতাকে আসতে হয় এখানে। তবে শুরুর দিকে নমিতার ভালো লাগে কেনেডি ব্রিজের সেই ছোট্ট ঘরে তাই এর সঙ্গে থাকা এক বৃদ্ধাকে, সেই বাসায় আরও একজন মহিলা থাকেন তাঁর দিকেও নমিতার চোখ যায়। তাই খুব সুন্দর করে শাড়ি পড়েন, মনোযোগ দিয়ে চা বানান, পুজাপর্ব সারেন, নমিতার মনে হয় এই ছোট্ট বাসার সব কিছুর মধ্যে দারুণ একটা হারমোনি আছে, সুর আছে, তবে কি ক্লাসিকাল মিউজিকের মধ্যে আছে এক ছন্দোবদ্ধ সুন্দর জীবনের পাঠ?

২.

'লক্ষ্যাপার' থেকে পরপর ২ বছর ছাপানো আমন্ত্রণ পত্র পেয়েছি। মাধ্যম লাবনি আপা। দুইবারই বলেছিলেন তোকে আসতেই হবে সপরিবারে। যাওয়া হয়নি আর। তাই তৃতীয়বারের কার্ডের বদলে ডিজিটাল পত্রের অনুরোধ উপেক্ষা করার সাধ্য আর হয়না। এখন বাঁধন তো এটা ওটা বলে যাবেনা জানিয়ে দেয়, এখন আমিই বা একা যাই কি করে? তাই প্রথমে ফোন করি তপু ভাইকে। তপু ভাই প্রথমেই রাজি হয়ে যান। যাক সঙ্গী যখন জুটল, তখন আর সমস্যা কি। কাজেই গন্তব্য নারায়নগঞ্জ। তপু ভাইয়ের গাড়িতে তখন আমজাদ আলি খানের বাদ্যযন্ত্র চলছে। তপু ভাইকে জিজ্ঞেস করি, 'আপনার ক্লাসিকাল মিউজিক খুব পছন্দ, না?' তপু ভাই হ্যাঁ সুচক উত্তর দেন। আর একটু হেসে বলেন, 'মনি, আমি এই গান যে খুব ভালো বুঝি তা নয়, তবে ভালো লাগে।' আমিও বলি আমারও তো একই অবস্থা!

তখন সন্ধ্যে নেমে এসেছে ঢাকা শহরে। তপু ভাইয়ের গাড়িও ছুটতে শুরু করেছে। কিন্তু নারায়নগঞ্জের কাছাকছি এসে গাড়ি আর যেন এগুতে চায়না ‌জ্যামের কারণে। আমরা ভাবছি অনুষ্ঠান কি আমরা দেখতে পারবো? অনিশ্চয়তা বাড়তে থাকে, কি হবে যদি অনুষ্ঠানের অনেক কিছু মিস হয়ে যায়? অনুষ্ঠান সুচি অনুযায়ী প্রথমে তো গুনীজন সম্বর্ধনা। এবারে সম্বর্ধনা দেয়া হবে চট্টগ্রামের গুনী শিল্পী নির্মলেন্দু চৌধুরীকে। নির্মলেন্দু চৌধুরীর সন্তান যে আমাদের আপনজন সচল সুমাদ্রী সেটা কেবলই জেনেছি লাবনি আপার কাছ থেকে। কিন্তু গাড়িই যে আর চলেনা। যাক অবশেষে একটু দেরি করে পৌঁছুলেও মনে হলো অনুষ্ঠান আমরা মিস করিনি। সম্বর্ধনা, মানপত্র পাঠ শুরু হল বেশ খানিক পরেই। অনুষ্ঠানের উদ্বোধক নারায়নগঞ্জ নগরমাতা আইভি রহমান একটু দেরীতে এলেন বলে অনুষ্ঠান শুরুতে এই বিলম্ব।

৩.

ক.

'লক্ষ্যাপার' প্রত্যেক বছর জানুয়ারি মাসে ক্লাসিকাল মিউজিকের আসর বসায় বন্দরনগরী নারায়নগঞ্জে। গেল ১১ বছর ধরে এটি আয়োজিত হয়ে আসছে, কাজেই সংস্কৃতিপ্রেমীদের কাছে এটি আর অপরিচিত কোন অনুষ্ঠান নয়। সকলেই জেনে গেছেন এটির আয়োজকদের অন্যতম অসিত কুমার। অসিতদার সাথে অনেকদিনের পরিচয়, লাবনি আপার সূত্র ধরে। কিন্তু আলাপের সুযোগ হয়নি আগে। এবারও যে হলো, তা নয়। ব্যাস্ত মানুষ, পুরো অনুষ্ঠান জুড়ে এই আয়োজনের সূত্রধর, কর্ণধার। উনার প্রত্যেকটি কথা মনোযোগ দিয়ে শুনবার মতন। উনি যখন গুনীজন সম্বর্ধনা অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করছিলেন, আমি মুগ্ধ হয়ে কেবল উনার কথাই শুনছিলাম। উনি যখন বলছিলেন সংস্কৃতির প্রধান লক্ষ্যই হচ্ছে যুক্ত করা তখন রবীন্দ্রনাথের গানের বানী মনে পড়ে। যুক্ত করো হে সবার সঙ্গে/ মুক্ত করো হে বন্ধ। কিভাবে অস্বীকার করি এই অমোঘ সত্যকে। গুনীজন সম্বর্ধনা শেষে শুরু হয় রাতভর সংগীতের আয়োজন যে জন্য এই নারায়নগঞ্জ শহরে আমাদের আগমন। একে এক সংগীত পরিবেশন করেন রাজরূপা চক্রবর্তী, সুপ্রতীক সেনগুপ্ত, রোহন কে নাইডু, সৌমাল্য মুখার্জী, রেজায়ান আলী, অভিপ্রিয় চক্রবর্তী, মিনহাজুল ইসলাম, শুভাশিষ মুখোপাধ্যায়, ঋতুপর্ণা চক্রবর্তী, তাসাওফ আজম, বিপ্লব ভট্টাচার্য, সবুজ আহমেদ, প্রশান্ত ভেৌমিক, এবং অভিজিৎ কুন্ডু। আমাদের মুগ্ধতা যেন সময়ের সাথে সাথে বাড়তে থাকে। একে একে পরিবেশিত হল সরোদ, সেতার, বেহালা, মোহনবিনা, তবলা, কন্ঠসংগীত। সময় যে কোন দিক দিয়ে গড়িয়ে গেল টেরই পেলামনা। পরিবেশনার সাথে সাথে সবাই টুকটাক কথা বললেন, বিভিন্ন রাগ এর সাথে শ্রোতাদের পরিচয় করিয়ে দিলেন। প্রত্যেকের পরিবেশনা ছিল উঁচু মানের, শ্রোতারা ছিল মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে। প্রত্যেকটি পরিবেশনার শেষে মুহর্মুহু করতালি শুনে মনে হয় কতটা প্রাণবন্ত ছিল এই পুরো আয়োজন।

খ.

অনুষ্ঠানটির আয়োজন হয়েছে নারায়নগঞ্জ শহরের কেন্দ্রে চুনকা পাঠাগার ও মিলনায়তনে। প্রথম দেখাতেই বিল্ডিংটি ভালো লেগে যায়। ভেতরটাও অনেক পরিপাটি। ছয় তলা কি সাত তলা। এখানে কয়েকটি মিলনায়তন আছে, পাঠাগার আছে, একটা ছোট্ট সিনেমা দেখার ঘরও আছে। প্রদর্শণীর জন্য পর্যাপ্ত জায়গা রয়েছে। মানে সাংস্কৃতিক আয়োজন সম্পন্ন করার জন্য বেশ আধুনিক একটা আয়োজন আছে এখানে। নারায়নগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের সহযোগীতায় এই বিল্ডিং নির্মিত হয়েছে। কেন অন্য শহরগুলোতেও এ ধরণের আধুনিক সুযোগ সুবিধা সম্বলিত স্পেস থাকবেনা এই প্রশ্ন জাগে। তবে যে মিলনায়তনে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন হল, সেটি আকারে বেশ ছোট বলে মনে হল। এত বড়ো একটি বিল্ডিংয়ে আর একটু জায়গা কি ধরানো যেত না? মঞ্চসজ্জা ছিল অসাধারণ। ভাবনা অভিনব। কিন্তু অনেক দর্শককে এখানে স্থানের সীমাবদ্ধতার কারণে সমাগম ঘটানো সম্ভব নয়। শব্দ সংযোজন ব্যবস্থা অনেক আধুনিক। পুরো অনুষ্ঠান তৃপ্তি সহকারে দেখা গেছে, শোনা গেছে। তবে যে মানের অনুষ্ঠান হয়েছে সে তুলনায় সর্শক সমাগম কম হয়েছে বলে মনে হল আমার। কিন্তু এমনটা কি রাজশাহীতেও আমরা দেখিনি যখন ’হিন্দোল’ ২ মাস পরপর এধরনের ক্লাসিকাল সংগীতের আসর বসাত? মানে ক্লাসিকাল সংগীতের সমঝদার বরাবরই কি কম ছিলনা? তবে আয়োজনের কোথাও ত্রুটি বের করা মুশকিল ছিল। প্রত্যেক শিল্পীকে যথাযোগ্য মর্যাদা আর সম্মান দেয়া হল, আবার সময়ের অতিরিক্ত বাজানোর সুযোগ কাউকে দেয়া হলনা। এটা খুব ভালো লেগেছে। প্রত্যেক শিল্পী সম্পর্কে শুরুতেই নাতিদীর্ঘ একটি পরিচয় দেয়া হলো যেখান থেকে আমরা শিল্পী সম্পর্কে জানতে পারলাম। সারারাত ছিল সকলের জন্য চা-কফি পানের ব্যবস্থা, রাতে নৈশ ভোজ। পুরো আয়োজন ছিল এক কথায় চমৎকার।

৪.

নমিতা দেবিদয়ালের ভেতর অমিত সম্ভাবনা দেখেছিলেন ধন্দুতাই। তিনি নমিতার ভেতর কেশরীবাইয়ের ছায়া দেখতে পেয়েছিলেন। তাই শিখিয়েছেনও মনের মত করে। কিন্ত নমিতা কেশরীবাই কেরকার হননি, নমিতা ধন্দুতাই কুলকার্নিও হননি। নমিতা ক্লাসিকাল সংগীতের মধ্যে আজও আছেন কিন্ত নানান কারণে পেশা বদলে এখন সাংবাদিক হয়েছেন, ঔপন্যাসিক হয়েছেন, উনার লিখিত প্রথম বই 'দি মিউজিক রুম' ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়েছে। যাঁরা ক্লাসিকাল মিউজিক ভালোবাসেন তাঁদের এই বইটি নানান ভাবনার যোগান দেবে নিঃসন্দেহে। এরপর একে একে তিনি আরও দুটো বই লিখেছেন। তাঁর সাম্প্রতিক বই 'দি সিক্সথ স্ট্রিং অফ বিলায়েৎ খাঁ' দারুণ একটি কাজ হয়েছে। ক্লাসিকাল মিউজিক চর্চা করার জন্য, রপ্ত করার জন্য নিরন্তর সাধনার দরকার হয়। কিন্তু সবাই মহিরুহ হননা নিশ্চয়ই। তবে একটি সাক্ষাৎকারে নমিতার একটি কথা দারুণ লাগে। নমিতা বলেন, যাঁরা একটু ইন ডেপথ ক্লাসিকাল সংগীতের চর্চা করে তাঁদের জীবনবোধ হয় পরিশীলিত, মার্জিত। আমাদের এই বর্তমান অস্থির সময়ে ক্লাসিকাল সঙ্গীতের আবেদন সীমিত। তাই এর প্রচার ও প্রসারে যারা সংগ্রাম করছেন, খাটছেন তাঁদের কুর্ণিশ না জানিয়ে উপায় থাকেনা। নারায়নগঞ্জের মতন এক ছোট্ট জেলাশহরে হুমড়ি খেয়ে সবাই রাতভর এ ধরনের সংগীত সুধা উপভোগ করতে আসবেন না, এটা অনেকটা জানাই। তারপরেও যে কজন মানুষের মধ্যে এ আয়োজন আলো জ্বালিয়ে দেবে তাতেই এ ধরণের আয়োজনের সার্থকতা। আমি মনেপ্রানে লক্ষ্যাপারের এই আয়োজনকে সাধুবাদ জানাই।


মন্তব্য

করবী মালাকার এর ছবি

চলুক

মনি শামিম এর ছবি

ধন্যবাদ করবী। পরিচয় নেই আপনার সাথে। লেখেন আপনি?

কনফুসিয়াস এর ছবি

খুব চমৎকার লাগলো আপনার লেখাটা। সেই সঙ্গীত আসরে একটা ভ্রমণের মত হয়ে গেলো।
উচ্চাঙ্গ সঙ্গীত শোনা শুরু করেছি খুব বেশিদিন নয়। আপনি যেমন লিখেছেন, খুব যে বুঝি তা নয়। কিন্তু মন দিয়ে শুনতে খুব ভালো লাগে। আলাদা করে উচ্চাঙ্গ সঙ্গীত শুনতে একবারই গিয়েছিলাম, কৌশিকি চক্রবর্তী এই শহরে এসেছিলেন যেবার। মুগ্ধ হয়ে বসেছিলাম টানা আড়াই ঘণ্টা। সরাসরি গ্যালারিতে বসে আরেকবার শোনার সৌভাগ্য হয়েছিল, সৌরেন্দ্র আর সৌম্যজিৎ যেবারে শ্রাবণী সেনের সাথে এসেছিলেন গান গাইতে। রবীন্দ্রসঙ্গীতের মাঝে মাঝেই অল্প কিছু রাগ, দারুণ লেগেছিল।
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে এই লেখাটার জন্যে। বাণী বসু-র গান্ধর্বী বইটা রিকমেন্ড করলাম আপনাকে। অসাধারণ একটা উপন্যাস।

-----------------------------------
বই,আর্ট, নানা কিছু এবং বইদ্বীপ

মনি শামিম এর ছবি

ধন্যবাদ কনফুসিয়াস লেখাটি পড়বার জন্য। ক্লাসিকাল সংগীতের রাগ গুলি আলাদাভাবে ধরতে পারিনা, বুঝতে পারিনা কিন্তু তাতে সংগীত উপভোগ করতে খুব একটা অসুবিধে হয়না। সচলায়তনে বেশ আগে বিভিন্ন রাগের ওপর নাতিদীর্ঘ একটি আলোচনা দেখেছিলাম। কে লিখেছিলেন সেটি আর মনে করতে পারিনা। পাঠক যেহেতু, সংগীত এবং রাগসংগীতের বই পেলে কিনে পড়ি। রবিশংকরের রাগ-অনুরাগ, কুমারপ্রসাদের বইগুলি সংগ্রহে রেখেছি। হালে নমিতা দেবিদয়াল সত্যিই মুগ্ধ করে রেখেছে। সংগীত শোনার সাথে সাথে বইগুলো পড়লে রাগের প্রতি মনে হয় আর একটু অনুরাগ জন্মায়।

রাজশাহীতে 'হিন্দোল' নামের একটি সাংস্কৃতিক সংগঠন নিয়মিত রাগসংগীতের ওপর অনুষ্ঠান আয়োজন করত। একসময় সেটি দ্বিমাসিক ছিল। জানিনা সেটির বর্তমান অবস্থা। বেঙ্গলের ঢাকার অনুষ্ঠান তো পরপর ২ বছর হলইনা। নারায়নগঞ্জে 'লক্ষ্যাপার' প্রত্যেক বছরে আয়োজিত এই আসর ধরে রেখেছে। ছায়ানটেও অবশ্য রাগসংগীতের আসর বসে। সম্ভবত প্রত্যেক বছরের ডিসেম্বর মাসে। আর কোথায় কোথায় নিয়মিত হয় তার একটা গাইড হাতের কাছে থাকলে ভালো হত।

এক লহমা এর ছবি

হাততালি
আপনার লেখার জন্য সর্বদাই প্রতীক্ষায় থাকি।

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

সোহেল ইমাম এর ছবি

মনি ভাই অনেকদিন হলো এলখাটা পড়বো পড়ছি করছিলাম। ক্লাসিকাল মিউজিক বুঝিনা কিন্তু দি মিউজিক রুম পড়তে ইচ্ছে করছে।

---------------------------------------------------
মিথ্যা ধুয়ে যাক মুখে, গান হোক বৃষ্টি হোক খুব।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।