দয়া-কাঠামো-কর্তৃপক্ষ

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি
লিখেছেন অনিন্দ্য রহমান (তারিখ: শুক্র, ২২/০৪/২০১১ - ১:৩১অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

দয়া* ও কাঠামো

দয়া-ক্লান্তি। কমপ্যাশন ফ্যাটিগ ইংরেজদের দেয়া নাম। আমরা এদিকটায় জানি, দয়া ধর্ম। প্রচারমাধ্যমে অতি-প্রচারিত দৃশ্যগুলো আমাদের কারো কারো মনে এখন আর দয়ার জন্ম দেয় না। কান্না, চিৎকার, লাশ হয়ে যাওয়া এইসব কোনো কিছুই। কান্নার প্রতি, চিৎকারের প্রতি, লাশের প্রতি (প্রায়) পর্নোগ্রাফিক আকর্ষণের স্তরটিও আমরা কিছুকাল হল পার হয়ে এসেছি। একদা অতিপ্রচারকে ঐ দয়া-ক্লান্তির উৎস বলে মনে হত। এখন মনে হয় কেবল অতিপ্রচারই নয়, খবরের পুনরাবৃত্ত কাঠামোগুলোরও রয়েছে দয়া কেড়ে নেয়ার বিশেষ ক্ষমতা। কাঠামো আমাদের দয়া-ক্লান্তি দেয়। ক্রসফায়ারের গল্পগুলো মনে করবেন এইখানে।

বাংলাদেশের লঞ্চডুবিও সেইরকম একটা কাঠামো, তার বেশি নয়। রাতের দিকে মেঘনায় (বা অন্য কোনো নদীতে, বাংলাদেশের অধিকাংশ লঞ্চডুবি পেতে চাঁদপুর থেকে দক্ষিণের দিকে নামতে হয়) লঞ্চ ডুববে। ধরেই নেয়া যায় এতে ধারণক্ষমতার অনেক বেশি যাত্রী থাকবে। কখনো কখনো ঈদের ছুটিতে এই ঘটনা ঘটে। এসময় যেসব সংবাদকর্মীরা দায়িত্বে থাকেন তাদের বাড়তি কাজ এসে যায়। প্রথমে চাঁদপুর কিংবা ভোলা কিংবা অন্যকোনো জায়গার স্থানীয় প্রতিনিধি নেটওয়ার্ক কেটে যাওয়া মোবাইলে খবর পাঠাতে থাকেন। মাঝে মাঝে কিছু ঝাপসা ছবি পাওয়া যায়। এর মধ্যে কিছু কিছু লাশ খুঁজে পাওয়া যায়। এই সংখ্যা নিয়ে হালকা তর্কাতর্কি চলতে থাকে। জেলা প্রশাসন গুনতে চায় না। ঘটনা বড় হলে, ঢাকা থেকে প্রতিবেদক যান, ভোরেই রওনা হন। বারোটার খবরে পরিস্কার ছবি পাওয়া যায়। তারপর, কান্না, চিৎকার, লাশ হয়ে যাওয়ার ছবি। প্রথম প্রথম উৎসুক জনতার সাক্ষাৎকার পাওয়া যায়। আস্তে আস্তে স্থানীয় প্রশাসন, স্থানীয় সরকার, মেঝোসেজো আমলা, আর দূর থেকে রওনা হওয়া উদ্ধারকারী জাহাজ আওয়াজ দেয়। অবশ্য ততক্ষণে দমকলের ডুবুরিরা নেমে গেছে। ঘন্টা দুয়েক পরে, বিআইডব্লুটিএর মেঝোসেজো আমলাকেও নাগাল পাওয়া যায়। তিনিই প্রথম তদন্ত কমিটির বিষয়টা জানিয়ে দিতে পারেন। অবশ্য যদি না তিনি সংসদসদস্য বা মন্ত্রিধরণের কারো জন্য অপেক্ষা করেন, তবেই। পরের দিন আসেন নৌপরিবহন মন্ত্রী। তিনি মেঘনার কালো বুক দেখে চলে যান, তার চেহারায় দয়া-ক্লান্তির ছাপ নাই। তিনি দারুণ দয়ায় আর্দ্র হন। কখনো কখনো শোকবার্তায় সংহতি জানান প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলের নেতা। সেটা নির্ভর করে মৃতের সংখ্যার উপর।

কাঠামো বস্তুত আমাদের একধরণের নিশ্চিন্তি প্রদান করে। কাঠামোয় অজানা কিছু নাই। কাঠামোয় ঈশ্বরের বসবাস। গাছের পাতাটিও নড়ে না তাঁর আদেশ ছাড়া। এবং ঠিক যখন যেখানে নড়ার তখন সেখানে নড়ে। এই বোধ নিয়েই জানা গল্প বারবার শুনতে চায় মানুষ। ইডিপাসের করুণ গল্প জানত না এমন গ্রিক নাই। তবু তারা ইডিপাসের গল্পের নানা সংস্করণ বারবার শুনত, দেখত। পছন্দ হলে একই সিনেমা-নাটক আমরাও বারবার দেখি।

সমস্যা হল এই নিয়ত কাঠামোস্বস্তিতে আরো কিছু ঘটনা ঘটে। কাঠামোর বাইরে থাকা বিষয়গুলো আস্তে আস্তে আমাদের আর চোখে পড়ে না। কাঠামোঅন্ধ মানুষেরা যদিও টেলিভিশন দেখতে পায়।

নিয়তিবাদী কাঠামো ও কর্তৃপক্ষ

কাঠামোর মধ্যে নিয়তিবাদ আশ্রয় নেয়। কার্যকারণের ভৌতসম্পর্কের চেয়ে বড় হয়ে ওঠে অদৃষ্ট। তাই কাঁদা, চিৎকার করা, লাশ হয়ে যাওয়া মানুষেরা ‘দুর্ভাগা’, তাদের মৃত্যুও ‘ট্র্যাজিক’ (ট্র্যাজেডি অদৃষ্টবাদী নাট্যকলা)। মাঝে মাঝে প্রতিবেদক প্রশ্ন করেন দায়ী কে? মাঝে মাঝে লোকসমাজে বলাবলি হয় দায়ীদের নামধাম। লোভী মালিক, দুর্নীতিজীবী প্রশাসন ইত্যাদি প্রভৃতি প্রমুখ। কিন্তু ক্যামেরা কদাচিৎ কান্না-চিৎকার-লাশের আকর্ষণীয় ছবি থেকে তাদের দিকে যায়। সবই মৃতদের কপালের দোষ। এমনকি যে বিশেষ অর্থনৈতিক অবস্থা তাদের এই ডুবোলঞ্চের যাত্রী হওয়া সম্ভব করেছে, সেই অর্থনৈতিক অবস্থার উল্লেখও কেউ করে না। গরিব হওয়া এবং গবাদি পশুর মতো ঠেসেঠুসে লঞ্চে উঠে যাওয়া, এবং পচে গবাদিপশুর মতোই ফুলে ওঠা - মূলত কপালের বিষয়।

‘কপালের বিষয়’গুলোর একটা বৈশিষ্ট্য হল, এতে ঈশ্বর থাকেন। তাঁকে দায়ী করা যায় কিন্তু তাঁর ওপর দোষারোপ করা যায় না। তাই তিনি ত্রাতা। লঞ্চডুবির পরও ঈশ্বরের স্থানীয় প্রতিনিধিরা ঘটনাস্থলে আসেন। তারা ত্রাতা। ‘ত্রাণ’ নিয়ে আসেন। ‘ক্ষতিপূরণ’ নিয়ে না। ‘জরিমানা’ নিয়ে তো না-ই।

নিয়তিবাদী খবরাখবরে জানা যায়,‘নিহতদের প্রত্যেকের দাফন সম্পন্ন করতে ২ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে’। এবং ‘লাশ সরকারি খরচে নিজ নিজ গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়া হবে’[বিডিনিউজ২৪.কমের খবর]।

নিজ নিজ ‘গন্তব্যে’

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে একুশে এপ্রিল যে লঞ্চডুবি হয়েছে, সেটা একটা দুর্ঘটনা। হত্যাকাণ্ড নয়। আগে থেকেই ডুবে থাকা ট্রলারে ধাক্কা খেয়ে লঞ্চের তলায় ছিদ্র হলে সেটা ডুবে যায়। নদী পথে ডুবে থাকা নৌযানের ক্ষেত্রে নিয়ম হল বয়া ভাসিয়ে রাখা, লাল নিশান জাগিয়ে রাখা। এই কাজের দায়িত্ব অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তপক্ষের। নিশান নিয়ে অনেকগুলো বক্তব্য পাওয়া যাচ্ছে। এক হচ্ছে ঐখানে কোনো নিশান ছিলই না [দেশ টিভি]। দুই, নিশান ছিল, কিন্তু চালক ঘুমিয়ে ছিলেন। আর সারেং-এর বদলে লঞ্চ চালাচ্ছিলেন দুই সুকানি [কালের কণ্ঠকে বিডব্লিউটিএর একজন উপপরিচালক]। তিন, নিশান ছিল, কিন্তু কেউ সেটা চুরি করে নিয়ে যেতে পারে [প্রথম আলোকে বিডব্লিউটিএ পরিচালক]। চার, নিশান ছিল, কেউ চুরিও করে নাই, কিন্ত লঞ্চ যেই চালাক, সে অনেক কিনারা দিয়ে চালাচ্ছিল [প্রথম আলোর একই প্রতিবেদনে]। পাঁচ, ‘ভৈরব অঞ্চলে রাতে এ ধরনের লঞ্চ চলাচল করা ঠিক নয়’ [প্রথম আলোকে একজন জরিপকারী]। অর্থাৎ সামলে চলতে হয়, নইলে অদৃষ্টের ধর্ষণ কীভাবে এড়ায়।

আইন দেখা যাক। THE REMOVAL OF WRECK AND OBSTRUCTIONS IN INLAND NAVIGABLE WATERWAYS RULES, 1973 এ বলা আছে, ‘3. If any wreck or obstruction is found or reported in any inland navigable waterways so as to impede, or likely to impede navigation, the Authority may cause the wreck or obstruction to be raised, removed or destroyed’. মানে বিআইডব্লিউটিএ চাইলে ডুবে থাকা নৌপথের যেকোনো বাঁধা সরানোর আইনী ক্ষমতা রাখে। সমস্যা হল, এটা তার ক্ষমতা, বাধ্যবাধকতা নয়। আমাদের অসংখ্য আইন আছে, যার একটা বিরাট অংশই এই ‘the authority may cause’ এর ভেতরে বাঁধা। সুতরাং, এই প্রেক্ষিতে আবারো অদৃষ্টের আগমন ঘটে। ঈশ্বর (রাষ্ট্রও পড়তে পারেন) তুমি তো সবই পারো, তাহলে করো না কেন?

তবু কোথা হইতে কী ঘটিয়া যায়, কৃপা।

এই নির্দিষ্ট ঘটনায় প্রচারমাধ্যম, আইন, রাষ্ট্র সবই অদৃষ্টবাদী কাঠামোয় চলে। ঈশ্বরকে দুয়ো দেয়া বাতুলতা। তাই ‘ক্ষোভে’র লক্ষ্য হয়ে যায় উদ্ধারকারী জাহাজ, কারণ সে দেরি করে এসেছে। যেভাবে মাঝে মাঝে মারধরের শিকার হন ফায়ার ব্রিগেডের কর্মীরাও।

আত্মীয়পরিজনেরা লাশ নিয়ে ফিরে যায়। ট্রাইপড ভাঁজ করে চলে আসে সাংবাদিকরা। দয়া-ক্লান্ত দর্শকেরা কাঠামোচিত্তে চ্যানেল পাল্টায়।

এবং, ঈশ্বরেরা আইনের উর্ধে থাকে।

--------------------------------------------------------------------------------
* জীবে 'দয়া' করে যেইজন, এই দয়া হচ্ছে সেই দয়া, ধারণা করি


মন্তব্য

নৈষাদ এর ছবি

চলুক চলুক

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

ok


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

মানুষ ঘটনা এবং দূর্ঘটনা থেকে শিক্ষা নেয়। কিন্তু বছরের পর বছর ধরে এই যে লঞ্চডুবিগুলো ঘটে চলেছে এতে যেনো কারোরই কোনও মাথাব্যাথা নেই। স্বজনহারাও একসময়ে হারানোর ব্যাথা ভূলে যায়। অতিরিক্ত যাত্রীবোঝাইসহ যেসকল কারনে লঞ্চ দূর্ঘটনাগুলো ঘটছে, কিছুদিনের মধ্যেই সেসব কারন সবাই ভূলে যাচ্ছে। মরতে মরন শুধু পাবলিকের।

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাইয়ের কথাটা যখন বললেন, তখন মনে হৈতেছে আমি আমার আর্গুমেন্টটা বুঝাইতে পারি নাই। আমি আসলে অন্য একটা বিষয়ে বলতে চাইতেছিলাম। আরেকবার বলার চেষ্টা করি।

বাংলাদেশে বর্ষাকালে ছয় হাজার কিলোমিটারের মতো নৌপথের দায়িত্বে থাকে নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ। শুষ্ক সময়ে সেটা সাড়ে তিন হাজারে নেমে আসে। বাংলাদেশে কতরকম অপচয় হয় সেটা জানলে, সম্ভবত এই পথটাকে খুব একটা দীর্ঘ মনে হবে না। নৌপথকে অগম্য করে তুলার পিছনে কীসের হাত আছে সেইটা আন্দাজ করেই বলতে চাই না। কিন্তু গত চার দশকে অভ্যন্তরীন নৌপরিবহন রাষ্ট্রায়ত্ব খাত থেকে বেসরকারী খাতে চলে গেছে। রাষ্ট্র জনপরিবহনের দায়িত্ব নিতে চায় না, ভালো কথা। কিন্তু রেগুলেশনের দায়, আমার হিসাবে, এড়াইতে পারে না। আমি একশভাগ নিশ্চিত, আজকে যদি উচ্চমধ্যবিত্ত আর এলিটেরা লঞ্চে যাওয়া আসা করত এইরকম চিত্র হৈত না।

নৌপরিবহন খাতে নৈরাজ্য নিয়া শহরের শিক্ষিত এলিটের বিরাট অংশের বিশেষ মাথাব্যথা নাই। তারা প্রচারমাধ্যমে 'দুর্ঘটনার' বিবিধ দৃশ্যাবলীকে ডিপ মেমরিতে ঢুকায় না। ভাসাভাসা ভাবে সংবেদনশীলতার প্রকাশ ঘটানোর মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে।

এটা শুধু এই ক্ষেত্রেই না। আরো নানা ধরণের ঘটনায় প্রকাশ পায়, প্রচামাধ্যমের প্রচারকদের ও প্রচারমাধ্যমের গ্রাহকদের একটা বড় অংশের চেতনা একইভাবে কাঠামোবদ্ধ।

'মানুষের' শিক্ষা বলতে যেইটা বুঝাইলেন বলে মনে করি, সেইটার অভাবে সম্ভবত এই ঘটনাগুলা ঘটতেছে না।


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

আপনার বক্তব্যের পুরা মেরিটটাই বুঝছি বস তবে মন্তব্য করছিলাম অন্য পারস্পেকটিভ থেকে, সম্পূরক। এই অব্যবস্থা শুধু যে অভ্যন্তরী নৌপরিবহন ব্যবস্থায় আছে, তা না, বহির্গামী চ্যানেলগুলোতেও আছে। লঞ্চে সাধারনত চড়ে সাধারণ মানুষ বা স্পেসিফিক্যালি বলি গরীব এবং নিম্নমধ্যবিত্ত শ্রেনীর মানুষেরা। পলিসি লেভেলের লোকেরা সাধারণত নৌভ্রমন করে অকেশনালি, প্রমোদ ভ্রমনের মতো। একটা দুইটা মন্ত্রী বা সচিব নৌদূর্ঘটনায় মরলে দেখতেন খেলা কারে কয়। আর এ্যাডভোকেসী বা প্রেশার গ্রুপের চরিত্র নতুন করে উল্লেখ না করি। একজন বলছিলেন যে বিআইডব্লিউটিসিতে নাকি প্রয়োজনের তুলনায় চারগুণ জনবল। সত্যিমিথ্যা জানিনা তবে আরিচায় বা পাটুরিয়ার ফেরীগুলোয় উঠলে বোঝা যায় যে কি পরিমান স্টাফ গিজগিজ করছে। আমাদের কলেজ জীবনে আরিচা ফেরীগুলোতে যৌনকর্মী পাওয়া যেতো। এদের দোষ দিয়ে লাভ নেই। ম্যানেজমেন্টের মধ্যে কমিটমেন্ট না থাকলে সবই সম্ভব।

আমাদের রাজনীতিকে লাশ একটা অনেক পুরোনো একটা অবশ্যপ্রয়োজনীয় জিনিস। লাশ নাইতো কথা নাই। আর এখন ব্যুরোক্র্যাসি এবং এ্যাডভোকেসীতেও সেই লাশ অনিবার্য। লঞ্চডুবিতে ১০-২০ টা পড়লে তবেই তারা চাঙ্গা হয়, আবার আস্তে আস্তে তারা ঝিমিয়েও যায়। লাশ যাতে না পড়ে তা নিয়ে কারো মাথাব্যাথা নেই। খালি লাশ আর লাশ। গরীব হওয়ার বড়োই জ্বালা।

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

বিআইডব্লুটিএ-র চেয়ারম্যান নাকি বলছে, লঞ্চটার নাইট নেভিগেশনের পার্মিশন ছিল না। তাইলে প্রশ্ন হইল ঐটা তো ঘাট থেকে ছাড়ছে, সেইখানেই বিআইডব্লুটিএ মনিটর করে নাই কেন? লঞ্চ তো নদীর মাঝখান থাইকা ছাড়ে না ...


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

হিমু এর ছবি

ঠিকাছে।

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

পেরায় হাসি


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

আল্লার মাল নিয়া এতো মাথাব্যাথা ক্যান করেন, বুঝি না...

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

'প্রশ্নগুলো সহজ' ...


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

সাফি এর ছবি

আমারও একই কথা, তার উপরে ২০০০ টেকা দিতেছে এইতো অনেক

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

টাকা কিন্তু বিষয় না। নৌমন্ত্রণালয়ও টাকা দেয়। প্রত্যেক নিহত যাত্রীকে ৩০ হাজার টাকা দেয়ার কথা। একই পরিবারের একাধিক যাত্রী নিহত হলে ৪৫ হাজার টাকা। আগে এই টাকা যথাক্রমে ২০ ও ৩০ হাজার ছিল। এই আমলে বাড়ানো হৈছে। কিন্তু আসল যাত্রীর সংখ্যা কেউ জানে না। মালিক যা বলে, তার চেয়ে ৩-৪ গুনও হৈতে পারে।


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

সাফি এর ছবি

ভাই ব্যঙ্গ করে বলছিলাম, ২০০০ এ কি বা ২০,০০০ এ কি কিংবা ২০০,০০০ এই বা কি! দেখেন কত পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি হয়ত মারা গেছে। কথা হইল এত মানুষ মরে, তাও টনক নড়েনা। জীবন কত সস্তা।

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

ঠিক ... আপনের সাথে একমত হয়ে আমি খালি যোগ করতে চাই, সবার জীবন সমান সস্তা না। টনক নাড়াইতেও টাকাঅলা হওয়া লাগে।


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

রোমেল চৌধুরী এর ছবি

'If any wreck or obstruction is found or reported in any inland navigable waterways so as to impede, or likely to impede navigation, the Authority may cause the wreck or obstruction to be raised, removed or destroyed’.
গনতন্ত্র তো কিশোর হলো। তাহলে আর এই 'may' টিকে 'must' করে দেবার ক্ষেত্রে বাঁধা কোথায়?

------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

এইটা রাষ্ট্রের চরিত্র, সরকারের ক্ষমতা, রেগুলেটরের ক্ষমতা ও শ্রেণীর প্রশ্ন।


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

হাসান মোরশেদ এর ছবি

সদাপ্রভু স্বগৌরব-রক্ষণে উদ্যোগী ঈশ্বর, তিনি প্রতিফলদাতা; সদাপ্রভু প্রতিফলদাতা ও ক্রোধশালী; সদাপ্রভু আপন বিপক্ষগণকে প্রতিফল দেন, আপন শত্রুগণের জন্য ক্রোধ সঞ্চয় করেন৷

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

আমেন ...


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

এরা আল্লার মালরে ভাই।

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

সঠিক, কিন্তু 'আমরা' কী?


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

অতীত(অতিথি) এর ছবি

একটা মন্তব্য করেছিলাম, ঐটাও মনে হয় গুম হয়ে গেছে ঈশ্বরের দয়ায়।

যাইহোক বস্‌ অসাধারণ লিখেছেন, তবে উদাসীনতা, নিস্পৃহতা, আত্মসম্মানবোধহীনতা এসব কিছু নিয়ে আসলে ঈশ্বরের দোহাই দেয়া ছাড়া আমাদের মনে হয় আর কিছু করার নেই।

অতীত

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ অতীত


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

..............................

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

hmm


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

রানা মেহের এর ছবি

আপনার এই ধরনের লেখাগুলো খুব ভালো লাগে অনিন্দ‌্য

-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

কৃতজ্ঞতা


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

কনফুসিয়াস এর ছবি

চলুক
লঞ্চডুবির খবর শুনলেই মন খারাপ হয়ে যায়। (সম্ভবত এটাও কাঠামোরই অংশ। )
আপনার এই লেখাটা খুব ভাল লাগলো।

-----------------------------------
বই,আর্ট, নানা কিছু এবং বইদ্বীপ

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

মানুষ কাঠামোবদ্ধ জীব


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

দময়ন্তী এর ছবি

মন খারাপ

-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

মন খারাপ


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

দয়া ও কাঠামোঃ দয়া-ক্লান্তি অবধারিত - মানুষ যতোই মানবিক হোক, যৌক্তিক হোক। কাঠামো সুস্থিত-যথাযথ-কার্যকর হলে দয়া-কান্না দেখানোর পরিস্থিতি তৈরি হয় না। সেটা যখন নেই সেক্ষেত্রে একটা বিধান অন্তত হোক যেখানে লঞ্চ মালিক নিহত-আহত প্রত্যেকের পরিবারকে লাখ পঞ্চাশেক বা কোটি খানেক টাকা জরিমানা করা হবে। সেক্ষেত্রে কাঠামো উলটো পথে সিধা হবে।

নিয়তিবাদী কাঠামো ও কর্তৃপক্ষঃ এক কালে কেউ ধর্ষিতা হলে তার ছবি, চৌদ্দগোষ্ঠির পরিচয় সব ছাপা হতো। পক্ষান্তরে ধর্ষণকারীর নাম উহ্য থাকতো। মানবতাবাদীদের চেষ্টায় এখন উভয় পক্ষের নাম-পরিচয় উহ্য থাকে। তাতে ধর্ষিতা বাঁচে কিনা নিশ্চিত না, তবে ধর্ষক এখনো বেঁচে যায়। নিয়তিবাদী কাঠামো ও কর্তৃপক্ষ এভাবে অন্তরালে থেকে স্বস্তিতে থাকেন। যে কোন ক্ষেত্রে দায় বেচারা ঈশ্বরের ঘাড়ে চাপাতে পারলে বিচার-টিচারের ঝামেলা কমে যায়। এতে মূল্যবান সময়-অর্থ-শ্রম বেঁচে যায়, দেশ উন্নতির পথে ধাবিত হয়।

নিজ নিজ গন্তব্যেঃ আমাদের ভালো লাগুক আর না-ই লাগুক শেষমেশ ঘরে ফিরতেই হয়। যে পিতা-মাতা-সন্তানকে কবরে শুইয়ে আসে বা দাহ করে আসে তাকেও ঘরে ফিরতে হয়। বেচারা ঈশ্বর দেহধারী হলে ঈশ্বরের প্রতিভূরা অনেক আগেই তাঁকে ফাঁসিতে ঝোলানোর ব্যবস্থা করতেন মনে হয়। নিরাকার ঈশ্বরের পৃথিবীতে তাঁর প্রতিভূরাই সর্বেসর্বা। তারা আইন তৈরি করেন, আইন তাদের জন্য না।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

কাঠামো উলটো পথে সিধা হবে

ভাবতেছি এই নিয়া ...


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

এহ্‌হে, একটু টাইপো হয়ে গেছে। বাক্য দু'টি এমন হবে -

সেটা যখন নেই সেক্ষেত্রে একটা বিধান অন্তত হোক যেখানে লঞ্চ মালিককে নিহত-আহত প্রত্যেকের পরিবারকে লাখ পঞ্চাশেক বা কোটি খানেক টাকা জরিমানা দিতে বাধ্য করা হবে। সেক্ষেত্রে কাঠামো উলটো পথে সিধা হবে।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

তারপরও ভাবতেছি হাসি


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।