বাংলাদেশ এখনঃ শাসনসংকট ও জাতির মনোভাব - একটি গবেষণা প্রচেষ্টা

শোহেইল মতাহির চৌধুরী এর ছবি
লিখেছেন শোহেইল মতাহির চৌধুরী (তারিখ: বুধ, ০১/০৮/২০০৭ - ৮:১৮অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

(চার ধাপের একটি গবেষণা প্রচেষ্টার প্রথম ধাপ। আপনাদের মতামত জরুরি। তরুণ দেশপ্রেমিকদের অংশগ্রহণে একটা যথার্থ বিশ্লেষণ দাঁড় করানো গেলে পূর্ণাঙ্গ লেখাটি কোনো জাতীয় দৈনিকে প্রকাশের উদ্যোগ নেয়া হবে।)

ভূমিকা:

জাতির মন কীভাবে বুঝা যায়? রাজনৈতিক দলের নেতারা মাঠের বক্তৃতায় এরকম একটা ধারণা দেন যে জাতির নাড়ির স্পন্দন তাদের আঙুলের ডগায়। এসব বক্তৃতায় যাদের আস্থা নেই তারা মনে করেন নিজের মতকেই জাতির মত হিসেবে চালিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেন রাজনৈতিক নেতারা। সমাজবিজ্ঞানীরাও তত্ত্ব-উপাত্তের পরিসংখ্যান সাজিয়ে নানা মাপজোঁক করেন। তবে এর বেশিরভাগই তারা করেন ঘটনা ঘটার অনেক পরে। অর্থাত্ রোগী মারা যাওয়ার পরই মঞ্চে আবির্ভাব ঘটে ডাক্তারের। ভবিষ্যতের গতি-প্রকৃতি বুঝা যায় এরকম একটা সামাজিক জ্যোতিষশাস্ত্রের অভাব এক্ষেত্রে আমরা বোধ করতে পারি, যা ব্যথা সারাতে না পারলেও মলমের কাজ করতে পারতো। কিন্তু ঠাট্টার কথা বাদ দিলেও, স্বীকার করতে হয় জাতির মন বুঝতে নানা অনুমানের হাত ধরা ছাড়া উপায় নাই। যদি কোনো যাদু-পদ্ধতিতে জানতে পারতাম জাতির মনোভাব তবে কি সহজেই না আমরা বলতে পারতাম জাতি এখন কী চায়।

এক লাইনের প্রশ্ন আর তিনটা মালটিপল চয়েস দিয়ে দৈনিক পত্রিকারা হরদম অপিনিয়ন পল চালায়। কিন্তু এরকম জনমত যাচাই করে শাসনতন্ত্রের সংকটের মত বিশাল বিষয়ে জনগণের মনোভাব বুঝা প্রায় অসম্ভব। বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে একটা অনিবার্য প্রশ্ন হলো, কী ভাবছে জাতি - বর্তমান শাসন-সংকটে? এই সাধারণ প্রশ্নটাও পক্ষপাত দুষ্ট হয়ে যায়, কারণ পাল্টা একটা প্রশ্ন তোলা যায়, আদৌ কি এটা কোনো সংকট জাতির কাছে?

অনেকেই প্রায়ই ইঙ্গিত করেন যে, রাজনীতি নিয়ে জাতির কোনো মাথাব্যথা নেই। সমস্যা ও সংকটে জাতির আপাত: নিষ্ক্রিয়তায় অভিমান করে আমরা জাতিত্বেই দোষারোপ করি। জাতি হিসেবে বাঙালির বিবেক-বুদ্ধি-আবেগ-স্মৃতি গতি-প্রকৃতি নিয়ে নানারকম ঠাট্টা করে বাঙালি নিজেই। প্রয়াত হুমায়ুন আজাদ বলেছিলেন বাঙালির চুয়াত্তরের বিবেক সাতাত্তরে এসে সেনাশাসনের পক্ষে তালি বাজায় । হুমায়ূন আহমেদ বলেছেন, বাঙালির স্মৃতিশক্তি গোল্ড ফিশের মতই খুবই ক্ষণস্থায়ী। ‘কী চাইলাম আর কী পাইলাম’- এর হিসাবে সে গড়মিল লাগায় যেকোনো সময়। দেশের বর্তমান পরিস্থিতিকে ব্যাখ্যা করতে গেলে তাই আগে স্মরণ করা দরকার আমরা কোথায় দাঁড়িয়ে ছিলাম।

প্রেক্ষাপট:

নব্বইয়ের এরশাদ সরকারের পতনের পর নতুন করে গণতন্ত্র পাওয়া বাংলাদেশ দেখেছে তিন-তিনটি সংসদীয় গণতন্ত্রের সরকার। ক্ষমতার অদল-বদলও হয়েছে নির্বাচনের মাধ্যমে। প্রত্যক্ষ ও অপ্রত্যক্ষ সামরিক শাসনের পর গণতন্ত্রের পথে এই পথচলাটা আবার একটা সুবাতাস এনেছিল রাষ্ট্রের জীবনে। তবে শাসনব্যবস্থার সব ক্ষেত্রে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা পায়নি, নির্বাচন বা সংসদীয় কার্যক্রম ত্রুটি বা বাধামুক্ত ছিল না, রাজনৈতিক দলগুলোর আচরণ দায়িত্বশীল ছিল না। তারপরও বোদ্ধা মহলে আশা ছিল ধীরে ধীরে দেশে গণতন্ত্র শিশু রূপ থেকে প্রাপ্তবয়স্কতা পাবে যথাসময়েই। ২০০৬ সালে সর্বশেষ ক্ষমতাবদলের সময় এসে দেশের গণতন্ত্র নতুন সংকটে পড়ে।

কোনো দলীয় সরকারকে ক্ষমতায় রেখে নির্বাচন আয়োজন করতে দিলে সে নির্বাচন অবাধ হয় না, এই ধারণা জাতি প্রতিষ্ঠা করেছে তার ১৯৯০ এর প্রতিরোধেই। সংবিধান সংশোধন করে তাই এসেছে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ধারণা। কিন্তু বিরোধী দল দাবী তুলে যে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ধারা-উপধারার নানা ফাঁকফোকর খুঁজে বের করে চার দলীয় জোট সরকার ক্ষমতা আঁকড়ে রাখার নতুন কৌশল তৈরি করেছে। বিচারপতিদের বয়স বাড়িয়ে নিজেদের পছন্দের লোককে তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধান বানানোর পরিকল্পনা, নির্বাচন কমিশনার পদে বিতর্কিত লোক নিয়োগ, প্রশাসনকে নিজের পক্ষের লোক দিয়ে সাজানো, ইত্যাদি যুক্তি দেখায় বিরোধী দল তাদের দাবীর পক্ষে। কিন্তু বিরোধী দলের এসব দাবীকে অগ্রাহ্য করে সরকারী দল তাদের পরিকল্পনা বহাল রাখে। এরই এক পর্যায়ে রাষ্ট্রপতি একইসাথে তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধানও হয়ে যান। বিরোধী দল রাষ্ট্রপতির এই পদগ্রহণকে সাংবিধানিক ক্যু হিসেবে চিহ্নিত করলেও পরিস্থিতি মেনে নেন। কিন্তু যখন বাকী উপদেষ্টাদের সাথে পরামর্শ না করে রাষ্ট্রপতি তার দলের সমর্থনে একের পর এক সিদ্ধান্ত নিতে থাকেন তখন চারজন নির্দলীয় উপদেষ্টার পদত্যাগের মাধ্যমে বিরোধীদলের দাবীর বাস্তবতাই প্রতিধ্বনিত হয়। নতুন নিয়োগ দিয়ে রাষ্ট্রপতি এটা সামাল দিলেও দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির বিশেষ উন্নতি ঘটে না।

নির্বাচনের সময় ঘনিয়ে আসলেও নির্বাচন কমিশন সংস্কার ও অন্যান্য দাবীপূরণ না হওয়ায় নির্বাচনের প্রার্থিতাপত্র প্রত্যাহার করে নেয় বিরোধীজোটের রাজনীতিকরা। নির্বাচন হওয়াটা তখন ছিল একটা প্রহসন মঞ্চস্থ হওয়া মাত্র। সংবিধান ও শাসন-সংকটের এই টানাপোড়েনের মাঝে রাষ্ট্রপতিকে তার মূলপদে ফিরিয়ে দিয়ে ক্ষমতায় আবির্ভূত হয় দশ সদস্যের একটি সরকার। সংবিধান-অসমর্থিত হলেও একেও তত্ত্বাবধায়ক সরকার বলেই চিহ্নিত করা হয়। নানা সূ্ত্রের দাবী ও বাস্তব উদাহরণ এটাই প্রমাণ করে যে, নতুন এই সরকারের শক্তির খুঁটি হচ্ছে সেনাবাহিনী।

দেশে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে মৌলিক অধিকার স্থগিতের ঘোষণা দেয়া হয়। মিডিয়া সেই খড়গে পড়লেও একদিনের মাথায় তারা দেনদরবার করে শর্তসাপেক্ষে নিজেদের প্রকাশনা অব্যাহত রাখার সুযোগ পান। মিডিয়ার একটা অংশের প্রাথমিক সমর্থনও পায় এই সরকার। কিছু দলছুট রাজনৈতিক নেতা, এনজিও হর্তাকর্তা এবং কিছু অবসরপ্রাপ্ত উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা (বুদ্ধিজীবি বা সুশীল সমাজের ব্যানারে) বর্তমান সরকারের ক্ষমতাগ্রহণকে জায়েজ বলে ঘোষণা দেন। রক্তাক্ত সংঘর্ষ ও অর্থহীন নির্বাচন থেকে দেশ রক্ষা পাওয়ায় সাধারণ নাগরিকও স্বস্তির নি:শ্বাস ফেলেন।

কিন্তু সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার মধ্যে নির্দিষ্ট সময়ে নির্বাচনের দিকে যাওয়ার কোনো লক্ষণ দেখা যায় না নতুন সরকারের মধ্যে। জাতীয় সরকার গঠনের একটা গুজব শোনা যায়। নোবেল পাওয়া এনজিও কর্তার নেতৃত্বে রাজনৈতিক দল গঠিত হয়, কিন্তু সে দল যথার্থ জনসমর্থন পাবে না এরকম আশংকায় আঁতুড় ঘরেই মৃত্যুবরণ করে। বিকল্প রাজনৈতিক দল তৈরির ধারণার পর বা পাশাপাশি শোনা যায় মাইনাস-টু তত্ত্ব। প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের প্রধানকে বাদ দিয়ে রাজনৈতিক সংস্কারের একটা ধারণা হঠাত্ দল ও দলের বাইরে প্রবলভাবে আলোচিত হতে থাকে। এদিকে দুর্নীতির দায়ে প্রধানত: রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দকে আটক ও তাদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্তের ঘটনা ঘটতে থাকে। রাজনীতির ছাতার নীচে বিভিন্ন নেতাদের দুর্নীতির বয়ান দেখে সাধারণভাবে দেশবাসী আতংকিতই হয়ে উঠেন।

দুর্নীতি বিরোধী অভিযান বিপুল প্রশংসাও পায়। কিন্তু নির্বাচন অনুষ্ঠানে সময়ক্ষেপন, দুর্নীতিবাজদের ধরার ক্ষেত্রে দৈ্বতনীতি, রাজনৈতিক দলগুলোর বিষয়ে হস্তক্ষেপ, বিশেষ দলের নেতাদের প্রতি ছাড়, নানা রকম ষড়যন্ত্রের গুজব ইত্যাদি কারণে নতুন সরকারের প্রতি জনগণের উচ্ছাসে ভাটা পড়তে শুরু করেছে।

নির্বাচন কমিশন আগামী ২০০৮-এর মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা তৈরি করেছে। কিন্তু যা নিয়ে এত গন্ডগোল, সেই নির্ভুল ভোটার তালিকার বিষয়ে তাদের অগ্রগতি খুব ধীর। চারদলীয় জোট সরকারের নিয়োগ দেয়া বিতর্কিত নির্বাচন কর্মকর্তাদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণেও দেখা যাচ্ছে অহেতুক বিলম্ব। তাছাড়া পত্র-পত্রিকার ভাষ্যের অর্ধেকও যদি সত্য হয় তবে এরকম একটা ধারণা জনমনে আছে যে ২০০৮-এর পরেও যাতে মূল দুই রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় না আসতে পারে সেরকম একটা হিসাবের ছক কাটছে বর্তমান সরকার। কোনো সন্দেহ নাই এ অত্যন্ত গুরুতর ষড়যন্ত্রের সন্দেহ।

নব্বই পরবর্তী সময়ে সৈ্বরশাসক ও সৈ্বরশাসনের সুবিধাভোগীরা যেমন ছিল ব্যাকফুটে এখন দেশে গণতন্ত্র আনা দলগুলোর নেতা-নেত্রীদেরও একই অবস্থা। দুর্নীতিতে চারবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশে এখন রাজনীতিই দুর্নীতির সমার্থক। দেশে জরুরি অবস্থা অনেক আগেই অতিক্রম করেছে সংবিধানের সময়সীমা। অস্বাভাবিক এই পরিস্থিতি আর অপ্রতিনিধিত্বশীল একটি সরকারের হাতে শাসনভার থাকায় অনুমান করা দুরুহ নয় যে সবচে বিপদের মুখে আছে গণতন্ত্র । দেশ ও জাতির জন্য এ এক ঘোর সংকটের সময়।

এই ক্রান্তিকালে যখন মৌলিক অধিকার স্থগিত তখন প্রথমেই যে প্রশ্নটি তুলতে হয় তা হলো, কেমন আছে দেশ ও দেশের জনগণ? এই নবতর সংকটে কী ভাবছেন জনগণ, কীভাবে তারা দেখছেন এই পটপরিবর্তনকে, কীভাবে মূল্যায়ন করছেন তারা অতীত-বর্তমান আর কেমন ভবিষ্যতের স্বপ্ন বা আতংক দেখছেন তারা। নি:সন্দেহে জটিল ও দুরুহ প্রশ্ন এগুলো। কিন্তু যত জটিল শোনাক এসব প্রশ্ন, যত কঠিন হোক এসবের উত্তর সন্ধান, যত ভুলের আশংকা থাকুক ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণে; যথার্থ ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণ ছাড়া জাতি হিসেবে আমাদের এগিয়ে যাওয়ার অন্য কোনো উপায় নেই।

(আসুন এইসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে নিজেরাই বের হই। যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের নয়া প্রেসক্রিপশন আসার আগে আমাদের কিছুটা প্রস্তুতি তৈরি হোক।)

গবেষণার রূপরেখা:
তিনটি বিশেষ অবস্থা ও ধারণাকে বিশ্লেষণ ও ব্যাখ্যা করার পর ধাপে ধাপে আমরা সিদ্ধান্ত নেয়ার মত জায়গায় পৌঁছাতে পারি। দেশ পরিচালনা নিয়ে এখন যে ধারণা, ভাবনা-চিন্তার কথা বলা হচ্ছে এবং এসব ধারণার বিপরীত যেসব ধারণা বিরুদ্ধ যুক্তি হিসেবে উপস্থাপন করা হচ্ছে এই দুই ধারার ভাবনারই একটা তুলনামূলক বিশ্লেষণ করা যায়। করে দেখা যেতে পারে এই দুইপক্ষের ভাবনা থেকে বিভিন্ন সূত্র নিয়ে আমরা নতুন একটা সম্মিলিত ভাবনধারা তৈরি করতে পারি কিনা। তবে এই দুই ভাবনাধারা বিশ্লেষণের আগে আমাদেরকে শাসনকার্যের সংকটের রূপটাকে চিহ্নিত করতে হবে। অর্থাত্ সংকট সম্পর্কে জনগণের মনোভাবটাও বুঝা দরকার।

মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধ কী ছিলো তা নিয়ে আমরা এখনও কাদা ছোঁড়াছুঁড়ি করি। সুতরাং এগারো জানুয়ারির আগে দেশের প্রধান দুই রাজনৈতিক জোটের সংঘাতের মূলে কী সংকট ছিল তা স্পষ্ট করা দরকার। দেশ হিসেবে তখন আমরা কোথায় দাঁড়িয়ে ছিলাম এবং কোনদিকে যেতে চাইছিলাম।

ক্ষমতাসীন দল অবশ্যই ছিল স্ট্যাটাস-ক্যুর পক্ষে, যেরকম চলছে সেরকম চলুক। অন্যদিকে বিরোধীপক্ষের দাবীতে ছিল নানারকম পরিবর্তন,যেসব পরিবর্তন তাদের ভাষায় নির্বাচনের জন্য লেভেল-প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করবে।

বিরোধীপক্ষের দাবীর মধ্যে মূল তিনটি বিষয় ছিলোঃ
১. নির্বাচন অবাধ ও নিরপেক্ষ করতে নির্বাচন কমিশনকে ঢেলে সাজানো।
২. জাল ভোটার বাদ দিয়ে একটি সংশোধিত ভোটার তালিকা তৈরি করা।
৩. সরকার ও সরকারের সাথে সংশ্লিষ্ট নানা ব্যক্তিবর্গের দুর্নীতির বিচার শুরু করা।

(কিন্তু এই দাবীগুলোই তো আর সংকট নয়। কি কারনে ক্ষমতা হস্তান্তরে একটা গভীর সংকট ও অচলাবস্থা তৈরি হয়েছিল বলে আপনি মনে করেন? আপনার মনের কথা বা ধারণাটাই মন্তব্যে দিন। সেগুলো যোগ করলে হয়তো প্রথম পর্বের কাজটা শেষ হয়ে যাবে।)


মন্তব্য

শোহেইল মতাহির চৌধুরী এর ছবি

শুধু আমার কল্পনা দিয়ে তো আর জাতির ভাবনা আমি ধরতে পারবো না। আপনারা আওয়াজ দিন। প্রশ্ন খুবই সোজা। শেষ কী বিষয় নিয়ে ঝগড়া করছিলো দু পক্ষ। জাতি হিসেবে তখন কোন কোন সমস্যা আমাদের কাছে বড় ছিল?
-----------------------------------------------
সচল থাকুন ---- সচল রাখুন

-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না

সবজান্তা (অচল - বর্ত্মানে পাইপলাইনে) এর ছবি

শুকরিয়া, চমৎকার একটি বিশ্লেষণধর্মী লেখা। সত্যিকার অর্থে আমাদের সংকট এবং রাজনৈতিক শক্তির সংঘর্ষের কারন পুরোপুরি ভাবে এক নয়। আমাদের সংকট আপনি যা বলেছেন মূলত তাই ই। কিন্তু রাজনৈতিক দল মূলত আওয়ামী লীগ এর জন্য এর বাইরেও কিছু আলাদা গুরুত্ত ছিল। বাংলাদেশ এর দলগুলোর মধ্যে গঠণতন্ত্রে পার্থক্য থাকলেও, দেশ চালানর সময় তফাতটা কিন্তু আকাশ পাতাল ছিল না। এ হিসাব ২০০১ সাল পর্যন্ত। কিন্তু ২০০১ এ নিরংকুশ সংখ্যা গরিষ্ঠতা পেয়ে, বি এন পি যেই নজির স্থাপন করেছিল, তা আওয়ামী লীগ এর জন্য সুখকর ছিল না। বিশেষত নেতা কর্মী নির্যাতন। নিশ্চিত ভাবেই ২০০৬ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ পরাজিত হলে , তাদের অস্তিত হুমকির মুখে পড়ত। তাই, বিরোধী দলগুলোর জন্য প্রাণের মায়াও কোন অংশে কম ছিল না।

এছাড়া আপনার দাওয়া পয়েন্টের বাইরে আমি আরো যেটি যোগ করতে চাই, তা হচ্ছে , ঐ নির্বাচন হলে , তাতে বি এন পি জামাত জোট এ জিতত, ফলে জামাত এর প্রতিষ্ঠালাভ আরো মসৃণ হত, এবং দুর্নীতি শিকড় গভীরতম স্তরে প্রোথিত হত।

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

আশা করি এখানে ফেয়ার আলোচনা হবে এবং কেউ কাউকে কোন বিশেষ দল বা গোষ্ঠির (প্রচ্ছন্ন বা পরোক্ষ) সমর্থক হিসেবে ধরে নেবেন না।

শেষ কী বিষয় নিয়ে ঝগড়া করছিলো দু পক্ষ। জাতি হিসেবে তখন কোন কোন সমস্যা আমাদের কাছে বড় ছিল?

এর শেষের প্রশ্নটির উত্তরে আমার কাছে এখনো মনে হয় দুই দলের বিবাদটাই সবচেয়ে বড় একটা সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। অবস্থা যে পর্যায়ে ছিল তাতে দেশের সচেতন মানুষ (আমি সবার কথা বলছিনা, কারণ, আমার মতে, সাধারণ মানুষ রাজনীতির মারপ্যাঁচ এত বোঝে না। তারা সোজা সাপ্টা চিন্তা করে) মাত্রই বুঝতে পারছিল যে দেশ আসন্ন একটা সংঘাতময় পরিস্থিতির সম্মুখিন। ঝগড়ার বিষয়বস্তু কখনো সুস্পষ্ট আবার কখনো অস্পষ্ট ছিল। আওয়ামী লীগ সহ তাদের সমমনা দলগুলো প্রথম থেকেই কয়েকটা বিশেষ দাবী নিয়ে আন্দোলনে মেতেছিল। তা হল:

১. তত্তাবধায়ক সরকার প্রধান হিসেবে বিচারপতি (কি যেন নাম) ... এর পদত্যাগ,
২. প্রধান নি কমিশনার এম এ আজিজের পদত্যাগ এবং তাদের ভাষায় দলীয় সমর্থক অন্যান্য কমিশনারদের পদত্যাগ -- তথা একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন, এবং
৩. একটি সুষ্ঠু ভোটার তালিকা তৈরি যেখানে, তাদের ভাষায়, অসংখ্য জাল ভোটার ছিল।

অপরপক্ষে চারদলীয় জোট সরকারের কাছে এসব দাবী মেনে নেয়া মানে 'রাজনৈতিক পরাজয়' হিসেবে বিবেচিত হত বলে তারা ধরে নিয়েছিল। অন্তত আমার এটাই মনে হয়েছে।

এর পরে দুই পক্ষই কিছু কিছু ছাড় দিয়েছে বলে আমার মনে হয়েছে। তা যাই হোক আ.লীগের উদ্দেশ্য ছিল যে কোন ভাবেই হোক, তা আন্দোলন, বা দাবী আদায়ের মাধ্যমে জোট সরকারকে ব্যাকফুটে ঠেলে দেয়া। যাতে শহুরে মানুষের মধ্যে জোট বিরোধী মনোভাব জাগিয়ে ভোটের বাজারে সুবিধা নেয়া যায়।

অন্যদিকে জোট সরকার তাদের অতীত অভিজ্ঞতা থেকে আ.লীগের এই কৌশল সম্পর্কে বুঝতে পেরে কঠোর মনোভাব নেয়ে এবং (আ.লীগের ভাষায়, গণদাবী) উপেক্ষা করে। যার ফলে সংঘাত হয়ে পড়ে অনিবার্য। আর ফলশ্রুতিতে অরাজনৈতিক, জামানত বাজেয়াপ্তকৃত রাজনৈতিক নেতারা চলে আসে সামনের কাতারে।

এর পর কী হল তা সবাই জানে। সেনাবাহিনীর সহায়তায় (যদিও প্রথম দিকে তারা তা অস্বীকার করে এবং ডেইলী স্টার সম্পদাক মাহফুজ আনামের কমেন্টারিতে প্রথম উচ্চারিত হয় এটি একটি সামরিক বাহিনী সমর্থিত সরকার) নতুন সরকার ক্ষমতায় আসে। সাংবিধানিক ভাবে দৃশ্যত: এটি এখন অবৈধ একটি সরকার (৯০ দিনের বাধ্যবাধকতা পেরিয়ে গেছে)।

কিন্তু এটা আবারো প্রমানিত হয় যে মানুষ সংবিধানের জন্য নয়, সংবিধান মানুষের জন্য। যে কারণে বৈধ বা অবৈধ যাই হোক মানুষ এ সরকারকে স্বাগত জানায়। যদিও দেশের বাইরে থেকে শুধু পত্রিকা পড়ে দেশের অবস্থা বোঝা সম্ভব নয়, মানুষ এখনো এই সরকারকে সমর্থন করে বলেই মনে হয়। তবে কয়েকজন উপদেষ্টা বিশেষ করে মইনুল হোসেনের কিছু বাগাড়ম্বর এবং বাছবিচারহীন কথা বার্তায় কিছু কিছু গোষ্ঠি সরকারের উপর নাখোশ হন।

আগামী দিনে এই সরকার কতটা সফল হবে তা নিয়ে নিজে কিছুটা সন্দিহান। কারণ সময় পেরিয়ে যাচ্ছে, কাজের কাজ তেমন কিছুই হয়নি। করছি, করব বলে সময় কাটাচ্ছে বলে মনে হচ্ছে। তার উপর নিম্ন সারির কিছু নেতা দিয়ে পার্টি গঠনের পেছনে এই সরকার বা গোয়েন্দা বাহিনী মদদ দিচ্ছে বলে মাহফুজ আনামের কমেন্টারিতে পড়েছি। এই নিয়ে শেখ হাসিনাও অভিযোগ করেছেন। তদুপরি মানুষের মনে এখন একটা প্রশ্নের উদ্রেক করছে যে সংস্কারপন্থী উল্লখযোগ্য কারো বিরুদ্ধেই এ পর্যন্ত কোন অভিযোগ আনা হয়নি। যদিও তারা বলছে কাউকেই ছাড় দেয়া হবে না, তবুও তাদের কর্মকান্ত তা বলেনা বলেই মানুষ ভাবতে পারে।

অনেক লম্বা উত্তর হয়ে গেল। লাইনে ছিলাম কী না তা জানাবেন। আরো উত্তর পেলে আবার কিছু দেব।

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

প্রথমেই বলে নেই, বলাই রাজনীতি বুঝে না। রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে ভালো কোন ধারণাও নেই। ভাসা ভাসা শোনা কথা, খন্ডিত সংবাদের সংস্পর্শ ইত্যাদি থেকে আমার যে অভিজ্ঞতা তা শেয়ার করতে পারি।

জোট সরকার তাদের মেয়াদকাল শেষে নিজস্ব লোকজনকে নির্বাচনী গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ফিট করাটাই স্বাভাবিক আর সেটা নিয়ে লীগের বিরোধিতা করাও স্বাভাবিক।
....

(মন্তব্য অসম্পূর্ণ)

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

শোহেইল মতাহির চৌধুরী এর ছবি

ধন্যবাদ প্রকৃতিপ্রেমিক। অশেষ ধন্যবাদ। আলোচনাটা শুরু করার জন্য। একটা কথা কেউ কোনো দলের প্রচ্ছন্ন বা প্রত্যক্ষ সমর্থক হলেও বিশ্লেষণে কোনো অসুবিধা হওয়ার কথা না। কারণ নাগরিকদের মধ্যে দলের সমর্থক থাকে, এটাই বাস্তবতা।

প্রকৃতিপ্রেমিক আপনি তখনকার সমস্যাটাকে দেখছেন দুই দলের ঝগড়া হিসেবে।

আওয়ামী লীগ ও জোটের দাবী মেনে নেয়া বিএনপি ও জোটের জন্য ‘রাজনৈতিক পরাজয়' হত বলে তারা মনে করছিলো- এ মন্তব্য আপনি করেছেন।

পরের অংশটুকু এই পর্বে আমাদের কাজে লাগছে না। পরের পর্বে সেটুকু যোগ করতে পারেন।

তবে ধন্যবাদ এই উক্তিটি এখানে দেয়ার জন্য,
মানুষ সংবিধানের জন্য নয়, সংবিধান মানুষের জন্য।
পরের পর্বে এটা আসবে, বর্তমান সরকারের সমর্থনকারীদের ভাবনাধারা হিসেবে হিসেবে।

৥৥৥৥৥৥৥৥৥৥৥৥৥৥৥৥৥৥৥৥৥৥৥

এই পর্বে আমাদের মূল জিজ্ঞাস্য হচ্ছে জাতি হিসেবে আমরা গত ক্ষমতা পরিবর্তনের সময় কী সংকটের মুখোমুখি হয়েছিলাম। আমাদের রাজনৈতিক পরিমন্ডল কোন সমস্যাগুলোর সমাধানের বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারলে আমরা স্বাভাবিক একটা নির্বাচন দেখতে পারতাম।

বিরোধীপক্ষের প্রকাশ্য দাবী-দাওয়ার নেপথ্যে আর কি ছিল বলে মনে করেন? সরকার পক্ষই বা কেন সে দাবী পূরণ করতে চাচ্ছিলেন না?

-----------------------------------------------
সচল থাকুন ---- সচল রাখুন

-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না

শোহেইল মতাহির চৌধুরী এর ছবি

বলাই, এ পর্যন্ত আপনি যা বললেন তাকে আমরা দুই পক্ষের রাজনীতি বলেই ধরতে পারি। গণতন্ত্রে এরকম দাবী-পাল্টা দাবীই স্বাভাবিক।
আপনার অসম্পূর্ণ মন্তব্য সম্পূর্ণ করলে নিশ্চয়ই আমরা অন্য একটা দৃষ্টি ভঙ্গি পেয়ে যাবো।
-----------------------------------------------
সচল থাকুন ---- সচল রাখুন

-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না

শোহেইল মতাহির চৌধুরী এর ছবি

(সবজান্তা প্রথমে ধন্যবাদ, পাঠক হিসেবেই মন্তব্য করতে আপনি দ্বিধা করেননি। আপনিই কি দ্বিতীয় স্থানে মন্তব্য করেছিলেন? ছাঁকুনিতে আটকে থাকার পর ছাড়া পেয়েছেন ৬ নম্বরে এসে কিন্তু স্থান ২য়ই আছে? তা নাহলে, পরে মন্তব্য করে আগে উঠলো কি করে আপনার নাম।)

সবজান্তা, বিশ্লেষণ এখনও শুরুই হয়নি বলা যায়। বিশ্লেষণে আমরা জাতির আকাঙ্খা বুঝতে চেষ্টা করবো, যদি সবাই সাথে থাকেন। সেটা আসবে শেষ পর্বে। প্রথম পর্বে বুঝতে চাইছি জনগণের দৃষ্টিতে সমস্যাটা কী ছিল?

অর্থাৎ গণতন্ত্রের যাত্রাটা হঠাৎ থমকে গেল কেন?

দুই বিবদমান রাজনৈতিক জোটের দাবী ও পাল্টা দাবীর সমাধান কি প্রচলিত শাসন কাঠামোয় সম্ভব ছিল না?

আরেকটা কথা, এই বিশ্লেষণে কে, কোন পক্ষ, কোন দল এইরকম ভাবে বিবেচনা করার চেয়ে চিন্তাধারা, বা মতাদর্শ বা ধ্যানধারণাগুলোকেই চিহ্নিত করতে চাই আমরা।

আপনাদের মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে এই পর্বটিকে সংশোধিত করে নিবো।

এখন পর্যন্ত যা দাঁড়ালো তা হলো, ঐ সময় দুটো সংঘর্ষ সৃষ্টিকারী ধারণা নিয়ে দুই পক্ষ তখন এগুচ্ছিলো। এই যে দুটি বিপরীত ধারণা যার সমাধান দিতে ব্যর্থ হলো আমাদের রাজনৈতিক কাঠামো, আসুন সেই দুই বিপরীত ধ্যান-ধারণাকে চিহ্নিত করি। (আমি প্রথমে বা মূল লেখায় যাকে সমস্যা বা সংকট হিসেবে উল্লেখ করেছি।)

কেন ক্ষমতার স্বাভাবিক হস্তান্তর,নির্বাচন এতো অসম্ভব হয়ে উঠলো?
-----------------------------------------------
সচল থাকুন ---- সচল রাখুন

-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না

সবজান্তা (অচল - বর্ত্মানে পাইপলাইনে) এর ছবি

ধন্যবাদ,ব্যখ্যাধর্মী মন্তব্যের জন্য। আমি আশা করি বুঝতে পেরেছি আপনার মূল লক্ষ্য।

"এই যে দুটি বিপরীত ধারণা যার সমাধান দিতে ব্যর্থ হলো আমাদের রাজনৈতিক কাঠামো, আসুন সেই দুই বিপরীত ধ্যান-ধারণাকে চিহ্নিত করি।"

আমার চিন্তা চেতনাকে কেউ কোন দলের গন্ডীতে ফেলতে পারেন, কিন্তু আমি মূলত তাই বলছি, যা আমি বিশ্বাস করি।

আগেই বলেছি, আমার মতে, ১৯৯১-২০০১, এই ১০ বছরে দেশ পরিচালনাতে হয়ত তফাৎ ছিল, কিন্তু তা ১০-২০ নয়, বড়জোড় ১৫-২০। কিন্তু ২০০১ সালে বি এন পি জামাত জোট ক্ষমতায় আসার পর মূলত এমন এক শাসন ব্যবস্থার প্রবর্তন করল, যা এই দেশ সম্ভবত আগে দেখেনি। দুর্নীতির রোগ আগের থেকেই ছিল এ দেশে, কিন্তু তা যেন মহামারী হয়ে উঠল। সব স্তর থেকে ১০% কমিশন এর নমুনাও দেশ শুরু করল। জাতীয়তাবাদের ঘাড়ে বন্দুক রেখে গুলি শুরু করল মৌলবাদ। একদিকে প্রশাসন যন্ত্রে এক চেটিয়া,জাতীয়তাবাদী এবং জামাত এর আধিপত্য, অন্য দিকে লাগাম ছাড়া লুটপাট। যত বড় শোষক ই হোক, পতনের ভয় কার না আছে ! তাই , জোট সরকার ও বুঝতে পারল, পরবর্তীবার ক্ষমতায় আসতে না পারলে, আওয়ামী লীগকে চিরতরে নিশ্চিহ্ন না করতে পারলে, তারা ও ঘোরতর বিপদ এ পড়বে। তাই, যেন তেন প্রকারেণ, একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকার বসিয়ে, কার্যসিদ্ধি করতে চেয়েছিল।

প্রকারন্তরে, আওয়ামী লীগের গঠণতন্ত্রে, যত আদর্শের কথাই বলা থাকুক, দীর্ঘ দিন ক্ষমতার বাইরে থাকার কারনেই হোক, আর নেতা কর্মীদের উপর ক্রমাগত নির্যাতন এর কারনেই হোক, তারা সেই আদর্শ থেকে দূরে সরে যাচ্ছিল ক্রমশই। পাকিস্থানপন্থী সালমান এফ রহমানকে , কিংবা ভুঁইফোড় কোন ব্যবসায়ীকে কাছে টানতে তাদের তাই কোন বিবেক এ বাধেঁনি।

আওয়ামী লীগ যদি সত্যি ই আন্দোলন চাইত, তখন হয়ত হিসাব আলাদা হত। কিন্তু চাটুকার, পাকিস্থানপন্থী, নব্য সুবিধাভোগী ব্যবসায়ীশ্রেনী কখনই হাসিনাকে সেই পথে হাটতে দেয়নি। যখনি কোন আন্দোলন দানা বেঁধে উঠেছে, তখনি অদৃশ্য কোন সুতার টানে তা থমকে গিয়েছে। ফলাফল যা হবার তাই হয়েছে, ফসল উঠেনি কারও ঘরেই। উলটো "নেপোয় মেরেছে দই !"। আওয়ামী লীগ যদি দর কশাকশির রাজনীতি তে না জড়িয়ে, সত্যিকার এর আন্দলন করত, তা হলে নিশ্চিত ভাবেই এ দিনের উদ্ভব হত না।

তাই আমার দৃষ্টিতে এক দিকে চার দলীয় জোট এর সর্বগ্রাসী ক্ষুধা আর অন্য দিকে আওয়ামী লীগ এর আদর্শবর্জিত আপসকামী ফায়েদা লোটার রাজনীতি। এই দুয়ের সংঘাতেই, উদ্ভব ১/১১ এর, প্রকারন্তরে যা জলপাই গনতন্ত্র নামেই পরিচিত।

হাসান মোরশেদ এর ছবি

আমরা যদি একটু পিছনে ফিরে,অক্টোবর '০৬ থেকে জানুয়ারী '০৭ সময়টাকে মেমোরী ফ্ল্যাশব্যাক করাই তাহলে বেশ কিছু অভুতপুর্ব ঘটনা দেখতে পাই ।

১। ভোটার তালিকার ব্যাপারে আদালতের রায় মানা হয়নি । ভুলে না যাওয়া ভালো যে,বেছে বেছে সংখ্যালঘু ও বিরোধীদলের সমর্থকদের ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেয়া হয়েছে, অপরদিকে রোহিংগা শরনার্থীদের ভোটার করা হয়েছে,স্পষ্টতঃই এই ভোটগুলো সরকারী জোটের বাক্সে জমা হতো ।এই সব ঘটনা সচিত্র প্রকাশিত হয়েছে পত্রিকায় । তার আগে থানা ও জেলা পর্যায়ের নির্বাচনী কর্মকর্তা নিয়োগ দেয়া হয়েছে দলীয় ক্যাডারদের । তারো আগে পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ পেয়েছে দলীয় লোকজন । এই পুলিশ কর্মকর্তারা নির্বাচনের সময় নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করতো,আর নির্বাচনী কর্মকর্তারা প্রিসাইডিং অফিসার হতো ।এভাবে একেবারে রুট লেভেলে জোট সরকারের বিজয় নিশ্চিত সরকার ব্যবস্থা করা হয়েছিলো ।

২। আরো মনে রাখা জরুরী ,বেগম জিয়া ও তার দল তত্বাবধায়ক মডেলকে প্রথম থেকেই মেনে নেয় নি । এই মডেলকে গ্রহনযোগ্য করাতে ও আন্দোলন সংগ্রাম করতে হ্যেছিল ।
এবার দেখা গেলো, সেই তত্বাবধায়ক মডেলকে ধ্বংস করে দেয়া হচ্ছে । একই ব্যক্তি রাষ্ট্রপতি ও তত্বাবধায়ক প্রধান, এটা কোনোভাবেই মুল মডেলের সাথে যায়না । এ ছাড়া দেখা গেলো বিগত সময়গুলোতে উপদেষ্টা হিসাবে যারা নিয়োগ পেয়েছিলেন,তাদের জাতীয়ভাবে যে গ্রহনযোগ্যতা ছিলো এবারের উপদেষ্টাদের তার কিছুই ছিলোনা ।
ইয়াজুদ্দিন ও আজিজ গংয়ের ভাঁড়ামোতে বিরক্ত হয়ে চারজন উপদেষ্টা পদত্যাগ করার পর সংকট আরো ঘনীভুত হলো । নতুন উপদেষ্টা নেয়া হলো আরো সাংঘাতিক রকম দলীয় লোককে ।

এরকম একটা পরিস্থিতিতে, পরাজয় নিশ্চিত জেনে আওয়ামী লীগের মতো দলের নির্বাচনে যাওয়ার কোনো সুযোগ ছিলোনা ।
দুর্ভাগ্যজনক ভাবে সত্য ,সংঘাতের রাজনীতি বাংলাদেশে নতুন কিছু নয় । বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জন্মই রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে । শেখ হাসিনার ক্ষমতা হস্তান্তর ছাড়া আর কোনো পালাবদল স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় ঘটেনি (খালেদা জিয়ার ১৫ ফেব্রুয়ারী নির্বাচন মনে রাখতে হবে) ।
ক্ষমতায় যারা থাকেন,স্বভাবতইঃ রাষ্ট্রযন্ত্রের সবটুকু শক্তি ব্যবহারের সুযোগ তাদের থাকে । এই সুযোগে ব্যবহার করে তারা যখন ক্ষমতা চিরস্থায়ী করে ফেলতে চান,তখন বিরোধী দলগুলোর সংঘাতে জড়িয়ে পড়ার কোনো বিকল্প থাকেনা ।
তাই এরকম পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার জন্য আমি ক্ষমতাসীন দল ও বিরোধীদল দু পক্ষকে সমান দায়ী করতে পারিনা । করাটা যৌক্তিক নয় ।

বর্তমানে যারা ক্ষমতায় আছেন,তারা ও যদি একই রকম ভাবে রাষ্ট্রযন্ত্রের শক্তি প্রয়োগ করে টিকে থাকতে চান,তাহলে সংঘর্ষ অনিবার্য । কারন সংঘর্ষ ছাড়া পালাবদলের কোনো সুযোগ তখন আর থাকবেনা ।
দুর্ভাগ্যজনক ভাবে,সেই লক্ষন ক্রমশঃস্পষ্ট হচ্ছে ।

-----------------------------------
'পড়ে রইলাম বিধির বামে,ভুল হলো মোর মুল সাধনে'

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

১. ক্ষমতা পরিবর্তনের সময় কী সংকটের মুখোমুখি হয়েছিলাম।

২. আমাদের রাজনৈতিক পরিমন্ডল কোন সমস্যাগুলোর সমাধানের বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারলে আমরা স্বাভাবিক একটা নির্বাচন দেখতে পারতাম।

৩. বিরোধীপক্ষের প্রকাশ্য দাবী-দাওয়ার নেপথ্যে আর কি ছিল বলে মনে করেন?

৪. সরকার পক্ষই বা কেন সে দাবী পূরণ করতে চাচ্ছিলেন না?

ধন্যবাদ আমাদের মত সাধারণ পাবলিককে সরাসরি প্রশ্ন তৈরী করে দেওয়ার জন্য। এতে উত্তর দিতে সুবিধা হবে।

মন্তব্য ২:
প্রথম প্রশ্নের উত্তর আমি দিচ্ছি না, কারণ সেটা সবাই কমবেশী জানি। আমার চেয়ে অন্য কেউ হয়তো গুছিয়ে বলতে পারবেন। বরং দ্বিতীয় প্রশ্নের বিষয়ে বললেই প্রথম প্রশ্নের উত্তর মিলবে।

রাজনীতিতে সহনশীলতা আমাদের রাজনীতিবিদদের মধ্যে একেবারেই নেই। আরো যেটা নেই তা হল দলের চেয়ে দেশ বড়- এই নীতির প্রতি বিশ্বাস। কেয়ারটেকার সরকারের প্রধান হিসেবে স্বাভাবিক প্রকৃয়ায় যাঁর হওয়ার কথা ছিল তা জোট সরকার পরিবর্তিত করেছে বিচারপতিদের অবসরে যাওয়ার বয়স বাড়িয়ে। একথা অবিশ্বাস্য যে এতে কোন হীন উদ্দেশ্য ছিলনা। আমাদের কৃষ্টি কালচার এবং রাজনীতিবিদদের আচরণে আমজনতা এটাই বুঝেছে যে, কে এম হাসান সাহেবকে টার্গেট করেই জোট সরকার বা মওদুদ আহমেদ সাহেব এই কাজ করেছেন। এই থেকে শুরু। আ.লীগের দাবী তাই সংগত। এর সাথে আ.লীগ জনাব হাসান এর সাথে বিএনপির সংশ্লিষ্টতার যে অভিযোগ তা একটা অজুহাত মাত্র। আমাদের দেশে কেউই নিরপেক্ষ নন। এধরনের পোস্টে দরকার নিরপেক্ষ থাকা।

দ্বিতীয়ত, এম এ আজিজ। যিনি নিজেই নানা কথা বার্তায় নিজেকে বিতর্কিত করেছেন এবং তা থেকে আমার ধারনা হয়েছিল তিনি হয়তো জোট সরকারের কর্মকান্ডে সহায়তা করবেন। এছাড়াও যথেষ্ট সন্দেহ ছিল অন্যান্য নির্বাচন কমিশনারদের নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালনের সদিচ্ছা নিয়ে।

তো, এগুলি যদি সমস্যা ধরি, তাহলে উদ্ভুত সংকটের সমাধান হতে পারতো এই সমস্যা সমাধানের মাধ্যমে। কিভাবে? সেটা আ. লিগের দাবী মেনে নিয়েই হোক, অথবা উভয়পক্ষের মতামতের ভিত্তিতে প্রধান উপদেষ্টা ও প্র. নি. কমিশনার নিয়োগের মাধ্যমে।

৩. বিরোধীপক্ষের প্রকাশ্য দাবী-দাওয়ার নেপথ্যে আর কি ছিল বলে মনে করেন?

আমার সামান্য ইকোনোমিক্সের জ্ঞানে এটা বুঝি পলিটিক্যাল পার্টি চায় জনগনের ওয়েলফেয়ার। কারণ, এর দ্বারা তারা ক্ষমতায় থাকতে চায়। কিন্তু আমাদের দেশে ইকোনোমিক্সের অন্য যেকোন থিউরির মত এই থিউরিও অচল। এখানে প্রধান উদ্দেশ্য ক্ষমতায় যাওয়া এবং নিজেদের ওয়েলফেয়ার করা। জনগন মুখ্য নয়। আ. লীগ অনেক সুগঠিত দল হয়েও এই চরিত্রের বাইরে তার ইমেজ তৈরি করতে পারেনি বলেই আমার ধারণা। ফলে ক্ষমতায় যাওয়াই ছিল আ. লীগের প্রধান উদ্দেশ্য- তা যে ভাবেই হোক। এক্ষেত্রে ১৯৯৬ এর অভিজ্ঞতা তাদের অনুপ্রেরণা দিয়েছে হয়তো।

পুর্ববর্তী একজন ইতোমধ্যেই বলেছেন আ. লীগ কেন ক্ষমতায় যেতে মরিয়া হয়েছিল। কারণ এটা তাদের অস্তিত্তের প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছিল। ফলে আ.লীগ চাইছিল জোট সরকারকে কোন ভাবেই আপাতদৃষ্টিতে ফাঁকা মাঠে গোল দিতে দেয়া যাবে না। ফাঁকা মাঠ বলতে বুঝাচ্ছি জোট সরকারের নিয়োজিত নি. কমিশনার, (তাদের ভাষায়) অনুগত তত্তাবধায়ক সরকার প্রধান, এবং পুলিশ সহ প্রশাসনের সহায়তায় সবাইকে অবাধ নির্বাচনের ভাওতা দিয়ে পুনরায় ক্ষমতা দখল।

আ. লীগ সম্ভবত বিশ্বাস করত তাদের দাবী মানাতে পারলে জনগনের ভোট তাদের পাল্লায় পড়বে। একটা কথা স্মরনীয় যে সেসময় আরো অনেক গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে আ.লীগ কোন আন্দোলন জমাতে পারেনি। যেমন দ্রব্যমূল্য, দূর্নীতি, বিদ্যুত সমস্যা। দূর্নীতির কথা মুখে বললেও সেটা নিয়ে আন্দোলনে যেতে কাউকে কোনদিন দেখিনি। চোরে চোরে মাসতুতো ভাই বলে একটা কথা আছে যা আমাদের রাজনীতিবিদদের বেলায় একেবারেই সত্যি।


৪. সরকার পক্ষই বা কেন সে দাবী পূরণ করতে চাচ্ছিলেন না?

কারণ তারাও ধারনা করেছিল আ.লীগের দাবী মেনে নেয়া মানেই তাদের 'সাজানো বাগান' তছনছ হয়ে যাওয়া। যা তাদের পুনরায় ক্ষমতায় যাওয়ার পথে একটা বিরাট সন্দেহের উদ্রেক করেছিল। তদুপরি যে ব্যাপারটা এখন ধীরে ধীরে আরো স্পষ্ট হচ্ছে সেটা হল জোট সরকারে বড় বড় নেতাদের প্রকাশ্য দুর্নীতি এমন পর্যায়ে গিয়েছিল যে তাঁরা হয়তো ভয়ে ছিলেন যদি আ. লীগ ক্ষমতায় আসে তাহলে তাদের ভাগ্যে কী হবে। এছাড়া আ. লীগের দাবী মেনে নিয়ে 'রাজনৈতিক পরাজয়ের' পাশাপাশি তাদের আরেকটা ভয় ছিল। সেটা হল, আ. লীগ যে ইস্যুগুলো প্রকৃত ইস্যু করে আন্দোলন করতে পারতো (যেমন বিদ্যুত, দ্রব্যমূল্য, দুর্নীতি) তাদের দাবী মানা হলে আ. লীগ নব উদ্যমে সেসব ইস্যু নিয়ে মানুষের সামনে হাজির হত। আর ভোটের আগে সেগুলো যে আ.লীগের পক্ষে জনমত গড়তে সহায়ক হত তাতে কোন সন্দেহ ছিলন। তাহলে দেখা যাচ্ছে আ. লীগ ছিল সবদিক থেকেই সুবিধাজনক অবস্থায়। তাদের হারাবার কিছুই ছিলনা। জোট সরকার সম্ভবত এটা আগে ভাগে আঁচ করতে পেরেই কঠোর কঠিন অবস্থান নেয়।

শোহেইল মতাহির চৌধুরী এর ছবি

সবজান্তা
হাসানমোরশেদ
প্রকৃতিপ্রেমিক (আবার)
--- আপনাদেরকে অনেক ধন্যবাদ।

সংকটের মূল রূপটা মনে হয় আপনাদের মন্তব্যে উঠে এসেছে। কিছু কি বাকী পড়লো?

তবে চারদলীয় জোটের মনোভাবনার পেছনের যুক্তিটা খুব শক্ত করে কারো মন্তব্যে আসেনি বলেই মনে হচ্ছে।

অন্য ব্লগে দিলে কি সেই মতগুলো আসতে পারে?

-----------------------------------------------
সচল থাকুন ---- সচল রাখুন

-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না

অপালা এর ছবি

আমি কম বুজা মানুষ,পত্রিকা পড়ে যা মনে হইছে তাই বলতে গেলে মূল সমস্যাকে দুই দলের জন্য জন্য দুই ভাগে দেখা যায়
১। চার দলীয় জোট:এর আবার দুই ভাগ
ক) বিএনপি: তাদের সমস্যা টা রাজনৈতিক পর্যয় থেকে দলীয় লাভ লোকশানের হিসাব পেড়িয়ে দলীয় ণেতাদের ব্যাক্তিগত লাভ লোকসানের হিসাবে চলে গিয়েছিল।
খ) জামাত: তারা এখন ও দলীয় লাভ লোকসানের হিসাব নিয়ে ই বেশী সময় কাটাচ্ছে।এটা ব্যক্তিগত পর্যায়ে যাওয়ার মতো অবস্থানে এখন ও যায় নাই।তাই তাদের ধান্ধা ছিল আরো কিছু সিট বেশী পাওয়া,প্রশাসনে তাদের দলীয় লোক ঢুকানোর ব্যবস্থা করা,যাতে পরবর্তি সময়ে তারা একক ভাবে নড়া চড়া করতে পারে।আর এর জন্য তারা ক্ষমতায় যেই থাকুক তার সাথেই থাকতে রাজি।সেই ক্ষেত্রে বি এন পি আবার ক্ষমতায় আসলে তাদের বেশী লাভ।আর এর জন্য যা যা করা দরকার সব কিছুতে তারা সায় দিয়েছে এবং বুদ্ধি পরামর্শ দিয়েছে।তখনকার সময়ের জামাতের কথা বার্তা শুনলে ই বুঝা যায়।তারা ধরে ি নিয়েছিল যেভাবে প্রশাসন ওরা সাজিয়েছে এতে করা অন্য কারো পক্ষে ক্ষমতায় আসা সম্ভব না।

২।আওয়ামিলীগ:এটা তাদের অস্তিত্টের সংকট।তারা দলকে টিকিয়ে রাখার জন্য ই শেষ পর্যায়ে এতো জোরালো আন্দোলন করতে পারছে। যখন ই বুঝছে যে না নির্বাচন হলে ওরা টিকে যাবে তখন ই আন্দোলনে ভাটা পরছে।আবার যখন চারদল স্ট্রেটেজি চেন্জ করেছে, আবার তারা আন্দোলন শুরু করেছে।তাদের দল টিকিয়ে রাখার জন্য হলেও এই আন্দোলন দরকার ছিল।তারা বুঝতে পারছিল, জামাত তদের জায়গা দখল করবে।

** বাকি দল গুলো **

শোহেইল মতাহির চৌধুরী এর ছবি

অপালা অশেষ ধন্যবাদ আপনাকে।
আপনি আরো কিছু ভিন্ন সূত্র সরবরাহ করেছেন।
আপনি সমস্যাটাকে দেখছেন বিবদমান পক্ষগুলোর ক্ষমতা দখলের কৌশলের উপজাত হিসেবে।
আপনি চারদলীয় জোটের মধ্যে আলাদা দুটো ধারা, টার্গেট, লক্ষ্য দেখতে পেয়েছেন। এটিও বেশ গুরুত্বপূর্ণ।

-----------------------------------------------
সচল থাকুন ---- সচল রাখুন

-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না

শোহেইল মতাহির চৌধুরী এর ছবি

আরো দুইদিন এ অবস্থায় এই পর্বটা রাখি। যদি আর কেউ মন্তব্য করেন।
তারপর নতুন পর্বে যাবো।

সবাইকে ধন্যবাদ। বাকী পর্বগুলোতেও আপনাদের অংশগ্রহণ আশা করছি।
-----------------------------------------------
সচল থাকুন ---- সচল রাখুন

-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।