জাহাজী জীবনের গল্প (পাঁচ): সুয়েজ খাল বেয়ে গীজান (সৌদী আরব)

তীরন্দাজ এর ছবি
লিখেছেন তীরন্দাজ (তারিখ: বিষ্যুদ, ০৯/১০/২০০৮ - ১০:১৬পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

পেরিয়াসে দু'সপ্তাহ ধরে মেরামত করা হলো বাক্কিস। মেশিনরুমে গাধাখাটুনীতে শরীর ভেজা ত্যানার মতো নেতিয়ে পড়তে চায়। এরই মঝে জানা গেল, আমাদের পরবর্তী যাত্রা ভুমধ্যসাগর হয়ে সুয়েজ খাল পেরিয়ে ও লোহিত সাগরের পারের সৌদী আরবের সমুদ্রবন্দর গীজানে। জাহাজ বোঝাই করা হলো ও কোন এক ভোরে পেরিয়াস বন্দর ছেড়ে রওয়ানা হলাম। সুয়েজ খাল, লোহিত সাগরের কথা এত জেনেছি, শুনেছি, এবার নিজ চোখে দেখার সুযোগ। খালাসী জীবনের খাটুনির কষ্ট ছাপিয়ে আনন্দবোধটুকুই জায়গা পেলো বেশী। বুকের ভেতরে উত্তেজনা বাইরে এসে বাঁধভাঙ্গা উচ্ছাসের মতো ডানা মেললো। সেই সাথে পাল্লা দিয়ে ফুঁসে উঠলো ভুমধ্যসাগরের নোনা জল।

পাঁচদিন একটানা যাত্রার পর মিশরের পোর্ট সাইদকে ডানদিকে রেখে সুয়েজ খালের প্রবেশমুখে এসে নোঙ্গর ফেললো আমাদের জাহাজ। সামনের দিকে তাকিয়ে আনন্দ আর উত্তেজনায় শিউরে উঠলো শরীর। অপেক্ষা করতে মন না চাইলেও, বেশ ক'দিন প্রবেশমুখেই অপেক্ষায় কাটাতে হলো। ছাব্বিশ বছরের জাহাজের ভাঙ্গাচোরা অবস্থার ও বিভিন্ন যান্ত্রিক ত্রুটির কারনে খাল পেরুনোর অনুমতি দিতে গররাজী কতৃপক্ষ। তাছাড়া পোর্ট সাইদেই ইস্তাফা দিয়েছে রেডিও অফিসার, আমার দাবা প্রতিপক্ষ মার্কনী। তবে দ্বিতীয় সমস্যার সমাধান সহজেই হলেও, আইসঙ্গত সমাধান নয়। আমার বন্ধু, যার রেডিও অফিসারের সামান্যতম জ্ঞানও নেই, তাকেই রেডিও অফিসার হিসেবে কতৃপক্ষের কাছে পরিচয় করানো হলো। তাহলে রেডিও যোগাযোগের কাজটি করবে কে? শোনা গেলো, দ্বিতীয় অফিসারই নাকি নিজের কাজের ফাঁকে ফাঁকে সে কাজটিও সারবে।

১১৩ কিলোমিটার দৈর্ঘের এই খাল ভুমধ্যসাগরের তীরে অবস্থিত পোর্ট সৈয়দকে লোহিত সাগরের পারের সুয়েজকে সংযুক্ত করে। খালটি খনন করার দ্বায়িত্ব পায় সুয়েজ খাল কোম্পানী নামের এক ফরাসী প্রতিষ্ঠান। ১৮৫৭ সালে আলিয়স নেগ্রেলী নামক এক অষ্ট্রিয়ান ইন্জিনীয়ারকে দিয়ে খালের নকশা প্রণয়ন করানো হয়। ১৮৬৯ সালে ১৬ই নবেম্বরে প্রথম জাহাজটি এই খাল অতিক্রম করে।

এর অনেক আগে ফরাসী বীর নেপোলিয়ন বোনাপার্ট ১৭৯৮ সালে বৃটিশ ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধের সময় মিশরকে তার ঘাটি করতে চেয়েছিলেন। তিনি তার প্রকৌশলী গ্রাতা লেপরেকে এই খাল তৈরী করার উদ্দেশ্যে মাপজোক করার আদেশ দেন। মাপজোক শেষ হবার পর দেখা যায় যে, ভুমধ্যসাগর থেকে লোহিত সাগরের উচ্চতার যতোটি তারতম্য, সেটি অতিক্রম অসম্ভব। একারণে তখন খালে খননের পরিকল্পনা বাদ দেয়া হয়। তাছাড়া ১৮০১ সালে নেপোলিয়ানকেও মিশর থেকে তার সৈন্যবাহিনী সরিয়ে তড়িঘড়ি করে সে দেশ ত্যাগ করতে হয়। যুদ্ধের হাল হকিকত বিচার করেই এটি করতে বাধ্য হন তিনি।

১৮৪১ সনে ফরাসী, বৃটিশ ও অষ্ট্রিয়ান প্রকৌশনীরা নতুন মাপজোক শুরু করেন। ১৮৪৬ সালে তাদের কাজ শেষ হবার পর জানা যায় যে, উচ্চতার এই তারতম্য খাল খননের জন্যে কোন প্রতিবন্ধক নয়। ২৫ শে এপ্রিল, ১৮৬৯ সালে অস্ট্রিয়ান আলিয়স নেগ্রেলীর নকশা অনুযায়ী খননের প্রাথমিক কাজ শুরু হয়। প্রায় দেড় মিলিয়ন শ্রমিক, যাদের সিংহভাগই মিশরী, এই খাল তৈরীতে হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করেন। তাদের মাঝে প্রায় এক লাখ পচিশ হাজার সে সময়ে কলেরায় মারা যায়। এত মানুষের বিষুদ্ধ পানীয় জলের সীমিত সরবরাহই এই মহামারী কারণ ছিল। খনন শেষ হবার পরও এই খালকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ বাঁধে। দ্বিতীয় বিশ্বয়ুদ্ধের পর বৃটিশরাও এর দখল ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়। ১৯৫৬ সালে বৃটিশ, ফরাসী ও ইজরাইলীরা মিলে খালের দখল নেয়ার চেষ্টা করে। তবে জাতিসংঘের দ্রুত হস্তক্ষেপে তা ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়। ১৯৬৭ সালে মিশর ইজরাইলের ছয় দিন যুদ্ধের সময় এর পুর্ব তীরভাগ ইজরাইলের দখলে চলে যায়। সেকারনে ১৯৭৫ সাল অবধি জাহাজ চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়। তারপরই মিশরের পরিচালনায় চলাচল শুরু হয় আবার।

সেসব শ্রমিকের অকান্ত পরিশ্রম ও জীবনের বিনিময়ে এই খাল তৈরী হয়েছে, তাদের কথা মনে করে বিষন্নতা ঘিরে ধরলো। ইতিহাসের পাতায় তাদেরকে শ্রমিক বলা হলেও, সে সময়ের বিচারে তারা ছিল ক্রীতদাসই। তাদের মানবিক অধিকার, শারিরীক সাস্থ্য ও জীবনের প্রতি কোন তোয়াক্কা না করেই তাদের মৃত্যুর মুখে পাঠিয়েছে তাদের দেশী ও বিদেশী প্রভুরা। হাড়ভাঙ্গা খাটুনির পর শরীর না চলতে চাইলে চাবুক চালিয়েছে। মনে হলো, তাদের শরীর থেকে যে রক্ত এই সাগরের জল লাল করেছে, লোহিত সাগরে নামকরণের কারণ সেখানেই। খালের পারে দাঁড়ানো লাখ লাখ ক্রীতদাসের ডাকাডাকি, আহাজারি আর যন্ত্রনাকাতর আর্তনাদ যেন শুনতে পেলাম। এর মাঝে আমি এক নব্য শ্রমিক জাহাজে।

সকালের নাস্তা শেষে এসব ভাবছিলাম, ইন্জিনের ঘরঘর আওয়াজ আর নাবিক সহকর্মীদের হৈ চৈ শুনে বাস্তবে ফিরে এলাম। শুনলাম, এখনই ছেড়ে যাচ্ছে জাহাজ। বন্দর কতৃপক্ষ অনুমতি দিয়েছেন খাল অতিক্রম করার। তবে বেশ টাকা নাকি ঢালতে হযেছে। পৃখিবীর সর্বত্রই একই কাহিনী, টাকাই মহৌষধ ! কিন্তু তারপরেও নড়লো না জাহাজ। নোঙ্গর নাকি তোলা যাচ্ছে না। মেরামতির কাজে ছাড়ার সময় পেরিয়ে গেল, সুতরাং অপেক্ষা করতে হলো আরো এক দিন। আমার জন্যে শাপে বর। নিজেরই ভাবনার গহনে তলিয়ে গেলাম আবার।

পরদিন সুয়েজ খালের বুক চিরে ধীরে ধীরে এগিয়ে চললো আমাদের জাহাজ। দু'পাশে মরুভুমি। মনে হলো লাখ লাখ কৃতদাস খুন্তি কোদাল নিয়ে দাড়িয়ে আছে দুই পারে। আমাদেরকে যেন হাত তুলে থামাতে চাইছে, তাদের উপর অত্যাচারের কথা বলতে চাইছে। তাদের রক্তের উপর দিয়ে যে চালিয়ে যাচ্ছি আমাদের জাহাজ, তা মনে করিয়ে দিতে চাইছে বারবার। সামান্য পরেই আমার নিজের ডিউটির সময় হলো। মেশিনরুমে ঢুকে ওদের দৃষ্টির তীব্রতা থেকে যেন পালিয়ে বাঁচলাম।

২২৪০ কিলোমিটার লম্বা এই লোহিত সাগর। সর্বোচ্চ পরিধি ২৬০ কিলোমিটার, গল্প অফ এডেন বা আরব সাগরে মিশে যাবার আগে অংশে পরিধি মাত্র ২৯ কিলোমিটার। গভীরতাও সেখানে কম, মাত্র ১৩০ মিটার। আরব সাগরের সাথে জলের প্রবাহ এই কম উচ্চতার কারনে এত বেশী বাধাগ্রস্থ যে, এসাগরে লবনের ঘনত্বও (৪.২%) অন্যান্য সাগরের(৩.৫%) চেয়ে বেশী। দু'পাশের মরু পাহাড়ের ছায়ায় একটু লাল আভা সাগরের জলে, সেখানেই হয়তো এই নামকরণের স্বার্থকতা। সুয়েজখাল পেরুনোর তিনদিন পর লোহিত সাগরের বুকে গীজান সমুদ্রবন্দর থেকে প্রায় এক মাইল দুরে সমুদ্রের বুকে এসে নোঙ্গর ফেললাম আমরা।

কিছুক্ষণের আমাদের সৌদী এজেন্ট এলো আনন্দবার্তা নিয়ে।আমাদের সমস্ত জাহাজীদের জন্যে একগাদা চিঠি। সবার চোখেই আনন্দ। দেশ ছাড়ার পর এই প্রথম চিঠি পেলাম মা, বাবা, ভাই বোনের কাছে থেকে। একটা নয়, অনেকগুলো। জাহাজের অফিসে এসে জমা হয়েছে। চিঠিগুলো হাতে পাবার পরপরই ডিউটির সময় হয়ে গেল। সেগুলো হাতে নিয়েই ঢুকলাম মেশিনরুমে। মায়ের চিঠে পড়ে একা একা কাঁদলাম। এভাবে দেশ ছাড়ি, তা বাবা-মা কখনোই চাননি। প্রাণপনে বাঁধা দিয়েছিলেন। বাবা নানা যুক্তিতে ও মা তাঁর চোখের জলে। কিন্তু তারুণ্যের যে জোয়ার বুকের ভেতরে, তার বিপরীতে সে বাঁধার শক্তি নিতান্তই নগন্য। কিন্তু এই জাহাজের খোলে মেশিনরুমের আলো আর কালিতে সে জোয়ারই কান্না হয়ে মিশে গেল লোহিত সাগরের জলে। কোন বাতাসে দূর্বল আর কোন ঢেউএ সবল, সেটা সবসময় নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারলে আমরা কি মানুষ হতাম!
চলবে......
××××××××××××××××××
আগের পর্বের লিংক
পর্ব এক
পর্ব দুই
পর্ব তিন
পর্ব চার


মন্তব্য

ভাঙ্গা মানুষ [অতিথি] এর ছবি

সেবা প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত 'বাউন্টিতে বিদ্রোহ' পড়ে আমারো অনেকদিনের ইচ্ছে ছিলো, নাবিক হবো! যাঁতাকলে পড়ে সেই ইচ্ছে কবেই মরে গিয়েছে! এখন আবার সেই ইচ্ছে যেন জেগে উঠছে, হা হা... শুধু পরিশ্রমটাই ভয় ধরিয়ে দেয়!!

ডিসকভারী (নাকি ন্যাট জিও, মনে নেই) চ্যানেলে একবার সুয়েজ খালের উপর প্রোগ্রাম দেখেছিলাম। সেখানে এই উচ্চতাজনিত অসুবিধার বর্ননা আর কিভাবে এর সমাধান করা হয়েছে, তাও দেখিয়েছিল। সুন্দর সুললিত সেই বর্ননায় কোথাও এসব শ্রমিকদের দুরবস্থার কথা বলেনি। এই হয়! শাহজাহান তাজমহল বানিয়েছিলো, টাকা ছিল, ক্ষমতা ছিল, নির্দেশ দিয়ে দিলো; কিন্তু সেই আর্কিটেক্টের নামই বা আমরা কয়জন জানি!!!

এবারের কিস্তিতাও আগের মতোই ভালো লেগেছে, ধন্যবাদ!

তীরন্দাজ এর ছবি

আপনাকেও ধন্যবাদ!
**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

মাহবুব লীলেন এর ছবি

উচ্চতা নিচতার অংক না বুঝলেও আপনার সাথে অবলীলায় সুয়েজ খাল পার হয়ে এলাম

এরপরে?

তীরন্দাজ এর ছবি

এরপর...
আমার সাথেই এক মাস কাটাবেন,
গীজানের বহির্বন্দরে.... লোহিত সাগরের বুকে...
মেশিনরুমেই খাটবেন আমার সাথে...
মাঝে মঝে মরুঝড়,
গরম, ঘাম আর মাছি...
বন্দর থেকে ফেরার পথে
নৌকোডুবি....
এই আরকি! তেমন কিছু নয়!
**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

পুতুল এর ছবি

মনে হয় শরৎবাবু বলেছিলেন; "পা দুটো থাকলেই ভ্রমন করা যায় কিন্তু হাত দুটো থাকলেই লেখা যায় না"।

আপনার ভ্রমনের মত পা আর লেখার মত হাত দুইটাই আছে!
খুব নিরিক্ষনীয় দৃষ্টিতে ভ্রমনবৃতান্ত লিখেছেন। পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।
**********************
কাঁশ বনের বাঘ

**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!

রণদীপম বসু এর ছবি

কোন বাতাসে দূর্বল আর কোন ঢেউএ সবল, সেটা সবসময় নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারলে আমরা কি মানুষ হতাম!

পরের পর্বের অপেক্ষায়...

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

গৌরীশ রায় এর ছবি

জমিয়ে রেখেছিলাম একসাথে পড়ব বলে ।
আমি মন্ত্রমুগ্ধ।

আচ্ছা স্যার
জাহাজ নামক যন্ত্রে শ্রমিক হলে কি নৈমিত্তিক যান্ত্রিকতা থেকে মুক্তি পাওয়া যায় ?

তীরন্দাজ এর ছবি

যান্ত্রিকতা থেকে মুক্তি কোন শ্রমিকেরই নেই। সেজন্যেই মাত্র এক বছরের স্থায়ীত্ব ছিল আমার জাহাজী জীবন।

আপনার ভালো লাগছে জেনে আনন্দিত হলাম।
**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

হু... দুধের স্বাদ ঘোলে মিটাই...

আরেকজন আবার মনে করায়ে দিলো বাউন্টিতে বিদ্রোহের কথা... আহা...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

তীরন্দাজ এর ছবি

কোনটা দুধ, আর কোনটা ঘোল, সেটা আসলেই চিন্তার বিষয়!
**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

অতিথি লেখক এর ছবি

হুম................জীবনে অনেক এইম চেন্জ্ঞ করেছি তাই ভাবছি নাবিক হওয়ার ট্রাই নেওয়া যায় নাকি ।
নিবিড়

তীরন্দাজ এর ছবি

সুযোগ পেলে হয়ে যান- কিছুদিনের জন্যে হলেও।
**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

তানভীর এর ছবি

তীরন্দাজ ভাই, দারুণ সমৃদ্ধ আপনার জীবন সেইসাথে বর্ণনাও খুব উপভোগ্য। ব্যস্ততার জন্য আগে মন্তব্য হয়তো করা হয় নি, কিন্তু সবগুলো পর্বই ফাঁকে ফাঁকে পড়েছি, পড়ছি।

= = = = = = = = = = =
ঊষার দুয়ারে হানি আঘাত
আমরা আনিব রাঙা প্রভাত
আমরা ঘুচাব তিমির রাত
বাধার বিন্ধ্যাচল।

তীরন্দাজ এর ছবি

শুনে খুব খুশী হলাম তানভীর। অনেক ধন্যবাদ!
*********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

সংসারে এক সন্ন্যাসী এর ছবি

‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍বরাবরের মতোই অতীব সুখপাঠ্য।

সুয়েজ খালের ইতিহাসটা জেনে মনটা খারাপ হয়ে গেল।

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু? চিন্তিত

তীরন্দাজ এর ছবি

আমি লিখতে গিয়েই মন খারাপ করেছি।
**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

Shadhoo [অতিথি] এর ছবি

ভয়ংকর সুন্দর !

তীরন্দাজ এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ আপনাকে!
**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

জুলিয়ান সিদ্দিকী এর ছবি

চলুক
____________________________________
ব্যাকুল প্রত্যাশা উর্ধমুখী; হয়তো বা কেটে যাবে মেঘ।
দূর হবে শকুনের ছাঁয়া। কাটাবে আঁধার আমাদের ঘোলা চোখ
আলোকের উদ্ভাসনে; হবে পুন: পল্লবীত বিশুষ্ক বৃক্ষের ডাল।

___________________________
লাইগ্যা থাকিস, ছাড়িস না!

তীরন্দাজ এর ছবি

ধন্যবাদ! ভাল থাকবেন!

**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

বরাবরের মতোই দারুন। পরের পর্বের অপেক্ষায়। আর একদম শেষে পুরোটা পিডিএফ করে দিলে তো আরো ভাল হবে। সংগ্রহে রাখার মত একটা জিনিস এটা।
_______________
বোকা মানুষ মন খারাপ

তীরন্দাজ এর ছবি

ধন্যবাদ! পিডিএফ করারও ইচ্ছে আছে।
**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

মুজিব মেহদী এর ছবি

মনে হলো, তাদের শরীর থেকে যে রক্ত এই সাগরের জল লাল করেছে, লোহিত সাগর নামকরণের কারণ সেখানেই।

কীর্তিসমূহ মানুষই স্থাপন করে, মানুষই ওর ভালোমন্দের অংশী। তবে শ্রমিকশ্রেণিকে প্রায়শ রক্ত ও মৃত্যুর সঙ্গেই ল্যাপ্টাল্যাপ্টি হয়ে যেতে হয়। প্রায় সব বড়ো বড়ো কীর্তির ডিটেলেই শ্রমিকনিধন, নিদেনপক্ষে শোষণ, আছেই।

তথ্যের প্রাচুর্যই বলে খুব খেটে লেখা আপনার সিরিজটি। একটা দারুণ ভালো কাজ হচ্ছে।

................................................................
তোমার হাতে রয়েছি যেটুকু আমি, আমার পকেটে আমি আছি যতটা, একদিন মনে হবে এটুকুই আমি, বাকি কিছু আমি নই আমার করুণ ছায়া

... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ...
কচুরিপানার নিচে জেগে থাকে ক্রন্দনশীলা সব নদী

তীরন্দাজ এর ছবি

ঠিক বলেছেন। সেকারনেই যে কোন প্রাসাদ বা স্থাপত্যকর্ম দেখতে গেলেই বুকের ভেতরে জ্বালা ধরে আমার।
**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

s-s এর ছবি

খুবই সুখপাঠ্য লেখা, কয়েকটা পর্ব পড়েছি, আপনি এত অভিজ্ঞ একজন মানুষ আপনি কি অনেক ই বয়োজ্যেষ্ঠ , নাহলে এতসব করার সময় কখন পেলেন? খুবই এডভেঞ্চারাস লাইফ দেখা যাচ্ছে, এখনও কি নাবিকের কাজ করেন বা কোনো জাহাজ চালান?

তীরন্দাজ এর ছবি

তিরিশ বছর আগের কাহিনী, বুঝতেই পারছেন, বয়সের কতোটা পথ পেরিয়েছি।

না ভাই, জাহাজী জীবন ছিল এক বছরের মাত্র। এখন সফটওয়ার নিয়ে ব্যাস্ত। তবে এই কাহিনী লিখতে লিখতে নিজেরই আফসোস হচ্ছিল এই ভেবে যে, আরো কয়েকটি বছর কেনো জাহাজে কাটালাম না। কাল এই কথাই বলছিলাম বউকে। ও বলল, তাহলে অন্যরকম হতো জীবন, তোমার সাথে হয়তো আমার দেখাই হতো না..। তখন চুপ করে রইলাম।
**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

মাহবুব লীলেন এর ছবি

শুনেছিলাম আলেকজান্ডার তার ভ্রমণের সময় কেরানি রাখতো তার ভ্রমণ (কিংবা বিজয়) কাহিনী লিখে রাখার জন্য

মেশিন সম্পর্কে আমার যা বিদ্যা তাতে তো আর মেশিন রুমে কাজ করতে পারবো না

এই যুগে যদি কেউ তার ভ্রমণ কাহিনী লেখার জন্য কেরানি রাখে তবে জাহাজে একটা ট্রাই নিতে পারি

নিশ্চয়তা দিচ্ছি মালিক যেখানে গিয়ে প্যাদানি খাবে সেখানে নিদ্বিধায় লিখে দেবো মহান মালিক এই ভূখণ্ডে কদাচ পদার্পণ করেন নাই
(আলেকজান্ডারের কেরানিরাও নাকি তাই করত)

তীরন্দাজ এর ছবি

আহা! জাহাজে চাকুরীটা নেবার আগে যদি আপনার ইচ্ছের খররটি জানতাম........ !
**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

রানা মেহের এর ছবি

PDF এবং PDF চাই
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

ekjon এর ছবি

তিরুদা
ওইটা "গিজান" হবে না
হবে "জিযান"
আমি আবু আরিশ এ ছিলাম

তীরন্দাজ এর ছবি

অনেক আন্তরিক ধন্যবাদ আপনাকে। তিরিশ বছর আগে যখন সেদিকে রওয়ানা হয়েছিলাম, তখন গ্রীকরা গিজানই বলেছিল। হয়তো ওরা এই বন্দরের জন্যে এই নামটিই ব্যাবহার করে। মনে হচ্ছে গ্রিক ম্যাপেও এই নামটিই দেখেছিলাম।

কিন্তু তারপর আর অন্য ম্যাপে আর গীজান খুঁজে বের করতে পারিনি। তারপরও রেখে দিয়েছিলাম। তবে আপনার কথাটিই ঠিক হবে ও সুযোগমতো পাল্টে নেবো।
**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

আবু রেজা এর ছবি

অসাধারণ লেখা!
খুব ভালো লাগল।
যেন সুয়েজ খাল দেখতে পেলাম।
..........................................................
যে জন বঙ্গেতে জন্মি হিংসে বঙ্গ বাণী
সে জন কাহার জন্ম নির্ণয় ন জানি।।

যে জন বঙ্গেতে জন্মি হিংসে বঙ্গ বাণী
সে জন কাহার জন্ম নির্ণয় ন জানি।।

তারেক এর ছবি

নেক্সট পর্বে যাইতেসি...
_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে

_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে

অমিত আহমেদ এর ছবি

দুর্দান্ত।
অনেকদিন পরে আবার শুরু করলাম পড়া।
পরের পর্বে যাই এখন।


ওয়েবসাইট | ব্লগস্পট | ফেসবুক | ইমেইল

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।