টুকরো টুকরো লেখা ২৫

সুমন চৌধুরী এর ছবি
লিখেছেন সুমন চৌধুরী (তারিখ: সোম, ৩১/১২/২০১২ - ৯:৫২অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

২০১২ শেষ হতে আর কয়েক ঘন্টা। একটা একটা করে দিন খতম হতে থাকলে একসময় সপ্তাহ-মাস পেরিয়ে বছর হবে এইটাই স্বাভাবিক। বয়স বাড়তে থাকার বেদনাও একসময় গা সওয়া হয়ে আসে। নববর্ষে গলা বাড়িয়ে গোষ্ঠমামাকে খুঁজতে থাকি অন্তত নতুন কোন ফাঁদে চমৎকৃত হতে।

১.

ডিসেম্বর মাসের শুরুটা ভালোই লাগছিল। আশা ছিল একদিকে দেইল্লা রাজাকারের মামলায় প্রত্যাশিত রায় হবে অন্যদিকে শিবিরের মার খেতে খেতে পুলিশ একসময় ক্ষেপে উঠে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের প্রকাশ্য/অপ্রকাশ্য নির্দেশনা উপেক্ষা করে নিজ সিদ্ধান্তেই জামাত-শিবিরের উপর চড়াও হবে। বরাহনন্দনদের বাঁশডলা খাবার সেইসব মায়াবী চলচ্চিত্র বার বার করে দেখতে দেখতে বছরের শেষ দিনটাতে ঘটা করে কলিজু ভূনা দিয়ে হারাম পানি খাবো। হলো না। আন্তর্জাতিক বরাহদের হস্তক্ষেপে রায় আটকে গেল। আটকে গেল কথাটা অবশ্য এখনো পুরোপুরি সঠিক না। বলতে হবে রায়ের জন্য অপেক্ষা দীর্ঘায়িত হচ্ছে। যেকোন দিন দেলু রাজাকারের মামলার রায় হবে এটা গত ৭ ডিসেম্বরের কথা। এরপর ইউকে থেকে হ্যাকিংয়ের কাহিনি। আইনের দৃষ্টিতে যে হ্যাক করে সে অপরাধী। দায় সেই হ্যাকারের আর সেই বেআইনি তথ্য যারা মিডিয়াতে ছাপায় তার। মাঝখান থেকে ভদ্রতা করে বিচারপতি নিজামুল হক সাহেব পদত্যাগ করে বসলেন। এখন মওদুদীয় ছাগুরা বিচার বিলম্বিত করার জন্য ভ্যা ভ্যা শুরু করে দিয়েছে। বিচার নতুন করে শুরু করতে গেলে সব কয়টা শুয়োর জেল থেকে বের হয়ে যাবে। তাতে ক্ষমতাসীন সরকারী দলের তেমন কিছু হবে না। পস্তাবে যুদ্ধাপরাধের বিচারের দাবীতে যারা বছরের পর বছর মোষ তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে তারা।

২.

ছাত্রলীগ শিবিরের সামনে কেঁচো হলেও বরাবরের মতোই নিরস্ত্র সিভিলয়ান নির্যাতনের ব্যাপারে তার সাংগঠনিক দক্ষতা অব্যহত রেখেছে। বিশ্বজিৎ দাস নামের কোন নিরীহ মানুষকে কয়েকজন মিলে কুপিয়ে হত্যা করলো বঙ্গবন্ধুর সৈনিকরা। তাও আবার একেবারে ক্যামেরার সামনে। সেই ভিডিও দেশেবিদেশে প্রচার করে ছাত্রলীগের চোখের সামনেই জামাত-শিবির নিজেদের যৌনকেশে শ্যাম্পু করে ফেললো। ছাত্রলীগের মতো নপুংসক সংগঠন আমার দেখা রাজনৈতিক ইতিহাসে নাই।

৩.

নতুন দিল্লীতে ধর্ষণ নতুন কোন ঘটনা না। মুম্বাইয়ের বদনাম অতীতে অবশ্য আরো বেশি শুনেছি। তারপরেও দিল্লীতে ধর্ষণের ঘটনা মাঝে মধ্যেই চোখে পড়তো কাগজে। তৃণমূল জোট ক্ষমতায় আসার পর থেকে কোলকাতায়ও ধর্ষণ বেড়ে গেছে। অথচ একসময় কোলকাতায় অন্য যে অপরাধই হোক, যৌন অপরাধ দক্ষিণ এশিয়ায় সব থেকে কম হতো। সে যাই হোক জনগণ হঠাৎ করেই জ্বলে ওঠে। ব্যাপারটা পৃথিবীর প্রায় প্রতিটা গণঅভ্যুত্থানের ক্ষেত্রে সত্য। বহুদিন থেকে সহ্য করতে করতে একদিন আর সহ্য হয় না। কেন হয় না আর তার আগের অত দিন কেনই বা সহ্য হলো তার জবাব আযাযিল জানে। ভারতের সাথে বাংলাদেশের আর্থরাজনৈতিক পার্থক্য অনেক হলেও সামাজিক পার্থক্য তেমন পেলাম না। বাংলাদেশের বরাহদের মতোই ধর্ষণের ঘটনায় ভিকটিমকে দোষারাপ, শালীনতার প্রসঙ্গ তুলে জঘন্য পুরুষতান্ত্রিক ফতোয়া আর এই সব কিছুর মাধ্যমে ধর্ষণকারীদের বাঁচানো এবং সমস্যার গোড়ায় দৃষ্টিপাতে বাধা দেওয়া; এই সব কিছুই আমাদের অতি পরিচিত। রাষ্ট্র কোন অবস্থাতেই রাজনীতিতে লুম্পেনের ব্যবহার নিষিদ্ধ এবং বর্তমানে ব্যবহৃত লুম্পেনদের দমন করার বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে রাজি না। এবং এইজন্য তাঁরা কখনো প্রসঙ্গটাকেই সামনে আসতে দেন না। একদম বাংলাদেশের আওয়ামী লীগ-বিএনপি। জীবনে কিছুই তো সেভাবে হলো না। মাঝে মাঝে মনে হয় এর চাইতে বরং সরকারী দলের গুণ্ডা হলে টোকা দিলে পকেটে একটা কিছু অন্তত বাজতো।

৪.

শিবির পিটাতে কুণ্ঠিত হলেও বিদ্যুত আর জ্বালানীর মূল্যবৃদ্ধির পরিকল্পনার প্রতিবাদে বামমোর্চার বিক্ষোভ কর্মসূচীতে আক্রমণ করতে পুলিশের দক্ষতার কমতি ‌ছিল না। সৈকত মল্লিক নামে গণসংহতি আন্দোলনের একজন কর্মীর পা ভেঙ্গে দিতে পুলিশকে নিশ্চয়ই তেমন বেগ পেতে হয় নাই। সরকারের কাছে পুরো জাতির ঠ‌্যাং একদিকে আর তৌফিক এলাহির জবান আরেক দিকে। এইসব চালিয়ে যান। ফলাফল পাবেন সময় মতো।

আরেকদিকে আবার কিছু কিছু দলছুট স্বঘোষিত বামের একটু অন‌্যরকম আস্ফালন দেখা যাচ্ছে নেট জগতে। তারা বামমোর্চার কর্মসূচীতে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের প্রতিবাদের সঙ্গে ফাউ হিসাবে বাম ঐক‌্যে বিভাজনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। সিপিবি-বাসদের কর্মসূচীতে পুলিশ কেনো আক্রমণ করলো না সেই প্রশ্নটা সিপিবিকে না করে পুলিশকে করতে হতো। কিন্তু এই দলছুট লোকগুলির আসল সমস্যা হচ্ছে পাবলিসিটি। কথার মধ্যে খাবলা খানেক গু না থাকলে লোকে দুর থেকে দুর্গন্ধ পাবে কী করে? দুষ্টুলোকে বলে বামঐক্য হতে না পারলে তাঁদের(এঞ্জিও-কর্পোরেট লাইনের স্বঘোষিত বামের) রুটি রুজি বাড়বে। পাতে উঠবে আরো কয়েক হাতা আমিষ।

৫.

সামনে আরো একটা বছর আসছে। আমার জ্ঞান হবার পরে এতোটা উৎকণ্ঠা নিয়ে আর কোন নতুন বছর আসে নাই। ২০০৮ সালের অর্থনৈতিক মন্দা পার করে নতুন নতুন অনিশ্চয়তার সামনে সবকিছু। ২০০১ সালে টুইন টাওয়ারে হামলার পরে বাবা একদিন বলেছিল, কিছুই আর আগের মতো হবে না। গত এক দশকে মোটামুটি সেইরকমই দেখতে পাচ্ছি। বৈশ্বিক রাজনৈতিক অর্থনীতিতে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী তো বটেই ১৯৮৯-৯১ পরবর্তী মেরুকরণও দ্রুত বদলে যাচ্ছে। ২০১৩ সালে ইউরোর অগ্নিপরীক্ষা। ইউরো ডুবে গেলে ডলারের পোয়াবারো। বেঁচে গেলে ঘাড় মটকানো যাবে পূর্বের বা ভূমধ‌্যসাগর বা কৃষ্ণসাগরের আশেপাশের কারোরই। আরব বসন্তের হাওয়ায় ন‌্যাটোর বারুদের গন্ধ তীব্র হয়ে উঠছে। ভারতে নরেন্দ্র মোদী আড়মোড়া ভাঙছেন। বঙ্কিমের এই সীতারামের জন‌্যেও এসপার ওসপারের সময় এই ২০১৩। বাংলাদেশে চারটা সম্ভাবনা এখন সামনে :

১) কোনভাবে ভোটচুরি করে সরকারী দলের নির্বাচিত হওয়া। (যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের রায় হবে না।)

২) প্রচুর ভয়াবহ ব‌্যর্থতা সত্ত্বেও বিএনপির সাংগঠনিক দুর্বলতা আর জামাতমুখীতার কারণে সহিহ্ ভোটেই সরকারী দলের কোনরকমে টিকে যাওয়া এবং ট্রাইব‌্যুনালের রায় আপিলটাপিল পার করে কার্যকর হয়ে যাওয়া। তারপর যা হবার সেটা ২০১৪-২০১৮ পর্বের গল্প।

৩) ২০০১ এর মত করে আঠারো দলীয় জোট ক্ষমতায় আসা এবং ১৯৭১ মডেলে গণহত‌্যা শুরু করা।

৪) "দেশের এই পরিস্থিতিতে সোনাবাহিনি/সুসিল সোমাজ হাত গুটিয়ে বসে থাক্তে প্রে না। সবাই ঘরে ঘরে বালের আঁটি জমা করুন। মাটি আর মানুষের সমন্বয় সাধনে তোমার সমাধি আজ ফুলে ফুলে ঢাকা ইসলামের সওগাত ইত্যাদি। ঈমান-একতা-শৃঙ্খলা"।

আপাতত ২০১৩ সালের জন্য এর বাইরের কোন সম্ভাবনা দেখতে পাচ্ছি না। এর মধ্যে দুই নম্বরটার সম্ভবনা সব থেকে কম।

এতো সব কিছুর পরেও শুভকামনা থাকলো সবার জন্য। কীভাবে হবে জানিনা তারপরেও নতুন বছর শুভ হোক।

পুনশ্চ : যতদূর জানি এটা নজরুল গীতি। নাকি?


মন্তব্য

জোহরা ফেরদৌসী এর ছবি

ভয়ঙ্কর কিন্তু আপনার একটি কথার সাথেও দ্বিমত করার উপায় দেখছি না ।

জনগণ হঠাৎ করেই জ্বলে ওঠে। ব্যাপারটা পৃথিবীর প্রায় প্রতিটা গণঅভ্যুত্থানের ক্ষেত্রে সত্য। বহুদিন থেক সহ্য করতে করতে একদিন আর সহ্য হয় না। কেন হয় না আর তার আগের অত দিন কেনই বা সহ্য হলো তার জবাব আযাযিল জানে। ভারতের সাথে বাংলাদেশের আর্থরাজনৈতিক পার্থক্য অনেক হলেও সামাজিক পার্থক্য তেমন পেলাম না। বাংলাদেশের বরাহদের মতোই ধর্ষণের ঘটনায় ভিকটিমকে দোষারাপ, শালীনতার প্রসঙ্গ তুলে জঘন্য পুরুষতান্ত্রিক ফতোয়া আর এই সব কিছুর মাধ্যমে ধর্ষণকারীদের বাঁচানো এবং সমস্যার গোড়ায় দৃষ্টিপাতে বাধা দেওয়া; এই সব কিছুই আমাদের অতি পরিচিত।

জনগন একদিন জ্বলে উঠবে, কবে আসবে সেই সুদিন ?

__________________________________________
জয় হোক মানবতার ।। জয় হোক জাগ্রত জনতার

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

চলুক

প্রৌঢ় ভাবনা এর ছবি

মানলাম আপনার সবকথা। কিন্তু,

ছাত্রলীগের মতো নপুংসক সংগঠন আমার দেখা রাজনৈতিক ইতিহাসে নাই।

হয়তো আপনার স্বাধীনতাপূর্ব ছাত্রলীগকে দেখার সুযোগ হয়নি। এই ছাত্রলীগ সেই সময় অসীম সাহসী এক দল ছিল। এখনকার এই ছাত্রলীগকে দেখে আমিও লজ্জা পাই।

সুমন চৌধুরী এর ছবি

আমার দেখা রাজনৈতিক ইতিহাসের শুরু এরশাদের আমলে।

সুমন চৌধুরী এর ছবি
চরম উদাস এর ছবি

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

সবজান্তা এর ছবি

সুখপাঠ্য লেখা, পড়লাম। তবে কোনো অংশের সাথে বিরোধ কিংবা দ্বিমত নাই, তাই উত্তম জাঝা! দিয়েই ফুটে গেলাম ম্যাঁও

মৃত্যুময় ঈষৎ এর ছবি

১, ২, ৩, ৪ হাড়ে হাড়ে অনুভব করি। উত্তম জাঝা!

৫ এর ১ এ একটু খটকা। সরকারী দল আরেকবার আসবে সেটা যেই পথেই হোক তখন যুদ্ধাপরাধীর বিচারের রায় হবে না কেন বুঝলাম না? আরেকটু ডিটেইল, সুমনদা?


_____________________
Give Her Freedom!

সুমন চৌধুরী এর ছবি

ঐটা আশঙ্কা। ভোট চুরি কইরা জিতার পরের পরিস্থিতি খুবই খারাপ হবে।

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

এটা কি সেরকম একটা সম্ভাবনা যে পরেরবার জামাত আ.লীগের সাথে জুড়ে যাবে এবং চুক্তি মোতাবেক কাজ হবে?

সুমন চৌধুরী এর ছবি

জামাতের পক্ষে আর ১৯৯৬ এর মত আওয়ামী লীগের কাছাকাছি আসা সম্ভব না। অন্তত স্বনামে না। জামাত ভেঙে যাবার সম্ভাবনা আছে। সেক্ষেত্রে একাংশ হয়তো পরোক্ষভাবে আওয়ামী লীগকে সহায়তা করতে পারে।

ধুসর গোধূলি এর ছবি

ভাঙন হয়তো মিসেস জিয়ার দলেও লাগতে পারে। লক্ষণ সুবিধার না। তরিকুলের তরিকা আর ডাক্তার (কী জানি নাম!, স্বাস্থ্যমন্ত্রী আছিলো) এর তরিকায় যান্ত্রিক গোলযোগ দেখা দিচ্ছে মনে হচ্ছে!

সুমন চৌধুরী এর ছবি

বেগম জিয়া এখন বৃহত্তর জামাতে ইসলামের নেত্রী। এর বাইরে যদি কেউ অন‌্যরকম বিএনপি করতে চায় তাইলে দল ভাঙতে হবে। তো সেই রকম কইরা তো বিকল্প ধারা, এলডিপি, জাতীয়তাবাদী ফন্ট এইসব হইলো। তাতে কী লাভ হইলো? বিকল্প ধারা ছাড়া বাকি সবই তো আছে ১৮ দলীয় জোটে। ভোট আসলেই সবার নজর ধানের শীষের দিকে থাকবে।

মৃত্যুময় ঈষৎ এর ছবি

বিচারের রায় দান ও কার্যকর হবার সাথে ভোটচুরি কতটুকু নির্ভরশীল সেটা চিন্তা করছি। অবশ্য সরকার যদি নিশ্চিত হতে পারে আরেকবার আসছেই তবে বিচার প্রক্রিয়া দীর্ঘায়িত করতে পারে। বিম্পি ছাড়া নির্বাচন হলে, আম্লীগ আবার আসলে বিশাল টার্ময়েল হবে নির্বাচন পরবর্তী সময়ে; তখন ইউএসএ ইউনুসরে দিয়া পাশা খেলতে পারে। যাই হোক এইগুলা দুঃস্বপ্ন মনে করি।


_____________________
Give Her Freedom!

সুমন চৌধুরী এর ছবি

দুই-তৃতীয়াংশ আসন ‌ছাড়া ট্রাইব‌্যুনাল বাতিল করা না গেলে সরকার পরিবর্তনে সমস্যা নাই। কিন্তু ট্রাইব‌্যুনাল যদি অধ‌্যাদেশ জারি করে বা সাধারণ সংখ‌্যাগরিষ্ঠতায় বাতিল করা যায় তাহলে সমস্যা আছে। আর ভোটচুরি করে ক্ষমতায় আসার পরের পরিস্থিতি বাংলাদেশের ইতিহাসে আজ পর্যন্ত এরশাদ ‌ছাড়া কেউ ম্যানেজ করতে পারে নাই। বিএনপি ‌ছাড়া নির্বাচন করে আওয়ামী লীগ টিকতে পারবে না।

স্যাম এর ছবি

দুই-তৃতীয়াংশ আসন ‌ছাড়া ট্রাইব‌্যুনাল বাতিল করা যাবেনা - এই আইন টা না থাকলে - এক্ষুনি করা উচিত!
বাংলাদেশ এর জন্য সবচেয়ে প্রয়োজনীয় আইন এ মুহুর্তে - আমি জানার চেস্টা করব আইন টা আছে কি নাই - কেউ জানলে জানাবেন প্লিজ !

না হলে এটাই হওয়া উচিত এসময়ের মুখ্য দাবী।

অতিথি লেখক এর ছবি

৩) ২০০১ এর মত করে আঠারো দলীয় জোট ক্ষমতায় আসা এবং ১৯৭১ মডেলে গণহত‌্যা শুরু করা।

মানুষের বলদামিতে এটা হবার আশঙ্কায় আছি। এ যাত্রায় এলে জন্তুগুলো বাংলাদেশকে বাংলা নামমুক্ত করে ছাড়বে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার জাতীয় সম্মানের বিষয় এবং বাস্তবিকভাবে এটা করার ক্ষমতা শুধু আওয়ামী লীগেরই আছে। হ্যাঁ আমি বাস্তবতার কথা বলছি। কারণ ক্ষমতায় যাবার ক্ষমতা বাংলাদেশে দুটিমাত্র দলেরই আছে, তার মধ্যে একটি তো জামাতের পুনঃপ্রতিষ্ঠাতা, বি-টিম বললে কম বলা হয়!

সাহসী লেখা।

নির্ঝর অলয়

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

মাঝে মাঝে মনে হয় এর চাইতে বরং সরকারী দলের গুণ্ডা হলে টোকা দিলে পকেটে একটা কিছু অন্তত বাজতো

- অনেক দিন ধরে ভাবছি ছোটমোট সাইজের হলেও এই ব্যাপারটা নিয়ে একটা লেখা দেবো। কিন্তু সেটা আর হয়ে ওঠে না। ২০১২ তে লেখালেখির গলা যে চিপক্কে ধরা হয়ে ছিল তাতে ২০১৩-এর সুবেহ সাদিকে সে অক্কা পেয়েছে।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

সুমন চৌধুরী এর ছবি

ভাইবেন না বস। লিখা ফালান। Rum নাম নিয়ে।

ধুসর গোধূলি এর ছবি
ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

দিলেন তো দুঃখটা চ্যাগায়া। আজকাল বাজারে নাকি Old Rum ছাড়া বিশেষ কিছু পাওয়া যায় না। আমি গিরস্ত মানুষ বাজারে যাওয়ার সুযোগ হয় না। তাই দশরথের বড় পোলার লগেও দেখা হয় না।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

সুমন চৌধুরী এর ছবি
ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

অতিথি লেখক এর ছবি

১.

শিবির না পেটানোর পেছনে পুলিশের অভিসন্ধি কী ছিল জানি না, তবে প্রকাশ্যে শিবির পেটানো বুদ্ধিমান হত না। ২৮ অক্টোবরের লগি-বৈঠার একশন নিয়ে শিবির প্রচুর ম্যাতকারধর্মী শর্ট ফিল্ম বানাইছিল। এখন যেহেতু আন্তর্জাতিক শকুনরা বিচার প্রক্রিয়ার উপর চোখ বুলাচ্ছে, তাই দ্বিতীয় দফা লগি-বৈঠা একশন হলে শিবির এবার শর্ট ফিল্ম বানায়া তাদের হাতে তুলে দিত, ফলাফলে বিরোধী দলের উপর "রাজনৈতিক নিপীড়ন" এর দাবিটা হালে পানি পাইত। আফটার অল, শিবিরের উপর "রাজনৈতিক নিপীড়ন" যেভাবে নথিভুক্ত করে বিদেশে প্রচার করা হচ্ছে, শিবিরের রগ কাটাকাটির ইতিহাস সেভাবে প্রচার করা যাচ্ছে না। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পাবলিক রিলেশনস যুদ্ধে জাশি এগিয়ে আছে।

তবে পুলিশ যে হাত গুটিয়ে বসে আছে, তাও না। শিবিরের সমন্বয়কারী নেতাদের ঠিকই ধরে নিয়ে গিয়ে প্যাদানি দিচ্ছে,শিবিরের বহু কর্মী ডিবির নজরদারিতে আছে। প্রত্যক্ষভাবে আমি কিছু জাশি কর্মীকে পালিয়ে বেড়াতে দেখেছি, এরা এখন মোবাইল অফ করে রাখে আর বাইরের লোকজনের কাছে কয় যে তাদের মোবাইল নষ্ট।

২.

কৌতূহলোদ্দীপক ব্যাপার হল, ছাত্রলীগের গুন্ডাদের কীর্তিকলাপ প্রকাশ পেলেই শুরু হয়ে যায় "লীগে শিবির ঢুকছে" বিলাপ। ছাত্রলীগে শিবির ঢোকাটা অবিশ্বাস্য না, পরোক্ষ অভিজ্ঞতায় আমি নিজেও বিশ্বাস করি ছাত্রলীগে আসলেই শিবির আছে, কিন্তু লীগকে শিবিরমুক্ত করা ও কর্মীদের মনিটরিং করার দায়িত্বটা কার? দলের ভেতরে শিবির শণাক্ত করতে কেন বিশ্বজিত কিংবা ঢাবির ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের আবু বকরের মত কেসগুলা মিডিয়ায় আসার জন্য অপেক্ষা করতে হয়? আগামী কয়েক মাস যদি ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে কোন দুর্বৃত্তিপনা না দেখা যায়, তাহলে কী ধরে নিতে হবে যে শিবিরে অনুপ্রবেশকারীরা সব উধাও হয়ে গেছে?

যতদিন পর্যন্ত্য না ঘটনা ঘটানোর আগেই দুস্কৃতকারীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে, ততদিন পর্যন্ত্য ছাত্রলীগকে গুন্ডা-বদমাশের সংগঠন ছাড়া আর কিছু মনে করার কারণ থাকবে না। প্রত্যেকবার ঘটনা ঘটে যাওয়ার পর মুখস্থ বিলাপ ছাড়লে সংগঠনের উপকার তো হবেই না, উলটো শিবিরের হাতে অস্ত্র তুলে দেওয়া হবে।

পৃথিবী

সুমন চৌধুরী এর ছবি

শিবির না পেটানোর পেছনে পুলিশের অভিসন্ধি কী ছিল জানি না, তবে প্রকাশ্যে শিবির পেটানো বুদ্ধিমান হত না।

পুলিশ মাইর খাইতেছে এমন ভিডিও থাকাও ক্ষতিকর। তাতে একদিকে জনগণের কাছে পুলিশের ভাবমূর্তি আরো নামে, অন‌্যদিকে ‌ছাগুরা জিহাদী জোশ পায়।

স্যাম এর ছবি

আন্তর্জাতিক বরাহদের হস্তক্ষেপে রায় আটকে গেল

মন খারাপ

আটকে গেল কথাটা অবশ্য এখনো পুরোপুরি সঠিক না। বলতে হবে রায়ের জন্য অপেক্ষা দীর্ঘায়িত হচ্ছে।

- তাও ভাল হাসি

উদ্ভ্রান্ত পথিক এর ছবি

উত্তম জাঝা!

---------------------
আমার ফ্লিকার

তারেক অণু এর ছবি

কলিজু ভুনা রেডি করেন, ফিনলান্ডিয়া আইতেছে

সুমন চৌধুরী এর ছবি

আলহামদুলিল্লাহ্

দুর্দান্ত এর ছবি

"আন্তর্জাতিক বরাহদের হস্তক্ষেপে রায় আটকে গেল।"

এইখানে আইসা কনফিউজড হইছিলাম, তারপরে পুরা পইরা বক্তব্য বুঝলাম। ঠিক আছে।

কুমার এর ছবি

চলুক দ্বিমত নাই সুমন দা, পাঁচাইলাম। উত্তম জাঝা!। নতুন বছরের প্রথম মন্তব্য।

দ্রোহী এর ছবি

চলুক

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

ভালো একটা সংক্ষিপ্ত পলিটিক্স রিভিউ পড়া হলো। হাততালি

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

চলুক

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

কৌস্তুভ এর ছবি

মন খারাপ

কল্যাণ এর ছবি

গুল্লি

_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।