প্লিজ মিস্টার নিকন

মনি শামিম এর ছবি
লিখেছেন মনি শামিম [অতিথি] (তারিখ: শনি, ০১/০২/২০১৪ - ৯:১৪অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

প্রিয় মিস্টার নিকন,

আপনি আমাকে চিনবেন না। আমি আপনাদের জাপান থেকে অনেক দূরে অবস্থিত বাংলার পদ্মাপারে বড় হয়ে ওঠা এক চালশে ছুঁই ছুঁই পুরুষ, পদ্মার বুকে সাদা রঙের পালতোলা নৌকো দেখে যার শৈশব অতিবাহিত হয়েছে। আপনাকে আমার কিছু অনুরোধ ব্যাক্ত করব বলে আজ চিঠি লিখতে বসা। জানিনা, এই ভাষায় জানানো আকুতিটুকু আপনার কান পর্যন্ত পৌঁছাবে কিনা। যাই হোক, বাংলাদেশের পদ্মা নদীর নাম বোধ করি শুনে থাকবেন যদিও এর তীর ঘেঁষা রাজশাহী নগরীর কথা হয়ত আপনার অজানা। বেড়ে উঠেছি সেই নগরীর ছোট্ট একটি ভূখণ্ড মতিহারের সবুজ চত্বরে। পদ্মা নদীর কথা বলছিলাম কারণ পদ্মার কোলেই আমার কিংবা এ শহরের জন্ম এবং বেড়ে ওঠা।

ছোটবেলায় আমাদের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণের বিস্ময় ছিল বছরান্তে একবার অনুষ্ঠিত আলোকচিত্র প্রদর্শনী। মাঝে মাঝে বাবার আঙুল ধরে সেখানে যাবার সুযোগ পেতাম আর সেখান থেকেই পদ্মা নদীর নানান ছবি দেখে প্রথম আলোকচিত্রের প্রেমে পরি।ভাল লাগার ঘোর কাটতে দীর্ঘ দিবস রজনী কেটে যেত। তবে ছবি দেখে ভয়ও পেতাম। মনে হত, এই বিদ্যাটি অর্জন ভীষণ কঠিন। তখন ক্যামেরার দেখেও কেমন সন্ত্রস্ত হতাম। ভাবতাম যারা ছবি তোলে তাঁরা বোধ হয় ভিন্ন জগতের বাসিন্দা। আশির দশকের গোড়ায় মাত্র দুই ধরণের মানুষের হাতে ক্যামেরা দেখেছি বলে মনে পরে। এক স্টুডিওর ক্যামেরাম্যান আর দুই আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের আনুষ্ঠানিক আলোকচিত্রগ্রাহক।

ছোটবেলায় আমার বাবার মাধ্যমে আপনার সাথে আমার প্রথম পরিচয়। ঠিক কিভাবে আপনার এক ছোট্ট ক্যামেরা আমার বাবার হাতে এল, এখন আর তা স্মরণে নেই, তবে কিছুদিন পরে সেটি কিভাবে যেন উধাও হয়ে গেল। তখন আমার বয়স পাঁচ কি ছয়। তবে ঠিক তখন থেকেই আপনার নামটি আমার মর্মমূলে প্রবেশ করেছে। কি অদ্ভুত নাম! নিকন, বেশ রিনঝিন করতে থাকে, একটা রেশ রয়ে যায়। ওই যে আপনার নাম একবার শুনেছি, আমার আর সারা জীবনে তা ভোলা হয়নি।

যখন ক্যামেরা কিনব বলে ঠিক করলাম, তখন কিভাবে যেন পেনট্যাক্স কিনে ফেলেছি আপনাকে ভুলে, তাও আবার বিদেশ বিভূঁই- এ এসে। তবে সেটির প্রতি ভালোবাসা জন্মাবার আগেই আপনার ডি ৪০ কেনা সারা। আপনার ক্যামেরা কিনব, এ ছিল আমার সারা জীবনের এক স্বপ্নের মতন। ইটালির এক শপিং মলে যেই না আপনার ক্যামেরার একটা পছন্দসই দাম দেখলাম, সাথে সাথে ছোঁ মেরে কিনে ফেলেছি! আমার স্পষ্ট মনে আছে সেই রাত্রির কথা যখন আপনার ক্যামেরা ডি ৪০ নিয়ে সারারাত শুধু নাড়াচাড়া করেছি, এক ফোঁটা ঘুমাতে পারিনি। আপনাকে বলতেই হয় যে আপনি আমার জীবনে এক ব্যাগ মুগ্ধতা ছড়িয়ে দিয়েছিলেন সেই সময়। আর তারপর কত কত ছবি যে তুলেছি আপনার মাধ্যমে, তাঁর ইয়ত্তা নেই। পুরো ইটালি ঘুরেছি আপনার সাথে। যে আমি ছোটবেলায় আলোকচিত্র প্রদর্শনী দেখে বিস্মিত হয়েছি, সেই আমার আলোকচিত্র ঠাই পেয়েছে একটি প্রদর্শনীতে, সেই মতিহার অঙ্গনেই, আপনি কি ভাবতে পারেন? আমি তো এখনো কল্পনাই করতে পারিনা।

পদ্মার জল শুকিয়ে গেছে আজ। পদ্মার বুক জুরে নিষ্ঠুর চরের আবাহন। যে আমি ক্যামেরা কিনে ভেবেছিলাম পদ্মার বুকে পাল তোলা নৌকোর ছবি তুলবো, আজ পদ্মার জলের সাথে আমার চোখও শুকিয়ে আসে তাকে দেখলে! পদ্মার ছবি আর তোলা হয়নি সেভাবে, রাজশাহীতে যখন আপনার ক্যামেরা নিয়ে গিয়েছি, কত মানুষ প্রথমে ভেবেছে আমি বুঝি ফটোগ্রাফার। সন্ধ্যায় ট্রাইপড বসিয়ে বরেন্দ্র জাদুঘরের ছবি তোলার সময় এক অপরিচিত পথিক পুরোটা সময় আমার প্রস্তুতিটা খেয়াল করলেন। পরে জিজ্ঞেস করলেন, আপনার ছবি পরে কোন একসময় দেখতে চাই! মনে আছে, আমার চোখে জল চলে এসেছিল। ক্যামেরা দিয়ে স্থির চিত্রগ্রহণ নিছক ছবি তোলা নয় তাই, এ আমার জীবনের এক অমুল্য অংশ। যখন আমার কন্যা একটু একটু করে বড় হচ্ছিল, তখন তাঁর এই বেড়ে ওঠার স্মৃতিগুলি আপনার মাধ্যমে আমি ধারণ করে যে কি সন্তুষ্টি পেয়েছি, তা বলার নয়।

একটি বিষয়ের প্রতি আপনার দৃষ্টি আকৃষ্ট করতে চাই আজ। আপনি আপনাদের বিগিনার বা নবীন শিক্ষার্থীদের জন্য যে ক্যামেরা ফি বছর উৎপাদন এবং বাজারজাত করেন, সেই ক্যামেরার সাথে আপনি একটি লেন্স জুরে দেন যাকে আমরা কিট লেন্স বলি। আমি নিজে এই ১৮-৫৫ মিমি এফ ৩.৫-৫.৬ কিনে এবং এর সাথে ছবি তুলে খুব খুশী। তবে এই কিট লেন্সের ওয়াইড আ্যাঙ্গেল নিয়ে ভারী বিপত্তিতে পরি মাঝে মাঝে। কারণ আমি যে ছবি তুলতে চাই, ২৮ মিমি আমাকে সে ছবি তোলার ক্ষেত্রে যথেষ্ট জায়গা দেয়না, আর এর ৩.৫ এফ স্টপ অল্প আলোয় আমাকে নাকানি চুবানি খাইয়ে মারে। তাছাড়া এই এন্ডে বেশ ফ্লেয়ার আছে এই লেন্সের, যা এই মানের প্লাস্টিক লেন্সের ক্ষেত্রে খুব অস্বাভাবিক নয়।

আপনারা ২০০৬ সাল থেকে আজ পর্যন্ত নবীনদের জন্য যে ডি এক্স লেন্সগুলি উৎপাদন করে চলেছেন তার মধ্যে এই কিট লেন্স, ৫৫-২০০ মিমি ভিআর এবং ৩৫ মিমি এফ ১.৮ জি লেন্স তিনটি একইসাথে সস্তা এবং চমৎকার ইমেজ গুনের জন্য বেশ জনপ্রিয়। মানে ওপরোক্ত তিনটি লেন্সই আমাদের মতন ছা পোষা মানুষের একমাত্র সহায়। এগুলি ছাড়া আর যে লেন্সগুলি আছে সেগুলি আমাদের ধরা ছোঁয়ার বাইরে। তবে আমি বিস্ময়ের সাথে লক্ষ্য করেছি যে আপনারা বেশ অনেকদিন যাবত কোন ওয়াইড আ্যাঙ্গেল প্রাইম ডিএক্স লেন্স বাজারে বের করেন নি। আর এখানেই আমার অভিযোগ, আমার আপত্তি।

আপনারা যখন ডি এক্স লেন্স হিসেবে বাজারে ৩৫ মিমি এফ ১.৮ জি প্রাইম বের করেছিলেন, আমার মনে আছে, আমি এক দৌড়ে গিয়ে কিনে এনেছিলাম। আর দাম $২০০ (১৬,০০০ টাকা) ছিল এক অসাধারণ প্রাইস পয়েন্ট। শুধু তাই নয় এই লেন্সের ইমেজগুন, নির্মাণগুন, আকার আকৃতি সবই এক কথায় দুর্দান্ত। এই লেন্স আপনাদের ভাণ্ডারে আমাদের জন্য এক ব্রহ্মাস্ত্র বলা যায়। এমন কোন ডি এক্স শুটার নেই বা থাকার কথা নয়, যার কাছে এই লেন্স নেই! সত্যি বলতে কি আমরা যারা একটু আঁধারের ছবি তুলতে চাই, বলা যায় আপনি আমাদের বাঁচিয়ে দিয়েছিলেন সেই সময়। তবে আশার বেলুনও ফুলিয়ে দিয়েছিলেন সেই সাথে। আমরা ভেবেছিলাম আপনারা ৩৫ মিমির পাশাপাশি আরও কিছু ডি এক্স প্রাইম লেন্স বাজারে আনবেন। বিশেষ করে ওয়াইড লেন্স। আমরা আশা করেছিলাম আপনারা ৩৫ এর পর পর ১৪ কিংবা ১৬ ফোকাল দুরত্বের ছোট কমপ্যাক্ট কিছু লেন্স আমাদের জন্য উৎপাদন করবেন। আর ডি এক্স লেন্সের যে বৈশিষ্ট্য অর্থাৎ কমপ্যাক্ট, তুলনামুলক ভাবে সস্তা- সবই আমরা পেয়ে যাব এক সাথে। কিন্তু দীর্ঘ প্রায় পাঁচ বছর কেটে যাবার পরেও আপনি আমাদের জন্য কিচ্ছু দিলেন না। আমাদেরও আশার বেলুন ফুলতে ফুলতে একসময় ফেটেই গেল!

আমরা যদি এখন ওয়াইড তুলতে চাই, আমাদের জন্য আপনার অপশন কি? ১৪-২৪, ১৬-৩৫ এগুলি কি আপনি আমাদের অপশন মনে করেন? এগুলির আকার, ওজন, দাম-কোনটিই কি আমাদের জন্য আদর্শ বলে আপনার মনে হয়? আমাদের মতন হাজারো লাখো শৌখিন চিত্রগ্রাহক যে আশা যে আস্থা নিয়ে আপনার সিস্টেমকে আপন করে নিয়েছি, আজ পাঁচ পাঁচটি টি বছর কেটে গেলেও আপনি আমাদেরকে একটি ওয়াইড আ্যাঙ্গেল ডি এক্স প্রাইম লেন্স উপহার দিলেন না, তাহলে কি এখন আমরা সদলবলে মাইক্রো ফোর থার্ড ক্যামেরার কাছে আত্মসমর্পন করব? এই কি আপনি চেয়েছিলেন? তারা বছর বছর ছোট ছোট কম্প্যাক্ট ওয়াইড লেন্স তৈরি করবে আর আমরা তা চেয়ে চেয়ে দীর্ঘনিঃশ্বাস ফেলব?

আপনারা ১ ইঞ্চির সেন্সর যুক্ত ক্যামেরা বের করছেন, মিররলেস বের করছেন, ভোক্তাদের জন্য সাশ্রয়ী ফুলফ্রেম ক্যামেরা বের করছেন, আপনারা এ পি এস সি সেন্সর ঢুকিয়ে দিচ্ছেন আপনাদের পকেট ক্যামেরায়, বছরভর ফুল ফ্রেম লেন্স বের করছেন। দুই তিনটি ডি এক্স প্রাইম লেন্স আপনারা আমাদের জন্য নির্মাণ করতে পারেন না, তাহলে আমরা এখন কোথায় যাবো? আপনাদের প্রকৌশলীরা ক্যামেরা জগতে পারেনা এমন কিছু কি আছে? ক্যামেরার এস এল আর জগতে পঞ্চাশ বছর ধরে আপনাদের গর্বিত পদাচরন, আপনারা ৮৫ মিলিয়ন সংখ্যক লেন্স নির্মাণের গর্বিত উৎপাদক , আমাদেরকে আপনারা দিয়েছেন ভাল ছবি তোলার অসাধারণ সব মাধ্যম, আমরাও তা আপন করে নিয়েছি। কিন্তু আপনাদের ভাণ্ডার আমাদের জন্য এখনও অসম্পূর্ণ, এটি সত্যিই বেদনাদায়ক।

প্লিজ মিস্টার নিকন, আপনি কি শুনছেন? আমিও ল্যান্ডস্কেপ তুলতে চাই, আমিও ওয়াইড আ্যাঙ্গেলের অসাধারণ পারস্পেক্টিভের সন্ধান পেতে চাই, আমিও আমার কন্যাকে সামনে রেখে পুরো বিশ্ব চরাচরকে আমার ছবিতে উপস্থাপন করতে চাই! মানুষের মুখ, কিট-পতঙ্গের ছবি আর স্ট্রিট তুলতে তুলতে আমি ক্লান্ত। আপনি যদি ৮৫ মিমির লেন্সকে ৫০ মিমির সাইজে উৎপাদন করতে সক্ষম হন, তাহলে একটি ছোট্ট ডি এক্স ১৪ মিমি এফ ২.৮ কি নির্মাণ করা আপনার পক্ষে কি অসম্ভব? একটু উদ্যোগী হয়ে আরেকটু আন্তরিক হয়ে আমাদের আকুতিতে আপনি আপনারা সাড়া দিতে পারেন না? আমরা চাইনা আর ফুল ফ্রেম ভারী বড়, বড় সব লেন্স। আমরা চাই, ছোট্ট ডি এক্স প্রাইম লেন্স পাক তার যোগ্য মনোযোগ। একবার তাকিয়ে দেখুন আপনাদের ক্যামেরার দিকে, লেন্সের দিকে? আপনাদের লাভের সিংহভাগের যোগানদাতা হচ্ছে ডি এক্স। তো এই ফরম্যাটের প্রাইম লেন্সের প্রতি আপনাদের এত বিমাতাসুলভ আচরন কেন, বলুন? এইটা কোন ধরনের মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজি?

চোখ দুটি একটু খুলুন মিস্টার নিকুন। দেখুন আপনার চারপাশের মাইক্রো ফোর থার্ডের লেন্স জগত কিভাবে দ্রুত বদলে যাচ্ছে। তাদের ধরতে চাইলে আমাদের মতন ডি এক্স শুটারের কাছে আপনাকে আসতে হবেনা? আসুন, আপনার নতুন ডি এক্স প্রাইম ওয়াইড লেন্সগুলি নিয়ে আবার আসুন। আমরা অপেক্ষা করছি মিস্টার নিকন। অপেক্ষা করছি। আমাদের অপেক্ষার পালা আর দীর্ঘ করবেন না, প্লিজ!

ভাল থাকুন। নতুন বছর আপনাদের জন্য শুভ হোক, মঙ্গলময় হোক। আপনাদের শুভ বুদ্ধির উদয় হোক।

ইতি,

মনি শামিম
বোলোনিয়া, ইটালি, জানুয়ারি, ২০১৪।


মন্তব্য

সাফিনাজ আরজু এর ছবি

হাততালি
চিঠি মন ছুঁয়েছে মনি ভাই।
আপনার চাওয়া পূরণ হোক, শুভকামনা। হাসি

__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---

মনি শামিম এর ছবি

ধন্যবাদ আরজু। আমার চাওয়া পূরণ হবার সম্ভাবনা কম মন হচ্ছে, তারপরেও দেখা যাক, কি হয়!

অতিথি লেখক এর ছবি

নিকন ক্যামেরা নিয়ে অনেক কিছুই জানতাম না। সুচিন্তিত পোস্টে ভাল লাগা রইল।

ইউক্লিড

মনি শামিম এর ছবি

ধন্যবাদ ইউক্লিড। আপনার লেখাও পড়তে চাই। দেরী করবেন না কিন্তু।

প্রোফেসর হিজিবিজবিজ এর ছবি

হাসি

____________________________

মনি শামিম এর ছবি

ধন্যবাদ প্রফেসর সাব।

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

এ প্যাশনেইট নিকনিয়ান!

মনি শামিম এর ছবি

প্যাশন আছে বটে তবে ভালোবাসাটা অন্ধ নয়। চোখ খোলা আছে। ধন্যবাদ।

অতিথি লেখক এর ছবি

চমৎকার একটা চিঠি। এটা পড়লে নিকন সাহেব দৌড় দিয়ে অফিসে গিয়ে বসে যাবেন ডিএক্স এর জন্য ওয়াইড প্রাইম লেন্স বানাতে।
ফুলফ্রেমের মালিক/ভোক্তারা বড় বড় বিখ্যাত ছবি-টবি ওঠান, অথচ বেশিরভাগ ক্রেতাই ক্রপ ফরমেটের।
"দেশের ৯০ ভাগ লোককে বাদ দিয়ে কিসের উন্নয়ন?"

শুভেচ্ছা হাসি

[মেঘলা মানুষ]

মনি শামিম এর ছবি

ধন্যবাদ মেঘলা মানুষ। আসলেই কি এই চিঠি পড়ে নিকন সায়েব দৌড়ে গিয়ে প্রাইম ডি এক্স ওয়াইড লেন্স বের করবেন? আপনি ভাই ঠাট্টা করছেন। আরে ওরা বের করবেনা বলেই তো আমাদের এত অনুযোগ, অনুরোধ!

তাঁরা এগুলি এমনি এমনি করবেনা, তাঁদের চাপের মুখে রাখতে হবে!

অনুপম ত্রিবেদি এর ছবি

আসলে শুধু নিকন কেনো, অন্য কোনো ফার্স্ট পার্টি ম্যানুফেকচারারও কিন্তু কনজ্যুমার লেভেলে ভালো মানের এবং সস্তা দামের ওয়াইড এঙ্গেল ল্যান্স বাজারে আনেনি। হয়তো ওয়াইড এঙ্গেলের যেই টেকনিক, তার ডেভলপম্যান্ট খরচের কারনেই তারা পারেনি! বাজারে পাওয়া ওয়াইড এঙ্গেল ল্যান্স গুলোর দাম একবার দেখলেই সেটা বোঝা যায়। আর যদি তার সাথে জুড়ে দেয়া যায় বড় এ্যাপার্চার, তাহলে তো কথাই নেই!

থার্ড পার্টি ওয়াইড এঙ্গেল ল্যান্সের মধ্যে আমার কাছে Tokina 11-16mm f/2.8 কে অনেক বেশি গ্রহনযোগ্য মনে হয়, যার দাম প্রায় ৪৫,০০০ টাকা। যদিও Sigma 10-20mm f/3.5 ল্যান্সটা একটু বেশি ওয়াইড (1mm) আর জুমের ক্ষেত্রেও একটু বেশি সুবিধা দেয় (লং এন্ডে 4mm বেশি) কিন্তু এর কালার কোটিং এর স্থায়িত্ব তুলনামূলকভাবে কম। Tokina'র মজা হলো এটাতে পোলারয়েড ফিল্টার ব্যাবহার করার কোনোই প্রয়োজন নেই, কোনো ফিল্টার ছাড়াই এটি আকাশের রঙ অপূর্ব নীল দেখায়। আর Sigma ল্যান্সটার দামও বেশি, প্রায় ৫৫,০০০ টাকা।

এবার আসি আরেকটা কথায়, এক্কেবারে আসল কথা। ডেভলপম্যান্ট খরচের কথা বাদ দিলেও, মার্কেটিং স্ট্রেটেজি কিন্তু একটা কনজ্যুমার লেভেলের 14mm f/2.8 ল্যান্স তৈরি এবং বাজারজাত করাকে খুব একটা সাপোর্ট করে না। আপনি এবার বাজার যাচাই করুন, DSLR এর ক্ষেত্রে ফটোগ্রাফার আর ক্যামেরা ওউনার (যাদের কাছে ক্যামেরা আছে আর তারা কেবল শাটার ফেলে) -এর ব্যাগে এবং আগ্রহের তালিকায় ওয়াইড এঙ্গেলের চাহিদা কতোটুকু? আপনি কি মনে করেন প্রচন্ড চাহিদা থাকলে নিকন বা ক্যানন কেউই এদিকে নজর দিতো না? আরে ভাই, সবারই ব্যাগে আর চাহিদার লিস্টে কেবল টেলি ল্যান্সের নাম। তাই তো নিকন, ক্যাননের 70-200 f/2.8 এর মতো ভয়াবহ মূল্যবান প্রো-লেভেল ল্যান্সের পাশাপাশি একেবারে কনজ্যুমার লেভেলের 55-200mm, 55-250mm, 55-300mm,70-300mm ল্যান্স বাজারে এভেইলেবল। ওয়াইড এঙ্গেলের মজা খুব অল্প মানুষই নিতে চায়, তাই এটা নিয়ে ম্যানুফেকচারদের মাথা ব্যাথা খুবই কম। আর ওয়াইড প্রাইম, তাও আবার কনজ্যুমার লেভেলে? হাহ ম্যান, চাহিদাই নেই! 35mm -এর নিচে কনজ্যুমার লেভেলের ল্যান্সের তেমন একটা চাহিনা নেই বললেই চলে। আর নিকনের 24mm f/1.4 & 28mm f/1.8-এর দাম শুনলেই বোঝা যায় 14mm f/1.8-এর দাম কতোটা গলাকাটা লেভেলের হতে পারে!!

দিনশেষে কথা একটাই, প্রেমপত্রের কথা ভুলে যান। 'টেকাটুকা' জমিয়ে একটা Tokina 11-16mm f/2.8 কিনে ফেলুন। গভীর প্রেমে পড়ে যাবেন এক্কেবারে হাতে নিয়েই, কোনো ভুল নেই!

==========================================================
ফ্লিকারফেসবুক500 PX

মনি শামিম এর ছবি

দারুণ লিখেছেন অনুপম দা। অনেক ভাবনার খোরাক যোগালেন।

তোকিনার ১১-১৬ মিমি লেন্সের অনেক সুনাম শুনেছি। আপনাদের তোলা ছবিও দেখেছি। সত্যিই সুন্দর। তবে লেন্সটির সাইজ কেমন? বড় না? ওজন কেমন? ভারী না? দাম, ৪৫,০০০ টাকা। নেহাত কম কোথায়?

নিকন যদি ডি এক্স প্রাইম ৩৫ মিমি এফ ১।৮ লেন্স এর দাম ১৬,০০০ টাকা রাখতে পারে, তাহলে একটা ১৬ মিমি ২।৮ এর দাম কত হতে পারে?

ডি এক্স শুটারদের কাছে ৩৫ মিমি প্রাইম ৩৫ মিমি ফরম্যাটে হয়ে যায় ৫০ মিমি, ২৪ মিমি প্রাইম মানে ৩৬ মিমি, ১৬ মিমি প্রাইম মানে হল ২৪ মিমি, ১৪ মিমি মানে ২১ মিমি। যদি ফুল ফ্রেম ক্যামেরায় এই সবগুলি ফোকাল দুরত্তের লেন্স নানান এফ স্টপে এত সহজলভ্য হয় তাহলে ডি এক্স এ গিয়ে তা এত দুর্লভ হতে যাবে কেন?

ডি এক্স মানে হল ক্রপ সাইজ। মানে ছোট সেন্সর। তার মানে ক্যামেরার আকার ছোট হবার কথা, লেন্সের আকারও ছোট হবে, দাম ফুল ফ্রেমের তুলনায় সস্তা হবে। এইতো দর্শন। তাহলে ধরে নেয়া যায়, ডি এক্স শুটারের কাছে এই সাইজের নানান ক্যামেরার সাথে নানান লেন্স থাকবে। তাইনা? জুম লেন্স থাকবে, থাকবে প্রাইমও। আমি আমার ডি এক্স ক্যামেরায় বড় আকারের ফুল ফ্রেম লেন্স লাগাতে যাব কেন? আমি তো শুধু দামের কারণে ডি এক্স ব্যাবহার করছিনা। এর ছোট কমপ্যাক্ট আকারও তো আমার কাছে আকর্ষণীয়। আপনি আমাকে ছোট ক্যামেরা দিবেন, কিন্তু ছোট লেন্স দেবেন না, এইটা কি যৌক্তিক হতে পারে?

আজ মাইক্রো ফোর থার্ড ক্যামেরার দিকে তাকালে শুধু দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলতে হয়। তারা কি করল? মাত্র ছয় বছরের মধ্যে শুধু জুম নয়, কত মাপের প্রাইম লেন্স বাজারে নিয়ে এল। তাদের ১২ মিমি প্রাইম লেন্স আছে, আছে ১৪ মিমি, ১৬ মিমি। তারা পারলে, তাদের বাজার থাকলে, ডি এক্স কিংবা এ পি এস সি ফরম্যাটের প্রাইমের বাজার নেই এইটা কি বিশ্বাসযোগ্য?

১৪ নয়, একটা ১৬ ২।৮ বের করলেও আমার মতে মুড়ি মুড়কির মতন বিক্রি হবার কথা। নিকন ডি এক্স লেন্সের আসলে প্রাইম আছে কয়টি? ২০০৬ সালে বাজারে ডি ৪০ আসার পরে প্রথম প্রাইম এল ৩৫ মিমি এফ ১।৮ ২০০৯ সালে, মানে তিন বছর বিরতির পর। এটিই নিকনের একমাত্র সাধারণ রেঞ্জের প্রাইম লেন্স। আর দুটো ডি এক্স লেন্স আছে যার দুটোই বিশেষায়িত ম্যাক্রো লেন্স। ৪০ মিমি এফ ২।৮ এবং ৮৫ মিমি এফ ৩।৫ ভি আর।

ভাবা যায়, নিকনের ডি এক্স ভাণ্ডারে মাত্র তিনটি প্রাইম লেন্স? আর ফুল ফ্রেম দেখুন? গণ্ডায় গণ্ডায় ফুল ফ্রেম! কিন্তু আমার তো বড় এবং ভারী ফুল ফ্রেম লেন্স নয়, আমি চাই ছোট কম্প্যাক্ট ডি এক্স লেন্স!

আর মাইক্রো ফোর থার্ড? মাত্র কয়েক বছরের মধ্যে তাঁদের আছে, ৮ মিমি, ১২ মিমি, ১৪ মিমি, ১৭ মিমি, ২০ মিমি, ২৫ মিমি, ৪৫ মিমি, ৭৫ মিমি। আর সামনে আরও কত কি আসবে তাঁর ইয়ত্তা নেই!

নিকন ১ ইঞ্চির ক্যামেরা এনেছে বাজারে, এখন তাঁর জন্য লেন্স তৈরিতে ব্যাস্ত। নিকন ফুল ফ্রেম লেন্স নিয়ে আসতে চায় আমাদের মতন শৌখিন ভোক্তাদের দোরগোড়ায়, এই নিয়ে তাদের ভাবনার অন্ত নেই। তাহলে কি হবে আমার মতন ডি এক্স শুটারের। আমি তো আমার সিস্টেম দাঁড় করিয়েছি ডি এক্স লেন্স এর ওপর ভিত্তি করে। আমার প্রাইম লেন্স তাহলে গেল কোথায়?

আর অনুপম দা, আমি যে প্রাইম ওয়াইড লেন্স প্রত্যাশা করছি সেটির এফ স্টপ কিন্তু দেখুন ১।৮ নয়, ২।৮। আমি তুলব ল্যান্ডস্কেপ, আমার তো এত শ্যালো ডেপ্থ অফ ফিল্ডের দরকার নেই, বরং আমার এর উল্টোটিই দরকার বেশী । কাজেই ডি এক্স নির্মাণকারী প্রকৌশলীদের কাজ তো আরও সহজ হবার কথা, তাইনা?

অনুপম ত্রিবেদি এর ছবি

ওয়াও, আপনার জবাব প্রচন্ড ভালো লাগলো। আসলেই নিকন কেনো যে DX ফটোগ্রাফারদের দিকে নজর দিচ্ছে না, তা একটা কঠিন রহস্য। DX ক্যামেরা হাতে নেয়ার একটা সময় পর থেকে বুঝে গেছি যে, নিকন চায় আমার পকেট ফুটো করতে। তাদের যাবতীয় মাস্টার ক্লাস ল্যান্সই হলো ফুলফ্রেম ঘরানার। আর ফিল্মের যুগে প্রাইম দিয়ে শুরু করায় আমার প্রাইমের দিকে ঝোকটাই ছিলো বেশি, কিন্তু এই ব্যাপারে নিকনের সহযোগিতা কখনই পাইনি। আমার আদৌ ফুলফ্রেমে যাবার খুব একটা ইচ্ছে নেই, যদিও দুটো ক্যামেরাই ফুলফ্রেমের মতো বিশাল সাইজের! কিন্তু DX প্রাইম ল্যান্সের দিকে নিকন আরো একটু নজর দিলে ভালো হতো।

আমার আর কোনো ল্যান্স কেনার ইচ্ছে নেই, দুটো ব্যাগ ভর্তি ল্যান্স জমিয়ে রেখেছি। একটা কথা বলতেই হয় যে নিকন আমার পকেট ফুটো করার যেই পায়তারা করেছিলো, তাতে তারা পুরোপুরি সফল। তবে আমার ইচ্ছা হলো নিকন যদি আলট্রা ওয়াইডে একটা 10mm অথবা 11mm f/2.8 প্রাইম বের করে জমি-জমা বেচে হলেও কিনে ফেলবো, হা হা হা।

তবে দিন শেষে দুঃখ নিয়ে বলতেই হয়, নিকন যদি DX-এর প্রাইম লাইনআপে আরো নজর দেয়, তাহলে এর জনপ্রিয়তা বেড়ে যাবে শতগুন। কারণ আমার ধারণা অনুযায়ী, পৃথিবীতে প্রো ফটোগ্রাফারের চেয়ে আমাদের মতো শৌখিন ফটোগ্রাফারের সংখ্যাটাই অনেক অনেক বেশী।

টকিনার ল্যান্সটা ৫৫০ গ্রাম ওজন আর লম্বায় ৩.৫ ইঞ্চি। তবে দামটা একটু বেশী শোনালেও এতে তোলা ছবি দেখলে দামের কথাটা ভুলেই যাবেন। ল্যান্ডস্ক্যাপ করে যে কি আরাম, বলার বাইরে। এর শার্পনেস আর কালার এক্কেবারে প্রো-মাস্টার ক্লাস। আমার ল্যান্সটা কেনার ১৫ দিনের মাথায় পদ্মা নদীতে ডুব দিয়েছিলো, পরে একে পুরো 'পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন' কর্মসূচিতে হসপিটালে পাঠাই। কিন্তু এতো ঝড় যাবার পরও আজ প্রায় ৪ বছর হতে চললো, এর পার্ফর্মেন্স সেই প্রথম দিনের মতোই অপূর্ব। আমি কিছু ল্যান্সকে তার মূল্য দিয়ে বিবেচনা করতে পারি না। তার মধ্যে, টকিনার এই ল্যান্সটা আর নিকনের 105mm f/2.8 AF-s Micro ল্যান্সটা অন্যতম।

==========================================================
ফ্লিকারফেসবুক500 PX

মনি শামিম এর ছবি

দারুণ অনুপমদা, দারুণ। চমৎকার লিখেছেন। ভোক্তা এখন আর সত্তরের দশকে নেই। ভোক্তার চাহিদা না বুঝলে ভোক্তা দেবেনে বাঁশ। এখন কি আর অপশনের অভাব? এখন অনুরোধ করছি, কাল অন্য কোম্পানির কাছে ধর্না দেব। ভক্তি তো করিনা। ভালোবাসি। কিন্তু এই ভালোবাসা অন্ধও নয় একপেশেও নয়।

নিকন কোম্পানির কাছে ডি এক্স শুটার ডি এক্স লেন্স চায়, প্রাইম চায়।পিরিয়ড। ফুল ফ্রেমের ধানাই পানাই দিয়ে কাজ হবেনা তারা যতই টাল বাহানা করুক, আমি যদি ফুল ফ্রেমের কাছেই যাই তাহলে নিকনই কেন, এখন ভোক্তা হিসেবে আমার অপশনের অভাব? দরকার হলে মাইক্রো ফোর থার্ডের কাছে যাব! স্মৃতি থেকে, মায়া থেকে নিকন কে ধরেছি, প্রয়োজন অনুযায়ী অন্য কাউকে আপন করে নেব।

সাফি এর ছবি

টোকিনার লেন্স্টার প্রতি অনেক দিন কুনজর ছিল আমার। এক মাহেন্দ্রক্ষণে, পুরাতন একটা লেন্স পাওয়া মাত্র কিনে ফেলি। এর পর থেকে মোটামুটি এই লেন্স আর ৫০মিমি প্রাইম এর উপর দিয়েই চলছি।

মনি শামিম এর ছবি

শুধু লেন্স কিনলেই হবে? ছবি কনে সাফি?

তাড়াতাড়ি ছাড়ুন। আমরাও ছবি দেখে কিছু শিখে ফেলি।

আচ্ছা, একটা প্রশ্ন, আপনার ৫০ মিমিটাআর এফ স্টপ কত? কেমন?

সাফি এর ছবি

১,৮ খুবই ভাল, বিশেষ করে পোর্ট্রেট লেন্স হিসেবে।

মনি শামিম এর ছবি

সাফি, আমি দাম বেজায় কম দেখে প্রথমে নিকন ৫০ মিমি এফ ১।৮ ডি লেন্স কিনেছিলাম। দেখুন, সেটি কিন্তু 'ডি' মানে লেন্সের গায়ে 'ডি' খোদাই করা। মাত্র ৮০০০ টাকা দিয়ে তা নতুন পেয়ে গিয়েছিলাম, তাও আজ থেকে তিন বছর আগে। একটা মুশকিল ছিল যে এই লেন্স আমার ডি ৪০ এ অটো ফোকাস দিত না, ম্যানুয়ালি ফোকাস করতে হত। সেই সময় আমি ছিলাম নতুন। দাম কম দেখে কিনে ফেলেছিলাম, কিন্তু এই ব্যাবহারিক অসুবিধের জন্য খব কমই ব্যাবহার করা হত। তবে আমার অনেকগুলি প্রিয় ছবির জন্মদাতা এই লেন্সখানি।

এরপর বাজারে এল ৫০ মিমি ১।৮ জি লেন্স। দাম ১৬,০০০ টাকা। মানে ডবল, সুবিধে হল এইটা ফোকাস হয় আমার ডি ৪০ এ। এইজন্যই কিনেও ফেলেছিলাম। আমিও এটি দিয়ে দারুণ কিছু ছবি তুললাম। মনে হচ্ছিল এই লেন্স পুরনোটার চাইতে আরেক টু ভাল বিশেষ করে ১।৮ এফ স্টপে। কিন্তু দুঃখ জনক ভাবে লেন্স সহ ক্যামেরা হারিয়ে বসলাম বছর খানেক আগে!

তারপর শর্ট নোটিসে ইচ্ছে করেই ডি ৮০ কিনলাম শুধু এই কথা চিন্তা করে যে আমার ১।৮ ডি টা রয়েছে এবং সেটি এই ক্যামেরায় যুক্ত হবে।

কিন্তু আমি একটি বিষয় লক্ষ্য করলাম, যেই না আমি এই লেন্স আমার ডি ৮০ তে লাগালাম, দেখি যে এর ১।৮ এফ স্টপে অনেক ফ্লেয়ার। স্টপ ডাউন করে নিলে আর অসুবিধে হচ্ছেনা, কিন্তু ভিন্ন ক্যামেরায় ভিন্ন রেজাল্ট দেবে, এমনটা এই প্রথম নিজে ব্যাবহার করে জানলাম। আরও নিশ্চিত হলাম যখন লেন্সটি আমার ডি ৭০০০ এ লাগালাম। ওই একই কেস।

আমি অবশ্য নিকন ৫০ মিমি ১।৮ ডি লেন্স নিয়ে পরে বিষদ আলোচনায় যাবো। শুধু আপনাকে জানিয়ে রাখছি এখন।

আপনারও কি এমনই লেগেছে? আপনার কোনটা? ডি না জি?

অতিথি লেখক এর ছবি

একখান মৌলিক প্রশ্ন আমি প্রথম লেন্স ক্যামেরা কিনতে চাই, কোনটা দিয়ে শুরু করবো? চিন্তিত

আমার এক বন্ধু একখান ক্যামেরা কিনেছে Nikon D5200 Lens 18 mm to 55 mm। দাম অনেক চড়া, প্রায় ৭২ হাজার টাকা পড়েছে। তার ও এটি প্রথম কেনা ক্যামরা ফটোগ্রাফি শেখার জন্যে। এত দাম শুনে আমিতো আক্কেলগুড়ম হয়ে গেলাম ওঁয়া ওঁয়া

মাসুদ সজীব

ইয়াসির আরাফাত এর ছবি

আপনার বন্ধু একটু বেশি দামে জিনিস কিনেছেন। ই বে থেকে অথবা লোকাল স্টোর থেকে প্রোমোশনে কিনলে nikon D7100 18-105 mm ক্যামেরা ৬৪০০০-৭০০০০ টাকায় কেনা সম্ভব। এইটি দিয়ে কেবল নবীশ নয়, মধ্যম হতে উচ্চ মধ্যম মানের ফটোগ্রাফি করা যেতে পারে বলে আমার ধারণা।

মনি শামিম এর ছবি

আরাফাত ভাই একদম বুল'স আই ধরেছেন। ডি ৫২০০ একটু এডভান্স লেভেলের ফটোগ্রাফারদের জন্য। মধ্যম থেকে উচ্চ মধ্যম। উচ্চ মধ্যম বোধ করি আমরা ডি ৭০০০ এবং ৭১০০ কে বলতে পারি।

ইয়াসির আরাফাত এর ছবি

আপনার প্যাশন ভালো লাগলো মনি ভাই। তবে কোম্পানীর কাছে মিনতি করার কোন মানে হয় না। তাদের বিজনেস কেস থাকলে তারা এমনিতেই করবে। না থাকলে আপনার কাগজ নৌকা বানিয়ে জলে ভাসিয়ে দেবে। শয়তানী হাসি

মনি শামিম এর ছবি

প্রিয় আরাফাত ভাই। আপনি হয়ত ঠিক বলেছেন, কোম্পানির কাছে মিনতি করে লাভ নেই, কিন্তু তাঁদেরও জানা দরকার, ডিএসএলআর ব্যাবহারকারীদের এখন অনেক অপশন। শুধু স্মৃতি আর প্রেম দিয়ে আর কাজ হবার নয়। আমরা চাই, তাদের মতি ফিরুক। এমন তো নয়, আমিই একমাত্র ডি এক্স শুটার যে এটা চাই। নিকন কোম্পানি আসলে ডি এক্স ফরম্যাট আর রাখতেই চায়না। তারা অল্প দামে ফুল ফ্রেম আমাদের গছিয়ে দিতে চায়। তার মানে সাত বছর ধরে আমাদের পেলে পুষে আমাদেরই ছুড়ে ফেলতে চায়। তাঁদের ডি এক্স ফরম্যাটের লেন্স বাজারে অতি শীঘ্রই না আসলে অনেকেই এখন অন্য অপশনের দিকে ছুটবে। আদতে লাভ হবে কার? বাজার থেকে ডাকাবুকো কোম্পানিকে পাততাড়ি গুটাতে বাধ্য হয়েছে। বাজারের কাছে বলি হয়েছে মিনলটা, কোডাক, ইয়াশিকা। বছর বছর লস দিয়ে যাচ্ছে প্যানাসনিক, পেনট্যাক্স, রিকো, অলিম্পাস- এভাবে লস দিতে দিতে আর কতদিন তাঁরা টিকে থাকবে সেইটাই এখন প্রশ্ন। স্মার্ট ফোনের কাছে মার খেয়ে গেছে কমপ্যাক্ট। বাজার নিয়ত পরিবর্তন হচ্ছে, কিন্তু পরিবর্তিত হচ্ছে কি কোম্পানিগুলি? ভোক্তাদের চাহিদা না বুঝে তারা নিজেদের সিদ্ধান্ত আমাদের ওপর চাপিয়ে দিতে চায়। তাহলে আমরা কোথায় যাবো? বাঁশ দেয়ার আগে একটা অনুরোধ জানিয়ে রাখলাম তাই। ব্যাক ল্যাশের আগের পদক্ষেপ এটি।

মনি শামিম এর ছবি

ধন্যবাদ সজীব। কোন লেন্স ক্যামেরা দিয়ে শুরু করবেন, এইটা আসলে আপনি কি ধরণের ছবি তুলতে পছন্দ করেন, আগে কখনও এস এল আর ব্যাবহার করেছেন কিনা- তার ওপর নির্ভর করে। যদি একদম নতুন করে শুরু করতে চান এবং ডি এস এল আর কিনতে চান, অনায়াসে ক্যানন এস এল ১ এর ওপর ভরসা করতে পারেন। যদি নিকন কিনবেন বলে ঠিক করে থাকেন, তাহলে নিশ্চিন্তে নিকন ডি ৩১০০/৩২০০ রিকমেন্ড করা যায়।

আরাফাত ভাই যেটা বলেছেন, আপনার বন্ধু কিনেছেন ডি ৫২০০, কিন্তু এটি চড়া দামে তিনি কিনেছেন এবং আমার মতে ঠকেছেন। এই দামে আজকাল ডি ৭০০০ পাওয়া যায়, নতুন। সম্ভবত কদিন পর এই দামে ডি ৭১০০ বিকোবে। আচ্ছা, তিনি কোথা থেকে কিনেছেন, জানেন? জানলে আমাদের একটু জানান তো। বিক্রেতার গুষ্টি উদ্ধার করি!

অতিথি লেখক এর ছবি

মনি ভাই আমার বন্ধু এটি আবুদাবি থেকে নিয়েছে তার এক আত্নীয়র মাধ্যমে। কথা হলো তার সাথে সে নিজেই স্বীকার করেছে সে ঠকেছে এবং আমাকে বলেছে দেশ থেকে কেনার জন্যে। দেশে নাকি ভ্যাট কম, ক্যামেরাও ভালো পড়ে।

আমি একদম নতুন, নিকন ডি ৩১০০ আর ৩২০০র ফিচার দেখলাম নেটে। যেকোন একটা কিনবো ভাবছি, ৩১০০র ক্যামেরা ১৪.২ MP আর ৩২০০ দেখলাম ২৪.২ MP। কিন্তু দামে খুব বেশি পার্থক্য নেই( ৯০ ডলার)। কোনটা ভালো হবে? ধন্যবাদ আর শুভেচ্ছা থাকল আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

মাসুদ সজীব

মনি শামিম এর ছবি

একজন আত্মীয় কিভাবে ঠকায়? আর আজকাল কেনাবেচার তথ্য এতই উন্মুক্ত যে আমি প্রোডাক্টের দাম দেশে বসেই জানতে পারি। আপনার বন্ধুটা বোকা মনে হচ্ছে। নইলে এত দাম দিয়ে কেউ ডি ৫২০০ কিনতে যাবে কেন, বলুন?

ডি ৩২০০ কিনুন। পিরিয়ড।

তবে শুধু বডি কিনলে ভাল। এর সাথে যে কিট লেন্স পাওয়া যায়, সেটা কেনার সময় সাবধান। ২৪ মেগাপিক্সেল এই লেন্স ধারণ করতে অক্ষম। বেস্ট হয়, যদি ৩৫ মিমি এফ ১।৮ কিনতে পারেন। আর কিট লেন্স কিনতে চাইলে একদম নতুন যেটা বাজারে এসেছে সেটা। কোনভাবেই পুরনো কিট লেন্স কিনবেন না।

ধন্যবাদ সজীব। আপনার আগ্রহ দেখে ভাল লাগছে। তবে কথা দিন, ক্যামেরা তুলে ছবি তোলায় নিয়মিত হবেন?

অতিথি লেখক এর ছবি

ওই বন্ধু বেশ সৌখিন এবং পয়সাওয়ালা। তাই আফসোস করে না কোন কিছুতেই হাসি

আপনার প্রতি কৃতজ্ঞতা, যেহেতু ঘুরাঘুরি করা আমার নেশা তাই ক্যামেরা কিনলে ছবিতো তুলবোই নিয়মিত, কোন একদিন হয়ত সচলে ছবি সহ একটা ইয়া বড় লেখা পোষ্ট দিয়ে দিবো লইজ্জা লাগে এবং সেটা আপনাকেই উৎস্বর্গ করে। ভালোথাকবেন আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

মাসুদ সজীব

মনি শামিম এর ছবি

ওরে বাবা! ধন্যবাদ, ধন্যবাদ সজীব। প্রচুর ঘুরাঘুরি করুন। দুই হাতে ছবি তুলে আমাদের সাথে বিনিময় করুন। এতে আমাদের সকলের লাভ। ভাল ছবি দেখে অনেক কিছু শেখা সম্ভব। আবার আলোকচিত্র নিয়ে কিছু বই সংরহ করতে পারেন। ছবি তোলার সময় আপনার পর্যবেক্ষণ ক্ষমতাকে একটু শানিয়ে নেবেন। আর বাকিটুকু লেখা থাকবে আপনার কম্পোজিশনে। আপনার চোখ দিয়ে আমরা বিশ্ব দেখব, ভাবতেই ভাল লাগছে।

অতিথি লেখক এর ছবি

কাজ সারছে আমার উপর আশা? লইজ্জা লাগে
আমি চিরকাল শুধু মুগ্ধ দর্শক আর শ্রোতা হয়ে আছি সবখানে। ছাত্রজীবনে আড্ডাবাজি, ঘুরাঘুরি, আর এখন অফিস, বই পড়া এবং ঘুম ছাড়া আর কিছুই করিনা জীবনে! কতকিছু হওয়ার কথা ছিলো (ক্রিকেটার, ব্যান্ড দলের লিড গিটারিষ্ট, সেনাবাহিনীর অফিসার, মা ভেবেছিলো ইন্জিনিয়ার, কলেজ পাশ দিয়ে সবখান থেকে ব্যর্থ/ছ্যাঁকা(প্রথম প্রেমে) খেয়ে ভেবেছিলাম জীবনে আছে কি কবি হয়ে যাবো =), ফলাফল সব কিছুর খুব কাছ দিয়ে ঘুরে এসেছি জীবনে ) অথচ কিছুই হতে পারিনি। তারেক অণু ভাইকে দেখে স্তব্দ হয়ে যাওয়া ঘুরাঘুরির পুরানো ভূতটা আবার জেগেছে মাথায়, আর আপনার লেখা আর সচলের দুর্দান্ত ফটোগ্রাফারদের অসাধারন সব ছবি দেখে ছবি তোলার শখটাও আবার দারুন ভাবে ফিরে এসেছে। দেখা যাক নিজেকে ভেঙ্গে নতুন কিছু করতে পারি কিনা। পপকর্ন লইয়া গ্যালারীতে বইলাম

মাসুদ সজীব

মনি শামিম এর ছবি

পারবেন তো বটেই, আমাদের চাইতেও ভাল পারবেন। আগে, শুরুটা করুন। আর আপনি নিজের সম্পর্কে যা বলেছেন, সেই কোর্সগুলি আমরাও কমপ্লিট করেছি। এখন সরস্বতীর আশীর্বাদে আলোকচিত্র নিয়ে যা নয় তাই ফাঁদতে বসেছি। দেখা যাক, পাঠককে আর কতদিন এইসব ছাই-পাঁশ গেলানো যায়!

ইয়াসির আরাফাত এর ছবি

ক্যামেরা সম্বন্ধে আমার নিজের ধারণা খুবই সীমিত বলে অন্যের সাহায্য নিয়ে থাকি। এই সাইট টাতে দেখতে পারেন প্রাথমিক তথ্যের জন্য

অতিথি লেখক এর ছবি

চলুক
আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

মাসুদ সজীব

মনি শামিম এর ছবি

ধন্যবাদ আরাফাত। আমিও সাইটটা দেখলাম। সাইটটি আমিও আগে দেখেছি। এই সাইটে তুলনামূলক একটা স্পেসিফিকেশন দিয়ে তাঁকে পয়েন্ট আকারে উপস্থাপন করা হয়। কিন্তু এখানে এমন একটি স্পেসিফিকেশন দেখলাম যেটা ক্যামেরা কোম্পানির স্পেসিফিকেশনে উল্লেখ নেই, কোনদিন থাকবে কিনা সন্দেহ! যেমন দেখুন এখানে এরা বলছে, ডি ৩২০০ র ইমেজ গুন পয়েন্ট হচ্ছে ৮১ আর ডি ৩১০০ র ৬৭, এইটা অনেক বড় একটি দাবী কিন্তু। শুধু ইমেজ গুন কিন্তু ক্যামেরা ক্রয়ে অনেক বড় ভূমিকা রাখে।

প্রশ্ন হল তাঁরা এটি কিভাবে বের করল? তাঁরা যে বলছে যে ডি ৩২০০ এর ইমেজ গুন ডি ৩১০০ এর চাইতে "সিগনিফিকেন্টলি বেটার," এর পেছনে তথ্য প্রমান কি? আর এই পয়েন্ট তাঁরা কিসের ওপর ভিত্তি করে দিল?

আপনার জানা থাকলে একটু জানাবেন প্লিজ। আমার মাথায় ঢুকছেনা।

ধন্যবাদ আরাফাত, সাইটটির লিংক এখানে দেয়ার জন্য।

ইয়াসির আরাফাত এর ছবি

সাইট টা বলছে তারা কালার ডেপথ, ডায়নামিক রেঞ্জ আর লো লাইট পারফরম্যান্সের সিম্পল অ্যাভারেজ হিসেব করে স্কোর দিয়ে থাকে। বুঝতে পারছি না এই হিসাব কতটুকু কার্যকর, কিন্তু কালারের সংখ্যা আর ডায়নামিক রেঞ্জ বেশি দেখে আমি ইম্প্রেসড হাসি

মনি শামিম এর ছবি

আরাফাত ভাই, কালার ডেপ্থ কিভাবে নির্ণয় করে সেটিও বুঝিনা ভাল। কোন স্পেসিফিকেশনে কোথাও এটির উল্লেখ দেখিনা এই সাইট ছাড়া। দেখেন কালার ডেপ্থ যদি বিবেচনা করি তাহলে দুটো লেন্সের মাঝে মাত্র এক পয়েন্টের ব্যাবধান। তাইনা? দুটো ক্যামেরার মধ্যে পার্থক্য দুটো জায়গাতে বেশী দেখছি, মেগাপিক্সেল এবং আইএসও। দুই ক্যামেরার দামের ব্যাবধানও আমার মতে এই দুই বৈশিষ্ট্যর পার্থক্যই নির্ধারণ করেছে।

দেখুন আরাফাত ভাই, বছর বছর এরা ক্যামেরা বাজারে আনে, কালার ডেপ্থ বলুন, ইভি বলুন কিংবা অন্য কিছু, পার্থক্য রচিত হয় কিন্তু ওই দুইটি জায়গাতেই। আমার মনে হয় ডিএক্স ফরম্যাটে আর নতুন কোন উদ্ভাবন হবার মতন কিছু অবশিষ্ট নেই। বেশী হলে হয়ত জিপিএস আর ওয়াই ফাই যুক্ত হবে। ডিএক্স ফরম্যাটের মৃত্যু বুঝি ঘনিয়ে এলো!

ইয়াসির আরাফাত এর ছবি

কালার ডেপথ কিন্তু বাইনারি। এক বিটের ব্যবধান মানে ডবল হয়ে যাওয়া। ডি ৩১০০ তে আছে ২২.৫ বিট, মানে প্রায় সাড়ে ছয় মিলিয়ন কালার, ডি ৩২০০ তে ২৪.১ বিট, মানে প্রায় সতেরো মিলিয়ন কালার। বেশ পার্থক্য, কি বলেন? দেঁতো হাসি

মেগা পিক্সেলকে হিসাবের বাইরে ফেলে রাখেন। ছোট সেন্সরে বেশি মেগাপিক্সেল দিলে বরং ইনফরমেশন জট পাকিয়ে যাবার সম্ভাবনা। আইএসও হিসাবের বাইরে রাখেন, মানে বুস্ট বেশি দিলেন না, ছবি একই পাবেন সেন্সর সমান হলে। বাকি থাকলো কালার ডেপথ আর ডায়নামিক রেঞ্জ। দুইটাতেই ডি ৩২০০ কে বেশ আগানো দেখছি। আমার মতে নব্বই ডলার উশুল হয়ে যাবে ল্যান্ডস্কেপ ফটোগ্রাফিতে

মনি শামিম এর ছবি

ঠিক। কালার ডেপথ এই ব্যাপারটি জানা ছিলনা। আচ্ছা, কালার কি শুধু ক্যামেরার ওপর নির্ভর করে, লেন্সের কোন ভূমিকা নেই তাতে? মানে ধরা যাক আমার ক্যামেরায় সতেরো মিলিয়ন কালার আছে কিন্তু লেন্সের কারণে সেই কালার আনতে পারছিনা। এমন হয়? আর আরাফাত ভাই, কালার ডেপথ এর এই ব্যাপারটি ক্যামেরা কোম্পানিগুলি ক্যামেরার স্পেসিফিকেশনে উল্লেখ করেন না কেন? আপনি কোথাও দেখে থাকলে আমাকে জানাবেন? আমার বেশ কৌতূহল আছে ব্যাপারটায়।

আর ডায়নামিক রেঞ্জেও ওই সেই এক পয়েন্টের পার্থক্য, এটাতেও কি মিলিয়ন মিলিয়ন পার্থক্য হবে?

আপনার কথা শুনে সত্যিই মনে হচ্ছে ডি ৩২০০ স্পেসিফিকেশনের দিক দিয়ে ডি ৩১০০ এর চাইতে বেশ এগিয়েই আছে। তাহলে নব্বই ডলার বেশী থাকার উপযুক্ত কারণই আছে মনে হচ্ছে।

অতিথি লেখক এর ছবি

মেগা পিক্সেল কোন ব্যপার না। আর থাইল্যান্ড বাদে অন্য সব দেশেই দাম বেশি। আমাদের দেশে অরিজিনালটা পাওয়া কঠিন। সাধারণত, আমাদের দেশের বিক্রেতারা লট কিনে আনে এবং ওয়ারেন্টি সহ বিক্রি করে থাকে। দাম কম রাখে এবং ওয়ারেন্টি সময় সমস্যা হলে, নতুন লটের কেম্রা থেকে ঠিক করে দেয়।

সামুরাই

মনি শামিম এর ছবি

মেগাপিক্সেল আমাদের কাছে ব্যাপার নয়া হলে কি হবে, ক্যামেরা কোম্পানি যে আমাদের ওপর তা ভরিয়ে দিতে চায়। এখন ভরা শুরু করেছে আইএসও। ২৪,৬০০, ৫২,০০০, কোনদিন আসবে লক্ষাধিক! ডিএসএলআর এর অস্ত্র ভাণ্ডার যে ফুরিয়ে যায় যায়!

আচ্ছা সামুরাই, আমাদের দেশের বিক্রেতারা ক্যামেরা নয় লেন্সের পেছনে কত বছরের ওয়ারেন্টি দেয়, জানেন আপনি?

অতিথি লেখক এর ছবি

http://bikroy.com/bn/nikon-d3200-with-1855mm-for-sale-dhaka-22#contact-email
ঢাকা বসুন্ধরা সিটিতে ক্যামেরার দোকানগুলোতে দেখলাম ওয়ারিন্টি সহ বিক্রি করার বিজ্ঞাপন দিচ্ছে। এই সাইট টা তে গেলে তার কিছু নমুনা দেখতে পাবেন। আবার স্টেডিয়াম মার্কেটে ক্যামেরা পাওয়ার ভালো স্থান পরিচিত কয়েকজন বললো। আমি অবশ্য এখনো কোন শপে যাইনি, তাই ঠিক বলতে পারছিনা একি মড়েলের ক্যামেরার দামে এত পার্থক্য কেন, একি মড়েলের ক্যামেরায় কারো ক্যামেরা ৩৫০০০ হাজার আবার কারো ৪২০০০ হাজার! আগামি সাপ্তাহে সরজমিনে গিয়ে অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করে আসবো আশা করছি।

মাসুদ সজীব

মনি শামিম এর ছবি

সজীব, আপনি অবশ্যই সরেজমিন অভিজ্ঞতা আমাদের সাথে বিনিময় করবেন কিন্তু। আমাদেরও অনেক কিছু জানা দরকার। ওয়ারেন্টি, দামের পার্থক্য এগুলি কিন্তু খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ইচ্ছে করলে কয়েকটি জায়গায় ঢুঁ মেরে আমাদের সাথে অভিজ্ঞতা বিনিময় করুন। তাতে আখেরে আমাদের সবারই লাভ।

অতিথি লেখক এর ছবি

বসুন্ধরা সিটিতে নিক্কন ডি ৩১০০র দাম ৩১,০০০ হাজার টাকা এবং ডি ৩২০০র দাম ৩৫,০০০ হাজার চাইলো। সবচেয়ে অবাক লাগলো ডি ৫২০০র দাম শুনে, মাত্র ৪৫,০০০ হাজার। এত তাড়াতাড়ি ক্যামেরার দাম এত কমে গেল কি করে ঠিক বুঝতে পারলাম না চিন্তিত

নিক্কন কি থাইল্যান্ড এর তৈরী হয়? সবগুলোর গায়ে মেড বাই থাইল্যান্ড দেখলাম !

মাসুদ সজীব

মনি শামিম এর ছবি

তাইতো, এত তাড়াতাড়ি ক্যামেরা দাম এত কমে গেল কিভাবে? বাজারের ভাব বোঝা দায় সজীব! নিকন থাইল্যান্ডে তৈরি হয় ঠিক। চায়নাতেও ওদের ফ্যাক্টরি আছে। এখন ওদের প্রায় সব প্রোডাক্ট এই দুই দেশেই নির্মিত হচ্ছে। শুধু জাপানে ওদের প্রফেশনাল লেভেলের প্রোডাক্ট তৈরি হয়। কঞ্জিউমার প্রোডাক্ট সব এই দুই দেশে। নিকন ডি ৩১০০ এর দাম কত কমেছে, এই ইটালিতেও এখন এই দামেই শুধু বডি পাওয়া যাচ্ছে। অথচ শুরুতে যখন বাজারে এল, এর দাম ছিল প্রায় দ্বিগুণ। ডি ৫২০০ এর দাম তো বেশ সস্তা। অপেক্ষা কিসের? কিনে ফেল!

অতিথি লেখক এর ছবি

অপেক্ষা আসলে অনেক কিছুর, এই বছর বিয়ের মত দু:সংবাদ টিকে আপন করে নিতে হবে দেঁতো হাসি । বিয়ের খরচের নাকি টাকা জমাতে হবে এমন পরামর্শ দিচ্ছে আমার সব খরুচিয়া বন্ধুরা(এমন কি ৫০হাজার টাকার ক্যামেরা ৭২ হাজার টাকা দিয়ে কেনা সেই বন্ধুটি ও) । আবার এইদিকে থ্যাইল্যান্ডের ভিসা পেয়েছি মামার সাথে, কিন্তু মামার সাথে যাওয়া হয়নি। অনেকেই বলছে ভিসা পেয়ে না গেলে পরে সেটি অন্য কোন দেশে যেতে সমস্যা করবে, যদি তাই হয় তাহলে যেতেই হবে, গেলে ভাবছি সেখানে গিয়ে কিনবো ক্যামেরা। আসলে ঠিক সিদ্ধান্তটা নিতে পারছি না। বিয়ের আগেই গ্যাঁড়াকলে পড়ে যাচ্ছি মনি ভাই। পরামর্শ দিবেন।

মাসুদ সজীব

মনি শামিম এর ছবি

সজীব, থাইল্যান্ড গিয়ে ক্যামেরা কেনার পেছনে যুক্তি যদি এমন হয় যে কম দামে আসল জিনিষটা পাবে, আমার মনে হয় সেটা তুমি ঢাকাতেই পেতে পার। আমি নিশ্চিত নই ক্যামেরা থাইল্যান্ডে তৈরি হয় বলেই নিকন কোম্পানি তার দাম সেই দেশে কমিয়ে দেবে। এইটা অন্যান্য দেশে হয়নি বোধ করি।

আর বিয়ের খরচ তো আছেই। ক্যামেরার পেছনে ৫০ হাজার টাকা খরচ একটা বিনিয়োগের মতন। শখ পুরনের ব্যাপারটাও আছে। সেটা আমার মনে হয় দেরিতেও হতে পারে। আর ক্যামেরা থাইল্যান্ডে কিনতে হবে এমন কোন মানে নেই। বিয়েটা করে ফেল আগে, আগে দিল্লি কা লাড্ডু, পরে না হয় ঢাকার লাড্ডুই খেলে!

অতিথি লেখক এর ছবি

হা, ১বছরের। তবে আসল না ইউজ করা আপনি বুজতেই পারবেন না।

সামুরাই

অতিথি লেখক এর ছবি

থ্যাইল্যান্ডে দাম কি কম সত্যি? ওখান থেকে কিনলে কি অরজিনাল পাওয়া যাবে এমন নিশ্চয়তা আছে? ১লা ফেব্রুয়ারী থাইল্যান্ড ঘুরতে যাওয়ার কথা ছিলো, কিছু সমস্যার কারনে যাইনি। ভিসার মেয়াদ আরো তিনমাস আছে যদি ক্যামেরা অরজিনাল পাওয়া যায় এবং দামে সস্তা হয় তাহলে এক ঢিলে না হয় দুই পাখি শিকার করতে যাবো কিনা আরেকবার থট দিয়ে দেখতে পারি চিন্তিত

মাসুদ সজীব

অতিথি লেখক এর ছবি

জি জনাব কম। নিকন এর শোরুম আছে। আসলটাই পাবেন।

সামুরাই

মর্ম এর ছবি

'নিকন' যাঁরা বাংলাদেশে আনেন, তাঁদের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছি এটা, উনারা পড়ে দেখুন হাসি

~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...

মনি শামিম এর ছবি

ধন্যবাদ মর্ম। অনেক ধন্যবাদ। কিন্তু নিকনের দেশী প্রতিনিধিদের জানালে কি কোম্পানির ঘুম ভাঙবে? মনে তো হয়না।

মর্ম এর ছবি

একেবারে 'কিছুই না করা'র চাইতে এটা ভাল না?

আর সত্যি বলতে কী, দেশী প্রতিনিধিরা চাইলে অনেক অসম্ভবই সম্ভব হয়। একটা বিশ্বখ্যাত ব্র্যান্ডের কথা জানি, ওদের কিছু প্রোডাক্ট শুধু বাংলাদেশেই পাওয়া যায়, সেটাও দেশী প্রতিনিধিদের চাপে পড়েই হয়েছে। হাসি

~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...

মনি শামিম এর ছবি

মর্ম, আপনি আসলে ঠিকই বলেছেন। দেশী প্রতিনিধিদের চাপে হয়ত কিছু পরিবর্তন হয়। কিন্তু প্রোডাক্ট ডেভেলপমেন্ট শুধু দেশী প্রতিনিধিদের চাপে হবে বলে মনে হয়না। এইজন্য বাজার বিশ্লেষণ দরকার, চাহিদার হিসেব দরকার, দরকার পরিকল্পনা, যেটি নিকন করেছে বলেই মনে করি। এখন এইসব বিবেচনার কাছে অনেক সময় কোন একটি প্রোডাক্ট হারিয়ে ফেলে তার স্বল্প মেয়াদী প্রয়োজনীয়তা। কিন্তু আমার মতে ডি এক্স ওয়াইড লেন্সের চাহিদা আছে, যেহেতু প্রচুর মানুষ টা ব্যাবহার করছেন, কিন্তু মিস্টার নিকনের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায় এই বিষয়ে কোন চিন্তা না থাকলে, আমার আপনার কি করার আছে বলুন? আমরা হয়ত আমাদের মনের কথা এবং মতামত চিঠিতে লিখে জানাতে পারি। কিন্তু শেষ সিদ্ধান্ত তো তাদেরই নিতে হবে।

তবে অবশ্যই কিছু না করার চাইতে এইটা করা ভাল। যেটা আপনি করেছেন, যেটা আমি করেছি। এখন তাদের সুমতি হলেই হয়!

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।