হিমালয়ান হিমবাহ সংকোচনঃ বিশেষজ্ঞদের ভুল আর আমাদের স্বস্তি

সচল জাহিদ এর ছবি
লিখেছেন সচল জাহিদ (তারিখ: শনি, ২৩/০১/২০১০ - ৬:০৭পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

যদি প্রশ্ন করা হয় ঠিক এই মূহুর্তে বিশ্ব পরিবেশ নিয়ে সবচাইতে আলোচিত খবর কি? উত্তরটি নিঃসন্দেহে জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে আন্তর্জাতিক সংগঠন আইপিসিসির( Intergovernmental Panel on Climate Change)'হিমালিয়ান হিমবাহ ২০৩৫ সালের মধ্যে নিঃশেষ হয়ে যাচ্ছে' এই খবরটি পুরোপুরি ভুল প্রমানিত হওয়া। আইপিসিসিও তাদের ওয়েবসাইটে সেটি স্বীকার করেছে এবং ক্ষমা প্রার্থনা করেছে। আর বিশেষজ্ঞদের এই ভুল আমাদের মত মানুষ যারা জলবায়ু পরিবর্তনের সবচাইতে ক্ষতিগ্রস্থ দেশ বাংলাদেশের নাগরিক তাদের মনে কিছুটা হলেও সাময়িক স্বস্তি নিয়ে এসেছে।এবার চলুন এই বিষয়ে কিছুটা বিস্তারিত জানা যাক।

আইপিসিসি ২০০৭ সালে তাদের চতুর্থ মুল্যায়ন রিপোর্ট প্রকাশ করে যা মূলত তিনটি কার্যকারী দলের অধীনে লিখিত তিনটি খন্ডের সমন্বয়।এর মধ্যে দ্বিতীয় খন্ডের মূল প্রতিপাদ্য বিষয় ছিল 'জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব, অভিযোজন ও ক্ষয়ক্ষতি'। এই খন্ডেরদশম অধ্যায়ের নাম এশিয়া যার ১০.৬.২ অনুচ্ছেদে বর্নিত করা হয়েছে জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে হিমালয়ান হিমবাহের সংকোচনের খবর। এখানে স্পষ্ট লেখা আছে ( দ্বিতীয় পরিচ্ছেদে),

'Glaciers in the Himalaya are receding faster than in any other part of the world (see Table 10.9) and, if the present rate continues, the likelihood of them disappearing by the year 2035 and perhaps sooner is very high if the Earth keeps warming at the current rate'

অর্থ্যাৎ,

' হিমালয়ান হিমবাহগুলি বিশ্বের অন্যান্য অংশের থেকে অধিক হারে সংকোচিত হচ্ছে এবং এই হারে সংকোচন প্রক্রিয়া চলতে থাকলে ও বর্তমান হারে বিশ্বের উষ্ণতা বৃদ্ধি পেতে থাকলে ২০৩৫ সালের মধ্যে বা তার আগে এদের পুরোপুরো নিঃশেষ হয়ে যাবার সম্ভাবনা প্রবল'

২০০৯ সালের ডিসেম্বরে বিশ্বের চারজন প্রথমসারীর হিমবাহ বিশেষজ্ঞ ২০৩৫ সালের মধ্যে হিমালয়ান হিমবাহ নিঃশেষ হয়ে যাওয়া অসম্ভব বলে মত প্রকাশ করে বিখ্যাত বিজ্ঞান প্রকাশনা 'সায়েন্স জার্নালে' একটি চিঠি পাঠায়[২]।

যুক্তরাষ্ট্রের এরিজোনা বিশ্ববিদ্যালয়ের জেফারি কারজেল বিবিসি কে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন হিমালয়ান হিমবাহগুলোর পুরুত্ত্ব ২০০ থেকে ৩০০ মিটার এবং কোন কোন ক্ষেত্রে তা ৪০০ মিটার। উষ্ণতা বৃদ্ধির কারনে যদি বছরে ২ মিটার করেও যদি বরফ গলে তার পরেও ২০৩৫ সালের মধ্যে তা নিঃশেষ হয়ে যাবার কোন আশঙ্কা নেই।

যুক্তরাজ্য ভিত্তিক দৈনিক পত্রিকা গার্ডিয়ানে প্রকাশিত তথ্য মতে[১] আইপিসিসির পরিভাষা অনুযায়ী "Very High Likelihood" এর অর্থ হচ্ছে যা ঘটার সম্ভাবনা ৯০ শতাংশের বেশী। আইপিসিসি ঐ পরিচ্ছেদের শেষে তথ্যসুত্র হিসেবে WWF এর ২০০৫ এর রিপোর্ট উল্লেখ করে কিন্তু WWF বা 'বিশ্ব বন্যপ্রানী তহবিল' তাদের ২০০৫ এর ঐ রিপোর্টে তথ্যসুত্র হিসেবে ১৯৯৯ সালে দিল্লীর জওরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিমবাহ বিশেষজ্ঞ সৈয়দ হাসনাইনের লন্ডনভিত্তিক ম্যাগাজন ' নিউ সাইন্টিস্ট' ও দিল্লীভিত্তিক ম্যাগাজিন 'ডাউন টু আর্থ' কে দেয়া এক সাক্ষাৎকারকে উল্লেখ করে। সুতরাং নিঃসন্দেহে এই মন্তব্য কতটা অবৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোন থেকে গৃহীত হয়েছে তা প্রমানিত হয়। ২০ শে জানুয়ারী আইপিসিসি তাদের প্রতিক্রিয়ায় ক্ষমা প্রার্থনা করে উল্লেখ করেছেন,

' রিপোর্টের এই পরিচ্ছেদে আইপিসিসির প্রক্রিয়ার জন্য প্রয়োজনীয় প্রমানাদির ক্ষেত্রে এর স্বতঃসিদ্ধ নীতিমালা বজায় রাখা হয়নি'

সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে আইপিসিসির চতুর্থ মুল্যায়ন রিপোর্টের প্রথম কার্যকারী দলের সদস্য অষ্ট্রিয়ার ইনসব্রুক বিশ্ববিদ্যালয়ের জর্জ ক্যাজার বলেন তিনি প্রকাশিত হবার আগেই ২০০৬ সালে এই বিষয়ে আইপিসিসিকে সতর্ক করেছিলেন কিন্তু 'এশিয়া' অধ্যায়ের বিশেষজ্ঞরা এই বিষয়ে কোন প্রতিক্রিয়া জানাননি[২,৩]।

আইপিসির এই ভুল রিপোর্ট পুরো এশিয়া অঞ্চলের বিশেষজ্ঞরাই আজ প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। জর্জ ক্যাজারত বলেই দিলেন[৩],

'এই অঞ্চলের বিশেষজ্ঞরা ভাল পানিবিদ বা উদ্ভিদবিদ হতে পারেন কিন্তু তাদের হিমবাহবিদ্যাতে কোন জ্ঞাণ নেই'

তবে বিশেষজ্ঞদের এই ভুল বাংলাদেশের মত দেশের মানুষদের মনে কিছুটা হলেও স্বস্তি এনে দিতে পারে। বাংলাদেশের প্রধান তিন নদীর মধ্যে দুই নদীর ( গঙ্গা বা পদ্মা ও ব্রহ্মপুত্র বা যমুনা) প্রবাহই আসে হিমালয়ান হিমবাহ থেকে। একদিকে সমুদ্রতলের উচ্চতা বৃদ্ধিতে দক্ষিনাঞ্চল ডুবে যাওয়া আর অন্যদিকে শুষ্ক মৌসুমে পদ্মা-যমুনা প্রবাহ কমে যাওয়া এই দুই বৈপরিত্য বাংলাদেশকে নিঃশেষ করে দিত, এখন অন্তত কিছুটা হলেও নিঃশ্বাষ ফেলতে পারে।

তথ্যসুত্রঃ

[১] Claims Himalayan glaciers could melt by 2035 were false, says UN scientist, Guardian 20 January 2010.
[২] UN climate body admits 'mistake' on Himalayan glaciers, BBC, 19 January 2010.
[৩] UN climate report: Scientist warned glacier forecast was wrong, Edmonton Jouenal, 18 January


মন্তব্য

দুর্দান্ত এর ছবি

এক ফিঙেতেই গ্রীষ্মকাল হয়ে যাবে নাতো আবার?

সচল জাহিদ এর ছবি

ধন্যবাদ দুর্দান্ত ভাই । আমার মনে হয়না এই একটি প্যারাগ্রাফ পুরো আইপিসিসির কার্য্যক্রমকে প্রশ্নবিদ্ধ করবে, তবে কিছুটা হলেও কলঙ্ক লেপন করেছে নিশ্চয়ই। বিশেষ করে যারা বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি ও জলবায়ু পরিবর্তনকে মিথ মনে করে বা করার চেষ্টা করে তাদের জন্য এটা নিশ্চয়ই একটি যোগ্য অস্ত্র হবে।

----------------------------------------------------------------------------
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি
নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

রাগিব এর ছবি

জাহিদ, ঠিক এই কারণেই উষ্ণায়ন সংক্রান্ত হেডলাইন ও অন্যান্য দাবীগুলো বিশ্বাস করতে পারি না। গ্লোবাল ওয়ার্মিং এখন খুব হট সেক্সি টপিক। এই নিয়ে পেপার লিখে নাম কামানো যায়, আল গোরের মতো অস্কার ও নোবেলও পাওয়া যায়। কিন্তু পুরো ব্যাপারটায় বিজ্ঞান কতটুকু, আর সেনসেশনালিজম কতটুকু, তা নিয়েই সন্দেহ জাগে।

যখন দেখি নিউ ইয়র্ক টাইমসের মতো পত্রিকায় "বাংলাদেশের ক্লাইমেট রিফিউজি" নিয়ে গ্লোবাল ওয়ার্মিং এর কুফল বিষয়ক নিবন্ধ ছাপা হয়, যাতে নদী ভাঙনের শিকার মানুষদের হাজির করা হয় ক্লাইমেট রিফিউজি হিসাবে, তখন সন্দেহ পাকাপোক্ত হয়। বাংলাদেশের নদী অববাহিকায় নদী ভাঙনের কারণে হাজার বছর ধরেই মানুষ উদ্বাস্তু হয়ে আসছে, কিন্তু পশ্চিমা পত্রপত্রিকায় এদের কাহিনীকে রগরগে করে উপস্থাপন করা হয়। এগুলো আদৌ গ্লোবাল ওয়ার্মিং এর প্রমাণ নয়, তা নিয়ে কাউকে, বিশেষত বাংলাদেশের আবহাওয়াবিদদের বলতে শুনি না। দুঃখের ব্যাপার এটাই।

আর ২০২৫, ২০৩৫, কিংবা ২০৫০ সালের মধ্যে বাংলাদেশেরঅর্ধেকের বেশি অংশ সমূদ্রে তলিয়ে গেলো বলে কুম্ভিরাশ্রু ফেলতে দেখি এসব বিজ্ঞানীদের, কিন্তু সব শত্রুর মুখে ছাই দিয়ে নিঝুম দ্বীপের মতো বিস্তীর্ণ নতুন ভূমি দিব্যি গজিয়ে চলেছে। কিন্তু বাংলাদেশ ডুবে যাচ্ছেনা, এই খবরটা গরম খবর হয়না, কিংবা পশ্চিমা পত্রিকাতে ছাপাবার মতো রগরগেও নয়। তাই নদী ভাঙনের শিকারদের ক্লাইমেট রিফিউজি দেখিয়ে আল গোর আর আইপিসিসি নোবেল পেয়ে যায়, দিনের পর দিন লাইম লাইটে থাকে।

(কয় মাস আগে ইমেইল ফাঁস কেলেংকারিতেও আইপিসিসি জড়িয়েছিলো। ভিতরে ভিতরে কতো রকম তথ্য সন্ত্রাশ এরা করেছে কে জানে।)

----------------
গণক মিস্তিরি
মায়ানগর, আম্রিকা
ওয়েবসাইট | কুহুকুহু

----------------
গণক মিস্তিরি
জাদুনগর, আম্রিকা
ওয়েবসাইট | শিক্ষক.কম | যন্ত্রগণক.কম

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

হো হো হো

আমার সন্দেহ বাড়ে যখন দেখি বাংলাদেশ নিয়ে হঠাৎ এদের মাথা ব্যথা শুরু হয়। আমরা বিপদে পড়লে ওদের মাথা ঘামেনা, 'আমরা বিপদে পড়তে যাচ্ছি' সেটা নিয়ে ওদের মাথা ঘামে-- সন্দেহটা সেখানেই।
...............................
নিসর্গ

সচল জাহিদ এর ছবি

রাগিব তোমার আবেগ ও তথ্য দুটোই সঠিক ও যুক্তিসংগত। জলবায়ু পরিবর্তন আজকে একটি ব্যাবসায়িক পন্যে পরিনত হয়েছে এই কথাটি যেমন সত্য ঠিক তেমনি জলবায়ু পরিবর্তন যে ঘটছে সেটিও সত্যি।

জলবায়ু পরিবর্তনের সাবচাইতে সহজ বোধগম্য প্রভাব হচ্ছে এক্সট্রিম ইভেন্টগুলি বেড়ে যাওয়া। তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেলে বেশী পানি স্বতঃবাষ্পীভূত হবে অর্থ্যাৎ খড়া বৃদ্ধি পাবে আবার এই স্বতঃবাষ্পীভূত অধিক পানি অধিক বৃষ্টিপাত ঘটাবে সুতরাং বর্ষা মৌসুমে নদীর পানি বৃদ্ধি পাবে যা প্রকারান্তরে বন্যা সমস্যা বাড়াবে। সুতরাং যেটি ফলাফল তা হচ্ছে নদী ভাংগন, বন্যা ও খড়া আগেও ছিল এখনো হবে তবে তার ফ্রিকোয়েন্সি বাড়বে। তবে একথা ঠিক যে কিছু এনজিও এই বিষয়টা নিয়ে বানিজ্যকিকরন করে। আর শুধু এনজিও কেই কেন বলব, সাম্প্রতিককালে শেষ হয়ে যাওয়া কোপেনহেগেন সম্মেলনে কিন্তু আমাদের সরকারের প্রতিনিধিদের কিন্তু নিজেদের দেশের আসন্ন দুর্যোগ নিয়ে বা কিভাবে বৈশ্বিক কার্বন নিঃসরন কমানো যায় তা নিয়ে যতটা ভাবতে বা কথা বলতে দেখেছি তার থেকেও তারা বেশি কথা বলেছে কত টাকা সাহায্য পাওয়া উচিৎ তা নিয়ে আসবে তা নিয়ে।

তবে সম্প্রতি আইপিসিসি বিশেষ করে এর প্রধান জনাব পাচুরি এত বেশি বিতর্কিত হয়ে গেছে যা আইপিসিসির উপর মানুষের আস্থা কমে যাবার আশঙ্কা যে কেউ করতেই পারে।

----------------------------------------------------------------------------
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি
নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

সিরাত এর ছবি

লেখা এবং মন্তব্যে জাঝা, শেখা হল। আইপিসিসি-র ভুল আমাদের জন্য সাময়িক ভাল খবর হয়তো, কিন্তু, ইন দ্য মিড রান, উই আর অল ডেড তো। মন খারাপ

সচল জাহিদ এর ছবি

ধন্যবাদ সিরাত।

----------------------------------------------------------------------------
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি
নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

অতিথি লেখক এর ছবি

তথ্য সন্ত্রাসের মতো খারাপ জিনিষ আর কিছু নাই, এর পুরোটাই সুজোগ নিচ্ছে তথ্য জ্ঞানী হয়ে যাওয়া দেশগুলো। আমরা পড়েছি সবদিক দিয়ে মহা ফাপরে; কারন সত্য বা অসত্য যাচাই করবার জ্ঞানের শক্তিটা বা অধিকারটা এখনো আমাদের হয়ে উঠেনি।
--শফকত <লুকোচুরি@জিমেল>

সচল জাহিদ এর ছবি

শফকত ভাই এই ক্ষেত্রে তথ্য সন্ত্রাস করছে কিন্তু আমাদের জ্ঞাতি ভাইয়েরাই, রিপোর্টের এই অংশের লেখক সবই এশিয়ার।

----------------------------------------------------------------------------
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি
নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

ধ্রুব বর্ণন এর ছবি

IPCC নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে বেশ কিছুদিন।

--------------------------------
~পর্যবেক্ষণ-অসাধ্য তত্ত্ব অর্থহীন~

সচল জাহিদ এর ছবি

হ্যা ধ্রুব, খবরটি আগেই পড়েছি, দুঃখজনক ।

----------------------------------------------------------------------------
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি
নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

ধ্রুব বর্ণন এর ছবি

আপনি ওদের ট্র্যাক রাখছেন, এজন্য সাধুবাদ।

--------------------------------
~পর্যবেক্ষণ-অসাধ্য তত্ত্ব অর্থহীন~

বন্যরানা [অতিথি] এর ছবি

হিমালয়ান হিমবাহ সংকোচনের তথ্য ভূল ছিলো কি না এ প্রশ্নের উওরে আই পি সি সি চেয়ারম্যান আর কে পাচুরি (R K Pachauri) টাইমস অব ইন্ডিয়াকে বলছেন:

Basically yes, in this case there has been an error, but the overall findings, the problems of the melting glaciers, we stand by it. In fact, this was a thousand page report, and this one statement was the result of an error.

আমার প্রশ্ন হচ্ছে, এই এরর কোনো টাইপো ছিলো না। এটি ভূল গবেষনার ভূল ফলাফল। পাচুরি যেটাকে হাজার পৃষ্ঠার রিপোর্টে একটি ভূল বলছেন, এরকম ভূল নোবেল পাওয়া আইপিসিসির রিপোর্টে আরো নাই সেইটা কিভাবে বলি। আর হোক না এটি একটি মাত্রই ভূল, তাতে করে যদি আইপিসিসি রিপোর্টের উপর মানুষের (বিশেষ করে পলিসি মেকার আর রাজনীতিবিদদের) আস্থা কমে যায়, সেটা কি খুব ভালো হলো? আর সন্দেহবাদিরা এইটা নিয়ে কি ঢোল বাজায় (নাকি বাজানো শুরু কোরে দিয়েছে?) সেটাও দেখার বিষয়।

সচল জাহিদ এর ছবি

মন্তব্যে সহমত।

----------------------------------------------------------------------------
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি
নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

সাঈদ আহমেদ এর ছবি

উষ্ণায়ন একটি ট্রিলিয়ন ডলারের প্রশ্ন... উষ্ণায়নকে কেন্দ্র করে পরিবেশ-বান্ধব যে উৎপাদন ব্যবস্থা চালু হচ্ছে, তা বেশ ব্যয় সাপেক্ষ। তাই এটাকে এড়িয়ে যাবার একটা প্রয়াস সবসময়ই আছে। এবার পৃথিবীর পুরো উত্তারঞ্চলে মাত্রাতিরিক্ত বরফ পড়েছে, যেটা আমরা নিয়মিতই খবরে দেখছি। এটাকে উষ্ণায়ন-অবিশ্বাসীরা উষ্ণায়ন ধারনাকে উড়িয়ে দেবার জন্য ব্যবহার করছে (যদিও আবহাওয়া শীতলতর হলেও জলবায়ু কিন্তু ঠিকই উষ্ণ হচ্ছে)।

এর মধ্যে উষ্ণায়ন নিয়ে এধরনের রিপোর্ট উষ্ণায়ন-অবিশ্বাসীদের আরো উদ্দীপ্ত করবে (তা বলে বলছি না যে এটা তাদের স্যাবোটাজ)...... এধরনের রিপোর্টে সতর্ক থাকা তাই অনেক বেশি জরুরী।

লেখক কে ধন্যবাদ বিষয়টা সামনে নিয়ে আসার জন্য।
-----------
"সে এক পাথর আছে কেবলি লাবণ্য ধরে"

-----------
চর্যাপদ

সচল জাহিদ এর ছবি

ধন্যবাদ সাঈদ ভাই। আমিও আপনার মন্তব্যের সাথে একমত প্রদর্শন করছি। এই ধরনের রিপোর্টে আরো সাবধানী হওয়া উচিৎ ছিল। আইপিসিসি বলেছে তারা ২০১৩ সালের রিপোর্টে সংশোধন করে দেবে।

----------------------------------------------------------------------------
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি
নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

আর কী কী ভুল তথ্যের ওপর ভিত্তি করে আরো বড় বড় ভুল সিদ্ধান্ত নেয়া হচ্ছে কে জানে! বনিকের মারপ্যাঁচে পড়ে বিজ্ঞানীর মুখে বনিকের তুলে দেয়া কথা যখন প্রকাশিত হয় তখন বিজ্ঞানীই কেবল শ্রদ্ধা হারায় না, মানুষ তার ভরসার জায়গাটাও হারায়।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

সচল জাহিদ এর ছবি

পান্ডবদা বিশেষ করে যুক্তরাজ্য ভিত্তিক গার্ডিয়ানে আইপিসিসির প্রধান পাচুরিকে নিয়ে একটি বিতর্কিত রিপোর্ট ছাপা হবার পরে বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির ও তাকে পুঁজি করে বণিকদের বানিজ্যের খবরটি সবার সামনে চলে আসে।আশা করি আইপিসিসি তাদের আই দুর্বলতাগুলি কাটিয়ে উঠবে।

----------------------------------------------------------------------------
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি
নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

শেখ নজরুল এর ছবি

কোনটি সঠিক এখনও বলা যাচ্ছে না।

শেখ নজরুল

শেখ নজরুল

বন্যরানা [অতিথি] এর ছবি

কোন ব্যাপারে সন্দেহ প্রকাশ করছেন ভাই শেখ নজরুল, আইপিসিসি রিপোর্ট নাকি বৈশ্বিক উষ্ণায়ন? উষ্ণায়নের ব্যাপারে এখনই সন্দেহবাদি না হোন।

আলমগীর এর ছবি

চলুক

সচল জাহিদ এর ছবি

ধন্যবাদ আলমগীর ভাই।

----------------------------------------------------------------------------
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি
নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

দ্রোহী এর ছবি

"বৈশ্বিক উষ্ণায়ন বিষয়ক গবেষণা" একটি লাভজনক ব্যবসা।

দুর্দান্ত এর ছবি

১০০% সত্য কথা।

সচল জাহিদ এর ছবি

কথা সত্য।

----------------------------------------------------------------------------
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি
নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

নৈষাদ এর ছবি

ধন্যবাদ লেখাটার জন্য। স্বস্তি পেলাম।
যে জিনিসটা ভয়ের তা হল এই ধরনের ভুল আমাদের মত আমজনতার মধ্যে অবিশ্বাসের জন্ম দেয়, যার ফলাফল নিশ্চয়ই ভাল না। একসময় চা খেলে এই সুফল হয় কিংবা ব্ল্যাক কফি এজন্য ভাল জাতীয় গবেষণালব্ধ ফলাফল চোখ-কান বন্ধ করে বিশ্বাস করতাম। এখন প্রথমে দেখি গবেষণাটা কে কমিশন করল।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

"বণিকের কড়ি কেনে সব,
কাব্য, লাস্য, প্রেম ও দু’ গালের টোল।
"

- কবিতো আগেই এ'কথা বলে গেছেন। এগুলোর তুলনায় বিজ্ঞানী-গবেষকরা এমনকি মহাপুরুষ বলুন!



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

সচল জাহিদ এর ছবি

ধন্যবাদ নৈষাদ। সমস্যাটাতো সেইখানেই, গবেষনা কে করল সেটা খুজ়তে যখন দেখব আইপিসিসি যা কিনা জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে জাতিসংঘের প্রকল্প সেটাকেত প্রথমেই অবিশ্বাস করা যায়না, সেজন্যই এদের আরো সাবধানী হওয়া উচিৎ ছিল।

----------------------------------------------------------------------------
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি
নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

চলুক

সচল জাহিদ এর ছবি

ধন্যবাদ প্রহরী।

----------------------------------------------------------------------------
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি
নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

রাফি এর ছবি

এই জাতীয় নিবন্ধ নিয়ে ব্যাপক বিভ্রান্তির মুখোমুখি হই বরাবরই। এই শুনি ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ মরুভূমি হয়ে যাবে; আবার এই শুনি ২০৭১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ ডুবে যাবে।

তবে খবরটা শুনে স্বস্তি পেলাম।।

চলুক

---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!

---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!

সচল জাহিদ এর ছবি

ধন্যবাদ রাফি।আসলে জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক গবেষনা সবই অতীতের উপাত্ত বিশ্লেষন করে পরিসংখ্যানতত্ত্ব বা গানিতিক মডেলের সাহায্যে ভবিষ্যতের ফলাফল সম্পর্কে অনুমান করা আর তাই সব কিছু একেবারে মিলে যাবে সেটা আশা করা ঠিক হবেনা তবে ট্রেন্ডটা সেই দিকেই যাবে সেটা ধরে নেয়া যায়। এক্ষেত্রে একটি কেন্দ্রীয় গবেষনাকেন্দ্রের উপর নির্ভর করতে হয়, আর আমাদের কাছে আইপিসিসি সেইরকম একটি কেন্দ্র। এখন আইপিসিস যদি তাদের রিপোর্টে এরকম একটি গলদ রেখেই তা প্রকাশিত করে তা আসলেই দুঃখজনক। যাই হোক বাংলাদেশের জন্য এটি স্বস্তিদায়ক সেটি ভেবে ভাল লাগছে।

----------------------------------------------------------------------------
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি
নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।