সন্তুষ্টির সীমা

স্পর্শ এর ছবি
লিখেছেন স্পর্শ (তারিখ: মঙ্গল, ২৮/০৫/২০১৩ - ৩:২৬অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

আমাদের সময়ে পরীক্ষায় এ, বি, সি, ডি না দিয়ে নাম্বার দেবার নিয়ম ছিলো। বোর্ডের পরীক্ষায় প্রাপ্ত বিভিন্ন বিষয়ের এসব নাম্বার যোগ করে একটা মেধাতালিকা করা হতো। সেই তালিকার প্রথম ২০ জনকে বলা হতো, ওরা স্ট্যান্ড করেছে। তো তেমনই এক ফলাফল ঘোষণার দিনে আমার এক বন্ধুর বাড়ীতে থম থমে অবস্থা। চুলায় হাঁড়ি চড়ছে না। বেচারা নাকি কয়েক মার্ক্সের জন্য প্রথম হতে পারেনি। শুধু বাড়ির লোকই না, এলাকাবাসীও হতাশ। ওদিকে আমি ফার্স্ট ডিভিশন পেয়েই বুক চিতিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছি। মিষ্টি বিতরণ চলছে। সালাম করে দুয়া সংগ্রহ চলছে। পথে দেখা, এক বড় ভাইয়ের সাথে। সে তৃতীয় বারের প্রচেষ্টায় পাশ করে গেছে। খুশিতে তার পরিবার হুলুস্থুল বাধিয়ে দিয়েছে। ইয়া বড় এক গরু কিনে এনেছে। সেটা জবাই দেবার উদ্দেশ্যে চেপে ধরতেই গাঝাড়া দিয়ে গেছে ছুটে। গরুর কাছে কেউ ঘেষতে পারছে না। সব মিলিয়ে উৎসব উৎসব পরিবেশ।

এতদিন পরে সেসব পুরানো কথাটা তুললাম সন্তুষ্টির সীমা নিয়ে কিছু বোঝাপড়া করতে। দেখুনই না, একেক রকম ফলাফল করে একেক জন একেক মাত্রায় সন্তুষ্ট, সুখী বা অসুখী। নাম্বার বেশি না কম, সেটা কোনও ব্যাপারই না। মুখ্য ব্যাপার হলো, ঐ ব্যক্তির সন্তুষ্টির সীমা কতটা? এ প্রসঙ্গে সুখ নিয়ে নানান সময়ে চোখে পড়া আন্তর্জাতিক জরিপের কথা মনে পড়ে। ওসব তালিকায় চোখ রাখলেই এক রকম অদ্ভুত অনুভূতি হয়। তামাশাটা কে করছে ঠিক বুঝে উঠতে পারি না। সুখী দেশের তালিকায় শীর্ষস্থানের আশেপাশেই থাকে বাংলাদেশ। যেমন, এটা [ ]। দেখুন কীভাবে উন্নতির শিখরে থাকা সব দেশকে সুখের পাল্লায় আমরা পিছনে ফেলে দিয়েছি। ২০১২ সালের জরিপ অনুযায়ী বিশ্বের ১১তম সুখী দেশের নাগরিক আমরা। এর আগে ২০০৯ সালে ছিলো ৩১ তম স্থান আর তারও আগে ২০০৬ সালে ৪১ তম। এই হারে সুখ বাড়তে থাকলে ২০১৫ সাল নাগাদ বিশ্বের ১ নাম্বার সুখী দেশ হওয়া আমাদের আর ঠেকায় কে?

তো, ঐ যে বড় ভাই কয়েকবারের প্রচেষ্টায় পাশ করে নিজের পুরো পরিবারকে সুখী করে তুলেছে, সেই সুখও শুদ্ধতম সুখ। আবার যে বন্ধুটি সেকেন্ড স্ট্যান্ড করে ফেলায় পুরো পরিবারের মন ভেঙ্গে গেছে, তাদের অসুখও শুদ্ধতম অসুখ। নিজের সন্তুষ্টির সীমা নির্ধারণ করার অধিকার এবং সেই অনুযায়ী নিজেকে সুখী বা অসুখী হিসাবে চিহ্নিত করার অধিকার প্রতিটা মানুষেরই আছে। পাঠক হয়তো ভাবছেন, এ সবকিছু স্বীকার করে নিলে একজন তৃতীয়পক্ষ হিসাবে অন্যের সুখ-সন্তুষ্টি নিয়ে আলোচনা করার কী আছে? যার যেমন ইচ্ছে সুখে থাক, কারো ক্ষতি না করলেই হলো- এটা মেনে নেবার পরেও আলোচনার কী থাকতে পারে, তা নিয়েই এই লেখা।

সেই সুখী মানুষের জামার গল্পটা মনে আছে? রাজামশাইয়ের দুরারোগ্য ব্যাধি। বৈদ্য নিদান দিলো, শুধু মাত্র কোনও সুখী মানুষের জামা পরলে এই রোগ সারবে। পেয়াদারা সারা রাজ্য খুঁজেও একজন সত্যিকারের সুখী মানুষ পেলো না। পরে বনের মধ্যে একজনের হাসি শুনে বোঝা গেল এই লোকই সুখী। কিন্তু হায়, সুখী মানুষটির কোনও জামা নেই। সে গাছের নীচে থাকে, বনের ফলমূল খায় আর এত সুন্দর পৃথিবীটাকে প্রাণভরে উপভোগ করে। তার চেয়ে আসলেই সুখী আর কেউ নেই। আরও-চাই, আরও-চাই, করার পরিবর্তে স্রেফ যা পাওয়া গেল তাতেই যে মহাসুখ, সেটা বোঝাতে আমাদের এই গল্প শোনানো হয়। বস্তুত, বাঙ্গালী জাতির মধ্যে এমন কাউকে খুঁজে পাওয়া মুশকিল যে কিনা শৈশবেই এই গল্প শোনেনি, বা শুনে অভিভূত হয়নি। আমাদের এই বঙ্গীয় ব-দ্বীপ এলাকার চিরায়ত দর্শনই যেন সুনিপুণ ভাবে গেঁথে ফেলা হয়েছে এই গল্পে। কিন্তু ভালো করে দেখলেই এর ফাকিটা ধরা পড়ে। এই গল্পের অবস্থাটা অনেকটা, বোরখা না পরার মানেই হলো বিকিনি পরে ঘুরে বেড়ানো মত। সুখী হতে হলে সব ছেড়েছুড়ে রীতিমত নাগা সন্ন্যাসী হতে হবে। শিখে নিতে হবে প্রায় কিছু না পেয়েই সন্তুষ্ট হবার উপায়। নেই কোনও মধ্য পন্থা! বোনটা মারা যাক আগুনে পুড়ে বা দালান চাপা পড়ে, ভাইটা গাড়ির চাকায় পিষ্ট হোক, তারপরও সকাল-সন্ধ্যা গাধার খাটুনি খেটে, রাস্তায় দুর্বিষহ অরাজকতা সহ্য করে বাড়ি ফিরে দু-মুঠো নুন-পান্তা জুটলেই আলহামদুলিল্লাহ । আমি বিশ্বের ১১তম সুখী। না, কেউ নিজেকে সুখী মনে করলে, বা অল্পতেই সুখ বোধ করলে, তাকে “তুই আসলে অসুখী” বলা আমার উদ্দেশ্য নয়। স্রেফ নিজেদের সন্তুষ্টির নিম্নসীমাটা আরেকটু বাড়িয়ে দেওয়া যায় কি না সেটাই বলতে চাই। যা কিছু পেলাম তাই নিয়েই সুখে থাকার দর্শন আমাদেরকে যে নিদারুণ শোষণের লক্ষ্যবস্তু করে তুলেছে সেটা নিয়ে কথা বলার সময় এসেছে।

পরীক্ষায় নাম্বার পাবার উদাহরণেই চলে যাই। অল্প নাম্বার পেয়ে কেউ সুখী হতেই পারে। (যেমন আমি হই)। কিন্তু এ ধরনের ধ্যান ধারণা যদি সব ছাত্রের মধ্যে ঢুকে যায়? (একেবারে সবার মধ্যে) তাহলে বড় হয়ে ভালো ডাক্তারটা হবে কে? টেনেটুনে পাশ করা জ্ঞান দিয়ে ডাক্তারি করলে চলবে? যে বড় ভাইয়ের পরিবার সেদিন তাদের ছেলে কোনও রকম পাশ করাতেই সুখী, কাল তাদের কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে পড়াশুনায় গড়িমসি করা টেনেটুনে পাশকরা ডাক্তারের কাছে কি সে যেতে চাইবে? ভুল চিকিৎসার কবলে পড়ে, তার ঐ অল্পতেই তুষ্ট হবার সুখ উড়ে যাবে নিমেষে। অবশ্য বলা যায় না, অসুখে মারা পড়তে পড়তেও সে নিজেকে সবার চেয়ে সেরা সুখী হিসাবে দাবী বা অনুভব করতেই পারে। কিন্তু এই লেখাটা ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি নিয়ে নয়। তাই আর সেই আলোচনায় যাবো না। এসব বলার উদ্দেশ্য হলো, সবাই মিলে সন্তুষ্টির সীমা কমিয়ে ফেলাটাও সবাই মিলে সারাক্ষণ “আরও-চাই আরও-চাই” করতে থাকার চেয়ে কোনও অংশেই কম ভয়ঙ্কর নয়। মাঝখান থেকে অল্পতেই সুখী হওয়া মানুষকে খুব সহজে শোষণ করা যায়। আমার তো মনে হয়, এইসব “সুখী মানুষের জামা” মার্কা গল্প এত প্রচারিত হবার পিছনে শোষণ যোগ্য একটা জাতি গড়ে তোলার উদ্দেশ্য ভালোমতোই কাজ করেছে।

এ প্রসঙ্গে মনে পড়ে রসাল ও স্বর্ণ লতিকা নামক কবিতাটা। রসাল হলো আমগাছ। তাতে সুমিষ্ট ফল ধরে। সে মহীরুহ। মাথা উঁচু করে দাড়িয়ে থাকে বনের মধ্যে। তার গর্বের শেষ নেই। স্বর্ণ লতিকা পরগাছা লতা। তাই সে তাকে তাচ্ছিল্য করে। একদিন প্রচণ্ড ঝড় আসে, আর সেই ঝড়ের আঘাতে রসাল ভেঙ্গে পড়ে। কিন্তু স্বর্ণ লতিকা টিকে যায় ঠিকই। মাইকেল শেখাতে চেয়েছিলো বেশি গর্ব করলে পতন। কিন্তু কই, রসালের পতন তো তার গর্বের কারণে হয়নি, হয়েছে এই কারণে যে সে অনেক বড় ছিলো। তাই পাঠকের কাছে মেসেজ পৌছায়, বেশি বড় হতে গেলে পতন, তারচেয়ে আগাছা পরগাছা হয়ে বেঁচে থাকলে টিকে যাবে তুমি। এবং তা-ই হয়ে চলেছে। আমাদের দেশে মহীরূহ হয়ে ওঠার সাধনা কম। পরগাছা জীবন নিয়ে সুখী মানুষের জামা পরে কাটিয়ে দেবার সাধনাই বেশি। বড় হলে, ফলদায়ী, ছায়াদায়ী, হলে ঝড় ঝাপটাও তোমার গায়ে বেশি লাগবে, এবং কখনো সখনো তুমি ভেঙ্গে পড়তেই পারো। কিন্তু সেই ভেঙ্গেপড়াও যে, স্বর্ণ লতিকার পরজীবী জীবনের চেয়ে হাজার গুনে ভালো সেটা আর কেউ বলছে না।

কিছুমিছু পেলেই সন্তুষ্ট হয়ে না যাওয়ার যে সুফল আছে তার একটা উদাহরণ এখানে প্রাসঙ্গিক। যেমন আমাদের সাকিব-আল হাসান। দেশের সেরা ক্রিকেটার হয়েই সে ক্ষান্ত দেয়নি। পুরো বিশ্বের সেরা ক্রিকেটারের স্থান সে ছিনিয়ে নিয়েছে। আশরাফুল বা আরও অনেকের মত জাতীয় দলে ঠাই পেয়েই, বা খেলায় “সম্মানজনক হার” পেয়েই খুশিতে বগল বাজানো বাদ দিয়ে সে হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ দলের দৃঢ়তার প্রতীক। পুরো বাংলাদেশের জন্যই একজন অনুপ্রেরণার উৎস। তার সঙ্গের আরও অনেক খেলোয়াড়ই হয়তো প্রাথমিক সাফল্যের পরে গা-ঢিলা দিয়েছে। কিন্তু সেটা তার বেলায় ঘটেনি। এবং আমি নিশ্চিত, তার এই অর্জন, শুধু ক্রিকেটই না, আরও অনেক ক্ষেত্রেই আমাদের ছেলে-মেয়েদের অনুপ্রেরণা যোগাবে।

শ্রেষ্ঠত্ব শুধু বিদেশীদের অর্জনের বিষয় নয়, আমাদেরও ওতে ন্যায্য দাবি আছে। বঙ্গদেশে জন্ম নেওয়া প্রকৌশলী এফ আর খানকে বলা হয় স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ারিং এর আইনস্টাইন। সে-ই প্রথম স্কাই স্ক্র্যাপার বানানোর কৌশল বের করে। এর আগে শতশত তলা একটা দালান দাড়া করিয়ে রাখা স্রেফ অসম্ভব বলে মনে করতো সবাই। আজ তার কৌশল প্রয়োগ করে সারা পৃথিবীতে শতশত আকাশ চুম্বী স্কাই স্ক্র্যাপার। আর আমাদের দেশে ছয়তলা ভবনই ভেঙ্গেপড়ে অহরহ। স্কাই স্ক্র্যাপারের কী দরকার? ভাঙ্গা কুটিরেই আমরা সুখী। নিজের ভিতর থেকে উচ্চাকাঙ্ক্ষা দূর করতে গিয়ে, আমরা সবরকম আশা-আকাঙ্ক্ষা-ই দূর করে বসে আছি। নজরুলের ভাষায়,

“বাহিরের দিকে মরিয়াছি যত

ভিতরের দিকে তত,

গুনতিতে মোরা বাড়িয়া চলেছি

গরু-ছাগলের মত।”

আমি বলছি না, যে এখন আদাজল খেয়ে স্কাই স্ক্র্যাপার বানাতে উঠে পড়ে লাগতে হবে। কিন্তু ভেবে দেখুন, আমাদের ভিতরে (জীবিত) বিভিন্ন ক্ষেত্রের (চলচ্চিত্র, সঙ্গীত, চিত্রকলা, লেখালিখি, প্রকৌশল, চিকিৎসা, বিজ্ঞান, গণিত, অর্থনীতি, ব্যবসা, রাজনীতি ইত্যাদি ইত্যাদি) বিশ্বসেরা মানুষ কম হলেও আমাদের সমস্যাগুলো সবই বিশ্বসেরা। যেমন- কদিন পরে সমুদ্রের উচ্চতা বাড়লে সবার আগে ডুববো আমরা। এত ঘন জনবসতিতে প্লেগ টাইপের কোনও মহামারি ছড়ালে সবার আগে নির্মূল হবো আমরা। পাশের দেশ, আমাদের নদীনালাগুলো বন্ধ করে দিলে শুকিয়ে কাষ্ঠ হয়ে যাবো সবার আগে। এত জনসংখ্যাকে জনশক্তিতে রূপান্তর করার জন্য যে ধরনের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে, তেমন সমস্যা পৃথিবীর আর কোনও দেশের আছে কি না সন্দেহ। এইসব সমাধানের জন্য, প্রতিটা ক্ষেত্রের সাকিব আল হাসানের মত বিশ্বসেরাদের দরকার আমাদের। সেই সঙ্গে প্রতিটা মানুষের মধ্যে স্বর্ণ লতিকার জীবন ছেড়ে, একটু ফলদায়ী হবার স্পৃহা থাকা দরকার। বোঝার সময় এসেছে, বড় হবার আকাঙ্ক্ষা মধ্যে লজ্জার কিছু নেই। এবং যে সত্যই বড়, তার মুখে একটু আধটু বড়াইও মানায়।

একটা জাতির মধ্যে ঠিক কতটুকু উচ্চাকাঙ্ক্ষা থাকা উচিত, সেটা নিশ্চিত করে বলা কঠিন। কিন্তু আমাদের মধ্যে যে উচ্চাকাঙ্ক্ষার চাষবাস আরেকটু বাড়ানো দরকার, সেটা নিশ্চিত করেই বলা যায়। কোথায় গিয়ে থামতে হবে, সেটা বলবে সেই পরিবর্তিত সময়ের মানুষেরা। অন্তত এখন, আমাদের আর খুব অল্পতেই তুষ্ট থাকার উপায় নেই।

সূত্র-
[১] http://en.wikipedia.org/wiki/Happy_Planet_Index


মন্তব্য

দুষ্ট বালিকা এর ছবি

বাহ! সবসময়ের মতোই, তোমার লেখায় এই বিশেষনটা চলেই আসে! হাসি

**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।

মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।

স্পর্শ এর ছবি

থ্যাঙ্কইউ। হাসি

বানান ঠিক করে দেবার জন্য কৃতজ্ঞতা।


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...

ইয়াসির আরাফাত এর ছবি

অদ্ভুত সুন্দর একটা লেখা স্পর্শ। চিন্তা করবার মত এত অসংখ্য উপদান আছে এই লেখাটায় যে, মুগ্ধ না হয়ে পারা যায় না।

অল্পে তুষ্ট হবার মানসিকতা দরিদ্র আমাদের শেখানো হয়েছে মানসিক প্রশান্তির জন্য, কিন্তু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে এই অলীক সুখ আমাদের মেরুদন্ড ভেঙে দিয়ে গেছে।

স্পর্শ এর ছবি

ধন্যবাদ। লেখাটা ভাবাচ্ছে জেনে সত্যিই আনন্দিত। হাসি

এক বাক্যে লেখার মূল মেসেজটা দারুণভাবে তুলে ধরেছেন।


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...

ফ্রুলিংক্স এর ছবি

শুরু করতে হবে তৃনমূল থেকে। আগামী প্রজন্ম স্বপ্ন দেখা ভুলে গেছে। শুধু কোনমতে পেটে-ভাতে বেচে থাকাই এখন সুখ।
জার্মানীতে একটা টিভি পোগ্রামে দেখেছিলাম বাচ্চারা সেই স্কুল থেকেই স্বপ্ন দেখে BMW, Audi, Mercedes চালানোর। আমাদের অবস্হা তো .......

স্পর্শ এর ছবি

সবাই বিএমডাব্লু চালানোর আকাঙ্খা করতে শুরু করুক তা আসলে বলতে চাইনি। আমাদের আশা আকাংক্ষা যে তলানিতে ঠেকেছে, সেটা আরেকটু বাড়ানো যায় কি না তাই নিয়েই আলোচনা।

আমাদের দেশ একটা দুঃসংবাদ উৎপাদনের কারখানায় পরিনত হচ্ছে দিনেদিনে, ওদিকে আমরা (আর্গুয়েবলি) ১১ তম সুখি জতি। এই অক্সিমোরণ সম্ভব হচ্ছে স্রেফ সকল আশাআকাংক্ষা জলাঞ্জলি দেবার বিনিময়ে। আমরা স্বপ্নদেখতেই ভুলতে বসেছি।


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

চলুক

স্পর্শ এর ছবি

ধন্যবাদ।


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...

রায়হান আবীর এর ছবি

"সুখেরই পৃথিমী, সুখেরই অভিনয়
যত আড়াল রাখো, আসলে কেউ সুখী নয়"- টাইগার বাচ্চু।

স্পর্শ এর ছবি

ছোটবেলায় এই গানের অর্থ বুঝতাম না।


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...

প্রোফেসর হিজিবিজবিজ এর ছবি

"আমাদের দেশে মহীরূহ হয়ে ওঠার সাধনা কম" - এই কথাটা কিন্তু আমাদের রাজনীতিবিদদের ক্ষেত্রে সত্যি না - তারা বরাবরই মহীরূহ হয়ে ওঠার সাধনায় লিপ্ত, আর তাদের সাধনার বলি সাধারণ মানুষেরা।এই সাধারণ মানুষদেরকে সাধনা করা শেখাবে কে? অসাধারন লাগলো লেখাটা ভাই -
এই লেখাটা পড়ে আমার কিন্তু সন্তুষ্টির লোয়ার লিমিট বেড়ে গেল - এখন নিয়মিত এই রকম লেখা পড়তে না পারলে আর সন্তষ্ট হতে পারবো না। হাসি

স্পর্শ এর ছবি

ধন্যবাদ, পড়া ও মন্তব্যের জন্য। হাসি
আমি আসলে তাজউদ্দিনের মত রাজনীতিবিদকে "বড়" রাজনীতিবিদ হিসাবে গন্য করতে চাই।


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

লেখার শুরুটা শেষের সাথে কনফ্লিক্ট করে। শুরুতে বলা হয়েছে এক্সপেক্টেশনের মাপের উপর খুশী হবার মাত্রা নির্ভর করে। উদাহরন হিসেবে একটি পরীক্ষার ফলাফলের ঘটনা বর্ণনা করা হয়েছে, যেটা পড়ে মনে হতে পারে এক্সপেক্টেশন কম রেখে খুশী হতে পারাটা একটি পজিটিভ বিষয়। শুরু দিকে এরকম অনুভুতিই হলো। পরে এসে মেসেজ বদলে গেলো। সেখানে বলা হলো এক্সপেক্টেশন বেশী নেই বলেই আমাদের এই অবস্থা। প্রশ্ন হলো শুধু এক্সপেক্টেশন থাকলেই কি হবে? উদাহরণ স্বরূপ যে পরীক্ষার্থী একাধিক বার ফেইল করে একবার পাশ করেছে সে কি স্ট্যান্ড করার এক্সপেক্টেশন রাখলেই ভালো করতো? আর উঁচু এক্সপেক্টেশনের কারনে যে হতাশা আর দুঃখী মানুষের সংখ্যা বাড়ত সেটা কি ভালো হতো?

স্পর্শ এর ছবি

প্রথম অংশটা আসলে মেসেজ না। বরং বর্তমান অবস্থার একটা বর্ণনা। এক্সপেকটেশন কম থাকলে সহজেই সুখি হওয়া যায়, সেটার কিছু বাস্তব উদাহরণ। কিন্তু এই লেখার উদ্দেশ্য এটা দেখানো, যে এক্সপেক্টেশন কমিয়ে কমিয়ে সুখের মাত্রা বাড়ানোটা "সাস্টেইনেবল না"। স্পেশালি, একটা জাতির সবাই যখন সেই নীতি মেনে চলতে থাকে।

প্রশ্ন হলো শুধু এক্সপেক্টেশন থাকলেই কি হবে? উদাহরণ স্বরূপ যে পরীক্ষার্থী একাধিক বার ফেইল করে একবার পাশ করেছে সে কি স্ট্যান্ড করার এক্সপেক্টেশন রাখলেই ভালো করতো?

দেখুন, এটা কিন্তু আবার সেই বুরখা বনাম বিকিনির মত হয়ে গেল। যে পরীক্ষার্থি ৩ বারে পাশ করছে, সে তার মানসিক অক্ষমতার কারণে না স্রেফ অবহেলার কারণে এমন করছে। তার পরিবার এবং সে নিজেও তার কাছে বেশি কিছু এক্সপেক্ট করেনি। তাই বলে তাকে একেবারে "স্ট্যান্ড" করার জন্য লড়াই করতে হবে সেই দাবি করছি না।

আপনি যদি দেশে লোকাল বাসে ওঠেন দেখবেন, এম্নিতেই ঘন্টার পর ঘন্টা দুঃসহ জ্যামে আটকে থাকে। তার পরেও মাঝে মাঝে ফাকারাস্তা পেয়েও হয়তো দাড়িয়ে থাকে চালক। কারণ পাশের আরেক গাড়ির চালকের সাথে সে গল্প করছে। এবং সবচেয়ে বড় ব্যাপার, কোনো যাত্রী এ নিয়ে কিছু বলছে না। সবাই ঝিম মেরে বসে আছে। এই অবস্থা সকল ক্ষেত্রেই। আমরা ধরেই নিয়েছি এমনটাই আমাদের প্রাপ্য।আমাদের আমাদের সন্তুস্টির থ্রেশহোল্ড কমছে ক্রমাগত। আমরা শোষণের উপযুক্ত থেকে উপযুক্ততর জাতিতে পরিণত হচ্ছি। তার উপর বড় বড় সব সমস্যা আছে,(যেগুলো বিপুল জনগোষ্ঠিকে বা পুরো জাতিকে ইফেক্ট করে) যেগুলো সমাধান করতে এতকিছু শিখতে, এত পথ হাটতে হবে, যে অল্পতে সন্তুষ্ট হওয়া ব্যাক্তি স্রেফ সেই স্কিল অর্জনই করতে পারবে না। এই বিভিন্ন ক্ষেত্রে (ক্রিকেট বাদে, চলচ্চিত্র থেকে বিজ্ঞান) বিশ্বমানের এক্সপার্ট আমাদের দেশে জনসংখ্যা অনুপাতে (এমনকি শিক্ষিত জনসংখ্যা অনুপাতেও) এত কম হবার একটা কারণ, এই লো অ্যাচিভিং মানসিকতা।

শেষে আবার বলি, এই লেখায় বলতে চাইনি যে সবাইকে অতি উচ্চাকাংখি হতে হবে। বলতে চেয়েছি, এখন আমাদের আশা আকাংখার যে থ্রেশহোল্ড, সেটা আরেকটু বাড়ানোর সময় এসেছে। কারণ, অর্জনের জন্য কতটুকু খাটবো, এক্সপেক্টেশনের মাত্রা, তার একটা গুরুত্বপূর্ণ চলক।


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...

আশালতা এর ছবি

যেটুকু বুঝলাম, লেখায় 'থিংক বিগ' বলতে চাইছেন। তবে আমার মনে হয় নিজের সামর্থ্য ক্ষমতা ইত্যাদি ঠিকঠাক না জেনে শুধু বড় করে ভাবলেই সেটা খুব কাজে দেয়না। বরং চাওয়ার ক্ষেত্রে একজন মানুষ কতটা ফোকাসড থাকছে সেটাই বেশি কাজে আসে। আমাদেরকে আসলে ছোটবেলা থেকেই ফোকাস করা শেখানো হয়না। সব্বাই শুধু ডাক্তার আর ইঞ্জিনিয়ার এই দুই পেশাজীবী হবার এইম মুখস্ত করে। এই বাঁধা গতের বাইরে সত্যি সত্যি নিজে থেকে কোথাও গিয়ে পৌঁছবার কথা কম মানুষই ভাবে।

----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি

স্পর্শ এর ছবি

তবে আমার মনে হয় নিজের সামর্থ্য ক্ষমতা ইত্যাদি ঠিকঠাক না জেনে শুধু বড় করে ভাবলেই সেটা খুব কাজে দেয়না।

আমি মনে করি মানুষ একটা অপার সম্ভাবনাময় প্রাণী। সত্যিই হৃদয় থেকে চাইলে, এবং তার জন্য কঠোর পরিশ্রম করলে সে যে কোনো কিছুই অর্জন করতে পারে।


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...

অতিথি লেখক এর ছবি

ডাহা সত্যি কথা। যে একবার পরীক্ষা ফেল করেছে সে যদি স্ট্যান্ড করার স্বপ্ন দেখে তা অসম্ভব বলে শুরুতেই উড়িয়ে দিলে হবেনা। এক্ষেত্রে যেটা দরকার সেটা হল ফেল থেকে স্ট্যান্ড করতে এর মধ্যে যে ৪১ টা ধাপ আছে সেটা জানতে হবে, বুঝতে হবে যে এক এক টা ধাপ পার হয়ে আসতে হবে। যার স্ট্যান্ড করার ক্ষমতা নাই সে নিজে বুঝতে পারবে যে ধাপ - ১১ (উদাহরণসরূপ) তার শেষ ধাপ। অথবা সে হয়তো স্ট্যান্ড করতে পারবে। আগেই যদি সে মনে করে সে পারবে না তাহলে সে হইত সেই ১১ ধাপেও যাওয়ার চেষ্টা করতনা। আমি মনে করি আমাদের স্কুলে আমরা এগুলি শিখাতে পারি।

শূনতে শিখতে হবেঃ স্কুলে টিচার প্রশ্ন করলে আমরা কে কত তাড়াতাড়ি হাত তুলে উত্তর দিতে পারি সেটাই ক্রেডিট। আমাদেরকে প্রশ্ন ঠিকভাবে শূনতে হবে - এটা শেখাতে হবে। আমরা জানিই না কিভাবে শূনতে হয়।

বলতে শিখতে হবেঃ স্কুলে টিচার প্রশ্ন করলে যারা হাত তুলে না তাদের কি করা হয়? হয় শাস্তি অথবা অগ্রাহ্য। যারা হাত তোলেনা তাদের কি কোনদিন টিচার ওই প্রশ্ন সম্পর্কে আর কিছু জিজ্ঞেস করে? যারা জানেনা তারা কেন জানেনা এটা নিয়ে কোন টিচারের মাথাবেথা নাই। যারা উত্তর জানে তারা বলতে পারেই। যারা জানেনা তাদের কে বলতে শিখতে হবে।

জানতে হবে আমি কি জানিনাঃ না জানা আর না পারা টা কে খারাপ চোখে দেখা হয়। যারা জানেনা তারা জানার জন্য তাই এগিয়ে আসেনা। এগিয়ে আসা টা উৎসাহিত করা হয় না। টিচারকে প্রশ্ন করতে আমরা ভয় পাই - পাছে লোকে কিছু বলে।

এগুলি এক দিনে হবেনা। সময় লাগবে। হবে।

ডিম পোচ

স্পর্শ এর ছবি

ধন্যবাদ। শুধু স্কুলেরপড়াশুনা-ই নয়, সকল ক্ষেত্রেই আরেকটু উদ্যোমী হওয়া দরকার। এমনি এমনিতে তো হবে না। সরকারী নীতিমালা প্রণয়ন করেও হবে না। এর জন্য চাই সংস্কৃতিক পরিবর্তণ।


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...

অতিথি লেখক এর ছবি

ঠিক বলেছেন। স্কুলে, বাসায় সব খানে ছোটবেলা থেকে ঝুঁকি এড়িয়ে সহজ পথে চলতে শেখানো হয়। কমফোরড জোন বড় করার তেমন কোন চেষ্টা করা হয়না।

অতিথি লেখক এর ছবি

ভালো লাগলো।।।।। আসলেই আমরা বড় কিছু ভাবতে ভুলে গেছি, যে দেশে বেঁচে থাকা সমস্যা সেখানে আর কি হবে?

স্পর্শ এর ছবি

ধন্যবাদ পড়ার জন্য। মরতে মরতেও ভাবতে শিখতে হবে, এ ছাড়া যে বাঁচার উপায় নেই।


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...

রাগিব এর ছবি

প্রথম অংশের কথাগুলা পড়ে মনে হয়ে গেলো এক ভয়াবহ খবরের কথা, খুব ছোটবেলায় টিভির নিউজে দেখেছিলাম। এক অন্ধ তরুণের সাক্ষাতকার নেয়া হচ্ছিলো। তার ভাষ্য - "আমি এসএসসিতে ফার্স্ট হয়েছিলাম। আমার বন্ধু ফার্স্ট স্ট্যান্ড করতে পারেনি, তাই এসিড ছুড়ে মেরে আমাকে অন্ধ করে দেয়"।

আমি অবশ্য কনফিউজড, এইটা আসল ঘটনা কি না, কারণ ঐ একটা নিউজ ছাড়া আর কোথাও এটা দেখিনি, শুনিনি। কাজেই এটা আমার ফলস মেমরি হতে পারে, কিন্তু এখনো যেনো সেই অন্ধ মেধাবী তরুণের ম্লান হাসিটা মনে পড়ে। সিনিয়র কেউ কি এই ঘটনাটার কথা জানেন?

----------------
গণক মিস্তিরি
জাদুনগর, আম্রিকা
ওয়েবসাইট | শিক্ষক.কম | যন্ত্রগণক.কম

নজমুল আলবাব এর ছবি

হু ঠিকাছে। ঘটনাটা এরকমই। সাদা শার্ট আর কালো চশমা পরা লোকটার কথা মনে আছে। আমাদের ছেলেবেলার বিটিভির ইন্টারভিউ।

স্পর্শ এর ছবি

কী ভয়ানক ব্যাপার! সেই বন্ধুর কী শাস্তি হয়েছিলো পরে? মনোবিকারগ্রস্থ। এই ছেলেটা সেকেন্ড ডিভিশন, আর ঐ পশুটা থার্ড ডিভিশন পেলেও, এসিড মেরে দিতো। ভিতরে ভিতরে এই ধরনের ঘৃণার বিজ না থাকলে এরকম করা যায় না।


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...

তারেক অণু এর ছবি
স্পর্শ এর ছবি

পড়ার জন্য ধন্যবাদ।


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...

অতিথি লেখক এর ছবি

বেশ সুখেই ছিলাম, দিলেন তো সে সুখের বারটা বাজিয়ে!

আব্দুল্লাহ এ.এম.

স্পর্শ এর ছবি

হাসি


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...

দ্রোহী এর ছবি

লাইপ ছাকস!

জোহরা ফেরদৌসী এর ছবি

দু’টোই সত্যি।

১.অসম্ভবকে সম্ভব করার ইচ্ছাশক্তি। অন্ততঃ চেষ্টা না করেই হতোদ্যম না হওয়া।
২. বাস্তবতা অনুধাবন করা।

প্রথমটি না থাকলে মানুষ আগাতো না। আবার দ্বিতীয়টি না থাকলে মানুষ ব্যর্থ হলে উঠে দাঁড়াতে পারতো না। ফেইলিওর ইজ দ্যা পিলার অফ সাকসেস, কে যেনো বলেছিল। ভুলে গিয়েছি। সেই কবেকার এইম ইন লাইফ রচনার জন্য মুখস্থ করেছিলাম লইজ্জা লাগে

__________________________________________
জয় হোক মানবতার ।। জয় হোক জাগ্রত জনতার

স্পর্শ এর ছবি

পড়ার, ও মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...

স্পর্শ এর ছবি

হা হা হা, দেখতেই আছি এইটা! মানুষের ক্রিয়েটিভিটির সীমা নাই।


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

গড়াগড়ি দিয়া হাসি

Ahsan এর ছবি

উত্তম, খুবই উত্তম লেখা এবং ভাবনা।

আমি প্রায়ই ক্লাসে এক ইচ্ছা দেবতের কথা বলি।
(সোর্স মনে নাই; ঝাপসা ভাবে মনে পরে ক্লাস নাইনে পড়া শঙ্কর এর সীমাবদ্ধতা র কথা)।

সব মানুষের জীবনেই একবার এর জন্য হলেও ইচ্ছা দেবতের পদার্পণ ঘটে। সেসময় আপনি যে বস্তু পাবার ইচ্ছা পোষণ করে থাকেন না কেন উনি তা পুরন করেন। কারো কারো জীবনে উনি একাধিকবার আসেন। লক্ষ্য করে দেখবেন হয়ত কোন বর্ষণ মুখর বিকালে আপনার হয়তো গরম গরম বাদাম ভাজা খেতে ইচ্ছা করলো, অমনিই শুনলেন “এই বাদাম! গরম বাদাম!!” – একদম আপনার দরগোঁড়াই।
তাইতো বলি, সবসময়ই উচ্চ ইচ্ছা, উচ্চ বাসনা পোষণ করো। বলাতো যায় না কখন ‘ইচ্ছা দেবতার’ সময় হয়। গরম বাদাম খাওয়ার মতো তুচ্ছ কাজে ঐ সুযোগ হাতছাড়া করা সমুচিত নয়।

আহসান

এক লহমা এর ছবি

দেশের/সমাজের/সংগঠনের পরিপ্রেক্ষিতে চাহিদার মান অবশ্য-ই উঁচু রাখা উচিত। নুনের ছালা হয়ে খুশী থাকার সাধনায় মজে থাকলে লাথি-ঝাঁটাই কপালে জুটবে। ব্যক্তি-মানুষের ক্ষেত্রে ব্যাপারটা একটু জটীল - একটা সাম্য/সামঞ্জস্যর হিসাব-নিকাশ-ও এসে যায়। কিন্তু সেখানে-ও ন্যূনতম চাহিদাতেই সন্তুষ্ট থাকলে সন্যাসীর চলে যেতে পারে, বাদ বাকিরা নিজেরর কাছে নিজের যে দাবী সেটা না বাড়াতে পারলে অন্যের বোঝা হয়ে ওঠার সম্ভাবনাটা বেড়ে যায়।

কালামিয়া এর ছবি

হুমম চিন্তিত
নিজেরে আর আশেপাশের মানুষগরে লইয়া নতুন কইরা ভাবতে হইব।

দীপ্ত এর ছবি

লেখাটা খুবই মনে ধরল। অল্পতে সন্তুষ্ট থাকতে অভ্যস্ত হয়ে যাওয়ার "সদ্গুণ"এর অন্য দিকটা নিয়েও ভাবার সময় এসেছে মনে হয়। সবাই যদি অল্পেই সন্তুষ্ট হয়ে পড়ে, তাহলে দেশের প্রগতি, প্রবৃদ্ধি বা উন্নতি কী করে অর্জিত হবে সেটা ভাবা দরকার।

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

দারুণ ভাবনা। চিন্তাজাগানিয়া লেখা। মূল বক্তব্যের সাথে ভীষণভাবে একমত। চলুক

অতিথি লেখক এর ছবি

বাঙালি আসলে বহুকাল ধরে আলসে । আলসেমি এখন আমাদের জন্মগত বৈশিষ্ট্য হয়ে গেছে । যা হাতের কাছে আসে, নেই; যা মুখের উপর আসে, খাই... এই করে করে যুগের পর যুগ কেটে যাচ্ছে সুখী অলসতায় । ফলে নিজের মনকে প্রবোধ দেওয়ার একটা উপায় বের করেছি আমরা আমাদের সন্তুষ্টির সীমাকে দারিদ্র্য সীমার নিচে আটকে রেখে । আমাদের আর চাওয়া নাই, তাই আমরা আর বড় হতে পারি না ।
বৃত্তের বাইরের লেখার জন্য অশেষ ধন্যবাদ ! হাততালি

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।