হননপিয়াসী রাত (প্রথম পর্ব )

সুমন সুপান্থ এর ছবি
লিখেছেন সুমন সুপান্থ (তারিখ: মঙ্গল, ১০/১১/২০০৯ - ১০:৪৫অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

(মহান পাঠক,পড়ুন আপনার ধৈর্যের নামে,আপনার অপরিসীম ক্ষমার গুনে)

মধ্য পৌষের ভরা মধ্যরাতের হিম হিম নির্জনতা ভেঙ্গে দিয়ে মেজর রফিক উল্লাহ খানের সামরিক কায়দায় উচ্চারিত প্রশ্নটা আছড়ে পড়ে এদিক ওদিক। তখন ধাইসার গ্রামের সারা গতর জুড়ে ঘন শীত নামে। অথবা শীত তখন হয়তো মাঠ অব্দিই নেমে গেছে। কিন্তু কোথাও দাঁত কাঁপানির শব্দ শুনতে পাওয়া যায় না ! যদিও অল্প শীতেই কাতর কিছু শেয়াল একটা শোরগোল তোলে। এবং তোলে, যেন প্রশ্নটার একটা উত্তর দিতে চাইছে ___ এই রকম একটা দৃশ্য তখন পর্দায় ফ্রীজ হয়ে যায় ।

ফ্রীজ হয়েই থাকে, যতক্ষণ না রাজনগর থানার ওসি আব্দল মালেক বলে যে, ‘স্যার, আমার মনে হয় হালায় নেশা করছে। কেমন ঝিম মাইরা আছে দেহেন না! গাঁজা ভাঙ খাইছে মনে অয় কিছু... এট্টু বানাইলে কাম অইতো...।’ মেজর রফিক উল্লাহ খানের তাতে ভাবান্তর হয় কী-না বোঝা যায় না। তিনি শুধু বাক্যটাকে ভেঙ্গে শব্দগুলির অদল বদল করে, আবার প্রশ্ন করেন
- ‘কানকাটা হাবিব খুন হবার সময় তুই ঢাকায় ছিলি না?’
কিন্তু যার উদ্দেশে এই প্রশ্ন, সে তার মাথাটাকে বাঁ দিকেই ঝুলিয়ে রাখে আগের মতো। মুখের মানচিত্র যে কিঞ্চিত বদলিয়েছে, তাও না। শুধু ঠোঁটের বাঁ দিকে এক বিন্দু লালা উঁকি দিয়ে, বেরিয়ে আসবে কী-না, ভাবতে থাকে। আর তাতে পিতলের থালার মতো ভরা চাঁদ মেঘের ডান বগলে শুয়ে,তার তেসরা ছায়া পড়ে ঝিলিক দিয়ে ওঠে। তখন হয়তো ন্যাড়া মাঠের ওপর কুয়াশা পড়ে ঘন হয়ে। সবকিছু আবছা আবছা ঠেকে। আউট অব ফোকাসে এরকমই দ্যাখা যায় কিছুক্ষণ। তারপর ফোকাসে আবার মেজর রফিক উল্লাহ।

এবার তিনি চোখ ঘুরিয়ে সাব ইন্সপেক্টর মামুন জোয়ার্দারের উপর স্থির করেন, অথবা করতে বাধ্য হন; কেননা এই তরুণের মুখমণ্ডল জুড়ে তখন রাজ্যের প্রাপ্তি যোগ হয়ে ভিন্ন এক রঙ ধারণ করে আছে। দেশের শীর্ষস্থানীয় সন্ত্রাসী যে এই অজপাড়া গাঁয়ে ছদ্মবেশ নিয়ে বহুদিন ধরে লুকিয়ে আছে, এই তথ্য তো সে-ই প্রথম জানতে পারে। বলতে গেলে প্রায় তার প্রচেষ্টায়ই এই বিশেষ অভিযান। যা কী না পরিচালিত হচ্ছে অরণ্যের দুর্ধর্ষ এক প্রাণীর নামে। বিশ্বের দ্রুতগামী প্রাণী হিসেবে যারা নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করেছে বহু আগেই আর শার্দূলদের মধ্যে উচ্চবংশীয় এরাই কেবল গাছে চড়তে জানেন! যদিও এই অভিযানে কাউকে গাছে চড়ার কষ্ট করতে হয়নি। শিকার ধরা পড়ে গেছে তার আগেই! মামুন জোয়ার্দার নিশ্চিত, মরণ তাকে এখানে নিয়ে এসেছে। না হয় এতোগুলো খুনের মামলা মাথায় নিয়ে কেউ এতো নিশ্চিন্তে জোছনা বিহারে বের হয়! এখন আবার ভাব ধরে ঝিমায়। বুঝবে নে ঠেলা! এতো শেয়াল না রে মুরগি, চিতায় যখন ধরেছে তোমারে, কলজে সুদ্ধু খাবে নে ! আপাততঃ কলজে খাবার লোভ সামলে, মামুন জোয়ার্দার কথাগুলো গিলে ফেলে।

মেজর রফিক উল্লাহ এবার তার স্বর সপ্তমের একটু নিচে, পঞ্চমে কি, ষষ্টে তুলে নিয়ে গিয়ে জানতে চান- ‘তর বন্ধুরা কই?’
ধরা পড়া শিকার তখন ফোঁস করে একটা নিঃশ্বাস ছুঁড়ে দিলে অনতিদূরে দাঁড়ানো মেজরের মুখে ঈষৎ গরম আঁচ লাগে। সেই সঙ্গে তার চোখ দু’টো রক্তাভ হয়ে ওঠে, শিরাগুলো ফুলতে থাকে। তাতে তাকে মুহূর্তের জন্য হলেও খুব হিংস্র দেখায়। যা দেখে চিতাদের রাগ বাড়তে থাকে। কিন্তু মেজর রফিক উল্লাহ যখন; এখনও রেগে ওঠেননি, তাঁর আগে তাদের রেগে ওঠা সমুচিত হবে কি-না, এই নিয়ে তারা ধন্দে পড়ে যায়!
‘অস্ত্রগুলো কোথায়?’ ___ স্কোয়াডের কেউ একজন তবু আগ বাড়িয়েই জানতে চায়।
-‘খালের ও পাড়ে।’
-‘তোর সঙ্গীরা কোথায়’
-‘কদম হাটার দিকে।’

ধাইসার, বালিসহস্র, সোনাপুর, নোয়াগাঁওর লোকেরা, যারা প্রতিদিন জেলা শহরে যায়, অথবা জেলা শহর থেকে ফিরে, তারা বেশিরভাগই কদমহাটা বাস স্ট্যাণ্ডে নেমে পানি-উন্নয়ন বোর্ডের দেয়া বাঁধ ধরে হেঁটে যাওয়ার সময় দেখে যে; ধাইসার গ্রামের মৃত রজব আলীর বেআক্কেল মার্কা ছেলেটা শহরের মাস্তানদের মতো গলায় মাপলার পেঁচিয়ে, কটকটা সবুজ রঙা শার্টের সঙ্গে কালো জিন্স পরে, একটা মুরগি চড়ায়! মানুষ তো গরু-ছাগল চড়ায় ঘাসে, কিন্তু মুরগি কেন? -এই রকম প্রশ্ন যাদের মনে আসে তারা সঙ্গীদের জিজ্ঞস করে, অথবা করেও না; তার আগেই কেউ বলে দেয় যে, আরে ও! ও তো আমরার মিলন। বোকাচুদা, কানে টানেও হুনেনা ভালা করি। দীন্ দুনিয়ার খবরো নাই। আছে ওই এক মুরগি লইয়া।’ আর কেউ কেউ এরকমও বলে যে, এ হচ্ছে মিলন নামের ছেলেটার মৃত জনকের পাপের ফল। ‘সারা জীবন মানুষরে কম জ্বালাইছে নি !? আল্লা বেটা তাই এ জালিমরে আরউয়া ছাওয়াল দিয়া ভালা একখান শাস্তি দিছে!’

আছিরন বিবিরও এমন ধারণা। পঁয়ত্রিশ বচ্ছর আগে ভাটির মেয়ে যখন উজানে স্বামীর ঘর করতে আসে, তার কাছে তখন হারা দুনিয়াটাই কেমন আচানক ঠেকে! হাওড়ের পেটের মধ্যে তার ‘বাপের দেশ’। বচ্ছরের নয় মাসই থৈ থৈ পানি ঘিরে রাখে চারদিক। বাকি যে তিন মাস; তখনও কোথাও যাইতে নৌকা লাগে। ব্যাপারীর মেয়ে-নৌকা কোনো সমস্যা ছিলো না। আছিরন তবু গঞ্জ তো গঞ্জ, পাশের গ্রামে বুবুর শ্বশুর বাড়ি-সেইখানেও যাইতে পারে নাই কোনোদিন! আব্বাজান যাইতে দিতা না। ‘লায়েক মাইয়াদের আবার শখ কিওর? শখ যা, সব সাদীর পর, স্বামীর লগে।’ আছিরনের তাই কোথাও যাওয়া হয় না!

সতেরো বছরের জীবনে প্রথম যখন গ্রামের বাইরে পা রাখলো-সেটা সোজা ধাইসার গ্রামে। এ গ্রামের সব কিছুই যেনো আলাদা। পথঘাট। মানুষজন। কেউ কেউ তখনই শহরে যায়! রিক্সা চড়ে! নেতাদের কথাগুলো প্রায় হুবহু উচ্চারণে গ্রামে এসে বলে। দ্যাশেরও যে হে বচ্ছর কী অইলো! চারদিকে যেন তুফানের পূর্বধ্বনি। মানুষের রক্তে রক্তে আগুনের নাচ। এ ওরে কয়, দ্যাশ না কি এইবার স্বাধীন অইবোই। সবচে’ বেশি কয় রজব আলী। কোথায়, নয়া বউ___ তার সাথে একটু রসের কথা-টথা কইবো! তা না, হে আছে তার আওমিলীগ আর শেখ মুজিবের ভাষণ লইয়া। সারাক্ষণ কানের কাছে বকবক করেই যাচ্ছে- ‘পাঞ্জাবীরা আমরার সব তা লুটি লাইছে। ইবার শোধ নেওয়ার পালা। শেখ মুজিব বলছে, যার যা আছে ওটা নিয়াই যুদ্ধে আও...।’ আছিরনের মাথায় ঢুকে না যুদ্ধ লাগছে, তো কি হইছে। এটা তো রাজা বাদশার কাজ। তার স্বামীর কি আছে যে যুদ্ধের চিন্তা করতে হবে! জমি নাই, জিরাত নাই। কাজ নাই। সারাক্ষণ চুলে বাবরি মেরে চায়ের দোকানে বসে থাকবে! থাকার মাঝে আছে এক শরীর। ঝিঙা ফুলের মতো যেমন রঙ, তেমনি লম্বা। মানুষটা যখন হাইট্টা যায়, মাটি যেন কাঁইপ্পা উঠে তখন! আছিরনের যে কি ভালোলাগে! কিন্তু এইটুকুই। তারে কাছে পাইলে তো! ঘর তারে টানে না! আছেই কেবল বাইর-বাইর। এখন তো, আবার আরেক রোগে ধরছে। যুদ্ধে না কি যাবে! আছিরন অবশ্য বুঝিয়েই গেছে-‘তোমার যুদ্ধত যাওয়ার দরকার নাই। আমার শরীলটা দ্যাখো না, কোন সময় কোনটা হয়!’ তখন হয়তো রজব আলী আছিরনের স্ফীত পেটের দিকে তাকায়, অথবা না তাকিয়েই মৃদু হাসে। আর তার খুশী খুশী লাগে। বলে, ‘পোয়া অইলেই ভালা।’
আছিরনও বলে, ‘আমিও পোয়া-ই চাই’ রজব আলী তখন আবার নেতাদের ভাষায় ফিরে যায়-’ছেলে মেয়েতে ভেদাভেদ নাই। পরাধীন দ্যাশে হকলেই যোদ্ধা...’

সারি সারি গাছগুলো ছাড়িয়ে, মাথাটা একটু উপরে তুলে, বছর ত্রিশ-পঁয়ত্রিশ কাটিয়ে দেয়া শিমুল গাছটির সারা শরীরে আগুন! লাল। থোকা থোকা। ফাল্গুন কী চৈত্রের মোলায়েম হাওয়া তাতে টোকা দেয়। আয়ু ফুরিয়ে যাওয়া শিমুল ফুলের দু’একটা তাতে ঝরে পড়ে! আর বন্ধন মুক্তির আনন্দ নিয়ে সদ্যপ্রসূত তুলাদল নিরুদ্দেশ যাত্রা করলে, বিকেলেরা ঘোলা রোদে ভিজে উঠে। ধাইসার গ্রামের হাটিবান্ধা উঠোনগুলো খাঁ খাঁ করে-উড়ে যাওয়া তুলার ছিট ছিট ছায়া পড়ে তাতে।
এরকম এক বিকেলে উস্কু খুস্কু চুল দাড়ি, বহুদিনের না ধোয়া জামাকাপড় পরে লোকটা যখন উঠোনে এসে দাঁড়ায়, বাচ্চাটা তখনো সামনে খই মুড়ির মতো ইন্দুরের মাটি মুখে পুরে যাচ্ছে! কেউ বলেনি, কাউকে বলে দিতে হয়ও না! রজব আলী নিজ থেকেই চিনে ফেলে, ‘অউ আমার পোয়া না নি! আমার পোয়া! হায় কতো বড়ো হই গেছে! দ্যাখ্, দ্যাখ্ আব্বা আইছি!’ রজব আলী যেন পুরো বাড়িটাই কোলে তুলে নেবে! আশেপাশের সারিবদ্ধ ঘরগুলো থেকে বেরিয়ে সবাই তখন উঠোনে জড়ো হয়ে যায়। অথবা যারা ঘরেই বসে থাকে, রজব আলীর এই প্রত্যাবর্তনে তাদেরও বিস্ময় জেগে ওঠে। কেননা অনেকেই ততোদিনে রজব আলীকে শহীদ মুক্তিযোদ্ধার সম্মান দিয়ে বসে আছে! আছিরনের ছেলেটাকে কোলে নিয়ে, ‘আহারে বাপমরা পোয়া’ বলে পড়শীদের কেউ কেউ যে কৃত্রিম বেদনা ফোটাতে চেয়েছে তাদের অকৃত্রিম চেহারায়; তাদেরও তো দোষ দেয়া যায় না। যুদ্ধ শেষ হয়েছে বছর ঘুরতে চললো, কিন্তু রজব আলীর কোনো হদিশ নাই! তবু, রজব আলী পরলোকগত, আছিরনের তা মানতে কষ্ট হতো। রাগও যে হতো না, তা নয়। ‘মরতে যদি অইবোই, তে বাড়িতে মরলে কি অইতো মানুষটার! না তিনি যুদ্ধে যাইবেন। শেখ মুজিব কইছে যুদ্ধে ঝাপাও, তাইনও ঝাপ দিলা! বে-আক্কল না নি।’ আজ অবশ্য আছিরনের বাড়তি আনন্দ বোধ হচ্ছে। মানুষটা শেষমেশ জিন্দা ফিরছে!

রাতের শেষ প্রহরে বহুদিনের জমানো আনন্দ উত্তেজনা পরস্পরের মাঝে ভাগ করে নিয়ে কান্ত শ্রান্ত হবার পর, রজব আলীই প্রথম কথা বলে-‘পোয়ার নাম-টাম রাখছোনি কোনতা?’ আছিরন তখন জানায় যে, তার পিতা মোহাম্মদ কুতুব উল্লাহ ব্যাপারী গ্রামের বড় মসজিদের ইমাম সাহেবের সঙ্গে কথা বলে নাতির একটা নাম ঠিক করেছেন। মোহাম্মদ ইয়াকুব আলী। আল্লাহ্ প্রেরিত একজন নবীর নামে নাম। বড়ই মরতবাসম্পন্ন সেই নাম। কিন্তু শ্বশুরের রাখা নাম রজব আলীর পছন্দ হয় না। একটা বাচ্চা ছেলের নাম এমন বুড়া বুড়া গন্ধমাখা হবে! তার এই অপছন্দ সে আবার প্রকাশও করেনা। পাশে শুয়ে থাকা আছিরনের বাম স্তনে একটু জোরে সে চাপ দিলে, তাতে আছিরন ‘উহ’ করে যে প্রতিবাদ জানায়, রজব আলী সেটা আগ্রাহ্য করে আরেকটা আলতো চাপ দিয়ে বলে, ‘ভালো নাম রাখছইন; ঠিক আছে। কিন্তুক আমি আমার পোয়ার একটা ডাক নাম রাখমু। তোমারে তো আগে কইছলাম পোয়া হউক পুরি হউক নাম রাখমু “মিলন”।’
আছিরনের তখন হয়তো মনে পড়ে যুদ্ধে যাবার আগের এক রাতে রজব আলী তার তলপেটে হাত বুলাতে বুলাতে এরকমই বলেছিলো যে, ছেলে হোক, মেয়ে হোক তার নাম সে রাখবে ‘মিলন’।__ মিলন মানে হইলো... __ রজব আলীর কথা শেষ হয় না। গ্রামের মক্তবঅব্দি পড়ূয়া আছিরন বিবি তার শিক্ষাগত যোগ্যতার সগর্ব ঘোষণা দিতে গিয়ে একটা বাড়তি ঝামটি মেরে বলে -‘অতো অশিক্কিত পুরি নায় আমি! মিলন মাইনে বুঝি ।’
এই যে দেশে একটা যুদ্ধ হলো। কতো মানুষ মরে গেলো! কতো মানুষ! কতো মানুষ হারিয়ে গেলো চিরতরে। আবার কেউ কতোদিন পর ফিরে পেলো আপনজনদের! মা পেলো তার সন্তানকে। স্ত্রী পেলো স্বামী। সন্তান তার বাবাকে। সবচেয়ে বড় কথা, সবাই পেলো এ দেশ। এটাই তো সবচেয়ে বড় মিলন! রজব আলী শহুরে নেতাদের ভাষায় এই রকম ব্যাখ্যা দেয় আছিরনকে। আছিরন শুধু শুনে। আর মনে মনে হয়তো ভাবে যে, দেশ, যুদ্ধ রাজনীতি এসবের ঘোর দেখি এখনও কাটেনি মানুষটার! সে তাই এই ব্যাখ্যার জবাবে কিছু না বলে ; শব্দহীন কিন্তু ভারি একটা নিঃশ্বাস ফেলে ঘুমুতে চেষ্টা করে।

( আগামী পর্বে সমাপ্য)


মন্তব্য

অতিথি লেখক এর ছবি

পরের পর্ব পড়তে চাই,শিগগিরই... *তিথীডোর

সুমন সুপান্থ এর ছবি

ধন্যবাদ রিফাত । আজ রাতেই দেবো হয়তো । পুরোটা পড়ে মতামত জানালে খুশী হবো । এই লেখাটা নিয়ে আমার সংশয় সীমাহীন ।
ভালো থাকবেন ।

---------------------------------------------------------
তুমি এসো অন্যদিন,অন্য লোক লিখবে সব
আমি তো সংসারবদ্ধ, আমি তো জীবিকাবদ্ধ শব !

---------------------------------------------------------
তুমি এসো অন্যদিন,অন্য লোক লিখবে সব
আমি তো সংসারবদ্ধ, আমি তো জীবিকাবদ্ধ শব !

নিবিড় এর ছবি

সুপান্থ দা রাত তো চলে গেল কিন্তু গল্প তো আসল না খাইছে


মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।

সুমন সুপান্থ এর ছবি

রাতের গল্প তো নিবিড়, তাই দিনে আসতে চাইছে । হা হা হা ।
দিচ্ছি ... ধন্যবাদ।

---------------------------------------------------------
তুমি এসো অন্যদিন,অন্য লোক লিখবে সব
আমি তো সংসারবদ্ধ, আমি তো জীবিকাবদ্ধ শব !

---------------------------------------------------------
তুমি এসো অন্যদিন,অন্য লোক লিখবে সব
আমি তো সংসারবদ্ধ, আমি তো জীবিকাবদ্ধ শব !

পান্থ রহমান রেজা এর ছবি

পড়লাম! পরের পর্ব পড়ার আগ্রহ বাড়লো!
.....................................................................

আমি অতো তাড়াতাড়ি কোথাও যেতে চাই না;
আমার জীবন যা চায় সেখানে হেঁটে হেঁটে পৌঁছুবার সময় আছে,
পৌঁছে অনেকক্ষণ ব'সে অপেক্ষা করার সময় আছে।

সুমন সুপান্থ এর ছবি

ধন্যবাদ পান্থ । পড়বার আর মন্তব্যের জন্য । তোমার মতামতের অপেক্ষায় থাকলাম ।

---------------------------------------------------------
তুমি এসো অন্যদিন,অন্য লোক লিখবে সব
আমি তো সংসারবদ্ধ, আমি তো জীবিকাবদ্ধ শব !

---------------------------------------------------------
তুমি এসো অন্যদিন,অন্য লোক লিখবে সব
আমি তো সংসারবদ্ধ, আমি তো জীবিকাবদ্ধ শব !

জুয়েইরিযাহ মউ এর ছবি

গল্পটির ভাষাবিন্যাস আপনার অন্য সব গল্প থেকে যে অনেকটা ভিন্ন এ পর্ব পড়ে তা বোঝা যায় স্পষ্টভাবেই।

আচ্ছা, আঞ্চলিক ভাষার ক্ষেত্রে কি সিলেটের উপভাষা ব্যবহার করেছেন? তবে বেশ কয়েকটি বাক্যে ভাষাটির সম্পূর্ণ ব্যবহার পেলামনা যে।
"লায়েক মাইয়াদের আবার শখ কিওর?" -
উপরের বাক্যেতো "পুরিনতোর (মেয়েদের)" বলতে পারতেন।
‘অতো অশিক্কিত পুরি নায় আমি! - এখানেতো 'পুরি'ই বললেন।

মনে হল সিলেটের উপভাষাই ব্যবহার করতে চেয়েছেন, তাই বললাম।
ধৃষ্টতা হলে ক্ষমা করবেন দাদা হাসি

পরবর্তী পর্বের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় রইলাম।

-------------------------------------------------------------
জানতে হলে পথেই এসো, গৃহী হয়ে কে কবে কি পেয়েছে বলো....


-----------------------------------------------------------------------------------------------------

" ছেলেবেলা থেকেই আমি নিজেকে শুধু নষ্ট হতে দিয়েছি, ভেসে যেতে দিয়েছি, উড়িয়ে-পুড়িয়ে দিতে চেয়েছি নিজেকে। দ্বিধা আর শঙ্কা, এই নিয়েই আমি এক বিতিকিচ্ছিরি

সুমন সুপান্থ এর ছবি

মউ, তোমার মতো পাঠক পেয়েছে, এই গল্পের সৌভাগ্য অনেক। গল্পকারেরও । আজকাল তো কেউ পড়ে ই না দেখে । আর নেটে হলে তো আরও । এতো দীর্ঘ একটা লেখা দেবার আগে নিজেরই খুব সংশয় ছিলো । তোমার এমন মনোযোগী পাঠে, সেটা কেটে গেছে অনেকটা ।
খুব ভালো একটা বিষয় উল্লেখ করেছো তুমি । উপভাষা ব্যবহারের এই এক বিপদ । সাবধান না থাকলে এই রকম লেজেগোবরে হয় আর কি !
আমি ঠিক করে নেবো ।
ধন্যবাদ তোমাকে ।

---------------------------------------------------------
তুমি এসো অন্যদিন,অন্য লোক লিখবে সব
আমি তো সংসারবদ্ধ, আমি তো জীবিকাবদ্ধ শব !

---------------------------------------------------------
তুমি এসো অন্যদিন,অন্য লোক লিখবে সব
আমি তো সংসারবদ্ধ, আমি তো জীবিকাবদ্ধ শব !

হাসান মোরশেদ এর ছবি

মেদ বাড়ছে- তোর লেখার :)। পরিপার্শ্বের বর্ননা ইদানিংকালের গল্পগুলোকে অনেক পরিনত করছে।
হুম বয়স বাড়ছে, বয়সকালে পরিনত হওয়া মানায়।

শেষ কর।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

সুমন সুপান্থ এর ছবি

মেদ ?

শুধু লেখার না । নিজেরও বৈ কি ! পরিনত হচ্ছি বটে , ভুড়িতে আর ঝুড়িতে:)

দেখ কি হয় । পুরোটা পড়ে জানাস ।

---------------------------------------------------------
তুমি এসো অন্যদিন,অন্য লোক লিখবে সব
আমি তো সংসারবদ্ধ, আমি তো জীবিকাবদ্ধ শব !

---------------------------------------------------------
তুমি এসো অন্যদিন,অন্য লোক লিখবে সব
আমি তো সংসারবদ্ধ, আমি তো জীবিকাবদ্ধ শব !

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

এই লেখাটা পড়ে লগিন করলাম। শুরুটা আমার কাছে খুব বেশি আকর্ষক বলে মনে হয়েছে- এরপর অছিরন বিবির বর্ণনার শুরু থেকে কাহিনী একটূ যেনো শ্লথ ... হাসান মোরশেদ ভাই যেটাকে বললেন পরিণতবোধ।

ভালো লেগেছে, তাই শেষাংশের জন্যে অপেক্ষায় থাকলুম।

______________________________________________________

মধ্যরাতের কী-বোর্ড চালক

সুমন সুপান্থ এর ছবি

হুম, বুঝতে পারছি সুহান । এই গল্প যদিও পুর্ব প্রকাশিত । তবু এর গতি,পরিনতি ... বাক-ভঙ্গি নিয়ে আমার নিজেরই অনেক প্রশ্ন ।
তাইতো সবার দ্বারস্থ হওয়া । পুরোটা পড়ে জানাবেন , প্লিজ ।
ধন্যবাদ ।

---------------------------------------------------------
তুমি এসো অন্যদিন,অন্য লোক লিখবে সব
আমি তো সংসারবদ্ধ, আমি তো জীবিকাবদ্ধ শব !

---------------------------------------------------------
তুমি এসো অন্যদিন,অন্য লোক লিখবে সব
আমি তো সংসারবদ্ধ, আমি তো জীবিকাবদ্ধ শব !

নিবিড় এর ছবি

এই পর্বটা পড়লাম তবে গল্প নিয়ে কথা বাকী পর্বের পর। তবে সুপান্থদা একটা কথা আছে, গল্পের শুরুতে ডিসক্লেইমার দেওয়ার কি খুব দরকার আছে? যার গদ্যে আগ্রহ আছে ছোট কিংবা বড় যাই হোক সে পড়বেই তাই এটা অপ্রয়োজনীয় বলে আমার মনে হয়। আশা করি মন্তব্যে কিছু মনে করবেন না সুপান্থ দা।


মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।

সুমন সুপান্থ এর ছবি

তোমার পাঠ ও মন্তব্যের জন্য কৃতজ্ঞতা নিবিড় ।
ডিসক্লেইমার'র বিষয়টা আমারও ভালো লাগছে না । আসলে, প্রথমে পুরো গল্পটাই দিয়েছিলাম এক সঙ্গে । এতো দীর্ঘ ! ভয়ে, সাইজ দেখে কেউ যদি ফিরেও না চায় সেই ভয়ে আসলে ওইসব লেখা আর কি ! পরে অবশ্য অর্ধেক তুলে নিয়েছি ।
ধন্যবাদ আবারো ।

---------------------------------------------------------
তুমি এসো অন্যদিন,অন্য লোক লিখবে সব
আমি তো সংসারবদ্ধ, আমি তো জীবিকাবদ্ধ শব !

---------------------------------------------------------
তুমি এসো অন্যদিন,অন্য লোক লিখবে সব
আমি তো সংসারবদ্ধ, আমি তো জীবিকাবদ্ধ শব !

মামুন হক এর ছবি

অনেক বড়ো প্রেক্ষাপট, কিন্তু লিখছেন দীর্ঘ(!) ছোটগল্পে। যথেষ্ট কঠিন একটা কাজ হাতে নিয়েছেন সুমন ভাই। মনোযোগী পাঠক না হলে খেই হারাতে পারে, কারণ একেবারে টেনে রাখা গল্প এটিকে আমি এখনও বলতে পারছিনা।

আগ্রহ জাগিয়ে তুলেছেন আপনি, মিলনের বাবা মুক্তিযোদ্ধা থেকে কীভাবে জালিমে পরিণত হলো সেটা জানার অপেক্ষায় আছি।

তবে এই গল্পটায় আপনার অন্যান্য কিছু গল্পের মতো কবিতার প্রভাব তেমন একটা চোখে পড়েনি। আপাতত এটুকুই বলি, বাকিটা পুরো গল্প পড়া শেষে বলবো।

সুমন সুপান্থ এর ছবি

প্রথমেই বলি মামুন ভাই, দীর্ঘ(!) ছোটগল্প বলে কিছু আছে কী না আসলেই । কি বলা যেতো এই গল্পকে ? বড়গল্প ? সে বিষয়ে তো রবীন্দ্রনাথই ভালো বলে গেছেন ___ বারো হাত কাঁকুড়ের তেরো হাত বিচি বলে । আসলে আর কিছু বলে পাঠককে সাবধান করা যাচ্ছিলো না, এই 'অ+দীর্ঘ-খাদ্য' সম্পর্কে !!!

তবে এই গল্পটায় আপনার অন্যান্য কিছু গল্পের মতো কবিতার প্রভাব তেমন একটা চোখে পড়েনি

কবিতার প্রভাব/অ-প্রভাব কী না জানি না, তবে এটাকে আমার আর সব গদ্যের চেয়ে আলাদা করে তুলবার ব্যর্থ একটা চেষ্টা ছিলো, সেটা সত্য ।
পুরোটা পড়ে জানান । দেখি কতোটা ব্যর্থ হলো ।

ভালো থাকবেন ।

---------------------------------------------------------
তুমি এসো অন্যদিন,অন্য লোক লিখবে সব
আমি তো সংসারবদ্ধ, আমি তো জীবিকাবদ্ধ শব !

---------------------------------------------------------
তুমি এসো অন্যদিন,অন্য লোক লিখবে সব
আমি তো সংসারবদ্ধ, আমি তো জীবিকাবদ্ধ শব !

নাহার মনিকা এর ছবি

সুমন, এই গল্পের নিরীক্ষা প্রয়াসে আমন্ত্রন আছে... চারপাশের স্থবিরতা আর গতিশীলতার কাঠামো ভালো লাগলো ! পরের পর্ব পড়ার অপেক্ষায় রইলাম।

সুমন সুপান্থ এর ছবি

আপনার মন্তব্য পেয়ে ভালো লাগছে নাহার আপা । পুরোটা পড়ে জানাবেন প্লিজ । এই কাঠামোটাই বিপদে ফেলে দিয়েছিলো শেষ পর্যন্ত !
ভয়ে আছি ।

---------------------------------------------------------
তুমি এসো অন্যদিন,অন্য লোক লিখবে সব
আমি তো সংসারবদ্ধ, আমি তো জীবিকাবদ্ধ শব !

---------------------------------------------------------
তুমি এসো অন্যদিন,অন্য লোক লিখবে সব
আমি তো সংসারবদ্ধ, আমি তো জীবিকাবদ্ধ শব !

বইখাতা এর ছবি

ভালো লাগছে। বেশ বড় প্রেক্ষাপটের গল্প মনে হলো। পরের পর্ব পড়ার অপেক্ষা করছি।
কোথাও কোথাও কি আঞ্চলিক ও শুদ্ধ ভাষার মিশ্রণ ঘটেছে ? মনে হলো সেরকমই।

সুমন সুপান্থ এর ছবি

ভালো লেগেছে জেনে ভালো লাগলো বইখাতা ।
হুম, মিশ্রণটা ঐচ্ছিক । শুধু সিলেটের উপভাষায় পুরো গল্পটা টেনে নিয়ে যাবার হিম্মত নেই বলে মিশ্রণের এই অপচেষ্টা !
ভালো থাকবেন ।

---------------------------------------------------------
তুমি এসো অন্যদিন,অন্য লোক লিখবে সব
আমি তো সংসারবদ্ধ, আমি তো জীবিকাবদ্ধ শব !

---------------------------------------------------------
তুমি এসো অন্যদিন,অন্য লোক লিখবে সব
আমি তো সংসারবদ্ধ, আমি তো জীবিকাবদ্ধ শব !

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।