কাঁঠাল গাছ

সৈয়দ আখতারুজ্জামান এর ছবি
লিখেছেন সৈয়দ আখতারুজ্জামান (তারিখ: শনি, ০৭/০৪/২০১২ - ১:৪৯অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

বহু দিন আমি শব্দের বড়শি ফেলে
কাঁঠাল গাছটারে
স্মৃতির অতল-দেশ থেকে তুলে আনতে চেয়েছি
যে-গাছটার ডালে বসে
আমি তার সাথে পাখিদের মতো বচসা করতাম
আর খুনসুটির মঞ্জুরী ফুটে উঠতো পাতায় পাতায়
আর শিখতাম বার-মাস-বছর আর বডি পার্টস-এর নাম
সে-একটা গাছ ছিলো আমাদের
স্কুলের পাশেই, খালের কিনারে
একটা সবুজ অতিকায় পাহাড়ের মতো
একটা নিরীহ শামুকের মতো

সবুজ গাছটা এ-প্লাস-ডাবলু, এম-প্লাস-এস,
আর-প্লাস-এল - জাতীয় সংকেত-প্রেমে ভাষাতুর হয়ে উঠেছিলো

সেই নির্জন কাঁঠাল গাছের তলায়
পাতহীন শুকনো ভাঙা ডালের মতো পড়ে আছে
আমাদের দুজনার মিছিমিছি সংসারের দিন...
হাহাকারের খামের ভেতর ভরে একখানা রক্তলাল চিঠি
আমি তারে পাঠায়েছি সাতাশ বছর হলো
আজও তার জবাব এলো না...


মন্তব্য

প্রদীপ্তময় সাহা এর ছবি

একটা সবুজ অতিকায় পাহাড়ের মতো
একটা নিরীহ শামুকের মতো

সুন্দর লিখেছেন।

সৈয়দ আখতারুজ্জামান এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ।

কর্ণজয় এর ছবি

এই অলস দুপুরে এটা পড়ে ফেললাম...

সৈয়দ আখতারুজ্জামান এর ছবি

আমিও একটা অলস দুপুরে এটা লিখে ফেলেছিলাম।

তারেক অণু এর ছবি

প্রথমদিকের লাইনগুলোতে জীবনানন্দের ছায়া পেলাম-

সৈয়দ আখতারুজ্জামান এর ছবি

এই জন্যই গাছ নিয়া আর লিখতে চাই না। তবুও এত প্রিয় প্রিয় গাছ আছে আমার স্মৃতিতে, লেখায় আসতে বাধ্য।
গাছ-ডাল-পালা-নির্জন, কাঁঠাল এইসব মিলে ঐ মহান খাদক আমার সব কৃতিত্ব খেয়ে ফেলে। কৈ যাই!

cresida এর ছবি

আর প্লাস এল
আই -------> ইউ

আমরা প্রায়ই পার্কে বা বেঞ্চে এইসব দেখি। এই সময়ে এইসব ইমোশন অনেকে বাতুলতা বা ক্ষ্যাত (unsmart) হিসেবেই ধরে। আমাদের প্রতিদিনের যাতায়তে এইসব লেখা আমাদের ভ্রুকে কুঞ্চিত করে।আমরা বিরক্ত হই। এখন অর্ধখোলা বুকে ভালোবাসার পান পাতায় তির মেরে রবিনহুড হবার ট্রেন্ড!! অথচ, এইসব লেখার পিছনে অসাধারন কিছু গল্প থাকে, ইমোশন থাকে। আমি জানি না, ঐ জোড়াগুলি আজ খেকে ১০ বা ২০ বছর পরে আর+এল খুজতে আবারো পার্কে বা বেঞ্চে বা সেই গাছের নীচে এসে দাড়াবে কিনা। গাছ বা বেঞ্চ টা না থাকুক, এই খুঁজতে আসার যে প্রবনতা, আমার ভালো লাগে। এই যে খুব সহজ-সরল প্রেম, আমার ভালো লাগে। ঐ সিম্বলিক চিহ্ন এর পেছনের গল্প শুনতে আমি আগ্রহ বোধ করি। আমার কাছে আধুনিক লাগে বৈকি। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য নষ্ট বা নগরের দুষন - এইটুকু আমি অনায়াসে ইগনোর করতে পারি। আমাদের এর খেকেও কতো অনিয়ম ইগনোর করে বাঁচতে হয়।

ওই আর+এল ও একএকটা কবিতা হয়ে ঝুলতে থাকে আমাদের সামনে। নজর কাড়ে না; কেননা তাতে বিঞ্জাপনের মতো জৌলুস নেই।

কবিতা ভালো লাগলো।

ক্রেসিডা

সৈয়দ আখতারুজ্জামান এর ছবি

কী যাতনা বিষে বুঝিবে সে কিসে,,,,,,,,,,,,,,,,
পাঠের জন্য অনেক ধন্যবাদ।
কবিতার বাইরের প্রশ্ন কিন্তু পাঠান নাই।

cresida এর ছবি

কিছু কিছু অনুভব এর জন্যে সাপের দংশন এর প্রয়োজন নেই কিন্তু খাইছে

বাইরের প্রশ্ন নিয়ে আমি নিজেই কনফিউজড। ততোটা জরিুর ও না আসলে। এমনি হযতো কিছু আলাপচারিতা.. বেহুদাই..

ভালো থাকবেন।

ক্রেসিডা

সৈয়দ আখতারুজ্জামান এর ছবি

কিছু কিছু অনুভব এর জন্যে সাপের দংশন এর প্রয়োজন নেই কিন্তু

তবুও উপভোগ এবং অনুভব এই দুই বস্তু কোনদিন এক কাতারে ঠাঁই পায়নি। কাছাকাছি একটা ব্যাপারতো হতেই পারে। আপনি জানেন, সে কথা আমিও বলছি না। আপনার মনোযোগী পাঠের জন্য আরো একবার ধন্যবাদ জানিয়ে গেলাম।

cresida এর ছবি

কবিতাকে সবসময় ব্যক্তিগত হতে হবে এমনও না। বলার জন্য বলা আর কি, হ্যা, উপভোগ আর অনুভব এর কম্বিনেশন থাকবে বৈকি!

আপনাকেও ধন্যবাদ।

ক্রেসিডা

সৈয়দ আখতারুজ্জামান এর ছবি

হাসি

ইয়াসির এর ছবি

ধারণা করছি এটা "আমি"র প্রথম প্রেমের দীর্ঘশ্বাস

সৈয়দ আখতারুজ্জামান এর ছবি

তখনতো বুঝি নাই, আজকে এতটা দূরে এসে যখন পেছনে আলো ফেললাম দেখি আবাক কাণ্ড!

তাপস শর্মা এর ছবি

ভালো লাগছে। চলুক

সৈয়দ আখতারুজ্জামান এর ছবি

ভালো লাগার কৃতিত্ব পুরোটাই পাঠকের। অনেক ধন্যবাদ।

জুলিয়ান সিদ্দিকী এর ছবি

একটা সবুজ অতিকায় পাহাড়ের মতো
একটা নিরীহ শামুকের মতো

-এই বৈপরীত্য সহজাত না কি কবির চিন্তার ফসল?

___________________________
লাইগ্যা থাকিস, ছাড়িস না!

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।