আটপৌরে ঘোরাঘুরি ১ - ইয়ুংফ্রাউইয়োক

ইয়াসির আরাফাত এর ছবি
লিখেছেন ইয়াসির আরাফাত [অতিথি] (তারিখ: শুক্র, ২৭/০৯/২০১৩ - ৯:৪৮অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

ঘোরাঘুরি আমরা বেশ ভালো পাই। আমরা বলতে আমি, আমার গিন্নি আর এক বছর বয়েসি কন্যাটি। পৌণে ছয় এর পুত্র ঘুরতে যাবার কথা শুনলেই মুখ গোমরা করে ল্যাচা মেরে বসে পড়তে চায়, ঘুরে ঘুরে পাথর গাছপালা পানি দেখার চাইতে ইউটিউবে কার্টুন দেখা তার কাছে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ এবং আনন্দদায়ক। বেশিরভাগ দিনে তাকে ধমক দিয়ে কিংবা টেনে হিঁচড়ে বাড়ির বার করতে হয় এবং সেইসব দিনগুলোতে অবধারিত ভাবে কানের কাছে সারাক্ষণ বাজতে থাকে, বাসায় যাব, বাসায় যাব। আমরা বলি, বাবা, সবসময় বাসায় বসে থাকলে কিন্তু তোমার শিকড় গজিয়ে যাবে, চেয়ারের সাথে আটকে থাকে হবে সারাজীবন। ছেলে ভয় পেয়ে কিছুক্ষণের জন্য থামে, তারপর যে কে সেই।

এইসব নিয়েই চলছে আমাদের অনিয়মিত, অপরিকল্পিত, ষোল আনা বাঙালি ঘোরাঘুরি। হয়ত সকালে ঘুম থেকে উঠে ঠিক করলাম, আজকে একটু দূরে কোথাও যাব। বাচ্চা কাচ্চা খাইয়ে স্ট্রলার গাড়িতে তুলে দিই ছুট। নতুন জায়গায় যাবার চেষ্টা করি প্রায়ই, মাঝে মাঝে চেনা জায়গাতেই ফিরে ফিরে আসি। অবশ্য যা দেখি তাই ভালো লাগে। আমরা সমতল দেশের মানুষ, কোথাও একটু উঁচু নিচু দেখলেই মন আহা উঁহু করে। আবার চলতে চলতে এমন কিছু জায়গার দেখা পেয়ে যাই, যা যে কোন মানুষের ভালো লাগতে বাধ্য।

কয়েকদিন আগে গেছিলাম টপ অফ ইউরোপ বলে খ্যাত ইউংফ্রাউইয়োক রেল স্টেশনে। এটাকে অবশ্য পুরোপুরি অপরিকল্পিত ভ্রমণ বলা যাবে না। ইন্টারনেটে কিছু খোঁজখবর করছিলাম অনেক আগে থেকেই। টিকেটের কত দাম, কোথা থেকে যাওয়া যায়, গেলে কি কি দেখা যাবে, বিনোদনের কি কি ব্যবস্থা আছে ইত্যাদি তথ্য দেয়া ছিল এই ওয়েবসাইটে। এছাড়া টপ অফ ইউরোপ বিষয়ে সচলেই কিছুদিন আগে লিখেছিলেন জনাব ঈয়াসীন, এখানে

যারা এই জায়গার ব্যাপারে অবগত নন, তাদের জন্য বলছি, এটা সাধারণ কোন রেল স্টেশন নয়। সুইজারল্যান্ডের দুটি বিখ্যাত পর্বত চূড়া ইয়ুংফ্রাউ এবং মঙ্ক এর মাঝে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৩,৪৫৪ মিটার উচ্চতায় এটাকে তৈরী করা হয়েছে, রেলপথ গেছে আইগার এবং মঙ্ক পর্বতের গা ফুটো করে টানেল বানিয়ে। এটি ইউরোপের উচ্চতম রেল স্টেশন, তৈরী করা শুরু হয়েছিলো ১৮৯৬ সালে, ষোল বছর লেগেছে কাজ শেষ হতে। একশ বছর আগে বানানো এই স্থাপনা নিঃসন্দেহে সেই সময়ের অন্যতম ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যাচিভমেন্ট। এই প্রকল্পের পরিকল্পনাকারী হচ্ছেন অ্যাডলফ গুইয়ার জেলার, যিনি অবশ্য তাঁর কর্মযজ্ঞের ফলাফল দেখে যেতে পারেননি।

বেশিরভাগ জায়গাতে আমরা গাড়িতে করেই যাই, এটার বেলায় ঠিক করলাম ট্রেনে যাব। গোল্ডেন পাস বলে অত্যন্ত চমৎকার একটা রেলওয়ে লাইন আছে, যেটা আল্পসের মাঝ দিয়ে একে বেঁকে ইন্টারলাকেন হয়ে লুক্রেন পর্যন্ত চলে গেছে। ইন্টারলাকেন থেকে ইয়ুংফ্রাউইয়োকের ট্রেন ছাড়ে, কাজেই গোল্ডেন পাসে চড়লে গন্তব্যে যাবার পাশাপাশি নতুন একটা জায়গা দেখা হয়ে যাবে। একজনের ট্রেনের টিকেটের হিসাব করা যাক (এই সেকশনটা যারা বেড়াতে আসতে চান তাদের জন্য লিখছি)

রনো (আমার বাসা) থেকে মন্ট্রু (গোল্ডেন পাসের শুরু) - ১২ ফ্রাঁ (৩৫ মিনিট)
মন্ট্রু থেকে ইন্টারলাকেন ওয়ানওয়ে – ৫১ ফ্রাঁ (৩ ঘণ্টা ৫ মিনিট)
ইন্টারলাকেন থেকে টপ অফ ইউরোপ রিটার্ন – ১৯৮ ফ্রাঁ (৪ ঘণ্টা ৩৪ মিনিট + যতক্ষণ আপনি ওপরে থাকেন)
ইন্টারলাকেন থেকে বার্ন – ৫৪ ফ্রাঁ (৫৪ মিনিট)
বার্ন থেকে রনো – ৩৪ ফ্রাঁ (১ ঘণ্টা ২৫ মিনিট)

মোট – ৩৪৯ ফ্রাঁ

হিসাবটা একটু ঘাবড়ে যাবার মত হলেও কিছু ডিসকাউন্ট সুবিধা আছে। যদি আপনার একটি হাফ ফেয়ার কার্ড থাকে, তবে পুরো ভাড়াটাকে ২ দিয়ে ভাগ করে ফেলতে পারেন, হয়ে গেলো ১৭৪.৫ ফ্রাঁ। (এক বছর মেয়াদি হাফ ফেয়ার কার্ডের দাম ১৭৫ ফ্রাঁ, এক মাস মেয়াদি কার্ডের দাম ১২০ ফ্রাঁ। এই সময়কালে সুইজারল্যান্ডের সমস্ত ট্রেন, বোট, কেবল কার, ফানিকিউলারে আপনার জন্য ৫০% মূল্যহ্রাস প্রযোজ্য হবে)। এখান থেকে আরও ১৭ ফ্রাঁ খরচ কমানো যাবে, যদি আপনি ভেঙ্গে ভেঙ্গে টিকেট না কিনে একটি ডে কার্ড কিনে ফেলেন (শুধুমাত্র হাফ ফেয়ার কার্ড থাকলে কেনা যাবে, ৭১ ফ্রাঁ দাম, এক দিনের জন্য আনলিমিটেড ট্রেন ট্রাভেল)।

টাকার কচকচানি বাদ দিয়ে ভ্রমণে ফেরা যাক। যেহেতু খুবই লম্বা জার্নি, একটু সকালে বের হওয়া উচিত। কিন্তু ঘুম থেকে জেগে শিশুদের তৈরী করে বেশি সকালে বের হওয়া সহজ নয়। তাছাড়া মন্ট্রুতে গোল্ডেন পাস ট্রেনের সময়সূচী একটা ফ্যাক্টর। সকাল পৌণে ন’টায় যে ট্রেন তার কোচগুলো পুরনো, কিন্তু পৌণে দশটার ট্রেন নতুন কোচ, বড় বড় কাঁচ দিয়ে সাজানো। নামটাও গালভরা, গোল্ডেন পাস প্যানোরামিক। মিস করব কেন?

ঠিক করলাম, ৯টা ৪ মিনিটের ট্রেন ধরব বাসার পাশের স্টেশন থেকে। তারপর পরিকল্পনা মোতাবেক বিশাল এক চক্কর দিয়ে বাড়ি ফিরব। বিধি বাম। পুত্রকে মানিয়ে কন্যার স্ট্রলার ঠেলে ঠেলে স্টেশনে পৌঁছাতে মিনিট খানেক লেট করে ফেললাম, আমাদের চোখের সামনে দিয়ে মন্ট্রু যাবার ট্রেন ঝিক ঝিক করে চলে গেল। নিখুঁত টাইমিং, সুইস ট্রেন প্রায় কখনোই দেরি করে না। এখন কোন উপায়েই আর পৌণে দশটার গোল্ডেন পাস ধরা যাবে না। এত মন খারাপ হল বলার নয়। কানে ধরলাম, টায়ে টায়ে আর কখনো বেরোব না, দরকার হলে আধা ঘণ্টা স্টেশনে বসে থাকব, তবুও.........

রুট প্ল্যান চেঞ্জ। বার্ন হয়ে ইন্টারলাকেন, আবার বার্ন থেকেই রনো, নো গোল্ডেন পাস (ফেরার সময় গোল্ডেন পাসের শেষ ট্রেনটি পাওয়া যায় সাড়ে পাঁচটায়, কিন্তু আমরা তখনো ওপরে থাকব)। সবকিছু ঠিক থাকলে ১২.৫৪ তে ইন্টারলাকেন পৌঁছচ্ছি, ১.০৫ এর ট্রেনে টপ অফ ইউরোপের দিকে যাত্রা শুরু করব। যাত্রার খুঁটিনাটি এই ছবিতে পাওয়া যাবে।

jungfrauregion_small

ছবি ১: এক নজরে ইয়ুংফ্রাউ রেজিয়ন (অফিশিয়াল ওয়েবসাইট থেকে নেয়া)

দুই লেকের মাঝখানের জায়গাটার নাম ইন্টারলাকেন। শহরের নামের অর্থ নিশ্চয়ই আর ব্যাখ্যা করতে হবে না। দূরে সবচেয়ে উঁচু যে মাথাটা দেখা যাচ্ছে, সেটাই হল ইয়ুংফ্রাউ শৃঙ্গ। তার বামে আছে আরও দুই বিশালবপু পর্বত, মঙ্ক আর আইগার। ইন্টারলাকেন ওস্ট নামের স্টেশন থেকে লাল দাগ (রেল লাইন) শুরু হয়ে মাঝে দুভাগ হয়ে গেছে, একভাগ লাউটারব্রুনেন আর অন্যভাগ গ্রিন্ডারওয়াল্ডের দিকে। দুটো পথ আবার এসে মিলেছে ক্লাইনে শাইডেগ স্টেশনে। তার একটু পর থেকেই সোজা পর্বত ফুঁড়ে উর্ধ্বপানে ইয়ুংফ্রাউইয়োকের দিকে চলে গেছে টানেল আর রেললাইন। তীর দেখানো জায়গাটায় এসে পথ শেষ। এর পর থেকে শুধুই পায়ে হেঁটে এদিক ওদিক যাওয়া চলবে, ইচ্ছা হলে ইয়ুংফ্রাউয়ের চূড়া পর্যন্ত।

যা বলছিলাম, সবকিছু ঠিক থাকলে ১২.৫৪ তে ইন্টারলাকেন ওস্টে পৌঁছব। নিজের মাতব্বরির জন্য পারলাম না। কথায় বলে, অল্পবিদ্যা ভয়ংকর। ফরাসী ভাষায় OUEST মানে হচ্ছে পশ্চিম, EST মানে হচ্ছে পূর্ব। যেহেতু আমরা জার্মানভাষী এলাকায় যাচ্ছি, একটু নাম বদল হবে এটাই স্বাভাবিক। ধরেই নিলাম, INTERLAKEN OST হচ্ছে জার্মান ভাষার পশ্চিম ইন্টারলাকেন, INTERLAKEN EST হবে পূর্ব ইন্টারলাকেন। কাজেই ট্রেন যখন এসে INTERLAKEN WEST স্টেশনে থামল, আমরা তাড়াহুড়ো করে গাট্টি বোঁচকা, স্ট্রলার নিয়ে নেমে গেলাম। জার্মান ভাষায় পশ্চিম কে যে WEST আর পূর্বকে OST বলে সেটা কেমন করে জানব? কাজেই নেমে ধরা খেলাম। ট্রেন সুন্দর করে চলে গেল, আর কাউন্টার থেকে জানলাম পরের ট্রেন চব্বিশ মিনিট পরে। ১ টা ০৫ এর ট্রেনটাও ফসকে গেল। ইন্টারলাকেন ওস্টে যখন আসলাম, তখন প্রচণ্ড হতাশায় ভুগছি। আরও এক ঘণ্টা লেট। ওপরে উঠে দেখব কি ঘোড়ার ডিম? সময়ই তো নেই।

এই দুর্যোগময় মুহুর্তে আশার আলো দেখালো একজন স্টেশন কর্মী। আমাদের টিকেট হচ্ছে INTERLAKEN OST – GRINDERWALD – JUNGFRAUJOCH – GRINDERWALD - INTERLAKEN OST

তাকে জিজ্ঞেস করলাম, ভাই, এই যে পাঁচ মিনিট পর লাউটারব্রুনেন এর ট্রেনটা ছাড়ছে, সেটায় কি আমরা যেতে পারব? সে গম্ভীর মুখে ছোট করে জবাব দিল, ইয়া। ব্যাস, আমরাও চড়ে বসলাম সাথে সাথে। লাউটারব্রুনেন নেমে ট্রেন বদল করতে হবে। সাধারণ রেলপথের বদলে এখানে আছে কগ হুইল রেইল, যার কাজই হচ্ছে গিয়ারের দাঁত বসিয়ে ট্রেনকে ওপরে তোলা বা নীচে নামানো।

ট্রেনে উঠে দেখি, টিকেট চেকার আসছে। গ্রিন্ডারওয়াল্ডের টিকেট নিয়ে লাউটারব্রুনেন থেকে চড়ছি কেন, এই প্রশ্নের জবাবে ভীষণ অবাক হয়ে পাল্টা প্রশ্ন করলাম, এই ট্রেন টপ অফ ইউরোপে যাচ্ছে না? আমার ভয়ানক বিস্মিত চেহারা দেখেই কিনা, সে আর কথা না বাড়িয়ে মেঘস্বরে বলল, ক্লাইনে শাইডেগ নেমে ট্রেন বদল করবে। হেসে মনে মনে বললাম, জ্বী, আমি জানি।

অনেক বকবক করে ফেলেছি। বাচালতা বন্ধ করে ছবির গল্পে চলে যাই।

IMG_5462

ছবি ২: লাউটারব্রুনেন এর জলপ্রপাত, যাত্রা হলো শুরু

IMG_5484

ছবি ৩: চলতি পথে এমন অনেক ঝর্ণা দেখা যাবে

IMG_5494

ছবি ৪: মিনিট পাঁচেকের মধ্যেই লাউটারব্রুনেন এত নীচে চলে গেছে দেখে ভয় পেলাম। দুই ঘণ্টায় তাহলে কতখানি ওপরে উঠব? অনেক দূরে একটু আগের জলপ্রপাত দেখা যাচ্ছে

IMG_5496

ছবি ৫: আরেক দফা লাউটারব্রুনেন। পেছনে কি মেঘ? ভুল

IMG_5503

ছবি ৬: প্রথম স্টেশনে চলে এসেছি। এই পর্যন্ত সম্ভবতঃ সহজেই গাড়িতে আসা যায়

IMG_5506

ছবি ৭: মহাশয়ের প্রথম দর্শন, বেরসিক তারের হাত থেকে কোথাও নিস্তার নেই

IMG_5512

ছবি ৮: ওয়েঙগেন কে পেছনে ফেলে এসেছি

IMG_5513

ছবি ৯: চারদিকে কেবল কার, চেয়ার লিফট ইত্যাদির ছড়াছড়ি। ইয়ুংফ্রাউ ছাড়াও ছোটখাটো আরও অনেক চূড়ায় ওঠানামার ব্যবস্থা আছে। এরকম একটি চেয়ারলিফট স্টেশন

IMG_5519

ছবি ১০: কাছে চলে আসছি। চোখে দৃশ্যটাকে যতখানি অলৌকিক লাগে, ক্যামেরায় তার সহস্রাংশও নয়। ছবি তোলার হাত ভাল না থাকার প্রভাব নব্বই শতাংশ

IMG_5527

ছবি ১১: এই বরফ চূড়াটিকে প্রথমে সবচেয়ে উঁচু মনে হচ্ছিলো। এখন আর তা লাগছে না

IMG_5528

ছবি ১২: আরও কাছে। রোমাঞ্চ কেবলই বাড়ছে

IMG_5542

ছবি ১৩: উচ্চতার পার্থক্যটা এখন পরিষ্কার।

IMG_5544

ছবি ১৪: আইগার এর টানেল থেকে নেমে আসছে ট্রেন। শাটার স্পীড ৪০০০ থাকায় কেমন কালো এসেছে ছবিটা। মনে হচ্ছে কালো মেঘে ঢেকে গেছে চারপাশ

IMG_5549

ছবি ১৫: আইসমীয়ার গ্লেসিয়ার। এখানে ট্রেন দশ মিনিট মত থামে। পাহাড়ের মাঝখানে জানালা কেটে যাত্রীদের দেখবার সুযোগ করে দেয়া হয়েছে

IMG_5550

ছবি ১৬: আরেক দফা আইসমীয়ার গ্লেসিয়ার

IMG_5555

ছবি ১৭: স্টেশনের বাইরে প্রতিষ্ঠাতার ছোট প্রতিকৃতি

IMG_5567

ছবি ১৮: এবার আমরা স্টেশনের ওপরে অবজার্ভেশন বিল্ডিং এর বারান্দায় চলে এসেছি। এটার নাম স্ফিংস। স্টেশন থেকে একটু হেঁটে লিফটে করে আসতে হয়। বেশ উঁচু। দূরে দেখা যাচ্ছে সুইজারল্যান্ডের সবচেয়ে বড় গ্লেসিয়ার আলেশ কে।

IMG_5568

ছবি ১৯: স্ফিংস থেকে তোলা স্টেশন লেভেলে থাকা স্নো ফান জোনের ছবি। লম্বামত দেখতে জিনিসটা হচ্ছে একটা কাঁচঘেরা টানেল, রাবার টিউবে চড়ে পিছলে নেমে আসা যায় ভেতর দিয়ে। ওপরে ফিরতে হবে অবশ্য হেঁটে

IMG_5574

ছবি ২০: স্নো ফান জোনে নেমে এসেছি। অনেক আমোদের ব্যবস্থা আছে এখানে। যেমন বুকে দড়ি বেঁধে স্টিলের তারে ঝুলতে ঝুলতে চলে যাওয়া। একজন রওনা দিচ্ছে, আরও অনেকে লাইনে

IMG_5575

ছবি ২১: গেল

IMG_5576

ছবি ২২: বহুদূর যেতে হবে......

IMG_5582

ছবি ২৩: আলেশ গ্লেসিয়ারের ওপরিভাগ

IMG_5591

ছবি ২৪: স্নো ফান জোনের পেছনে মঙ্ক পর্বত

IMG_5616

ছবি ২৫: আলপাইন সেনসেশন। স্নো ফান জোন থেকে আইস প্যালেসে যাবার আগে ছোট্ট এই অ্যানিমেটেড অবজেক্ট দৃষ্টি আকর্ষণ করবে। পাহাড়ের জীবনযাত্রা দেখানো আছে ছোট ছোট অংশে

IMG_5622

ছবি ২৬: আইস প্যালেসে যাবার আগে করিডোরের দেয়ালে অনেক পেইন্টিং চোখে পড়ে। কেউ একজন উঁচু কোন পাহাড়ে চড়ে তিন বন্ধুকে দেখছে দূর থেকে। কে এই ভদ্রলোক? জানি না

IMG_5624

ছবি ২৭: দুর্গম আল্পসকে পোষ মানানোর চেষ্টা চলছে অনেক আগে থেকে। পলকা সেতুগুলো একটা নমুনা

IMG_5625

ছবি ২৮: একজন অভিযাত্রী আহত হয়ে পড়ে আছে। সঙ্গীরা সেবা শুশ্রূষা করে চলেছে

IMG_5629

ছবি ২৯: ক্লাইনে শাইডেগ। কত সালের চেহারা এটা? জানি না

IMG_5636

ছবি ৩০: হাতুড়ি আর গাঁইতি শাবল দিয়ে খনন কাজ চলছে

IMG_5637

ছবি ৩১: আইগারকে খোঁড়া শুরু হয়েছে। মেমরা এসেছেন উদ্বোধন করতে?

IMG_5638

ছবি ৩২: হাতে টেনে পাথর খোঁড়া হচ্ছে, অবিশ্বাস্য!

IMG_5639

ছবি ৩৩: গুরুতর আহত কিংবা নিহত শ্রমিকদের স্মরণে নামফলক। সবই ইটালির লোক। সুইসরা কি অংশ নিতে ভয় পেয়েছিলো?

IMG_5646

ছবি ৩৪: ক্লাইনে শাইডেগ থেকে দেখা গ্রিন্ডারওয়াল্ড। লাউটারব্রুনেন দিয়ে উঠেছিলাম, এইদিক দিয়ে নামছি। কিন্তু স্বীকার করতেই হবে, এই দিকের রাস্তাটা ওইদিকের তুলনায় একেবারে পানসে

IMG_5650

ছবি ৩৫: আইগারের কোল ঘেঁষে নেমে গেছে রেলপথ। গ্রিন্ডারওয়াল্ড এখনও বেশ দূরের পথ, বাড়ি ফিরে যেতে ঘণ্টা চারেকের বেশি লাগবে।


মন্তব্য

 মেঘলা মানুষ এর ছবি

বাহ! ভাল লগলো ঘোরাঘুরি।
আচ্ছা, এত উপরে রেলস্টেশন বানানোর কারণটা আসলে কি/

ইয়াসির আরাফাত এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ মেঘলা মানুষ

কারন হিসেবে উইকি বলছে, পর্যটন শিল্পের প্রসার

ঈয়াসীন এর ছবি

চলুক , চমৎকার। সুখপাঠ্য।

------------------------------------------------------------------
মাভৈ, রাতের আঁধার গভীর যত ভোর ততই সন্নিকটে জেনো।

ইয়াসির আরাফাত এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ ঈয়াসীন।

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

চলুক

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

ইয়াসির আরাফাত এর ছবি

ধন্যবাদ হাসি

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

চলুক

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

অতিথি লেখক এর ছবি

বর্ণনা যেমন অসাধারণ, ছবিগুলোও সেই রকম অসাধারণ!
ছবিগুলো দেখতে দেখতে অদ্ভুত এক জগতে চলে যাচ্ছিলাম। আরো এরকম লেখা চাই।

-এস এম নিয়াজ মাওলা

ইয়াসির আরাফাত এর ছবি

বিশেষ ধন্যবাদ নিয়াজ মাওলা

অন্ততঃ আরও দুটো পাবেন হাসি

এস এম নিয়াজ মাওলা  এর ছবি

অপেক্ষায় থাকলাম।

-নিয়াজ

প্রোফেসর হিজিবিজবিজ এর ছবি

সুন্দর লেখা আর ছবি।

____________________________

ইয়াসির আরাফাত এর ছবি

সদয় মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ প্রোফেসর

অতিথি লেখক এর ছবি

দারুন লাগল চলুক
ইসরাত

ইয়াসির আরাফাত এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ ইসরাত

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

কগ হুইল রেইলে ট্রেন চলে কী করে? এতো উপরে আর ঠাণ্ডায় গিয়ারের দাঁতের ফাঁকে ফাঁকে তো শক্ত বরফ জমে যাবার কথা।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

ইয়াসির আরাফাত এর ছবি

যা দেখলাম, কগ হুইল রেইল একেবারে বাংলা পদ্ধতিতে চলে, নীচে রেললাইনের দুই পাতের মাঝে সমান্তরালে একটানা গিয়ার দাঁতের সারি, আর ট্রেনের চেসিসের নীচে প্রয়োজনমাফিক গিয়ার চাকা। তবে উইকি ঘেঁটে দেখি ম্যালা ধরণের কগ হুইল সিস্টেম থাকতে পারে, এই দেখুন

একেবারে শত কোটি টাকার প্রশ্ন পাণ্ডবদা, ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। যদিও ক্লাইনে শাইডেগ মাত্র ২০৬১ মিটার উঁচু, এর কিছু পর থেকে পুরো পথটাই আইগার আর মঙ্কের পেটের ভেতর, তবুও শীতকালে শক্ত বরফ জমে বইকি। গ্রীষ্মকালে অবশ্য কিছুই থাকে না, আমরা দেখি নি।

গুগল বলছে ইয়ুংফ্রাউবান আগে স্নো প্লাউ ব্যবহার করত, এখন করে স্নো ব্লোয়ার

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।