ভালোবাসা দিবসের গল্প....

সুমন চৌধুরী এর ছবি
লিখেছেন সুমন চৌধুরী (তারিখ: শুক্র, ১৫/০২/২০০৮ - ৪:৫০পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

১৯৯৩ তেই মনে হয় শুরু হলো ঢাকায় ভালোবাসা দিবস। শুরু যদি নাও হয়ে থাকে অন্তত আমি তখনই প্রথম শুনি এই বস্তুর কথা। ভালোবাসার কথা আশৈশব জানি নাটক-সিনেমা ছায়াছন্দর কৃপায়। কিন্তু দিবস লাগিয়ে তার মহিমা শিফট করার বিষয়টি আমার কাছে সেবারই প্রথম। ১৯৯৩ তে আমি এসএসসি পাশ করা সগুম্ফ কিশোর। পড়ি তেজগাঁ কলেজে। মাথাভর্তি জটা পাকানো চুলের ফাঁকে ফার্মগেটের মৌলিক ধূলীকণার সাথে আরো গভীরে অধিষ্ঠাণ করেন পাথুরে আর ধাতব সঙ্গীতের কূশলীরা। তারই ফাঁকে ফাঁকে চলে রাস্তা পেরিয়ে প্রমীলা ম্লেচ্ছ মহাবিদ্যালয় ঘেঁষে ঝিঁঝিঁখেলার মাঠচারণের অনুশীলন। কিছুকাল পরে অনুশীলন বাদ দিয়ে বিজ্ঞান কলেজের জ্ঞানী বন্ধুদের সাথে পার্শ্ববর্তী সুরুচী হোটেলে চা-বিড়ি খাওয়ায় মন দিলাম। বন্ধু নেছার গেলো ফেঁসে। তার বাড়ি পাবনা। এমনিতে ভালো ভদ্রলোক। কিন্তু কিছু বিশেষ শব্দ তার বেশীরভাগ বাক্যকেই অলঙ্কৃত করে। তাঁকে একদিন সুরুচীর সিঙ্গারা আর চা-বিড়ি খাইয়ে ২ ঘন্টা ধরে বোঝানো হলো বাগযন্ত্রে ফিল্টার না বসালে তার আর মুক্তি নেই। তারাবাত্তি দেখিয়ে ইলোরা হারিয়ে যাবে সোলায়মানের ঘরে। অন্যদিকে মনের কথা যতদ্রুত সম্ভব বলে ফেলতে হবে নাইলে তার আছর পরীক্ষার উপরে পড়বে। এগুলো সবই ১৯৯২ সালের ডিসেম্বর-জানুয়রীর কথা। ৯৩ সালের ফেব্রুয়ারীর শুরুতে শুনলাম ভালোবাসা দিবসের কথা। ১৪ ফেব্রুয়ারী পোলাপানের মধ্যে দেখি দারুণ উত্তেজনা। আমার তেমন উৎসাহ ছিলোনা। বাড়ি গিয়ে ঘুম দিলাম। পরদিন শুনি নেছারের বৈপ্লবিক কান্ড। কলেজে ঢোকার মুখে তিনি ইলোরাকে পথ আটকে বলেই ফেলেছেন, আমি বাড়া তোমাক ভালোবাসি....


মন্তব্য

অপালা এর ছবি

হা হা হা হা হা হা

তোমারে কে কইছে ঘুমাইতে
সাইলেন্সার দিয়া দিবা না লগে একটা

সুমন চৌধুরী এর ছবি

আরে বহুদ্দিন পর আইলা। থাকো কই?



ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ

অপালা এর ছবি

আগের জায়গায় ই থাকি,

তোমার ও তো কোন খোজ খবর নাই

সুমন চৌধুরী এর ছবি


চিপায় ছিলাম....



ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ

থার্ড আই এর ছবি

ভাই তখনতো আমি আরো ছোট। ভালোবাসার নাম নেয়াও পাপ ! তবে যায়যায়দিন পত্রিকার খবর ঠিকি পাইছিলাম। তারপর বালিশের নীচে লুকিয়ে লুকিয়ে ভালোবাসার নিষিদ্ধ গল্পগুলো পড়তাম।
---------------------------
স্বপ্নকে ছুঁতে চাই সৃষ্টির উল্লাসে

-------------------------------
স্বপ্নকে ছুঁতে চাই সৃষ্টির উল্লাসে

সুমন চৌধুরী এর ছবি

বালিশ? দেঁতো হাসি



ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ

অমিত এর ছবি

৯৩ই তো মনে হয়। এর আগে শুনি নাই, শুনলেও ধাতব আর পাথুরে আবরণ ভেদ করে নাই। সেবার ছিল প্রথম আর এইবার করলাম ১৬তম। মানুষ একই। আফসোস করুম না খুশি হব, বুঝতারছি না !

সুমন চৌধুরী এর ছবি

মানুষ একই! বাহ্ বাহ্..সাধু...



ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

তিনি ইলোরাকে পথ আটকে বলেই ফেলেছেন,

দেঁতো হাসি

ধুসর গোধূলি এর ছবি
সুমন চৌধুরী এর ছবি

কোন্টা?



ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ

ধুসর গোধূলি এর ছবি
সুমন চৌধুরী এর ছবি

দেঁতো হাসি



ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ

নিঘাত তিথি এর ছবি

কবে প্রথম শুনেছি সেই সাল মনে নেই ,তবে অনেক পিচ্চী ছিলাম আর এইসব শব্দ মুখে নেয়া ঠিক না জাতীয় ছিলো বয়সটা। সম্ভবত "ভোরের কাগজ" পত্রিকায় আর্টিকেল বেরিয়েছিলো ভ্যালেনটাইন্স ডে নিয়ে। স্কুলে গিয়ে সবাইকে দিবসটার মাহাত্ম্য বুঝাতে চেষ্টা করছিলাম। বন্ধুদের মধ্যে আমি ছাড়া তখনও আর কেউ জানে না বলে আমার সে কি ভাব!
----------------------------------------------------
আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ

----------------------------------------------------
আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ

সংসারে এক সন্ন্যাসী এর ছবি

ভালোবাসা নাকি ভালোবা... দিবসের গল্প? হো হো হো

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু? চিন্তিত

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

আপনি তো বেচারার মুখে Disastrous Impulse Response লাগায় দিসিলেন দেখি!!

সুমন চৌধুরী এর ছবি

হ। এইজন্যই কথা পেটে আটকাইয়া রাখা খারাপ।



ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ

শ্যাজা এর ছবি

তা বেশ।

কিন্তু সব অন্যের নামে চালানো ভাল না।


---------
অনেক সময় নীরবতা
বলে দেয় অনেক কথা। (সুইস প্রবাদ)

বিপ্লব রহমান এর ছবি

হুমম।...এই তাহলে ঘটনা! চোখ টিপি


আমাদের চিন্তাই আমাদের আগামী: গৌতম বুদ্ধ


একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...

লুৎফুল আরেফীন এর ছবি

হা হা হা এই কথা?!!
ওস্তাদের বাড়ি কি যশোরে নাকি?

আমার কতিপয় যশোরিক বন্ধু কথ্যভাষার মধ্যে এই বিপুল মাধূর্যমন্ডিত শব্দটা আমদানী করে। পরবর্তিতে উহা বিপুল জনপ্রিয়তাও লাভ করে। দেঁতো হাসি

___________________________
বুড়োরা সবাই সমস্বরে বললো, "নবজন্ম", আমি চাইলাম "একটা রিওয়াইন্ড বাটন"

সুমন চৌধুরী এর ছবি

শব্দটার বুৎপত্তি দক্ষিণ বাংলায়। তবে গুপ্তবাবুর কৃপায় বৃহৎ বঙ্গে ছড়িয়ে পড়েছে। আমার সেই বন্ধুর বাড়ি পাবনা।
আর আমি ঢাকাইয়া।



ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

আমিও ৯৩তে এসএসসি পাস করা টগবগে সিনিয়র কিশোর... ঢাকা কলেজে পড়তাম। ক্লাশ অবশ্য কর্তাম্না। আমিও তখনই এই দিবসের বার্তা পাই এবং পরের বছর প্রেমিকা সহযোগে এই দিবস পালনের শপথ নেই। তার্পর থিকা প্রত্যেক বছর শপথ রিনিউ করি... কিন্তু কামিয়াব হৈতারিনাই।

ঐসময় তেজগাঁ কলেজে বেশকিছু বন্ধু ছিলো আমার। আড্ডাবাজীও হৈতো। অধিকাংশই ছাত্রলীগার।

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

সুমন চৌধুরী এর ছবি

তেজগাঁয় তো ঐসময় লীগের কেরোসিন অবস্থা। আমার বন্ধুমহল অবশ্য সেইভাবে রাজনৈতিক ছিলনা। সেইখানে শিবির ছাড়া সবাই ওয়েলকাম ছিল। ঐ সময় রাজনীতির চাইতে হেভি মেটালের গুরুত্ব বেশী ছিল আমার কাছে। দেঁতো হাসি



ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ

সুমন চৌধুরী এর ছবি

তার্পর থিকা প্রত্যেক বছর শপথ রিনিউ করি... কিন্তু কামিয়াব হৈতারিনাই।

কেমনে কি?


ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

হ... তখন কেরোসিন অবস্থাই ছিলো ছাত্রলীগের।
এখন অবশ্য আমি যথেষ্ট কামিয়াব। বিয়া কৈরা বাচ্চা সহযোগে ভালোবাসা দিবস পালন করি।

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

মুহম্মদ জুবায়ের এর ছবি

অতি উত্তম।

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

সুমন চৌধুরী এর ছবি

শুক্রিয়া........



ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ

পটলবাবু [অতিথি] এর ছবি

দারুন!

তিনি সুপবন দেখিয়া পতাকা উড়াইয়া দিয়েছিলেন।

শুভেচ্ছা...

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।