সভ্যতা শুরুর আগে - ১

শিক্ষানবিস এর ছবি
লিখেছেন শিক্ষানবিস (তারিখ: শুক্র, ১৭/১০/২০০৮ - ৯:০৬অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

অনুবাদকের কথা

"ধর্মের প্রয়োজনীয়তা কি ফুরিয়ে গেছে?" নামে একটা ব্লগ অনেকদিন আগেই লিখেছিলাম। ঐ ব্লগের কমেন্টে হিমু প্রথম জ্যারেড ডায়মন্ডের সন্ধান দেন। এর আগে জ্যারেড ডায়মন্ডের বই কখনও পড়িনি। গত মাসে ইস্নিপ্‌স থেকে ডাউনলোড করে "গান্‌স, জার্মস অ্যান্ড স্টিল" (পুলিৎজার পুরষ্কার বিজয়ী) বইটি পড়া শুরু করি। ঈদের ছুটিতে বাসায় বসে বসে একটা অধ্যায় অনুবাদও করে ফেলি। নেট ছিল না। এক দিক দিয়ে ভালই হয়েছিল। নেট না থাকলে লেখালেখি হয় বেশী।

জ্যারেড ডায়মন্ডের এই বইয়ের প্রথম অধ্যায়টা খুব মজার। মাত্র ২০ পৃষ্ঠার মধ্যে সেই ৭ লক্ষ বছর আগে থেকে শুরু করে ১৩,০০০ বছর পূর্ব পর্যন্ত মানুষের পুরো ইতিহাসটা বলে দিয়েছেন। আমি মনে করি, শুধু এইটুকু পড়লে বিবর্তনের মাধ্যমে মানুষের ক্রমবিকাশের চিত্রটা যে কারও কাছে পরিষ্কার হয়ে যাবে। তাই এই অধ্যায়টাই অনুবাদের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। আশাকরি ৩-৪ কিস্তিতে শেষ হয়ে যাবে।

আরেকটা বিষয় বলে নেয়া প্রয়োজন। জ্যারেড ডায়মন্ডের মাথায় এই বই লেখার চিন্তা এসেছিল পাপুয়া নিউ গিনির রাজনীতিবিদ ইয়ালির একটি প্রশ্ন থেকে। ইয়ালি তাকে প্রশ্ন করেছিলেন, "পশ্চিমা দেশগুলোর তুলনায় আমরা এতো অনগ্রসর কেন?" প্রশ্নটা কিন্তু খুব গুরুত্বপূর্ণ। এই মধ্যযুগেও নিউ গিনির মানুষেরা পশু শিকারের মাধ্যমে আদিম মানুষের মত জীবন যাপন করতো। অথচ আফ্রিকা, ইউরেশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ার পর এই অঞ্চলেই প্রথম মানুষের বিকাশ ঘটেছিল। কি কারণে এখানকার মানুষ উন্নত হতে পারলো না? বিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকেও বর্ণবাদীরা মনে করতো, তাদের বুদ্ধি কম। কিন্তু ডায়মন্ড বলেছেন, নিউ গিনির সাধারণ মানুষের বুদ্ধিমত্তা আমেরিকার মানুষের চেয়ে কোন অংশেই কম না। এমনকি কিছু কিছু দিক দিয়ে তারা আমেরিকানদের চেয়ে উন্নত। তাহলে কেন এই অবনতি? এই প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়েই জ্যারেড ডায়মন্ড তার বইটি লিখেছেন। তিনি মনে করেন, এটা রচনার মাধ্যমে ইয়ালির সেই পুরনো প্রশ্নের উত্তর কিছুটা হলেও দিতে পেরেছেন।

*****

মূল গ্রন্থ: Guns, Germs and Steel: The Fates of Human Societies
লেখক: Jared Diamond
অধ্যায় ১: Up to the starting line

*****

প্রথম অধ্যায়: সভ্যতা শুরুর আগে

বিভিন্ন মহাদেশে ঐতিহাসিক উন্নতি সমান তালে ঘটেনি। মোটামুটি খ্রিস্টপূর্ব ১১,০০০ অব্দকে মহাদেশগুলোর এই ঐতিহাসিক উন্নয়নের তুলনা করার জন্য উপযুক্ত বছর হিসেবে বেছে নেয়া যায়। এই সময় থেকেই বিশ্বের কিছু অংশে গ্রামীণ জীবনের উদ্ভব ঘটে, আমেরিকায় প্রথমবারের মত মানব বসতি স্থাপিত হয়, প্লাইস্টোসিন ও শেষ বরফ যুগের সমাপ্তি ঘটে এবং ভূতত্ত্ববিদরা যে যুগকে "সাম্প্রতিক যুগ" বলে অভিহিত করেন সে যুগের সূচনা ঘটে। এই বছরের আনুমানিক কয়েক হাজার বছরের মধ্যে বিশ্বের কিছু অংশে উদ্ভিদ ও প্রাণীর লালন-পালন শুরু হয়। অর্থাৎ তখন থেকে আমরা গৃহপালিত উদ্ভিদ ও প্রাণী পেতে শুরু করি। এমন কি হতে পারে, সেই ১১,০০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দেই কিছু মহাদেশ অন্য মহাদেশের তুলনায় এগিয়ে ছিল? সেক্ষেত্রে প্রশ্ন করতে হয়, শুরুতেই কি কেউ অন্যদের তুলনায় বেশী সুবিধা ভোগ করেছিল?

যদি তা-ই হয়, তবে এই প্রাথমিক সুবিধাই হয়ত গত ১৩,০০০ বছরে বহুগুণে বর্ধিত হয়ে বর্তমান বৈষম্যের সৃষ্টি করেছে। সেক্ষেত্রে এই প্রাথমিক সুবিধা বিশ্লেষণ করেই ইয়ালি'র প্রশ্নের উত্তর দেয়া সম্ভব। তাই এই অধ্যায়ে কয়েক মিলিয়ন বছর ধরে বিভিন্ন মহাদেশে মানুষের বিস্তার ও অগ্রগতির ইতিহাস বর্ণনা করা হবে। অর্থাৎ একটি প্রজাতি হিসেবে আধুনিক মানুষের উদ্ভব থেকে শুরু করে ১৩,০০০ বছর পূর্ব পর্যন্ত সমগ্র ইতিহাস খতিয়ে দেখা হবে। মাত্র ২০ পৃষ্ঠায় এই বিশাল ঐতিহাসিক অভিযাত্রাকে ফুটিয়ে তোলাই এ অধ্যায়ের উদ্দেশ্য। স্বভাবতই আমি খুব বিস্তারিত বর্ণনায় যাব না, ইতিহাসের যে অংশগুলোকে এই বইয়ের জন্য সবচেয়ে উপযোগী মনে করব কেবল সেগুলোই উল্লেখ করব।

বর্তমানে "গ্রেট এইপ" এর যে তিনটি প্রজাতি টিকে আছে তারাই আমাদের সবচেয়ে নিকট আত্মীয়। এই প্রজাতি তিনটি হচ্ছে: গরিলা, সাধারণ শিম্পাঞ্জি এবং পিগমি শিম্পাঞ্জি ("বনোবো" নামেও পরিচিত)। এদের আফ্রিকায় আবদ্ধ হয়ে থাকা এবং আফ্রিকা থেকে উদ্ধারকৃত বিপুল পরিমাণ জীবাশ্ম নমুনা থেকে বোঝা যায়, মানব বিবর্তনের একেবারে প্রাথমিক ধাপগুলো এই আফ্রিকাতেই সম্পন্ন হয়েছিল। প্রাণীদের ইতিহাস থেকে মানুষের ইতিহাসকে আলাদা করা যায় ৭ মিলিয়ন (আনুমানিক ৫-৯ মিলিয়ন) বছর পূর্ব থেকে। এই সময়েই আফ্রিকার এইপ জনগোষ্ঠী বেশ কয়েকটি ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠীতে বিভক্ত হয়ে পড়ে। এই ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠীগুলোর মধ্যে একটি বিবর্তিত হয়ে আধুনিক গরিলায় পরিণত হয়, অন্য একটি বিবর্তিত হয়ে পরিণত হয় আধুনিক শিম্পাঞ্জিতে, আর তৃতীয় একটি জনগোষ্ঠী থেকে মানুষের উদ্ভব ঘটে। গরিলার বিবর্তন রেখা মানুষ ও শিম্পের বিবর্তন রেখার খানিকটা পূর্ব থেকে শুরু হয়।

জীবাশ্ম বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, বিবর্তনের যে রেখা আমাদের জন্ম দিয়েছে আনুমানিক ৪ মিলিয়ন বছর পূর্বে তা বিশেষ অগ্রগতি লাভ করে। এ সময় মানব বিবর্তনের প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত হয়। সেই প্রাক-মানবের দেহ ও মস্তিষ্কের আকার বৃদ্ধি পেতে শুরু করে আনুমানিক ২.৫ মিলিয়ন বছর পূর্বে। এই প্রাক-মানবদের সাধারণভাবে Australopithecus africanus, Homo habilis ও Homo erectus বলা হয়। এদের একটি ক্রমান্বয়ে অন্যটিতে বিবর্তিত হয়েছে। এভাবে মোটামুটি ১.৭ মিলিয়ন বছর পূর্বে হোমো ইরেক্টাসের উদ্ভব ঘটে। হোমো ইরেক্টাস দেহের আকারের দিক দিয়ে আধুনিক মানুষের কাছাকাছি হলেও তাদের মস্তিষ্কের আকার ছিল আধুনিক মানুষের মাত্র অর্ধেক। মোটামুটি ২.৫ মিলিয়ন বছর পূর্ব থেকে পাথরের উপকরণের ব্যবহার শুরু হয়। কিন্তু সেগুলো ছিল ঝুরঝুরে বা খণ্ড-বিখণ্ড পাথর, তার উপর আবার অশোধিত। প্রাণিবিজ্ঞানের দৃষ্টিতে চিন্তা করলে হোমো ইরেক্টাস এইপদের তুলনায় অনেক উন্নত ছিল, কিন্তু তার পরও আধুনিক মানুষের তুলনায় ছিল অনেক অনুন্নত।

আমাদের উদ্ভব হয়েছে ৭ মিলিয়ন বছর পূর্বে। এর পর ৫-৬ মিলিয়ন বছর ধরে আমাদের বিবর্তনের পুরোটাই হয়েছে আফ্রিকাতে। সে সময় আফ্রিকার বাইরে মানুষ বা তার আদি পুরুষদের কোন অস্তিত্বই ছিল না। মানুষের প্রথম যে পূর্বপুরুষ আফ্রিকা ছেড়ে বাইরের জগতে পা দিয়েছিল তারা হল হোমো ইরেক্টাস। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার জাভা দ্বীপে প্রাপ্ত জীবাশ্মের মাধ্যমে এর প্রমাণ পাওয়া গেছে। আফ্রিকা থেকে অভিবাসিত এই মানবদের তাই জাভা মানব বলা হয়।

প্রাচীনতম জাভা জীবাশ্মের বয়স প্রায় ১ মিলিয়ন বছর, এটা অবশ্য জাভা মানব নয়, মানবী। কিন্তু বর্তমানে কিছু বিজ্ঞানী বলছেন, এদের বয়স ১.৮ মিলিয়ন বছর। সূক্ষ্ণভাবে বললে বলতে হয়, জাভায় পাওয়া জীবাশ্মগুলোর নামই প্রকৃতপক্ষে হোমো ইরেক্টাস দেয়া উচিত। আর আফ্রিকার হোমো ইরেক্টাসেরা অন্য কোন নাম পেতে পারে। বর্তমানে ইউরোপে প্রাপ্ত প্রাচীনতম মানব জীবাশ্মের বয়স ০.৫ মিলিয়ন (৫ লক্ষ) বছর। অবশ্য অনেকে এর চেয়ে প্রাচীন জীবাশ্ম প্রাপ্তির দাবী করেন। প্রতিষ্ঠিত দাবী মেনে নিলে বলতে হয়, এশিয়ায় উপনিবেশ স্থাপনের পর ইউরোপে উপনিবেশ স্থাপন তেমন কঠিন ছিল না। কারণ, ইউরোপ ও এশিয়ার মধ্যে কোন বিশাল বাঁধা নেই। দুই ভূমিকে তাই একত্রে ইউরেশিয়া বলা হয়।

এসব আলোচনা থেকে একটি ইস্যু উঠে আসে, এই বইয়ের পুরোটা জুড়ে যে ইস্যু ভূমিকা রাখবে। ইস্যুটি হচ্ছে, যখনই কেউ "আদিমতম এক্স" আবিষ্কারের দাবী করেছেন তখনই অন্য বিজ্ঞানীরা এর চেয়েও প্রাচীন এক্স আবিষ্কারের মাধ্যমে এই দাবীকে ভুল প্রমাণ করাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছেন। এখানে এক্স বলতে ইউরোপের প্রাচীনতম মানব জীবাশ্ম, মেক্সিকোর প্রাচীনতম গৃহে উৎপাদিত শস্য কিংবা অন্য যেকোন স্থানের প্রাচীন যেকোন কিছুকে বোঝাতে পারে। বাস্তবে কিন্তু এমন কোন প্রাচীনতম এক্স অবশ্যই থাকার কথা যা অন্য সব দাবীকে খণ্ডন করতে পারবে। কিন্তু আমরা পরবর্তীতে দেখব, প্রতি বছরই প্রাচীনতম এক্সকে ভুল প্রমাণের দাবী নিয়ে অসংখ্য নতুন নতুন আবিষ্কারের উদ্ভব ঘটে। এই আবিষ্কারগুলো পূর্বেকার সব দাবীকে মিথ্যা প্রমাণের চেষ্টা করে। তাই এমন জটিল প্রশ্নের সমাধান করতে জীবাশ্মবিদদের প্রায় এক যুগের মত সময় লেগে যায়, এর পরই তারা কোন সাধারণ সিদ্ধান্তে পৌঁছুতে সক্ষম হন।

পরের পর্বগুলো: ২য়, ৩য়, ৪র্থ, ৫ম এবং ৬ষ্ঠ


মন্তব্য

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

অনুবাদ ভাল হইসে। চলুক। পারলে আরো কিছু চ্যাপ্টার অনুবাদে হাত দাও।
_______________
বোকা মানুষ মন খারাপ

শিক্ষানবিস এর ছবি

থ্যাঙ্কু।
হ্যা, আরও কিছু অধ্যায় অনুবাদের ইচ্ছা আছে। দেখি পারি কি-না।

পরিবর্তনশীল এর ছবি

অনুবাদ খুব ভালা হইছে।

আমার একটা পেরাইভেট প্রশ্ন ছিল।
হোমো ইরেক্টাসরা বাংলাদেশে কবে আসছিল?
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল

শিক্ষানবিস এর ছবি

অতি গুরুত্বপূর্ণ একটা প্রশ্ন করছস। বাংলাদেশে প্রথম মানুষ কবে আসলো এইটা জানা দরকার। কিন্তু আমি এই প্রশ্নের উত্তর জানি না।
যতদূর মনে হয়, হোমো ইরেক্টাসরা বাংলাদেশে আসে নাই। তাদের বংশধরেরা আইছিলো। তবে আসল কাহিনী খুজতাছি। পাইলে জানামু।

হিমু এর ছবি

এটার জন্যে যে বইটা পড়তে হবে, সেটার নাম দ্য অ্যানসেস্টরস টেল, রিচার্ড ডকিন্সের লেখা।

একটা ওয়েবসাইট আছে, মানুষের জিনের ভৌগলিক প্রবাহের ম্যাপিং সহ, কিন্তু ঠিকানাটা ভুলে গেছি। খুঁজে পেলে জানাবো।


হাঁটুপানির জলদস্যু

শিক্ষানবিস এর ছবি

ওয়েবসাইটটা খুব কাজে দেবে। পেলে জানায়েন।

শিক্ষানবিস এর ছবি

তোর প্রশ্নের একটা সম্ভাব্য উত্তর পাইছি।
ইংরেজি উইকিপিডিয়ার "History of Bangladesh" নিবন্ধে প্রোটো-অস্ট্রালয়েডদেরকে বঙ্গে উপনিবেশ স্থাপনকারী প্রথম জাতি বলা হচ্ছে। এরা ১০০,০০০ বছর আগে আফ্রিকা থেকে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছিল। লোহিত সাগর পেরিয়ে পূর্ব দিকে তাদের বিস্তৃতি চলতে থাকে। দক্ষিণ এশিয়া ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া হয়ে তারা অস্ট্রেলিয়ায় চলে যায়। অস্ট্রেলীয় আদিবাসীরা প্রোটো-অস্ট্রালয়েড।
যাওয়ার পথে সম্ভবত তাদের অনেকেই দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন স্থানে থেকে গিয়েছিল। সে সময় কারও পক্ষে তৎকালীন বঙ্গীয় অঞ্চলে থেকে যাওয়াটা অস্বাভাবিক না। অবশ্য সে সময় বর্তমান বাংলাদেশের অনেকটাই বঙ্গোপসাগরের নিচে ছিল। ময়মনসিংহের ইতিহাস বইয়ে পড়েছিলাম,
মহাভারতের যুগেও (আনুমানিক ৪,০০০ বছর আগে) বঙ্গদেশের ৩/৪ অংশ লৌহিত্য সাগরে (ব্রহ্মপুত্র নদ) নিমজ্জিত ছিল। গঙ্গা ও ব্রহ্মপুত্রের কাঁদা থেকেই আসলে বাংলাদেশের জন্ম।

হোমো ইরেক্টাসরা ১০ লক্ষ বছর আগে আফ্রিকা ছেড়ে বাইরে যাওয়া শুরু করছিল। আর বাংলাদেশের দিকে মানুষের নজর আসছে এই ১০০,০০০ বছর আগে। ১০০,০০০ বছর আগে বঙ্গদেশে প্রোটো-অস্ট্রালয়েডদের থাকার প্রমাণ পাওয়া গেলে আমরা বাংলাদেশের প্রাক-ইতিহাস নিয়ে আরও অনেক কিছু জানতে পারি। অবশ্য এক্ষেত্রে ভারতীয় উপমহাদেশের ইতিহাস একসাথেই আলোনা করতে হয়।

রণদীপম বসু এর ছবি

চলুক।

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

শিক্ষানবিস এর ছবি
পথে হারানো মেয়ে এর ছবি

অনুবাদ ভালো হয়েছে। একটা কঠিন বিষয় অনেক সুন্দর করে উপস্থাপন করেছেন। আরো পড়ার অপেক্ষায় আছি।

শিক্ষানবিস এর ছবি

কাউকে আমার অনুবাদের অপেক্ষায় রাখতে পেরেছি জেনে ধন্য হলাম।

মুজিব মেহদী এর ছবি

আমাদের উদ্ভব হয়েছে ৭ মিলিয়ন বছর পূর্বে। এর পর ৫-৬ মিলিয়ন বছর ধরে আমাদের বিবর্তনের পুরোটাই হয়েছে আফ্রিকাতে। সে সময় আফ্রিকার বাইরে মানুষ বা তার আদি পুরুষদের কোন অস্তিত্বই ছিল না। মানুষের প্রথম যে পূর্বপুরুষ আফ্রিকা ছেড়ে বাইরের জগতে পা দিয়েছিল তারা হল হোমো ইরেক্টাস।

কী সাংঘাতিক! অথচ কিনা সভ্যতার বিকাশ ঘটল আগে আফ্রিকার বাইরে! এরকম হতে হলো কেন?
................................................................
তোমার হাতে রয়েছি যেটুকু আমি, আমার পকেটে আমি আছি যতটা, একদিন মনে হবে এটুকুই আমি, বাকি কিছু আমি নই আমার করুণ ছায়া

... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ...
কচুরিপানার নিচে জেগে থাকে ক্রন্দনশীলা সব নদী

শিক্ষানবিস এর ছবি

আসলেই সাংঘাতিক। এই সাংঘাতিক ঘটনার ব্যাখ্যা করতে গিয়েই ডায়মন্ড তার বইটা লিখলেন। প্রথম অধ্যায়েই এর কিছুটা ব্যাখ্যা জানা গেছে। পুরো বইটা পড়লে অনেক কিছুই পরিষ্কার হয়ে যায়।
সংক্ষেপে বলতে গেলে, মানুষ সময়ে সময়ে যেখানে গিয়েছে সেখানকার পরিবেশ ও জলবায়ুই তার ভবিষ্যৎ নির্ধারণে অনেক ভূমিকা রেখেছে। এক্ষেত্রে মানুষের বুদ্ধি কম-বেশীর কোন সম্পর্ক নেই। আরেকটা বিষয় হচ্ছে: এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যাওয়ার পর মানুষকে একেবারে প্রথম থেকে সভ্যতা শুরু করতে হয়নি। পূর্বপুরুষের প্রযুক্তির পর থেকেই তারা শুরু করতে পেরেছে। তাই আমার মনে হয়, পৃথিবীর প্রতিটা অঞ্চলের মানুষই তারা যেখান থেকে এসেছে সেখানকার আদিপুরুষদের কাছে ঋণী। তাই আদি আফ্রিকানদের কাছে আমরা সবাই ঋণী।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।