বন ও লতাকে নিয়ে জীবনের আনন্দ আঁকতে চেয়েছিলেন কবি। সেই অর্বাচীনতাই কাল হয় বুঝি, তাই নিরানন্দ এসে তাকে ডেকে নিয়ে যায় রেল রাস্তায়, শেষ ট্রেনে, দূরে। হাইড্রান্টের কবি জানেনা শ্রাবস্তী থেকে অদ্যাবধি, আবহমান একমাত্র মৃত্যুকেই উজানে ধারাবাহিক করে তোলে, বাকি সব কেবলি অপভ্রংশ মাত্র।
রূপসী বাংলা ডেভেলপ করলে কতগুলো প্লট হবে সে সাধনায় দু’জন ঠিক করে খায়; ফেরাতো দূরের কথা, যারা কখনো সূর্যো ...
অপ্রিয় সত্য হলেও কবুল করতে দ্বিধা নেই ছেলেবেলা থেকেই আর দু’দশটা ছেলের চাইতে আমি বোধহয় একটু বেশীই খাটো ছিলাম।
এইখানে নদী ছিলো, ছিলো করতোয়ার স্বচ্ছ সলিল-দুপুরবেলা বৃন্দাবন মাঝির উদাস কন্ঠের গান-পাঠশালা ছুট ফুলকিশোরীদের দুরন্তপনা। এই খানেই ছড়িয়ে ছিলো বট-অশ্বত্থের মায়াবতী শিকড়- প্রাগৈতিহাসিক স্মৃতিস্তম্ভের মতো তারা সগৌরবে দাঁড়িয়েছিলো আকাশকে আড়াল করে, বহু বহু নাগরিক ক্রুরতাকে উপেক্ষা করে। ঠিক পাদদেশেই ছিলো পরেশ সাধুর আস্তানা, আরো ছিলো সর্পকন্যা বিধুয়ার সাথে হাওয়ায় হাওয়ায় জড়ানো গোপ ...
কানে কানে বলে গেছে উদাসী বিকেল
একাকীত্বই এ জীবনের চরম সত্য
বলে গেছে নিঃসঙ্গ রাজপথ আর বৃষ্টিহীন শরতের মেঘ
অন্ধ ল্যাম্পপোস্ট, শূন্য পুকুরঘাট, সঙ্গীহীন উড়ে যাওয়া চিল
ম্রিয়মান চাঁদের আলো অমোঘ নিয়তি হয়ে বলে গেছে
মিষ্টি স্বপ্নের মাঝে ছুঁয়ে যাওয়া কিশোরীর শাড়ির আঁচল
আলতোস্পর্শে ব’লে চ’লে গেছে--
জীবনের বাকীটা পথ লক্ষ্যহীন গন্তব্যের দিকে
খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হেঁটে যেতে হবে একা।
দিগন্ত ...
শিশু যখন কাঁদে, মা বুকের প্যাঁচ খুলে; স্নেহভরে নিরন্ন মুখে স্তন ধরে চেপে; শিশু কোল জুড়ে হাসে… কান্না থেমে যায়! ও-মা, তুমি স্তনপাত্রে রেখেছো জন্মঋণ। দিনের পর দিন আগলে রেখেছো প্রাণ গোপন জঠরে, তোমাকে ভালোবেসে পঞ্চমদিন চুরি করেছি দীর্ঘজীবন! পরজন্মে শোধ হবে কী? তোমার দুধঋণ…
ভাত আমাকে আর ভালোবাসে না! ভাতফুল দুধঠোঁটে হাসে; চিবুক খুঁটে খুঁটে খায়। ভাতভাই তুমি কি ক্ষুধার রহস্য বুঝ? জানো কি— ...
উত্তর-দক্ষিণ, পুনরায় ফিরে দেখা রোডের
বিশ্রাম। ইতস্তত বাজপাখি অনুসরণ করে
প্রকৃতি; আর প্রান্তে এসে, যার প্রতিফলন বৃহদাকার
শূন্যবাঁক আর ফাঁকা চিহ্নের সঙ্গে লড়াই-লাইন
বাড়ি ফেরত মানুষের ঢল, বিন্দু-বিন্দু ঘাম
বদলে নেয়া আর বদলে যাবার প্রস্তুত সময়ে
দলিল পরিবর্তনের মোহাচ্ছন্ন আবাস
ঘাম-গ্রন্থি উদ্বায়ী, জোড়-বিজোড়
মনোপুলি খেলায়
আমরা যেখানে সময় বিক্রি করি
মাত্র আট দশমিক পঞ্চাশ সেন্ট ...
কাছের মানুষ পাশে থাকতে নেই! বলা কি ঠিক? যতদূরে থাকি ইচ্ছের ভেতর খেয়ে ফেলি ভয়। তৃপ্তি ফুরাবার নয় জেনে সম্পর্কের গাঢ়ত্ব আরো বেশি ছুঁই… তুই জানালা ঘেঁসে দাঁড়িয়ে থাকিস; আমিও মুখোমুখি দাঁড়াই নিয়মচক্রে, বিস্তারে। যতই অপেক্ষা, ততই অভিযোগ। যতটা সংশয় সে-তো আমারই পাশের চোখ। আমি তারে দু’চোখের পাশেই রাখি— সত্যি, রাগ চেঁচিয়ে কিছুই বলতে পারি না। মমতা, নিকটে এসো পুনর্বার; বলো— তার সঙ্গ পেয়েছো ...
সে এক প্রবীণ গাড়ি
হাজার মাইল পথ পাড়ি দিয়ে, ঝাঁ চকচকে দেহ কামড়ে
মুচড়ে, কাছিমের মত কাদার মরিচা ফেলে
এ রাস্তা সে রাস্তা করে এসে উঠেছে আমাদের ঢালে।
আকাশে জ্বলল নীল চাঁদ, মাটিতে ফুটল ঝিনুকের খোসা
হলুদ-লাল ফুটকি গায়ে ধানের পোকারা সাইরেন বাজাল
আমরা সঙ্গী হলাম।
ভ্রমণ বলতে রাজী নই, তবু হই শুধু এক বহমান ছায়া।
ভুল পারম্পর্য ভেবে ভস্ম হলো একটা পাথর, মনে হলো
তার অন্তঃস্থ জ্যোৎস্না উড়ে ...
সহজমন্ত্র
হঠাৎ তার চোখের ভেতর জমানো সান্ত্বনা
সহজ হতে দেখে রহস্য আঁকছি পোড়াহাতে
এ-দেহের গোপন ইচ্ছেগুলো শরমিন্দা হতে
দেখে ভয়ের উপর সজোরে হাসে কার কান্না
আমাদের প্রিয়বোধগুলো বেড়ে ওঠার চূড়ায়
আমাকে পান করাও একডোজ অব্যবহৃত-সময়
সুখে স্বাচ্ছন্দে থাকবে আমাদের অবশিষ্ট ভয়
♣
দূরে ঠেলে রাখার সন্দেহ; প্রতিনিয়ত কেনো যে
আমাকে জড়িয়ে পেঁচিয়ে রাখো বুকের ভেতর—
যত নিরবতা, তত নিরাপদ; মন খু ...
যেতে চায় যেতে দি
প্রখর রোদ্দুর____
ঠিক যেমন নদী জানে-
গড়িয়ে যাবে জল
নিয়ে যাবে নুড়ি, গুল্ম
নিয়ে যাবে চর,
ধীরে ধীরে নিয়ে যাবে একে বেকে
সমগ্র সর্পিল শরীর ময় সাম্পান ভাটিয়ালি।
যেমন নীড় জানে-
উড়ে যাবে পাখি তার
একদিন সাঁঝ নেই, গোধূলি কিচির
বাতাস উপযাচক টানে উড়িয়ে নেবে, খড় কুটো
ধীরে ধীরে পচনের হাতে সমস্ত ডালটাই
ন্যাতানো নুলো ভিখিরি।
রাতের তারারা হারাবে আলোর অভিসারে,
জেনেও পে ...