(অনেক জায়গায় অনেক সার্টিফিকেটধারী শিক্ষিত মানুষের সাথে কথা বলতে গিয়ে অনুধাবন করেছি আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা কতটুকু সঠিক শিক্ষায় আমাদের শিক্ষিত করছে আর কতটুকু বেঁচে থাকার প্রয়োজনে পাস করা শিক্ষিত করেছে। অার শিক্ষিতই বা কাকে বলে, এটি নিয়েও আমাদের অনেকের মাঝে ভ্রান্ত ধারণা বিদ্যমান রয়েছে। স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় পাশ দিলেই আমরা তাকে শিক্ষিত বলি। আসলে কি তাই?
আজ সকালে একটা আর্টিকেল পড়লাম, যেখানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধঃগমনের স্বরুপ তুলে ধরা হয়েছে। প্রাচ্যের অক্সফোর্ড এক সময়ের উপমহাদেশের শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠ থেকে আজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নামে কলঙ্কে পরিণত হয়েছে। কোনো র্যাঙ্কিংয়েই এই বিশ্ববিদ্যালয়কে ৫০০-র ভেতরেও খুঁজে পাওয়া যায় না। শিক্ষকদের লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতি, ছাত্রদের চাঁদাবাজিসহ সব কিছুই হয় এ বিশ্ববিদ্যালয়ে, শুধুমাত্র পড়ালেখা ছাড়া। যখন আমাদের উচিত এ থেকে পরিত্রাণের উপায় খোঁজা এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে আবার তার পুরনো অবস্থান ফিরিয়ে দেয়ায় সচেষ্ট হওয়া, তখন আমাদের একাংশ ওই নোংরা রাজনীতিতে হাত মেলাচ্ছে আর বাকিরা বালিতে মুখ গুঁজে আকাশপানে পশ্চাৎ তুলে দিয়ে অদৃষ্টকে দুষছে।
তখন ক্লাস নাইনে পড়ি। ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজের ছাত্র। ফাইনাল পরীক্ষার রেজাল্ট দিয়েছে। সাধারণ গণিতে ৬৫ পেয়েছি। সব বিষয়ের মধ্যে সেটাই সর্বোচ্চ। উচ্চতর গণিতে কোনমতে পাস করেছিলাম শুধু। বাবা-মা দু’জনই মহা দুঃশ্চিন্তায়। এহেন অবস্থা থাকলে তো ছেলেকে এসএসসিতে স্টার মার্কস পাওয়ানো প্রায় অসম্ভব! কাজেই, আমার স্বল্প আয়ের বাবা আমাকে অংকের টিচারের কাছে প্রাইভেট পড়ানোর সিদ্ধান্ত নিলেন। বাড়িভাড়া, ইলেকট্রিক-গ্যাসের বিল, স্কুলের বেতন- এসব দিয়ে মা’র হাতে সেসময় সর্বসাকুল্যে ৪০০০ টাকার মত থাকত- সারা মাস ৪ জনের এ পরিবারটিকে চালিয়ে নেয়ার জন্য। এর মধ্যে এখন যোগ হল ৮০০ টাকা- মানিক স্যারের মাইনে।