আমি কান পেতে রই

মাহবুব ময়ূখ রিশাদ এর ছবি
লিখেছেন মাহবুব ময়ূখ রিশাদ [অতিথি] (তারিখ: শনি, ০৪/০৮/২০১২ - ২:৩৪পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

#বাড়িতে ঢুকতে না ঢুকতেই বিকট শব্দে ট্রান্সফর্মার বিস্ফোরিত হলো আগুনের ঝিলিক মেখে আর সমস্ত এলাকা অন্ধকার হয়ে চাঁদের আলোকে বরণ করে নিলো। চাঁদ তখনো পূর্ণ বিকশিত হয় নি। জ্যামিতিক অর্ধবৃত্তের মতো আকাশের গা বেয়ে ঝুলছে। এই ঘুটঘুটে অন্ধকারে চাঁদটিকে এক বিষণ্ণ তরুণীর কপালের সাদা টিপের মতো লাগছে। সমস্ত অন্ধকার একটি বিন্দুতে মিলে গিয়ে তৈরী করছে অপার্থিব কোনো এক জাদুকরী দৃশ্য।
সেই দৃশ্যে ছেদ পড়ে যখন কতিপয় যুবক হৈ হৈ করে একটা গালি দিয়ে ওঠে, যখন মোড়ের দোকানে বসে থাকা আড্ডাপ্রবণ কিছু লোক তাতে সায় দিয়ে সরকারের চৌদ্দগোষ্ঠী উদ্ধার করতে শুরু করে। টুং টাং করে রিকশার ঘন্টা বাজে, আমার রিকশা-ওয়ালার তাতে হুঁশ ফিরলে বলে, এবার ট্যাকাটা দিয়া যান।
আমি টাকা বের করে দিয়ে বাসায় বেল বাজাতে গিয়ে দেখি বেল ছিড়ে নিচে পড়ে আছে, টিকটিকির মতো করে একটা তার ঝুলছে। চাঁদের আলোয় তার কে টিকটিকি অথবা টিকটিকিকে তার বলে ভ্রম হয়।
মা দরজা খোলো।
খুট করে দরজা খোলার শব্দ হয়। আমাকে দেখে মা বললেন, খোকা ঘরে মোমবাতি নেই। মোমবাতি নিয়ে আয়। আজ মনে হয় কারেন্ট আসবে না।
আমি অবাক হই না। ব্যাগটা রেখে মোমবাতি কিনতে বের হই।
আমার মা এমন-ই। যেদিন ভার্সিটি যাবার জন্য প্রথমবারের মতো মফস্বল ছেড়ে যাই সেদিন মা কাছে ডেকে নিয়ে বলেছিলেন, ভালো থাকিস। চোখ দিয়ে কোনো জল পড়ে নি, পথ আটকে রাখেন নি, এমন কি শক্ত করে জড়িয়ে ধরে কোনো ফুঁ পর্যন্ত দেন নি। আমি ইকবালের মা’কে ডেকেছি কেঁদে কেঁদে সারা মহল্লা এক জায়গায় এনে ছেড়েছিলেন। তখন মন খারাপ হয়েছিল। ঐ একবার-ই; ছোট থেকে আজ পর্যন্ত কখনো আমাকে মা’র নির্লিপ্ততা কষ্ট দেয় নি। মায়াকে হয়ত দিত। মায়া বিয়ের দিন যাবার আগে কাঁদতে কাঁদতে আমাকে বলেছিল, মা একবার জড়িয়ে ধরবে না রে?
ছেলেমানুষ ছিল মায়া, বড় অল্পবয়সে ওর বিয়ে হয়ে গেলো। বাবা মারা যাওয়ার পর চাচা, মামা কেউ-ই অনিন্দ্যসুন্দর বোনটিকে ঘরে রাখার সাহস করলেন না।
মায়া আমাকে প্রায় বলত, দাদা আমি হুশ করে একদিন ট্রেনে উঠে কারো সঙ্গে পালিয়ে যাবো।
নাহ, মায়া পালাতে পারে নি বরং আমরাই ওকে তাড়িয়ে দিয়েছিলাম। আমার ছোট্ট পুতুল বোনটি বউ এর ভারী পোশাকের ভারে নত হয়ে শেষ পর্যন্ত চুপচাপ চলে গেল। প্রথম প্রথম দিনে দুইবার ফোন দিত আমাকে। এখন মাসে একবার কথা হয়। পুতুল এখন বড় হয়ে গেছে। আমার মা’টা কেবল আগের মতোই আছেন তার ভাবলেশহীন ভয়ানক সুন্দর চোখ জোড়া নিয়ে।
আজকে আমার আসার কথাই ছিল না। হুট করে ভার্সিটি বন্ধ হয়ে গেল। এমন তো প্রায় হয়। আমি তবু বাড়ি ফিরি না। টিউশনি আছে, সেটা সবসময় খোলা থাকে। দু একদিন না গেলে বেরসিক অভিভাবক চোখ কড়া তাকিয়ে আমার সিগারেটের খরচ বন্ধ করে দেবার প্রচ্ছন্ন একটা হুমকি দেন। আমার মাঝে মাঝে মনে হয়, প্রেমিক-প্রেমিকার চোখ আসলে কথা বলে না। কথা বলে বাড়িওয়ালার আর ছাত্র-ছাত্রী মা’দের চোখ। না হয় এত নিখুঁতভাবে তারা কিভাবে ভয়ের সৃষ্টি করে দিতে পারেন? এবার অবশ্য কোনো ভয় আমাকে কাবু করতে পারে নি। আসার আগে সারারাত ঘুমোতে পারি নি। কানের কাছে তীব্র শব্দে বাঁজছিল হুইসেল, ট্রেনের হুইসেল। আমাকে ডাকছিল ট্রেনের ঝিক ঝিক শব্দ। অথচ প্রতিবারের মতো এবারো আমি বাসে করে বাড়ি ফিরলাম।
#
আমাদের বাসার ঠিক পাশ দিয়ে ট্রেন লাইন চলে গেছে। দু জোড়া ট্রেন লাইন, পাশাপাশি জমজ ভাই এর মতো। একটি প্রতিদিন ট্রেনের ভার নিতে নিতে ক্লান্ত। এদিক সেদিক থেকে পাতগুলো ক্ষয়ে ক্ষয়ে গেছে, যাচ্ছে, পাথরগুলো চলে গেছে বাচ্চাদের খেলনা হিসেবে। আরেকটি লাইন ভার না নিতে নিতে লোহা থেকে মরে গিয়ে অনেকটা ময়লা পড়া কাঠের মতো হয়ে গেছে। এলাকার ছেলেপেলে সেখানে বসে আড্ডা দেয়।
আমার ঘরের জানালা থেকে সব দেখা যায়। আমি দেখতাম, ছোট থেকে দেখি, এখন আর দেখা হয় না। সেই কবে বাড়ি ছেড়ে গেলাম, তবু এই ট্রেন লাইন আমি এক মুহূর্তের জন্য ভুলতে পারি না। আমার ভোরবেলা ঘুম ভাঙ্গত ট্রেনের শব্দে। কখনো কখনো ট্রেন আসার আগেই, ভোরের আলো যখন ফুটতে থাকে আমি দাঁড়িয়ে থাকতাম সেখানে। বাতাসের শোঁ শোঁ শব্দ কোঁৎ করে গিলে নিত ট্রেনের ঝিক ঝিক শব্দকে, পাত থেকে স্ফুলিঙ্গ হয়ে ছড়িয়ে যেত ফালি ফালি করে কাঁটা মৃদু আলো; আমি মোহগ্রস্ত হয়ে দাঁড়িয়ে থাকতাম, ইচ্ছে করত মাথাটা পেতে দিই, আমি ছিন্নবিচ্ছিন্ন হয়ে যাই। আমি কোনোদিন পারি নি, পারব না। আমি খুব ভীতু মানুষ
এলাকার ছেলে নিতাই। আমি দু চোখে দেখতে পারতাম না। বড় বেশি কথা বলত। পৃথিবীর সব কিছু সম্পর্কে তার মতামত ছিল। আমি তার সঙ্গে কখনো কথায় পারতাম না। আমি ছিলাম নির্জনতা প্রিয়। আর কোলাহল তৈরী না হলে নিতাই এর ভালো লাগত না। আমি প্রায় রাতে একা একা রেললাইনের পাশে গিয়ে বসে থাকতাম। এই নিয়ে সে টিপ্পনী কাটত। বলত, কোন নায়িকা এই পথ ধরে প্রতিরাতে যায়?
একদিন রাত বারটায় আমার ঘরের জানালায় ঢিল মেরে বলে, খোকা জেগে আছিস?
আমি জেগে থেকেই বলি, না।
চল না একটি ঘুরে আসি। একদম ভালো লাগছে না রে। নিতাই গলার স্বর একদম অন্যরকম লাগছিল। পাত্তা দেই নি। পরদিন সকালে ঘুম ভেঙ্গে শুনি নিতাই মরে গেছে। ট্রেনের নিচে কাটা পড়েছে। এলাকায় অনেক হৈ চৈ। মানুষজন গাছ ফেলে লাইন আটকে রেখেছে। নিতাই অনেক সাহসী ছিল। সেই থেকে আমি নিতাইকে আরো ভীষণভাবে ঈর্ষা করি। অনেকেই নিতাইকে ভুলে গেলেও আমি ভুলিনি। প্রতিবার বাড়ি এলেই আমার ওর কথা মনে পড়ে। কানের ভেতর ভেসে ওঠে খোকা, জেগে আছিস? আমার ঘুম ভালো হয় না। একটু পর পর ভেঙ্গে যায়।

ছোট্ট ঘরটিতে ঘুমাতাম আমি একাই। আমার থেকে বছর তিনেকের ছোট, মায়া মাঝে মাঝে এসে টুকটুক করে গল্প করতে করতে ক্লান্ত হয়ে পাশে ঘুমিয়ে পড়ত। আবার মাঝরাতে উঠে একা একা চলে যেত মা’র কাছে। তার নাকি ভয় লাগত। কেউ একজন আমাকে মেরে, তাকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে অথবা সে এমন কোনো জায়গায় পৌছে গেছে যার কিছুই সে চিনছে না, এমন সব স্বপ্ন দেখত সে। আমাকে তাই একাই থাকতে হতো।
সে একদিন আমার কাছে জানতে চাইল ভাইয়া তুমি দুঃস্বপ্ন দেখো না কেন?
আমি তার কথায় কিছুটা হকচকিয়ে যাই। বয়েস মাত্র পনের তখন। আমি দুঃস্বপ্ন দেখি না কেন? এই প্রশ্নের কী জবাব থাকতে পারে আমার কাছে? আমি মায়াকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, তুই কিভাবে জানলি?
সে বিজ্ঞ মানুষের মতো বলেছিল, তুমি কখনো ভয় পেয়ে মা অথবা বাবার কাছে ঘুমোতে যাও না। এখানেই পড়ে থাকো। জানো ভাইয়া, আমার খুব ভয় লাগে। ট্রেনের শব্দ খুব বাজে। এত রাতে ট্রেন ডাকে কেন? তখন আমি আরো বেশি খারাপ স্বপ্ন দেখি। মায়া একনাগাড়ে বলে চলে যেত।
বাবা-মা তখন একসঙ্গে ঘুমোতেন না। তাদের ভেতর হয়ত বড় কোনো ঝগড়া হয়েছিল, হয়ত হয় নি। অত্যন্ত আমি দেখি নি। আমার মনে পড়ে যায়, প্রায় রাতে বাড়ি ফিরে বাবা কিছুক্ষণ মা’র উপর চেঁচামেচি করতেন। মা চুপচাপ শুনে যেতেন, কিছুই বলতেন না। বাবার খাওয়া বেড়ে দিয়ে ঠাশ করে রুমের দরজা লাগিয়ে দিতেন। বাবা রাগে গজগজ করতে করতে ড্রয়িং রুমে গিয়ে টিভি ছেড়ে শুয়ে পড়তেন। মায়া গিয়ে বাবার গায়ে কাঁথা দিয়ে আসত। আমাদের বাবা কাঁথা ছাড়া ঘুমোতে পারতেন না।
তাই আমি দুঃস্বপ্ন দেখলে ভয় পেয়ে উঠে গিয়ে বাবার কাছে যাওয়াটাই হয়ত যুক্তিসংগত ঠেকেছিল মায়ার কাছে। আমাকে কখনো যেতে দেখে নি, তাই হয়ত এই প্রশ্ন। আজ প্রায় তিনবছর পর বাড়ি ফিরে, কৈশোর পার করে, যৌবনের তিন থেকে চার বছর কাটানোর পর আমি মায়ার প্রশ্নটা নিয়ে সত্যিকার অর্থে ভাবতে শুরু করি। জোড়া ট্রেন লাইনের দিকে ভাবতে থাকি, আসলেই কী আমি দুঃস্বপ্ন দেখি না?
চোখ মুখ কুঁচকে স্মরণ করতে চেষ্টা করি। কোনো দুষ্টু রাক্ষস আমাকে তাড়া করে ফিরছে অথবা আমি আগুনে পুড়ে মারা যাচ্ছি, পানিতে ডুবে ভেসে যাচ্ছি এমন কোনো কিছু নিজের ব্যক্তি অভিজ্ঞতা থেকে মনে করতে পারি না।
আমি আসলে একটানা বেঘোরে ঘুমোতে পারতাম না। মাঝে মাঝে ঘুম ভেঙ্গে যেত। ফ্যান ঘুরত খট খট শব্দে। আমি কান খাড়া করে সেই শব্দ শুনতাম। এখন মনে হয় আমি আসলে ফ্যানের শব্দ শুনতাম না, আমি শুনতাম নির্জনতার শব্দ। নির্জনতার একটা আলাদা শব্দ আছে। মন শূন্য করে দেয়া শব্দ। অনেকটা যেন এক সাগর জল চুপচাপ ক্লান্ত হয়ে ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে বেয়ে চলত, আমি তার উপর ডিঙ্গি নৌকা নিয়ে ছুটে ছুটে বেড়াতাম সতর্ক পদক্ষেপে। ছলাৎ ছলাৎ, দু একটা মাছ হুশ করে পাশ কেটে যেত আর ট্রেনের হুইসেল বেজে উঠলে তীব্র বিরক্তি নিয়ে ঘুমিয়ে যেতাম আবার।
এখন আর এভাবে নৌকা বাওয়া হয় না। নির্জনতার শব্দ সবাইকে ধরা দেয় না।
আমি আবার কানপাতি। পাশের ঘর থেকে হালকা আওয়াজ ভেসে আসে। মা হয়ত কিছু করছে। অনেকদিন মা’র সাথে গল্প করি না, আসলে কোনোদিন করি নি। মা কেবল নিতাই এর বাবার সাথেই হেসে হেসে কথা বলত, গল্প করত। কী নিয়ে এত গল্প করত কে জানে। তবে নইতাই নিতাই এর বাবা গল্প জানত। আমার বাবা কোনো গল্প করতে জানত না। কিছু হলে মা'র সাথে চিল্লাত আর আমরা ভয়ে বাড়ির কোণে লুকিয়ে থাকতাম।
নিতাই মারা যাবার পর থেকে থেকে চাচা আর বাড়িতে আসেন না। যখন অনেক ছোট ছিলাম চাচা আমার জন্য চকলেট নিয়ে আসত। আরেকটু বড় হলে কোক নিয়ে আসত। আমি কিছুই খেতাম না। বাবা রাগ করত। বাবার রাগ কে আমি ভীষণ ভয় পেতাম। বাবা মারা গেছে বেশ কয়েক বছর হলো। নিতাই এর বাবা কেমন আছে? খুব ইচ্ছে করছে মা একদিন চাচার সাথে গল্প করুক। মা’র হাসি আমি আবার শুনি।
কারেন্ট এখনো আসে নি। মোমবাতির আলো রহস্যময় তরুণীর শরীরের আকৃতি নিয়ে এদিক সেদিক দুলছে। আমি কান পেতে রই। নির্জনতার শব্দ আমাকে ধরা দেয় না।

#

ঠাশ করে একটা শব্দ হয়। গ্লাস পড়ে ভেঙ্গে যাওয়ার শব্দ। আমি ধড়মড় করে উঠে বসি। বাইরে ভোরের আলো ফুটি ফুটি করছে। মোমবাতি শেষ হয়ে টেবিলের সাথে মিশে গেছে। আমার টেবিল ক্লথ আকাশি রঙ এর। মনে হচ্ছে এক টুকরো মেঘ তীব্র অভিমানে বসে আছে। টেবিলের নিচে ভাঙ্গা গ্লাসের টুকরো। অল্প পানি কপালের টিপের মতো ফ্লোরে ভেসে আছে। মনে হচ্ছে শিলা বৃষ্টি হয়েছে অল্প কিছু জায়গা জুড়ে। নিজের দিকে তাকিয়ে লক্ষ্য করি আমি ঘামছি, দরদর করে ঘামছি। কিছু একটা দেখেছি আমি। মনে হয় জীবনের প্রথম দুঃস্বপ্ন। চোখ বন্ধ করে মনে করতে চেষ্টা করি। চেনা পরিচিত একটা দৃশ্য ভেসে ওঠে।
আমার সেই পরিচিত জমজ ট্রেন লাইন। আমি দাঁড়িয়ে আছি; অন্ধকারে কিছুই দেখা যাচ্ছে না। সিগন্যালের বাতি সবুজ রঙ নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে আমার মতো কারো অপেক্ষায়।
আমি নিতাই কে দেখতে পাই এই অন্ধকারের ভেতরেও। স্বভাবসুলভ ঠোঁটকাটা হাসি নিয়ে ল্যাংচাতে ল্যাংচাতে আসছে।
খোকা, কী লাফ দিবি নাকি ট্রেনের নিচে?
তোর মতো গাধা না, আমি।
নিতাই অদ্ভুতভাবে হাসতে থাকে। আমি দূর থেকে দেখি ট্রেন আসছে। নিতাই আমাকে জাপটে ধরে লাইনের উপর ফেলে দিল। আর আমি ওকে সরাতে গিয়ে গ্লাস ভেঙ্গে ফেলি।
মসজিদ থেকে তখন-ই ভেসে আসে আযানের শব্দ।
নিতাই আমাকে সেদিন রাতেও ডেকেছিল। আমি যাই নি। একটা অপরাধবোধ কেমন করে জানি আমার চারপাশে ঘর তৈরী করতে থাকে। জানালাবিহীন ঘর। দরজায় খিল দেয়া। আমার দমবন্ধ হয়ে আসতে থাকে। আমি যদি সঙ্গে যেতাম নিতাই কী বেঁচে থাকত? নিতাই কী আমাকে কিছু বলতে চেয়েছিল?
আমি ভাবতে চেষ্টা করি নিতাই আমাকে কী বলতে পারে। আমি জানি, নিতাই এর মা ওর বাবাকে ছেড়ে চলে গিয়েছিল। একদিন ভোরবেলা ঘুম থেকে সে আর তা মা’কে দেখতে পায় নি। জনশ্রুতি আছে হয়ত নিতাই এর বাবা ওর মা’কে মেরে ফেলেছিল। এই নিয়ে থানা পুলিশ হয়েছিল কিন্তু কোনো সুরাহা হয় নি। নিতাই কী আমাকে সেই ব্যাপারে কিছু বলতে চেয়েছিল?
নিতাই বড় বেশি বকর বকর করত। আমি যেটা করতাম সেটা তার বিরোধিতা করা চাই। ফুটবল খেলা নিয়ে একবার লঙ্কাকান্ড হয়ে গিয়েছিল। স্কুল থেকে টিসি দিয়ে বের করে দেবার মতো অবস্থা। বাবাকে ডেকে নিয়ে প্রিন্সিপাল স্যারের সে কী অপমান! আমি ভেবেছিলাম, আমার আর বাড়ি ফেরা লাগবে না। পরিত্যক্ত এক ট্রেনের বগির ভেতর লুকিয়ে ছিলাম। নিতাই গিয়ে খুঁজে বের করল। ট্রেডমার্ক দাঁত বের করা হাসি দিয়ে বলল, তোর বাপ তোরে লাঠি নিয়ে খুঁজতেসে। বাবা পরে আর কিছু বলেন নি। ক্লান্ত কন্ঠে একবার বলেছিল, নিতাই এর সাথে ঝগড়া করিস না।
আমি ভাবতাম নিতাই এর বাবা পয়সা ওয়ালা লোক। কোন এক নেতার সাথে তার দহরম মহরম। এজন্য বোধহয় বাবা নিতাইকে এড়িয়ে চলতে বলত। সেই নিতাই কেন মরে যাবার আগে আমাকেই ডাকতে আসবে?
বাইরে এখন সূর্য তার সমস্ত শক্তি দিয়ে ঝাপিয়ে পড়েছে, কোথাও এতটুকু অন্ধকার রাখবে না সে। অথচ টের পাই মন কেমন করা বিষণ্ণ অন্ধকার খেলা করছে আমার বিছানাজুড়ে।

#
কতদিন থাকবে? খেতে বসে মা’র প্রশ্ন শুনে অবাক হই। মা সচরাচর আমার যাওয়া আসা নিয়ে মাথা ঘামান না
আমি উত্তর দেবার আগে তাই দু মিনিট ভাবি। কী শুনতে চাচ্ছেন মা? মা কী চাচ্ছেন আমি চলে যাই, নাকি থাকি? শেষমেশ সত্যটাই বলি। ভার্সিটি বন্ধ। থাকব কিছুদিন।
মায়া ফোন দিয়েছিল। ও কনসিভ করেছে। পারলে ওর সাথে একবার দেখা করে আয়।
আমি ছোট্ট করে একটা লাফ দিতে গিয়ে থেমে যাই। মা’র মুখে কোনো হাসি নেই। মা, নানী হচ্ছে। মা’র মুখ গম্ভীর।
মা আমাকে জিজ্ঞেস করে, তোমার টাকা পয়সার কোনো সমস্যা হচ্ছে?
আমি বিস্ময়ে মুখ গুঁজে খেতে থাকি। দু পাশে ঘাড় নরিয়ে মা’র কথার উত্তর দেই।
মা উঠে যেতে নিলে, কী মনে করে ডাক দিয়ে বলি, মা তুমি কী কখনো কোনো কিছুতে হাসবে না? মায়ার এই খবরে খুশি হলে না?
মা’র মুখে এক চিলতে হাসি ফুটে ওঠে। কিছুক্ষণ চুপ থেকে আমাকে বললেন, মেয়ে হওয়া সোজা, বিয়ে করা সোজা কিন্তু মা হওয়া অনেক কঠিন খোকা। অনেক কঠিন।
আমি মা’র কথার মর্মোদ্ধার করতে পারি না। একবার যখন প্রশ্ন করতে শুরু করেছি তখন আরো প্রশ্ন করব, এই ভেবে মা কে আটকাই। টেনে নিয়ে চেয়ারে বসাই। যথেষ্ঠ বিরক্ত হয়ে মা বললেন, এসব কী হচ্ছে?
আমিও জবাব দেই, এসব কেন হচ্ছে মা? কেন? আমি, আমরা কী সন্তান হিসেবে অনেক খারাপ ছিলাম?
আমি মা হিসেবে খারাপ ছিলাম। আমি পৃথিবীর একমাত্র খারাপ মা। ঠোঁটের কোণে হাসি, চোখের কোণে জল নিয়ে মা ঘর থেকে চুপ করে বের হয়ে যান। এবার আমি আর আটকাই না। যে যেতে চায়, তাকে কখনো আটকানো যায় না। কিন্তু এখন মনে হতে থাকে নিতাইকে আটকানো দরকার ছিলো। ওর হয়ত কিছু বলার ছিল আমাকে।

#

অল্পদিনেই হাঁপিয়ে যাই। আগের মতো ট্রেন লাইনের দিকে তাকিয়ে থাকতে ভালো লাগে না। উদ্দ্যেশ্যহীন ভাবে হেঁটে বেড়াতে ভালো লাগে না, মা’র অদ্ভুত আচরণের কারণ খুঁজে বেড়াতে ভালো লাগে না। রাতে ঘুম এলে শুয়ে থাকতে ভালো লাগে না, আগের মতো মরে যাওয়ার কথা ভাবতে ভালো লাগে না, মামা হতে যাচ্ছি তাও আমার ভালো লাগে না। তাই সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলি চলে যাবো। অথচ চলে যাবার কথা ভাবতেও ভালো লাগে না।
ব্যাগ গুছিয়ে রেখে দেই। সকাল হলে কর্মক্ষেত্রে উড়াল দিবো। শেভ করতে গিয়ে আয়নায় দেখি, আমাকে অবিকল নিতাই এর মতো লাগছে। নাহ, নিতাই কোথাও লুকিয়ে নেই। আমাকেই লাগছে ঠিক ওর মতো। আমি হেসে ফেলি। আমার হাসিকে মনে হয় সেই দাঁত বের করা বিচ্ছিরি হাসি। শেভ না করে বের হয়ে আসি।
আমি কান পাতি নির্জনতার শব্দ শুনব বলে। আমি শুনি বাবা বলছে, নিতাই এর সাথে ঝগড়া করিস না। হঠাৎ করে কোথা থেকে যেন একটা শব্দ উড়াল দিয়ে এসে কানে ঢোকে। কে বলেছিল, কেউ একজন তো বলেছিল। বলেছিল, তোর মা’র চরিত্র খারাপ, তুই নিতাই এর ভাই জানিস?
সেই থেকে কতবার মরে যেতে চেয়েছি। শালা,নিতাই এর বাচ্চা নিতাই মরে গিয়ে বেঁচে গেল। আমি এখানে এখনো কেবল শব্দ খুঁজে বেড়াই।
আবার শব্দ শুনি। পাশের ঘর কান্নার শব্দ। আমার মা কাঁদছে। আমার মা সারাজীবন ধরে কেঁদেছে। অথচ আমি কি’না সারাজীবন ধরে অবাস্তব কোনো শব্দের পেছনে ছুটে বেড়ালাম?
ক্লান্ত পায়ে মা’র ঘরের সামনে গিয়ে ডাক দেই, মা.........
অবাক হয়ে দেখি মুখ দিয়ে কোনো শব্দ বের হয় না আমার।
আমার মা’টা খুব একা, অনেক একা। ইচ্ছে করছে তার পাশে গিয়ে চুপচাপ বসে থাকি কিছুক্ষণ, একটু কাঁধে মাথা রাখি। একটু হাত ধরি, একটু বলি, চলো তোমাকে নির্জনতার শব্দ শোনাই।
--------

( প্রথম খসড়া)


মন্তব্য

মৃত্যুময় ঈষৎ এর ছবি

গল্পকার গল্প খুঁজে পেয়েছে এটা আনন্দদায়ক।

গল্পে উপস্থাপনা-আমেজ চমকার।


_____________________
Give Her Freedom!

মাহবুব ময়ূখ রিশাদ এর ছবি

ফিরছি ধীরে ধীরে। ফিরছি চলে যাবার জন্য নয়, থেকে যাবার জন্য হাসি

------------
'আমার হবে না, আমি বুঝে গেছি, আমি সত্যি মূর্খ, আকাঠ !

জুন এর ছবি

আপনার বাক্য সাজানোর ধরনটাই বেশ লাগে। গল্পের মূল থিমের দিকে ততটা চোখ পড়েনা অংগসজ্জার কারনে। তবে এইটাও ঠিক যে এই কারনেই পড়তে ভাল লাগে।

যদি ভাব কিনছ আমায় ভুল ভেবেছ...

মাহবুব ময়ূখ রিশাদ এর ছবি

আমার গল্পগুলো কেন জানি খুব বেশি নিসংগতায় ভোগে হাসি

------------
'আমার হবে না, আমি বুঝে গেছি, আমি সত্যি মূর্খ, আকাঠ !

সুলতানা পারভীন শিমুল এর ছবি

এই জন্যই বোধহয় খুব কাছের হয়ে ওঠে।
দারুণ লাগলো গল্পটা, রিশাদ! চলুক

...........................

একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা

তিথীডোর এর ছবি

আমার গল্পগুলো কেন জানি খুব বেশি নিসংগতায় ভোগে

'বেঁচে থাকার জন্য যে ট্যাক্স দিতে হয় তার নাম নিঃসঙ্গতা।'

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

কড়িকাঠুরে এর ছবি

'বেঁচে থাকার জন্য যে ট্যাক্স দিতে হয় তার নাম নিঃসঙ্গতা।'
হাততালি - উত্তম জাঝা! - গুল্লি গুরু গুরু ...

ব্যাঙের ছাতা এর ছবি

অসাধারন বলেছেন। মাঝে মাঝে মনে হয়, আপনার মতন মন্তব্য করতে পারলেও বোধ হয় হাচল হওয়া যায়। কিন্তু আপনি তো আপনি। তিথীডোর। এক ও অদ্বিতীয়।

রোমেল চৌধুরী এর ছবি

কবুল না করে কোন উপায় নেই যে মনের দ্বান্দ্বিক চিত্রনে লেখক অসাধারণ কুশলী। সেলাম।

------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।

মাহবুব ময়ূখ রিশাদ এর ছবি

ধন্যবাদ। বিয়ের কবুল শোনার মতো আনন্দ লাগে এপ্রিশিয়েশন পেলে লইজ্জা লাগে

------------
'আমার হবে না, আমি বুঝে গেছি, আমি সত্যি মূর্খ, আকাঠ !

চরম উদাস এর ছবি

চলুক

মাহবুব ময়ূখ রিশাদ এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

------------
'আমার হবে না, আমি বুঝে গেছি, আমি সত্যি মূর্খ, আকাঠ !

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

দারুণ!!!

মাহবুব ময়ূখ রিশাদ এর ছবি

এই প্রথম শিমুল ভাই কে পেলাম হাসি
আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

------------
'আমার হবে না, আমি বুঝে গেছি, আমি সত্যি মূর্খ, আকাঠ !

শাহেদুজ্জামান লিংকন এর ছবি

যাহোক, এ লেখায় তোমাকে খুঁজে পাওয়া গেছে। চিন্তার কারণ নেই- লেখা আসবে। এটা তো নেশা। নেশা কেউ ছাড়ে না, নেশা কাউকে ছাড়ে না।

মাহবুব ময়ূখ রিশাদ এর ছবি

থ্যাঙ্কস লিংকন

------------
'আমার হবে না, আমি বুঝে গেছি, আমি সত্যি মূর্খ, আকাঠ !

মেঘা এর ছবি

লেখা আবার ফিরে আসছে সেটা একটা সুসংবাদ! আমার লেখাও ফিরে আসুক আবার মন খারাপ

বর্ণনা এতো সাবলীল! চমৎকার।

--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি

মাহবুব ময়ূখ রিশাদ এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

------------
'আমার হবে না, আমি বুঝে গেছি, আমি সত্যি মূর্খ, আকাঠ !

সুমাদ্রী এর ছবি

খুব ভালো লাগল লেখাটা। চেতনার প্রবাহশীলতা। মনে হল ফ্ল্যাশ ব্যাক এ ভরপুর কোন সিনেমা দেখছি।

অন্ধকার এসে বিশ্বচরাচর ঢেকে দেওয়ার পরেই
আমি দেখতে পাই একটি দুটি তিনটি তারা জ্বলছে আকাশে।।

মাহবুব ময়ূখ রিশাদ এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

------------
'আমার হবে না, আমি বুঝে গেছি, আমি সত্যি মূর্খ, আকাঠ !

সাত্যকি. এর ছবি

প্রথম প্যারা পড়ে ভেবেছিলাম, ঐ যে, আবার শহীদুল জহিরের ভূত ফিরে আসছে রে !
এরপর থেকে অবশ্য রিশাদ ময়ূখ ব্যাক এগেইন হাসি
প্ল্যাটফর্ম যাই হোক, বর্ণনই তোমারে আলাদা করে দেয় ।
বিষন্নতার গল্প তো অনেক হইল। এইবার একটা অন্যরকম গল্প লিখ।

কড়িকাঠুরে এর ছবি

বেশ ছুঁয়ে গেলো... চলুক

মাহবুব ময়ূখ রিশাদ এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

------------
'আমার হবে না, আমি বুঝে গেছি, আমি সত্যি মূর্খ, আকাঠ !

তিথীডোর এর ছবি

সাবলীল, চমৎকার বর্ণনা! চলুক হাসি

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

মাহবুব ময়ূখ রিশাদ এর ছবি

থ্যাঙ্কস আপু

------------
'আমার হবে না, আমি বুঝে গেছি, আমি সত্যি মূর্খ, আকাঠ !

নিটোল এর ছবি

(‌Y)

_________________
[খোমাখাতা]

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

খসড়া কেনো ??

গল্পটা সাধারণ হিসেবে ভালো, তবে তুমি লেখা নিয়ে যেরকম সিরিয়াস- তোমার হিসেবে এটা চলনসই হয়েছে বলবো। এর বেশি নয় হাসি

আরেকটা বিষয় হলো, সপ্তাখানেক আগে সোমেন চন্দের গল্পগুলো পড়ছিলাম আবার। পারলে পড়ো, বা পড়া থাকলে আরেকবার দেখো। আমার মনে হয় অনেকটা কাছাকাছি ধরন। সে ক্ষেত্রে তুমি নিজেই বুঝতে পারবে কী করতে চাচ্ছিলে, কতটা পেরেছো।

লেখা চলুক চলুক

মাহবুব ময়ূখ রিশাদ এর ছবি

সোমেন চন্দের গল্প কিছু পড়া হয়েছিল বিচ্ছিন্নভাবে। এবার ভালো ভাবেই দেখব তবে

মন্তব্যের জন্য আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

------------
'আমার হবে না, আমি বুঝে গেছি, আমি সত্যি মূর্খ, আকাঠ !

শাব্দিক এর ছবি

চলুক

---------------------------------------------------------
ভাঙে কতক হারায় কতক যা আছে মোর দামী
এমনি করে একে একে সর্বস্বান্ত আমি।

মাহবুব ময়ূখ রিশাদ এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

------------
'আমার হবে না, আমি বুঝে গেছি, আমি সত্যি মূর্খ, আকাঠ !

মূর্তালা রামাত এর ছবি

বেশ ভাল লাগল। বাক্য গঠন চমৎকার সাবলীল। গল্পের গঠন ভাল। এক নিঃশ্বাসে পড়া যায়। এবং পড়ার পর মোহগ্রস্থ হতে হয়।বেশ!

মূর্তালা রামাত

মাহবুব ময়ূখ রিশাদ এর ছবি

আমার ব্লগে মনে হয় প্রথম এলেন। ধন্যবাদ

------------
'আমার হবে না, আমি বুঝে গেছি, আমি সত্যি মূর্খ, আকাঠ !

স্যাম এর ছবি

চলুক

মাহবুব ময়ূখ রিশাদ এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

------------
'আমার হবে না, আমি বুঝে গেছি, আমি সত্যি মূর্খ, আকাঠ !

পথিক পরাণ এর ছবি

বর্ণনা একেবারে শেষ পর্যন্ত টেনে ধরে রাখল। (‌Y)

সপ্তর্ষি  এর ছবি

চলুক

ব্যাঙের ছাতা এর ছবি

ভালো লেগেছে। পরতে পরতে একাকীত্ব ছড়িয়ে আছে, যেন বিস্তীর্ন সমুদ্রে এক একটা দ্বীপ- বাবা, মা, মায়া আর উত্তম পুরুষ। দ্বীপের যোগাযোগের মাধ্যম ঢেউ। কিন্তু সবসময় যে ঢেউ দোলা দেয় না। আপনার প্রথম দিককার লেখা গুলো পড়া হয়নি তবে সাম্প্রতীক লেখাগুলো পড়েছি। ভালো লেগেছে।
আপনারা যারা লিখতে পারেন, তারা যে কেন কম করে লিখেন! আবার যুক্তিও আছে, তার পক্ষে। লেখা তো আগে আসতে হবে, এ তো উৎপাদন নয়, এ যে সৃজন।
ভালো থাকবেন।

অতিথি লেখক এর ছবি

দারুণ বুনট,সাবলীল গদ্য আর নিপাট বিষাদ গোটা লেখাজুড়ে।খুউব ভাল্লাগলো।

সুবর্ণনন্দিনী

তানিম এহসান এর ছবি

ওয়েল্কাম ব্যাক হাসি

ধুসর জলছবি এর ছবি

চমৎকার লাগল। তোমার আগের গল্পগুলো পড়েছি, তাই জানি যে কোন ভাল গল্পের মত তোমার গল্প গুলোও কাহিনীর চেয়ে উপস্থাপন এই বেশী অসাধারণ। আরও চমৎকার সব গল্পের অপেক্ষায় থাকলাম।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।