শীতকালীন পাখির মতো বাড়ি ছেড়ে

সৈয়দ আখতারুজ্জামান এর ছবি
লিখেছেন সৈয়দ আখতারুজ্জামান (তারিখ: শুক্র, ২৩/০৫/২০০৮ - ৭:৩৫অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

শীতকালীন পাখির মতো বাড়ি ছেড়ে
অনেক অনেক দূরে
আটকা পড়েছে প্রাণ নগরের সুরে
বাড়ি ছেড়ে বহু বহু দূরে।

এখানে চোখ ধাঁধাঁনো আলোয় পাথুরে দেয়াল ভাসে
সন্ধ্যার অনেক আগেই দু'চোখে সন্ধ্যা নেমে আসে
উদ্দাম নৃত্যে ঝলকিয়া ওঠে সোনারঙা হার
আমার বুকে মোচড় খায় ছায়াঘন পুকুরের পাড়
পুকুরের জলে মাছরাঙা ওড়ে
স্বপ্নভাঙে কাকডাকা ভোরে ...

তখোনো কাটেনা ঘোর বুকে জমা দীর্ঘশ্বাস
তখোনো চোখের জলে ডানা ঝাপটায় একদল পাতিহাঁস
তখোনো মাছরাঙা বসে থাকে ডালে
আমি হাঁটি পিচঢালা পথ পাথুরে জঞ্জালে
টাওয়ারের ঘড়িতে সময় চলছে বেড়ে
অনেক অনেক দূরে বাড়ি ছেড়ে ।

মৃত্যুময় দুঃসময় খাচ্ছে কুরে কুরে
যদি পারো, হৃদয়ের ঠিক এইখানটায় দেখো খুঁড়ে
আটকা পড়েছে প্রাণ
আষাঢ় শ্রাবণ শরত অঘ্রাণ -
পাজরের কাছে
শ্রাবণের চাঁদ মরে পরে আছে।
মাস যায় বছর আসে ঘুরে
অতিথি পাখির মতো বাড়ি ছেড়ে অনেক অনেক দূরে।


মন্তব্য

তীরন্দাজ এর ছবি

খুব সুন্দর চিত্রকল্প আপনার কবিতায়। ভাল লিখছেন।

**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

সৈয়দ আখতারুজ্জামান এর ছবি

ধন্যবাদ তীরুদা। দেখছেন তো আগাইয়া যাইতাছি... আজকে সারাদিন নেশাগ্রস্তের মতো লিখেছি... চোখ রাইখেন... সামনে আসতাছে সব....(যদি মড়ুদের হাত ফসকে বাইর হইতে পারি)...

তীরন্দাজ এর ছবি

অপেক্ষায় আছি...!
**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

নিঝুম এর ছবি

ভালো লিখেছেন। অনেকক্ষন ধরে ভাব্লাম, কবিতায় কিসের একটা সুর আছে। ঠিক হাসি-আনন্দের নয়। ধূসর কোন স্মৃতি, কোন কষ্ট উপখ্যান এই ধরনের...

কবিতার এই আবহ খুঁজতে খুঁজতেই ভালো লেগে গেলো।
---------------------------------------------------------
পৃথিবীর সব সীমান্ত আমায় বিরক্ত করে। আমার বিশ্রী লাগে যে, আমি কিছুই জানিনা...

---------------------------------------------------------------------------
কারও শেষ হয় নির্বাসনের জীবন । কারও হয় না । আমি কিন্তু পুষে রাখি দুঃসহ দেশহীনতা । মাঝে মাঝে শুধু কষ্টের কথা গুলো জড়ো করে কাউকে শোনাই, ভূমিকা ছাড়াই -- তসলিমা নাসরিন

সৈয়দ আখতারুজ্জামান এর ছবি

ঠিক ধরেছেন। শেকড় ছেড়ে দুরে থাকার বেদনায় সারাটা অতীত কষ্ট পেয়েছি, সামনেও হয়তো পেয়ে যাবো। সময় নিয়ে পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ।

জিফরান খালেদ এর ছবি

ভাল্লাগ্লো...

মিলের ব্যাপারটা কানে ঠেকলো কয়েকবার... তারপরো বেশ চমতকার...

সৈয়দ আখতারুজ্জামান এর ছবি

অক্ষরবৃত্তের ঠাসবুননে ছন্দ গাঁথি নাই, অসম অতিপর্বে অন্ত্যমিল দেয়ার জন্যে এমনটা মনেহয়েছে। আপনার একান্ত অনুভব শেয়ার করার জন্য খুব খুশি হয়েছি। আমার পরবর্তী লেখাগুলোতেও আপনার মন্তব্য আশা করছি।

মুজিব মেহদী এর ছবি

অধ্যাপকীয় দৃষ্টিতে দেখলে কিছু সমস্যা শনাক্ত করা যায়। সে দিকে যাব না, কারণ আমি অধ্যাপক নই।
বলতে চাই আপনার কবিতাগুলো সংগীতময়।
অধুনা, বস্তুটার বেশ ঘাটতি দেখা যাচ্ছে আমাদের কবিতায়। এমনকি আমার কবিতায়ও। আপনার সে গুণ আছে। আমি অবশ্য এটা বলতে চাচ্ছি না যে, কবিতায় এ জিনিসটা অবশ্যই থাকতে হয়, না হলে কবিতা হয় না।

................................................................
আমার সমস্ত কৃতকর্মের জন্য দায়ী আমি বটে
তবে সহযোগিতায় ছিল মেঘ : আলতাফ হোসেন

... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ...
কচুরিপানার নিচে জেগে থাকে ক্রন্দনশীলা সব নদী

সৈয়দ আখতারুজ্জামান এর ছবি

আপনার সুচিন্তিত মতামতের জন্য অনেক ধন্যবাদ মুজিব ভাই।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।