প্রবাস প্যাচালি - ০৬

তানভীর এর ছবি
লিখেছেন তানভীর (তারিখ: বিষ্যুদ, ১৯/১১/২০০৯ - ৪:৩৫পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

১।
নর্থ ক্যারোলাইনার শার্লট এয়ারপোর্টে বসে পরের ফ্লাইটের জন্য অপেক্ষা করছি। ছাড়বে আরো দু’ঘন্টা পর। ভাবলাম এ দু’ঘন্টা সচলে একটু গুঁতোগুঁতি করি। ইদানিং কাজে ব্যস্ততা বেড়ে গেছে। আগে যেমন অফিসে বসে সচলে পোস্ট দিতাম, এখন আর পারি না। বাসায় তো আরো না! তবে কথায় যে বলে- আউট অফ সাইট, আউট অফ মাইন্ড- মনে হয় সত্যি কথা। আগে প্রথম আলো আর সচলে না ঢুকলে মনে হতো দিনে কী একটা কাজ যেন করা হয় নি। এখন মাঝে মাঝেই বেশ অনেক দিন ঢোকা হয় না। তবে আলু পত্রিকা তাদের লে আউট পাল্টাবার পর থেকে আর ঢুকে আরাম পাই না। এখন বিডিনিউজই ভরসা।

শার্লটে আগে আসি নি কখনো। হাতে আরো সময় থাকলে শহরে ঢুকে দেখা যেত। এক সময় আব্বা এ শহরে অনেক দিন ছিলেন। তবে শহরটাকে যত ছোট ভাবতাম, এয়ারপোর্টের সাইজ দেখে মনে হচ্ছে বেশ বড় শহর।

২।
দেখতে দেখতে বছরটা কেমন ঝপাত করে শেষ হয়ে গেল। এটা মনে হয় নব্বইয়ের শেষ থেকে দেখছি বছরগুলো কেমন তাড়াতাড়ি শেষ যাচ্ছে। এই মনে হয় সেদিনের কথা ২০০০ সাল শুরু হলো, আর আজ ২০১০ শুরু হতে যাচ্ছে! আমার মেয়ের বয়সও আসছে সপ্তাহে এক বছর হবে। অথচ ক’দিন আগেও সে কী ছোট্ট সাইজের ছিলো; আরো অদ্ভুত লাগে যখন ভাবি তারো আগে আমাদের জীবনে তার কোন অস্তিত্বই ছিলো না!

গত উইকএন্ডে পিচ্চির আকিকা উপলক্ষে একটা খাসি জবাই দিলাম। দেশে বা বিদেশে এমন অভিজ্ঞতা আমার এই প্রথম। দেশে থাকতে আমি মাংস খাওয়া ছাড়া কখনো কোরবানীর ধারে-কাছে যাই নি। কিন্তু এইখানে তো খাইট্টা খাও। ভাগ্যিস এখানে এক এক্সপার্ট দেশি ভাইকে পেয়েছিলাম। তাকে নিয়ে শহরের বাইরে এক কৃষকের খামারে গিয়েছিলাম। সেখানে গিয়ে ছাগল পছন্দ করে কোরবানি। কৃষক সেই ভাইয়ের পূর্ব পরিচিত, সে সূত্রে কী জন্য এসেছি তা ভালো করেই জানে। কিন্তু তার ঘরে বেড়াতে আসা মেয়ের জামাই আমাদের কাজ-কারবার দেখে পুরা টাশকি। কাজে সাহায্য করার কোন নাম নাই, খালি প্রশ্ন- এটা কেন করলা, ওইটা কেন? তবে আমিও তেমন কিছু করি নি, শুধু একদিকে ছাগলের ঠ্যাং চেপে ধরেছিলাম, বাকি কাজ সব সেই এক্সপার্ট ভাই করেছেন।

নাহ বোর্ডিং শুরু হবে একটু পর। আজ এ পর্যন্তই। আশা করছি আগামী মাসে একটু ফুরসত পাবো। তখন কিছু পোস্ট দেব। ভালো থাকুন সবাই।


মন্তব্য

অতিথি লেখক এর ছবি

লেখাটা তিনবার ক্যান বুঝতে পারলাম না।

স্পার্টাকাস

দ্রোহী এর ছবি

অনেকদিন পর আপনাকে দেখলাম।

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

দিনকাল জানালাম। আমারো একই অবস্থা, তবে সচল খুলে রাখি, যাতে আবার কেউ মনে না করে সচল ছেড়ে গেলাম নাকি!

অতিথি লেখক [অতিথি] এর ছবি

ছেলের নাম কি রাখলেন বললেন না তো। আরো একটা কথা, নিরীহ খাসিটা কি অপরাধ করেছিল যে তাকে প্রাণ দিতে হল?

কিংকর্তব্যবিমূঢ় এর ছবি

ভাইসাব কি ভেজিটেরিয়ান নাকি? ঘাসপাতা ছাড়া কিছু খান না?
................................................................................................
খাদে নামতে আজ ভয় করে, নেই যে কেউ আর হাতটাকে ধরা ...

অতিথি লেখক [অতিথি] এর ছবি

মাংস খাওয়ার বিরুদ্ধে কিছু বলিনি।
তবে উৎসবের কারণে জীবহত্যার মধ্যে বর্বরতা আছে, তা যদি স্বীকার না করেন, তাহলে আর কথা বাড়ানর প্রয়োজন নেই।

কিংকর্তব্যবিমূঢ় এর ছবি

স্বীকার করলাম, আছে ... এখন আপনি বলেন বিয়ে-জন্মদিন-হাবিজাবি যেকোন উপলক্ষ্যে মুর্গির রোস্ট খাওয়ার মধ্যে বর্বরতা আছে কিনা ...
................................................................................................
খাদে নামতে আজ ভয় করে, নেই যে কেউ আর হাতটাকে ধরা ...

অতিথি লেখক [অতিথি] এর ছবি

তর্কের খাতিরে কথা পেঁচিয়ে অনেক দূরে নেওয়া যায়। কিন্তু আমার বক্তব্য ছিল -ঐতিহ্য বা উৎসবের নামে জীবহত্যা না করা সম্ভব হলে সেটা করা।

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

প্রিয় অতিথি (ভাই বা বোন), যে উৎসবের জন্য যেমনটা প্রথা তেমনটাই তো করেছেন উনি। সমস্যা তো কিছু নাই। জীব তো পালা হচ্ছে খাওয়ার জন্যই। বনের ছাগল ধরে এনে তো জবাই করা হচ্ছেনা।

অতিথি লেখক [অতিথি] এর ছবি

প্রথা বা উৎসবের কারণে জীবহত্যার পক্ষে প্রকৃতিপ্রেমিক সাফাই গাইলে তাঁর প্রকৃতিপ্রেম নিয়ে সংশয় জাগে।

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

আপনি কী বলতে চান সরাসরি বললেই তো পারেন। আমার প্রকৃতিপ্রেম নিয়ে আপনার সন্দেহ থাকলে সেটা নিয়ে আমার বিন্দুমাত্র মাথাব্যাথা নাই। আমি প্রকৃতিপ্রেমিক হলাম কি অপ্রেমিক হলাম তার সাথে পশু জবাই করে মাংশ খাওয়ার কোন সম্পর্ক আছে বলে মনে করিনা। প্রকৃতির সবকিছুই কারো না কারো জন্য। একে বলে ফুড চেইন, জানেন নিশ্চই। এরকম চিন্তা করলে তো খাওয়াই বাদ দিতে হবে, তাইনা? কারণ গাছ-লতা-পাতারও জীবন আছে, তাদের গায়ে খোঁচা দিলেও রস পড়ে, সেটা হয়তো রক্তের মত লাল নয়, কিন্তু সেটাও গাছের রক্তের মতই, কি বলেন?

অতিথি লেখক [অতিথি] এর ছবি

আমি কিন্তু বারবার বলছি (হতে পারে “মিনমিন করে” – শব্দ দুইটা একটু আগেই ছিল। এডিট করেছেন?) ফুড চেইন বহির্ভুত জীবহত্যার কথা। আপনার তা নজরে পড়ছে না বলেই কি কথা নিয়ে যাচ্ছেন অপ্রাসঙ্গিক দিকে?

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

জ্বী এডিট করেছি, কারণ শব্দটা নিজের কাছেই আপত্তিকর লাগছিল।

অপ্রাসঙ্গিক দিকে নিচ্ছি কিনা সেটা আপনিই বলুন। এই পোস্টে অপ্রাসঙ্গিক মন্তব্যটাতো আপনিই শুরু করেছেন। আপনার মন্তব্যের জন্য অনেকের কাছ থেকে হয়তো বাহবা পাবেন, কিনতু আমার কাছে তা অপ্রাসঙ্গিক মনে হয়েছে, তাই বললাম।

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

এই মন্তব্য ব্যক্তিগত আক্রমণ বলে মনে হচ্ছে। ... উৎসবের জন্যে জীবহত্যা বর্বরতা মনে হতে পারে - কিন্তু এর বিপক্ষেও বহু যুক্তি দাঁড়া করানো যায়।
আর- অতিথি লেখক সচলায়তনকে নিয়ে নীচে যেই উক্তি করেছেন- সেটাও ভালো লাগেনি...। উৎসবে জীবহত্যাকে বর্বরতা বলে কেনো মনে হয়- সেটা নিয়ে বরং একটা যুক্তিমূলক আলোচনা আপনি আলাদা পোস্টে দিন- সেটা বরং ভালো হবে।

______________________________________________________

মধ্যরাতের কী-বোর্ড চালক

কিংকর্তব্যবিমূঢ় এর ছবি

সম্ভব না হলে মানে কি? ভেজিটেরিয়ান হয়ে বাঁচা কি অসম্ভব নাকি? সেটা না বলে আকীকা করার সময় জীবহত্যা করবো না কিন্তু বিয়ের দাওয়াতে গিয়ে মুর্গির ঠ্যাং চিবাবো টাইপ কথাবার্তা বলাটা কি একটু হিপোক্রেসী মনে হচ্ছে না?
................................................................................................
খাদে নামতে আজ ভয় করে, নেই যে কেউ আর হাতটাকে ধরা ...

অতিথি লেখক [অতিথি] এর ছবি

বিতর্কটাকে লঘু বা সংকীর্ণ ট্র্যাকে নিয়ে যাবার চেষ্টা না করলেই ভালো হয়। আমি নিজে মাংসাশী। খেতে পছন্দও করি। ক্ষুধানিবৃত্তির জন্যে জীবহত্যাটা প্রাকৃতিক নিয়ম, তা আমি-আপনি-সবাই জানি। কিন্তু যদি পুণ্যলাভপ্রত্যাশা, প্রথা, ঐতিহ্য এবং ইত্যাকার কারণে জীবহত্যা বন্ধ করা বা যথাসাধ্য কমানো উচিত মনে করে বক্তব্য আমি দিই, সেখানে হিপোক্র্যাসিটা কোথায়, ধরতে পারছি না।

কিংকর্তব্যবিমূঢ় এর ছবি

লঘু ট্র্যাকে কোথায় নিলাম? বরং আপনি যে একটা মাঝারি রকমের হিপোক্র্যাট সেটা প্রমাণের চেষ্টা করলাম, বুঝতে পারেননি?

ক্ষুধা নিবারণের জন্য জীবহত্যা প্রাকৃতিক নিয়ম, এই হাদিস কোথায় পাইলেন? শুধু ভেজিটেরিয়ান হয়ে কত মানুষ বেঁচে আছে জানেন না বলতে চান? আসল কথা বলেন, মাংস খেতে ভালো লাগে, তাই খান; নিজের লোভ বা স্বার্থ যাই বলেন ... সেটা যতক্ষণ বন্ধ না করতে পারবেন ততক্ষণ পশুপ্রেমী সাজতে আসবেন না, কারণ সেক্ষেত্রে আপনাকে কাঁঠালপাতা খেতে বলা ছাড়া আর কিছু করতে পারবো না ...

ধন্যবাদ ...
................................................................................................
খাদে নামতে আজ ভয় করে, নেই যে কেউ আর হাতটাকে ধরা ...

তানভীর এর ছবি

অতিথি লেখক, আপনার কুম্ভীরাশ্রু বর্ষণ দেখে হাসি পেয়ে গেল জনাব। ধর্ম নিয়ে খোঁচা মারা বা তথাকথিত পরিবেশবাদী বা নাস্তিক সাজার আগে আরেকটু পড়াশুনা করে আসুন আপনি। বর্বরতা বলছেন কোনটাকে? বন থেকে তো প্রাণী ধরে আনি নি। খামার থেকে এনেছি। পরিবেশের জীববৈচিত্র্য তখনই হুমকির মুখে পড়ে যখন প্রাকৃতিক পরিবেশে লালিত জীবজন্তু হত্যা করা হয়। খামারে জন্ম নেয়া, লালন-পালন করা পশু তা আপনি যদি লাখে লাখে, কোটিতে কোটিতেও যে কোন কারণেই হত্যা করুন না কেন, তাতে কিছু যায় আসে না। এটা বিজ্ঞানের কথা বললাম, ধর্ম নয়। এখন আপনি যদি বলেন আপনার বিশ্বাসের সাথে তা যায় না, তাতে কারো কিছু করার নেই। এক দেশের বুলি, আরেক দেশের গালি। এক ধর্মের প্রথা অন্য অনেক ধর্ম বা কোন নাস্তিকের পছন্দ-অপছন্দের সাথে নাও যেতে পারে। কিন্তু সেটাকে বর্বরতা বলার অধিকার আপনি রাখেন না। দুই পাতা পড়ালেখা করে কিছু না বুঝেই ফোঁড়ন কেটে নিজের আবালত্ব জাহির করবেন না।

আর ব্লগে বেনামে যারা ফোঁড়ন কাটে তাদের আমার ছাগুসদৃশই মনে হয়। বুকের পাটা থাকলে নাম-পরিচয় দিয়ে লিখুন। আপনি যা উঁচুদরের মানুষ, আমরাও আপনাকে চিনে ধন্য হই।

অতিথি লেখক [অতিথি] এর ছবি

আমি দুই পাতা লেখাপড়া করেছি, আমি আবাল, আমি পরিবেশবাদী/নাস্তিক সেজেছি, আমাকে ছাগুসদৃশ মনে হয় –আমার সম্পর্কে এত বিশদ ধারণা আপনার? বিতর্ককে গালিগালাজের পর্যায়ে নামিয়ে আনাটা কিসের পরিচয়, ভেবে দেখবেন কি?

ভার্চুয়াল জগতে নিজ নামে লেখার অর্থ বুকের পাঁটা থাকা? জানতাম না। নাম দিলেই তো আমার যুক্তি বা বক্তব্য এদিক-ওদিক হবে না। নাকি আপনি নাম দেখে লোক বুঝে ঝগড়ার মাত্রা নির্ধারণ করেন?

আপনার অসহিষ্ণু ও ব্যক্তিগত আক্রমণাত্মক বক্তব্যের জবাব দিলাম যথাসাধ্য শালীনভাবে।

তানভীর এর ছবি

হা হা। নাম জানতে চাইছি যদি আপনার জ্ঞানের আলোয় আমরাও সবসময় কিছুটা আলোকিত হই। এইরকম উধাও হয়ে থেকে বেনামে মাঝে মাঝে ব্লগ গরম করলে তো আর আমাদের সে আশা পূরণ হবে না।

আর আসল কথার জবাব তো পেলাম না! গৃহ বা খামার পালিত জীব হত্যার মধ্যে 'বর্বরতা' কোথায় তা বুঝিয়ে বলুন। নাকি ধর্মের সাথে সংশ্লিষ্টতা আছে বলেই আপনার এত চুলকানি?

যুধিষ্ঠির এর ছবি

প্রিয় তানভীর, অতিথি লেখকের মন্তব্য অপ্রাসঙ্গিক ছিলো। সেটি আপনার ব্যক্তিগত, ধর্মীয় বা সামাজিক অনুভূতির প্রতি অসংবেদনশীলও হয়তো ছিলো, তবে সেটার প্রতিবাদ সহিষ্ণুতার সাথে করা যেত, সেটাই বোধহয় একজন সচল হিসেবে সঠিক আচরণ হতো। কিন্তু তার বদলে অতিথি লেখককে দুই পাতা লেখাপড়া করা, আবাল, পরিবেশবাদী, নাস্তিক, ছাগুসদৃশ বলাটা প্রয়োজনাতিরিক্ত প্রতিক্রিয়া আর ব্যাক্তি আক্রমণ বলেই মনে হলো আমার কাছে। অতিথি লেখকের ব্যক্তিগত মত প্রকাশের স্বাধীনতার প্রতি সম্মানটা কোথায় দেখালাম আমরা তাহলে? এরপরেও "অতিথিরাই সচলের প্রান" বলতে গেলে আমরাই হিপোক্র্যাট হয়ে যাবো না?

অতিথি লেখকের নিজের নাম, ইমেইল প্রকাশ করার নিয়ম আছে, কিন্তু সেটি না করলে মডারেটররা শুধু সেই কারণে কোন মন্তব্য আটকে দেন না বলেই দেখেছি। আমাদের নীতি এখানে যেহেতু অতটা কঠোর নয়, আর তাছাড়া আমি নিজেই বেনামে/ছদ্মনামে লিখি তাই ব্লগে বেনামে লিখলে সেটা বুকের পাটা না থাকা আর ছাগুসদৃশ বোঝাবে এটির সাথে অবশ্যই একমত হলাম না।

ব্লগার বা সচল হিসেবে আপনার সিনিয়রিটি আমার চেয়ে অনেক বেশি। আপনি নিজেই ব্যাপারটা অনেক ভালো বুঝবেন, তাই আপনাকে অনুরোধ করছি এই মন্তব্যটা একটু পুনর্বিবেচনা করার জন্য।

***

অতিথি লেখককে অনুরোধ করবো হতাশ না হয়ে সম্ভব হলে আলোচ্য ব্যাপারে আপনার চিন্তাভাবনা নিয়ে একটা পোস্ট দিতে। গঠণমূলক আলোচনা-সমালোচনা আমরা এখানে এখনো করি, সেটা পোস্ট প্রকাশিত হলে আশা করি দেখবেন।

অতিথি লেখক [অতিথি] এর ছবি

পোস্ট দেওয়ার চিন্তা দূর করেছি গতকালই। যেচে পড়ে গালিগালাজ শুনতে কে চায়, বলুন?

আপনি লিখছেন, “গঠণমূলক আলোচনা-সমালোচনা আমরা এখানে এখনো করি”। তা করেন। টিপাই বাঁধ বা চলমান কোনো ইস্যুতে গঠনমূলক আলোচনা এখানে সত্যিই হয়। কিন্তু ধর্ম নিয়ে গঠনমূলক আলোচনা সর্বশেষ কবে হয়েছে? আমি তো বরং কয়েকটা মন্তব্য পড়েছি, যেখানে ধর্ম বিষয়ে আলোচনা না করাই শ্রেয় বলে বলা হয়েছে।

এসএস-এর দেওয়া লিংক ঘুরে এসে অনুভব করলাম, সচলায়তন রীতিমত বদলে গেছে। তা ভালো নাকি খারাপের দিকে, তা বিচার করা উচিৎ না আমার। আমি বাইরের লোক, তা আমাকে নানাভাবে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।

এসএস লিখলেন, “একসময় সচলায়তনে কিন্তু এটা নিয়ে অনেক উদারপন্থী আলোচনা সম্ভব ছিলো”। “ছিলো” কথাটিই সত্য। এখন উদারপন্থী “মিনমিন” কন্ঠ কান পেতে শুনতে হয়।

তানভীর এর ছবি

প্রিয় যুধিষ্ঠির,

আশা করি অতিথি কয় প্রকার ও কী কী- তা এই পোস্ট থেকে বুঝতে পারছেন। পোস্টে ছাগু মুখ দিলে তাকে আমি অতিথি হিসেবে মানতে ও সম্মান দেখাতে নারাজ, বিশেষ করে পোস্টে নির্দিষ্ট করে মেয়ের আকিকা আর জন্মদিনের কথা বলার পরও যখন কেউ জানতে চায় ‘ছেলের নাম কী রাখলেন? নিরীহ ছাগু কী অপরাধ করেছিল যে তাকে প্রাণ দিতে হলো?’ বোঝাই যায় আমার মেয়ের নাম জানাটা তার উদ্দেশ্য নয়, এ নিরীহ পোস্টে আকিকা নিয়ে ক্যাচাল করতেই তিনি মুখ দিয়েছেন।

আর তাছাড়া আমি নিজেই বেনামে/ছদ্মনামে লিখি তাই ব্লগে বেনামে লিখলে সেটা বুকের পাটা না থাকা আর ছাগুসদৃশ বোঝাবে এটির সাথে অবশ্যই একমত হলাম না।

বেনাম বলতে আমি ছদ্মনাম বা পরিচিত নিক বুঝাইনি। আপনার পরিচয় আমি না জানলেও নিশ্চয়ই সচলের মডুরা জানেন। আমার কাছে সেটাই পরিচিতি হিসেবে যথেষ্ট। কিন্তু নাম-পরিচয় আড়াল করা এসব বেনামী ছাগুদের কোন জন্ম পরিচয় নেই। কারণ, পরিচয় আড়াল করে ক্যাচাল লাগানোতে এরা ওস্তাদ। অন্য ব্লগে আমাদের যাদের হাতেখড়ি তারা প্রায় সবাই এর ভুক্তভোগী। সচলে মডুদের প্রচেষ্টার কারণে এখানে এ উৎপাত কম। তবু মাঝে মাঝে দু’একটা এরকম ফাঁক-ফোকর দিয়ে বেরিয়ে পড়ে। অন্য ব্লগে যদি একটু ঢুঁ মারেন তবে এমন আরো অগণিত ছাগু দেখতে পাবেন যারা ব্লগে পরিচয় আড়াল করে অহরহ বর্জ্যত্যাগ করে যাচ্ছে। তাই বলেছি ব্লগজগতে পরিচয় প্রকাশ করে লিখতে/ মন্তব্য করতে বুকের পাটা লাগে। ছাগুরাই শুধু লুকোচুরির পন্থা নিয়ে থাকে। ভালো থাকবেন।

অতিথি লেখক [অতিথি] এর ছবি

সচলায়তনে ভদ্র আলোচনা সম্ভব বলে ধারণা ছিল। এখন দেখছি, এখানে কারো মতের সাথে মত না মিললে তাকে বিশ্রি ভাষায় ব্যক্তিগত আক্রমণ করে ছাগল বলে প্রতিপন্ন করার চেষ্টার প্রবণতাই বেশি (তানভীর এবং কিংকর্তব্যবিমূঢ়ের মন্তব্যগুলি দ্রষ্টব্য, প্রকৃতিপ্রেমিক অন্তত এমন কদাকার ভাষা ব্যবহার করেননি বলে তাঁকে ধন্যবাদ।)। সুস্থ বিতর্ক কি এখানেও সম্ভব নয়?

যাকগে। আপনার ভাল থাকুন এবং কোরবানির ছুরিতে শান দিতে শুরু করুন। জীবহত্যা উৎসব তো প্রায় ঘনিয়ে এল।

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

ভাই, তিনজনের সাথে আলোচনা করেই পুরো সচলায়তন সম্পর্কে মন্তব্য করে ফেললেন! বিষয়টা কি এমন হলোনা যে ক্লাসে ২০০ জন ছাত্রের মধ্যে তিনজন ফেল করেছে বলে পুরো ক্লাসই ফেল এমন রায় দেয়ার মতো হাসি

সচলায়তনে নিয়মিত লিখবার আমন্ত্রণ থাকলো। তবে শুধু কোরবানীর বিরোধীতাই নয়, অন্য কিছু নিয়েও লিখবেন আশা করি।

তানভীর এর ছবি

জনাব, সাম্প্রদায়িক বক্তব্য দিয়ে আক্রমণ আপনিই শুরু করেছেন। আর এখন জবাব না পেয়ে সচলায়তনের ঘাড়ে দোষ চাপানোর চেষ্টা করছেন। আপনি আসল কথার জবাব না দিয়ে তো শুধু ত্যানাই পেঁচিয়ে গেলেন। কোরবানীর বা পাঁঠা বলির মাংস কি আপনি খান না নাকি? শুধু উৎসবেই দোষ? চোখ টিপি

শাহেনশাহ সিমন এর ছবি

কয়েকদিন পর পর একেকজন নিকধারী বিরক্তিকর কিছু প্রশ্নের উদ্রেক করেন যেটা'র কারনে পোস্টের ফোকাস সরে যায়। যুক্তি/বিতর্কে না কুলালে নিকধারী ব্যক্তি তাঁর দুর্বল যুক্তি লুকানোর শেষ আশ্রয় হিসাবে 'সচলায়তনে ভদ্র আলোচনা সম্ভব বলে ধারণা ছিল। এখন দেখছি, এখানে কারো মতের সাথে মত না মিললে তাকে বিশ্রি ভাষায় ব্যক্তিগত আক্রমণ করে' জাতিয় নাকী কান্নাকাটি করে।

চরম বিরক্তিকর!
_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না

_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না

ss এর ছবি

প্রিয় অতিথি লেখক, একসময় সচলায়তনে কিন্তু এটা নিয়ে অনেক উদারপন্থী আলোচনা সম্ভব ছিলো, দেখুন। আশা করছি ধর্মের প্রথাকে সমালোচনা করা এবং তার অতিসংবেদনশীলতা থেকে বেরিয়ে আসতে পারবো আমরা। আপনার বক্তব্য আমার কাছে অন্ততঃ হিপোক্র্যাসি মনে হয়নি, বরং জবাব গুলো অতিধর্ম সংবেদনশীল লেগেছে।

তানভীর এর ছবি

প্রিয় ss, আমার মেয়ের আকিকা আমার কাছে সংবেদনশীল বিষয় অবশ্যই। এর মধ্যে ধর্মকে টানাটানি না করাই ভালো। আর ধর্মকে টানতে হলেও তো একটা যৌক্তিক কারণ থাকতে হবে। গৃহ বা খামার পালিত পশু হত্যা হলে যেখানে পরিবেশের কোন ক্ষতি হয় না, সেখানে তার সাথে শুধু ধর্মের সংশ্লিষ্টতা থাকলে সেটা কেন অমানবিক হবে (যেখানে আমরা প্রতিদিনের প্রয়োজ়নে আরো অগণিত পশু হত্যা করছি)?এই একচোখা দর্শন কি আপনার কাছে 'হিপোক্রেটিক' মনে হচ্ছে না? আশ্চর্য হলাম। আর আপনার বিশ্বাস বা মূল্যবোধের সাথে দশজনের মিল থাকতে হবে এমন কোন কথা নেই। সবার বিশ্বাস বা মূল্যবোধকে সবাই শ্রদ্ধা করতে পারাটাই সবচেয়ে বেশি 'মানবিক'।

ss এর ছবি

আমি আসলে সবার সংবেদনশীলতা নিয়েই বলছিলাম, কিন্তু ওপরের বক্তব্য আপনার কাছে যেমন "অসংবেদনশীল" লেগেছে "একচোখা" লেগেছে আপনার বক্তব্য প্রকাশের স্বরও আমার কাছে তাই লেগেছে। আর পরিবেশের ক্ষতি করেনা- শুধুমাত্র এজন্যেই ধর্মের কোনো প্রথা "ঠিক আছে" বা "নো প্রবলেম" অথবা বর্বর নয়- এমনটা মনে করিনা। প্রথা পালনের নামে পশু হত্যা "অ" প্রয়োজনে বন্ধ করা গেলে তাতে সায় দেই।
সবার বিশ্বাস বা মূল্যবোধকে সবাই শ্রদ্ধা করতে পারাটাই সবচেয়ে বেশি 'মানবিক'।
আসল কথাটা বলে দিয়েছেন , কিন্তু দুঃখিত এই মানবিকতা আপনার জবাবে ওপরে দেখতে পাইনি।
আমি তর্ক বাড়াতে আর উৎসাহী নই। ভালো থাকবেন।

তানভীর এর ছবি

আর পরিবেশের ক্ষতি করেনা- শুধুমাত্র এজন্যেই ধর্মের কোনো প্রথা "ঠিক আছে" বা "নো প্রবলেম" অথবা বর্বর নয়- এমনটা মনে করিনা। প্রথা পালনের নামে পশু হত্যা "অ" প্রয়োজনে বন্ধ করা গেলে তাতে সায় দেই।

দুঃখিত, আপনাদের এ ধরনের আলগা মন্তব্যেও সবার বিশ্বাস বা মূল্যবোধের প্রতি কোন শ্রদ্ধা দেখতে পেলাম না। আপনিও ভালো থাকবেন।

ss এর ছবি

লাকুম দ্বীনুকুম ওয়ালিয়া দ্বীন ---

দুর্দান্ত এর ছবি

আকিকা আমার কাছে সংবেদনশীল বিষয় অবশ্যই। এর মধ্যে ধর্মকে টানাটানি না করাই ভালো। আর ধর্মকে টানতে হলেও তো একটা যৌক্তিক কারণ থাকতে হবে।

ধর্ম বা সংস্কারের বাইরে গেলে আকিকার কি আর কোন যুক্তিথাকে? মাংশ খেতে নয়, শুধুমাত্র 'আকিকা'র জন্য ছাগলের জীবন নেয়াটাকে সংস্কারে বাইরে আর কিভাবে ব্যাখ্যা করা যায়?

তবে সংস্কার নিয়ে বাঁচলে খারাপ হয়ে গেলাম, আর সংস্কার ছাড়া বাঁচলে উতরে গেলাম - এই ধারনার সত্যতা নিয়ে আমার সন্দেহ আছে। আমি ধর্মীয় সংস্কারের ফুটো ধরে মজা পাই, কিন্তু এও জানি যে এই ফুটো ধরাও একটা সংস্কার। পুরাতন কিছু বিশ্বাসকে আজকের জানা তথ্যদিয়ে নাকাল করা যায় ঠিকই, তাই বলে এটাতো অস্বীকার করতে পারি না যে পুরনো দিনের লোকের কাছে এই তথ্যগুলো ছিলনা বলেই তারা সংস্কারের শরনাপন্ন হয়েছেন। তাই আজকে আমি যাকে যুক্তিযুক্ত বলে জানি, সেটাই শতবছর পরে কিছু মানুষের কৌতূকের খোরাক হবে।

তাজা মাংশ খাওয়ার বিবিধ উপলক্ষ থাকায় আমি খুশি। আমি কুরবানির ঈদ, বিয়ে, মুসলমানি, বারবিকিউ হো-ডাউন, কালিপুজা, মাতাঞ্জা, মাইয়ালাতা, আর অবশ্যই আকিকার পক্ষে।

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- আকীকাকে ধর্মীয়ভাবে না দেখে যদি একটা ঐতিহ্য হিসেবে দেখা হয় তাইলে? (আমরা ভাত খাই রেগুলার, মাংস খাই, মাছও খাই, এইটাও মোটামুটিভাবে একটা ঐতিহ্য। ছোটবেলা থেকেই খেয়ে আসতেছি)

আমরা কি তাইলে পয়লা বৈশাখে ইলিশ মাছ খাওয়াও বাদ দিবো? কেবল একটা উৎসবকে ঘিরে হাজার হাজার ইলিশের ছাও-পোনা সহকারে ধ্বংস হওয়াকে কেমনে জায়েজ করবো তাইলে? নাকি মাছ বলে এদের কোনো প্রাণ নাই! খালি প্রাণ আছে গরু আর খাসীরই!

সবাই শসা আর গাজর খেয়ে কাটাবো নাকি এখন থেকে? হাসি
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক

দুর্দান্ত এর ছবি

একদম একমত। খাইতে আসছি দুনিয়ায়, মজা কইরা খাইয়া নেই। উপলক্ষ হইলে মজা আরো বাড়ে। আর যেমন আগেই কইছি, সংস্কার/ঐতিহ্য এগুলান এমনিতে খারাপ কিছু না।
---
শসা আর গাজরও তো কোন মায়ের পুত (বা প্রত্যঙ্গ), গরুছাগল্মুর্গি বাদ দিয়া খালি এদেরকে খাইলে লোকে পার্শিয়াল্টির গুজব ছড়াইতে পারে।

কিংকর্তব্যবিমূঢ় এর ছবি

এইটাই পয়েন্ট ... যার ইচ্ছা সে ধর্ম হিসাবে পালন করুক, যার ইচ্ছা সে ঐতিহ্য হিসাবে পালন করুক,যার ইচ্ছা সে মাংস খাওয়ার জন্য পালন করুক, আমি বলার কে? আমার ক্ষেত থেকে ছাগু ধরে নিয়ে না গেলেই তো হইলো দেঁতো হাসি

সমস্যা হচ্ছে এইটার পক্ষে কিছু বলতে গেলে আবার পাবলিক কাঠমোল্লা ভেবে ফেলে ... সো ডিস্ক্লেইমার, আমি পুরাপুরি এগনোস্টিক [বাংলা কি এইটার?], ধর্মকর্মে বিন্দুমাত্র বিশ্বাস বা মাথাব্যথা নাই ...
................................................................................................
খাদে নামতে আজ ভয় করে, নেই যে কেউ আর হাতটাকে ধরা ...

ধুসর গোধূলি এর ছবি

-

এগনোস্টিক
অজ্ঞেয়বাদী, সংশয়বাদী ইত্যাদি। এগুলার সাথে লাগায়ে আবার বইলা বইসেন না "অজ্ঞেয়বাদী নাস্তিক"। ইদানিং আবার চোখে পড়তেছে মুসলিম নাস্তিক, হিন্দু নাস্তিক। এখন অজ্ঞেয়বাদী নাস্তিক চলে আসলে কেমন হবে জিনিষটা? হাসি
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক

তানভীর এর ছবি

মাংশ খেতে নয়, শুধুমাত্র 'আকিকা'র জন্য ছাগলের জীবন নেয়াটাকে সংস্কারে বাইরে আর কিভাবে ব্যাখ্যা করা যায়?

দুর্দান্ত, আপনি বুঝতে একটু ভুল করেছেন। আসলে আমিই বিশদভাবে এখানে সবকিছু বলি নি বা বলার প্রয়োজনবোধ করি নি। মূলত আসছে সপ্তাহে জন্মদিনের অনুষ্ঠানের জন্যই আমাদের ছাগলের মাংস প্রয়োজন ছিল। প্রথমে দোকান থেকেই কেনার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু এখানে সেই এক্সপার্ট ভদ্রলোক এবং তার পরিচিত খামার থাকায় তাজা মাংস পাওয়া যাবে সেই ভেবে এবং আমরা বাচ্চার জন্মের সময় আকিকা না করায়- ‘এক ঢিলে দুই পাখি’ মারার ব্যবস্থা করেছি মাত্র। কিন্তু এর মূল উদ্দেশ্য আসলে মাংস খেতেই। তাছাড়া শুধু 'আকিকা' অনুষ্ঠানের মাংসও খাওয়া হয়। তবে এমনিতে ‘আকিকা’ নিয়ে আমার কোন মাথাব্যথা নাই। এটা না হলেও কোন সমস্যা ছিল না। সুযোগ আছে, তাই দিলাম- ব্যাপারটা এই রকম প্লেইন এন্ড সিম্পল। কিন্তু আকিকার নাম শুনলে অনেকের চুলকানি উঠে যায়, ব্যাপারটা আমার জানা ছিল না। আর ধর্ম বা প্রথার সমালোচনা আমি অবশ্যই স্বাগত জানাই। কিন্তু তার একটা গ্রাউন্ড তো থাকতে হবে। আমি মাংস খামু, কিন্তু দোয়া পইড়া খাইলেই দোষ- সমালোচনার নামে এই জাতীয় ভিত্তিহীন কথাবার্তা অন্ধ চিন্তাভাবনারই নামান্তর (যারা বলে তারা অবশ্য আবার আজাইরা বেশি জ্ঞানী সাইজা অন্যদেরই অন্ধ মনে করে হাসি )। আমার এক পরিচিত বিশাল জ্ঞানী যিনি আবার ডাক্তার প্লাস পিএইচডি তিনি পরিবেশ রক্ষার জন্য মাংস খান না এবং এই বিষয়ে তিনি খুব উচ্চকন্ঠ যেন তার জন্য পৃথিবীর পরিবেশ মরতে মরতে বেঁচে গেল :D। এই ক্ষেত্রে অবশ্য তিনি অন্য হিপোক্রেটগুলোর চেয়ে ভালো, কারণ তিনি পুরাই ভেজিটেরিয়ান। আমি একদিন তারে জিগাইলাম, আচ্ছা আপনি মাংস খান না, ভালো কথা। না খেতেই পারেন। কিন্তু এইখানে পরিবেশের কী ভূমিকা আছে তা তো আমি বুঝলাম না। তিনি জীবহত্যা নিয়ে বিশাল একটা লেকচার দিলেন। আমি কইলাম যা মাংস আমরা খাই সবই গৃহ বা খামার পালিত। এগিলি পাইলা-পুইষা লাখে লাখে খাই, না হাজারে হাজারে, কোরবানি দিয়া খাই বা না দিয়া, আকিকা দিয়া খাই বা না দিয়া, মা কালীর নামে বলি দিয়া খাই বা না দিয়া তাতে পরিবেশ বা পৃথিবীর কী এসে গেলো? উনি এই আমাগো অতিথির মতোই ঠিকমতো জবাব দেন না, খালি গোঁ ধরে জীবহত্যা-জীবহত্যা নিয়া একই টেপ-রেকর্ডার চালান আর নিজেকে একটু বেশি 'আধুনিকমনস্ক ' হিসেবে ভং ধইরা বইসা থাকেন। যাদের বিশ্বাস বা মূল্যবোধে মনে হয় এটা 'বর্বরতা' তবে সেই বিশ্বাস বা মূল্যবোধ অন্যের উপর চাপিয়ে না দিয়ে নিজের কাছেই রাখুন, যেমন অন্যের ধর্মীয় প্রচারণা নিজেরা সহ্য করেন না, এটাও তেমনি। আপনাদের কাছে যা 'অ'প্রয়োজন, অন্য অনেকের কাছেই সেটা প্রয়োজনীয়।

মাংশাসী প্রাণী হিসেবে আপনার মতো আমিও মাংস খাবার বিবিধ উপলক্ষ থাকায় খুশী দেঁতো হাসি

রাগিব এর ছবি

মানুষ পুরোদস্তুর মাংশাসী প্রাণী। শ্বদন্ত দেখলেই তা বোঝা যায়। শ্বদন্ত ছাড়া কোনো ব্যক্তি থাকলে তার দাঁতালো হাসিটা আমি দেখতে খুবই আগ্রহী (অষ্টমাশ্চর্য)।

--

জন্মদিনের দাওয়াতে বার্গার খাওয়া (কোনোই দরকার ছিলো কি জন্মদিন করার? অপ্রয়োজনীয় সংস্কার নয় কি?) আর আকীকাতে খাসি জবাই দেয়ার মধ্যে পার্থক্যটা কী, তা একটু সহজ কথায় অতিথি লেখক লিখে জানালে ভালো হয়। বার্গার খেয়ে, কিংবা ইলিশ মাছ ভাজা-পান্তা খেয়ে আবার সেই মুখেই অমুক-কারণে পশুমাংস ভক্ষণ খারাপ, আবার তমুক কারণে জায়েজ আছে, এই রকম উপদেশ দেয়াটা বড়মাপের ভণ্ডামি। যদি অতিথি লেখক নিরামিশাষী হয়ে থাকেন, তাহলে অবশ্য অন্য কথা। কিন্তু মন্তব্য দেখে তা মনে হচ্ছে না ...

----------------
গণক মিস্তিরি
মায়ানগর, আম্রিকা
ওয়েবসাইট | কুহুকুহু

----------------
গণক মিস্তিরি
জাদুনগর, আম্রিকা
ওয়েবসাইট | শিক্ষক.কম | যন্ত্রগণক.কম

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

যাদের বিশ্বাস বা মূল্যবোধে মনে হয় এটা 'বর্বরতা' তবে সেই বিশ্বাস বা মূল্যবোধ অন্যের উপর চাপিয়ে না দিয়ে নিজের কাছেই রাখুন, যেমন অন্যের ধর্মীয় প্রচারণা নিজেরা সহ্য করেন না, এটাও তেমনি।
সুন্দর বলেছেন।

দুর্দান্ত এর ছবি

আগেই বুঝছিলাম। আমার আপনার কথায় বেমিল নাই। তবে খোলাসা করার পর আরেকটু পরিস্কার হইল। শুক্রিয়া।
--
আমি কইলাম যা মাংস আমরা খাই সবই গৃহ বা খামার পালিত। এগিলি পাইলা-পুইষা লাখে লাখে খাই, না হাজারে হাজারে, কোরবানি দিয়া খাই বা না দিয়া, আকিকা দিয়া খাই বা না দিয়া, মা কালীর নামে বলি দিয়া খাই বা না দিয়া তাতে পরিবেশ বা পৃথিবীর কী এসে গেলো?

যদিও অফটপিক, তবুও এইখানে গরীবের দুইটা পয়সা ফেলতে হইতেছে। দেখেন পাবলিকে পয়সা দিয়া বেশী বেশী দুধ-মাংস খায়। এই পয়সার লোভে বড় বড় খামার তৈরী হয়। সেই খামার থেইকা মিথেন আর কার্বন - ডাই - অক্সাইড নির্গত হয়। আবার ধরেন আম্রিকা ইউরোপে এই সব খামারে গরুশুয়োরকে খাওয়ায় সোয়াবিন, নাইলে ভুট্টা - যেগুলি গজাইতে এসট্রা মাটি আর পানি লাগে। আর এইসব খোরাকি মাঠ থেইকা খামারে নিতে আর সেই দুধ-মাংস খামার থেইকা আমার আপনার খাবার টেবিলে আনতে আরো কিছু এক্টিবিটি হয় যা পরিবেশের উপর চাপ দেয়। এখন আমি আপনি যদি দুধ-মাংস খাওয়া আরো বাড়াই তাইলে এই সামগ্রিক চাপটা বাড়ে। আর আমি আপনি যদি গাছখোর হই, আর সাথে আম্রিকা ইউরোপ আর চীনের আরো দেড় বিলিয়ন মানুষও তা করে, তাইলে এইগুলান হয়না। এই হিসাবে আমি আপনার পরিচিত সেই ডাক্তারের সমব্যাথী।
এখানে আরেকটু বিস্তারিত গল্প পাওয়া যাবে।
তবে সেই পর্যন্তই। এক বড় জামবাটি ভরা ধোঁয়া ওঠা ভাল করে কষানো তেল ওলা গরুর সিনার মাংস সামনে পাইলে পরিবেশের কথা মনে আসার সূযোগ পায় না। ইয়েস মি লড, গিল্টি, গিল্টি, গিল্টি!

রাগিব এর ছবি

মানুষকে গাছখোর বানাবার চক্রান্ত কয়েক হাজার বছর ধরে চলছে। কিন্তু ইলিশ মাছ ভাজার গন্ধ পেলে যেমন প্রফেসর শংকুর প্রতিবেশী অবিনাশ বাবু আর বেড়াল নিউটনের পার্থক্য থাকেনা, সেরকম মানুষের স্বভাবের মধ্যেই যে মাংসাশী ভাব রয়েছে, তা হাজার বছরেও পালটায়নি। মানুষ স্বভাবজাতভাবেই মাংসাশী। এটা পাল্টাবেনা কখনোই।

---

আকিকা কিংবা বলির জন্য পশু হত্যা না করে বার্গার বানাবার জন্য হত্যা করলে কি পরিবেশের কার্বণ নিঃসরণ কিছু কম হবে? পোস্টের অনেকেরই কথার মূল সূর সম্ভবত এটাই -- আকীকার জন্য খাসি জবাই দেয়া যদি অহেতুক/পরিবেশবিরোধী ইত্যাদি ইত্যাদি সংস্কার হয়, তবে বন্ধুর জন্মদিন উদযাপনের জন্য দোকানে গিয়ে বার্গার খাওয়াও কি একই রকম অহেতুক/পরিবেশবিরোধী ইত্যাদি ইত্যাদি নয়?

----------------
গণক মিস্তিরি
মায়ানগর, আম্রিকা
ওয়েবসাইট | কুহুকুহু

----------------
গণক মিস্তিরি
জাদুনগর, আম্রিকা
ওয়েবসাইট | শিক্ষক.কম | যন্ত্রগণক.কম

তানভীর এর ছবি

বস, আপনার কথায় কোন ভুল নাই। কিন্তু ওই লাইনে চিন্তা করলে খাওয়া-দাওয়ার আগে কার্বন-ডাই-অক্সাইড নিঃসরণের আরো বড় কারণগুলির বিহিত করতে হবে। যেমন- ফসিল ফুয়েল দিয়ে গাড়ী চালানো, সাবআরবান এরিয়ায় থাকা ইত্যাদি। সে তুলনায় দুধ-মাংস খাওয়া বাদ দেয়া মোটামুটি একটা ফ্যাশনেবল পদক্ষেপ। আমার সেই ডাক্তার তিনটা গাড়ি চালান, থাকেন সাবার্বে বিশাল বাড়ি নিয়ে যার এনার্জি খরচ মোটামুটি বিশালই হওয়ার কথা। তার এনার্জি রিলেটেড কার্বন ফুটপ্রিন্টের তুলনায় ফুডের কার্বন ফুটপ্রিন্ট থেকে বাঁচানো অবদানের পরিমাণ হাতির পাশে মশাও হয় না। আর মোদ্দা কথা এরা সে লাইনে চিন্তা করলে তো আমিই সবার আগে সাপোর্ট দিতাম। সে জন্যই এদের কইসিলাম আজাইরা ফাল না পাইড়া এট্টু পড়ালেখা কইরা আসতে হাসি

দ্রোহী এর ছবি

দূর ভবিষ্যতে হয়তো কোন একদিন আবিষ্কার হবে হাগার ও জীবন আছে। টয়লেটে পড়ার সময় হাগাও ব্যাপক কষ্ট পায়।

যুগ যুগ ধরে মানুষ কী নিষ্ঠুর ভাবে হেগে যাচ্ছে!!!! ব্যাপারটা চিন্তা করেই কান্না পেয়ে যাচ্ছে।

তানভীর এর ছবি

দেঁতো হাসি আমারো

আপনার অস্ট্রেলিয়া-জীবন কেমন চলছে? আলা-***-বামা আর আপনার মোচু সুপারভাইজারুদ্দিন নির্ঘাত আপনাকে মিস করছে।

দ্রোহী এর ছবি

আমার অস্ট্রেলিয়া জীবন গেইম খেলে খেলে কেটে যাচ্ছে। এখনো চাকরী-বাকরীর কোন বন্দোবস্ত হয়নি। ঢাকা ঘুরে আসি তার্পর গেইম খেলা বাদ দিয়ে চাকরী করা যাবে।

আলা_***_বামাতে ফেলে আসা পোলাপাইনদের সাথে দিনে দুই/তিনবার কথা হয়। আর মোচু সুপারভাইজারুদ্দিনরে নিশ্চিতভাবেই আমাকে খুব মিস করছে। বেচারা আমাকে মেইলের পর মেইল দিয়ে জবাব না পেয়ে ক্লান্ত।

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

আরে দ্রুহী ভাই, আপনি তো বস !! এইভাবে যে বিষয়ডা দ্যাখন যায়- এইটা তো মাথায়ই আসে নাই ...দেঁতো হাসি

______________________________________________________

মধ্যরাতের কী-বোর্ড চালক

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- তখন পল্টন ময়দানে বিখ্যাত হাগা মহাসম্মেলন হবে, সম্মেলন শেষে হাগুরা সবাই প্রেসক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলন করবে তারপর প্রধাণমন্ত্রীর কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচীর পর স্মারকলিপি পেশ করবে তাঁর বরাবর। তাতে লেখা থাকবে, "আমাদের সাথে বর্বরতা চইলতো না চইলতো না। কোনো চুদুরবুদুর চইলতো না চইলতো না। আমাদেরকে কমোডের শক্ত সিরামিকে না ফেলে এখন থেকে তুলতুলে তোষকের উপর ফেলতে হবে, নাইলে লাগাতার ধর্মঘট!"

একবার ধর্মঘট শুরু হইলেই কেল্লাফতে। মাংস খাওয়ার মজা তখন টের পাওয়া যাইবো! তখন ফুড চেইনের হাদিসের ধোয়া তোলা বন্ধ করে নিজের রসনার জন্য হলে বর্বরতা না, উৎসবের জন্য হলে বর্বরতা জাতীয় ফতোয়া বিশেষভাবে বন্ধ হবে।

জে. কে.
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক

দ্রোহী এর ছবি

আরেকটা খারাপ কথা মনে পড়লো।

আমার বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের বন্ধু। এখন খুব বড় চাকরী করে। অসম্ভব ভালো ছেলে। মানুষ-গরু-ছাগু সব প্রাণীকেই সে সমান চোখে দেখতো। তাদের কষ্ট দেখলে তার চোখে পানি এসে যেতো।

সে ঠিক করেছিলো বিয়ের পর বউয়ের সাথেও দুষ্টু কিছু করবে না- যদি বউয়ের ব্যথা লাগে!!!! মাসখানেক আগে বেচারা একটি পুত্রসন্তানের বাবা হয়েছে। ☺☺☺

শাহেনশাহ সিমন এর ছবি

গড়াগড়ি দিয়া হাসি
_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না

_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

ব্যস্ততা কমুক, আবারও নিয়মিত হন। হাসি

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।