ডালাস, ফোবানা এবং দুই শ্রদ্ধেয় সচলের সান্নিধ্যে

তানভীর এর ছবি
লিখেছেন তানভীর (তারিখ: বুধ, ০৯/০৭/২০০৮ - ২:১১পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

ডালাসের নাম শুনলেই বুকের মধ্যে কেমন মোচড় দিয়ে ওঠে। একদিন ভাগ্যের অন্বেষণে বিদেশের মাটিতে এখানেই প্রথম পা রেখেছিলাম। সে ছিল এক দুঃখের ইতিহাস। এই পোস্টে তার কিছুটা একসময় বলেছিলাম। আরো অনেক না বলা কথাও হয়তো কোন একদিন বলা হবে। কিন্তু আজ হবে সুখের গল্প। ৪র্থ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতা দিবসের অবকাশে তিন দিন ডালাসে হৈ হৈ রৈ রৈ করে কাটিয়ে আসার গল্প। এই তিন দিন ঘুরেছি স্মৃতিময় জায়গায়, গিয়েছি প্রবাসীদের সম্মেলন ফোবানা ও এন্টি-ফোবানায় (বাঙ্গালী থাকলে সেখানে দলাদলি থাকবেই, একই সাথে তাই ডালাসে আরো একটা সম্মেলন হচ্ছিল বিরোধী গ্রুপের), আর সবচেয়ে বড় পাওয়া ছিল সচলায়তনের দুই শ্রদ্ধেয় সচল মুহাম্মদ জুবায়ের এবং মাহবুবুর রহমান জালালের সাথে একান্তে কিছু সময় কাটিয়ে আসা। আমার সময় স্বল্পতার কারণে ব্যাটে-বলে ঠিকমতো টাইমিং না হওয়ায় তিন জন মিলে হয়তো সেভাবে সচলাড্ডা দেয়া হয় নি; কিন্তু আলাদা আলাদাভাবে দু’ জনই আমাকে সময় দেয়ায় আমি তাঁদের কাছে কৃতজ্ঞ।

যখন ডালাসে থাকতাম, এ শহর আমার একেবারেই ভালো লাগে নি। দেশে থাকতে আমেরিকা শুনলে একটু শীত শীত ভাব হতো। মধ্য অগাস্টের প্রচন্ড গরমে প্রথম ডালাস এসে যখন জীবিকার তাগিদে মাইলের পর মাইল হাঁটতে হত, তখন মনে হত এ আমি কোথায় এলাম- এ তো আফ্রিকার চেয়েও খারাপ! সূর্যের তেজ এমনই যে গায়ের চামড়া পুড়ে যাওয়ার অনুভূতি হয়, একটা ভালো পাবলিক ট্রান্সপোর্টেশন নেই, বাসস্ট্যান্ডে যেতে নির্জন খাঁ খাঁ হাইওয়ে ধরে হাঁটতে হাঁটতে আর তারপর স্ট্যান্ডে বাসের জন্য অপেক্ষা করতে করতে জীবন শেষ। আমার তখন মনে হত ডালাসের আকাশে বিষ, বাতাসে বিষ- এরচেয়ে আমার ঢাকা শহরের সীসা মেশানো বাতাস অনেক ভালো, এর চেয়ে সায়েন্স ল্যাবরেটরীর মোড়ে রাস্তা জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা মিনিটে মিনিটে ছাড়া ফার্মগেট-গুলিস্তানের লক্কড়-ঝক্কড় বাসগুলি অনেক ভালো। আর রিকশাওয়ালা ভাইজানেরা তো সাক্ষাত ফেরেশতা!

যাই হোক সেই সব দুঃখের দিন শেষ। চার ডলার/গ্যালন তেল পুড়িয়ে এসির বাতাস খেতে খেতে ছয় বছর পরে আমি যখন এবার সস্ত্রীক ডালাসে ঢুকলাম- আমাদের কাছে ডালাস খুব ভালো লেগে গেল। ভালো লাগল আসলে হিউস্টনের তুলনায়। হিউস্টন একটু পুরনো, ঘিঞ্জি আর নোংরা। ডালাস সে তুলনায় বেশ ঝকঝকে, চকচকে। যে রাস্তা, আবাসিক এলাকাগুলোকে আগে নির্জন খাঁ খাঁ মনে হত, নতুন চোখ দিয়ে এখন সেগুলোকেই মনে হল শান্ত, ছিমছাম! সবচেয়ে বেশী ভাল লাগল ডালাসের হাইওয়ে আর ড্রাইভারগুলোকে। হিউস্টনের হাইওয়েতে জান হাতে নিয়ে গাড়ী চালাতে হয়। একশ একটা রাস্তা বের হয়ে গেছে এক একটা ফ্রিওয়ে দিয়ে। আপনি যদি এক রাস্তায় স্টিয়ারিং ধরে বসে থাকেন, কিছুক্ষণ পর দেখবেন অন্য রাস্তায় চলে গিয়েছেন। আর ড্রাইভারগুলোও এমন খতরনাক, যখন লেইন চেঞ্জ করা দরকার, তখন একটুও সাইড দেবে না। সে তুলনায় ডালাসের হাইওয়েতে কোন ঝামেলা নেই, ড্রাইভারগুলোও ভদ্র কিসিমের।

ডালাস আসার এবার প্রধান উপলক্ষ মামাশ্বশুড়ের বাড়ী যাওয়া এবং সেটা স্ত্রীর চাপাচাপিতেই। আমি ভাবলাম, যেতে যখন হবেই তখন টাইমিং এমনভাবে ফেলতে হবে যেন আমাকে বাসায় বসে বসে মামাশ্বশুড়ের হাতে সাইজ না হতে হয়। খোঁজ নিয়ে জানলাম এবার প্রবাসীদের সম্মেলন ফোবানা হবে ডালাসে ৩ রা থেকে ৫ই জুলাই। ঠিক করলাম ঐ সময়েই যাব। আর সাথে জুবায়ের ভাই এবং জালাল ভাইয়ের সাথে দেখা-সাক্ষাৎ তো আছেই, ওনাদের সাথে ফোনে আগেই কথা বলে নিলাম।

ডালাস পৌঁছালাম ৩ রা জুলাই সন্ধ্যায়। সন্ধ্যাতেই ফোবানায় যাওয়ার এবং রাতে এডিসনে স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে আতশবাজীর কারসাজী দেখার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু শুনলাম প্রথম দিন ফোবানায় শুধু সভা-সেমিনার হয়। এছাড়া শুনলাম আরভিং শহরে যেখানে জালাল ভাই থাকেন, সেখানে একই সাথে আরেকটা এন্টাই-ফোবানা সম্মেলন হচ্ছে। ওখানে আজ হচ্ছে চট্টগ্রাম স্টাইলে ‘মেজবান’। আসল ফোবানায় টিকেটের দাম জনপ্রতি ৩০ ডলার। আর নকল ফোবানায় সবকিছু ‘ফ্রি’। একই জায়গায় দুটো সম্মেলন হবার কাহিনী হচ্ছে- ডালাস ফোবানার যারা মূল উদ্যোক্তা বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অফ নর্থ টেক্সাস বা সংক্ষেপে বান্ট, কিছুদিন আগে তাদের নির্বাচন হয়েছিল। সেখানে যে গ্রুপ হেরে গিয়েছিল অর্থাৎ হারু পাট্টিরাই এখন এন্টি-ফোবানা সম্মেলন করছে। হায় রে বাঙালী! বিদেশে গিয়েও চুলোচুলি। এছাড়া এর বাইরে নিউইয়র্কে আরেকটা ফোবানা তো আছেই। সেখানেও শুনেছি দুটো সম্মেলন হয়েছে।

আমার এডিসনে ফায়ারওয়ার্ক্স দেখার এবং স্ত্রীর এন্টি-ফোবানায় মেজবানে যাবার ইচ্ছে থাকলেও ক্লান্ত থাকায় প্রথম দিন কোথাও যাওয়া হয় নি। শুনেছি এডিসনে ফায়ারওয়ার্ক্স দারুণ হয়েছিল। তবে এন্টি-ফোবানায় ফ্রি মেজবান নাকি সুবিধার হয় নি। আমার পরিচিত যারা গিয়েছিল তারা রাত সাড়ে দশটা পর্যন্ত অপেক্ষা করে খাওয়া না পেয়ে ফিরে এসেছিল। পরে শুনেছি, খাবার যখন এসেছিল মেনুতে ভাত ছিল না, খালি গরুর মাংস আর সালাদেই মেজবান হয়েছিল। না গিয়ে বেঁচে গেছি!

এর মাঝে স্ত্রীর কাজিন জানালো আসল ফোবানার অন্যতম একজন স্পন্সর নাকি তার মামা। কাজেই আমাদের জন্য ফো্বানায় কোন টিকেট লাগবে না। ঠিক করলাম দুই ফোবানাই যখন ফ্রি- একদিন ফোবানায় যাব, অন্যদিন এন্টি-ফোবানায় যাব। দ্বিতীয় দিন অর্থাৎ ৪র্থ জুলাই এন্টি-ফোবানায় তপন চৌধুরী, উইনিং, বাবনা এদের আসার কথা। তাই সেদিন এন্টি-ফোবানায় যাওয়া ঠিক হলো। আর শেষ দিন নিশ্চয়ই ফোবানায় ভালো অনুষ্ঠান হবে। তাই, শেষ দিন অর্থাৎ ৫ই জুলাই যাব ফোবানায়। জুবায়ের ভাইয়ের সাথে ৫ই জুলাই সকালে তাঁর বাসায় দেখা করার প্রোগ্রাম ঠিক হল। জালাল ভাইও সেখানে আসার কথা। কিন্তু শেষ মূহুর্তে জালাল ভাই জানালেন তাঁর প্রতিবেশীকে ঐ সময় এয়ারপোর্টে রাইড দিতে যেতে হবে। তিনি আমার সাথে ফোবানায় দেখা করবেন।

মূল ফটক
৪র্থ জুলাই, শুক্রবার সকালে গেলাম আমার পুরনো স্মৃতি-বিজড়িত ইউনিভার্সিটি অফ টেক্সাস-ডালাস ক্যাম্পাসে। ছয় বছর আগে এই ক্যাম্পাসটাও আমার অসহ্য লাগত। বুয়েট সাইজের ছোট্ট একটা ক্যাম্পাস। যুক্তরাষ্ট্রের বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের তুলনায় রীতিমতো লিলিপুট সাইজ। আমি এটাকে আগে ব্যংগ করে ডাকতাম- ‘কোচিং সেন্টার স্কুল’। কোচিং সেন্টারের ক্যাম্পাস থাকে না, পয়সা দিয়ে পড়া লাগে। এটাও ছোট স্কুল, ফান্ড নাই- নিজের পয়সায় পড়া লাগে। গিয়ে দেখলাম ইলেক্ট্রিক্যাল আর কম্পিউটারের সুন্দর দুটো বিল্ডিং উঠেছে নতুন।
ইলেক্ট্রিক্যাল বিল্ডিং
এখন নাকি ইলেক্ট্রিক্যাল আর কম্পিউটারে অনেক বাংলাদেশী ছাত্র পড়ে এখানে। আমার জিআইএস ডিপার্টমেন্ট যেখানে সেই গ্রীন বিল্ডিং-এও গেলাম। নতুন দুটো বিল্ডিং ছাড়া সবকিছু একদম আগের মতোই আছে। স্টুডেন্ট ইউনিয়নের পাশে একটা নতুন প্যাশিও করেছে দেখলাম।
প্যাশিও
এই স্টুডেন্ট ইউনিয়নটাই আগে শুধু ভাল লাগত। এখানে শুয়ে শুয়ে মাঝে মাঝে টিভি দেখতাম। আর ভাল লাগত ক্যাম্পাসের সাথে লাগোয়া আমাদের ওয়াটারভিউ এপার্টমেন্ট কমপ্লেক্স। ক্লাস শুরু হওয়ার পাঁচ মিনিট আগে বাসা থেকে বের হতাম, তারপর দৌড়াতে দৌড়াতে সোজা ক্লাসে। এত আরামে আর কখনো ক্লাসে যাবার সৌভাগ্য হয় নি- বাংলাদেশেও না! হলিডে থাকায় ক্যাম্পাসে তেমন লোকজন দেখলাম না, শুধু কিছু কাঠবেড়ালী দেখলাম গাছে গাছে দাপাদাপি করে বেড়াচ্ছে।

দুপুরে গেলাম রিচার্ডসন মসজিদে জুম্মার নামাজ পড়তে। ডালাসে থাকতে এই মসজিদটাও ভাল লাগত- বিশেষ করে রোজার দিনে। ইফতারে হেভি খানা-পিনা দিত মসজিদ থেকে। নামাজ শেষে ইউটি-ডির অনেক বাংলাদেশী ছাত্রের সাথে পরিচয় হল। নামাজ শেষে পাড়ার মসজিদের মতো দল বেঁধে জটলা করে সবাই গল্প করছে। শুনলাম যাদের দেখেছি তারা নাকি বর্তমান বাংলাদেশী ছাত্র সংখ্যার মাত্র পাঁচ ভাগের এক ভাগ। আমি কইলাম, কস্কি! আমাদের সময়ে তো বাংলাদেশী ছাত্র হারিকেন দিয়ে খোঁজা লাগত।

বিকালে গেলাম প্ল্যানোতে এক আপার বাসায়। আমার খুব প্রিয় একজন মানুষ। ডালাস এসে প্রথম কিছুদিন ওনাদের বাসাতেই ছিলাম। আমি তখন যাকে বলে এক্কেবারেই FOB- Fresh off the boat – পিলিন থিকা কেবল নামছি। উনি আমাকে প্রতিদিন একটা করে লেসন দিতেন; লেসন নাম্বার ওয়ান- তোমার এখন থেকে এটা করতে হবে, লেসন নাম্বার টু- ঐটা আর করা যাবে না। এইসব মানুষদের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ না করলে হয় কেমনে। এখনো যখন পেছন ফিরে তাকাই, তখন দেখি আমার সারা জীবন ধরেই এরকম কিছু মানুষ হাতে ধরে ধরে কিছু শিখিয়েছিল বলে এখন কিছু করে খেতে পারছি! আপার বাসায় ছিল রাতে দাওয়াত। কিন্তু রাতে আবার এন্টি-ফোবানায় যাব। তাড়াতাড়ি করে বের হতে হতে আটটা বেজে গেল। আমি উঠেছি রিচার্ডসনে। প্ল্যানো শহরটা রিচার্ডসনের পাশেই। কিন্তু ড্রাইভ করতে করতে কেন জানি অনেক দূর মনে হল। জুবায়ের ভাই থাকেন প্ল্যানো ফেলে এলেন নামক আরেকটা শহরে। এন্টি-ফোবানা থেকে রাতে ফিরে কাল সকালে আবার অতদূর ড্রাইভ করতে হবে- ভাবতেই গলা শুকিয়ে গেল। ঠিক করলাম জুবায়ের ভাইকে সকালে ফোন করে বলব বাসার কাছাকাছি কোথাও দেখা করা যায় কিনা ভেবে দেখতে।

বাসায় পৌঁছে দলবল নিয়ে ছুটলাম আরভিং শহরে এন্টি-ফোবানা সম্মেলনে। এন্টি-ফোবানায় পৌঁছে মনে হল- আরে জালাল ভাই তো আরভিং-এই থাকেন। একটা ফোন দিয়ে দেখি। আমি বললাম, জালাল ভাই আমি তো এন্টি-ফোবানায়, আপনি কই? জালাল ভাই বললেন, আমিও তো এন্টি-ফোবানায়! আমরা দুইজনই তখন অডিটোরিয়ামের সামনে একই প্যাসেজের দুই মাথায় দাঁড়িয়েছিলাম। অবশেষে দেখা হল জালাল ভাইয়ের সাথে। সেই ২০০৪ সালে জালাল ভাইয়ের সাথে প্রথম ফোনে কথা হয়েছিল। তারপর আবার সচলায়তনের মাধ্যমে পুনর্যোগাযোগ। আর দেখা হল এই প্রথম। জালাল ভাইয়ের সাথে অবশ্য সচলায়তনের চাইতে মুক্তিযুদ্ধ এবং তাঁর সংগ্রহশালা নিয়েই বেশী কথা হল। জানতে চেয়েছিলাম মুক্তিযুদ্ধের ওপর বিশাল সংগ্রহ নিয়ে তাঁর পরিকল্পনার কথা। বললেন, ভবিষ্যতে মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘরকে এসব দান করে যাবার ইচ্ছে আছে। জালাল ভাইয়ের সাথে কথা বলার ফাঁকে ফাঁকে ভেতরে গিয়ে এন্টি-ফোবানার অনুষ্ঠান যা দেখেছি তা মোটেও চিত্তাকর্ষক নয়। সাউন্ড সিস্টেম খুবই বাজে। শিল্পীদের কাউকে প্রথমে চিনতে পারলাম না। পরে তপন চৌধুরীকে গাইতে দেখলাম। চুল সব সাদা হয়ে বুড়ো হয়ে গেছে লোকটা। বীভৎস এক মহিলাকে বীভৎস অংগভঙ্গি করে গাইতে দেখলাম। কাজিন বলল ওটাই নাকি ‘পাঞ্জাবীওয়ালার’ শিরীন। শিরিন যখন স্টেজে তখন বাসার কেউ আর এই অনুষ্ঠান দেখতে চাইল না। জালাল ভাইয়ের সাথে আড্ডা শেষ করে আমি তখন ভিতরে অনুষ্ঠান দেখব ভাবছি, সবাই উঠে পড়ে জানালো অনুষ্ঠান ভালো হচ্ছে না, বাসায় চলে যাবে। অগত্যা! পরে শুনলাম মিস হইছে দারুণ- আমরা চলে যাবার পর উইনিং-এর চন্দন আর ওয়ারফেইজের বাবনা ভাই নাকি সারারাত ফাটাইছে। তবে এই সাউন্ড সিস্টেম নিয়ে তারা কীভাবে কী ফাটাইল এটাও আমার বোধগম্য না। এই তিন দিন ডালাসে টেক্সাস টেকের অনেককেই দেখলাম। বাবনা বসও নাকি টেক থেকে পাশ করা। ফেইসবুক থেকে আরেক জনের তোলা এন্টি-ফোবানার অনুষ্ঠানে টেক্সাস টেকের সিম্বল ‘গানস আপ’ পোজ দেয়া বাবনা ভাইয়ের এই ছবিটা দিলাম।
বাবনা ভাই 'গানস আপ' পোজে

এন্টি-ফোবানা থেকে ফিরতে ফিরতে রাত একটা। ঘুমাতে ঘুমাতে রাত তিনটা। আমার শরীর আর চলে না। সকালে ঘুম থেকে উঠে ন’টার দিকে জুবায়ের ভাইকে ফোন করে বললাম- জুবায়ের ভাই, কাছাকাছি ইন্দো-পাক স্টোরে দেখা করা গেলে আমার জন্য সুবিধা হত। জুবায়ের ভাই কষ্ট করে আসতে রাজী হয়ে আমাকে ড্রাইভ করার হাত থেকে বাঁচালেন। ইন্দো-পাক খোলে সকাল সাড়ে দশটায়। ঠিক হলো আমরা সাড়ে দশটায় দোকানের সামনে দেখা করব। (এখানে জুবায়ের ভাবীর কাছে মাফ চেয়ে রাখি। জুবায়ের ভাই পরে জানালেন ভাবী রাতে ফোবানা থেকে ফিরে অনেক রাত পর্যন্ত আমার জন্য রান্না-বান্না করেছেন। শুনে আমি শকড। ইস, ফোনটা গতকাল রাতেই করা দরকার ছিল!)

সাড়ে দশটায় ইন্দো-পাক পৌঁছে দেখি জুবায়ের ভাই আগেই পৌঁছে আমার জন্য অপেক্ষা করছেন। জুবায়ের ভাইকে দেখেও টাশকি খেলাম। আমি ভেবেছিলাম আমার মতন ম্যান্দা মারা কোন বয়স্ক লোক হবেন। দেখি রীতিমতো SUV চালানো, চেইন স্মোকিং করা চৌকষ ভদ্রলোক। ইন্দো-পাকের রেস্টুরেন্ট খোলে এগারোটায়। আমরা তাই কাছাকাছি একটা স্টারবাক্সে কফি নিয়ে বসলাম। জুবায়ের ভাইও মনে হয় আমার মত ম্যান্দা মারা মাকুন্দাকে দেখে টাশকি খেলেন। উনি বললেন, আমার লেখা এবং মন্তব্য পড়ে উনার মনে হয়েছিল আমি খুব বোল্ড টাইপের একটা ক্যারেক্টার হব! আয় হায়। আমি কইলাম-বোল্ড হইলে কি আর লিখে কিছু কইতে হয় আমাকে। কিছু কইতে পারি না দেখেই তো লিখি- ‘হাত উঁচু আর হলো না তো ভাই/ লিখি তাই করে ঘাড় নীচু’। ছোটবেলায় একবার অনিয়ম দেখলে নাক ফাটিয়ে দেব- এরকম সংকল্প করে ক্যারাটে স্কুলে ভর্তি হয়েছিলাম। ওমা, ঘুষি মারতে গিয়ে দেখি আমি নিজেই ব্যথা পাই। তখনই বুঝেছিলাম হাতে আর মুখে আমাকে দিয়ে কিছু হবে না। অক্ষমের তাই রাস্তা একটাই খোলা- কলম পেষা। তাতে যদি আমি নিজেকে একটা বোল্ড টাইপের ক্যারেক্টার হিসেবে দাঁড় করাই, মানে কেউ যদি মনে করে আর কী, তাতে আমার আসলে খুশী হবারই কথা। আমার ব্যাপারে জুবায়ের ভাইয়ের বক্তব্য শুনে একটু লজ্জিত হলেও ভেতরে ভেতরে খুশীই হলাম।

জুবায়ের ভাইয়ের সাথে সচলায়তন প্রসঙ্গে অনেক কথা হল। জুবায়ের ভাইকে দেখলাম সচলায়তনের ব্যাপারে ভালোই খোঁজ-খবর রাখেন, জানলাম অনেক কিছুই। যেসব সচলের নাম মনে ছিল আলাদা আলাদাভাবে প্রত্যেকের লেখালিখি বিষয়ে কথা হল। সেখান থেকে জুবায়ের ভাইয়ের প্রিয় লেখকদের নাম উল্লেখ করা এখানে প্রয়োজনবোধ করছি- তাতে হয়ত তাঁরা আরো অনুপ্রাণিত হবেন। এদের একজন হিমু এবং আরেকজন ইশতিয়াক রউফ। হিমুর একটা সমালোচনাও তিনি করলেন- হিমুর সব লেখা ইদানীং একই ধাঁচের হয়ে যাচ্ছে। মৃদুল আহমেদের গদ্য ভালো লাগে আমি বলেছিলাম, জুবায়ের ভাই বললেন মৃদুল পদ্যও ভালো লেখে। তাতে বুঝলাম ইনিও আছেন তাঁর প্রিয় লেখকদের তালিকায়। সকাল সাড়ে দশটা থেকে বেলা প্রায় সাড়ে বারটা জুবায়ের ভাইয়ের সাথে জম্পেশ একটা আড্ডা দিয়ে আমার আর উঠতে মন চাইছিল না। কিন্তু যেতে তো হবেই। এই স্মৃতি আমার জীবনের আরো একটা সম্পদের তালিকায় যুক্ত হল।

বাপ্পী লাহিড়ি ফোবানায়
লিখতে লিখতে দেখছি লেখাটা অনেক দীর্ঘ হয়ে যাচ্ছে। তাই সংক্ষেপে বাকীটুকু বলছি। এরপর দুপুরে একটা দাওয়াত ছিল বাংলাদেশী রেস্টুরেন্ট চামেলীতে- ইন্দোপাকের পাশেই। রাতে গেলাম আসল ফোবানায়। স্পন্সরের আত্মীয় হিসেবে ১০০ ডলারের মাগনা ভিআইপি টিকেট দিয়ে ঢুকলাম, সেইসাথে হেভি খানা-দানা ফ্রি। এই অনুষ্ঠান অবশ্য গাঁটের পয়সা খরচ করে দেখলে আমার আফসোসই লাগত। লেখিকা সেলিনা হোসেন আর মুস্তাফা মনোয়ারকে দেখলাম খাওয়ার টেবিলে। তাঁদের পাশে মুক্তিযোদ্ধা সিতারা বেগমকে চিনলাম যখন স্টেজে তাঁদের সবাইকে ক্রেস্ট দেয়া হল। ফোবানাতেও আমি অডিটোরিয়ামের বাইরে পরিচিতদের সাথে আড্ডা দিলাম বেশী। মাঝখানে রথীন্দ্রনাথ রায়ের গান শুনলাম একটু। কমেডীয়ান নাভিদ মাহবুবের কাছ থেকে অনেক ভালো কিছু আশা করেছিলাম। বস্তা পচা দুটো জোক্স শুনিয়ে তিনি হতাশ করলেন। সবশেষে কোলা ব্যাঙের মতো থপ থপ করে পা ফেলে মঞ্চে এলেন বাপ্পী লাহিড়ী। তাঁর হিন্দি গান শুনে আর সেই সাথে ‘বাংলাদেশী’ নামের কলংক কিছু দর্শকের নাচানাচি দেখে মেজাজ খিঁচড়ে গেল। সেই খিঁচড়ে যাওয়া মেজাজ নিয়ে রাত তিনটায় যখন বাসায় ফিরলাম, তখন মনে হল ডালাসে এই তিন দিন আসলে দুর্দান্ত কাটল। স্বল্প সময়ে এমন ঘটনাবহুল সফর আর কখনো করেছি বলে মনে পড়ছে না!


মন্তব্য

জাহিদ হোসেন এর ছবি

এতদিন ধরে এদেশে থেকেও কোনদিন ফোবানায় যাওয়া হোলনা। আপনার লেখাটি পড়ে খুব আগ্রহ জাগছে যে ভবিষ্যতে কোন একদিন যেতে হবে ফোবানায়। আর মুফতে যদি দু একজন সচলের সাথেও সে সুযোগে দেখা হয়ে যায়, তাহলে তো আরও লাভ।
_____________________________
যতদূর গেলে পলায়ন হয়, ততদূর কেউ আর পারেনা যেতে।

_____________________________
যতদূর গেলে পলায়ন হয়, ততদূর কেউ আর পারেনা যেতে।

তানভীর এর ছবি

ফোবানায় এতদিন না গিয়ে বোধহয় তেমন কিছু মিস করেন নি। অনেক পরিচিতজনদের সাথে বহু বছর পর দেখা হবে- এটুকুই যা পাওয়া হবে।

= = = = = = = = = = =
ঊষার দুয়ারে হানি আঘাত
আমরা আনিব রাঙা প্রভাত
আমরা ঘুচাব তিমির রাত
বাধার বিন্ধ্যাচল।

অতিথি লেখক এর ছবি

লেখা ভালো লাগলো। UTD, ওয়াটারভিউ, ইন্দো-পাক রেষ্টুরেন্ট .. এগুলো নিয়েই দিন কাটে আমাদের।
এন্টি-ফোবানার মেজবানি তে আমিও গিয়েছিলাম সদলবলে, ফ্রি খাওয়ার লোভে। আমরা সাধারনত কোনদিন দাওয়াত থাকলে সকাল থেকে খাওয়া দাওয়া বন্ধ করে দেই। এখানেও তাই করলাম। বিকালের দিকে দেখি পেটের মধ্য গুড় গুড় শব্দ হচ্ছে তাই একটু আগে আগেই রওনা দিলাম। গাড়ী থেক নেমে কান্ড দেখে পেটের আগুন মাথায় চলে গেল। ফু্ল ভল্যুমে হিন্দী গান বজানো হচ্ছে। আমি নিজে হিন্দী গান যে শুনিনা তা নয় কিন্তু আমাদের বাংলা গানের কি এতই অভাব আর এতই দৈন্যতা যে বাংলাদেশী নাইট আয়োজন করে এভাবে হিন্দী গান বাজাতে হবে?? যদি সত্যিকারের দেশপ্রেমিক হতাম তাহলে হয়তো আয়োজকদের গালে একটা চড় বসিয়ে দিয়ে আসার সাহস হতো। আবার যদি চামড়ামোটা হতাম তাহলে হয়তো সেই মুন্ডা পাঞ্জাবী আর চাক্ দে ইন্ডিয়া গান শুনতে শুনতে মেজবানির গরু সাবাড় করে ঢেকুর তুলে বাড়ী ফিরতাম। কোনটাই করতে পারলাম না, শুধুমাত্র সারাদিনের অভুক্ত পেট অভুক্ত রেখেই অভিমানে চলে এলাম। আমরা চলে আসছি দেখে এক মাতৃসম মহিলা অবশ্য এসে আমাদের আটকানোর চেষ্ট করলেন, মমতা মাখা শাষনের সুরে বললেন খবরদার না খেয়ে কোথাও যাওয়া যাবে না। তার সেই মমতার বাণী উপেক্ষা করতে পারতাম না যদি কথাগুলো ইংরেজীতে না বলে বাংলায় বলতেন। আমেরিকা এসেছি চার বছর হলো কিন্তু এখনো না পারলাম ইংরেজীটা ঠিকমেতা শিখে উঠতে, না পারলাম বাংলাটাকে ঠিকমেতা চাবায়া বলতে। এই ডিসেম্বরে দেশে বেড়াতে যাচ্ছি, ঠিক বুঝতে পারতেছিনা কিভাবে প্রমান করব যে আমারিকা থেকে আসলাম!
....................... উদাস

তানভীর এর ছবি

ভাই উদাস, আপনি UTD থাকেন জানলে তো আপনার সাথেও দেখা করে আসতাম। আমি UTD-তে যেমন ছিলাম, তারচেয়ে নিশ্চয়ই আপনি অনেক ভালো আছেন। ভালো থাকুন।

= = = = = = = = = = =
ঊষার দুয়ারে হানি আঘাত
আমরা আনিব রাঙা প্রভাত
আমরা ঘুচাব তিমির রাত
বাধার বিন্ধ্যাচল।

অতিথি লেখক এর ছবি

তানভীর ভাই, এরপর আসলে অবশ্যই দেখা করবেন। UTD তে এখন অনেক বাঙালী ষ্টুডেন্ট আছে, Funding এর অবস্থাও ভাল হয়েছে বেশ।
................................................ উদাস

অমিত আহমেদ এর ছবি

একদম ডিটেইলে বলেছেন। এটা খুব ভালো হয়েছে। @ জাহিদ হোসেন, ফোবানাতে আমারও কখনো যাওয়া হয়ে ওঠেনি।


ওয়েবসাইট | ফেসবুক | ইমেইল

তানভীর এর ছবি

ধন্যবাদ। একটু বেশী ডিটেইলড হয়ে গেছে মনে হয়! তবে লেখার সময় অনেক কিছুই বাদ দিয়েছিলাম- আসা-যাওয়ার বর্ণনা, মামুর তাড়া খাওয়া, আর শেষ প্যারায় আসল ফোবানা নিয়ে শুধু অল্প একটু লিখেছি। সিরিজ করে দেয়া উচিত ছিল হয়ত।

= = = = = = = = = = =
ঊষার দুয়ারে হানি আঘাত
আমরা আনিব রাঙা প্রভাত
আমরা ঘুচাব তিমির রাত
বাধার বিন্ধ্যাচল।

অমিত আহমেদ এর ছবি

সিরিজ না দিয়ে ভালোই করেছেন। সিরিজ পড়তে কেমন জানি আলস্য লাগে। মনে হয় সব শেষ হলে এক সাথে পড়বো। সিরিজ শেষ হওয়ার পরে আর খুঁজে খুঁজে পড়তে ইচ্ছে করে না।

জুবায়ের ভাই আর জালাল ভাইয়ের ছবি হলে আসলেই চরম হতো। আপনি না হয় ক্যামেরা নিয়ে জাননি, তাঁদের সাথে ক্যামেরা ছিলো না?


ওয়েবসাইট | ফেসবুক | ইমেইল

জাহিদ হোসেন এর ছবি

প্রতি ফোবানাতে সচলের একটি স্টল করা যায়না? সেখানে ই-বুকগুলোর প্রিন্ট ভার্সন বিক্রী করা যেতো।
_____________________________
যতদূর গেলে পলায়ন হয়, ততদূর কেউ আর পারেনা যেতে।

_____________________________
যতদূর গেলে পলায়ন হয়, ততদূর কেউ আর পারেনা যেতে।

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

তাতে হয়ত তাঁরা আরো অনুপ্রাণিত হবেন। এদের একজন হিমু এবং আরেকজন ইশতিয়াক রউফ

অনেক বেশি অনুপ্রেরণা, আর আরো অনেক বেশি লজ্জা পেলাম এই অংশটুকু পড়ে। ধন্যবাদ এত ডিটেইলড লেখার জন্য। জুবায়ের ভাইয়ের মাপের লেখক মনে করে অধমের কথা বলেছেন, এটা অনেক বড় ব্যাপার।

রায়হান আবীর এর ছবি

লেখা দীর্ঘ হয়ে যাচ্ছে এই বাক্যটাতে এসে বুঝলাম লেখাটা তো ভালই বড়। হাসি

আমার ভার্সিটির এক বন্ধু ক্রেডিট ট্রান্সফার করে ডালাসে যাচ্ছে...আপনার ইউনিতেই...বাংলাদেশী ছাত্রের সংখ্যা আরও একজন বাড়লো...

জুবায়ের ভাইয়ের কথা চিন্তা করলে আমার নিজেও বুড়া একজন মানুষের কথা মনে হয় খাইছে আপনার বর্ণনা শুনে মজা পাইলাম...

---------------------------------
জানিনা জানবোনা... কোন স্কেলে গাইছে কোকিল
গুনিনা আমি গুনিনা...কার গালে কটা আছে তিল

কিংকর্তব্যবিমূঢ় এর ছবি

আইইউটি থেকে ক্রেডিট ট্রান্সফার করে যাওয়া যায় নাকি? পুরাটাই নিতেছে, নাকি গিয়ে আবার শুরু থেকে শুরু করবে? চিন্তিত
................................................................................
objects in the rear view mirror may appear closer than they are ...

রায়হান আবীর এর ছবি

ওই মিয়া আইইউটিরে পাইছেনটা কি? রেগে টং

আমাদের ব্যাচ থেকে দুই জন যাচ্ছে। একজন মেরিকা, আরেকটা ইংল্যান্ড। দ্বিতীয়জনের সবকিছু সিম্পল। তার বাপ মা ওই দেশে চলে যাচ্ছে...তাগো লেজ ধরে সেও যাবে। নিজের টাকায় পড়বে। ওইখানে তিন বছরের বিএসসি কোর্স ওরে করতে হবে লাস্ট দুই ইয়ার। অর্থাৎ আমাদের এখানের তিন বছরের বিনিময়ে ও পাচ্ছে এক বছর। হাসি

আর দ্বিতীয় জনের কথা আলাদা। ও আমাদের প্রায় ফার্স্ট বয়। কিন্তু সখ হইছে মেরিকা যাবে। ভার্সিটি থেকে বেশ ভালো ধরণের একটা স্কলারশীপও পাইছে। পার সেমেস্টার দিতে হবে আড়াই হাজার ডলার করে। কিন্তু ক্রেডিট ট্রান্সফারের ব্যাপারে ঘাপলা রয়ে যায়। ওরে প্রত্যেক ডিপার্টমেন্ট এ যেয়ে আলাদা আলাদা ভাবে আপিল করতে আইইউটির কোর্সগুলো নেবার জন্য। যদি নেয় তাহলে আসসালামুয়ালাইকুম...না নিলে আবার করতে হবে। তারপরও হ্যায় যাইব...

---------------------------------
জানিনা জানবোনা... কোন স্কেলে গাইছে কোকিল
গুনিনা আমি গুনিনা...কার গালে কটা আছে তিল

কিংকর্তব্যবিমূঢ় এর ছবি

আমাদের সময় সারা বাংলাদেশে যে পোলাটা ইন্টারে ফার্স্ট হইছিল [আমাদের সময়ও কিন্তু খাড়ানোর সিস্টেম ছিল, আমরাই লাস্ট] সে আইইউটিতে এক বছর থাকার পরে এলবার্টায় চলে আসে ... ওকে একবারে গোড়া থেকেই শুরু করতে হইছে ... তাই শিওর ছিলাম না ক্রেডিট ট্রান্সফার এলাও করে কিনা ...
................................................................................
objects in the rear view mirror may appear closer than they are ...

কীর্তিনাশা এর ছবি

জমজমাট ভ্রমন কাহিনী। ভালো লাগলো।
-----------------------------------
সোনার স্বপ্নের সাধ পৃথিবীতে কবে আর ঝরে !

-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

নিঝুম এর ছবি

জালাল ভাই আর জুবায়ের ভাইয়ের সাথে ছবি তোলেন নাই ? দেখতে পারলে ভালো লাগত । যাই হোক , এত পেশেন্ট নিয়ে দারুন একটা লেখা লিখলেন ।
---------------------------------------------------------
পৃথিবীর সব সীমান্ত আমায় বিরক্ত করে। আমার বিশ্রী লাগে যে, আমি কিছুই জানিনা...

---------------------------------------------------------------------------
কারও শেষ হয় নির্বাসনের জীবন । কারও হয় না । আমি কিন্তু পুষে রাখি দুঃসহ দেশহীনতা । মাঝে মাঝে শুধু কষ্টের কথা গুলো জড়ো করে কাউকে শোনাই, ভূমিকা ছাড়াই -- তসলিমা নাসরিন

তানভীর এর ছবি

ক্যামেরা ভুলে ফেলে গিয়েছিলাম, তাই ছবি তোলা হয় নি মন খারাপ

= = = = = = = = = = =
ঊষার দুয়ারে হানি আঘাত
আমরা আনিব রাঙা প্রভাত
আমরা ঘুচাব তিমির রাত
বাধার বিন্ধ্যাচল।

ফারুক হাসান এর ছবি

পড়ে গেলাম এক টানে। দীর্ঘ হলেও কোথায়ো ছন্দপতন হয়নি। চলুক

----------------------------------------------
আমাকে নিঃশব্দে অনুসরণ করে একটা নদী-
সাথে নিয়ে একটা পাহাড় আর একটা নিঃসঙ্গ মেঘ।

তানভীর এর ছবি

বাহ, কারা দেখি গণহারে দুই-তিন রেটিং দিয়ে পোস্টটারে রেপ করে গেছে! কী কারণে এত ক্ষোভের সৃষ্টি জানা গেলে কৃতার্থ হইতাম চিন্তিত

= = = = = = = = = = =
ঊষার দুয়ারে হানি আঘাত
আমরা আনিব রাঙা প্রভাত
আমরা ঘুচাব তিমির রাত
বাধার বিন্ধ্যাচল।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

আমি ৫ দিলাম...
বাবনার জন্য... আমি তার বিরাট ফ্যান এখনও... চন্দনের দূর পাহাড়ে গিটারে আমার তোলা প্রথম গান।
আহ্... আপনে তাদের দুইজনরে কেম্নে মিস করলেন?
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

তানভীর এর ছবি

অনুষ্ঠান তো হবার কথা ছিল বিকাল চারটা থেকে রাত একটা পর্যন্ত। এখন বসেরা যদি রাত বারটায় আইসা ভোর ছয়টা পর্যন্ত গান গায় আমি কি করুম? মন খারাপ

= = = = = = = = = = =
ঊষার দুয়ারে হানি আঘাত
আমরা আনিব রাঙা প্রভাত
আমরা ঘুচাব তিমির রাত
বাধার বিন্ধ্যাচল।

রায়হান আবীর এর ছবি

আমিও বুঝিনা এই দুই তিন দেয়ার মানে কি? একজন মানুষ কষ্ট করে, চিন্তা করে ব্লগ লিখছে...এইটুকুর জন্যই তো পাঁচে চার। আর যদি পড়ে খুব ভালো লাগে তাহলে পাঁচ। ব্যাস।

যারা কম রেটিং দিয়েছেন তারা সম্ভবত না পড়েই দিয়েছেন। কিংকং এর বড় বড় ব্লগগুলাতেও মাঝে মাঝে এই কান্ড দেখা যায়। অদ্ভুত।

আপনারে আমি গতকালকেই পাঁচ মারছিলাম। তখনকার চেয়ে এখন এভারেজ ভালো হইছে দেখা যায়।

---------------------------------
জানিনা জানবোনা... কোন স্কেলে গাইছে কোকিল
গুনিনা আমি গুনিনা...কার গালে কটা আছে তিল

মুহম্মদ জুবায়ের এর ছবি

সর্বনাশ!

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

অপ্রয়োজনস এর ছবি

সামনের ফোবানা ক্যলিফোর্নিয়াতে ... যাবেন নাকি? আই-১০ ধরে বিশাল ড্রাইভ চোখ টিপি

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।