জনগণের মতামত বুঝতে পীর-ফকিরের দরকার কী?

শোহেইল মতাহির চৌধুরী এর ছবি
লিখেছেন শোহেইল মতাহির চৌধুরী (তারিখ: শুক্র, ২৪/০৮/২০০৭ - ৭:২২অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

জনগণজনগণ
বিবিসির প্রভাতীতে শাকিল আনোয়ারের প্রশ্নের মুখে ড. কামাল হোসেন তোতলালেন কিছুক্ষণ। সবাই শুনেছেন নিশ্চয়ই। কেন তারা তোতলান? এই সরকার ক্ষমতায় আসার পর কামাল হোসেন আবির্ভূত হয়েছেন মুরুব্বি হিসেবে। দুদকের বিরুদ্ধে হাসিনার মামলায় হাইকোর্টের রায়ের পরপরই দেখা গেছে তাকে দৌড়ে দুদকে যেতে। কোরেশির দল গঠনের পর তার রোষও আমরা শুনেছি। দেশ চালাতে সামরিক জান্তাদের পীর-ফকির-মুরুব্বি লাগতে পারে। জনগণের তো তার দরকার নেই। এই বিষয়ে আমার প্রতিক্রিয়া, জ্বিনের বাদশার লেখায় মন্তব্য হিসেবে এসেছে এবং এখানে আলাদা করে পোস্ট দিচ্ছি।

আমাদের দেশ বাংলাদেশ - একে আমরা গণপ্রজাতন্ত্র হিসেবে দেখতে চাই। আমরা মানে দেশের জনগণ।

সেই চাওয়াকে আমরা লিখিতরূপ দিয়েছি সংবিধানে।
সংবিধান জনগণের আশা-আকাঙ্খার মূর্ত প্রতীক।

কিন্তু দেশে যখন সংবিধানের ধারাবাহিকতা অক্ষুণ্ন না রাখার মত পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে তখন কি হবে?
যখন জনপ্রতিনিধির হাতে আমরা ক্ষমতা তুলে দিতে পারবো না, তখন?

এর যে কয়টি রূপ হতে পারে, তত্ত্বাবধায়ক সরকার বা জরুরি অবস্থা। তারও একটা সীমারেখা জনগণ তার সংবিধানে করে রেখেছে। সে সীমারেখা ৯০ দিন। তিন মাস।

এই তিনমাস নতুন জনপ্রতিনিধি নির্বাচনের জন্য।
এরপর যদি সীমারেখা বদলানোর বা সংবিধান বদলানোর দরকার পড়ে তবে ফিরে আসতে হবে জনপ্রতিনিধিদের কাছে। সংসদে।
এই পদ্ধতিই আমাদের গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের।

ড. কামাল হোসেনের মত যারা এই সহজ বিষয়টা বুঝেও অন্যরকম ভাবভঙ্গি করে তোতলান (শুনুন আজকের বিবিসির প্রভাতী) তাদের ব্যক্তিগত এজেন্ডা আছে, নানারকম সোল এজেন্সির দায়বদ্ধতা আছে। তো তাদের এইসব দায়বদ্ধতার দায়িত্ব তো আমরা নিতে পারি না। আমরা দেশকে দেখবো সবার আগে এবং সেই দেখার ক্ষেত্রে জনগণের মতামত থাকবে প্রধান বিবেচ্য বিষয়।

জনগণের মতামত বুঝার জন্য কোনো পীর-ফকির ধরার তো দরকার নাই।


মন্তব্য

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

জনগণ রাজনীতির কি বুঝে? আজ একজন ফতোয়া দিলেন, জনগণ হচ্ছে বোকা (শব্দটা ভিন্ন, ব না ভ দিয়া শুরু)। জনগণকে শাসন করতে জনগণের কথার কি কোনো দরকার আছে?

আমার এই বিষয়ের পোস্টটা মনে হয় আয়তনের জন্য সবাই ভয় পেয়েছেন। জনগণের দুঃখ বুঝতে হলে জনগণের কাতারে গিয়ে দাঁড়াতে হবে। তখন বুঝা যাবে, জনগণ কেন সুশীল থাকতে পারে না, ভাঙচুর করতে হয়, মিছিল করতে হয়, বন্দুকের নলের সামনে বুক পেতে দিতে হয়।

পরগাছা বুদ্ধিজীবীদেরকে এসব করতে হয় না যে!

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

শোহেইল মতাহির চৌধুরী এর ছবি

বলাই ধন্যবাদ। ঐসব জনবিচ্ছিন্ন লোকদের বলবেন:

জনগণকে বুঝাটাই রাজনীতিবিদদের কাজ, রাজনীতির কাজ।
-----------------------------------------------
সচল থাকুন ---- সচল রাখুন

-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না

শোহেইল মতাহির চৌধুরী এর ছবি

এই পোস্টের কথা, এখানে ড. কামাল হোসেনের সমালোচনা আর সচলায়তনে ব্লগারদের মন্তব্যের সমালোচনা দেখলাম একটি ইংরেজি ব্লগের মন্তব্যে। একজন নামহীন মন্তব্যকারী কড়া ভাষায় এসবের সমালোচনা করেছেন।

সেই নামহীন মন্তব্যকারীকে বলি, ড. কামালকে নিয়ে নাচার মত কিছু নাই। যখন এই দেশকে দেয়ার মত সুযোগ ছিল তখন লেজুড়বৃত্তি করেই তারা সে সুযোগ হাতছাড়া করেছেন। এখন এই বয়সে তাদের বিভ্রান্তিকর সিদ্ধান্তের দায়ভার আরো কয়েক যুগ ধরে টানার দায় কেন নিতে চাইবে নতুন প্রজন্ম?
-----------------------------------------------
সচল থাকুন ---- সচল রাখুন

-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না

অমিত আহমেদ এর ছবি
শোহেইল মতাহির চৌধুরী এর ছবি

তাসনিম খলিলের ই-বাংলাদেশ পেইজে একজন মন্তব্যকারী মন্তব্য করেছেন।
-----------------------------------------------
সচল থাকুন ---- সচল রাখুন

-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না

??? এর ছবি

ডঃ কামালের বর্তমান নিরবতাকে ক্ষমা করা মুশকিল। তিনি রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হিসেবে পরিচিত হতে ভালবাসেন। বর্তমান সরকারের গোড়ার দিকে রীতিমত প্রতিদিন তার মুখনিঃসৃত আশ্বাসবাণী জাতির কর্ণকুহরে ঢুকেছে। এখন তিনি কোন্ নৈতিক বোঝাপড়াসমেত চুপচাপ থাকছেন, জানতে ইচ্ছা হয়।

................................
শুশুকের ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে সাঁতরে এসেছি কুমীরে-ভরা নদী!

মাসুদা ভাট্টি এর ছবি

ড. কামাল সব সময়ই "কামাল" করতে চান। ৭৪-এ ভুট্টোকে ঢাকায় ডেকে এনে ঢাকায় পাকিস্তানীদের নতুন করে পত্তনের সুযোগ দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বঙ্গবন্ধুকে ইসলামী সম্মেলনে যেতে চাপ প্রয়োগের পেছনেও তার হাত ছিল অনেক বড়। সুতরাং,নতুন আওয়ামী লীগ থেকে তাকে বেরুতেই হতো।
বিষয় সেটি নয়, তিনি ইচ্ছে করলেই পারতেন একটি নতুন, গণতান্ত্রিক, এবং বাঙালি মানসের প্রতিনিধিত্বমূলক রাজনৈতিক শিবিরের নেতৃত্ব দিতে। কিন্তু বাঙালি যে মানুষ চেনে তার প্রমাণ হচ্ছে, খালেকের কাছে তার নির্লজ্জ পরাজয়। আর ব্যাপারটি ড. সাহেব ঠিকই বোঝেন, তাই তিনি জনগণের বা জনমানসের ধার খুব একটা ধারেন না। তিনি চলেন বাংলাদেশের রাজনীতি ও রাষ্ট্র পরিচালনায় যাদের ভেস্টেড ইন্টারেস্ট রয়েছে তাদের নির্দেশে। যে কারণে তিনি কোনও দিন বা কখনওই বাঙালির প্রাণের দাবীটি ধরতে পারেন না বা ধরতে চান না।
সবচেয়ে দুঃখজনক হচ্ছে, তিনি চিতকার করে বলেন, দুর্নীতি দমনের কথা, অথচ তিনিই অতিরিক্ত অর্থ দিয়ে অপ্রদর্শিত অর্থকে সাদা করেন। ভেবে দেখুন। এর আগে বেগম জিয়ার আমলে তিনি তার আয় দেখিয়েছিলেন মাত্র লাখ খানেক - ভেবে দেখুন একবার।
আরও মজার ব্যাপার হচ্ছে, ক্ষমতায় যারাই আসুন না কেন, কি আর্মি, কি গণতান্ত্রিক লেবাসে মোল্লা-মিলিটারি এ্যালায়েন্স কোনও কালেই ড. কামাল খারাপ থাকেন না। আজকে ড. আনোয়ার হোসেন, হারুনুর রশীদ, ড. সাইদুর রহমানদের গভীর রাতে পাকিস্তানী কায়দায় ঘুম থেকে তুলে নিয়ে অজ্ঞাত স্থানে রেখে শারীরিক নির্যাতন চালানো হয়, চাইলেই তাদের জন্য রিমাণ্ড মঞ্জুর করে আদালত অথচ ড. কামাল হোসেন বার বারই তার "কামাল" দেখিয়ে যান। বাঙালির দুর্ভাগ্য, এর শেষ নেই হয়তো।

সুমন চৌধুরী এর ছবি

মন্তব্যে ৫
.......................................
ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ

অমিত আহমেদ এর ছবি

মন্তব্যে রেটিং করার ব্যবস্থা থাকলে কিন্তু মন্দ হয় না!


আমার বেলা যে যায় সাঁঝ-বেলাতে
তোমার সুরে সুরে সুর মেলাতে

হাসান মোরশেদ এর ছবি

'৮৬ নির্বাচনে আওয়ামীলীগ কে টেনে নেয়া- শোনা যায় এও কামাল ডাক্তারের বদান্যতা
-----------------------------------
'আমি ও অনন্তকাল এইখানে পরস্পর বিস্ময়ে বিঁধে আছি'

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

অমিত আহমেদ এর ছবি

উনি প্রেসিডেন্ট হবেন এমন একটা খবর পেলাম।


আমার বেলা যে যায় সাঁঝ-বেলাতে
তোমার সুরে সুরে সুর মেলাতে

সুমন চৌধুরী এর ছবি

তাই নাকি? যাক '৮১র স্বপ্ন '০৭ এ পুরণ হৈল
.......................................
ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ

শোহেইল মতাহির চৌধুরী এর ছবি

৮১ তে কামালের নির্বাচন মনে পড়ে। ওসমানীর মই মার্কা। কামালের নৌকা।
তবে ড. কামালকে প্রেসিডেন্ট বানানো একটা ভালো অপশন। রাষ্ট্র পরিচালনা সম্পর্কে যারা একদম কিছুই জানেন না তাদের চেয়ে কামাল উত্তম হবেন।
বোকা বন্ধুর চেয়ে বুদ্ধিমান শত্রুও ভালো।
-----------------------------------------------
সচল থাকুন ---- সচল রাখুন

-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না

সুমন চৌধুরী এর ছবি

হোলেও হতে পারে।
ড.কামাল হোসেন জ্ঞানীলোক নি:সন্দেহে। কিন্তু রাজনীতিতে মনে হয় আক্কেলের দরকার বেশী। এমনকি স্বৈরশাসক হতে গেলেও। খিয়াল কৈরা...
.......................................
ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ

অমিত এর ছবি

অ্যাঁ !!!

______ ____________________
suspended animation...

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।